#তোমাতেই_ইতি
#আয়েশা
পর্ব-০২
প্রচন্ড রাগে যখন কান্না পাচ্ছিলো ঠিক তখনই পেছন থেকে সেই ফ্যাশ ফ্যাশানো গলার আওয়াজ!ভাগ্যিস গলার আওয়াজের জোর নেই নইলে সবাই আরও কত যে আদিখ্যেতা দেখাতো কে জানে?
তার গলার আওয়াজ টা কেমন ভাঙা ভাঙা হাসের গলার মত ফ্যাশ ফ্যাশ করা।সবাই বলে ফুফি নাকি পূরণ ভাইকে পেটে নিয়ে হাসের মাংস খেয়েছিল তাই এমন হয়েছে কিন্তু তিনি সেটা একদম ভাবেন না!তা আসলে ঠিক এইসব কুসংস্কার।
তার মতে তিনি খুব স্পেশাল কেউ,তাই তার গলার আওয়াজ টাও ইউনিক।ইউনিক না ছাই! মাঝে মাঝে আমার নিজেরও ভয় হয়,যেন কোনও পেত্নী এসে ফিসফিসিয়ে কথা বলছে আর সুযোগ পেলেই গাঢ় মটকাবে।
“দেখ নাকের ডায়রিয়া বাধিয়েছিস ভালকথা।মামা ঔষুধ আনতে গেছে এখন না খেয়ে যদি বসে থাকিস ঔষধ খাবি কি করে?
আর না খেলে কি হবে অসুখ আরও বাড়বে আর বাড়লে কি হবে?
মামার টাকা খরচা হবে?
দুনিয়াতে এসেছিস শুধু লস আর লস করতে এই যে আমার এত দামী প্যান্ট যার দাম গুণে গুণে বাংলা পাঁচ হাজার টাকা!
সেটাতেও হিশু করে লস করেছিস।আর দায়ভার পড়ল কার উপর?
মামার উপর।
অবশ্য আমি মামার দেয়া প্যান্ট কিন্তু এখনও পড়িনি ইচ্ছে।জেনে শুনে তো আর কারও লস করাতে পারিনা!টাকা তো আমি তোর বরের থেকেই নেবো।
আর এখন যে আবার ঔষুধ আনতে গিয়ে মামার টাকা লস হবে তোর পেছনে গোচ্ছা যাবে।খাইয়ে পরিয়ে এত বড় করেছে কিন্তু শেষে সেই সব টাকা লস করে গিয়ে বরের বাড়িতে পাতিল মাজবি।
অথচ এ বাড়িতে কুটোটি অবদি নাড়ছিস না।
তারপর যখন ও বাড়িতে যাবি সব লস গিয়ে পরবে তোর বরের উপর।কারণ আমার প্যান্টের টাকা, মামার তোকে খাওয়ানোর,পরানোর,শেখানোর টাকা সব উশুল করতে হবে না!এমনি এমনি দিয়ে দেবে নাকি!এতদিন এত বড় করে তার জন্য রেখে দিয়েছে যত্ন করে,সেটার মূল্য চুকাতে হবে না?
আমি আর না টিকতে পেরে বললাম,
” শুন পূরইন্না আমি কি করবো না করবো আর আমার বাবা আমার জন্য কি করবে না করবে সেটা একান্ত আমাদের ফ্যামিলির ব্যাপার তোকে কে বলে নাক গলাতে!
পূরণ ভাই হা হয়ে কিছুক্ষন তাকিয়ে ছিল তারপর হুটহাট পা ফেলে বেরিয়ে যায়।উফফ এতদিন পর ঝেড়ে দিতে পেরে মনে মনে ভীষণ খুশি হয়েছি।পেটে খিদেও পেয়েছে।কেন যে লোকটার এসব কথায় রাগ দেখাতে যাই কে জানে?
আমার বাবার টাকা আমার জন্য খরচ করবে না তো কি আপনার জন্য করবে!
ব্যাটা হাসের বংশধর!
কিচেনে গিয়ে দেখি বাবা ফুলে আছে,
-ইচ্ছে!কি বললি ওকে?
