#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#Sabiya_Sabu_Sultana (Saba)
#পর্ব_১৯
… ড্রইং রুমে বসে আছে বেলা সারা জাকিয়া ওম বেদ নিশান রুহি। তাদের মনোযোগ সামনে চলতে থাকা টিভি এর দিকে। যেখানে আপাতত সাঁঝ কে নিয়ে নিউজ চলছে। বেলা পুরো হতবাক আর বিস্ময় নিয়ে বসে আছে। আর বাকি গুলো একে অপরের মুখের দিকে চাইছে আর টিভি এর দিকে দেখছে। আর কমেন্ট পাস করছে।
.
.নিউজে এই মুহূর্তে সাঁঝ কে একটা বড় সড় খবর হচ্ছে। যেটা সত্যি এর সাথে রিপোর্টাররা বাড়িয়ে চাড়িয়ে মশলা মাখিয়ে রসালো খবর বানিয়েছে। সাঁঝ এর পপুলারিটির ফায়দা উঠিয়ে নিজেদের চ্যানেল এর নাম কামিয়ে নিচ্ছে। আজকের প্রতি টা নিউজ চ্যানেল শুধু সাঁঝ এর খবর দেখাচ্ছে।
.
–“সাঁঝ রওশন । দ্য লিডার অফ ব্যাঙ্গালোর গভর্নমেন্ট। অ্যান্ড বস অফ দ্য এস.আর ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রি। যিনি সব সময়ে নিজের ব্যক্তিত্ব ও নিজের সাথে কোনো স্ক্যান্ডেল এর চিহ্ন মাত্র পছন্দ করেন না। বা বলা ভালো তার নামের সাথে কোনো স্ক্যান্ডেল নেই। তিনি সব সময়ে মেয়েদের থেকে দূরে থাকেন। তার বটম লাইন এর বাইরে রাখেন সব সময়ে। কিন্তু সেটা যখন কেউ ক্রস করে ফেলে তার নাম এবং তাকে পুরো উইথ আউট সার্ফেক্সাল দিয়ে ওয়াশ করে দেন। তার সাথে কেউ ছেড়ছাড় করলে তাদের রেহাই দেয় না। এরকম খবর আমরা অনেক শুনেছি। তিনি হট চকোলেট। হ্যান্ডসাম ড্যাসিং চার্মিং কিলার বয় হলেও নিজের সাথে কোনো মেয়ের নাম জুড়তে দেয় নি। তার মানে এটা নয় যে তিনি গে। অনেক মেয়েই তাদের শরীর ও রূপ দেখিয়ে সাঁঝ কে তাদের দিকে আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছেন তাদের নিজেদের করতে চেয়েছেন। কিন্তু ফল তার উল্টো হয়েছে এবং তা খুবই ভয়ংকর। আর আবারো খবর উঠে আসছে কোনো মেয়ে তার সাথে একই কাজ করার চেষ্টা করেছেন।
.
–“তানভী আহুজা । এই মেয়ে আগেও সাঁঝ রওশন কে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছিলেন কিন্তু তাকে সরাসরি রিজেক্ট করে দেন। কিন্ত এবার তাকে দেখা যায় সাঁঝ রওশন এর সাথে। তিনি আহুজা গ্রুপ এর ডিরেক্টর হিসাবে সাঁঝ রওশন এর সাথে মিটিং এর কৌশল করে তার দিকে সাঁঝ রওশন কে টানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু এর ফলাফল হল ভয়ঙ্কর। বর্তমানে তানভী আহুজা এখন মানসিক রোগী। মেন্টাল অ্যাসাইলামে আছে। সাঁঝ রওশন তীক্ষ্ণ ইগনোর এর প্রভাবে আর নিজের রূপ যৌবনের এর ওপর সাঁঝ রওশন এর এড়িয়ে যাওয়া তে অপমানিত হোন। আর তারপরেই তানভী তার মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।
.
–“আবার ও তিনি দেখিয়ে দিলেন তার বটম লাইন ক্রস করলে কি হয়। তার ইগনোরেন্স ও তার তীক্ষ্ণ দৃষ্টি যথেষ্ট কাউকে নিমেষে শূন্যে ছুড়ে ফেলা। আবার ও এই খবর এর মাধ্যমে তিনি সবাই কে সাবধান করে দিলেন। তার কাছে আসার পরিণাম কি হতে পারে।
.
. টিভিতে এইরকম নিউজ দেখে সবাই হতবাক ও তেমন খুশি হয়েছে। এতক্ষণ বসে বসে জাকিয়া আর রুহি মুখ দিয়ে ঝড়ের বেগে অমৃত বান ছুড়ছিলো। আর বাকি গুলো বসে বসে ওদের কান্ড গুলো দেখে হাঁস ছিল। কিন্তু বেলা একদিকে গোম হয়ে বসে আছে। তার মুখে ফুটে আছে রাগের ছাপ। হাত মুখ শক্ত করে বসে আছে। বাকিরা হাসা হাসি করছিলো কিন্তু তাদের বেলার দিকে চোখ পড়তে সবাই অবাক হয়ে যায়। তারা বেলার দৃষ্টি অনুসরণ করে সামনে দেখে বেলা টিভি এর দিকে চেয়ে। যেখানে একসাথে সাঁঝ ও তানভীর ছবি দেখানো হচ্ছে। এবার তারা বুঝতে পারে বোম ব্ল্যাস্ট হতে চলেছে যে কোনও মুহূর্তে।
.
–“ওয়াও জিজ । কি দিলো। উফ। রুহি বেলার দিকে কোনা চোখে তাকিয়ে বলে ওঠে।
.
–” দেখতে হবে না কার ভাই। সারা ভ্রু উচু করে বলে ওঠে।
.
–“আমাদের ভাই হল একদম চকলেট বয়। তাকে ধরা এত সহজ নয়। জাকিয়া বলে ওঠে।
.
