#নিশ্বাস
#পর্ব_৭
#লেখক_Mohammad_Asad
ভাবি কেন কান্না করছে নিশাত তা ভালো করেই যানে। ভাবির বাচ্চা হয়েছিল ৩বছরের ছেলেটা মারা যায় একটা রোগে। তাই কান্না করছে ভাবি। তিন বছরের মায়াবী মুখটার কথা মনে করে।
নিশাত তিন্নি ভাবির পার্শে বসে মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে। তিন্নি ভাবি চোখে জল নিয়ে তাকিয়ে আছে ছবিটার দিকে। ডক্টর বলেছে তিন্নি ভাবি আর বাচ্চা দিতে পারবে না।
-ভাবি তুমি কান্না করছো কেন?
“তিন্নি ভাবি কাঁদো কাঁদো কন্ঠে বলে”
-নিশাত দেখো আমার বাবুটা আমাকে রেখে কেমন করে চলে গেছে। ওর আম্মুটার কষ্ট হয়না বলো।
-“নিশ্চুপ”
“তিন্নি ভাবি নিশাতের বুকে মাথা দিয়ে হুঁহুঁ করে কান্না করতে থাকে।
.
.
দুপুরের ভাত খাওয়া শেষ হলে নিশাত নিজের রুমে আসে। দরজাটা ভিতর থেকে লেগে দেয়। সারাদিন কার্জকর্ম করে মেয়েটা চোখে একটু হলেও ঘুম এসেছে। বিছানায় একটা বালিশ নিয়ে সুয়ে পরে নিশাত।
বিছানায় সুয়ে কেন যানি ঘুম আসছে না। ছাদিক পাগলটার কথা খুব মনে পড়ছে। একটু কথা বলতে পারলে মনটা ভালো হয়ে যেত। নিশাত আবার বিছানা থেকে উঠে, জানালার পার্শে দাঁড়িয়ে থাকে। ইসস আমার যদি একটা ফোন থাকতো তাহলে পাগলটার সঙ্গে একটু কথা বলতে পারতাম।
নিশাতের মনটা কেন যানি সবসময় ছাদিক ছাদিক করতে থাকে। একলা রুমে বসে ভালো লাগছে না মেয়েটার। নিশাতের একটা বাঁটন ফোন ছিলো তবে কয়দিন আগে ভেঙে গেছে। তাইতো ছেলেটার সঙ্গে কথা বলতে পারছে না নিশাত।
ভাবির রুমে যায় নিশাত। দরজাটা ভিতর থেকে লাগা ছিলো না, তাই ভিতরে ঢুকে যায়। নিশাত দেখে ভাবি বিছানায় সুয়ে আছে। ভাবির পার্শে বসে আছে নিশাত। তিন্নি ভাবি চোখ খুলে দেখে নিশাত পার্শে বসে আছে।
-আরে নিশাত তুই এখানে কখন আসলি?
-এই তো ভাবি, একটু আগে। তুমি ঘুমাও, আমি হাত বুলিয়ে দিচ্ছে মাথায়।
-তুই কত ভালো রে নিশাত।
“তিন্নি ভাবি আবার যখন চোখ বন্ধ করতে যাবে তখন নিশাত মুখটা গোমড়া করে বলে”
-ভাবি একটা কথা বলবো!
-হ্যাঁ নিশাত বল।
-তোমার ফোনটা একটু দিবে?
-কেন নিশাত?
-না মানে?
-ওহ বুঝেছি।
-কি বুঝছো ভাবি।
-ছাদিকের সঙ্গে কথা বলতে ইচ্ছে করছে তাই না।
-হুঁ
“তিন্নি ভাবি বিছানা থেকে উঠে, টেবিলে রাখা ফোনটা নিশাতের হাতে দেয়।”
-এই নে ফোন যত ইচ্ছে কথা বল।
নিশাত ফোনটা নিয়ে নিজের রুমে চলে আসে। এসেই পাগলটার ফোনে কল দেয়।
ওপাশ থেকে বলে উঠে।
-আসসালামু আলাইকুম ভাবি কিছু বলবে!
“নিশ্চুপ”
“ছাদিক মনে করেছে তিন্নি ভাবি ফোন করেছে। নিশাত লজ্জায় কথা বলতে পারছে না।”
-ভাবি কথা বলছো না কেন? কিছু হয়েছে বাসায়?