-বাবা!আমাকে কি বলল সেটা তোমার চোখে পড়ল না!অথচ তাকে দুটো কথা কি বলেছি অমনি তোমার জেরা শুরু হয়ে গেছে?
এতক্ষন কই ছিল তোমার ওকালতি?
ভাবলাম খাব কিন্তু না আর গলা দিয়ে নামবে না?
নিজের মেয়ের থেকে বোনের ছেলে যখন বেশি কিছু তখন তাকে নিয়েই থাক।
রাতে দরজায় ধাক্কা ধাক্কি শুরু।দেখি ফুফু টিফিন বক্স ভর্তি খাওয়ার নিয়ে হাজির।নিশ্চয়ই বাবা বলেছে।
এদের কাহিনী টাই বুঝিনা আমি সব সময় তার ছেলের বকবক শুনতে শুনতে আমার চামড়া ও মোটা হয়ে গেছে,সাথে তার ছেলের সাপোর্টার আমার বাবাও কথা শুনাতে ছাড়ে না।সেখানে আমি যতবার রাগ করি ততবার ফুফু এসে নিজের হাতে খাইয়ে দিয়ে যাবে।
সাথে কেঁদে কেটে ভাসিয়ে যাবে তখন আর না খেয়েও পারিনা।ফুফুর তো কোনও দোষ নেই সব ওই হাসের বংশধর এর দোষ।
অনেকক্ষন ঘুমানোর ফলে সহজে আর চোখের পাতায় ঘুম নামছেনা।বারান্দায় যেতেই শুনলাম গান বেজে চলেছে,,,
“প্রেমে পড়া বারণ
কারণে অকারণ
আঙুলে আঙুল রাখলেও,হাত ধরা বারণ।
প্রেমে পড়া বারণ
কারণে অকারণ
আঙুলে আঙুল রাখলেও হাত ধরা বারণ
প্রেমে পড়া বারণ।
তোমায় যত গল্প বলার ছিল
তোমায় যত গল্প বলার ছিল
সব পাপড়ি হয়ে গাছের পাশে ছড়িয়ে রয়ে ছিল
দাওনি তুমি আমায় সেসব কুড়িয়ে নেওয়ার কোনো কারণ।
প্রেমে পড়া বারণ
কারণে অকারণ
আঙুলে আঙুল রাখলেও হাত ধরা বারণ।
কেন জানিনা সারাক্ষন পূরণ ভাই এই গানটা শুনবে।রাত নেই দিন নেই পারলে টুয়েন্টি ফোর আওয়ার চলবে।আপনার যখন এতই প্রেমে পড়া বারণ,তো করবেন না। কিন্তু না সাথে আমাকেও কেন শুনাতে হবে!
আমার রুমের বারান্দা বরাবরই পূরণ ভাইয়ের বারান্দা।আর রুমটাও সেইম।শুধু উপর নিচ তফাত।তারা থাকে দোতলায় আর আমরা নিচ তলায়।ফুফুদের আমাদের থেকেও বড় ফ্ল্যাট আছে।তাও আটতলা!
সব ভাড়া দেওয়া জানিনা কেন এই বাসায় ভাড়াটে হয়ে রয় যেখানে নিজেদের এত বড় বাড়ি!
আমি একবার জিজ্ঞেস ও করেছিলাম বাবাকে ফুফুকে তো আর করা যায়না!
বলল ঢাকা শহরে আত্মীয় বলতে তার বাবাই আছে মানে আমাদের ফ্যামিলি বাদ বাকি সবাই গ্রামে থাকে।তাই একা একা ভাললাগবে না বলে আমাদের বাসাতেই ভাড়া থাকে।বাবা অবশ্য নিষেধ ও করেছে ভাড়া না দিতে কিন্তু ফুফা শুনবেন না।
আর দিলেই বা কি!টাকা আছে যখন,দিতে তো আর ক্ষতি নেই।সব সময় তো তাদের ছেলে আমার বাবার লস নিয়েই পড়ে থাকে।
সকালে ঘুম ভাঙলো কান্না কাটির আওয়াজে,
পূরণ ভাইকে হস্পিটালাইজড করা হয়েছে।খুব অবাক হলাম,কাল ই তো মানুষটা এত এত করে কথা শুনিয়ে গেল আর আজ কিনা সে হসপিটালে?