–” শালা লুচু মেয়ে তোর চোখ দুটো তুলে আমি মার্বেল খেলব। তোর এত বড় সাহস তুই আমার জিন্দেগির দিকে হাত বাড়াস। কু নজর দিস আমার বরের দিকে। শাকচুন্নী বেহায়া মেয়ে। শরীর দেখিয়ে আমার বর কে পেতে চাস। তোর শরীরে আমি আগুন ধরিয়ে দেবো। শালা কুত্তি মেয়ে। তোকে মেরে ফেলা উচিত ছিল। তুই পাগল হয়ে বেঁচে গেছিস আমার হাতে থেকে নাহলে তোকে আমি কি করতাম আমি নিজেও জানি না। বেলা রাগে কোলে থাকা কুশন টা কে দুমড়ে মুচড়ে ফেলে দেয়। বেলা ফোন তুলে কানে ধরে।
.
–“আকাশ ওই দিনের পুরো ফুটেজ আমার চাই আর সেটা এখুনি। বেলা রাগী ভাবে বলে ওঠে
.
–” ইয়েস ম্যাম । কিন্তু..
.
–“কোনো কিন্তু নয়। আমি যেটা বলেছি সেটা করবে। আর তোমার স্যার এর চিন্তা করো না। ওটা আমি বুঝে নেবো। বেলা মৃদু চিৎকার করে বলে ওঠে।
.
–” ওকে ম্যাম ।
.
. এদিকে বাকি সবাই এতক্ষণ ধরে চুপচাপ বসে বসে বেলার কান্ড কারখানা দেখে যাচ্ছে। বেলার পাগলামি হ্যাঁ বেলার পাগলামি তারা অনেক দিন পর আবার দেখছে। তার সাঁঝ কে নিয়ে পাগলামি করছে। এটা দেখেই বেদ ওম নিশান রুহি যেমন অবাক হয়েছে আবার তেমন খুশি ও হয়েছে। তাদের মুখে হাল্কা হাসির রেস দেখা যাচ্ছে। কিন্তু সারা আর জাকিয়া অবাক হয়ে বেলা কে দেখে যাচ্ছে ।শান্ত মেয়েটা হঠাৎ এমন উড়ালচন্ডির রূপ ধরতে পারে আর মুখ দিয়ে যে এতক্ষণ শান্তির বাণী বের করছিলো। তারা দেখেই শক খেয়েছে।
.
. বেলার এদিকে কোনো হেলদোল নেই সে রাগে ফুসছে। ফোনের আওয়াজ হতে ফোন হাতে তুলে নেয়। আর তার সাথে চোখ মুখের অবস্থা ও পাল্টাতে থাকে। আগের দিনের সেই তানভী আর সাঁঝ এর ভিডিও দেখছে বেলা। তানভী প্রতিটা পদক্ষেপ দেখছে আর সাঁঝ এর নিঃপ্রান হয়ে বসে থাকা দেখছে। ফোন টা ছুড়ে মেঝেতে ফেলে দেয় রাগে। পাশে টেবিলের ওপর থাকা ফ্লাওয়ার ভাস টা ও মাটিতে ফেলে দেয়।
.
–“হারামি কুত্তা কামিনা শালা লুচু ছেলে এই সব দেখতে খুব মজা লাগে হ্যাঁ। মেয়েদের দেখতে ভালো লাগে। তাই তো চুপ করে বসে ছিল। লাগবেই তো মজা। সামনে অত সুন্দর একটা মেয়ে তার সামনে তার ড্রেস খুলছে মজা তো লাগবেই। থাকুক মজা নিয়ে। আমি আর থাকবো না এখানে। এখুনি চলে যাব। অসভ্য জানোয়ার মেয়েদের দেখে বেড়ায় ভেবেছিলাম আমাকে ভালোবাসে কিন্তু না মেয়েদের শরীর দেখে বেড়াচ্ছে। সব মিথ্যে সব নাটক। কিছু বলতে পারিনি যখন ড্রেস খুলছিলো। বলবে কেনো মজা লাগছিল তো। থাক তুই। তোর সাথে আমি আর থাকবো না। চলে যাব এখান থেকে। বেলা রাগে চিৎকার করতে করতে বলে দমদম করে উপরে চলে যায়।
.
. আর এদিকে চুপচাপ বসে আছে বাকিরা। সব কিছু তাদের মাথার ওপর দিয়ে গেছে। তারা বুঝতে পারছে না হঠাৎ করে কি হল। মনে হচ্ছে তাদের ওপর দিয়ে একসাথে টর্নেডো আয়লা আর তার বোন লায়লা আম্ফান ঘূর্নী সব কিছু এক সাথে বয়ে গেছে। তাদের সামনে বেলার ফোন পড়ে আছে মেঝেতে। কুশন ফ্লাওয়ার ভাস সব পুরো কুচি হয়ে পড়ে আছে মেঝেতে। সব কয়জন একে অপরের মুখ দেখে চলেছে। তারা এতক্ষণ এর কান্ড কিছুই বুঝতে পারিনি সব তাদের মাথার ওপর দিয়ে চলে গেছে হঠাৎ করে বেলার এই রাগের মাথা মুন্ডু কিছুই বুঝছে না। তারা একসাথে রিভার্স করে কিছুক্ষণ পিছনে ফিরে যায়। আর তারপরেই সব কিছু একদম জলের মতো পরিষ্কার হয়ে যায় পানির মত। সব কোটা এক সাথে হাসিতে ফেটে পড়ে। বেলার সাঁঝ কে দেয়া গাল গুলো মনে করতে চিৎকার করে হাসতে লেগে যাচ্ছে।
.
–“আজ তো ভাই শেষ। ভাই এর বউ ক্ষেপেছে। সারা কোনো মতে হাসি আটকে বলে ওঠে।
.
–” হ্যাঁ আমার ও তাই মনে হচ্ছে আজকে জিজ কপালে খুব দুঃখ আছে। রুহি বলে ওঠে।
.
