#তোমাতে আসক্ত
#নাহিদা ইসলাম
#পর্ব ১৯
সকাল হতে ই সূর্য আলো গুলো জানালার পর্দা ভেদ করে চোখে এসে পড়ছে। সূর্যের আলো চোখে পড়তে ই অভ্র কাঁথা দিয়ে মুখ ঘুরে নেয়।
মিহির কাথা দিয়ে এভাবে মুখ ডেকে রাখলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। মুখ ডেকে রাখার সাথে সাথে মিহি হাত দিয়ে কাথা সরতে যাবে, তখন ই খেয়াল করে অভ্র আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরে শুয়ে আছে। কালকে এসব কান্ড শুরু হয়েছে বার বার এক ই ভয় দেখায় স্টাম্প সাইন করেছে, এখন অভ্র যা বলবে তা ই করতে হবে।
কয়েকবার ডাকলো মিহি, কিন্তু অভ্রের কোনো সাড়াশব্দ নেই। এদিকে মিহির শ্বাস নিতে অনেক বেশি কষ্ট হচ্ছে। তাই অভ্রের কানের কাছে গিয়ে জোড়ে চিৎকার দেয় একটা।
অভ্র সাথে সাথে উঠে বসে পড়ে। বসে মিহির দিকে রাগি লুক দিয়ে তাকায়।
–এতো জোড়ে কেউ চিৎকার করে??
–আপনি যেভাবে শুয়ে ছিলেন আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিলো ডাকলাম উঠতেছিলেন না তাই আমার জাদু দেখালাম।
–দাড়ান না আমার জাদু দেখাই।
এটা বলে ই অভ্র বিদ্যুতের গতিতে মিহির ঠোঁট একটা চুমু খেয়ে ওয়াশরুম চলে গেলো।মিহি একপ্রকার ফ্রিজড হয়ে বসে আছে।
একটু পরে ওয়াশরুম দরজা একটু ফাঁকা করে বললো, দেখলে আপনার জাদু দিয়ে আমাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে দিলেন আর আমার জাদু দিয়ে আপনাকে স্তব্ধ করে বসিয়ে রাখলাম। দুই জনের কতো মিল দুজন ই জাদু পারি। এটুকু বলে ই ওয়াশরুম দরজা বন্ধ করে দিলো।
আপনি ও শুনে রাখেন এক মাঘে তো আর শীত যায়না,শীত বার বার আসে। এবার না হয় আপনার পালা সামনে আমারটা আসতেছে।
অভ্র ওয়াশরুম থেকে ই উওর দিলো”আমি সব সময় প্রস্তুত।
জীবনে অনেক মানুষ দেখেছে, কিন্তু অভ্ররে মতো এমন ছেলে দেখেনি। কতো বাজে লোকরে বাবা।
কালকে রাতে ই বাসায় চলে আসে অভ্র মিহি,যেখানে মিহিকে নিয়ে অভ্র রেখেছিলো ঐটা ওদের অন্য একটা বাসা। যেটা অভ্র নিজের বাসা। বাসাটা খুব ভালো ই লেগেছিলো কিন্তু অভ্রের জন্য ভালো করে দেখতে পারেনি। অভ্রকে একদিন বলবো ঐ বাসাতে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
–এই যে ভাবি আসবো নাকি
ভাবনার জগৎ থেকে বের হয়ে দরজার দিকে তাকাতে ই চোখ পড়ে অনির দিকে
–এটা আবার অনুমতি নেওয়া লাগে নাকি, আসো।
–আমাদের কে তো ভুলে ই গিয়েছো। আমার ভাইকে পেয়ে।
–হে তা ঠিক বলেছো, তোমার গুনধর ভাইকে পেয়ে আমি আমার নিজেকে ই ভুলে গিয়েছি।
–সে যা ই হক, যাও তোমাকে দাদিমা ডাকছে। দাদিমা কে বলবো তোমাকে নতুন নাম রেখে দিতে ভাইকে ভালো আকিকা দিয়ে দিতে
কথা শুনে আমি ফেলফেল করে তাকিয়ে আছি যেমন ভাই তার তেমন বোন। নিজেকে সামলে নিয়ে বললাম।
–ওহ্ আচ্ছা, গিয়ে বলো আমি ফ্রেশ হয়ে আসতেছি।
–হুম আচ্ছা, দ্রুত এসো, দাদিমা বলেছিলে সাথে করে নিয়ে যেতে।
বলে ই অনি চলে গেলো।
অভ্র ফ্রেশ হয়ে বের হতে ই আমি ওয়াশরুম ডুকে পড়ি। দ্রুত ফ্রেশ হয়ে বাহিরে বের হয়ে আসি। দাদিমা ডেকেছে বেশি লেইট করলে আাবর কী না কী ভাববে।
