#নয়নতারা_২০
#জেরিন_আক্তার_নিপা
[যাদের কাছেই গল্প পৌঁছুবে দয়া করে রেসপন্স করবেন]
🌸
নক্ষত্রকে ঘিরে সন্ধ্যা থেকেই সবাই নয়নের ঘরে বসে আছে। বাড়ির বাচ্চা গুলোর সাথে নক্ষত্রর প্রথম থেকেই ভাব ছিল। ওরা নক্ষত্রর কাঁধে উঠছে, পিঠে চড়ছে। নক্ষত্রও যেন বাচ্চা গুলোর সাথে বাচ্চা হয়ে গেছে। সে হাসছে, ওদের কাতুকুতু দিচ্ছে। নয়ন দরজার সামনে এসে দাঁড়াল। বাচ্চা গুলোর এই হুড়োহুড়ি ভালো লাগে না নয়নের। তার ঘরে এসে কেউ কিছু ধরলে কড়া করে ধমক দিয়ে দেয়। আজ তো নক্ষত্র বাচ্চাগুলোকে নিয়ে তার ঘরে তুফান চালাচ্ছে। সব উলটপালট করে রেখেছে। বিছানার চাদর অর্ধেক নিচে ঝুলে আছে। ড্রেসিংটেবিলের সব জিনিস এলোমেলো। বালিশ ফ্লোরে পড়ে আছে। নক্ষত্রর দিকে তাকিয়ে নয়ন এতক্ষণ ঘোরের মধ্যে ছিল। কী সুন্দর হাসি! লোকটা এত সুন্দর করে হাসতে পারে! হাসলে উনাকে কত নিষ্পাপ দেখায়। নয়ন আগে কেন লক্ষ করেনি? ওর অনেক গুলো খারাপ দিকের মাঝে ভালো দিকও আছে। এই যেমন এখন বাচ্চাদের সাথে নিজেও কেমন বাচ্চামি করছে।
নক্ষত্র নয়নকে দেখে। নক্ষত্রর চোখে চোখ পড়লে নয়নতারা নিজেকে সামলে নেয়। মনে মনে নিজেকে ধমকায়।
—-তুই এতটা বেহায়া কবে হয়েছিস নয়নতারা! চুরিচুপি একজন মানুষকে দেখে যাচ্ছিস। চোর মেয়ে।”
নক্ষত্র একবার পুরো ঘরটার বর্তমান অবস্থা দেখে নিল। তারপর নয়নের দিকে ফিরল। বাচ্চা ছেলে না বুঝে কোন অপরাধ করে ফেলে ধরা পড়ার পর যেভাবে তাকায় তার চোখেও ঠিক সেই চাহনি। ঠোঁট টেনে হাসে। মনে মনে ভয় পায়, এই বুঝি তারা চেঁচিয়ে উঠবে। বলবে, এক্ষুনি বেরিয়ে যান আমার ঘর থেকে। কিন্তু নয়ন তেমন কিছুই করল না। শান্ত ভাবেই ফ্লোরে পড়ে থাকা বালিশ ডিঙিয়ে নক্ষত্রর সামনে এসে দাঁড়াল। বাচ্চারাও নয়নকে দেখে চুপ হয়ে গেছে। সবাই চোরা দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে। সবাইকে উদ্দেশ্য করে নয়ন বলল,
—-পড়াশোনা নেই তোদের? সন্ধ্যার সময় পড়তে না বসে এখানে এসে এসব করছিস। যা এক্ষুনি। সবাই যা। পড়তে বোস গিয়ে।”
নয়নের ধমকে সুরসুর করে এক এক করে সবাই কেটে পড়ল। নক্ষত্র বকা খাওয়ার জন্য রেডি হয়ে আছে। ভাই বোনদের সামনে বকেনি। ওদের তাড়িয়ে দিয়েছে। এখন তার পালা। নক্ষত্র কৈফিয়ত দেবার মত করে বলল,
—-তারা আসলে আমি…
নয়ন ফ্লোর থেকে বালিশ তুলে বেডে রাখছে। নক্ষত্রও নেমে এসে ওকে সাহায্য করছে। নক্ষত্র অপরাধী গলায় আবার বলল,
—-বাচ্চাগুলো এত পাঁজি! আমি কিছু বলতেও পারছিলাম না। ওরা তোমার ঘর…
নক্ষত্র আবার একবার পুরো ঘরের দিকে চোখ বুলালো। ঘরটার নাজেহাল অবস্থা করে ছেড়েছে ওরা। নয়ন বেশ শান্ত গলায় বলল,
—-আমিও তো গিয়ে আপনার ঘরে থাকব। তখন দেখতে পারবেন।”
নক্ষত্র বোকা হয়ে ফ্যালফ্যাল চোখে নয়নতারার দিকে চেয়ে রইল। এই মেয়ে প্রতিশোধের কথা বলছে! বাড়িতে গিয়ে সে-ও নক্ষত্রর ঘর এলোমেলো করবে! যাক নয়ন ফিরে যাবে এটা ভেবেই নক্ষত্রর খুশি লাগছে।
না চাইতেও আকিবের সাথে নক্ষত্রর মুখোমুখি হয়ে গেল। আকিব নক্ষত্রকে একা পেয়ে এই সুযোগ হাতছাড়া করল না। সে তার মনে জমিয়ে রাখা সব রাগ নক্ষত্রর উপর ঝেড়ে ফেলতে চাইল।
—-তুমি জানতে নয়নকে আমি ভালোবাসি। তবুও তুমি ওকে বিয়ে করলে। তুমি তো ইলাকে ভালোবাসতে, তাহলে ওর জায়গায় ওর ছোট বোনকে বিয়ে করলে কীভাবে? লজ্জা করল না তোমার?”
