#দায়িত্ব
#পর্ব_১০
#আদরিতা_জান্নাত_জুঁই
শায়েরিকে রাস্তার সাইটে পরে যেতে দেখেই শ্রেয়ানের হাত থেকে ঝাল মুড়ি গুলো পরে গেলো… শ্রেয়ান রাস্তার ওপাস থেকে আসার আগেই… বিন্দু শায়েরির মাথার কাছে বসে.. শায়েরির মাথাটা নিজের পায়ের উপর রাখে.. শায়েরির কপাল কেটে রক্ত বের হচ্ছে..বিন্দু অনেকটা ভয় পেয়ে…
” মা ও মা কথা বলো.. প্লিজ কথা বলো.. তুমি চোখ বন্ধ করে কেনো আছো..? তাকাও না প্লিজ…।
ততোক্ষনে শ্রেয়ান চলে এসেছে বিন্দু আর শায়েরির কাছে… শ্রেয়ান এসে বিন্দুর বলা কথা গুলো শুনতে পাই… বিন্দু যে শায়েরিকে মা বলে ডেকেছে… আজ শায়েরির জন্য বিন্দুর চোখে মাকে হারানোর ভয় দেখেছে শ্রেয়ান.. বিন্দু কথা গুলো কেদে কেদে বলছে..বিন্দু শ্রেয়ানকে দেখে শ্রেয়ানের হাত ঝাকিয়ে ঝাকিয়ে…
” পাপা তুমি মাকে বলোনা আমার সাথে কথা বলতে আমার দিকে তাকাতে… পাপা তুমি মাক
শ্রেয়ান বিন্দুর মাথায় হাত রেখে…
” তুমি ডাকো.. তুমি ডাকলে তোমার মা ঠিক সারা দিবে…
বিন্দু হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে চোখের পানি মুছে নিয়ে.. আবার বলতে শুরু করে..
” আমি তো ছোট বেলা থেকে সবার আদর পেয়েছি.. কিন্তু মায়ের আদর কি সেটা তো তুমি আসার পর থেকে বুঝতে পেরেছি… সবাই আমাকে এতো এতো ভালোবাসতো তবুও কিছু একটার অভাব ছিল.. আর সেটা হলো মায়ের আদর আর ভালোবাসার.. সেই আদর আর ভালোবাসা আমি তোমার কাছ থেকে পেয়েছি… একটু একটু করে বুঝতে শিখেছি মা কি? মা কাকে বলে..? প্লিজ আমার কাছ থেকে আমার মায়ের আদর ভালোবাসা কেড়ে নিও না প্লিজ… আমি তোমাকে প্রমিজ করছি আর কখনো তোমার সাথে মিসবিহেভ করবো না.. তোমাকে আমি মা বলে ডাকবো.. তুমি যা বলবে আমি সব শুনবো… আর কখনো অন্য কারো কথা শুনে তোমার সাথে আর পাপার সাথে খারাপ ব্যবহার করবোনা…তুমি একবার তাকাও প্লিজ..
এই টুকু সময়ে চার পাশে কিছু মানুষের ভিড় জমেছে… সেই তখন থেকে শুধু বিন্দুই শায়েরির সাথে একা একা কথা বলে চলেছে… আর শ্রেয়ান বিন্দুর পাশে বসে সব শুনছে… শ্রেয়ান কি বলবে সব তো বিন্দুই বলছে… শায়েরির এমন অবস্থা আর বিন্দুর বলা কথা গুলো শ্রেয়ান নিরব দর্শকদের মতো শুধু দেখছে….।
বিন্দুর এমন মায়া মাখানো কথায় শায়েরির চোখ বেয়ে পানি নেমে এলো… শায়েরির গালে বিন্দুর হাত থাকাতে বিন্দু খুব সহজে পানি জাতীয় কিছু হাতে অনুভব করলো…আর সাথে সাথে শায়েরির দিকে তাকিয়ে দেখে শায়েরি চোখ খুলে তাকিয়েছে..খুশি হয়ে বিন্দু..
” পাপা দেখো মা চোখ খুলেছে.. মার কিছু হয়নি মা একদম ভালো আছে দেখো…
শ্রেয়ান..
” তুমি ঠিক আছো…? কোথায় লেগেছে..?
” হুমম আমি ঠিক আছি..তেমন লাগেনি কোথাও…
বিন্দু..