আয়নার সামনে দাড়িয়ে চুল ঠিক করতে ই অভ্র পিছন থেকে এসে জড়িয়ে ধরে।
–সব সময় এসব ভাল্লাগে না। ছাড়ুন দাদিমা ডাকছে আমাকে।
–স্টাম্পে সাইন করেছন ভুলে যাবেন না। আগে আমি তারপর দাদিমা।
–আস্ত বজ্জাত আপনি।[স্টাম্প সাইন করার আগে কী জানতাম আপনি একটা লুচু মনে মনে বললাম]
–সে আপনি যাই বলেন, আয়নার দিকে তাকিয়ে দেখেন তো আপনাকে কেমন দেখাচ্ছে। কেনো যে আপনাকে বিয়ে করতে গেলাম।
–আমি বলেছি আমাকে বিয়ে করেন, যান ভালো সুন্দরী মেয়ে দেখে বিয়ে করেন গিয়ে আমার সামনে এসেছেন কেনো।
–তাই নাকি, আপনি এখন আমাকে তুমি করে বলবেন।
–পারবো না।
–আপনি এখন আমাকে তুমি করে বলবেন। এবং আমাকে ও তুমি করে বলতে অনুরোধ করবেন।
—নাহ্।
–স্টাম্প টা কিন্তু সাথে ই আছে। আর না বললে আমি দাদিমার কাছে যেতে দিচ্ছি না।
–আচ্ছা তু,,তু,,তুুমি।
–এখন বলেন “অ গো তুমি আমাকে আপনি বাদ দিয়ে তুমি করে ডাকো প্লিজ”
–এইকথা আমি কেনো আপনাকে বলবো??
–আবার আপনি করে ডেকেছেন। বললে বলেন নয়তো এভাবে ই জড়িয়ে ধরে রাখবো, দাদিমা রেগে যাবে আপনি না গেলে এটা মনে আছে।
মিহি বিরক্ত হয়ে কান্না কান্না ভাব নিয়ে বললো
–অ গো তুমি আমাকে আপনি বাদ দিয়ে তুমি করে ডাকো প্লিজ।
সাথে সাথে অভ্র উওর দেয়।
–ঠিক আছে টিয়া পাখি, আমার কাজ শেষে তুমি এখন যেখানে ইচ্ছা যেতে পারো। কথাটা রেকর্ড করে রাখলাম ফোনে যখন ই আমার কথা শুনবে না,আর সাউন্ড বাক্স এ দিয়ে সবাইকে শোনাবো। এখন থেকে তুমি করে ই ডাকবা।
আর ভালো লাগছে না এসব। একদিনে ই আমার নাজেহাল অবস্থা বানিয়ে ছাড়ছে। দাদিমার রুমে গিয়ে দেখলাম, দাদিমা বসে বসে পান বানাচ্ছে,
–দাদিমা আসবো।
–হে, এতোক্ষণ লাগলো তোর আসতে।১০
–যা বলি মন দিয়ে শোন।
আমি মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালাম।
–এক সাথে থাকতে গেলে স্বামীর সাথে একটু আধটু মন কষাকষি হবে তাই বলে কী বাবার বাড়ি চলে যেতে হবে। স্বামীকে নিজের আচলে বেধে রাখবি যেনো কোথাও যেতে না পারে। অভ্র ছেলে মানুষ তাই রাগটা একটু বেশি তাই বলে তুই ও কী রাগ দেখিয়ে চলে যাবি নাকি। মনে রাখিস মনুষের জীবনে বিয়ে একবার ই হয়। তোদের বিয়েটা আল্লাহ চাইছে বলে ই হয়েছো তোর জন্মের আগে থেকে ই কার সাথে বিয়ে হবে তা আল্লাহ ঠিক করে রেখেছে। যা ই করবি নিজের স্বামীকে নিজের আচলে বেধে নিয়ে করবি।
অভ্ররে দাদা ভাই যখন বেচে ছিলো। আমি প্রায় ই রাগ করতাম আর উনি আমাকে কতো রঙ তামাশা করে রাগ ভাঙ্গাতো। আর উনি যখন রাগ করতো আমি কোনো কথা বলতাম না। একটু পর নিজের ভুল বুঝতে পেড়ে আমার কাছে ক্ষমা চাইতো। কিন্তু ভুলটা আমার ই ছিলো আমি তা ও ত্যাড়ামি করতাম। কিন্তু উনি আমাকে খুব ভালোবাসতো মুখে প্রকাশ করতো না। কেউ মুখে ভালোবাসা প্রকাশ করে আবার কেউ কাজে কর্মে প্রমান করে আমার নাতি টা ও এমন ই।
জন্ম, মৃত্যু, বিয়ে আল্লাহর হাতে। যা চাইলে ও মানুষ কখনো পরিবর্তন করতে পারে না।
দাদিমা তাহলে বিয়ের সাথে সাথে ডিভোর্স শব্দটা শোনলে আপনার কেমন লাগতো??