নক্ষত্র আকিবের রাগ বুঝতে পারছে। তাই সে আকিবের কোন কথাই মনে নিল না।
—-আসলে আমার কী মনে হয় জানো? তুমি ইলাকে কখনও ভালোই বাসোনি। নয়নের উপর তোমার মন এসে গেছিল। তাই ইলাকেও তুমিই ভাগিয়েছ।”
নক্ষত্রর আকিবের এসব ফালতু কথা শুনে রাগই হচ্ছিল। তবুও পরিস্থিতি গরম হতে দেয়নি সে।
—-আকিব ফালতু বকো না। তুমি নিজেও বুঝতে পারছ না রাগের মাথায় কী বলছ তুমি।”
—-নয়ন জানে তুমি ওর বড় বোনকে ভালোনাসতে? ওকে বলেছ এই কথা? নাকি আমি বলব। তখন দেখব নয়ন তোমার সাথে কেমন সংসার করে। এই কথা শুনলে নয়ন তোমাকে ছেড়ে আসতে এক মিনিটও সময় নিবে না।”
নক্ষত্র দাঁতে দাঁত চেপে আকিবের কলার চেপে ধরে বলে,
—-এরকম কিচ্ছু করবে না তুমি। তারা এখন আমার বউ। আমার বর্তমান, ভবিষ্যত। ইলা আমার অতীত। ওর সাথে আমার কোন সম্পর্ক থাকলেও অতীতে ছিল। এখন ওকে নিয়ে ভাবতে চাই না আমি।”
—-বাহ! এই তোমার ভালোবাসার নমুনা! ইলার জন্য আমার হাতেপায়ে ধরে আমাদের বাড়িতে এসেছিলে। এখন ইলা তোমার অতীত হয়ে গেল! ওকে নিয়ে ভাবতে চাও না তুমি! না-ই যদি ভাববে তাহলে ওকে বিয়ে করার জন্য এত কাঠখড় পুড়িয়েছিলে কেন?”
—-তুমি চাও আমি ইলাকে মনে রেখে তারাকে ছেড়ে দেই?”
—-হ্যাঁ আমি এমনটাই চাই। তুমি নয়নের যোগ্য না। ওকে ভালোবাসো না তুমি। তোমার সাথে নয়ন সারাজীবন থাকবে কীভাবে? তুমি ইলার মতো ওকেও একদিন ভুলে যেতে পারবে। মানুষকে ভুলতে তোমার বেশি সময় লাগে না।”
নক্ষত্র নরম গলায় আকিবকে বোঝানোর মতো করে বলল,
—-আকিব তোমার ভাবনা একেবারে ভুল না। আবার একশোভাগ সত্যিও না। তোমার জায়গায় হয়তো তুমি ঠিক। কিন্তু আমার জায়গায়ও আমি ভুল না। নয়ন আমার থেকে কখনও কষ্ট পাবে না। আর যদি ভালোবাসার কথা বলো তাহলে…
কথা শেষ করতে পারল না নক্ষত্র। ঝিনুকের ডাক পড়ল।
—-এইযে শালা দুলাভাই, গল্প পরে হবে। খেতে আসো। টেবিলে সবাই তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছে। দেরি করো না। এসো, এসো।”
—-তুমি কিন্তু ঠিক করছ না নক্ষত্র। নয়ন যেদিন সত্যি জানবে সেদিন ও তোমাকে ক্ষমা করবে না। মনে রেখো সত্য কখনও চাপা থাকে না। দেরিতে হলেও প্রকাশ পায়। নয়নও একদিন তোমার আর ইলার ব্যাপার জানতে পারবে। সেদিন তুমি নয়নকে আটকে রাখতে পারবে না।”
