#প্রাণের_চেয়েও_প্রিয়
#Part_45
#Writer_TanhaTonu
আরশির এক্সাইটমেন্ট দেখে সিদ্রাত হাসল।তারপর কানে কানে বলল…
—”মন দিয়ে পড়াশুনা করো।আমিই না হয় তোমায় একটা পার্মানেন্ট বেবি এনে দিবো”
আরশি লজ্জায় দুহাত দিয়ে মুখ ঢেকে ফেলল।সিদ্রাত হেসে দিলো…
_______________________________
ঘুম ভেঙে আরশি গতকালের মতো আজও সিদ্রাতকে নিজের বুকে আবিষ্কার করল।এটা দেখে লাজুক হাসল।কিন্তু ভালো করে তাকাতেই আরশির চোখ চরক গাছ কারণ ওর পড়নের জামাটা পুরোটা গলা পর্যন্ত উঠানো।আর এজ ইউজুয়াল সিদ্রাত খালি শরীরেই।আরশির ঢেকুর উঠে গেলো এমন অবস্থা দেখে।ভয়ে সিদ্রাতকে সরিয়ে নিজেকে ঠিকও করতে পারছে না পাছে সিদ্রাত উঠে না যায়।তাহলে ব্যাপারটা আরও বেশি লজ্জাজনক হবে…
আরশি খুবই সূক্ষ্মগতিতে সরে যাওয়ার চেষ্টা করল।কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না।আরশির নড়ানড়িতে সিদ্রাতের ঘুম ভেঙে গেলো।চোখ খুলেই ও আরশির দিকে তাকিয়ে মিষ্টি হাসি দিয়ে ঘুমু ঘুমু কন্ঠে গুড মর্নিং উইশ করল।এদিকে সিদ্রাত জেগে যাওয়ায় আরশির প্রাণ যায় যায় অবস্থা।মেয়েটা ঢোক গিলল পরপর দু’বার।সিদ্রাত ভ্রু কুচকে ঘুম জড়ানো কন্ঠেই বলল…
—”এনি প্রবলেম ডিয়ার?”
আরশি মাথা ঝাঁকিয়ে না বুঝায়।সিদ্রাত আরশির বুকে মুখ গুঁজে।আরশি কেঁপে উঠে।সিদ্রাত একটা হামি দিয়ে বলে…
—”তাহলে ঘুমাও।একসাথে উঠব..হুম?ঘুমোও….”
আরশি আমতা আমতা করে বলল…
—”একটু সরবেন?আমার,,জামাটা,,উঠে গিয়,,ছে”
সিদ্রাত তাও ওভাবেই শুয়ে রইল।আরশি আবারও বলল…
—”কি হলো?”
সিদ্রাত বিরক্তি নিয়ে মাথা উঠাতেই আরশির দিকে তাকিয়ে ঘোর লাগানো দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল।আরশি সিদ্রাতের দৃষ্টি অনুসরণ করে নিজের তাকাতেই তাড়াতাড়ি করে জামাটা ঠিক করে ফেলল।লজ্জায় গাল দুটো লাল হয়ে গিয়েছে।সিদ্রাত হেসে দিয়ে আবারও আরশির বুকে মুখ গুঁজে শুয়ে পড়ল।আরশির হার্ট-বিট যেনো প্রচুর বেড়ে গিয়েছে যেটা সিদ্রাত স্পষ্ট ফিল করতে পারছে।মুচকি হেসে ঘুম জড়ানো কন্ঠেই বলল…
—”তোমার হার্ট বিট অনেক বেড়ে গিয়েছে।আমারটাও বেড়ে যাচ্ছে যেমনটা বেড়েছিলো সিলেট তোমার জামা চেইঞ্জ করতে গিয়ে..উফফ সেই দৃশ্য কি ভুলা যায়!ইউ আর সো হট…”
আরশির কান দিয়ে যেনো ধোঁয়া বের হচ্ছে।কি বলল এটা সিদ্রাত?সেদিন ও ড্রেস চেইঞ্জ করে দিয়েছিলো?কোনো রিসিপশনিস্ট মেয়ে না।আরশির মুখ দিয়ে আস্তে করে বেরিয়ে এলো…
—”ইয়া আল্লাহ..আসতাগফিরুল্লাহ.. ”
সিদ্রাত ফিক করে হেসে দিলো আর ঘুমু ঘুমু কন্ঠেই বলল…
—”আমি তোমার হাব্বি..তোমার সব তো আমিই দেখব।জানো আজ স্বপ্ন কি দেখেছি?দেখি তুমি আর আমি….তুমি বিনা ড্রেসে শুয়ে আছো আর আমি তোমার বু,,,,,”
সিদ্রাত কথা শেষ করার আগেই আরশি সিদ্রাতকে নিজের সাথে চেপে ধরল।বড় বড় শ্বাস নিতে নিতে বলল….
—”প্লিজ আর না..আর বলবেন না।শুনতে পারছি না”
সিদ্রাত মুচকি হাসল।কিছুক্ষণের মাঝেই আবারও ঘুমিয়ে পড়ল।আরশি স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে মোবাইলটা হাতে নিলো..সাতটা একত্রিশ বাজে।মোবাইলটা রেখে কিছুক্ষণ বিড়বিড় করতে লাগল…
—”কেমন লুচু এই লোক?ছি ছি..আগে কত ভালো মানুষ সেজে ছিলো যেনো সে সাধু…
আর এখন?পুরাই লুইচ্চা বের হলো..হাহ”
আরশিও ঘুমিয়ে পড়ল এসব ভাবতে ভাবতে।ঘুম যখন ভাঙল তখন আর সিদ্রাতকে পেলো না।উঠে ফ্রেশ হয়ে কিচেনে গেলো।এক কাপ কফি বানিয়ে বারান্দায় গিয়ে বসল।প্রায় পাঁচ মিনিট পর দেখল বাড়ির ডান দিকে ছোট্ট মিনি সাইজের বাগানটায় কিছু গাছে উইড আউট করছে সিদ্রাত।পড়নে তার এশ কালার টিশার্ট আর ডার্ক ব্রাউন থ্রি কোয়ার্টার..চুলগুলো কপালে আচরে পড়ে আছে।দেখতে ভালোই লাগছে।আরশি ব্লাশিং করল।সিদ্রাত আরশির দিকে তাকিয়ে ভ্রু নাচালো।আরশি না সূচক মাথা নাড়ালো।সিদ্রাত মুচকি হেসে ইশারায় আরশিকে নিচে আসতে বলল।আরশি এবারও না করল ইশারায়।সিদ্রাত এবার চোখ গরম করে তাকালো।ব্যাস এতেই কাজ হয়ে গেলো।আরশি ইশারায় আসছি বুঝালো।তারপর বারান্দা থেকে উঠে রুমে চলে আসল।মাথায় ভালো করে ঘোমটা দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় কি যেনো মনে করে আবারও ড্রেসিং টেবিলের সামনে এসে দাঁড়ালো।ঝটফট করে রাতের কুর্তিটা চেইঞ্জ করে একটা খয়েরী কালার লং ড্রেস পড়ে মাথায় খয়েরীর উপর কালো স্টোন বসানো উড়নাটা আলতো করে টেনে নিলো।চোখে হালকা কাজল আর ঠোঁটে একদম হালকা করে লিপ্সটিক দিয়ে সাত/আট মিনিটের মধ্যেই বেরিয়ে গেলো।বাগানের কাছে গিয়ে দেখল সিদ্রাত পেছনে ঘুরে এখনো উইড আউটই করছে।সিদ্রাতের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে আরশির কেমন যেনো লজ্জা লাগছে।হয়ত বেশ-ভূষা চেইঞ্জ করে আসায়।আরশির এসব ভাবনার মাঝেই সিদ্রাত পেছনে ফিরে।আরশির দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে ঠোঁট কামড়ে হাসে।সিদ্রাতের এই হাসিটা আরশিকে একদম ঘায়েল করে দেয়।মেয়েটা সাথে সাথে চোখ নামিয়ে ফেলে।সিদ্রাত আরশির পাশে এসে দাঁড়িয়ে বলল….
—”মাশাল্লাহ সুন্দর লাগছে”
আরশি সিদ্রাতের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে অন্যদিকে চোখ ফিরিয়ে নেয়।সিদ্রাত বলে…
—”চলো সামনের দিকে হাঁটি”
আরশি মৃদু কন্ঠে বলে…
—”উইড আউট করা শেষ?”
—”হুম..আপাতত শেষ..ভিতরের গাছগুলোর কিছু পরগাছা কাচি দিয়ে উপরে ফেলব”
—”ওহ..আচ্ছা চলুন”
দুজন টুকিটাকি কথা বলতে বাড়ির পিছন সাইডে বাগানের ভিতরে চলে যায়।সিদ্রাত দাঁড়িয়ে কাচি দিয়ে আগাছাগুলো ছেটে দিচ্ছে আর এটা সেটা বলছে আরশিকে।আরশিও দাঁড়িয়ে সিদ্রাতের কথা শুনে যাচ্ছে আর জবাব দিচ্ছে।সিদ্রাত কথার প্রসঙ্গে বলল…
—”তোমার সবচেয়ে পছন্দের ফুল কোনটা?”
—”উম,,ফুল তো সবই ভালো লাগে..তবে গোলাপ আর বেলিটা একটু বেশি ভালো লাগে”
সিদ্রাত মুচকি হেসে বলল…
—”বেলির ফ্র্যাগ্রান্সটা বেশি মাতাল করা।তবে তোমার থেকে বেশি নয়”
আরশি লাজুক হেসে নিচের দিকে তাকালো।সিদ্রাত ঠোঁট কামড়ে হেসে হঠাৎ বলল…
—”জাফলং যেদিন তোমার ওষ্ঠদ্বয়ের স্বাদ পেলাম সেদিন যেনো আমি নতুন এক নেশার সাথে পরিচিত হলাম…উফফ জাস্ট মাতাল করা”
আরশির শরীরে যেনো শিহরণ বয়ে গেলো সিদ্রাতের কথা শুনে।নিচু স্বরে বলল…
—”এগুলো না বললেই নয়!”
সিদ্রাত মুচকি হাসল।তারপর আবারও নিজের কাজে মন দিলো।কিছুক্ষণ পর আবারও বলল….
—”তোমার লজ্জামাখা মুখটা আমার কাছে দারুণ লাগে।আগে যখন তুমি আমায় দেখে লজ্জা পেতে,মুখ ফসকে বিভিন্ন কথা বলে ফেলে বা বেফাসে কাজ করে লজ্জায় জিহবায় কামড় দিতে..তখন তোমার রক্তিম গাল দুটো দেখল বাইট দিতে ইচ্ছে করত..একদম মন থেলে বলছি।ইভেন আমার এখনো বিলিভ হয় না যে এট প্রেজেন্ট ইউ আর মাই লিগেল ওয়াইফ”
সিদ্রাতের কথায় আরশি কি বলবে বুঝতে না পারলেও এটুকু বুঝতে পারল যে লজ্জায় ওর রক্তিম গাল দুটোর তাপমাত্রা অলরেডি বেড়ে গিয়েছে।ও দৌড়ে চলে যেতে নিলে সিদ্রাত কাচিটা ফেলে খপ করে হাত ধরে ফেলে।টান দিয়ে একদম নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়।আরশি সিদ্রাতের পিঠ খামচে ধরে।এক হাত দিয়ে আরশির কোমর ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে রেখে অন্যহাত সিদ্রাত আরশির গলার আশেপাশে চালাতে লাগল।ইতোমধ্যে আরশি বেসামাল হয়ে যেতে লাগল বেসামাল সিদ্রাতের স্পর্শে।ধীরে ধীরে সিদ্রাত নিজের ওষ্ঠদ্বয়ের ভাজে আরশির ওষ্ঠদ্বয় নিয়ে নিলো।আরশিও সিদ্রাতকে আঁকড়ে ধরে সমান তালে ভেসে যেতে লাগল…
চলবে…
প্রাণের_চেয়েও_প্রিয়
#Part_46
#Writer_TanhaTonu
সিদ্রাতের কথায় আরশি কি বলবে বুঝতে না পারলেও এটুকু বুঝতে পারল যে লজ্জায় ওর রক্তিম গাল দুটোর তাপমাত্রা অলরেডি বেড়ে গিয়েছে।ও দৌড়ে চলে যেতে নিলে সিদ্রাত কাচিটা ফেলে খপ করে হাত ধরে ফেলে।টান দিয়ে একদম নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নেয়।আরশি সিদ্রাতের পিঠ খামচে ধরে।এক হাত দিয়ে আরশির কোমর ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে রেখে অন্যহাত সিদ্রাত আরশির গলার আশেপাশে চালাতে লাগল।ইতোমধ্যে আরশি বেসামাল হয়ে যেতে লাগল বেসামাল সিদ্রাতের স্পর্শে।ধীরে ধীরে সিদ্রাত নিজের ওষ্ঠদ্বয়ের ভাজে আরশির ওষ্ঠদ্বয় নিয়ে নিলো।আরশিও সিদ্রাতকে আঁকড়ে ধরে সমান তালে ভেসে যেতে লাগল…
______________________________
একটা নির্দিষ্ট সময় পর নিজেদের তৃষ্ণা মিটে গেলে দুজনই একে-অপরের ওষ্ঠদ্বয় ছেড়ে দেয়।আরশি লজ্জায় একটু সরে আসতে চাইলেও সিদ্রাতের কারণে পারে না।কারণ সিদ্রাত এক হাত দিয়ে আরশি কোমর ধরে রেখেছে।সিদ্রাত আরশির নাকে নিজের নাক ঘষতে লাগে।আরশির শরীর এতে শিরশির করতে থাকে।নিচের দিকে তাকিয়ে নিচু স্বরে বলল…
—”ছাড়ুন..বাসায় যাবো”
সিদ্রাত ঘোর লাগানো কন্ঠেই বলে…..
—”উহু যেতে দিবো না…অসম্ভব…তোমার নেশা চড়ে গিয়েছে আমার মাথায়”
সিদ্রাতের এমন বাক্যই যেনো যথেষ্ট আরশিকে উত্তেজিত করার জন্য।আরশির মনে হচ্ছে সিদ্রাতের শরীরের উত্তাপ ওর নিজের শরীরেও ছড়িয়ে পড়ছে।সচেতন মন বলছে আরশি সরে যা এখান থেকে।কিন্তু আরশি সেটা পারছে না…শরীরে শক্তি পাচ্ছে না..মনে হচ্ছে ইস্ট্রোজেন,প্রোজেস্টোরেন সব বেশি বেশি নিসৃত হচ্ছে।আরশি আবারও সিদ্রাতকে নিজের বাহুডোরে আলিঙ্গন করে নিলো।সিদ্রাতও শান্তভাবে কিছুটা সময় আরশিকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে থাকল।প্রায় সাত/আটমিনিট পর সিদ্রাত মৃদু আওয়াজে বলল…
—”বাসায় যাও..বেশিক্ষণ এভাবে থাকা ঠিক হবে না।”
আরশি সিদ্রাতকে ছেড়ে দিয়ে দৌড়ে বাসায় চলে যায়।সিদ্রাত গভীর একটা শ্বাস ফেলে মুচকি হাসে আর বিড়বিড় করে বলে….
—”আমার এইজের ছেলেরা দুই বাচ্চার বাপ..আর আমি কিনা আমার হালাল বউ থেকে দূরে থাকতে চাচ্ছি..ওহ গড!”
সিদ্রাত এসব ভেবে হেসে ফেলে…
আরশি রুমে এসে লম্বা লম্বা শ্বাস ফেলতে লাগে।একটু আগের ঘটনা যতবারই মনে করছে ততবারই হৃদয়ে দোল খাচ্ছে।মূহুর্তটা খারাপ ছিলো না..সবাই-ই চায় তার প্রিয়তম বরটা তাকে ভালোবাসুক,,আদর করুক,,তার শরীরের স্পর্শ নিজের শরীরে মিশিয়ে দিক..এই চাওয়াগুলো খারাপ না;অশালীন বা অশ্লীলও না।বরং আল্লাহ তায়ালাই প্রতিটি মানুষের মাঝে এই অনুভূতিগুলো দিয়েছে।এই চাওয়াগুলো খারাপ তখন হতো যখন একটা মানুষ এমন মানুষের কাছ থেকে এসব প্রত্যাশা করত যে তার জন্য হারাম।অনুভূতি ছাড়া কি ভালোবাসা হয়?আর অনুভূতি তো শারীরিক-মানসিক উভয় ইচ্ছাগুলোর সংমিশ্রিত রূপ…
আরশি এসব ভাবতে ভাবতে যে কয়বার লজ্জায় মুখ ঢেকেছে দুহাত দিয়ে তা ও নিজেও জানে না।একটু পর সিদ্রাত রুমে এসে আরশিকে এমন করতে দেখে নিশব্দে হেসে ওয়াশরুমে চলে গেলো।ওয়াশরুমের দরজার আওয়াজ হতেই আরশি চমকে উঠে।সিদ্রাত এসেছে বুঝতে পেরে ওর গাল দুটো লাল হয়ে যায়।সিদ্রাত ফ্রেশ হয়ে হাত-মুখ ধুয়ে টাওয়াল দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে ড্রেসিং টেবিলের সামনে যায়।আরশি খানিকটা লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে হাত কচলাতে থাকে।সিদ্রাত চুলগুলো ব্রাশ করতে করতেই বলে…
—”আরশি নাস্তা টাস্তা থাকলে কিছু দাও।ক্ষুধায় পেট জ্বলছে”
আরশি জিহবে কামড় দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বলতে লাগে…
—”উফফ সরি সরি..আমি খাওয়ার কথা ভুলেই গিয়েছিলাম।আপনি দু’মিনিট বসুন একটু”
আরশি দৌড়ে কিচেনে চলে যায়।গিয়ে দেখে কিচেনে কেউ নেই।সবকিছু পরিপাটি।আরশি কিছু আর ভাবে না।প্লেটে খাবার বেড়ে রুমে ফিরে আসে।সিদ্রাতের হাতে প্লেটটা দিয়ে সিদ্রাতের পাশে বসে।সিদ্রাত খেতে খেতে বলে…
—”আমাদের রুমে কখন যাবে?আমি বাসায় যাবো।ভালো লাগছে না”
—”ওহ,, যখন ইচ্ছে বলিয়েন।আমার সমস্যা নেই”
—”আচ্ছা তাহলে দুপুরে লাঞ্চ করে..ওকে?”
