প্রিয় প্রহর পর্ব ১৩+১৪+১৫

#প্রিয়_প্রহর
লেখনীতে: #নুরুন্নাহার_তিথি
#পর্ব-১৩
লুকিয়ে কথা বলা, এভাবে শুরু হয় ধ্রুব-তারার প্রণয় প্রহর। কেটে যায় আড়াই বছর। গাড়ো হয় সবার প্রণয়। শুভ্র জার্মানিতে ইন্টার্নশিপের পর ছয় মাস থেকে ফিরে আসে। এরপর হৃদয় ভাঙ্গা গড়ার কাহিনী!
ফ্ল্যাশব্যাক এন্ড”_________________________________
শুভ্র রাতের দিকে ফিরে আরোহীদের বাসায়। আরোহী আয়ানার সাথে বসে পড়া কম্পলিট করছে। শুভ্র এসেছে সে বুঝতে পারেনি। এক সপ্তাহ পর প্রফ তাই মনোযোগ দিয়ে পড়ছে। বিয়ের কারনে পড়ালেখাতে অনেক গ্যাপ হয়েছে। তাই দুপুরে খাবার পর থেকে টানা পড়ছে। সন্ধ্যায় গ্রীন টি ও স্নেকস খেয়ে পড়তে বসেছে। এখন রাত সাড়ে নয়টা। একটু পর ডিনার করবে সবাই।

মিসেস নূর এসেছেন মেয়েদের রুমে। হাতে তার শরবতের গ্লাস। দুইবোন মায়ের উপস্থিতিতে একবার তাকিয়ে আবার পড়ায় মন দেয়। মিসেস নূর এসে আরোহীকে বলে,
–আরু, যাও মা এই শরবতটা শুভ্রকে দাও গিয়ে। ছেলেটা সেই সকালে বের হয়েছে আর এখন ফিরলো।

আরোহী বই থেকে চোখ সরিয়ে মায়ের দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকায়। সে বলে,
–তুমি গিয়ে দিলেই তো পারো মা। এখানে নিয়ে না এসে সরাসরি ওই রুমে যেয়ে শরবতটা দিয়ে আসতে। আমাকে কেনো যেতে হবে!

মিসেস নূর মেয়ের পাশে বসলেন। এরপর তার চঞ্চল মেয়ের মাথায় হাত রেখে বলেন,

–স্বামী বাসায় এলে স্ত্রীকে তার কি লাগবে না লাগবে তা দেখতে হয়। তাহলে স্বামীর মনে স্ত্রীর জন্য ভালোবাসা-টান তৈরি হয়। তুমি তো পড়ার তালে থেকে খেয়াল করোনি শুভ্র কখন ফিরেছে। আমি দরজা খুলে দিয়েছি ওকে। শুভ্রর সাথে তোমার বিয়েটা যে শুভ্র মানতে পারছে না তা আমি জানি। কিন্তু তাও শুভ্র আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করছে না। তার কষ্টটা আমরা শুধু বাহির থেকে দেখতে পারবো যদি সে দেখায়। ভিতরে কি হচ্ছে তা বুঝতে পারবো না। তোমাকে তার মনে জায়গা করে নিতে হবে। হয়তো সময় লাগবে। ছয়মাস, একবছর, দুইবছর এরকম পেরিয়ে যেতে পারে। তোমাকে চেষ্টা করে যেতে হবে।

আরোহী নিজের মায়ের কথা শুনলো মাথা নিচু করে। আয়ানাও শুনলো। আরোহী আপন মনে বিড়বিড়ায়, “আমি তার সামনে না গেলেই সে হয়তো ভালো থাকে! ”
আয়ানা তার বোনের অবনত মস্তকের দিকে তাকিয়ে আছে। আজকে আয়ানা সবকিছু শুনে বুঝেছে এই ট্রাইএঙ্গেল সবকিছু একপাক্ষিক জড়তার কারনে।

মিসেস নূর আবার বলেন,
–তোমাদের বাবার জীবনেও কিন্তু আমি প্রথম ভালোবাসা হয়ে আসিনি। এসেছি তার শেষ ভালোবাসা হয়ে। “কারো প্রথম ভালোবাসা হওয়া ভাগ্যের ব্যাপার তবে শেষ ভালোবাসা হওয়া সৌভাগ্যের।”

মিসেস নূর শরবতের গ্লাসটা আরোহীর হাতে দিয়ে রুম থেকে চলে যায়। আয়ানা নিজের বোনকে চোখের ইশারায় আশ্বাস দেয়।
আরোহী যায় শুভ্রর কাছে। শুভ্র ততোক্ষণে শার্ট-প্যান্ট বদলে হাতমুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে নিয়েছে। আরোহী দেখে শুভ্র কালো টিশার্ট ও গ্রে টাউজার পরিহিত অবস্থায় ব্যালকনি থেকে তাওয়াল রেখে ফিরছে। ডিসেম্বর মাসের শেষের দিক। এই শীতেও নাকি শুভ্র রাতের বেলা শাওয়ার নিয়েছে! শুভ্রর চুলগুলো ভেজা দেখে আরোহীর নিজেরি শীত লাগছে। শুভ্রকে বিছানায় বসতে দেখে আরোহী দরজা থেকে সরে রুমে এগিয়ে যায় নিঃশব্দে। এরপর শুভ্রকে সালাম দেয়।

শুভ্র সালাম শুনে আরোহীর দিকে তাকায়। এরপর সেও সালামের জবাব দেয়।
আরোহী নিজের হাতের গ্লাসটা শুভ্রকে দেয়। শুভ্র শরবত দেখে নিয়ে নেয়। তার এখন আসলেই তেষ্টা পেয়েছিল। এখুনি পানি খেতো তবে শরবত হওয়ায় ভালো হয়েছে। শুভ্র খালি গ্লাসটা দাড়িঁয়ে থাকা আরোহীর দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলে,

–ধন্যবাদ। আমার তেষ্টা পেয়েছিল।
আরোহী মুচকি হেসে বলে,
–আপনার শাশুড়িকে ধন্যবাদ দিন। সেই তো শরবত এনে বলল আপনাকে দিতে।
শুভ্র হাসলো। সে জানে তার মামি, যে কিনা এখন তার শাশুড়ি সে অনেকটা কেয়ারিং।

আরোহী শেষে শুভ্রকে মনের খচখচানি থেকে জিঙ্গাসা করেই ফেলল,
–আপনি এই শীতের মধ্যে ঠান্ডা পানি দিয়ে শাওয়ার নিয়েছেন? এই রুমের ওয়াশরুমে তো গ্রিজার নেই। আপনার ঠান্ডা লাগেনি? আমার তো গরম পানি দিয়েও শাওয়ার নিতে ঠান্ডা লাগে।

শুভ্র হেসে ফেলে আরোহীর কথায়। আরোহী শুভ্রকে হাসতে দেখে ভ্রু কুঁচকে বলে,
–হাসছেন কেনো? আমি কি হাসির কথা বলেছি?

শুভ্র হাসি থামিয়ে বলে,
–তোমাদের মেয়েদের বেশি শীত লাগে ছেলেদের তুলনায়। কারণ পূর্ণবয়স্ক মহিলাদের রক্তে প্রতি ঘন মিলিমিটারে গড়ে ৪৫ লাখ লোহিত রক্তকণিকা থাকে আর পূর্ণবয়স্ক পুরুষদের রক্তে প্রতি ঘন মিলিমিটারে গড়ে ৫০ লাখ লোহিত রক্তকণিকা থাকে। এই কারনে ছেলেমেয়েদের মধ্যে তাপমাত্রাতে পার্থক্য দেখা যায়। আর রক্তশূন্যতা থাকলেও শীত বেশি লাগে। রক্তে হিমগ্লোবিন কমে গেলে বেশি শীত লাগে। আরো অন্যান্য অনেক কিছু আছে। বুঝতে পেরেছো?

আরোহী ভেঙ্গচি কেটে বলে,
–শোনেন, আমিও মেডিকেল স্টুডেন্ট। তাই এগুলো আমার বেসিক জানা।
শুভ্র মাথা নুয়িয়ে মুচকি হাসে তারপর বলে,
–হ্যাঁ মেম। আপনি তো আমাদের ভবিষ্যৎ ডাক্তার।

আরোহী একটু ভাব নিয়ে দাঁড়ায়। শুভ্র এবার বলে,
–আপনার হিমগ্লোবিন লেভেল জানি কতো? কালকে ড্রইং রুমে সবাই বলছিলো, আপনি নাকি শীতকালে পানি ছুঁতেই চাননা? আপনার বসবাস নাকি মোটা কম্বলের নিচে হয় সবসময়? ডাক্তার তো আপনি হবেন তাই জানতে চাইলাম। বলেন।

আরোহী থতমত খেয়ে যায়। আরোহীর হিমগ্লোবিন লেভেল কম। এডাল্ট ফিমেইলে ১২-১৬ g/dl নরমাল রেঞ্জ আর এডাল্ট মেইলে ১৪-১৮ g/dl নরমাল রেঞ্জ। কিন্তু আরোহীর মাত্র ৯ g/dl। আরোহীর শীত সবার থেকে বেশি। আয়ানার তাও কিছুটা ভালো ১০.৫ g/dl।

আরোহী কথা কাটানোর জন্য বলে,
–আরে আপনি কি নিযে পরে আছেন! একটু পর ডিনারের জন্য ডাক আসবে। আমার এক সপ্তাহ পর প্রফ। আমি যাই একটু পড়ি। কতো পড়া বাকি আল্লাহ। যাই। বায় বায়।

আরোহী জলদি করে কেটে পরে। শুভ্র আরোহীর কথাগুলোতে নিঃশব্দে হেসে ফেলে। আরোহী চলে গেছে। হাসতে হাসতেই একটু পর শুভ্রর মুখে বিষাদের ছায়া ভর করে।
না। সে নিজের মনকে কন্ট্রোল করার চেষ্টা করবে। তার নিষিদ্ধ অনুভূতি গুলোকে নিজের মনে রাখার চেষ্টা করবে। কালকে শিলার কথামতো, সময়ের বহতায় নিজেকে সামলে নিবে। এখন সেই সময়টা কতোটা দীর্ঘায়িত হবে তা জানা নেই।

______
পরেরদিন সকালেই শুভ্র ও আরোহী শুভ্রদের বাসায় যায়। বিয়ের অন্য আচার-অনুষ্ঠান পরে করা হবে। আরোহীদের পরিক্ষার পরে। শুভ্র আরোহীকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে সেখান থেকেই হসপিটালে চলে যায়। গাড়িতে দুজনের কারোই কথা হয়নি। আরোহী কাল থেকে নিজের ক্লাসে যাবে। পরিক্ষার আগের ইম্পরট্যান্ট ক্লাস গুলো করবে।

এদিকে নীড় ও মেঘ দুই ভাই তো একসাথে ভার্সিটিতে যায় যেহেতু দুজনেই একই ভার্সিটির শিক্ষক। ভার্সিটিতে দুজনেই নিজেদের ডিপার্টমেন্ট ছাড়াও অন্য ডিপার্টমেন্টের স্টুডেন্টদের কাছেও তারা প্রসিদ্ধ। দুই ভাই একসাথে ভার্সিটিতে ঢুকলো। গ্রাউন্ডের করিডর দিয়ে যাওয়ার সময় তো মেয়েরা অনেকে তাকিয়ে আছে।সাদিয়া ও সাবিলা দুজনেই তখন করিডরে ছিলো।

সাদিয়া ফার্মেসিতে মাস্টার্সে আর সাবিলা অনার্স থার্ড ইয়ারে ফার্মেসিতেই। দুজনেরই আজকে এই সেমিস্টার ফাইনাল ছিলো। সাদিয়ার আর একটা সেমিস্টার পর মাস্টার্স শেষ হবে। সাবিলা ফোর্থ ইয়ারে উঠবে।

নীড় ও মেঘ করিডর থেকে লিফ্টে উঠে যাওয়ার পর মেয়েরা একে অপরের সাথে তাদের নিয়ে চর্চা করছে। তারা সবাই এই দুই ভাইয়ের উপর ক্রাশিত। হবে নাই বা কেনো! দুই ভাই ফর্সা ও সুঠাম শারীরিক গঠনের। তাদের দুই ভাইকে চিনতে অসুবিধে হয় কিন্তু তাতে কি! ভার্সিটিতে তারা সবার প্রিয়।
নীড় আজকে ব্লু শার্ট ও কালো প্যান্ট আর মেঘ আজকে কফি কালার শার্ট ও কালো প্যান্ট পড়েছে।
মেযেগুলোর ওদের নিয়ে এতো রোমান্টিক আলোচোনা সাদিয়া ও সাবিলার কারোই পছন্দ হচ্ছে না।
#প্রিয়_প্রহর
লেখনীতে: #নুরুন্নাহার_তিথি
#পর্ব-১৪
সাদিয়া ও সাবিলা দেখে যে যেই পাঁচজন মেয়ে বেশি এক্সাইটেড দেখাচ্ছে মেঘ ও নীড়কে নিয়ে, তাদের মধ্যে দুইজন ফার্মেসি ডিপার্টমেন্টেরেই জুনিয়র। আর বাকিরা অন্য ডিপার্টমেন্টের। সাদিয়া ও সাবিলা দুজনে ওই মেয়েগুলোর কাছে যায়। ওদের কাছে গেলে জুনিয়র দুইজন সালাম দেয়।
সাদিয়া জিঙ্গাসা করে,

–কোন সেমিস্টার?
জুনিয়র দুইজন বলে,
–ফোর্থ সেমিস্টার ফাইনাল দিলাম আপু।
–তারমানে থার্ড ইয়ারে উঠবে!
কথাটা বলে সাদিয়া ও সাবিলা একে অপরের দিকে তাকায়। সাবিলারো জুনিয়র ওরা। তবে সাবিলা তা আগে খেয়াল করেনি। সাদিয়া বলে,
–আর তোমরা তিনজন? (ডিপার্টমেন্টের জুনিয়র দুইজনের সাথের তিন জনকে)

ওদের মধ্যে একজন বলে, সে সিএসসি। আরো দুইজন বলে, তারা জেনেটিকস।
যে সিএসসির, তার দিকে সাদিয়া তীক্ষ্ণ চোখে তাকায়। মেয়েটা ভালোই মডার্ন। ওড়না ছাড়া হাঁটু পর্যন্ত লেডিস শার্ট ও টাইস। অবশ্য প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির কিছু স্টুডেন্ট মডার্ন, কিছু আল্ট্রা মডার্ন ও কিছু নরমাল ড্রেসকোডের স্টুডেন্ট আছে। আর এখানে সাদিয়ার সামনে দাড়াঁনো বাকি চারজনের ওড়না আছে কিন্তু সিএসসির মেয়েটার নেই।

সাদিয়া মনে মনে সিনিয়র হিসেবে আফসোস করছে, “কেনো র্যাগিং নেই? পাবলিক ভার্সিটি হলে সামনের মেয়েটা পেঁদানি খেতো মাস্ট! আর এই মেয়ে কিনা তার নীড়কে নিয়ে কিসব ভাবে!”

হুট করে সাবিলা বলে,
–এই ওড়না ছাড়া মেয়ে শুনো! আমার ভাসুরের দিকে নজর দিবে না একদম। আমার ভাসুরের বউ আছে। বুজেছো?

মেয়ে পাঁচটা অবাক হয়ে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে আছো। ওদের এই অবাকতার মাঝে ঘি ঢালতে সাদিয়া বলে,
–আর আমার দেবরের দিকেও তাকাবা না। আমার দেবরেরও বউ আছে।

কথাগুলো বলে সাদিয়া ও সাবিলা সেখান থেকে ভাব নিয়ে চলে আসে। পেছোনে যে মেয়ে গুলো বলদের মতো কিছু না বুঝে দাঁড়িয়ে আছে তাতে তাদের কিচ্ছু যায় আসে না। দুইজনের মনোভাব এটা,
“বুঝলে বুঝপাতা, না বুঝলে তেজপাতা!”

_______
রাতের বেলা ধ্রুব আয়ানাকে মেসেঞ্জারে পায়নি আর না পেয়েছে কল করে। কল করেও নাম্বার বন্ধ পাচ্ছে। ধ্রুব ভয় পাচ্ছে, কোন ঝামেলা টামেলা আবার হয়নি তো!
আর আয়ানা! ফোন অফ করে পড়াশোনা করছে। এনাটমির দুইটা কঠিন টপিক ওর মনে থাকছে না তাই সেগুলোকেই আধা ঘন্টা ধরে পড়ছে। একটা পড়ে তো আরেকটার কিছুই মনে থাকছে না। পড়ার সাথে সাথে এনাটমির উদ্ভাবককে বকছে,
–ধুর! ধুর! কে বলছে এতো কঠিন কিছু লিখতে? মনেই থাকে না আমার। আর আমার গুনধর বোনের নাকি এনাটমি পড়তে ভালো লাগে। কি মনোযোগ দিয়ে সে এনাটমির ক্লাস করে! যেনো একটু মনোযোগ সরলে তার মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে।

ধ্রুব এদিকে আয়ানাকে ফোনে না পেয়ে আরোহীকে ফোন করে। ধ্রুব জানে না যে আরোহী শুভ্রদের বাড়িতে এখন। সে ভাবছে, এখনো হয়তো আরোহীদের বাড়িতেই আছে। কাল রাতের পর আর ফোন করা হয়নি। আজ সারাদিন ধ্রবের হাসপাতালে ওয়ার্ডে ডিউটি ছিলো এবং এ কথা আয়ানাকে বলেছিলো সে।

আরোহীও তখন এনাটমির একটা টপিক নিয়ে বসে বসে কলম চাবাচ্ছে। বিয়ের আগের ক্লাস গুলোতে এই টপিক পড়িয়েছিল। কিন্তু আরোহী তখন নিজের জীবনে ঘটে যাওয়া ট্রাইএঙ্গেলে ফেঁসে ছিলো যে ওর মনোযোগ কম ছিলো। আর তাই পড়াটা এখন মেমোরাইজ করতে পারছে না। আরোহী ভাবছে,
“ইশ! কেউ যদি একটু বুঝিয়ে দিতো! তাহলে আমার আর প্রবলেম হতো না। ”

হঠাৎ রিংটোনের শব্দে ফোন হাতে নেয়। ফোনের স্ক্রিনে ধ্রুবের নাম্বার দেখে সে এক ভ্রু সামান্য উঁচু করে। এরপর কল রিসিভ করে,
–হ্যালো পূর্ব, বাহ! আজকে তোমার বউকে ছাড়া শালীকে মনে পড়লো কেন?

অপরপাশ থেকে ধ্রুব খানিকটা হাসে। তারপর বলে,
–শালীকে তো সবসময় মনে রাখি! তবে শালী যে তার প্রাণপুরুষে বিভোর হয়ে আমায় পাত্তাও দেয় না!

আরোহী হেসে ফেলে। ধ্রুবও হাসে। এরপর ধ্রুব আরোহীকে বলে,
–তা মিসেস শালীকা। আমার বউটারে একটু ফোন দেওয়া যাবে! তাকে আমি ফোন করে ফোন বন্ধ পাচ্ছি।

আরোহী বলে,
–ওহো দুলাভাই। আপনার বউ তার বাপের বাড়ি আর শালী তার শ্বশুর বাড়ি।

ধ্রুবের মন খানিকটা বিষন্ন হয়। তারপর বলে,
–কখন এলে ওবাড়ি থেকে?

–এইতো সকালে শুভ্র ভাই নামিয়ে দিয়ে হসপিটালে চলে গেলো। আসার সময় আমার বই আর নোটস গুলো নিয়ে এসেছি।

আরোহীর প্রতিউত্তরে ধ্রুব বলে,
–তোমার বোনের সাথে এখন কিভাবে যোগাযোগ করি বলোতো?

আরোহী টিটকারির স্বরে বলে,
–একটু আগে না বললা, আমি তোমারে পাত্তা দেই না? তাহলে এখন কি হ্যাঁ? ফোন তো করেছো তারে ফোনে না পেয়ে। এমনে কি আর আমারে মনে পড়ে তোমার?

আরোহীর কথা বলার সময় শুভ্র রুমে ঢোকে। আরোহীর শেষের কথাটা সে শুনতে পায়। সে বিনা শব্দে রুমে ঢোকে। আরোহী এখনো শুভ্র আসার আভাস পায়নি। আরোহী আবারো বলে,
–এখন তো আমারে আর মনে পড়ে না তোমার!
–আরে কি বলো! তোমারে কি ভুলা যায়? তুমি দশটা না পাঁচটা না আমার একমাত্র গুন্ডি শালী!

ধ্রুবের এমন কথায় আরোহী খিলখিল করে হেসে উঠে। ফোনের অপরপাশ থেকে ধ্রুবও হাসছে। আর শুভ্র! সে তো হাসির শব্দে আরোহীর দিকে নজর দেয়। হাসিটা তার ভালো লেগেছে। সে আরোহীকে এভাবে হাসতে তাদের রিসেপশনের দিন দেখেছিলো কিন্তু এর আগে কখনো দেখেনি বড় হবার পরে। দেখবে কি করে! আরোহীর সাথে তার দেখাই বা কয়দিন হয়েছে? দেখা হলেও রাগী, প্রতিবাদী, গম্ভীর এইভাবেই দেখেছে। তাছাড়া শুভ্রর মনের খবর জানার পর আরোহী শুভ্রর সামনে বেশি একটা যেতো না।
রিসিপশনের দিন শুভ্র আরোহী ও আয়ানার হাসির মধ্যে পার্থক্য করছিলো।
আরোহী হাসলে দুই ঠোঁটের কোণে সামান্য গর্ত হয় আর আয়ানার শুধু ঠোঁটের বাম কোণে সামান্য গর্ত হয়।

হঠাৎ শুভ্রর মনে প্রশ্ন উদয় হয়,
“কার সাথে হাসছে? ফোনের অপরপাশের ব্যাক্তিটা কে? ছেলে না মেয়ে? সম্বোধন শুনে তো মেয়ে মনে হয় না! বড় বোনের মধ্যে শুধু রিয়ানা আপু কেই ‘তুমি’ করে বলে। আর বাকিদের সবাইকে ‘তুই’ করে। আর রিয়ানা আপু তো পাশের রুমে। তাহলে? ”

শুভ্রর এতো ভাবনার মাঝেই আরোহীর মুখে পুলকিত স্বরে শোনা যায়,
–তুমি ভালোবেসে যা বলো তাতেই আমি খুশি। যার ভালোবেসে কিছু বলার কথা সে যখন নির্বাক তখন তোমার এই ডাক টাই বা কম কিসে! অন্তত আমার মন ভালো তো করতে পারে।

শেষের কথাগুলো বলতে বলতে আরোহীর মুখে নেমে আসে বিষন্নতার আঁধার ছায়া। অপরপাশে ধ্রুবেরও মন খারাপ হয়ে যায়। ধ্রুবের ভালো লাগে না হাসিখুশি মেয়েটাকে এভাবে দেখতে। ধ্রব ভাবে,

” এই এক ভালোবাসা মেয়েটার হাসি কেড়ে নিয়েছে। মেয়েটা নিজেকে তার শুভ্র প্রেমিকের শুভ্র রঙে রাঙাতে যেয়ে কখন যে বিবর্ণ হয়ে গেছে তা মেয়েটা নিজেও বুঝতে পারেনি। এমন স্বিকারোক্তি বিহিন ভালোবাসায়, ভালোবাসার শব্দ গুলোকে মালাতে সাঁজাতে গিয়ে এখন শব্দের মালা ছিড়ে শব্দ গুলোকে বিচ্ছিন্নভাবে হারিয়ে ফেলেছে। এখন যার উদ্দেশ্যে এতো শব্দের আয়োজন করেছিল হৃদকুটিরে সেই মানুষটাকে সয়ং খুঁজে নিতে হবে হারিয়ে যাওয়া শব্দগুলোকে। আর তারা আবার দুজনে মিলে গাঁথবে ভালোবাসার শব্দগুচ্ছের মালা!”

ধ্রব নরম স্বরে বলে,
–খুব বেশি ভালোবাসো তাইনা?
আরোহী হাসলো। তার ভালোবাসার গভীরতা তো সে নিজেই মাপতে জানে না! সে শুধু জানে ভালোবাসে! খুব ভালোবাসে। তবে অব্যক্ত ভাবে। আরোহী বলে,
–হ্যাঁ, ভালোবাসি। অনেকটা ভালোবাসি।

শুভ্র এতোক্ষন আরোহীর কথাগুলো শুনছিলো। ফোনের অপরপাশের ব্যাক্তিটা কে সে জানে না তবে কপাল কুঁচকে সে বুজার চেষ্টা করছিলো দরজা থেকে কিছুটা সরে এসে। আরোহী টেবিলে বসে পড়ছিলো আর রুমের দরজা খোলা রেখেই। টেবিলটা খাটের পাশে আর ব্যালকনির দরজার পাশে। টেবিলের সামনে জানালা।
আরোহীর মুখ থেকে “ভালোবাসি” কথাটা শুনে শুভ্র ক্ষিপ্ত হয় কিছুটা। সে তার হাতের ব্যাগটা খাটে ছুড়ে মেরে আরোহীর কাছে যেয়ে কান থেকে ফোনটা কেড়ে নেয়। তার খেয়াল নেই ব্যাগে যে ল্যাপটপ আছে।
#প্রিয়_প্রহর
লেখনীতে: #নুরুন্নাহার_তিথি
#পর্ব-১৫
হঠাৎ কেউ কান থেকে ইয়ারফোন টান দিয়ে মোবাইল সমেত কেড়ে নেওয়ায় আরোহী হকচকিয়ে যায়। পেছোন ঘুরে দেখতে পায় শুভ্রর শক্ত মুখশ্রী। কঠোর চোখে তাকিয়ে আছে শুভ্র আরোহীর দিকে। আরোহী বুঝে পায় না কি হলো! আর ফোনটা এভাবে কেনো নিলো! শুভ্রর ড্রেস দেখে তো মনে হচ্ছে মাত্র এলো আর আরোহীর মনে পরছে না সে কিছু করেছে বলে!

শুভ্র আরোহীর দিকে কঠোর চোখে তাকিয়ে গম্ভীর স্বরে বলে,
–কার সাথে কথা বলছিলে তুমি? আর কাকে ভালোবাসো?

আরোহী আঁতকে উঠে কিছুটা। তার এখন মনে হচ্ছে সে যে ফোনে ধ্রুবের সাথে কথা বলার সময় ঘোরের মাঝেই যে শুভ্রকে ভালোবাসে এটার জবাব দিয়েছে। এখন তার টেনশন হচ্ছে যে কতোটা শুনেছে শুভ্র! আর কখন থেকে শুনছে?

আরোহীর দিক থেকে কোনো জবাব না পেয়ে শুভ্র এবার আরো রেগে যায়। সে আরোহীর ডান হাত চেপে ধরে।
ডান হাত চেপে ধরায় আরোহী কিছুটা অবাক হয়। শুভ্র সেদিকে লক্ষ্য করে না কারন তার এখন জবাব চাই। শুভ্র বলে,
–কি হলো? বলো? তুমি কার সাথে কথা বলছিলে আর কাকে ভালোবাসো?

আরোহীর ফোনটা তার হাতে হলেও সে দেখতে পারছে না কারন ফোনের স্ক্রিন লক হয়ে গেছে। আরোহী ঢুক গিলে বলে,
–ধ্রুবের সাথে কথা বলছিলাম।

শুভ্রের বুক ধুক করে উঠে। সে ভাবছে,
” আরোহীও কি ধ্রুবকে ভালোবাসে? তাহলে আয়ানার জন্য কেনো তাকে বিয়ে করলো? ”

শুভ্রর এখন জবাব চাই। তাই সে চোখ ছোট ছোট করে জিঙ্গাসা করে,
–তুমি ধ্রুবকে ভালোবাসো?
আরোহী শুভ্রের এহেনো কথা শুনে প্রচণ্ড অবাক হয়। আর ওদিকে ফোনের বিপরীত পাশে ধ্রব এখনো লাইনে আছে। এতোক্ষন সব সে শুনছিলো। শুভ্রের এই কথা শুনে সেও অবাক ও স্তব্ধ হয়ে গেছে।

–হোয়াটটট! কি বলছেন আপনি? কথা বলার সময় বুঝে বলবেন।
–আমি যা শুনলাম ও তুমি যা উত্তর দিলে তাইতো বললাম।
আরোহীর কথার প্রতিউত্তরে শুভ্র বলে।
–আমি কখন বললাম যে আমি ধ্রবকে ভালোবাসি?

শুভ্র বিপরীতে কিছু বলে না।
–আপনি কি ফোনের অপরপাশের ব্যাক্তির কথাও শুনতে পেয়েছেন? না তো। তাহলে কিভাবে হুট করে বলছেন যে আমি কাকে ভালোবাসার কথা বলেছি?

শুভ্র বুঝে সে ভুল বলে ফেলেছে রাগের মাথায়। কিন্তু একটা কিন্তু থেকে যায়! “তাহলে আরোহী কাকে ভালোবাসার কথা বলল!”
–তাহলে তুমি কাকে ভালোবাসো? আই মিন ফোনে কাকে ভালোবাসো এই কথা বলেছো?

আরোহী এবার বিপাকে পরে যায়। কি জবাব দিবে বুঝতে পারছে না। তবে সে শুভ্রকে এখনি বলবে না যে সে শুভ্রকেই ভালোবাসে!

–কি হলো বলো? কাকে ভালোবাসো?
শুভ্রর অধৈর্য গলা শুনে আরোহী তাচ্ছিল্য হাসে। তারপর বলে,
–জেনে কি করবেন? আপনার কি আমি কাউকে ভালোবাসলে?

রেগে যায় শুভ্র। হাতের কব্জি ছেড়ে এবার আরোহীর দুই বাহু চেপে ধরে।
–আমার কি মানে! ভুলে যেও না তুমি আমার স্ত্রী। আর বিয়াটাতে তুমি রাজী ছিলে আর আমার মত ছিলো না বিয়েতে।

আরোহী শুভ্রের চোখে চোখ রেখে বলে,
–সেইতো! আমিই তো আপনাকে জোর করে বিয়ে করেছি। আপনি তো রাজী ছিলেন না। তাহলে আমি কাকে ভালোবাসলাম আর কাকে বাসলাম না তাতে আপনার কিছু যায় আসার কথা না।

শুভ্র আরোহীর বাহুতে এবার খামচে ধরে আর কিছুটা উঁচু আওয়াজে বলে,

–যায় আসে আমার। অন্য কাউকে ভালোবাসলে আমায় কেনো বিয়ে করলে? কেনো আমার মন ও মস্তিষ্কের মাঝে দন্দ লাগিয়ে দিলে? আমার মনে এক আর আমার জীবনে আরেক! এই বেড়াজালে আমি খুব ভাবে ফেঁসে গেছি। যেদিকে তাকাই নিজেকেই ভুল দেখতে পাই। সবাই আমার বিপক্ষে। আমার দোষটা কি ছিলো বলতে পারো? শুধু ভালোবেসেছিলাম এতোগুলো বছর ধরে। নিজের মনে তার জন্য এক ভালোবাসার রাজ্য বানিয়েছিলাম তার জন্য। কিন্তু যাকে সেই রাজ্যের সিংহাসনে কল্পনা করে রাজ্য বানানো সে সেই সিংহাসনে আসিন হতে নারাজ। গুরিয়ে দিলো আমার প্রাসাদ! আমার দোষটা কোথায়? বলতে পারো? এরপর ভাঙা মন নিয়ে আমি নাহয় তার ভালোবাসার মানুষটাকে এক দুইবার হার্ট করে কথা বলে ফেলেছি। কিন্তু একবারো বুঝতে চেয়েছ! আমি কতোটা কষ্টে আছি? আমার দিকটা কেউ ভাবলো না। সবাই নিজেদের দিকটা দেখে সেই আমাকেই দোষী সাব্বস্ত করে দিলো। তাদের যেমন কষ্ট হয়, আমারো ঠিক তোমনি কষ্ট হয়। তাদের দুজনের ভালোবাসার প্রহর শুরু হবার আগেই আমার প্রিয় প্রহরে আমি তাকে রেখেছি। সাগরের কল্লোলময় শহরে এক প্রিয় প্রহরে সে কদম রাখে আমার মনের ঘরে। ওইদিন ভীত মুখশ্রীর কিশোরী আমার মনে প্রথম ভালোবাসার রঙ ছড়ায়। আর আজ সেই কিশোরী এতো বছর পর এসে আমার মনের ঘরে বিষাদের রঙে রাঙিয়ে গেলো।

আরোহী শুভ্রর প্রতিটা কথা শুভ্র চোখের দিকে তাকিয়ে শুনেছে। মুখে বলা প্রতিটা কথা তার সত্যতা চোখ দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছে। শুভ্রর চোখে ফুটে উঠেছে সব ব্যাথা। আরোহী ভাবে,
” সত্যি তো! শুভ্রর কি দোষ! সেও ভালোবেসেছে। কিন্তু তার ভালোবাসাটা অপূর্ণতায় রয়ে গেলো। কি অদ্ভুত মিল তাদের দুজনের! একই দিনে তারা দুজনেই কারো প্রতি প্রথম ভালোবাসার অনুভূতি অনুভব করলো। সেই সাগর পাড়ে একরাশ ভরসা নিয়ে বাহুডোরে আবদ্ধ করলো। তারপর একে একে তার রঙে নিজেকে রাঙিয়ে আজ সে বিবর্ণ! মন ভাঙলো। অপেক্ষা বাড়লো সাথে দূরত্ব। যেই সাদা রঙ কখনো পছন্দ ছিলো না সেই শুভ্রতার প্রতীক সাদা রঙে নিজেকে রাঙালো। ”

টুপ করে দুই ফোঁটা অশ্রুকণা গড়িয়ে পড়লো চোখের কার্ণিশ বেয়ে। দুজনেই এখন নিশ্চুপে আছে। দুটি ভগ্ন হৃদয় জোরা লাগানোর অভিপ্রায়।

আরোহী নিরবতা ভঙ্গ করে শুভ্রর চোখের দিকে তাকিয়ে বলে,
–কোনো পরপুরুষকে আমি ভালোবাসি, এটা বলিনি। কোনো পরপুরুষ আমার হৃদকুটিরে আসবে না। আমি আসতে দিবো না।

শুভ্রর ধ্যান ভাঙে। সে চোখ নামিয়ে নেয়। আরোহীর বাহু থেকে হাত সরিয়ে নেয়। এরপর আরোহীর ফোনটা টেবিলে রেখে সরে আসে সেখান থেকে। কাভার্ড থেকে সে টিশার্ট ও টাউজার নিয়ে ওয়াশরুমে যেতে নিলে পেছোন থেকে আরোহী বলে,

–ভালোবাসি আমি আমার বোনকে! তাইতো তার আগ্রাহ্য করা ব্যাক্তিকে নিজের করে নিয়েছি। যাতে আমার বোনটা সুখে থাকে।

শুভ্র থমকে দাঁড়ায় কিছু সময়। এরপর চলে যায় ফ্রেশ হতে।
আরোহী আজ আংশিক সত্য বললো। তবে শুভ্রর চোখের দিকে চেয়ে সত্যটাই বলেছে আর বাকিটাকে মিথ্যা বলা যায় না তবে শুভ্রর করা প্রশ্নের জবাবে সেটা আংশিক সত্য। সেতো শুভ্রকে ভালোবেসে বিয়ে করেছে সাথে তার বোনের জীবনে যাতে ভালোবাসার পথে বাধা না আসে।

একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে টেবিলে রাখা ফোনটা স্ক্রিন অন করে। অন করে দেখে ধ্রুব এখনো কলে কানেক্টেড। আরোহীর এখন আর ধ্রুবের সাথে কথা বলতে ইচ্ছে করছে না তাই ওয়াইফাই ডিসকানেক্ট করে দেয়।

ধ্রুব এতোক্ষন শুভ্রর বলা সব শুনেছে। তার এখন শুভ্রর জন্য কষ্ট হচ্ছে। ধ্রুব নিজের তিন বছরের ভালোবাসাকে হারিয়ে ফেলার ভয়ে কেঁদেছ আর শুভ্র! সে তো আট বছর ধরে চুপিসারে ভালোবাসে আয়ানাকে। আর আরোহী সেও তো আট বছর ধরেই ভালোবাসে শুভ্রকে। আরোহীর হৃদয় তো সেই সাত বছর আগেই ভেঙে গেছিলো কিন্তু নিয়তিতে বিশ্বাস করে সে অপেক্ষা করেছে। তার অপেক্ষা সফল হয়েছে। তার অব্যক্ত ভালোবাসার মানুষটা এখন তার স্বামী! তবে এক ভালোবাসা বিহিন সম্পর্কে সে বাঁধা পড়েছে। যেখানে একজন ভালোবাসলেও অপরজন ভালোবাসে না।

ধ্রুব চায়, এই দুইজনের মনে আবারো নতুন ভালোভাসার রঙে রাঙুক। আরোহী নিজের বিবর্ণ রঙে রঙিনতার ছাপ পাক আর শুভ্র নিজের শুভ্র ভালোবাসা দিয়ে আরোহীর মনের ভালোবাসার রঙে রাঙুক।

চলবে ইনশাআল্লাহ,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here