” তাহলে তুমি এতোক্ষন তাকালে না কেনো..? কথা বললে না কেনো..? জানো আমি কতো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম…
শ্রেয়ান শায়েরিকে উঠিয়ে বসিয়েছে… শায়েরি বিন্দুকে জড়িয়ে ধরে..
” ভয় পাওয়ার মতো কিচ্ছু হয়নি আমার লক্ষিটি… মা তোমায় ছেড়ে কখনো কোথাও যাবেনা প্রমিজ…।
“তোমার খুবব লেগেছে না..?
” না একটু কপালে আর হাতে লেগেছে…।
হ্যাঁ শায়েরির তেমন একটা লাগেনি… আসলে শায়েরি দৌড়ে বিন্দুকে রাস্তার সাইটে আনার সময় নিজের ব্যালেন্চ হারিয়ে পরে যায়… পরে গিয়ে হাতের কুনোই আর কপাল কিছুটা কেটে যায়… শায়েরি তখনই তাকাতে পারতো ইভেন কথাও বলতে পারতো… কেবলই তাকাবে তখনই বিন্দু শায়েরিকে মা বলে ডাকে.. আর কেদে কেদে মনের সব কথা বলে… বিন্দুর মনের সব কথা জানার জন্যই শায়েরি চোখ বন্ধ করে ছিলো…..
শ্রেয়ান আর বিন্দু দুজনে শায়েরির দুহাত ধরে গাড়িতে নিয়ে বসিয়ে দেই..
বিন্দু শায়েরিকে ডক্টর এর কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য…
“পাপা গাড়িটা ডিরেক্ট হসপিটালে নিয়ে যাও…
“কেনো.. হসপিটালে কেনো..?
“কেনো আবার? ডক্টর দেখাতে হবেনা..?
” কাকে ডক্টর দেখাতে হবে..? তোমার কি কোথাও লেগেছে…?
” আরে পাপা আমার লাগেনি… ডক্টর তো দেখাতে হবে মাকে…
কাকে…??
” ওফফফ কানে কি কম শুনো নাকি..? মাকে.. মার তো অনেকটা কেটে গেছে…
শায়েরি বিন্দুর হাত ধরে…
” অনেকটা কাটেনি একটুই কেটেছে… আর ডক্টর এর কাছে যেতে হবেনা.. গাড়িতে ফাস্টএইড বক্স আছে ড্রেসিং করে ব্যানডেজ করে নিলেই ঠিক হয়ে যাবে… আর মেডিসিন হিসেবে তুমি আমাকে যতো বেশি মা বলে ডাকবে ততো তাড়াতাড়ি আমি ঠিক হয়ে যাবো.. বুঝলে…
বিন্দুর নাক টেনে…
বিন্দু শায়েরিকে জড়িয়ে ধরে…
” হুমম বুঝলাম… আর পাপা তুমি এমন হা করে তাকিয়ে আছো কেনো..? মাকে ড্রেসিং করে ব্যানডেজ করে দাও….
” হুমম..হুমম দিচ্ছি… আমি যে আছি ভাগ্যিস তোমাদের চোখে পরেছে…
শায়েরি+বিন্দু..
” হিংসুটে একটা…
শ্রেয়ান শায়েরি কে ড্রেসিং করিয়ে দিয়ে.. ড্রাইভিং সিটে গিয়ে বসে..
” শায়েরি তুমি কিন্তু কাজটা মুটেও ঠিক করোনি.. এখন কিছু বলিনি মানে পরেও যে কিছু বলবোনা এটা ভেবোনা….
” আচ্ছা আচ্ছা যা বলার বইলেন… কিন্তু বাড়িতে গিয়ে এসব ঘটনা আবার বিশ্লেষণ করে বলতে যায়েন না..কেমন…?
” কেনো বলবো না হুমমম একশো…
শ্রেয়ান এর কথা শেষ হওয়ার আগেই শায়েরি…
” হ্যাঁ একশো বার কেনো পাচঁশো বার বইলেন.. তাতে তো আমারই ভালো… মা জোর করে আরো দুদিন রেখে দিবোনি… তখন তো আপনারই অফিস কাজ মিটিং এসব নিয়ে প্রবলেম হবে….
” হয়েছে চুপ থাকো… বলবোনা ওকে…
” হুমম…।
চলবে….
[ বানান ভুল হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন ]