গল্প :- বড্ড ভালোবাসি
পর্ব :- ২৭ এবং ২৮
লেখিকা :- Labiba Islam Roja
:
:
:
পরশু ভাইয়ার গায়ে হলুদ।ভাইয়া ভাবির একসাথে তাদের বাড়িতে হলুদ অনুষ্ঠান হবে। সে মোতাবেক সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন।বাড়ি ভর্তি আত্মীয় স্বজন।তিশাকে আমাদের বাড়িতে নিয়ে এসেছি।একমাএ ভাইয়ের বিয়ে সেখানে বেস্টু না থাকলে কেমন লাগে।কিন্তু তিনি আসতে চান নি অবশেষে আঙ্কেলের ধমক আর আন্টির বকুনিতে আসতে বাধ্য হয়েছে।
.
.
রাতে আমি আর তিশা বসে আড্ডা দিচ্ছি এমন সময় আমার মোবাইল টুং টাং করে বেজে উঠলো।নাম্বারটা দেখেই বুঝলাম উনি কল দিয়েছেন।যদিও নাম্বার দু জনের কাছে আছে তবুও কেউ কাউকে কল দিইনা তাহলে।অসহায় দৃষ্টিতে ফোনের স্কিনে তাকিয়ে আছি।কি করব বুঝতে পারছিনা।প্রথমবার উনার সাথে ফোনে কথা বলবো হাতটা কাঁপছে।অদ্ভুদ এক অস্বস্তি হচ্ছে কিন্তু কেন।।তবুও কাঁপা কাঁপা হাতে ফোনটা হাতে নিয়ে তিশার থেকে একটু আড়াল হলাম কারন এখন যদি দেখে উনার সাথে কথা বলছি তাহলে আমাকে পঁচাবে।এই মুহূর্তটাকে নষ্ট করার ইচ্ছা আমার নেই এর মধ্য কলটা কেটে গেলো।একটু পর আবারও রিং হচ্ছে একটা ঢোক গিলে রিসিভ বাটনটায় চাপ দিলাম।আমাকে কিছু বলার চান্স না দিয়ে ওপাশ থেকে উনি বলে উঠলেন……. রেড রোজ এতক্ষণ লাগে একটা কল রিসিভ করতে।আমাকে অপেক্ষা করিয়ে কি শান্তি পাও বলতো এতদিন অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে ভালোবাসা দিলে আর এখন পাঁচ মিনিট ওয়েট করেও তোমার ভয়েস শুনতে পাচ্ছি না।
.
আমি কখন কথা বলবো আপনি আমাকে কথা বলার সুযোগ দিয়েছেন নাকি!এতক্ষণ ধরে আমাকে ঝেড়েই যাচ্ছেন।জানেনই তো বিয়ে বাড়ি কত কাজ একটু লেইট হতেই পারে
.
কোথায় তুমি কাজ করছো তুমি তো আড্ডা মারছো।
.
আআপনি কি করে জানলেন?
.
রেড রোজ আমি সব জানি।এখন দেরি না করে চটপট ব্যালকোনিতে চলে আসো তো।
.
ওখানে এসে কি হবে!
.
অনেক কিছু হবে তুমি শুধু আসো।তোমাকে দেখতে মন চাইছে
.
ওহ মাইই গড তার মানে আপনি আমাদের বাসার নিচে।
.
জ্বী চটপট আসুন।
.
কিন্তু টুট টুট টুট….
.
ব্যালকোনিতে এসে দাঁড়িয়ে উনাকে কোথাও আবিষ্কার করতে পারলাম না।তাহলে চলে গেলেন নাকি।বাসার গেইট হতে কিছুটা দূরে হাত ভাঁজ করে গাড়িতে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন উনি।ঝাপসা আলোর মধ্য চেহারা স্পষ্ট ফুঁটে উঠেছে।উনার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি।উনি আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসছেন।আবারও আমার ফোনটা বেজে উঠলো হাত এগিয়ে স্কিনে তাকিয়ে দেখলাম “রাক্ষস”।ইশারায় কল তুলার কথা বলছেন কল তুলে হ্যা… বলতে যাব তার আগেই উনার কন্ঠস্বর শুনতে পেললাম।
.
রেড রোজ এটা কি ঠিক হচ্ছে।
.
কোনটা?
.
বুঝতে পারছো না।আমি তোমাকে দেখবো বলে এখানে আসলাম আর এখন তুমি আমাকে দেখতে ব্যস্ত।কই কখনও তো আমাকে দেখার আকাঙ্ক্ষা তোমার মধ্যে দেখি না আমি তাহলে আজকে কেন এমন তৃষ্ণার্ত চোঁখ নিয়ে দেখছো আমায়।মিস করছো বুঝি।
.
উনার কথা শুনে দ্রুত চোঁখ নামিয়ে নিলাম। লজ্জায় মরে যাচ্ছি।ওপাশ থেকে আবারও বলে উঠলেন এই রোজ এভাবে লজ্জা পেওনা।তোমাকে এখন একদম স্ট্রবেরি আইসক্রিম লাগছে।ইচ্ছে করছে খপ করে খেয়ে ফেলি।
.
এরকম অদ্ভুদ ইচ্ছা উনি ছাড়া আর কারো হবে না।আমি আইসক্রিম ভারী অদ্ভদ….
.
বিছানায় পা দুলিয়ে চকলেট খাচ্ছি। হঠাৎ তিশাকে রেগে মেগে আসতে দেখলাম।ওকে দেখে মনে হচ্ছে কেউ ওর মাথায় পঁচা ডিম ফেলে দিয়েছে।রামগরুর ছানার মতো মুখ করে আমাকে এসে জিজ্ঞেস করলো।
.
এই তোরা কি বাড়িতে বান্দর পালিস।
.
ওর কথায় ভ্রু কঁচকে এলো আমার।কি যা তা বলছিস
.
হুম পালিস কি না সেটা বল!
.
কই না তো।আমাদের বাড়িতে তুই বান্দর পাইলি কই।
.
ওই তো তোদের বাসার নিচে।
.
আমাদের বাসার নিচে বান্দর আশ্চর্য আর আমি জানি না।
.
হুম জানিস না কারন ওটা জাতে মানুষ আর কাজে বান্দর।
.
তারমানে সত্যি সত্যি বান্দর না।মানুষ সিরিয়াসলি ছেলে না মেয়ে।
.
হুম….ছেলে!
.
আচ্ছা তাহলে বল কোন এঙ্গেল থেকে তোর ছেলেটাকে বান্দর মনে হলো।
.
.
.
আমি স্লিপ করে পরে যাচ্ছিলাম তখন বান্দরটা হিরোর স্টাইলে আমাকে লুফে নিল সেই অব্দি সব ঠিকঠাক ছিলো।কিন্তু
.
কিন্তু
.
কিছুক্ষণ আগে…..
.
রুমে ভালো লাগছিলো না তাই বাগানে গিয়ে হাঁটাহাঁটি করছিলাম আর ফুলগুলোকে দেখছিলাম।তখন কোনো কিছুর সাথে পা আটকে পড়ে যাচ্ছিলাম।আমি নিচে পরে যাওয়ার আগে কেউ আমাকে শক্ত করে ধরে ফেলল।মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম বেশ সুদর্শন সুঠাম দেহের অধিকারী একটা ছেলে।আমার দিকে হা হয়ে তাকিয়ে আছে।এরপর আমাকে সোজা করে দাঁড় করিয়ে বলল….
.
এই তুমি দেখতে চিকন চাকন কিন্তু তোমার ওজন এত বেশি কেন?
.
হোয়াটট আমার ওজন বেশি।নিজে মোটা হাতির মতো ওজন নিয়ে ঘুরছেন আর আমাকে বলছেন আমার ওজন বেশি।আর ইউ ম্যাড!(রেগে গিয়ে)
.
নো ম্যাম আই’এম এবসোলেইটলি ওকে।কিন্তু আমার মনে হয় তুমি পাগল।সদ্য পাবনা থেকে ছাড়া পেয়েছো।(মৃদু হেসে)
.
কথাটা শুনে রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে।মোটা হাতি আমাকে বলে আমি পাগল।আমি না আপনি পাগল।বান্দর কোথাকার!
.
কি বললে…আমি বান্দর (দাঁত কটমট করে)
.
হুম।
.
নো নেভার আমি না তুমি বানর!
.
নো ইউ….
.
নো অনলি ইউ নট মি!
.
নো ওনলি ইউউউ!
.
শাট আপ!(চিৎকার দিয়ে)ওকে আমি যেহেতু বান্দর তাহলে বাদরের মতো বিহেভ করি(বাঁকা হেসে) বলেই হাতে খামচি দিয়ে চলে গেলো।
.
ওর কাহিনী শুনে আমি হাসতে হাসতে বিছানায় গড়াগড়ি খাচ্ছি।কি সাংঘাতিক ছেলে বান্দর বলায় ডিরেক্ট খামচি।ভাবলেই হাসি পাচ্ছে।আর তিশা আমার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
.
.
অনেক্ষণ ধরে আব্বু ডাকছেন নিচে যাওয়ার জন্য।আব্বুর বিজনেস পার্টনার তার ফ্যামিলি নিয়ে এসেছেন।তাদের সাথে পরিচয়ের পর আঙ্কেল তার ছেলের সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন।তার ছেলেকে দেখে আমি অবাক! একি আবির ভাইয়া নাকি।হুম তাইতো আবির ভাইয়াই আব্বুর বন্ধুর ছেলে।তাহলে এতদিন দেখিনি কেন? আবির ভাইয়া এখানে এসেছেন তার বাবা মার রিকুয়েস্টে একটু পর চলে যাবেন তার বন্ধুর বাড়িতে।ওখান থেকেই বিয়ে এটেন্ড করবেন।
:
:
#Part_28
:
:
:
আজ ভাইয়ার গায়ে হলুদ।অনেক সাধনার পর আজকের এই দিনটা পেয়েছি।সবাই সাজগোজ নিয়ে ব্যস্ত।সকলের ড্রেস একই কালারের।মেয়েদের লাল পাট হলুদ শাড়ি আর ছেলেদের হলুদ পাঞ্জাওপবী।এর মধ্যেও শাওন, অর্না আর আমাদের আরও কিছু বান্ধবীও চলে এসেছে।আমি আর তিশা একই রকম সেজেছি।সেজেগোজে ভাইয়ার রুমে গিয়ে দেখি ভাইয়া রেডি হয়ে পায়চারী করছে।আমি রুমে ঢুকতেই ভাইয়া বলে উঠলো….আচ্ছা পরী মেয়েটা ভালো হবে তো।ভাইয়ার কথায় ভ্রু কুঁচকে তাকালাম আমি।কাল যার বিয়ে সে আজ জিজ্ঞেস করছে তার বউ ভালো হবে কিনা।এরকম পৃথিবীরর কেউ করেছে বলে আমার মনে হয় না।আমাকে চুপচাপ দেখে ভাইয়া আবার নিজেই বলতে লাগলো রিহান যেহেতু সাদা মনের মানুষ তাহলে ওর বোন নিশ্চয় ভালোই হবে কি বলিস।আমি মনে মনে তুমি তো জানো না ভাইয়া রিহান কত্ত বড় শয়তান ছেলে। বুঝতে পারছি ভাইয়া নিজেকে বুঝ দেওয়ার চেষ্টা করছে।ভাইয়ার কাঁধে হাত রেখে বললাম ভাইয়া টেনশন করো না আমি যতদূর ভাবিকে দেখেছি উনি ভালো না হয়ে পারবেন না।তোমার সাথে ঠিক মানিয়ে নিতে পারবেন।
.
.
.
রিহানদের বাড়িতে পৌছে গেছি।একমাএ মেয়ের বিয়ে বলে কথা কোনো কিছুর কমতি রাখেন নি জমকালো আয়োজন করেছেন।একটু পর কনেকে স্টেজে আনা হবে।আর ভাইয়া নার্ভাসনেস নিয়ে বসে আছে।বার বার টুপ টুপ ঘাম কপালে এসে জমছে আর তা মুচছে।আমি একটা বিষয় কিছুতেই বুঝি না আমার ভাইয়া যে কিনা কোনো কিছুকেই ভয় পায় না সে বিয়েকে এত ভয় পায় কেন?যদিও ভাইয়া তার কারন বলেছে কিন্তু তবুও এসব আমি মানতে রাজি নই।যাইহোক ভাইয়ার অবস্থা দেখে বড্ড হাসি পাচ্ছে।তবে একটা ব্যাপার খুব অদ্ভুদ লাগছে আজকে এখন অবধি মিঃরিহানকে দেখতে পেলাম না।বিয়ে বাড়ি হয়তো কাজে বিজি আছে।
.
.
হঠাৎ স্টেজ থেকে একটু দূরে চোঁখ যেতেই ধমকে গেলাম আমি।উনি বন্ধুদের সাথে কথা বলছেন।।হলুদ পাঞ্জাবীর হাত ফোল্ড করা হাতে ব্যান্ডের ঘড়ি ঠোঁটগুলো গোলাপি যেন কেউ লিপস্টিক পরিয়েছে চুলগুলো ডার্ক করা আর চোঁখে সানগ্লাস। উনাকে দেখে আমি ক্রাশড।উনার পাশে লিনা আপু সহ আরো অনেক মেয়েকে দেখলাম।সবাই উনার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।সবকয়টা মেয়েকে মনে হচ্ছে তুলে আছার মারি।লুচ্চা মাইয়া কোথাকার জিবনে ছেলে দেখিসনি উনাকে এভাবে গিলে খাচ্ছিস।আর উনাকে দেখ এতে তার কোনো হুশই নেই।।আমাকে দেখে পাশ থেকে আবির ভাইয়া উনাকে কি যেন বললেন আর উনি আমার দিকে তাকালেন।
.
আবিরের কথায় সামনে তাকালাম। তাকায়েই হা হয়ে আছি চোঁখ সরাতেই পারছি না।এটা সেই রোজ নাকি কোনো পরী।আজ রোজ লাল পাট হলুদ রঙের শাড়ি পরেছে সাথে ম্যাচিং অর্ণামেন্ট।হাত ভর্তি হলুদ কাঁচের চুড়ি চোঁখে গারো কাজল,ঠোঁটে ডিপ লিপস্টিক।ঘন কালো লম্বা চুলগুলো কোমড় পর্যন্ত ডার্ক করে ছেড়ে দিয়েছে।
.
উনাকে এভাবে আমার দিকে তাকিয়ে থাকতে কলেজের সেই দিনের কথা মনে পড়ে গেলো।তাড়াতাড়ি নিজের দিকে ভালোভাবে দেখে নিলাম না শাড়িটা আজ ঠিকঠাক আছে।
.
বুঝতে পারছি সেদিনের কথা মনে পরছে রোজের। হাতের ইশারায় বললাম দারুন লাগছে আর ও মুচকি হেসে চলে গেলো।
.
.
কিছুক্ষণ পর হলুদ সন্ধ্যা শুরু হবে।।তাই আমি আর তিশা বাড়িটাকে ঘুরে ঘুরে দেখছি।ঘুরতে ঘুরতে বাড়ির ভিতরে চলে যাই ভাবিকে দেখতে।ভাবির রুমে যাচ্ছি এমন সময় কে যেন আমার হাত ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিলো।তাকাতেই দেখি উনি আর কেউ নন রিহান ভাইয়া আমি সরে যেতে চাইলে আমাকে কোমড় জড়িয়ে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলেন।আমি তো ভয়ে কাঁপছি।চারদিক তাকিয়ে দেখলাম এই রুমে আমি আর উনি ছাড়া কেউ নেই। এই ফাঁকা রুমে উনি আমার সাথে কি করবেন সেদিনের মতো কিছু করবেন নাকি।ধুর এই বাড়িতে আসলেই আমার সাথে যত অঘটন ঘটে। এই ভেবেই বড় বড় ঢোক গিলছি।উনি আমার দিকে আস্তে আস্তে এগিয়ে আসছেন উনার চোখের দিকে দেখলাম উনি নেশাক্ত চোখে তাকিয়ে আছেন।উনাকে এগিয়ে আসতে দেখে চোখ দুটো খিঁচে বন্ধ করে নিলাম।নিশ্বাস আটকে যাচ্ছে হাত পা কাঁপছে।দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিনা।হঠাৎ কপালে নরম কিছুর স্পর্শ পেয়ে চোখ খুলে তাকালাম।তাকিয়ে দেখি উনি আমার থেকে কিছুটা দূরে দুহাত ভাঁজ করে দাঁড়িয়ে মুচকি মুচকি হাসছেন।
.
কি ভেবেছিলে হুম (ভ্রু নাচিয়ে)।এই টুকুতেই এত কাঁপাকাঁপি বাসর ঘরে তো ভূমিকম্প শুরু হয়ে যাবে।
.
লজ্জায় এখন মাটির সাথে মিশে যেতে ইচ্ছা করছে।সত্যি সবসময় আগে নেগেটিভ চিন্তা করি।আমি কি ভাবছিলাম আর হলো কি।উনারও মুখে কিছু আটকায় না।সবসময় আমাকে লজ্জা দিতেই হবে না দিলে যেন উনার কত ক্ষতি হয়ে যাবে।
.
শুনেছিলাম শাড়িতে মানায় নারী কিন্তু এতটা যে মানায় সেটা জানতাম না।একদম ফুলপরী লাগছে। আমাকে নেশা ধরিয়ে দেওয়ায় আজকের দিনে এটা তোমার গিফট।এভাবে আমাকে পাগল না করলেও পারতে।তোমার মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলেছিলাম।অনেক কষ্টে বাস্তবে ফিরেছি। তোমাকে দেখে শুধু একটা গানের লাইন মনে পরছে।
“মনে হয় আমি নেই আমাতে”
“হারিয়ে গেছি সেই তোমাতে”
.
স্টেজে ভাইয়া আর ভাবিকে বড়রা এক এক করে সবাই হলুদ লাগাচ্ছে।ভাবিকে অসাধারন লাগছে।লাল হলুদ রঙের লেহেঙ্গা।গলায় ফুলের গয়না কানে বড় ফুলের দুল কপালের টিকলিও ফুলের তৈরী গারো লাল ডিপ লিপস্টিক কপালে লাল টিপ পরীর মতো লাগছে।ভাইয়াও ভাবির সাথে ম্যাচিং কালারের পাঞ্জাবী পরেছে। চুলগুলো স্পাইক করা হাতে ঘড়ি জাস্ট ক্রাশ। ভাইয়া আজ ভাবির উপর ক্রাশড বার বার ভাবিকে দেখছে।ভাবিও যে ভাইয়াকে দেখছে না তা না লুকিয়ে লুকিয়ে ভাইয়াকে দেখছে আর ভাইয়ার চোঁখে চোঁখ পরলেই নামিয়ে নিয়ে লজ্জায় মাথা নিচু করে বসে আছে।
.
এবার ছোটদের পালা আমার বহু দিনের শখ ভাইয়া আর ভাবিকে হলুদ ভূত বানানোর।অনেকগুলো হলুদ নিয়ে ভাইয়া ভাবিকে হলুদ ভূত আর পেত্নী বানিয়ে দিলাম।ভাইয়া কিছু বলল না শুধু হাসলো আর বলল এর শোধ আমি নেব পরী তোর হলুদে তোকেও হলুদ পেত্নী বানাবো দেখিস।ভাইয়ার কথা শুনে সবাই হেসে দিলো।এরই ফাঁকে তিশা আমাকে একগাদা হলুদ মাখিয়ে দিলো।যার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।তিশার দিকে চোঁখ রাঙাতেই ও দৌড়ে পালাতে লাগলো।তখন আবির ভাইয়া খপ করে ওকে ধরে ফেলল আর বলল…..
.
.
রোজ এদিকে আসো আমি তোমাকে হেল্প করছি।আবির ভাইয়ার কথায় দৌড়ে তিশার কাছে গেলাম গিয়েই তিশাকে একদম ভূত বানিয়ে দিলাম।তিশা আপ্রাণ চেষ্টা করছিলো নিজেকে ছাড়ানোর কিন্তু একটা ছেলের সাথে কি আর পারা যায় তাই তিশাও ব্যর্থ হলো।তিশাকে হলুদ দেওয়া শেষ হলে আবির ভাইয়া ওকে ছেড়ে দেয় আর সবাই হাসতে থাকে। তিশা রাগে গজগজ করতে করতে চলে যায় মুহূর্তেই হাত ভর্তি হলুদ নিয়ে আবার ফিরে আসে। কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই আবির ভাইয়াকে মাখিয়ে দেয়।আবির ভাইয়া হলুদ মেখে একাকার।তিশার অবস্থা দেখে সবাই হাসাহাসি করছে। বেঁচারা আবির ভাইয়া না পারছে কিছু বলতে আর না পারছে সহ্য করতে।রাগে ফুঁসছে।
.
এবার রিহান ভাইয়ার পালা ভাইয়া ভাবিকে একটু হলুদ দিয়ে হাত ভর্তি হলুদ নিয়ে আমার সামনে দাঁড়ালো।আমি ভয়ে চারদিক তাকাচ্ছি উনি সবার সামনে কি করতে চাইছেন। হাজারো প্রশ্ন আমারর মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে তখন আমাকে অবাক করে দিয়ে হলুদ নেওয়া হাতটা আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেন…..
.
এই নাও রোজ(হলুদ এগিয়ে দিয়ে) আপু ভাইয়া আবির তিশা মোটামুটি সবাইকে তোমার ভূত বানানো কমপ্লিট বাকি শুধু আমি তাই ভাবলাম আমি আর বাদ যাব কেন? আমাকেও দিয়ে মজা নাও।
.
এতো মেঘ না চাইতেও জল ভাইয়ার দিকে তাকালাম ভাইয়াও ইশারা দিলো দেওয়ার জন্য তাই দেরি না করে চট করে হলুদ নিয়ে রিহান ভাইয়াকেও হলুদ ভূত বানিয়ে দিলাম।আমার এসব পাগলামো দেখে সবাই হাসছে রিহান ভাইয়াকে বললাম হলুদ ভূত না আপনাকে হলুদ রাক্ষস লাগছে উনাকে দেখছি আর খিল খিল করে হাসছি।উনি আমার কানের কাছে ফিসফিস করে বলে উঠলেন….
.
এই পিচ্চি সব কিছুতে পিচ্চিদের মত এত এক্সাইটেমেন্ট কেন তোমার।পিচ্চিদের বিহেভিয়ার কি পাল্টাবে না।জানো আজকে তোমাকে দেখতে আর কর্মকান্ডেও তোমার বাচ্চামো স্পষ্ট।অনেকদিন পর তোমার এই হাসি মুখটা দেখলাম এভাবেই হাসি খুশি থেকো।তোমার এই মায়ামাখা মুখটা দেখব বলে এতগুলো হলুদ মাখলাম।আরও একটা কারনও ছিল আমি চাইছিলাম তুমি প্রথম আমাকে হলুদ মাখাও তাই কারো হাত থেকে এখনও হলুদ মাখিনি শেষপর্যন্ত তোমার হাতেই মাখলাম।আর কি যেন বলছিলো আমাকে “হলুদ রাক্ষস”। এই হলুদ রাক্ষস হলুদ পরীর সাথে কি কি করে জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ।
.
কিছুক্ষণ পর কাপল ডান্স শুরু হবে।তাই একটা ব্রেক দেওয়া হয়েছে।সবাই ফ্রেশ হয়ে আবার জয়েন করবে।আমি আর তিশাও ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম ওয়াশরুম থেকে বেরোতেই কেউ আমার হাত ধরে একটানে আবারও ওয়াশরুমে ঢুকিয়ে দিয়ে দরজা লক করে দিলো।এমন ঘটনায় আমি শকড….
.
.
চলবে………