“নিশাত ধির কন্ঠে বলে”
-আমি ভাবি না, আমি নিশাত।
“ছাদিক এবার হাহা করে হেঁসে উঠে”
-বাবারে আমার বউটা দেখছি ফোন করেছে।
-উঁহু না,
-কি না হুম। এতোক্ষণ চুপ ছিলে কেন?
-এমনি,
-ভাবির ফোন থেকে কল করেছে কেন? তোমার একটা ফোন ছিলো তো।
-আমার ফোনটা নষ্ট হয়ে গেছে।
-ওহ আচ্ছা।
-হুঁ
-ভাত খেয়েছো তুমি?
-হুম খেয়েছি আপনি খেয়েছেন? আপনার ব্যাগে টিফিন দিছিলাম।
-হুম খেয়েছি। তোমার হাতের রান্না অসাধারণ।
-থান্কিউ
-আচ্ছা বাই নিশাত, আমাকে কাজ করতে হবে।
-আচ্ছা শুনুন।
-হুম বলো।
-কখন বাসায় ফিরবেন?
-রাত ৮;৩০ মিনিটে!
-ঠিক আছে তাহলে বাই ভালোভাবে বাসায় ফিরবেন।
-ঠিক আছে পাগলীটা।
ছাদিক ফোনটা কেঁটে দিয়ে অফিসের কার্জ করতে থাকে। নিশাত বিছানায় সুয়ে একটু বিশ্রাম নিচ্ছে। বিকেল ৩;৪৫ মিনিটে ঘুম ভেঙে যায় নিশাতের।
“ইসস ভাবির ফোনটা দিয়ে দিয়ে আসতে ভুলেই গেছি। দিন দিন আমি না খুব মন ভোলা হয়ে যাচ্ছি।
নিশাত রুমের বাইরে বের হতে যাবে তখন বাবার সঙ্গে দেখা হয়ে যায় নিশাতের।
-আরে নিশাত কোথায় যাচ্ছিস?
-এই তো বাবা ভাবির রুমে যাচ্ছি ফোনটা দিয়ে আসতে।
-ওহ আচ্ছা তাহলে যা। তোর রুমে আছি আমি তোর সঙ্গে একটু কথা আছে।
-আচ্ছা ঠিক আছে বাবা।
নিশাত ফোনটা নিয়ে যেতে যেতে ফ্লোরে ফেলে দেয়। ভুল করে হাত থেকে পড়ে যায় মেয়েটার। নিশাত ফোনটা তাড়াতাড়ি করে ফ্লোর থেকে উঠিয়ে নেয়। ভয়ে কাচুমাচু হয়ে গেছে মেয়েটার মুখটা।
ফোনটা ফ্লোর থেকে উঠিয়ে দেখে ফোনের গাল্সটা ভেঙে গেছে। নিশাত ভয়ে কান্না করে দেয়। তিন্নি ভাবি অনেক রাগি একটা মেয়ে তারমধ্যে আবার দামী ফোন।
নিশাত ভয়ে ভয়ে তিন্নি ভাবির রুমে ঢুকে টেবিলে ফোনটা রেখে নিজের রুমে চলে আসে। বুকটা ভয়ে ধুক ধুক করছে। নিশাত নিজের রুমে এসে দেখে জানালার পার্শে দাঁড়িয়ে আছে আব্বু। নিশাত রুমের মধ্যে প্রবেশ করে বলে।
-বাবা আপনি দাঁড়িয়ে আছেন কেন? টেবিলের পার্শের চেয়ারটাতে বসেন।
“আব্বু মুচকি হেঁসে বলে।”
-না মা থাক, তোমার সঙ্গে একটা কথা বলতে এসেছি বলেই চলে যাবো।
-জ্বি বাবা বলেন।
“আব্বু কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলে”
-শুনো তাহলে ছাদিকের আম্মু, পাগল হয়ে গেছে ছেলেটার বিয়ে দিবে বলে।
“নিশাত মাথাটা নিঁচু করে বলে।”
-বাবা কি বলছেন এইসব।
-হ্যাঁ মা ঠিকি বলছি। কালকে দেখতে আসবে ছেলেটাকে মেয়ে পক্ষ।
“চলবে?”