নিশ্বাস পর্ব ১১

#নিশ্বাস
#পর্ব_১১
#লেখক_Mohammad_Asad

ছাদিক রুমে সুয়ে আছে তখন আম্মু রুমে আসে। আম্মুকে দেখে ছাদিক মিস্টি হেঁসে বলে।
-আম্মু, নিশাত কি করছে এখন?
-কি আর করবে? রান্নাঘরে খাবার তৈরি করছে।
-আম্মু নতুন কাজের লোক তো নিয়েছি।
-তো কি হয়েছে।
-নিশাত সকাল থেকে কিছু খায়নি। তুমি যদি অনুমতি দেও তাহলে মেয়েটাকে রুমে নিয়ে আসি একটু, প্লিজ প্লিজ আম্মু।
-কি বলছিস এইসব। তোকে আজকে দেখতে আসবে মেয়ে পক্ষ। তাদের জন্য নাস্তা বানাতে দিয়েছি। নিশাত ভালো পারে খাবার বানাতে।
-“নিশ্চুপ”
-একদিন খাবার না খেলে কোন সমস্যা হবে না।
-প্লিজ আম্মু এমন করে বলো না।
-ছাদিক ওই কাজের মেয়েটার জন্য এমন ন্যাকামি করছিস কেন?
-আম্মু নিশাত কাজের মেয়ে হলেও যে, একটা মানুষ তাই না। তারও তো ক্ষুধা লাগে।
-আচ্ছা তুই কি কাজের মেয়েটাকে ভালোবাসিস?
-আম্মু ওকে কাজের মেয়ে বলছো কেন? নিশাত তো আমার বউ তাই না।
“আম্মু রেগে দাঁত কটমট করে বলে”
-একটা কাজের মেয়ের জন্য আমার সঙ্গে এমনভাবে কথা বলছিস তুই।
-আম্মু আমি তো তোমার সঙ্গে খারাপ ভাবে কখনো কথা বলেনি। তুমি ভালো করেই যানো আমি তোমাকে কতটা সম্মান করি। এই বিয়েটা আমাকে করতে বলোনা প্লিজ।
-কিইই বললি, বিয়েটা করবি না। তোর বাপ করবে।
-আচ্ছা আম্মু ঠিক আছে আব্বুর বিয়ে দেও।
-তুই আমার মুখের উপর কথা বলছিস!
-নাহ্ তো আম্মু,
-একটা কথা শুনে রাখ। তুই কাজের মেয়েটার সঙ্গে থাকতে পারবি না এইটা আমার শেষ কথা।

আম্মু রুম থেকে চলে গেলে। ছাদিক চিন্তা করতে থাকে। আম্মুর মাথা থেকে বিয়ের ভূত কিভাবে ত্যাঁড়ানো যায়।
“আজকে আবার মেয়ে পক্ষ দেখতে আসবে আমাকে। আমার আম্মুটাকে নিয়ে না পারিনা আমি। যাই দেখে আসি নিশাত কি করছে। না খেয়ে মেয়েটার মায়াবী মুখটা হয়তো শুখে গেছে এতোক্ষণ।

ছাদিক রান্নাঘরে গিয়ে দেখে নিশাত আর খালা কি যেন খাবার তৈরি করছে।
-নিশাত খাবার তৈরি করা হয়েছে।
-এইতো হয়ে এসেছে। আর একটু।
-আচ্ছা তুমি এসো। খালা কি আর খাবার তৈরি করা লাগবে করবে। খালা পারবেন তো।
“কাজের খালাটা বলে”
-জ্বি ভাই পারমু, তোমার বউমনি তো সব খাবার তৈরি করছেনি।
“ছাদিক মিস্টি হেঁসে নিশাতের চোখের দিকে তাকায়। দেখে মেয়েটার মুখটা একদম শুখে গেছে।
-খালা তাহলে তুমি কি কি খাবার তৈরি করতে হবে করো ওকে।
-আচ্ছা ভাই ঠিক আছে।

ছাদিক নিশাতের হাত ধরে রুমে নিয়ে আসে। রুমের দরজাটা ভিতর থেকে লেগে দিয়ে বলে।
-এখন কয়টা বাজে ঘড়িতে দেখেছো?
-“নিশ্চুপ”
-১১;৩৫ বাজে, না খেয়ে কাজ করছিলে কেন? মুখটা একদম শুখিয়ে দিয়েছো।
“নিশাত চুপটি করে মাথাটা নিঁচু করে আছে।”
-কিছু বলছো না কেন?
“নিশাত ছাদিকের চোখের দিকে তাকিয়ে মায়াবী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে।”
-আমি তো কাজের মেয়ে তাই না, আমার বুঝা উচিৎ ছিলো। এই কয়েকদিন আপনাদের মুখের উপর কথা বলেছি। তারজন্য অনেক ক্ষমা চাইছি, পারলে ক্ষমা করে দিবেন দয়া করে।
“ছাদিক নিশাতের চোখের দিকে বিরক্তর দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে”
-ধুর তুমি সবসময় এইসব উটভট কথা বলো কেন বলতো। সেই সকাল থেকে না খেয়ে আছো তুমি। এসো খাবারগুলো খেয়ে নিবে।
-আমার তো ক্ষুধা পাইনি।
-ইসস তাই।
-হুম তাই,
-এই দেখো তোমার ন্যাকামি দেখার টাইম নেই আমার। গোসল করে নামাজ পড়তে মসজিদে যেতে হবে আমাকে।
-“নিশ্চুপ”

ছাদিক মেয়েটাকে খাটে বসে দেয়। টেবিল থেকে পরাটার সঙ্গে আলু ভাজি গুছে নিশাতের মুখে দেয়। নিশাত মুখটা বন্ধ করে আছে।
-মুখটা খুলো দেখি।
-“নিশ্চুপ”
-আমার বকবক করা বউটা চুপ করে আছে কেন?
-আপনি বিয়েটা করে নিন।
-তাই
-হুঁ তাই,
-আচ্ছা বিয়েটা করে নিবো। তুমি মুখটা খুলো দেখি। হয়তো আর কখনো তোমাকে খাইয়ে দেওয়া হবে না।
-হুঁ

ছাদিক মেয়েটার মুখে পরাটার সঙ্গে আলু ভাজি খাইয়ে দেয়। নিশাতের খাবার খাওয়া শেষ হলে ছাদিক গোসল করতে যায়। গোসল করে আবার মসজিদে যেতে হবে।

বিকেল ৪;০৪ মিনিট, মেয়ে পক্ষ আসে নিশাতের বাড়িতে। ডাইনিং রুমে বসতে দেয় আম্মু। অনেক গল্প করতে থাকে।
এদিকে ছাদিক রুমের মধ্যে কাপড় পড়ে বের হচ্ছে। নিশাত রুমে এসে মাথা নিঁচু করে বলে।
-এই আপনাকে দেখতে এসেছে মেয়ে পক্ষ। আম্মা যেতে বললো আপনাকে।

“চলবে?”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here