আকিবের বলা কথাগুলো নক্ষত্রর কানে বাজছে। সে এই চিন্তায় ঠিক মতো খেতেও পারল না। আড়চোখে বারবার নয়নতারাকে দেখেছে। রাতে ঘরে গিয়েও পায়চারি করতে করতে আকিবের বলা কথাগুলো নিয়েই ভেবেছে। সত্যিই নয়ন যেদিন জানবে ইলাকে ভালোবেসে বিয়ে করতে চেয়েছিল সে। ইলা পালিয়ে যাবার পর স্রেফ জেদের বশে বা প্রতিশোধস্পৃহা থেকেই ওকে বিয়ে করেছে। তাহলে নয়ন সত্যিই ওকে ছেড়ে দিবে। এমনিতেই তো নয়ন ওর কাছে থাকতে চায় না।
নক্ষত্রর সবকিছু অসহ্য লাগছে। নয়ন তাকে ভুল বুঝবে, ওকে ছেড়ে চলে আসবে। এটা ভাবতেই বুকের ভেতর কেমন লাগছে। অস্থির, অদ্ভুত এক কষ্ট হচ্ছে।
নয়নতারা শুতে এলো। নক্ষত্রকে পায়চারি করতে দেখেও কিছু বলল না। বিছানায় গিয়ে বসলো। নক্ষত্র পায়চারি থামিয়ে দাঁড়াল। নয়নের দিকে ফিরে অদ্ভুত শীতল গলায় বলল,
—-তারা, কাল আমার সাথে ফিরবে তো তুমি?”
নক্ষত্রের মনের ঝড় নয়নের সম্পূর্ণ অজানা। সে এখনও নিজের রাগ পোষেই বসে আছে।
—-না। আমি আরও কয়টা দিন এখানে থাকব। আপনার যদি এখানে থাকতে অসুবিধা হয়, তাহলে কাল সকালে চলে যেতে পারেন।”
নয়নের কথায় নক্ষত্র আহত হলো। কষ্ট পেল। তবুও মুখে কিছু বলল না। যেহেতু নয়নের ঘরে কোন সোফা নেই। তাই বাধ্য হয়েই দু’জনকে এক খাটে শুতে হলো। নয়নতারা ওদের দু’জনের মাঝে বালিশ রেখে ওপাশ ফিরে শুয়ে পড়ল। শোয়ার আগে বাতি নিভিয়ে দিল। নক্ষত্রর নয়নের মুখ দেখতে ভীষণ ইচ্ছে হচ্ছিল। কিন্তু সে নিরুপায়। নিজের দুর্বলতা সে-ও বেশ বুঝতে পারছে। এ নিয়ে নিজেকেই শাসাচ্ছে। তারা আজ হোক কাল হোক ওকে ছেড়ে যাবেই। তারার জন্য দুর্বল হওয়া মোটেই ঠিক হচ্ছে না। সব জেনে-বুঝেও মন যে কেন অবাধ্য হয়!
নয়ন রাতেই বলে দিয়েছে সে পরের দিন নক্ষত্রর সাথে যাবে না। আরও কয়টা দিন থাকবে সে। তাই আজ যাবার সময় নক্ষত্র নয়নকে আর জোর করল না। দ্বিতীয় বার বললোও না। ওদের মাঝে যে এখনও বোঝাবুঝির সুতোটা অনেক নড়বড়ে ক্ষীণ। যেকোনো সময় এই সুতা ছিড়ে যেতে পারে। তাই বেশি টানাটানি করা ঠিক হবে না।
নক্ষত্র চলে যাবার সময় নয়ন ইচ্ছে করে ওর সামনে যায়নি। মান অভিমানের পাল্লা অনেক ভারী হয়ে উঠেছে। দু’জনের মনের অবস্থাই এক। শুধু সেটা ওরা দু’জন বুঝতে পারছে না। নক্ষত্র বোঝার চেষ্টা চালিয়ে গেলেও নয়নের দিক থেকে তেমন কোন চেষ্টা দেখা যাচ্ছে না। সে মনে মনে অভিমান পুষে রেখে কষ্ট পেয়ে মরছে।
নক্ষত্রর মনটা খারাপ ছিল। সে বাড়িতে পা দেওয়ার সাথে সাথে রামিশা ছুটে এসে ওকে জড়িয়ে ধরল। নক্ষত্র অপ্রস্তুত ছিল। পড়ে যেতে নিচ্ছিল সে। শেষ মুহূর্তে সামলে নিল। রামিশা ওকে ওভাবে জড়িয়ে ধরে রেখেই বলছে,
—-ও মাই গড! আগের থেকেও তুমি কত হ্যান্ডসাম হয়েছ নক্ষত্র!”