আমি প্রশ্নটা করে পিছনে ঘুরে তাকাতে ই দেখলাম অভ্র রুমে দরজায় দাড়িয়ে আছে। তাহলে কী অভ্র আমার কথাটা শোনে ফেললো।
#তোমাতে আসক্ত
#নাহিদা ইসলাম
#পর্ব ২০
সূর্য তির্যক হয়ে মাথা উপরে আলো দিচ্ছে। চারদিকে মানুষ যে যা কাজে ব্যস্ত,কয়েকজন মানুষ আমাকে পা থেকে মাথা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে চলে যাচ্ছে। হয়তো সবার এক ই প্রশ্ন আমি এইখানে কেনো। বাসা থেকে বের হবার সময় জুতোটা ও আনিনি। অভ্রের এমন ব্যবহার আমি নিতে পারছিলাম না। সারাক্ষণ আমার সাথে সাথে লেগে থাকে আমাকে জ্বালানো ইদানীং তার প্রধান কাজ হয়ে উঠেছে।
অফিসে ও যায় কম, অফিসের কাজ বাসায় বসে ই করে।হয়তো আমাকে বিরক্ত করার জন্য ই অফিসে যায় না। অভ্রের স্টাম্প সাইন করেছি পাঁচ দিন হয়ে গিয়েছে, এই পাঁচ দিনে উনি আমাকে পাচ মিনিট শান্ততে থাকতে দেয়নি। মাঝে মাঝে অনেক খারাপ ব্যবহার ও করেছে। সে যা ই হব দুচোখ যেদিকে যায় চলে যাবো। হাটা শুরু করলাম অজানার উদ্দেশ্য।
________________
অভ্র আজকে অফিসে গিয়েছিলো, আসার পর পুরো বাড়ি তনতন করে খুজে কিন্তু মিহিকে খুজে পায় না।
প্রায় একঘন্টা হয়ে গিয়েছে সব জায়গায় খুজ নিয়ে দেখেছে কিন্তু মিহি কোথাও যায়নি। অভ্র নিকটস্থ থানায় ইনফর্ম করেছে।
হঠাৎ করে মিহি এমন নিরুদ্দেশ হয়ে যাবে তা অভ্রের জানা ছিলো না।অভ্রের মাথা কাজ করছে না। হয়তো মিহিকে কষ্ট দিয়েছে কিন্তু এই কষ্টগুলো দেওয়ার সাথে সাথে অনেক ভালো ও বেসেছে। হয়তো কষ্টের ভিড়ে অভ্রের ভালোবাসা গুলোকে চোখে পড়েনি।
মিনতি কেঁদে কেটে একাকার হয়ে যাচ্ছে। বোনকে অনেক ভালোবাসে। মিহির বাবার বাসায় জানানো হয়নি। রেনু বেগম মিনতিকে শান্ত করার চেষ্টা করছে।
দাদিমা পায়চারি করছে আর বার বার দরজার দিকে দেখছে। উনি বেশ রেগে আছে।মিহিকে ঐ দিন এতো করে বুঝানোর পর ও এই কাজ করবে ভাবতে পারেনি।
রেনু বেগম মিনতিকে একটু শান্ত করে অজু করে জায়নামাজ এ বসে পড়লো, নফল নামাজ পড়ে আল্লাহ কাছে দোয়া করবে, ছেলের বউ এর যেনো কেনো ক্ষতি না হয়।
দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলো,
আকাশে মেঘ জমেছে বেশ, মনে হচ্ছে আকাশ আজকে রাগ করে এতো মেঘ জমিয়েছে। কখন জানি বৃষ্টি নেমে আশে। সাদার মধ্যে ঘন কালো মেঘগুলো দেখতে খুব সুন্দর লাগছে। চারদিকে বাসতাসে বেগ ধীরে ধীরে বাড়ছে। গাছের পাতাগুলো ফুলের মতো উপর থেকে পড়ছে, পানিতে তাকাতে ই দেখলো কয়েক ফোটা বৃষ্টি পড়ছে খুব ই হালকা গতিতে।
