নিশ্বাস পর্ব ১০

#নিশ্বাস
#পর্ব_১০
#লেখক_Mohammad_Asad

“নিশাতের কান্নায় আওয়াজ পেয়ে। ঘুম থেকে জেগে যায় ছাদিক। চোখ কাচলিয়ে কচলিয়ে জানালার দিকে তাকিয়ে দেখে নিশাত দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কান্না করছে।

ছাদিক বিছানা থেকে উঠে নিশাতের পার্শে দাঁড়িয়ে থাকে। নিশাতের কাঁধে হাত দিলে নিশাত চমকে উঠে।
ছাদিকের চোখে নিশাতের চোখ পরলে ছাদিক বলে।
-নিশাত কি হয়েছে তোমার? কান্না করছো কেন?
“নিশাত কিছু বলছে না। হঠাৎ করে জরীয়ে ধরে ছেলেটাকে। ছাদিক হা হা করে হেঁসে দেয়।”
-আরে নিশাত কি হয়েছে তোমার কান্না করছো কেন?
“নিশাত কান্না করেই যাচ্ছে শুধু, কিছুই বলছে না। ছাদিক তখন নিশাতের চোখের জলগুলো মুছে দিয়ে বলে”
-কি হয়েছে তোমার কান্না করছো কেন? কেউ কি বকা হয়েছে তোমাকে?
“নিশাত কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলে”
-নাহহ্
-তাহলে কান্না করছো কেন? আদর চাই তোমার।
“নিশাত লজ্জায় লাল হয়ে বলে”
-এইসব না, আপনি না খুব সইতান একটা ছেলে, সবসময় শুধু দুষ্টুমি।
“ছাদিক নিশাতের চোখের দিকে তাকিয়ে মিস্টি হেঁসে মেয়েটাকে কোলে তুলে নেয়।”
-তাহলে কান্না করছিলে কেন?
-“নিশ্চুপ”

ছাদিক মেয়েকে কোলে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
জানালার পার্শে। নিশাত ছেলেটার গলা দুই
হাত দিয়ে জরীয়ে ধরে আছে। নিশাত
ছেলেটার মুখটার দিকে তাকিয়ে বলে।
-আচ্ছা আপনি আমাকে ভালোবাসেন?

ছাদিক এবার মেয়েটাকে কোল থেকে নেমে দেয়। নিশাত মুখটা ছোট করে বলে!
-আপনি আমাকে ভালোবাসেন?
-“নিশ্চুপ”
-কি হলো কিছু বলছেন না যে।
-আচ্ছা আমাকে রেখে, অন্য একটা মেয়েকে বিয়ে করতে পারবেন?
-“নিশ্চুপ”
-আপনি চুপ কেন?
-নিশাত কি হয়েছে তোমার। এমন ভটভট প্রশ্ন করছো কেন?
“নিশাত কান্না করে বলে”
-আমার সঙ্গে কেন এমন করলেন আপনি?
-“নিশ্চুপ”
-আমার সঙ্গে এই অভিনয়টা করতে পারলেন।
-“নিশ্চুপ”
-আমি যানি তো, আপনি আমাকে ভালোবাসেন না। আমি তো সামান্য কাজের মেয়ে। আমাকে কি ভালোবাসা যায়। আমাকে ভালোবাসলে তো সম্মান চলে যাবে আপনার। আমাকে ভোগ করার সময় তো সম্মানের কিছুই হয়না।
“ছাদিক নিশাতের গালে দুইটা থাপ্পড় দিয়ে নিজের বুকে টেনে নেয়।”
-এই কি হয়েছে তোর। এইসব বলিস কেন? হ্যাঁ আমি তোকে ভালোবাসতাম না তবে এখন তো ভালোবাসি। অনেক ভালোবাসি। এইসব আজেবাজে কথা বলছিস কেন?

