#তোর_প্রেমেতে_অন্ধ_হলাম
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ ২১
সিয়াকে এভাবে হুড়মুড় করে নিচে নেমে আসতে দেখে দোলা আর শিউলিও বেশ অবাক হয়। তবে সিয়া সারা হলরুমে পাগলের মতো করে টিভির রিমোট খুঁজে যাচ্ছে৷ প্রথমে টেবিলের ওপরে তারপর সোফার ওপরে খুঁজছে কিন্তু নেই৷ সিয়াকে এভাবে হন্নে হয়ে কিছু একটা খুঁজতে দেখে শিউলি বলে ওঠে……
শিউলি;; কিরে কি খুঁজছিস এভাবে?
সিয়া;; আরে টিভির রিমোট টা কোথায় গেলো?
দোলা;; ওখানেই তো আছে। তবে তুই এতো হন্নে হয়ে খুঁজছিস কেনো?
সিয়া কিছু না বলেই কাপাকাপা হাতে রিমোট টা নিয়ে টিভি অন করে দেয়৷ আর অন করার সাথে সাথেই চ্যানেলে ব্রেকিং নিউজ হিসেবে দেখানো হচ্ছে যে “সিনিয়র রাজনীতিবিদ সাগর চৌধুরীর আচমকা মৃত্যু”। এটা দেখে সিয়া যেনো একদম সিওর হয়ে গেলো তেমনই দোলার হাত থেকে একটা কাচের গ্লাস পরে ভেঙে যায়। শিউলি অবাক হয়ে কপাল কুচকে তাকিয়ে থাকে। আর আদিবাও বেশ অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সিয়া সোফাতে গিয়ে বসে পরে৷ আসলে সকাল বেলা ফোন করেছিলো সিয়ার বন্ধু সোয়াদ। নিউজ টা একেবারে পাবলিক হয়ে গেছে। কীভাবে কি হলো? কখন মারা গেলেন উনি আর কি করে মারা গেলেন? আরো না জানি কতো শত প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে। দোলা সিয়ার দিকে তাকায়। সিয়া দ্রুত নিজের রুমে চলে যায়। গিয়েই ফোন টা হাতে নিয়ে সোজা অর্নীল কে ফোন দেয়। কিন্তু ধরছে না। বারবার লাগাতার একের পর এক ফোন করেই যাচ্ছে কিন্তু ফোন শুধু বেজেই যাচ্ছে পিক করার কোন নাম-গন্ধ নেই। সিয়া ফোন টা বিছানার ওপর ছুড়ে মারে। জানে যে তার বাবার সাথে অর্নীলের তেমন কোন ভালো একটা সম্পর্ক নেই তবুও না জানি অর্নীল এখন কি করছে! সিয়া ওয়াসরুমে রুমে গিয়ে মুখে চোখে পানি দিয়ে আসে। সিয়া আবার নিচে চলে যায়। নিউজে শুধু সাগর চৌধুরীর লাশ দেখাচ্ছে আর হাবিজাবি কত্তো কথা। সিয়া ভাবে যদি নিউজে অর্নীল কে দেখায়! তবে না সেখানে সাগর চৌধুরী আর তার কিছু গার্ড কে বাদ দিয়ে আর কাউকেই দেখাচ্ছে না। দোলা ব্যাপার টা বুঝে। আসলে সেও বেশ অবাক।
হাহ্, যে কিনা অন্যকে মারার হুমকি দেয় আজ কিনা তারই হায়াত শেষ হয়ে গেলো। দোলা টিভির দিকে তাকিয়ে থাকে। কয়েক মিনিট পর সেই নিউজ পাল্টে অন্য নিউজ দেখায়। দোলা টিভি বন্ধ করে দেয়। সিয়ার দিকে বার কয়েক তাকায়। সিয়ার মুখ টা মলিন। চিন্তার ছাপ স্পষ্ট। যেনো ওর মন টা কেমন আকুপাকু করছে। দোলা তা টের পেয়ে বলে….
দোলা;; সিয়া!
সিয়া;; _____________________
দোলা;; সিয়া
সিয়া;; হ হ্য হ্যাঁ
দোলা;; অর্নীলের কাছে যাবি?
সিয়া তার মায়ের কথায় ফট করে মাথা তুলে তাকায়। সে ভাবে নি দোলা তাকে এমন কথা বলবে।
দোলা;; যাবি?