–“আমাদের বেলা ক্ষেপেছে মানেই আজকে ঝড় বইবে এই বাড়িতে। বেদ বলে ওঠে।
.
–” চলো আমরা কেটে পড়ি আজকে। নাহলে আজকে জিজ এর করুন অবস্থা দেখতে হবে আমাদের। নিশান বলে ওঠে।
.
. তারপর আবারো হেসে ওঠে সব কোটা। তারা আজকে বিশাল মজা পেয়ে গেছে। তাদের বেলা আবারো আগের মত পাগলামি করছে মানে খুব কষ্ট আছে। সেই সব ভাবতে ভাবতে সব কয়জন পাগল এর মত হাসছে।
————–
এদিকে সাঁঝ গাড়িতে বসে বসে ল্যাপটপে এতক্ষণ এর কান্ড দেখ ছিল। বেলা আকাশ কে ফোন করতে সেটা আকাশ সাঁঝ কে ফোন করে বলে দেয়। আর তারপরেই বাড়ির ফুটেজ দেখতে থাকে সাঁঝ ল্যাপটপ নিয়ে। এতক্ষণ বেলার পাগলামি গুলো দেখে তার ও হাসি পাচ্ছে আবার ভয় ও পাচ্ছে তার পাগলি ক্ষেপেছে মানে তার অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে। তবে তার অনেক আনন্দ ও হচ্ছে বেলার বলা কথা গুলো শুনে আর তার আগের পাগলামি দেখে। মনে হচ্ছে সে তার আগের সেই বেলা কে ফিরে পেয়েছে। আর তাকে দেয়া কাঁচা গাল গুলো শুনে হো হো হো করে হাসতে থাকে। জানে তার পাগলি টা এই গুলো দেখে অনেক কষ্ট পেয়েছে। আরো কিছুটা অভিমান জমা হয়েছে তার রাগ অভিমান এর ঝুলিতে। তাকে তার পাগলি কে মানাতে হবে। সাঁঝ এগুলো দেখছে আর ভাবছে।
.
–“এই জন্য আমি তোমাকে বলতে চাইনি। আমি জানি এইসব দেখলে তুমি কষ্ট পাবে। তুমি আমাকে এখনও ভালোবাসো শুধু সেটা তোমার রাগ আর অভিমান এর নিচে চাপা পড়ে আছে। আর আজ ও পরিষ্কার হয়ে গেলো তুমি আমাকে এখনও পাগল এর মত ভালোবাসো। তবে তোমার মুখে তুই তুকারি আর কাঁচা গাল গুলো সেই ছিল। আমি ভাবতেও পারিনি আমার পাগলিটা রাখলে এমন বন্য হয়ে যায়। আমার সাথে কাউকে সহ্য করতে পারবে না আবার নাকি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে। আজ আমিও দেখি তুমি কেমন করে আমায় ছেড়ে চলে যাও। সাঁঝ মুখে হাসি নিয়ে বলে ওঠে।
—————-
–“তোমার এত বড় সাহস হলো কি করে দিশা তুমি জানতে আমি বেলা কে ভালোবাসি তার পর ও ওকে মারতে তুমি লোক পাঠিয়ে ছিলে। রনি রাগে চিৎকার করে বলে ওঠে।
.
–” হ্যাঁ পাঠিয়ে ছিলাম। বেশ করেছি। তুমিও তো তানভী কে সাঁঝ এর কাছে পাঠিয়ে ছিলে। কেনো? তুমিও তো জানতে আমি সাঁঝ কে ভালোবাসি তাহলে কেনো পাঠিয়ে ছিলে? বল আমাকে। দিশা ও চিৎকার করে বলে ওঠে।
.
–” আমি পাঠিয়ে ছিলাম যাতে সাঁঝ এর সাথে তানভী কে দেখে বেলা সাঁঝ কে ছেড়ে চলে যায়। বুঝতে পেরেছ। রনি দিশার চুল এর মুঠি ধরে কাছে টেনে এনে বলে ওঠে।
.
–” কিন্তু তুমি কি করলে বেলা কে মেরে ফেলতে পাঠালে। আর যদি কিছু সেকেন্ড দেরি হতো তাহলে সেখানে বেলা শেষ হয়ে যেত যদি সেই মুহূর্তে সাঁঝ না আসত। রনি দাঁতে দাঁত চেপে বলে ওঠে।
.
–“আমি কি করে জানবো। তুমি তানভী কে কি জন্য পাঠিয়ে ছিলে। আমাকে কি বলে ছিলে। তাই আমি রাগে বেলা কে মারতে পাঠিয়ে ছিলাম। দিশা নিজের চুল ছাড়াতে নিয়ে বলে ওঠে।
.
–” তুমি আমার সব প্ল্যান ফেল করিয়ে দিয়েছ। সাঁঝ এখন হন্যে হয়ে খুঁজছে তোমাকে। তোমার লোক গুলো কে ও ধরে ফেলেছে। শুধু তোমাকে চিনতে ওর বাকি আছে। তাই সাবধানে আবার ও প্ল্যান সাজাতে হবে।
.
–” তুমি এখন যাও। আর সাঁঝ এর সাথে একটু বেশি ক্লোজ হওয়ার চেষ্টা করো যাতে বেলা সরে আসে সাঁঝ এর লাইফ থেকে। রনি বলে ওঠে দিশা কে।
.
–“এই অপমান এর বদলা আমি নেবো। সাঁঝ কে তো আমি আমার করে নেবো আর তার সাথে ওই বেলা কে ও আমি শেষ করব । কিছুতেই আমি ওকে বাঁচতে দেবো না। ওর জন্য আমার ভাই কে আজও পেলাম না। ওকে তো আমি নিজের হাতে মারব। দিশা মনে মনে বলে ওঠে। দিশা আর কোনো কথা বলে না রুম ছেড়ে বেরিয়ে যায়।
.
–” সাঁঝ কে পাওয়া তোমার হবে না। শুধু একবার তুমি আমার কাজ টা করে দাও তারপর দেখ আমি কি করি। আমার বেলা কে মারতে চাওয়ার জন্য তোমাকে ও আমি শেষ করে ফেলব। বেলা শুধু আমার আর কারো না। তোমাকে আমি এখনও এই জন্য বাঁচিয়ে রেখেছি শুধু বেলা কে নিজের করে পাওয়ার জন্য। বলেই রনি হেসে ওঠে।
.
. দুজন দুজনের মনের মধ্যে প্ল্যান করে রেখেছে। আর মুখে রেখেছে মধুর হাসি। দুজন দুজনের প্ল্যান কষে যাচ্ছে। কিভাবে তারা তাদের কাজ হাসিল করবে আর তারপরে মেরে ফেলবে। দুজন দুজন কে ব্যবহার করছে নিজেদের কাজ মেটানোর জন্য।
.
.
.
. 💝💝💝
.#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_২০
… বেলা রাগে অভিমানে হাজার ও অভিযোগ নিয়ে নিজের জিনিস গোছাতে থাকে। থাকবে না সে এখানে। থাকবে না ওই মানুষের সাথে। সে মেয়েদের দেখে বেড়ায় খালি। হাজার ও গালি দিচ্ছে বেলা সাঁঝকে। তাকে নাকি ভালোবাসে কচু ভালোবাসে। তাকে ভালোবাসে একদম ভালোবাসে না। বলেই বিছানায় বসে পড়ে বেলা। চোখ দিয়ে পানি ঝরছে।
.
. হঠাৎ করে অনুভব করে তাকে পিছন থেকে কাছে টানছে। বেলা জানে এই মানুষটা কে। নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়। ধাক্কা মেরে নিজের থেকে সরিয়ে দেয় সাঁঝকে। দেখে তার দিকে অসহায় মুখ নিয়ে তাকিয়ে আছে সাঁঝ। দু হাত উচু করে ধরে নিজের কান ধরে মানুষটা। সঙ্গে সঙ্গে মুখ ফেরায় বেলা। চোখ দিয়ে তার পানি পড়ছে। বেলা কে অন্য দিকে ঘুরতে দেখেই সাঁঝ উঠে বেলার সামনে হাঁটু গেড়ে বসে। বেলার কোলের ওপর নিজের থুতনি রেখে মুখ উচু করে চেয়ে আছে বেলার দিকে। দু হাত চোখের নিচে পেতে রেখেছে। যাতে চোখের পানি নিচে পড়ে তার হাতে পড়ে।
.
–“বেলা । স্নিগ্ধ মৃদু গলায় ডেকে ওঠে সাঁঝ।
.
. বেলা তবুও কোনো কথা বলছে না চুপ করে আছে। ঠোঁট দুটো তিরতির করে কাঁপছে।
.
–” কথা বলবে না আমার সাথে সোনা। দেখো আমার ভুল হয়ে গেছে। বলেই আবার ও কান ধরতে নেয় সাঁঝ।
.
. বেলা সাঁঝ এর কান ধরার আগেই দুম দাম করে কিল বসায় সাঁঝ কে। নিজেকে আর চেপে রাখতে পারে না বেলা। কাঁদতে কাঁদতে মারতে থাকে সাঁঝ কে। আর সাঁঝ মুখে হাসি নিয়ে সহ্য করে যাচ্ছে।
.
–“তোর সাথে আমার কোনো কথা নেই। থাকবো না আমি। অসভ্য জানোয়ার শুধু মেয়ে লোক দেখে বেড়ানো। তোর এত ঠাটবাট কোথায় গেছিলো শুনি। শুধু আমার বেলায় তোর কথা ফোটে আমার বেলায় যতো জোর জুলুম। তখন তোর কি হয়ে গেছিল। যখন ও কাপড় খুলছিল। কেনো বাধা দিস নি ওকে। নাকি দেখতে ভালো লাগছিল। তোর গায়ের ওপর উঠে পড়েছিলো। কেনো সরিয়ে দিস নি মজা লাগছিল। হ্যাঁ মজা তো লাগার কথা। ঘরের বউ তো শুধু সাজিয়ে রাখার জন্য। কুত্তা লোক একটা। আমি চলে যাব। থাকবো না তোর সাথে। তুই আমাকে একটুও ভালোবাসিস না। ভেবেছিলাম তুই আমায় ভালোবাসিস কিন্তু না আমি ভুল। আমি তো বাজারে মেয়ে। তুই তো বলেছিলি। বেলা সাঁঝ কে মারতে মারতে বলে ওঠে।
.
. এদিকে বেলার শেষের কথা গুলো বুকে বিধছে ছুরির মত। তার বেলার এই চোখের পানি সহ্য হচ্ছে না। তার জন্য মেয়েটা কষ্ট পেয়েছে।
.
–“তুই জানিস না। তোকে অন্য কারোর সাথে দেখলে আমার জ্বলে। আমি জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাই। আমার বুকে রক্তক্ষরন শুরু হয়। তোকে আমি অন্য কারোর সাথে মানতে পারি না। কষ্ট হয় আমার। তাহলে কেনো। আমাকে কষ্ট দিতে কী খুব ভালো লাগে। হ্যাঁ খুব ভালো লাগে আমাকে কাঁদাতে। আর থাকবো না। চলে যাব আমি। থাক তুই তোর সখীদের নিয়ে। আমার তো কোনো দরকার নেই। তাইতো সেইদিন আমার দেয়া ফুলের বুকে টা পা দিয়ে পিষে দিতে ও বাধে নি। বেলা কাঁদতে কাঁদতে বলতে থাকে।
.
. সাঁঝ বেলার কথা গুলো শুনে বেলা কে তুলে নিজের সাথে আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে নেয়। এদিকে বেলা সাঁঝ এর বুকে মাথা রেখে পিঠে কিল ঘুষি মারছে সাঁঝ কে। সাঁঝ কোনো কথা না বলে বেলা কে শান্ত করার চেষ্টা করছে। মেয়েটা অনেক কষ্ট পেয়েছে। তাকে এবার সব কষ্ট ভুলিয়ে দিতে হবে। তার মনে থেকে সমস্ত অভিমান দূর করে দেবে।
.
–“থাকবো না আমি তোমার সাথে অসভ্য লোক একটা। বেলা সাঁঝ এর বুকে মাথা রেখেই বলে ওঠে।
.
–” তাই নাকি তা যাও কে আটকে রেখেছে তোমাকে। সাঁঝ কথাটি বলে আরো শক্ত করে জড়িয়ে নেয় নিজের সাথে বেলা কে।
.
–“যাবো তো চলে যাব আমি। থাকবো না তোমার সাথে। বেলা বলে ওঠে।
.
–” তাহলে আর কি আমি ও তাহলে ওই মেয়ে গুলো…
.
. সাঁঝ কে আর কোনো কথা বলতে দেয় না বেলা বাঘিনীর মত ঝাঁপিয়ে পড়ে সাঁঝ এর ওপর। গলায় আচড়ে নেয় বেলা। মুখ উচু করে সাঁঝ এর ঠোঁটের ওপর হামলে পড়ে। রাগে অভিমানে কামড় দিতে থাকে। সাঁঝ কোনো কথা না বেলা কে শক্ত করে ধরে থাকে। সহ্য করে সব কষ্ট। বেলা কে উচু করে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে রাখে সাঁঝ। যাতে মেয়েটা নিজের রাগ তার ওপর কমাতে পারে। এক হাত সাঁঝ এর গলায় চেপে রেখে আর এক হাত দিয়ে মাথার চুল গুলো ছিড়তে থাকে। আর ঠোঁটে বসায় একের পর এক কামড়। বেলার কামড়ে সাঁঝ এর ঠোঁট রক্তাক্ত হয়ে যায়। তবুও সাঁঝ চোখ চিকচিক করছে তাকে তার বেলা নিজে থেকে স্পর্শ করছে। হ্যাঁ সে তো এটাই চেয়েছিলো যাতে রেগে গিয়ে মেয়েটা তার ওপর রাগ দেখায়। রাগে হলেও সে তো নিজের ইচ্ছায় তার ঠোঁট স্পর্শ করেছে। হোক না সেটা কামড়।
.
. বেলা নিজের রাগ শান্ত হলে সাঁঝ এর থেকে সরে আসতে নিলেই এবার সাঁঝ তাকে চেপে ধরে নিজের সাথে। তাকে কোলে উঠিয়ে নেয়। বেলা সাঁঝ এর কোমরে দু দিকে পা দিয়ে জড়িয়ে নেয়। হাত দুটো মাথায় জড়িয়ে নেয়। সাঁঝ এবার শুষে নিতে থাকে বেলার রসালো ঠোঁট। মিশে যেতে থাকে বেলার কোমল রসালো মিষ্টি ঠোঁটের গভীর থেকে গভীরে। এতক্ষণ পাওয়া বেলার মিষ্টি যন্ত্রণা তাকে আরো মাতাল করে তুলেছে। আরো কঠিন থেকে কঠিন ভাবে বেলার নেশায় ডুবে যাচ্ছে। এই নেশা থেকে সে বেরোনোর উপায় পাচ্ছে না। বেলার থেকে সরে যেতে চেয়েও পারছেনা। মেয়েটা তাকে ভীষণ ভাবে আসক্ত করে ফেলেছে। অতিরিক্ত নেশায় ডুবে গেছে বেলার মাঝে। বেলা ও সমান তালে আজ সাঁঝ এর সাথে তাল মিলিয়ে যাচ্ছে। আজ সে ও ডুবে যাচ্ছে সাঁঝ এর মাঝে। সাঁঝ বেলা কে তার কোলে থাকা অবস্থায় নিয়ে দেয়ালে সাথে চেপে রেখে। মেতে থাকে বেলার মিষ্টি ঠোঁটে। আর এক হাত দিয়ে বেলার পরনে শার্ট এর বোতাম খুলতে থাকে। কাঁধ থেকে নামিয়ে দেয় বেলার শার্ট। বেলা সাঁঝ এর স্পর্শে কেঁপে ওঠে। আরো শক্ত করে সে সাঁঝ জড়িয়ে নেয় নিজের সাথে। সাঁঝ এর পিঠে গলায় বেলার নখের আচড় কেটে যায়। এই মিষ্টি যন্ত্রণা ও যেনো সাঁঝ আজ গভীর ভাবে উপভোগ করছে। দুজনের দম আটকে আসতেই সাঁঝ বেলার ঠোঁট ছেড়ে গলায় মুখ ডোবায় সাঁঝ। ঘাড়ে গলায় পাগলের মত লিক করতে থাকে সাঁঝ। এদিকে বেলার দম বন্ধ হওয়ার জোগাড়। নিশ্বাস নিতে পারছে না। সাঁঝ এর স্পর্শ সে কেঁপে কেঁপে উঠছে। আজ সে সাঁঝ কে বাঁধা দিচ্ছে না। সেও মনে প্রাণে আজকে সাঁঝ কে চাইছে। হ্যাঁ সে আর দূরে থাকতে পারছে না সাঁঝ এর থেকে। সে আবারও ভালোবাসতে শুরু করেছে তার জিন্দেগিকে। সে আবারও পাগল হয়ে যাচ্ছে সাঁঝ এর মাঝে। সাঁঝ বেলার গলায় থেকে বুকের কাছে মুখ নিয়ে এসে থেমে গেছে সাঁঝ। তার মুখের পড়ে দু ফোটা চোখের জল। সাঁঝ নিজের মাথা বেলার গলায় ডুবিয়ে রাখে। বড় বড় নিশ্বাস নিচ্ছে সাঁঝ নিজেকে নিয়ন্ত্রণ এর চেষ্টা করছে। সে নিজেকে আটকে রাখতে পারছে না। কিন্তু তাকে আটকাতে হবে নিজেকে এই মুহূর্তে। সে এই ভাবে বেলা কে নিজের করতে চায় না। বেলা ও নিজেকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে। আজ সে ও সাঁঝ এর ভালোবাসায় ভেসে যাচ্ছিলো। সে ডুব দিয়েছিল সাঁঝ এর ভালোবাসায়। বেলা সাঁঝ কে জড়িয়ে রেখেছে ।সাঁঝ মাথা উঠিয়ে দেখে বেলা চোখ বন্ধ করে বড় বড় নিশ্বাস নিচ্ছে। সাঁঝ বেলার কপালে একটা গভীর চুমু দিয়ে নিজের সাথে নিয়ে বারান্দায় চলে যায়। দোলনায় বসে বেলা কে নিয়ে। যে এখন তার বুকের ওপর গুটি শুটি মেরে পড়ে আছে। তার কাপড় এখনও আউলে আছে। সাঁঝ মুচকি হেসে বেলার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে। বেলা কোনো কথা বলে না। চুপ করে পড়ে আছে সাঁঝ এর বুকে।
.