নিশাত ছাদিকের কাছ থেকে নিজেকে ছেঁড়ে নিয়ে কান্না করে বলতে থাকে।
-এই কথাগুলো বলছেন না। এই কথা গুলো আপনার মন থেকে না। আমি সব বুঝে গেছি। আপনার কথাগুলো মনগড়া। আপনার মা আপনার বিয়ে দিলে ঠিক বিয়ে করে নিবেন।
“ছাদিক এবার দীর্ঘশ্বাস ছেঁড়ে বলে
-ঠিকি বলেছো। আমি তোমার সঙ্গে ছলনা করেছি।
“নিশাত এবার কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলে”
-এইবার শিকার করলেন তো।
“ছাদিক মিস্টি হেঁসে বলে”
-কি শিকার করলাম?
-কি আবার, আপনি আমার সঙ্গে ছলনা করেছেন।
-ওহ হ্যাঁ মনে পরেছে। তবে সত্যিটা কি যানো!
-সত্যিটা কি?
-আমি তোমাকে ভিষণ ভালোবেসে ফেলেছি।
-উঁহু কত চিঁটার,
-কে বললো আমি চিঁটার?
-আমি বললাম।

নিশাত মেয়েটাকে আবার কোলে তুলে নেয়। নিশাতের কষ্টগুলো কেন যানি হারিয়ে যায় ছেলেটাকে দেখলে। আজকে অন্য একটা মেয়ে তার বরকে দেখতে আসবে সবকিছু যেন ভুলেই গেছে।
ছাদিক মেয়েটাকে কোলে তুলে নেয়। নিশাত লজ্জায় মুখটা লাল করে দিয়েছে। কিছু বলতে পারছে না। ছাদিকের বুকে মুখটা লুকিয়ে রেখেছে। ছাদিক মেয়েটাকে বিছানায় সুয়ে দিয়েছে।
ছাদিক নিশাতের ঠোঁটের সঙ্গে নিজের ঠোঁট লাগিয়ে দিতে যাবে, তখন দরজায় কে যেন এসে ডাকতে থাকে।
-এই দেখুন না দরজায় কে এসেছে।
-আসুক না চলে যাবে আবার। তোমাকে একটু আদর করি।
-ইসস এখন না। আগে দরজাটা খুলুন।
-নাহহ্ আগে আদর করি।
-ধুর পাজি ছেলে।

নিশাত কোনো উপাই না পেয়ে। ছাদিকের বুকে চিমটি কেঁটে দেয়। ছাদিক নিশাত উপর থেকে উঠে গেলে নিশাত দৌড়ে দরজাটা খুলতে যায়। এদিকে ছাদিক মন খারাপ করে সুয়ে আছে।
নিশাত দরজাটা খুলে দেখে আম্মা দাঁড়িয়ে আছে। মাথাটা নিঁচু করে বলে নিশাত।
-আম্মা আপনি এইসময়।
“আম্মু একটু রেগে বলে”
-তো কোনসময় আসতে বলছো? ঘরিতে দেখেছো কয়টা বাজে এখন। ছেলেটা তো ঘুম থেকে উঠেছে দেখছি, সকালের নাস্তা খেতে দিয়েছো?
-নাহ্
-ছেলেটাকে খাবার দিয়ে রান্নাঘরে একটু এসো। বিকেলে আবার মেয়ে পক্ষ আসবে। অনেক খাবার বানাতে হবে।

আম্মু কথাগুলো বলে দরজার কাছ থেকে চলে যায়। নিশাত মন খারাপ করে দরজাটা লেগে দেয় ভিতর থেকে।
ছাদিকের পার্শে এসে মাথা নিঁচু করে বলে নিশাত।
-এই যে উঠুন, ফ্রেস হয়ে আসুন।

“ছাদিক আবার দুষ্টুমি করে মেয়েটাকে নিজের বুকে টেনে নেয়। নিশাত ছেলেটার বুকে কিল ঘুশি দিয়ে বলে”
-আজকে আপনাকে মেয়ে পক্ষ দেখতে আসবে। আর আপনি আমার সঙ্গে এমন করছেন কেন?
-আসতেই পারে সমস্যা কি?
-সমস্যা মানে? সমস্যা কি সেটা বুঝতে পারছেন নাহ্?
-নাহ্ আমি বুঝতে পারছি না কিসের সমস্যা তোমার। মেয়ে পক্ষ আমাকে দেখলেই কি বিয়ে হয়ে যাবে নাকি?
-মানে?
-কি আবার মানে? এই বিয়ে আমি করছি না।
-আম্মা যে বলে গেলো।
-আম্মু যদি জোর করে, তাহলে তো বিয়েটা করতেই হচ্ছে।
-এইইই মানে!
“ছাদিক মিস্টি হেঁসে নিশাত নাঁকটায় টেনে দিয়ে বলে।”
-কি আবার মানে!, তুমি এতো মানে মানে করো কেন বলতো? আমার আরেকটা বউ আসলে সমস্যা কোথায়।
-আপনি আরেকটা মেয়ের সঙ্গে থাকবেন দেখলে আমার অনেক কষ্ট হবে। আপনি প্লিজ এমনটা করবেন না।
-আচ্ছা পেত্নি ঠিক আছে, এই বিয়ে করবো না আমি। এবার আমার উপর থেকে উঠো, ফ্রেঁস হতে হবে। সকালের খাবারগুলো নিয়ে এসো তুমি।
-আচ্ছা ঠিক আছে।

নিশাত ছাদিকের বুকের উপর থেকে উঠতে যাবে তখন ছাদিক আবার শক্ত করে জরীয়ে ধরে মেয়েটাকে।
-এই আমাকে উঠতে বললেন আপনি, আবার দুষ্টুমি শুরু করেছেন তাই না।
-ইসস স্যরি।
.
.
নিশাত রুম থেকে চলে গেলে। ছাদিক বিছানা থেকে উঠে ড্রেসিন টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে আয়নার দেখে।
ছাদিকের বুকের ডান পাশটায় নিশাতের লিপস্টিকের রংঙ লেগে আছে। ছাদিক মিস্টি হেঁসে ওয়াশ রুমে চলে যায়। ফ্রেস হয়ে এসে দেখে মেয়েটা মেঝেতে সকালের খাবার গুলো সাজিয়ে রেখেছে।
তবে, নিশাতের চোখে জল দেখতে পায় ছাদিক। মেয়েটা এতো যে কান্না করতে পারে, হায় আল্লাহ্। এইসব ভাবতে থাকে ছাদিক। মেয়েটাকে যখন জিজ্ঞেস করতে যাবে কেন কান্না করছো। নিশাত তখন বলে।
-খাবার দিয়েছি খেয়ে নিন। আমি রান্নাঘরে গেলাম আম্মা ডেকেছে।

নিশাত রুম থেকে চলে যাবার সময় ছাদিক অনেকবার ডেকে উঠে। মেয়েটা সকাল থেকে কিছুই খায়নি ছাদিক ভালো করেই যানে। তাই খেয়ে যেতে বলে।

এমনিতেই নিশাতের একটু দেরি হয়েছে বলে আম্মু মেয়েটাকে অনেক গালি দিয়েছে। তারমধ্যে নিশাত যদি ছাদিকের সঙ্গে খাবার খেতে বসে তাহলে আবার গালি খেতে হবে। এই ভয়ে রুম থেকে চলে যায় নিশাত।

রান্নাঘরে গিয়ে আম্মুর সঙ্গে মেহমানদের জন্য খাবার বানাতে থাকে নিশাত। এক পর্যায়ে আম্মু বলে।
-নিশাত,
-জ্বি আম্মা বলেন।
-মেয়ে পক্ষ বাড়িতে আসলে। নিজেকে এই বাড়ির বউ বলে পরিচয় দিবি না।
-“নিশ্চুপ”
-কথাটা যেন মাথায় থাকে। কাজের মেয়ে কাজের মেয়ের মতোই থাকবি।
-আচ্ছা আম্মা।

“চলবে?”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here