রামিশার হঠাৎ আগমনের কথা নক্ষত্র জানত না। সে রামিশাকে দেখে খুশি হয়েছে। রামিশা তার ছোট বেলার বন্ধু। বাবার বন্ধুর মেয়ে। এতদিন নিউইয়র্কে ছিল। ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে পড়াশোনার জন্যেই সবাইকে ছেড়ে তিন বছর আগে নিউইয়র্কে যাওয়া হয়েছিল। আজ তিন বছর পর ওকে দেখছে। ওর আচরণে একটুও পরিবর্তন আসেনি। কিন্তু পোশাক-আশাকে বেশ পরিবর্তন এসেছে। আসারই কথা যে নিজে ফ্যাশন ডিজাইনার তার পোষাক বাকি সবার থেকে আলাদা হবেই। নক্ষত্র হেসে বলল,
—-তুমিও কিন্তু কম সুন্দর হওনি রামিশা। তোমাকে চেনাই যাচ্ছে না। পুরো চেঞ্জড। তোমাকে মেমসাহেব, মেমসাহেব লাগছে।”
রামিশা নক্ষত্রকে ছেড়ে দিল। কিন্তু দূরে সরে দাঁড়াল না। ওকে ঘেঁষে দাঁড়িয়ে কথা চালিয়ে যাচ্ছে। রামিশা মুখ কালো করে অভিমানী সুরে বলল,
—-শুনেছি তুমি নাকি বিয়ে করেছ। কী সেলফিশ তুমি নক্ষত্র! আমাকে ইনভাইট করবে তো দূর, জানালে না পর্যন্ত! এই আমি তোমার ছোটবেলার বন্ধু!”
—-জানালেও তুমি আসতে পারতে না। তোমার মম ড্যাডকে কিন্তু জানানো হয়েছিল। তবুও উনারা আসেননি।”
—-আসবে কীভাবে? ওদের স্বপ্নে তুমি পানি ঢেলে দিলে। আমার তোমার মম ড্যাডের কিন্তু ইচ্ছে ছিল আমাদের বিয়ে দিবে।”
নক্ষত্র এই ব্যাপারে জানত। ইলাকে ভালো না বাসলে হয়তো রামিশাকেই বিয়ে করতে হতো। বাবা মা এটাই চাইলে তারও কোন আপত্তি থাকত না। কিন্তু ইলাকে ভালোবেসে বাবা মা’র অবাধ্য হয়েছে সে। আর ইলাই কিনা…!
—-তা সেই ভাগবতী কোথায়? যে তোমার বউ হয়েছে। ডাকো তাকে, দেখি একটু।”
—-সে এখন বাড়িতে নেই। বাবার বাড়ি বেড়াতে গেছে।”
—-এ মা! তাহলে তো দেখা হলো না।”
—-থাকবে তো এখানে কয়েকটা দিন? ফিরছো কবে?”
—-ফিরব কেন? এটা আমার দেশ না! ওখানে ডিগ্রি নিতে গিয়েছিলাম। যেটা নিয়ে চলে এসেছি। এখন আমি আমার দেশেই থাকব।’
—-তাহলে তো দেখা হবেই।”
—-কিন্তু আমি তো ঢাকা থাকব না। আজই রাজশাহী যাব।”
—-কেন? আঙ্কেল আন্টি তো ঢাকায় থাকে।”
—-দাদু অসুস্থ। সে খবর পেয়েই তো ছুটে এলাম। ভাবলাম তোমার সাথে দেখা করে যাই। এখানে এসে দেখি আঙ্কেল, আন্টি, তুমি কেউ বাসায় নেই। আন্টি কখন ফিরবে জানো?”
—-না। রাতে ফিরতে পারে। আবার না-ও ফিরতে পারে। বলা যায় না।”
—-তাহলে আন্টির সাথে দেখা করেই যাই। আমাকে একটা রুম ঠিক করে দিতে বলো তো। ততক্ষণে আমি তোমার রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিই। লম্বা জার্নি করে এলাম। ভীষণ টায়ার্ড লাগছে।”
কী মনে করে একটু থেমে রামিশা ত্যাড়া চোখ নক্ষত্রকে দেখে বলল,
—-এখন তো আবার ওই রুম তোমার একার না। তোমার বউয়েরও। ওই রুমে আমি কিছু সময়ের জন্য উঠলে তোমার বউ কি রাগ করবে? ওর থেকে অনুমতি নিয়ে নিবে?’
নক্ষত্র হাসল। রামিশা সারাজীবনই এমন। সবকিছুতে এমনভাবে অধিকার দেখাবে যেন জিনিসটা ওর নিজের। আবার অনুমতির কথাও ভাববে।
—-তারা রাগ করবে না। তুমি আমার রুমে কিছু সময়ের জন্য থাকতে পারো।”
—-ওর নাম তারা?”
—-হ্যাঁ। নয়নতারা। আমি তারা ডাকি।”
—-অওউউ কী কিউট!
চলবে___