কোথাও একটু খারাপ লাগা কাজ করছে।ফুফুকে মায়ের কাছে রেখে বাবা আর ফুফা গেল হসপিটালে।ফুফু এসব সহ্য করতে পারেন না।হুটহাট মাথা ঘুরে পড়ে যায়।
কলেজে এক্সাম আছে আজ তাই আমাকে যেতেই হবে।রেডি হয়ে ফুফুর কাছে গিয়ে বসতেই ফুফু ঝাপটে ধরে কান্না জুড়ে দিল।আমার গালে মুখে অহরহ চুমো খেতে লাগল।আমি শুধু স্তব্দ হয়ে বসে আছি।
-এবার বোধ হয় আমার ছেলেটা আর বাঁচবে না রে ইচ্ছে!
আমার কলিজায় মোচড়ালো বাঁঁচবেনা মানে?কি বলছে ফুফু?
-এতবার যদি শ্বাসকষ্ট উঠে কি করে বেঁচে থাকবে ছেলেটা?কি ছটফটানো যন্ত্রনারে ইচ্ছে!যদি দেখতি?
উফ!কি ভয়টাই না ফুফু পাইয়ে দিল।ফুফুর হার্ট এমনিতেই দুর্বল।অল্পতেই ঘাবড়ে যায়!
তাই ভুলভাল যা আসছে বকে যাচ্ছে।আমি শান্তনা দিয়ে কলেজের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে গেলাম।
পুরো ক্লাসে একটুও মন দিতে পারলাম না।বারবার ফুফুর কথাটা কানে বেজে উঠছে।যতই আমাকে জ্বালাক কেন জানি এখন তার জ্বালানিটাও মিস করছি।পোষা একটা কুকুর থাকলেও তার প্রতি মন বসে যায় আর এতো জলজ্যান্ত একটা মানুষ! তাই হয়তো খারাপ লাগা কাজ করছে।
#তোমাতেই_ইতি
#আয়েশা
পর্ব-০৩
প্রচুর বিব্রতবোধ কাজ করছে একবার যাবো কি যাবো না!যাওয়া কি ঠিক হবে?
বাসায় আসার পর মা অবশ্য বলেও ছে যাব কিনা কিন্তু বারণ করে দিলাম।
পুরোটা রাত দুচোখের পাতা আমি এক করতে পারিনি।বারবার তার চেহারাটা ভেসে উঠছে। বারান্দায় যেতেই ওই গানটা যেন কানে বাজছে খুব শুনতে ইচ্ছে করছে কিন্তু আমার সংগ্রহে নেই সেটা।
কিছুক্ষন পায়চারী করে আবার ফিরে এলাম।
ভোর হতেই অপেক্ষা করতে লাগলাম।কখন কলেজ টাইম হবে?
কারণ এখন যদি যাব বলি লজ্জায় পড়তে হবে কালই বারণ করলাম আজ আবার যাব বললে ব্যাপারটা খারাপ দেখায় না!
খাওয়ার টা ও যেন গলা দিয়ে নামছে না কেমন জানি লাগছে খালি।মায়ের কথা শুনতে হবে তাই অল্প একটু মুখে দিতে দ্রুত বেরিয়ে গেলাম।
কিন্তু সামনে ফুফু এসে পড়ল।
শুন ইচ্ছে!যত যাই হোক,খাওয়ার কখনও নষ্ট করবিনা।না খেলে টেবিলে পড়ে থাক কিন্তু ফেলে দিলি কেন?
পূরণ একদম এসব পছন্দ করেনা।ফুফু আবার বসিয়ে দিল।খাওয়াতে খাওয়াতে বলতে লাগল,
-আমাদেরকে যখন তৈরী করা হয় পৃথীবিতে পাঠানোর জন্য,ঠিক তার আগে আমাদের হায়াত,রিযিক,ভাগ্য লিখে রাখে।
ঠিক যতটুকু হায়াত আছে আমরা ঠিক ততদিনই বেঁচে থাকব,আর রিযিক ও তেমন।
এখন যদি সেই রিযিক তুই ঠিকমত ব্যবহার না করে নষ্ট করিস ফেলে দিস তাহলে কমবে কার ভাগ থেকে?
