#ধোয়াশা
৪.
এক মুহুর্তের জন্য আমার পৃথিবী থমকে গেছে, আমার হাত পা কাপছে। এত সুন্দর কোনো ছেলে হতে পারে এই ছেলেটাকে না দেখলে বুঝার উপায় নেই।
ফ্ল্যাশব্যাক-
ছেলেটি যখন পিছন ফিরে তাকালো, তার খয়েরী রঙের চোখের দিকে তাকিয়ে আমি হারিয়ে যাই অজানায়। তার মুখে অনেক মায়া, ঠোঁট গুলো গোলাপি গায়ের রঙ সাদা ফর্সা, ঘন কালো চুল।
সানগ্লাস পড়ে ছিলো কিন্তু আমার দিকে তাকানোর সময় সানগ্লাসটি খুলে রেখেছিল যার কারনে তার চোখ দেখতে পেয়েছিলাম।
সে আমাকে এক পলক দেখেই কিছু না বলে চলে গেলো ক্লাসের ভিতর, আর এদিকে আমি তাকে দেখে ফ্রিজড হয়ে গেছি।
-এই, এই মুনতারিন ক্লাসে যাবেনা?
অদ্রির ডাকে হুশ ফিরলো আমার, তাড়াতাড়ি করে ক্লাসের ভিতর গেলাম।
আমি আর অদ্রি পাশাপাশি বসেছি আমাদের ঠিক পাশেই হায়ার সাথে বসেছে সে ছেলেটি, ওইদিকে তাকাতেই চোখাচোখি হয়ে গেলো ছেলেটির সাথে।
একটু পরেই আমাদের হেড স্যার এর সাথে একজন লোক ক্লাসে প্রবেশ করলেন।
হেড স্যার- প্রিয় ছাত্র ছাত্রী, উনি হচ্ছেন আমাদের কলেজের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো.ইবনান
আমরা সবাই তাকে সালাম জানাই এবং দাঁড়িয়ে ওনাকে সম্মান জানাই,
আমি একটা জিনিস খেয়াল করলাম ইবনান স্যারের পা এ একটু সমস্যা আছে তাই উনি কিছুটা এক পায়ে ভর করে হাটছিলেন।
চেয়ারম্যান স্যার- প্রিয় ছাত্র ছাত্রীগন, তোমরা কেমন আছো?
সবাই একসাথে- ভালো আছি স্যার
এরপর উনি বেশ কিছুক্ষন কলেজ নিয়ে আমাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক কিছু বললেন তারপর সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে যাওয়ার সময় আমি খেয়াল করলাম উনি কেমন করে যেনো হায়া, প্রিতি, সুমনার দিকে তাকালেন, সেটা আমি বেশ ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছি।
বলা বাহুল্য ক্লাসের মধ্যে এই তিনজন মেয়ে অনেক স্টাইলিশ এবং সুন্দর বলা চলে।
স্যার চলে যাওয়ার পর কিছু একটা ভেবে আমিও ক্লাসের বাহিরে চলে গেলাম।
“হায়া ওই মেয়েটি কে রে?
কোন মেয়ে?
ওইযে মাত্র বাহিরে গেলো সে
ওহহ আচ্ছা, কিছুটা মুখ বাকিয়ে বললো ওই মেয়ে আমাদের সাথেই পড়ে, আস্ত বেয়াদব একটা, ভুলেও তুমি ওর সাথে কথা বলবেনা, এই বলে মুখ ফুলিয়ে অন্য দিকে তাকিয়ে রইলো হায়া।
অরন্য হচ্ছে হায়ার একমাত্র বড় ভাই। ওরা জমজ ভাইবোন, কিন্তু অরন্য হায়ার থেকে ২মিনিট এর বড়।
হায়ার কথা শুনে অরন্য মুচকি হেসে অন্যদিকে তাকালো, তার বোন যে কেমন সেটা সে ভালো করেই জানে।
আর এদিকে মুনতারিন এই যে গেলো এখনো ফিরছে না দেখে সজল উঠে যাচ্ছিলো ওকে খুজতে কিন্তু তার আগেই মুনতারিন ক্লাসে ফিরে আসে।
কোথায় ছিলে মুন?
সজলের কথায় মুনতারিন অবাক হয়ে যায়।
আরেহ তোমার এত বড় নাম ধরে ডাকতে অসুবিধা হচ্ছিলো তাই মুন বলে ডাকলাম, হালকা হেসে বললো সজল।
ঠিক আছে, সমস্যা নেই ডাকতে পারো তুমি। আমি একটু ওয়াশরুমে গিয়েছিলাম।
ওইদিন যে যার মত ক্লাস শেষ করে বাসায় চলে যায়, এর মাঝে ওদের ক্লাস টেস্ট শুরু হতে যাচ্ছে তাই সবাই সবার মত পড়াশোনায় ব্যাস্ত। অপরদিকে মুনের যেনো এসব নিয়ে কোনো মাথাব্যাথা নেই, সে হন্তদন্ত করে কাকে যে ফোন করলো এবং বলতে লাগলো,
হ্যালো, আসসালামু আলাইকুম ,আমি তো পড়েছি বিপদে,
এখন কি আমায় পড়াশোনা করতে হবে?
পড়াশোনা করতে পারবো না আর, যা করার ট্রেনিংয়ের সময় করে ফেলেছি।
ফোনের অপরপ্রান্ত থেকে শুধু হাসির শব্দ শোনা গেলো।
চলবে…