সিয়া ভরকে গিয়ে দুই পাশে মাথা নাড়ায়। অর্থাৎ না। তারপরেই আবার মাথা নিচে নামিয়ে ফেলে।
দোলা;; সিয়া!!
সিয়া তার মায়ের দিকে তাকায়।
দোলা;; যাবি??
এবার আর সিয়া থাকতে না পেরে ফটাফট মাথা ওপর-নিচ করে যার অর্থ হ্যাঁ।
দোলা;; যা।
সিয়া অবাক হয়, কেননা দোলা অর্নীলের কাছে যেতে বলেছে তাকে। যাই হোক সিয়া বাসা থেকে বের হয়ে পরে৷ রিকশা দিয়ে গিয়েছে। রিকশা বাসার সামনে নামতেই সিয়া দ্রুত নেমে অর্নীলের বাসার ভেতরে চলে যায়। যেতেই দেখে বাড়ির কিছু স্টাফ আর বেশ কিছু লোক দাঁড়িয়ে আছে। সিয়া আস্তে আস্তে ভেতরে যায়। আরো একটু ভেতরে গিয়ে দেখে ফ্লোরে সাগর চৌধুরীর লাশ কে শুইয়ে রাখা হয়েছে। তার পাশেও প্রায় অনেকগুলো মানুষ। সিয়া সবদিকে তাকিয়ে অর্নীল কেই খুঁজে যাচ্ছে। কিন্তু অর্নীল সেখানে হলরুমে নেই। সিয়ার কেমন যেনো একটু ভয়-ভয়ই লাগলো সাগর চৌধুরীর লাশ টাকে দেখে। খানিক বাদে রামু সিয়াকে দেখে। উনি সিয়া কে চিনতেন।
রামু;; সিয়া মা
সিয়া;; আরে কাকা, অর্নীল কোথায়? ওকে খুঁজছি। কোথায় ও?
রামু;; অর্নীল বাবা ওর রুমে। দরজা খুলে না। সব লাগিয়ে রেখে দিছে। আমি অনেক ডাকছি তবুও খুলে না। ডাকলে সাড়াও দেয় না। মা তুমি গিয়ে একটু দেখো না যদি তোমার কথায় সাড়া দেয়।
সিয়া ওপরে অর্নীলের রুমের দিকে তাকায়। তারপর ওপরে এসে পরে। তবে আশ্চর্য ভাবেই দরজা তে ধাক্কা দিতেই দরজা খুলে যায়। সিয়া আলতো পায়ে রুমের ভেতরে চলে যায়। গিয়েই দেখে অর্নীল বিছানার ওপর বসে আছে। করিডরের দরজা টা খোলা। সেদিকেই এক মনে তাকিয়ে বসে আছে। সিয়া ধীর পায়ে এগিয়ে গিয়ে অর্নীলের কাধে হাত রাখে। স্পর্শ পেতেই অর্নীল বুঝে যায় যে এ সিয়া৷ তবুও সে কিছুই বলে না। সিয়া গিয়ে অর্নীলের পাশে বসে পরে। তার হাত টা ধরে বলে….
সিয়া;; অর্নীল, কি করে হলো এইসব? মানে কীভাবে? আর কখন মারা গিয়েছেন আংকেল?
অর্নীল;; কাল রাতেই।
সিয়া;; কাল রাতেই মানে, কীভাবে?