তোর ভাগ থেকেই।আর এখন যদি সব নষ্ট করিস শেষ বয়সে এসে যদি না পাস?
ঠিক তেমন ভাগ্যও যা আমাদের জন্য লিখিত আছে তাই হবে,যার জোড়া যার জন্য আল্লাহ বানিয়ে রেখেছে ঠিক তার সাথেই মিলবে। সে আমরা যত যাই চাইনা কেন?
কেন জানিনা ফুফুর কথাগুলো মনের খুব গভীরে গিয়ে লাগল।খুব মনোযোগ দিয়ে আমি এভাবে কারও কথা শুনেছি বলে মনে হয়না।
ফুফুও বলতে বলতে কেমন তার চোখ ঝাপসা হয়ে এল।আঁচলে চোখ মুছে নিল।তারপর কপালে চুমো খেয়ে যেতে বলল।
আমি আবার ফুফুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলাম।তুমি চিন্তা করোনা ফুফু সব ঠিক হয়ে যাবে।পূরন ভাই খুব তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরবে দেখ!
তোর মুখের কথাই যেন লাগেরে ইচ্ছে!তোর মুখের কথাই যেন লাগে।
আমি চিন্তিত হয়ে বেরিয়ে আসলাম বাসা থেকে।আবার বৃষ্টির ফোঁটা পড়তে শুরু করল।
উফ!এমন স্যাতস্যাতে পরিবেশ সত্যিই বিরক্তিকর!
ছাতাটা বের করে মোড় অবদি গিয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম।
হসপিটালে পৌঁছেই দ্বিধায় পড়লাম,কেবিন নাম্বার কত কিছুই জানিনা।এবার এত বড় হসপিটালে কিভাবে খুজবো আমি!
সবাই জানে পূরণ ভাই আমার চক্ষুসূল এখন যদি শুনে আমি হসপিটালে তাহলে কেমন লজ্জাজনক ব্যাপার হবে।
আমি সোজা রিসেপশনে গেলাম।নাম বলে দেখি তারা খুজে পায় কিনা!
তারা জিজ্ঞেস করতেই আমি বললাম,
-গতকাল সকালেই ভর্তি হল,নাম পূরণ একটু খুজে দেখবেন প্লিজ!
লোকটি ল্যাপটপে অনেকক্ষন ধরে খোজাখুজি করল কিন্তু শেষে বলল,
-স্যরি ম্যাম!পূরণ নামের কোনও পেশেন্ট নেই আমাদের হসপিটালে তবে আপনি যে সময়টার কথা বলছেন সে সময়ে কিবরিয়া পূর্ণ নামের একটা পেশেন্টকে ভর্তি করানো হয়েছে।
আমি ভেবে চিনতে বললাম।যাই একবার চেক করে আসি যদি পূরন ভাই হয় তো হল নাহলে কি আর করার!
পূরণ ভাইয়ের পুরো নাম আমার জানা নেই কিন্তু ভাল নাম যদিও অন্যকিছু হয় ডাক তো পূরণই।পূর্ণ কেন হবে?
ফোর্থ ফ্লোরের ৩১৫ নাম্বার রুমের সামনে এসে দাঁড়ালাম।সিঁড়ি বেয়ে উঠায় এই ঠান্ডা ঠান্ডা ওয়েদার এ ও ঘামাতে লাগলাম।ওড়না দিয়ে গলা আর মুখের ঘাম মুছে নিলাম।তারপর এপাশ ওপাশ তাকাতে লাগলাম। ৩১৫ নাম্বার রুমটার দরজা খোলার আওয়াজ হতেই আমি অন্যপাশে গিয়ে দেয়ালের আড়ালে লুকিয়ে গেলাম।ফুফা আর বাবা বেরোচ্ছে কথা বলতে বলতে,তারা সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতেই আমি দ্রুত দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলাম।
মুখে অক্সিজেন লাগানো অবস্থায় পূরণ ভাই চোখ বন্ধ করে সুয়ে আছে।ভাবলাম যাক ভালই হল চোখ বন্ধ তাহলে সামনে যেতে হবেনা।দরজার পাশ থেকে দেখেই চলে যাব।
কিন্তু না ওই অবস্থায় দেখে কেমন হু হু করে মন কেঁদে উঠল।একজন সুস্থ সবল মানুষ হুট করেই এমন অসুস্থ হলে কষ্ট আর কান্না পাওয়ার ই কথা। সিটের পাশে গিয়ে বসতেই আমার চোখ থেকে আপনা আপনি কান্না বেরিয়ে এল।
সর্দি এখনও পুরোপুরি ভাল হয়নি।কান্না করায় নাক আরও জ্যাম হয়ে আছে।নিঃশ্বাস নিতে পারছিলাম না।পূরণ ভাইকে দেখে মনে হল ঘুমোচ্ছে।তাই নাক পরিষ্কার করতে নিচ্ছিলাম।
“ইচ্ছে!এবার কি হসপিটাল অপরিষ্কার করবি?দেখ প্যান্টে হিশু করেছিস ভাল কথা এবার কি শার্টে নাকের ডায়রিয়া পরিষ্কার করবি নাকি?”
ফ্যাশ ফ্যাশানো গলার আওয়াজ টা শুনেই চমকে তাকাতে দেখি পূরণ ভাই অক্সিজেন মাস্ক খুলে আমাকে এই অবস্থাতেও বকে যাচ্ছে।
শুন ইচ্ছে!তোকে অনেক আগ থেকেই ওয়ার্নিং দিয়ে আসছি তোর প্রেমে পড়া বারণ।বিশেষ করে আমার প্রেমে তো নয়ই।তোর মত মেয়েকে গাঢ়ে তুলে আমার লস খাওয়ার শখ নেই।এখন তো মনে হচ্ছে তুই সত্যি আমার প্রেমে পড়েছিস।তা নাহলে গার্লফ্রেন্ড ছাড়া এভাবে ন্যাকা কান্না কেউ কাঁদে?
কাঁদলে আমার গার্লফ্রেন্ড কাঁদবে কিন্তু তুই কেন?
আগের কথাটা শুনে আমি তাও দূর ছাই করে উড়িয়ে দিলাম গায়ে লাগতে দিলাম না কিন্তু এরপরের কথাটা শুনে উঠে না এসে পারলাম না।বরং মনে মনে নিজেই নিজেকে গালি দিলাম কেন আসতে গেলাম! এই লোকটা জীবনে শুধরাবার নয়।
যেই উঠে দাড়ালাম চলে আসবো বলে পেছন থেকে আবার ফ্যাশ ফ্যাশানো গলায় বলে উঠলো,
-কেন এসেছিলি?কারণটা তো বল!
-মানবতা!মানবতা বুঝেন পূরণ ভাই সেটা দেখাতেই এসেছিলাম।
-যদিও আমি জানি তুই সত্যি টা বলছিস না।তবুও একটা কথা মনে রাখ ইচ্ছে!সব ইচ্ছে চাইলেও পূরণ করা যায় না।আমাকে মিস করছিলি?না আমার জ্বালানোকে?
-কোনটাই না!আমার ফুফুর ছেলের জন্য খারাপ লাগছিল।ছেলেটা ছাড়া তো ফুফুর আর কেউ নেই!তাই মানবতার খাতিরে না এসে পারলাম না!
-বেরিয়ে যা,এক্ষুনি বেরিয়ে যা!হসপিটাল কি তোর বাবার?যে যখন ইচ্ছে আসবি আবার যখন ইচ্ছে যাবি!
নাকি তোর মানবতার খাতিরে হসপিটাল টা তৈরী করেছিল!
আসার সময় ভাড়া কে দিয়েছে?দেখলি বাড়তি ভাড়া!সেই আবার লস,যা বাড়ি যা।
আমি কিছু না বলেও দ্রুত পায়ে নিচে নেমে আসলাম।গায়ে এবার শুধু ঘাম না দরদর করে যেন বৃষ্টি পরছে।একেতো গরমের তাপমাত্রা তার উপর তার কথার তাপমাত্রা।দুয়ে মিলিয়ে শরীরের হিট বেড়ে গেছে,খুব সম্ভব হলে এক্ষুনি স্ট্রোক করে মারা যেতে পারি!
চলবে