হালকা বৃষ্টি পড়তো ই চারদিকে চোখ যায়, একটা নদীর উপর ব্রিজে দাড়িয়ে আছে মিহি। এখানে যা মানুষ ছিলো বৃষ্টির ছোয়া পেয়ে সবাই ছুটতে শুরু করলো হয়তো বাড়ির উদ্দেশ্য।
অনেকদিন পর বৃষ্টিতে ভিজতে ভালো ই লাগছে মিহির। ব্রিজে দাড়াতে ই চারদিকের সবুজে সমারোহ চোখ ছোয়ে যায়। পাখিরা কাছের ডালে বসে বসে ভিজতেছে। আচ্ছা ওদের কী আমার মতো বৃষ্টিতে ভিজতে ভালো লাগে নাকি, ওদের থাকার মতো জায়গা নেই।
বিদ্যুৎ চমকানো আর বজ্রপাতের শব্দ মিহি ভয় পেয়ে যায়। এখন এতো বেশি বৃষ্টি পড়ছে না,
–এই মেয়ে তোমার কী কোনো কান্ড জ্ঞান নাই নাকি এভাবে রাস্তা কেনো দাড়িয়ে আছো।
পিছনে ফিরতে ই দেখে একটা মধ্যে বয়স্ক মহিলা মিহির দিকে তাকিয়ে কথাগুলো বলছে।
মিহি ছলছল নয়নে তাকিয়ে আছে কিছু বলছে না। আসলে মিহি কী বলবে ভেবে পাচ্ছে না।
–কথা বলছো না কেনো, বোবা নাকি দেখতে তো মনে হচ্ছে ভালো পরিবারের মেয়ে ই, তা এই বৃষ্টি মধ্যে এখানে দাড়িয়ে আছো কেনো। চলে আমার সাথে আমার বাড়িতে।
মিহি শুধু চুপ করে দাড়িয়ে আছে কোনো কথা বলছে না। মিহিকে এমন চুপ থাকতে দেখে মহিলাটা মিহির হাত ধরে টান দেয়।
============
অভ্র অনেক ক্লান্ত হয়ে গিয়েছে তাও ড্রাইভ করছে। ইচ্ছে করছে এখন যদি একটু শুয়ে থাকা যেতো তাহলে মনে হয় ভালো লাগতো। হঠাৎ কল আসে অভ্ররে ফোনে।
ফোনের স্ক্রিনে অপু নাম টা ভেসে উঠতে ই দ্রুত ফোনটা রিসিভ করে।
–হে অপু বল।
অপু কিছু একটা বলতে ই অভ্র দ্রুত গাড়ি ঘুরিয়ে নেয়। গাড়ির স্পিড বাড়িয়ে দিয়ে দ্রুত গাড়ি চালাতে থাকে।
এদিকে মহিলাটি মিহিকে টেনে বাসায় নিয়ে যেতে চাইলে মহিলাকে মিহি ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। মধ্যে বয়স্ক মাহিলা কোমরে ভালো ই লেগেছে মনে হচ্ছে। মিহি মহিলাটাকে ফেলে দিয়ে দৌড়ে ব্রিজের সামনের দিকে যেতে থাকে। মিহি সামনে তাকিয়ি দেখে অভ্র দৌড়ে মিহির দিকে ই আসছে। মিহিকে দেখে এসে জড়িয়ে ধরে।
বৃষ্টি বেগ বেড়েছে। মিহির কাপড় ভিজে গায়ের সাথে লেপটে আছে। পায়ে কাদা মাটিতে ভরে গিয়েছে। মিহি এতোক্ষণ খুব ভয় পেয়েছিলো কিন্তু অভ্রকে দেখে ভয় চলে গিয়েছে। মনের ভেতর খারাপ লাগা ও কাজ করছে যার জন্য বাসা থেকে বের হলে সে ই সামনে এসে পড়লো।
–মিহি তুমি আমাকে না বলে বাসা থেকে না বলে কেনো বের হয়েছো।