অর্নীল;; বাবার প্রচুর শ্বাসকষ্টের সমস্যা রয়েছে বহু বছর যাবত। বাবা ইনহেলার ব্যাবহার করতো। কিন্তু কাল রাতে আমি বাড়ি ফিরি প্রায় রাত তিন টার দিকে। বাসায় বেশি একটা স্টাফ ছিলো না। রামু কাকা উনার বাসায় চলে যান আর বাবা সবসময় নিজের রুমের দরজা বন্ধ করে থাকেন। আমি এইসবের কিছুই বলতে পারবো না। বাসায় আসি আমি। তবে বাবা কে আর ডাক দেই নি। ভেবেছি এতো রাত হয়েছে হয়তো ঘুমোচ্ছে। আর দরজাও ভেতর থেকে লক করা থাকে। আজ সকালে মর্নিং ওয়ার্কে গিয়েছিলাম আমি। তারপর ওয়ার্ক শেষে বাসায় আসি। এসে দেখি এখনো বাবা তার রুমের দরজা খুলে নি। আমি অবাকই হই কেননা প্রতিদিন ওয়ার্ক শেষে আমি এসে দেখি বাবা উঠে পরেছে। কিন্তু আজ তার ব্যাতিক্রম ছিলো। আমি তখনও ভেবেছি যে বাবা ঘুম। তারও ঘন্টা খানিক পার হয়ে যায় তবুও যখন বাবা দরজা খুলছিলো না তখন আমার কাছে ব্যাপার টা সুবিধের মনে হয় না। আমি ডাক দেই, তবে কথা নেই কোন। একটা সময় বাধ্য হয়েই দরজা ভেঙে ফেলি আর দেখি সারা ঘরের জিনিসপত্র বেশ এলোমেলো হয়ে আছে। কতো গুলো কাচ ভেঙে পরে ছিলো আশে পাশে। আর বাবা, বাবা নিচে পরে ছিলেন। আমি দ্রুত বাবার কাছে যাই। কিন্তু পার্লস চেক করে দেখি কোন রেসপন্স নেই। শ্বাসও চলছিলো না। বুক টা কেমন যেনো ছাত করে উঠে। স্টাফ দের ডাক দেই, সবাই ছুটে আসে। তারপর যত দ্রুত সম্ভব ডক্টর কে কল করি। বাট ডক্টর বলেন বাবা গতকাল রাতেই মারা গিয়েছেন। ইনহেলার খুঁজে পাচ্ছিলেন না, বুকে চাপ দিয়ে ধরেছিলো, শ্বাস প্রায় ফুরিয়েই গিয়েছিলো। এক সময় শরীরের জোরও শেষ হয়ে আসে। নিচে পরে গিয়ে মাথার পেছনেও বেশ আঘাত পান। চিৎকার করার বা কাউকে ডাক দেওয়ার সুযোগ টাও পান নি। মারা গেলেন।
সিয়ার কিছুটা খারাপই লাগে সব শুনে। বেশ কষ্ট পেয়ে তিলে তিলে মরেছেন সাগর চৌধুরী। আর অর্নীল এইসব কিছু এক মনে নিজের সামনে তাকিয়ে তাকিয়েই বলছিলো। সিয়া একটা টুলের মতো কিছু টেনে এনে অর্নীলের সামনে বসে পরে। অর্নীলের দুই গালে হাত রেখে তাকে নিজের দিকে করে। অর্নীল সিয়ার দিকে তাকায়৷
সিয়া;; মৃত্যু অবধারিত। আজ হোক কাল হোক সবাই কেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। যার জন্ম আছে তার মৃত্যুও আছে। প্লিজ মন খারাপ করবেন না। এখন আপনার বাবা নেই এভাবে সবকিছুর ওপর থেকে হাল ছেড়ে দিলে হবে না। সবকিছু আপনাকে সামলাতে হবে। মন খারাপ করবেন না, জানি আমি ব্যাপার টাই এমন। কিন্তু তবুও….
অর্নীল;; তুমি এখানে!?
সিয়া;; আমার এক ফ্রেন্ড আমাকে ফোন করে এই কথা বলেছে তারপর নিউজে দেখি আর এসে পরি৷
রামু;; অর্নীল বাবা!
অর্নীল ঘাড় টা একটু বাকিয়ে দেখে রামু দাঁড়িয়ে আছে।
রামু;; অনেক মানুষ জন আসছে নিচে। সবাই তোমার সাথে দেখা করতে চায়। আর কিছুক্ষন পর বড়োসাব রে মাটি দিতে হইবো।
অর্নীল সিয়ার দিকে তাকায়। সিয়া চোখের ইশারাতে অর্নীল কে নিচে গিয়ে সবার সাথে কথা বলতে বলে৷ অর্নীলও উঠে চলে যায় সোজা নিচে।
অর্নীলের নিচে যেতেই সবাই এক এক করে তার কাছে আসে। নানা ধরনের কথা বলতে থাকে৷ অর্নীল কে অনেকেই শান্তনা বাণী শোনাচ্ছে। যা নিতান্তই তার কাছে বেশ বিরক্তিকর ঠেকছে। তবুও যেহেতু একজনের মৃত্যু হয়েছে তো এই কথা গুলো বলাই স্বাভাবিক, তাই সব মুখ বুজে সহ্য করছে। সবাই যখন কান্নাকাটি তে ব্যাস্ত তখন অর্নীল আরেক বার নিজের রুমে যায়। গিয়ে দেখে দিয়া দুই পা গুটিয়ে বসে আছে
অর্নীল;; সিয়াজান!
সিয়া;; হুমম
অর্নীল;; তুমি বাসায় যাও৷
সিয়া;; কিন্তু আপ……
অর্নীল;; কিছু হবে না এখন যাও তুমি বাসায়৷
সিয়া;; জানাজা কখন?
অর্নীল;; মাগরিবের আজানের পর।
সিয়া;; ওহ
অর্নীল;; সিয়া যাও।
সিয়া অর্নীলের কাছ থেকে এসে পরে। বাড়ির বাইরে বের হয় তখন দেখে রামু কাকা বাগানের সাইডে দাঁড়িয়ে আছে। সিয়া তার দিকে এগিয়ে যায়।
সিয়া;; কাকা!
রামু;; হ্যাঁ মা কও।
সিয়া;; আমি এখন চলে যাচ্ছি। আপনি প্লিজ অর্নীল কে দেখে রাখবেন। যতোই হোক অর্নীলের বাবা। ওকে দেখবেন, দরকার পরলে বুঝাবেন।
রামু;; ও তো বুঝে না। কথাই শুনে না।
সিয়া;; কাকা তবুও আপনি একটু দেখবেন। আমি যাই। আর আমি পারলে এখানে আরো একবার আসবো।
রামু;; আইচ্ছা।
এই বলেই সিয়া চলে যায়। অর্নীল একা একা বসে আছে। তার কাছে একটা ছবি আছে৷ অবশ্য অনেক পুরনো। সেখানে অর্নীল ছোট, সে সামনে দাঁড়িয়ে আছে আর তার পেছনেই অর্নীলের বাবা-মা। সবার হাসিমুখ। অর্নীল ছবি টা বের করে দেখতে লাগে। আগে শুধু মা ছিলো না আর এখন বাবাও নেই। হোক না শুধু মুখে ডাকা বাবা। তাও তো আর রইলো না। অর্নীল ছবি টা রেখে দেয়। ওয়াসরুমে গিয়ে আয়নাতে কতোক্ষন নিজের দিকে তাকিয়ে থাকে। তারপর একসাথে অনেক গুলো পানির ছিটা মুখে দিতে লাগে। এভাবেই দেখতে দেখতে বেশ সময় চলে যায়। তবে অর্নীল এক মিনিটের জন্যও তার বাবার লাশের পাশে গিয়ে বসে নি। দূর থেকেই দেখে গেছে। সবাই নিচে থাকলেও অর্নীল নিজের রুমেই ছিলো। তখন রামু আসে….
রামু;; অর্নীল বাবা৷
অর্নীল;; হ্যাঁ
রামু;; আর কিছুক্ষণ পর মাগরিবের আজান দিবো তার পরেই বড়োসাবের জানাজা। তুমি…….
