#প্রথম_প্রেম
৩৫ তম পর্ব
শাওনের আজ অফিসে একদম মন বসছেনা, নিজের ডেস্ক থেকে উঠে আবার ছাদে গেল, পকেট থেকে সিগারেট বের করে সিগারেট ধরিয়ে আকাশের দিকে উদাস দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে, আর ভাবছে সেই মেয়েটার কথা, যে তার স্বপ্ন, সাধনা, ভালবাসা, সবই ছিল, সব!
উর্মি ক্লাসে এসে দেখলো, অনিক হাসাহাসি করছে তার বন্ধুদের সাথে। উর্মি কাছে এসে বললো, অনিক বাইরে এসো।
– কেন? এখানেই বলো?
– না, বাইরে আসো।
-ওহ, বেশি পারসোনাল, এই তোরা বস রে, একটু প্রাইভেট টাইম দিয়ে আসি।
উর্মির একদম অনিকের কথা গুলি ভালো লাগছেনা। কেমন যেন ইংগিত পূর্ণ কথা।
উর্মি একদম করিডরে নিয়ে বললো, তুমি কেন শাওন কে মেইল করেছ? হোয়াই? আন্সার মি?
– ইউ আর ভেরি ফানি গার্ল, হোয়াই ইউ সো সিরিয়াস?
– অনিক?
– শোনো, আমি বলি।
– আমি যাস্ট শুনতে চাই…
– একটু ধৈর্য্য ধর, বলছি। আর হ্যা আমি শেষ করার পর কথা বলবে। তুমি কখনোই শাওন নামের এই ছেলেকে সত্যি ভালবাসনি। কারণ ওই সময় তুমি টিন এইজার ছিলে, গার্লস স্কুল কলেজে পড়েছে, সামনে এই তবলা মার্কা চেহারাকেই দেখেছো, পছন্দ করেছো।
– অনিক।
– লেট মি ফিনিশ। এটা মোহ ছিল। তুমি আমার বাইকে প্রতিদিন ঘুরেছো, আমরা ঘুরতে গিয়েছি, ছবি তুলেছি, ফান করেছি। ইটস কলড ডেটিং।
– অফকোর্স নট।
– অবশ্যই। নয়তো তুমি কেন, আমার সাথে আমার প্রিয় সবুজ রঙের শাড়ী পরেছিলে? কেন আমি একদিন তোমাকে আনতে না গেলে অস্থির হতে? বলো? তাই আমি শাওন নামের ছেলেটিকে মেইল করেছি। কারণ উর্মি ইজ মাই লাভ।
– শোনো, আমি তোমাকে ভালবাসিনা।
– সারা ইউনিভার্সিটি জানে, আর তুমি না করছো হাউ ফানি। শোন, তুমি আমাকেই ভালবাসো, কারণ আমার মতো ছেলেই তোমার জন্য পার্ফেক্ট। আর তুমি আমাকে মিস ইউ লিখো নি?
– সেটা বন্ধু ভেবে লিখেছি।
– মিথ্যা বলবেনা।
– শোনো, তুমি আমার সাথে আর যোগাযোগ রাখবেনা। আমার সাথে কথা ও বলবেনা।
– শাওন তোমাকে আর ভালবাসে না। তুমি রিজেক্টেড জেনেও আই লাভ ইউ।
– বাট আই হেইট ইউ।
উর্মি হনহন করে সিঁড়ি দিয়ে নামছে। নিচে আসতেই, অনিক উপর থেকে বললো আই লাভ ইউ উর্মি।
উর্মি বাসায় আসার আগে থেকেই উর্মির ভার্সিটির বান্দবীরা ওকে কল দিয়ে বলছে কি রে তুই নাকি অন্য ছেলেকে পছন্দ করতিস, আবার অনিকের সাথে ও টাইম পাস করেছিস। এখন নাকি তুই অনিকের সাথে ব্রেকআপ এ যাচ্ছিস। কেন রে? তুই অনিকের সাথে এভাবে টাইম পাস করে এখন ছেড়ে দিচ্ছিস।
উর্মির যেন মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আসলেই কি সে অনিক কে কখনো ফিল করেছে? আর অনিক কেন সে শাওন কে সব পাঠালো? আর শাওন ও সব বিশ্বাস করে নিল, এতো দিনের সম্পর্কের এই বিশ্বাস? উর্মি তড়িঘড়ি করে আবার শাওন কে কল দিল।
তিন বার কল দেওয়ার পর শাওন কল ধরার পর বললো।
কেন কল দিয়েছো?
– এগুলো সব অনিকের প্ল্যান তুমি বিশ্বাস কর!
– আমি বিশ্বাস তোমাকেই করতাম, কিন্তু এখন আর করিনা।
– বিলিভ মি, এগুলো ওর প্ল্যান।
– দেখো উর্মি সে যতই প্ল্যান করুক তুমি নিজের ইচ্ছায়, আমাকে গোপন করে, দেখা করেছো। থাক আমি আর কথা বাড়াতে চাইনা।
– আমাকে মাফ করা যায়না?
– কাল পর্যন্ত ভেবেছিলাম, সব বললে তোমাকে মাফ করে দিব। কিন্তু এখন আর কিচ্ছু শোনার ইচ্ছে নেই।
– আমি তোমাকে মিথ্যা বলেছি, প্লিজ মাফ করে দাও।
– টানা দুই মাস মিথ্যা বলেছো, কয়টা মিথ্যার জন্য মাফ চাইবে উর্মি? তুমি ভালো থাক, প্লিজ আমাকে, এবং আমার পরিবার কে আর ডিস্টার্ব করো না। আর যদি এখন ফোন রাখার পর, একটাও কল দাও আমি মিসেস রুনা খানম কে কল দিতে বাধ্য হবো।
– শাওন।
– রাখি, ভালো থেকে খুউব।
শাওনের দুই চোখ বেয়ে পানি পড়ছে, উর্মির কল দেখেই শাওন আবার ছাদে উঠেছিল। শাওনের ভেতর থেকে যেন কান্নার হু হু শব্দ আসছে। আবারো উর্মি কল দিচ্ছে।
শাওন কন্ট্রাক্ট লিস্ট থেকে উর্মিস মাদার লিখা নাম্বারে ডায়াল করলো।
হ্যালো।
,- আসসালামু আলাইকুম, আমি শাওন।
– হ্যা কেমন আছ?
– ভালো আছি। দুই মিনিট কথা বলি, একটু শুনুন তারপরে বলবেন।
– কি হয়েছে?
– প্লিজ শুনুন আগে,
– বলো।
– উর্মির সাথে আমার ক্লাস নাইন থেকে সম্পর্ক। না একদিনের জন্য আমি তাকে পর করিনি। আমি আপনার মেয়েকে পাগলের মতো ভালবাসতাম। না, এমন খারাপ কিছু করিনি আপনার মেয়ের সাথে। ভয় পাবেন না। আমার সম্পর্ক পবিত্র ছিল সব সময়। আমি গরীব ঘরের ছেলে হয়েও আপনার মেয়েকে ভালবেসেছি, আপনার টাকা দেখে নয়, আপনার মেয়ের ভালবাসা দেখে। কিন্তু আমার উর্মি আর আগের মতো নেই, সে এখন বড়লোক ছেলের সাথে ঘুরে, বাইকে যায় ঘুরতে। আমি মিথ্যা কথা মানতে পারিনা, মিথ্যা আমি খুব অপছন্দ করি, গত দুই মাসে সে দুই হাজারের বেশি বার মিথ্যা বলেছে। দয়া করে ওকে বলবেন, আমাকে, এবং আমার হতদরিদ্র পরিবার কে যেন ও ডিস্টার্ব না করে।এজন্য আপনাকে কল করেছি।
– আচ্ছা বলবো।
– আর হ্যা, কথা দিলাম আপনার মেয়ের চেয়েও রুপবতী মেয়েকে বিয়ে করবো, তার চরিত্র আপনার রুপবতী মেয়ের চেয়ে অনেক সুন্দর থাকবে।
– আমার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে সব। আচ্ছা ভালো থাকো। আর বিয়ে করলে বউ নিয়ে আসবে আমরা দরজা খোলা আছে।
– রাখছি। ভালো থাকুন।
ফোন রাখার সাথে সাথেই ম্যানেজার ছাদে এসে বললেন শাওন সাহেব সমস্যা কি বলুন তো? হুটহাট ছাদে আসছেবন? কি হয়েছে?
-স্যার সমস্যা নাই।
– দেখুন শাওন সাহেব সম্ভবত আপনার প্রেম ঘটিত সমস্যা, দেখুন ভালো সাজেস্ট করি, বিয়ে করে ফেলুন। কাজে ব্যস্ত থাকুন। ঠিক হয়ে যাবে।
– স্যার কাইন্ডলি আমাকে যদি অন্য শহরে ট্রান্সফার করে দিতেন, খুব উপকার হতো।
– কি বলেন আপনি? ট্রান্সফার এতো সহজ নাকি ভাই। কাজে মনোযোগ দিন।
– জি স্যার।
রুবা খানমের অপমানে গা জ্বলছে, আবার ভালো লাগছে এই ছেলে মেয়ের জীবন থেকে বিদায় নিচ্ছে। কিন্তু এতো দিন কেমনে সম্পর্কে রাখলো, তার মেয়ে আসলোই মিথ্যার রানী।
উর্মি ঘরে ঢুকতেই রুনা খানম বললেন, এই আমি চাচ্চি তোর প্লাস্টিক সার্জারী করিয়ে নিব।
– কেন?
– এই বেহায়ার চামড়া থাকাটাও লজ্জার।
– আমি কি করেছি?
– শাওন নামের স্টুপিড ছেলেটার সাথে সম্পর্ক রাখছিস, আবার এই ছেলে আমাকে কল দিয়ে বিচার দেয়, আপনার মাইয়া একটা ছ্যচড়া ওকে সাবধান করবেন যেন আমাকে বা আমার পরিবার কে কল না দেয়। এই তুই কি আমার মেয়ে উর্মি?
– কখন ফোন দিয়েছে?
– দেখ, রিসিভ কলেই আছে। যদি আমার মেয়ে হয়ে থাকিস তবে আর ওই ছেলের সাথে কল দিবিনা। আর আবার কার প্রেমে পড়ছিস!
– কারোর না।
এই কথা বলেই উর্মি রুমের দরজা বন্ধ করে খুব কান্নাকাটি শুরু করেছে। তার শাওন সত্যি তার মাকে কল দিয়ে বিচার দিয়েছে। উর্মি জানালার দিকে সেই রাস্তার দিকে তাকাচ্ছে, এক সময় তার প্রিয় মানুষ টি ঘন্টার পর ঘন্টা তাকে এক নজর দেখার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতো, কিন্তু এখন….
রাতের বেলা রুনা খানম বললেন ভুলেও বাপের সামনে কিছু বুঝতে দিবিনা, মেরেই ফেলবে। মনে রাখিস।
উর্মি রাতে খাওয়ার পর, বাবার পাশে গিয়ে বললো আমি তোমাকে একটা রিকুয়েষ্ট করবো রাখবে?
– কি? শুনি
– বাবা, আমি বুয়েটে চান্স পাওয়ার পরে বলেছিলে, আমি যা বলবো তাই শুনবে। বলেছিলে কিনা?
– হ্যা বলেছিলাম।
রুনা খানমের গলা শুকিয়ে আসছে এই ভেবে, যে মেয়ে আবার শাওন কে চায় এটাই বলবে হয়তো!
উর্মি বললো বাবা, কোন প্রশ্ন করবেনা, আমি শুধু বলতে চাই, আমি এই সেমিস্টার গ্যাপ দিব, এবং সাত দিনের মধ্যে আমার জন্য পাত্র ঠিক করবা, আমি বিয়ে করবো। ছেলে তোমাদের পছন্দ মতো হলে হবে, আর কিছুই বলবেনা বাবা ইটস মাই রিকুয়েষ্ট।
উর্মি দাঁড়ালো এবং বললো সাত দিনের মধ্যে বাবা, আমি বিয়ে করতে চাই।
তোফায়েল সাহেব সরু দৃষ্টিতে রুনা খানমের দিকে তাকিয়ে বললেন, ব্যাপার কি? কি বলে এই মেয়ে?
– যা বলেছে ভালই বলেছে। ভালো ছেলে তো একটা আছেই, রুবার দেবর।
– কি বলো তুমি? ওর বয়স কত?
– এতো কিছু বুঝে লাভ নাই।
– নাহ, রুবার দেবর আমার পছন্দ নয়। ঘটনা কি? সামনে কত উজ্জ্বল ভবিষ্যত, এখন কি বিয়ের কথা বলে?
– জানিনা, আমি দেখি আপার সাথে কথা বলে।
– আমার মাথায় কিছুই ঢুকছেনা। এখন ওই সময় কথা দিয়েছি, এখন এসে সে কথা নিচ্ছে, কি ঝামেলা সৃষ্টি হলো?
– তুমি চুপ থাক, আমি ব্যবস্থা করছি।
– কি ব্যবস্থা?
– বিয়েই দিব।
– পাগল নাকি?
– কথা দাও কেন? যা চায় দিবে! এখন জামাই দাও।
– হুম। যাও এক কাপ চা দাও, মাথা কাজ করছেনা।
ঠিক সাত দিন পর সত্যি সত্যি উর্মির এনগেজমেন্ট হয়ে গেল একজন ডাক্তার ছেলের সাথে।ছেলে স্কয়ার হাসপাতালে চাকরী করে। বাবা সচিব ছিলেন, তোফায়েল সাহেবের বড় ভাই সানাউল সাহেবের বন্ধুর ছেলে, ডাক্তার আবীর । তার সাথেই আজ খুব ছোট্ট করে আংটি বদল হয়ে গেল। দুই পরিবার খুব খুশি, ঠিক সাত দিন পর ২২ শে জুন উর্মির বিয়ে। উর্মির কোন ফিল হচ্ছেনা, কেমন যেন ঘোরের মধ্যে কাটছে সব। আবীর মুগ্ধ নয়নে উর্মির স্নিগ্ধ চেহারা দেখছে।
এদিকে, আর যায়নি ভার্সিটি উর্মি, সিম খুলে ফেলে দিয়েছে। বাসায় এসেও চেষ্টা করেছে অনিক,উর্মি কিছুই বলেনি, বলতে ইচ্ছে হয়নি। বিয়ের ব্যাপার টাও এখনো অনিক জানেনা। উর্মি শুধু বলেছে আমি ভার্সিটিতে এই সেমিস্টার যাবো না। কিছুটা সময় গ্যাপ নিচ্ছি, আশা করে তুমি আর ডিস্টার্ব করবেনা। অনিক ও তার ভার্সিটি আসার অপেক্ষা করছে।
ম্যানেজার সাহেবের উদ্যোগে আজ শাওন বদলি হয়েছে। শিরিনের বাসায় উঠেছে। একদম ওয়াকিং ডিস্টেন্স অফিস। শাওন প্রতি রাতে তার পুরোনো ডাইরীর খালি পাতায় একটা কথা বার বার লিখে আমি উর্মিকে তীব্র ঘৃনা করি, তীব্র ঘৃনা করি।
আজ বাইশে জুন উর্মির বিয়ে, বেশ জমকালো ভাবেই হচ্ছে। সাইয়ারা সকালেই শাওন কে কল দিয়ে বললো ভাইয়া আই উর্মির বিয়ে। আপনি কিছু বলবেন না? আপনি ওকে নিয়ে যান। আপনার উর্মি চলে যাচ্ছে!
খুব সুখী হউক উর্মি দোয়া রইলো। আর সে যদি আমার হতো, তবে আমি আজ জামাই সেজে আসতাম। ভালো থেকো তুমিও রাখছি।
শিরিনের বাড়ীওয়ালার মেয়েটি শাওনকে চুপিচুপি দেখে, এস.এম.এস দেয়, সে অনার্স পড়ে, কিন্তু শাওন আর প্রেমে পড়তে চায়না।
ঢাকায় একটা কাজে গিয়ে স্কয়ার হাসপাতালে ডাক্তার আবীর কে এক পলক দেখে এসেছে। কেন গিয়েছে সে নিজেই জানেনা, তবুও গিয়েছে।
বিসিএস এর ভাইবা থেকে বাদ পরেছে শাওন, তার আর বিসিএস দেওয়ার ও ইচ্ছে নেই। পাশের বাসার তিয়াশা তার সাথে কথা বলতে চায়, কিন্তু এড়িয়ে যায় সে।
দু/এক জায়গায় মেয়ে দেখলেও শাওনের কেন জানি একদম ভালো লাগেনা কাউকে। তারচেয়ে তিয়াশা অনেক ভালো। কিন্তু প্রেম নয়, বিয়েই করতে চায় সে। কিন্তু এখনো ইমেইল, ফোন, অফিসের পিসি তে পাসওয়ার্ড উর্মি০০১ আছে। কারণ উর্মি তার প্রথম ভালবাসা, সে চেষ্টা করেওন্সব স্মৃতি মুছতে পারছেনা।
তিয়াশার সাথেই বিয়ে ঠিক হয়েছে শাওনের। তিয়াশার বাবা-মা দিতে আগ্রহী তেমন না থাকলে মেয়ের জন্য রাজী হয়েছেন। শাওন ও বিয়েতে রাজী হয়েছে এই ভেবে মেয়েটা অনেক উদার মনা, হয়তো তাকে ফাঁকি দিবেনা।
গত চার বছর ধরে তিয়াশা শাওনের এক ফোটা বিশ্বাস নষ্ট করেনি। সে বিয়ের পর পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে, এই বছর মাস্টার্সে ভর্তি হয়েছে। তার অনেক গুলি ছেলে বন্ধু আছে, কিন্তু শাওনের একদম সন্দেহ হয়না, কারণ তিয়াশা সারাক্ষণ বকবক করে সব বলতে থাকে, তার তিন বছর বয়েসী মেয়ে ইরানার মতো।
তিয়াশার সব কিছু শাওনময়, সে শাওন কে খুব বেশি ভালবাসে।
শাওন আগের মতো চিঠি লিখেনা, কবিতা লিখতে ও ভালো লাগেনা। কেন জানি এতো রোমান্টিক ও হতে পারেনা, হঠাৎ রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে তিয়াশার হাত ধরতে গিয়ে কেমন যেন আটকে যায়, উর্মির কথা ভুলতে পারেনা সে, প্রথম প্রেম কি ভুলা যায়? তবে এখম হ্রদয়ের সবটুকু ভালবাসা এই সহজ সরল মেয়েটির জন্য, যে তার টুকটুকে লাল পরীর মা!
মুন্নি ভাবী সকালে ফোন দিয়ে বললেন জানো, শাওন উর্মির ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে, বেবি নেয়নি হয়তো এজন্যই। জামাই পরকীয়া করে ডাক্তার মেয়েকে বিয়ে করেছে। গত কাল উর্মি ফিনল্যান্ড চলে গিয়েছে পি.এইচ.ডি করবে বলে। রুনা ভাবী খুব কষ্ট পাচ্ছেন।
শাওন শুধু বললো থাক ভাবী, এসব শুনে আমার কিছুই করার নেই। তবে কর্মফল কখনো এড়ানো যায়না। আমি আমার বউ মেয়ে নিয়ে ভালই আছি।
– হ্যা, থাকবানা, ব্যাংকের বড় অফিসার। আর তিয়াশা তো মায়ের খুব পছন্দের। সবার পছন্দের।
– এটাই ভালো।
তিয়াশা সবই জানে, উর্মির ব্যাপারে, শাওন নিজেই বলেছে এতে সে কিছু মনে করেনা। এখন শাওন তারই, এটাই তার ভালো লাগা আর শান্তি।
শাওন আজ রাস্তা দিয়ে হাঁটছে আর ভাবছে ইশ মেয়েটা একদম একা হয়ে গেল! ভালো থাকুক, এইটাই চাওয়া। তবে, আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যেই করেন। তিয়াশাকে নিয়ে যেন বাকী জীবন ভালো যায়। তবে, এটা সত্য প্রথম প্রেম ভুলে থাকা যায়না, তবে প্রথম প্রেম ছাড়া ভালো থাকা যায়, নিজে ভালো আর পবিত্র থাকলে।
সে এক গুচ্ছ বেলী কিনলো তার তিয়াশার জন্য, নিশ্চয়ই খুব খুশি হবে মেয়েটা, শাওন রিকশা দিয়ে যাচ্ছে, চাঁদ ও তার সাথে যাচ্ছে, তিয়াশার হাসিহাসি চেহারা ভাবছে শাওন, আর রিকাশার চাকাও ক্যাচ ক্যাচ আওয়াজ করে চলছে…..
শেষ পর্ব।