আরশি ইশারায় বুঝায় যে ওকে….
————
দুপুরে লাঞ্চ করে রুমে এসে সিদ্রাত ধপ করে বেডে শুয়ে পড়ে…
—”আউচচ…”
আরশির কাতর ধ্বনি শুনে সিদ্রাত তাড়াতাড়ি করে চোখ ঘুরিয়ে দেখে ওর মাথা আরশির পায়ের তালুর উপর।সাথে সাথে সিদ্রাত উঠে গেলো।আরশি পা দলতে দলতে বলল…
—”উফফ এভাবে কেউ শুয়?আশেপাশে খেয়াল করবেন না?”
—”সরি সরি..লাগেনি তো তোমার?কই দেখি..”
সিদ্রাত আরশির পা-টা নিজের হাতে নেয়।আরশি পা সরিয়ে নিয়ে চাইলে সিদ্রাত ধরে ফেলে আর বলে…
—”রিলাক্স হয়ে বসো।দেখি কোথায় লেগেছে”
আরশি উদ্বিগ্ন হয়ে বলে…
—”না তেমন লাগেনি..হঠাৎ করে তালুর উপর শুয়ে পড়েছিলেন তো তাই চেচিয়ে উঠেছি..সত্যি লাগেনি”
সিদ্রাত সরু চোখে আরশির দিকে তাকালো।আরশিও মুখটা করুণ করল।অতঃপর সিদ্রাত মুচকি হেসে আরশির পায়ের তালুতে কিস করে।আরশি কেঁপে উঠে এক ঝটকায় পা সরিয়ে ফেলে।সিদ্রাত হেসে উঠে আরশির কাজ দেখে।আরশি নিচু স্বরে বলে….
—”এভাবে এতো বড় একটা মানুষ যদি আমার পায়ে চুমু দেয় তাহলে আল্লাহ বুঝি রাগ করবে না আমার উপর?”
সিদ্রাত আরশির কোলে মাথা রাখে।আরশি প্রথমে চমকে গেলেও পরে নিজেকে সামলে নেয়।সিদ্রাত বলে…
—”পাগলী মেয়ে..এসব তোমায় কে বলেছে হুম?স্বামী-স্ত্রীর মাঝে এসব ভালোবাসা তো স্বাভাবিক।সেখানে হাত আর পায়ে তফাৎ আছে?আর আমি কি তোমার পায়ে মাথা ঠেকিয়েছি?জাস্ট একটু আদর করেছি.. বোকা”
সিদ্রাত কথাটা শেষ করে নিশব্দে হাসে।আরশিও মুচকি হাসে।সিদ্রাত আবারও বলে….
—”আচ্ছা এখন আপাতত একটু চুলগুলো টেনে দাও তো।একটু ঘুমাবো”
—আপনাদের বাসায় যাবেন না?”
সিদ্রাতের এবার মনে পড়ে দুপুরে বাসায় যাওয়ার কথা ছিলো।সিদ্রাত হেসে বলে…
—”আসলেই তো..দেখেছো আমি একদমই ভুলে গিয়েছিলাম।আচ্ছা তাহলে আমার রুমে চলো।দুজন লম্বা একটা ঘুম দিবো”
আরশিও মুচকি হেসে সম্মতি দেয়।আরশির আম্মুকে বলে সিদ্রাত আরশিকে নিয়ে নিজেদের রুমে চলে আসে।রুমে এসেই সিদ্রাত লাইট অফ করে জানালার পর্দাগুলো সব ঢেকে দেয়।আরশি ভ্রু কুচকে বলে…
—”এই ভর দুপুর বেলা রুম এভাবে অন্ধকার করছেন কেন?”
সিদ্রাত মৃদু হেসে পাঞ্জাবিটা খুলে একপাশে রেখে বেডে শরীর এলিয়ে দেয়।আরশির ভ্রু জোরা আরও কুচকে যায় সিদ্রাতের এমন কান্ডে।আরশি বলে…
—”কি হলো?”
সিদ্রাত একটা হামি দিয়ে বলে…
—”রুম অন্ধকার না করে ঘুমাতে পারি না..এবার বুঝেছেন জনাবা?”
আরশি ফিক করে হেসে দেয়।সিদ্রাত আবারও বলে…
—”এবার আমার কাছে এসে চুলগুলো টেনে দাও..তারপর দুজন একসাথে ঘুমাবো”
আরশি মুচকি হেসে গুটিগুটি পায়ে বেডে গিয়ে উঠে সিদ্রাতের মাথার সামনে বসে।সিদ্রাত আচমকা হেচকা টান দিয়ে আরশিকে নিজের বুকের উপর শুইয়ে দেয়।আরশি চমকে যায় এতে।মুখ তুলে সিদ্রাতের দিকে কড়া চোখে তাকাতেই সিদ্রাত বলে…
—”আমার বুকে মাথা রেখে শুয়ে চুলে বিলি কাটো”
আরশি ইচ্ছা করে ভেঙচি কেটে বলে…
—”হুহ নবাবজাদা!”
সিদ্রাত হেসে দিয়ে বলে…
—”তুমি এই নবাবজাদার সম্রাজ্ঞী”
আরশির এবার হালকা লাজুক হাসে।তারপর সিদ্রাতের বুকে মাথা গুঁজেই চুলগুলো আলতো হাতে টেনে দিতে লাগল।সিদ্রাতও আরশিকে আলতোভাবে জড়িয়ে ধরল।কিছুক্ষণ পর সিদ্রাত হঠাৎ বলে…
—”আরশি আগামীকাল থেকে ক্লাস স্টার্ট করবে।পড়াশুনা এতোদিন অফ রাখা যাবে না..ওকে সোনা?”
আরশি চমকে উঠে সিদ্রাতের দিকে তাকায়।তারপর বলে…
—”কাল থেকেই?এটা রীতিমতো জুলুম..আমি নতুন বউ।আমি এখনই পড়ব না”
আরশি মুখ ফুলিয়ে ফেলল বলতে বলতে।সিদ্রাত বলল…
—”চড় থেরাপি চিনো?কয়েকটা এই থেরাপি দিলেই রোগ ঠিক হয়ে যাবে।কত সাহস বলে এখনি পড়বে না!”
আরশি পারলে এবার কেঁদেই দিবে।চুলে বিলি কাটা বাদ দিয়ে সিদ্রাতের বুকে মুখ গুঁজে শুয়ে রইল।সিদ্রাত ফিল করতে পারল ওর উন্মুক্ত বুক প্রেয়সীর উষ্ণ অশ্রুতে ভেসে যাচ্ছে।সে আরশির কানের লতিতে ঠোঁট ছুঁইয়ে লো ভয়েসে বলল…
—”হুশ কেঁদো না।খারাপ লাগে তো আমার…লিসেন.. রেগুলারলি ঠিকমতো মন দিয়ে পড়াশুনা করলে তোমাকে আর চার/পাঁচ বছর ওয়েট করাবো না।হুট করে একদিন সারপ্রাইজ দিয়ে আপন করে নিবে”
সিদ্রাতের বলা কথাটা সাথে সাথে আরশির বুকে পিয়ানোর সুর তুলে।আরশি বিষ্ময় নিয়ে সিদ্রাতের দিকে তাকায়।সিদ্রাত চোখের ইশারায় আরশিকে আশ্বস্ত করে যে সে মিথ্যা বলছে না।আরশির মন খারাপ চলে যায়।সেখানে এসে ভিড় করে এক রাশ লজ্জা।আরশি আবারও সিদ্রাতের বুকে মুখ লুকায়।সিদ্রাত আরশির মাথায় চুমু খেয়ে নিশব্দে হাসে…
চলবে…