অর্নীল;; হুমম বুঝে গেছি।
রামু;; হুমমম।
রামু চলে আসে। বেশ কিছু মৌলভি ব্যাক্তি এসেছেন। সাগর চৌধুরী লাশ কে তারাই দেখেছেন অর্থাৎ পাক-পবিত্র করে দিয়েছেন। অর্নীল একেবারে সাদা পাঞ্জাবি পরে। নিচে নেমে আসলে সবাই কেনো জানি অর্নীলের দিকে তাকিয়ে থাকে। সাগর চৌধুরীর লাশ কে তাদের পারিবারিক কবরস্থানেই দাফন করা হবে৷ তাকে খাটিয়া তে শুইয়ে দেওয়া হয়। অর্নীলের কেনো যেনো খুব বেশিই অদ্ভুত লাগছে। হাত কাপছে তার এক অজানা ভয়ে। সে এর আগে কখনো কোন লাশ তার নিজের কাধে নেয় নি। অর্নীলকে এক মনে তাকিয়ে থাকতে দেখে একজন মৌলভি তার দিকে এগিয়ে যান, বেশ কিছু বলেন। অনেক বুঝান। অতঃপর অর্নীল গিয়ে কাধে তার বাবার লাশের খাটিয়া টা তুলে নেয়। যেতে যেতে কবরস্থানে চলে যায়। সাড়ে তিন হাত কবর খোড়া হয়। সেখানে সাগর চৌধুরী কে শুইয়ে দিয়ে মাটি দিয়ে দেওয়া হয়। পরিশেষে জানাজা শেষে সবাই এসে পরে। তবে অর্নীল সেখানে থেকে যায়। মাথায় টুপি পরে ছিলো তা খুলে ফেলে। তার বাবার কবরের দিকে তাকিয়ে আছে অপলকহীন ভাবে। কয়েক মূহুর্ত পর হঠাৎ টুপ করে অর্নীলের চোখ থেকে এক ফোটা অশ্রুবিন্দু গড়িয়ে পরে৷ অর্নীল এসে পরে। শুনেছে কবর থেকে চল্লিশ কদম এগিয়ে এসে পরলে ভেতরে হিসাব-নিকাশ শুরু হয়ে যায়। অর্নীল হাটছে আর গুনছে। চল্লিশ কদমে অর্নীল একদম কবরস্থানের বাইরে এসে পরে। চল্লিশ কদম শেষ হতেই অর্নীল তার পেছন ঘুড়ে আরেক দফা কবরের দিকে তাকায়৷ তারপর এসে পরে। তবে অর্নীল বাসায় যেতেই দেখে সিয়া হলরুমে বসে আছে৷ সিয়া অর্নীল কে দেখে দাঁড়িয়ে পরে। অর্নীল এসে সোজা সিয়াকে জড়িয়ে ধরে।
সিয়া;; অর…….
অর্নীল;; খারাপ লাগছে।
সিয়া;; সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
অর্নীল;; তুমি কখন এলে?
সিয়া;; বেশি না একটু আগেই।
অর্নীল;; এখন আবার আসতে গিয়েছো কেনো? কাল আসলেই হতো।
সিয়া;; না মানে আপনি এখানে একা তো তাই ভাবলাম…..
অর্নীল;; কাল থেকে অফিসে যেতে হবে, আবার সবকিছু সামলাতে হবে৷
সিয়া;; হুমমম।
অর্নীল;; চলো তোমাকে বাসায় দিয়ে আসি।
সিয়া;; আরে ম……..
অর্নীল;; চলো।
অর্নীল সিয়াকে নিয়ে চলে যায়। অর্নীলই ড্রাইভ করছে। অর্নীল এক মনে সামনে তাকিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে। আর সিয়া মাঝে মাঝে তার দিকে তাকাচ্ছে। যে কিনা সারা রাস্তা বকবক করতো সে এখন চুপ। করার কিছুই নেই, নিজেকে মানিয়ে নিতে একটু কষ্ট হবে তবে ইনশাআল্লাহ সব ঠিক হয়ে যাবে। সিয়ার বাসার সামনে চলে আসলে সে গাড়ি থেকে নেমে পরে। সিয়া অর্নীল কে অনেক কিছু বলে। এভাবে একা একা বসে থাকতে মানা করে। মন খারাপ থাকলে যেনো তাকে ফোন দেয় আরো না জানি কত শত কথা। অর্নীল চলে যায়৷ সিয়া বাসায় এসে পরে৷ বাড়ির ভেতরে চলে যায়। ওহ হ্যাঁ, অর্নীলের বাবার জানাজা তে আদিবার হাসবেন্ড জাবেদও ছিলো। আদিবা চলে গিয়েছে। আর জাবেদ কে বাসায় বলে দেয়। তবে আদিবার বাবা অর্থাৎ বিল্লাল তার যেনো নিজের ভাইয়ের খুন কে নিয়ে ক্ষোভ রয়েই গিয়েছে তাই সে জানাজা তে যান নি। দোলা দেখে সিয়া আসছে….
দোলা;; এসেছিস?
সিয়া;; হুমম।
দোলা;; অর্নীল কেমন আছে এখন?
সিয়া;; কোন রকম।
দোলা;; এভাবে একজনের হুট করেই মৃত্যু হলে যে কেউই শকড হয়ে যাবে৷ সেখানে হাজার হলেও অর্নীলের বাবা। যাই হোক দোয়া করি উনার কবরের আজাব মাফ হোক। পরপারে শান্তিতে থাকুক।
সিয়া;; হুমমমম।
।
।
।
।
চলবে~~