–“দেখো দুষ্টু মেয়ে কেমন আচড় দিয়েছ আমায় বিড়াল বাচ্চার মত। সাঁঝ এর মুখে চোখে দুষ্টু হাসি।
.
. বেলা কোনো কথা বলে না। তার মুখ লাল হয়ে উঠছে। তার একটু আগের পাগলামি গুলো মনে পড়ে। সে আজ কি পাগলামি টা না করেছে। মনে পড়তে আরো লজ্জায় গুটিয়ে যায় সাঁঝ এর বুকে। আবারও সাঁঝ এর বুকে কামড় বসিয়ে দেয় বেলা।
.
–“দেখো মেয়ে আবার ও আমাকে কামড় দেয়। আচ্ছা আজ কি আমাকে শুধু কামড় দেয়ার ইচ্ছে হচ্ছে না কি। হুম? ফাজিল হেসে বলে ওঠে সাঁঝ।
.
–” বিশ্বাস করো সোনা। আমি আজ পর্যন্ত কোনও মেয়ের দিকে চোখ তুলে তাকায় নি। কোনো মেয়ের শরীর বল আর সৌন্দর্য বল কোনো কিছুই আমাকে আকর্ষণ করতে পারিনি। এই আটাশ বছর জীবনে আমি অনেক বার এইরকম ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি। কিন্তু নিজেকে কখনো বয়ে যেতে দেয় নি। নিজের কাছে অটল ছিলাম। তাদের কে ওই রকম নগ্ন অবস্থায় দেখে ও আমার মধ্যে কোনো প্রকার বিকার হয় নি। সাঁঝ দূরের দিকে তাকিয়ে বলে ওঠে।
.
. বেলার দিকে তাকিয়ে দেখে মেয়ে তার দিকে তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টিতে। হাসে সাঁঝ। বেলার মাথায় গভীর এক চুমু খায় সাঁঝ।
.
–“এক মাত্র তুমি ছাড়া আমি কারোর দিকে চোখ তুলে তাকায় নি। এক মাত্র তোমাকে দেখলে আমার শরীরে আগুন ধরে যেতো। তোমাকে দেখলে আমার শরীরে শিহরন বয়ে যায়। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনা। মন চায় সব কিছু ছেড়ে তোমার মাঝে ঝাঁপিয়ে পড়ি। করে নেই সাঁঝের বেলা। ডুবে যেতে ইচ্ছে করে তোমার ওই গভীর কালো চোখের মাঝে। যে চোখ এর দিকে তাকালে আমি হারিয়ে যাই গভীর গহ্বরে। মন চায় হারিয়ে যায় তোমার ওই কোমল মিষ্টি রসালো ঠোঁটের মাঝে। পান করতে ইচ্ছে করে তোমার ঠোঁটের ওই অমৃত সুধা রস। তোমাকে ছাড়া আর কাউকে দেখলে আমার মনে এমন ইচ্ছে জাগে না। শরীর আসল নয় মনটাই আসল। মনে না ধারণ করে শরীরে ধারণ করলে সেখানে ভালোবাসা টা থাকে কোথায়। সেখানে তো হয়ে যায় পুরো কামনা বাসনা পূরণের একটা মেশিন বা বলতে পারো শরীররি খেলা।। এটা ঠিক যে মনের সাথে সাথে শরীর ও প্রয়োজন। কিন্তু সেটাই থাকে অনেক অনেক ভালোবাসা আবেগ অনুভূতি। কিন্তু মন ছাড়া পুরোটাই শরীর হয়ে যায়। আর আমি যে তোমাকে ভালোবাসি। তোমাকে পাওয়ার জন্য আমি সারাজীবন অপেক্ষা করতে পারি। তোমার শরীর টা বড় নয় আমার কাছে তোমার মন টাই আসল। তোমার মন পেলে আমার কিছু চাইনা। তোমাকে চাই তোমার ভালোবাসা চাই। সাঁঝ আবেগে বলে ওঠে তার গলা বুঝে আসে।
.
. বেলা এক দৃষ্টিতে দেখছে মানুষটা কে। মানুষটা তাকে কতটা ভালোবাসে। নিখাদ প্রেম যেখানে কোনো রকম খাদ নেই একে বারে নিসকাম প্রেম। তাকে ভালোবেসে এত দিন ধরে তার থেকে দূরে থেকেছে। এখনও এতদিন তাকে কাছে পেয়েও তাকে নিজের করে নেয়নি। মানুষটা তার মনে জায়গা পেতে চেয়েছে। শুধু শরীরে নয়। বেলা জেনে গেছে সাঁঝ তাকে অনেক আগে থেকেই ভালোবাসে।
.
. আজ দুপুরে ইউনিভার্সিটি থেকে বাড়ি ফিরে দেখে লন্ড্রি থেকে জামা কাপড় এসেছে। সেগুলো সব কাবার্ডে তুলে রাখ ছিল হঠাৎ চোখ পড়ে সাঁঝ এর ওয়ার্ড্রব এর দিকে সেখানে লক করা আছে। বেলার চোখে এতদিন পড়িনি কারণ সে এদিকে সেইরকম একটা গুরুত্ব দেয় না। দেখে এটা পাসওয়ার্ড লক। কি হতে পারে ভেবে ট্রাই করতে থাকে হঠাৎ কি ভেবে সাঁঝের বেলা মারতে লক খুলে যায়। বেলা পুরো অবাক হয়ে যায় এটা ভেবে। লক খুলতে ভিতরে দেখে একটা ফটো অ্যালবাম। আর তার সাথে একটা ফাইল। যেখানে ভর্তি তার দেয়া চিরকুট গুলো। আর রয়েছে তার কিছু জিনিস। যে গুলো ও হারিয়ে ফেলেছিল। অ্যালবাম খুলতে বেলার চোখ ছানাবড়া হয়ে যায়। সেই প্রথম দেখার থেকে তার ছবি রয়েছে এমনকি এমন অনেক ছবি যে গুলো তার অজান্তেই তোলা হয়েছে। ছবির সাথে সাথে তারিক ও কোথায় সেগুলো লেখা। বেলা একের পর এক দেখছে আর অবাক হচ্ছে। তার চোখের কোণে পানি জমা হচ্ছে। হাতে পড়ে একটা ফটো ফ্রেম যেখানে ওদের দুজনের ছবি রয়েছে। যেখানে বেলা ফুচকা নিয়ে সাঁঝ এর মুখের সামনে ধরে আছে। আর সাঁঝ তার দিকে চেয়ে মুচকি হাসছে। এমন অনেক ছবি আছে দুজনের ওই অ্যালবাম টা তে যেগুলো সব ওর অজান্তেই। আর সব থেকে অবাক হলো তার সাথে সাঁঝ এর প্রথম দিন দূর থেকে তোলা ছবি টা দেখে যেটা ও প্রথম দিন তুলেছিল।
.
. বেলা এইসব দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলো। সাঁঝ যে তাকে পাগলের মত ভালোবাসে অথচ সে জানতেই পারিনি। তার মত সাঁঝ ও সেই প্রথম থেকে ভালোবাসে। কিন্তু সে জানে না। সে এতদিন সাঁঝ এর ওপর রাগ অভিমান নিয়ে ছিল। ঘৃণা টা ঠিক কোনো দিনও আসেনি সাঁঝ এর প্রতি। যা ছিল সব রাগের বহিঃপ্রকাশ। সাঁঝ এর সামনে শুধু বলেছে ও তাকে ঘৃণা করে। বুকে রক্তপাত করে বলেছে কথা গুলো অভিমানে। আজ বুঝতে পারছে সে কত টা ভুল করেছে।
.
. বুঝতে পারে এর মধ্যে কোনো ঝামেলা আছে। কিছু তো অবশ্যই হয়েছে সেটা সে ঠিক জেনে ছাড়বে। কিন্তু এবার আর সে নিজেকে আর তার জিন্দেগিকে কষ্ট দেবে না।
.
–“এই কোথায় হারিয়ে গেলে সোনা। সাঁঝ এর ধাক্কায় সম্ভিৎ ফিরে পায়। দেখে মানুষটা তার দিকে তাকিয়ে আছে। চোখে মুখে উৎকন্ঠা। বেলা কোনো কথা না বলে সাঁঝ এর গালে হাত রাখে। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে মানুষটার দিকে। এই মানুষটা তাকে কতটা ভালোবাসে।
.
–“বাহ একটু আগে গালি দিলে আমাকে তুইতুকারি ও করলে আর এখন সোহাগ করা হচ্ছে। সাঁঝ এর মুখে ফিচেল হাসি।
.
. বেলা কোনো কথা না বলে সাঁঝ এর মুখে ঠোঁটে হাত বুলিয়ে দিতে থাকে। সে জানে সে কি পাগলামি না করেছে।
.
–” এমন করোনা সোনা। আমি নিজেকে আটকে রাখতে পারবোনা। ঝাঁপিয়ে পড়ব তোমার মাঝে। আবেগে চোখ বন্ধ করে বলে ওঠে সাঁঝ।
.
. বেলা দুষ্টু হেসে সাঁঝ এর যন্ত্রণা আরো বাড়িয়ে তোলে। নিজের এক হাত মুখে এর এক হাত বুকে গলায় স্লাইড করতে থাকে বেলা। সাঁঝ নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে না। বুঝতে পারছে পাগলি টা তার সাথে দুষ্টুমি শুরু করেছে। তবে রে মেয়ে।দুষ্টুমি হচ্ছে আমার সাথে দেখাচ্ছি মজা দাঁড়াও। সাঁঝ এর মুখে ও দুষ্টুমি ভরা। সাঁঝ এবার বেলা কে চেপে ধরতে গেলে বেলা টুপ করে উঠে পালায়। এগিয়ে গিয়ে খোলা আকাশের তোলা রেলিং ঘেঁষে দাঁড়ায়। হাত দুটো দুদিকে ছাড়িয়ে দেয়। জোরে নিশ্বাস নিতে থাকে। সাঁঝ বসে বসে মেয়ের কীর্তি দেখতে থাকে।
.
.
. 🎶 দিল তু হি বাতা কাহা থা ছুপা
কিউ আজ শুনি তেরি ধাড়কান পেহলি বার 🎶
.
. বেলা পিছনে ঘুরে দাঁড়ায়। দেখে সাঁঝ উঠে এক পা এক পা করে তার দিকে এগিয়ে আসছে । বেলা ও সাঁঝ এর দিকে এগিয়ে আসে। সাঁঝ এর চারপাশে ঘুরতে থাকে। সাঁঝ এর গলায় জড়িয়ে ধরে। সাঁঝ এর মুখের দিকে তাকিয়ে আবার ও গেয়ে ওঠে।
.
. 🎶 দিল তু হি বাতা কাহা থা ছুপা
কিউ আজ শুনি তেরি ধাড়কান পেহলি বার 🎶
.
. সাঁঝ বেলার মাথার পিছনে ধরে নিজের মুখের সামনে নিয়ে আসে। এক হাতে কোমরে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। বেলার সাথে নিজের গলা মেলায়।
.
. 🎶 হা দিল নে মেরে শুন লি তেরে
দিল কি পূকা~র 🎶
.
. বেলা সাঁঝ এর থেকে ঘুরে দাঁড়ায়। সাঁঝ বেলার কোমরে হাত রেখে নিজের কোলে তুলে নেয়। বেলা সাঁঝ এর কোমরে দু দিকে পা দিয়ে জড়িয়ে পিছনে হেলে যায়।
.
. 🎶🎶 দিল তু হি বাতা কাহা থা ছুপা
কিউ আজ শুনি তেরি ধাড়কান পেহলি বার 🎶
.
. সাঁঝ বেলার দিকে হেলে গিয়ে বেলার গলায় মুখ ডুবিয়ে গেয়ে ওঠে।
.
. 🎶 হা দিল নে মেরে শুন লি তেরে
দিল কি পূকা~র 🎶
.
. বেলা সাঁঝ একে অপরের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নেশা ভরা চোখে। বেলার এক হাত সাঁঝ ঘাড়ে আর এক হাত বুকে। আর সাঁঝ এর এক হাত বেলার কোমরে আর এক হাত বেলার চোখে। তারা ঘুরতে ঘুরতে একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে। বেলা কে ঘুরিয়ে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিয়ে বেলার ঘাড়ে মুখ রেখে নিজের সাথে করে নিয়ে দুলতে থাকে সাঁঝ।
.
. 🎶দুনিয়া ঝুঠি লাগতি হে 🎶
.
. বেলা কে ঘুরিয়ে দেয়। দুজন হাতে হাত রেখে একে অপরের বিপরীত ঘুরতে থাকে। সাঁঝ গেয়ে ওঠে
.
.🎶দুনিয়া ঝুঠি লাগতি হে
স্বপ্না সাচ্চা লাগতি হে 🎶
.
. সাঁঝ বেলার হাতে টান মেরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয়। বেলা সাঁঝ এর মুখে হাত দিয়ে স্লাইড করে। সাঁঝ এর বুকে হালকা ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়। পিছনে মুড়ে গিয়েও সামনে তাকিয়ে গেয়ে ওঠে।
.
. 🎶ছুপ কে তেরে বাহমে
সব কুছ আচ্ছা লাগতা হে 🎶
.
. সাঁঝ বেলার দিকে এগোতে এগোতে গেয়ে ওঠে।
.
. 🎶 এ এইসি হাওয়া
এইসি ল্যাহের
জিসমে সারে বেহ
জাতে হে ইহান 🎶
.
. বেলা সাঁঝ এর থেকে দূরে সরে যেতে গেয়ে ওঠে।
.
. 🎶 ব্যাহে গেয়ি মে কেহ গেয়ি মে
জো ভি মুঝে ক্যাহেনা থা 🎶
.
. 🎶 ব্যাহে গেয়ি মে কেহ গেয়ি মে
জো ভি মুঝে ক্যাহেনা থা 🎶
.
. বেলা কে ধরে ফেলে দুজন দু দিকে ঘুরতে থাকে বেলার মুখে দুষ্টু হাসি। সাঁঝ বেলা কে নিজের বুকের ওপর এনে ফেলে।
.
. 🎶🎶 হা দিল নে মেরে শুন লি তেরে
দিল কি পূকা~র 🎶
.
. বেলা সাঁঝ এর মুখের ওপর নিজের হাত বুলিয়ে নিজের মাথা সাঁঝ এর মাথার ঠেকিয়ে দেয়। সাঁঝ বেলার কোমরে হাত দিয়ে জড়িয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়।
.
. 🎶 🎶 দিল তু হি বাতা কাহা থা ছুপা
কিউ আজ শুনি তেরি ধাড়কান পেহলি বার 🎶
.
. দুজন দুজন কে জড়িয়ে আছে। আজ তাদের মধ্যে সব দুরন্ত দূর হয়ে গেছে। আজ সাঁঝ তার পাগলি তার বেলা কে ফিরে পেয়েছে। এত দিনের তার কষ্ট সার্থক হয়েছে। তার বেলা কে এবার আর কষ্ট পেতে দেবে না। সব কিছু থেকেই বাঁচিয়ে রাখবে। দুজন দুজন কে জড়িয়ে খোলা আকাশের তোলায় দাঁড়িয়ে নিজেদের এতদিনের দুরত্ব মেটাতে থাকে।
.
.
.
. 💝💝💝
.
. চলবে…..
.
. ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন । সবাই নিজেদের মতামত জানাবেন।
(আজকে অনেক বড় করে পার্ট দিয়েছি আর পুরোটাই সাঁঝ বেলার। মিলিয়ে দিলাম দুজন কে। এবার তোমাদের পালা যেমন বড় করে পার্ট দিয়েছি ঠিক তেমনই আপনারা বড় বড় করে কমেন্ট করে আমার দিল খুশ করে দিন। গুনীত এভরিওয়ান ।😊 😊 😊)
. চলবে….
.
. ভুল ত্রুটি মার্জনা করবেন । সবাই নিজেদের মতামত জানাবেন। 😊 😊 😊
.
.
.নাও ভিলেন কে সামনে এনে দিলাম। এবার বল আমাকে কি দেবে??? হুঁ হুঁ 😒😒😒
#