–আপনার কাজগুলো আমি নিতে পড়ছিলাম না।আমার জাস্ট অসহ্য লাগছিলো।
–স্যরি মিহি, বাসায় চলো।
বলে ই হাত মিহির হাত ধরতেই সজোরে একটা থাপ্পড় মারে মিহি।
অভ্র কিছুক্ষন থমকে গিয়ে আবার বললো বাসায় চলো,
–প্রতিজ্ঞা করছি, তোমাকে আমি আর বিরক্ত করবো না প্লিজ
মিহি এবার বেশ অবাক হলো থাপ্পড় মারার পর ও মিহিকে এভাবে বলছে বাসায় যাওয়ার জন্য, অভ্রকে তো মিহি এমন জানতো না মিহি ভাবেছিলো হয়তো রাগ করে অভ্র মিহিকে রেখে ই চলে যাবে।
মিহি বৃষ্টিতে ভিজে কাপছে, অভ্র ও ভিজে গিয়েছে। মিহিকে এমন কাঁপতে দেখে অভ্র কোলে তোলে নিলো, মিহি এবার অভ্রকে আর কিছু বলছে না। হঠাৎ মহিলাটা পিছন থেকে ডাকতে ডাকতে সামনে এসে দাড়ালো।
–ওহ, ফুপি ধন্যবাদ আপনাকে। আপনি অপুকে কল দিয়ে না বললে আমি হয়তো মিহিকে এখন ও খুজে বেড়াতাম।
–হে, হে তোমার বউ আমাকে ধাক্কা দিয়ে কোমরটা ভেঙ্গে দিয়েছে। অপু আমাকে ওর ছবি পাঠিয়ে বলেছিলো একটু এদিকে দেখার জন্য, মেয়েটা পেয়ে গেলাম কিন্তু এমন স্বভাবের তা জানতাম না।
–আপনাকে চিনে না তো তাই ভয় পেয়েছে হয়তো। মাফ করবেন ফুপি আসলে মিহি একটু বাচ্চাদের মতো ই আচরণ করে।আপনার সাথে আমি পরে কথা বলবো এখন চলি।
— ভয় পেলে আবার বাড়ি থেকে না বলে বের হলো কেনো। বাবা আমার বাসাতে আসো ভেজা শরিরে এখন বাসায় যাবে।
–ফুপি অন্যদিন যাবো।
বলে ই মিহিকে নিয়ে চলে আসলো, গাড়িতে বসিয়ে অভ্র অপর পাশে বসে গাড়ি স্টার্ট দিলো।
অভ্রের চোখ দুটো লাল হয়ে আছে। কান্না করেছে নাকি রাগ করে মিহি বুঝতে পারছে না। অভ্রকে থাপ্পড় মারাটা মনে হয় ঠিক হয়নি।
============
সবার সামনে মিহি বসে আছে। অভ্র মিহিকে নিচে রেখে ই উপরে চলে গিয়েছে।
–নাতবৌ তোকে এতো করে বুঝানোর পর ও তুই এমন কাজটা করলি আমাদের কেমন অবস্থা হয়েছিলো চিন্তায় তোর জানা আছে।
মিহি চুপ করে আছে কোনো কথা বলছে না। সবাই ই রেগে আছে, মিনতি তো এসে গায়ে হাত তুলতে নিয়েছিলো। অপু আটকিয়েছে।
–কী হলো কথা কানে যাচ্ছে না তোর
একটু রাগ দেখাতে ই মিহি বাচ্চাদের মতো কান্না করে দেয়। মিহির কান্না দেখে অভ্রের মা এসে নিয়ে যেতে চায় এখনা থেকে। রুমের দিকে পা বাড়াতে ই দাদিমা বলে উঠে।
–অভ্র যখন তোকে এতো ই জ্বালায় এতো ই কষ্ট দেয়। আজ থেকে তুই আমার সাথে থাকবি অভ্রের সাথে দেখা হলে কোনো কথা বলবি না।
চলবে।
চলবে
[ভুলগুলো ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ]