#বাসন্তী_প্রেম 🌼🌼
#লেখনীতে: ইনায়াত আহসান (ছদ্মনাম)
#উনত্রিংশ_পর্ব
সময় বহমান। সে তো আর কারো অপেক্ষায় থেমে থাকে না। দেখতে দেখতে কেটে গিয়েছে ৪৮ ঘন্টা। তবুও সিরাতের জ্ঞান ফিরে নি এখন পর্যন্ত। ফাইয়াজ থেকে শুরু করে সবাই বেশ চিন্তিত সিরাতকে নিয়ে। সিরাতের অবস্থার কোনো উন্নতি পরিলক্ষিত না হওয়ায় দুশ্চিন্তার ছায়া জেকে বসেছে ফাইয়াজের মস্তিষ্ক জুড়ে।
মাথা, চোখ ব্যান্ডেজ করা, মুখে লাগানো অক্সিজেন মাস্ক নিয়ে ক্রমশ নিঃশ্বাসের আনাগোনা, হাতের মধ্যে স্যালাইনের ক্যানেলা লাগানো। দুদিনেই যেন মুখটা আগের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছে সিরাতের। আইসিইউ কেবিনের ভেতরে সিরাতের বেডের পাশেই চেয়ারে মাথা নিচু বসে আছে ফাইয়াজ। চোখ বন্ধ করা অবস্থাতেই সিরাতের এক হাত ধরে বসে আছে ফাইয়াজ। ঘড়ির কাঁটা রাত একটা ছুঁই ছুঁই। ফারিহা আর নিশাতকে জাফর সাহেব জোর করে বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছেন। হঠাৎ করে কেবিনের দরজা খোলার খটখট আওয়াজ পেয়ে মাথা তুলে তাকালো ফাইয়াজ। মিসেস সাবিনা ধীর পায়ে এগিয়ে গিয়ে ফাইয়াজের কাঁধের উপর হাত রাখেন।
– “মা, তুমি এখানে? তুমি বাসায় যাও নি?”
স্বাভাবিক গলায় প্রশ্ন করে ফাইয়াজ।
– “না যাই নি। তোর বাবা ফারু, নিশাত আর চন্দ্রিকাকে বাসায় ড্রপ করতে গিয়েছে। ভাবলাম আমি না হয় থেকে যাই। আর তোর ও তো একটু রেস্টের প্রয়োজন। তিন দিনে চেহারার কি হাল করেছিস?
এবার একটু নিচে গিয়ে রেস্ট নিয়ে নে। আমি না হয় সিরাতের কাছে বসছি।”
ছেলের প্রতি উদ্বিগ্ন হয়ে বলে উঠেন মিসেস সাবিনা বেগম।
– “না মা! তুমি গিয়ে রেস্ট নাও। আমি সিরাতের কাছেই থাকব। যদি হুট করে সিরাতের জ্ঞান ফিরে আসে তাহলে? সিরাতের জ্ঞান না ফেরা পর্যন্ত আমি কোথাও যাচ্ছি না।”
– “এ কেমন জেদ ফাইয়াজ? এভাবে নিজের প্রতি অবহেলা করলে শরীরের কি অবস্থা হবে ভাবতে পারছিস?”
ফাইয়াজ কিছু বলতে যাবে তখনি কেবিনের দরজায় টোকা পড়ে। একজন নার্স দ্রুত বলে উঠে,
– “ম্যাম দেখা করার সময় শেষ হয়ে গিয়েছে। এবার আপনাদের দুজনকেই বাইরে যেতে হবে কেননা ডক্টর এখনি এসে পেশেন্টর চেকআপ করবেন।”
নার্সের কথায় না চাইতেও অগত্যা বের হয়ে পড়লেন সাবিনা বেগম। মিসেস সাবিনা বের হয়ে যেতেই ভেতরে প্রবেশ করে ডক্টর রূপ। ফাইয়াজ ও ধীর গতিতে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায়। এ অপেক্ষা যেন দীর্ঘ সময়ের। এক একটা মুহূর্ত যেন বিশাল পরিমাণ সময় মনে হচ্ছে ফাইয়াজের কাছে।
– “টেক কেয়ার ইউরসেল্ফ, ফাইয়াজ। আমরা আশা করছি ৭২ ঘন্টার আগেই সিরাতের জ্ঞান ফিরে আসবে। পরিবারের বড় ছোট সবার দোয়া, সিরাতের প্রতি তোমার ভালোবাসা নিশ্চয়ই সিরাতের কোনো খারাপ হতে দিবে না। আর সিরাতের চেকআপের জন্য তোমাকে কেবিন থেকে বাইরে যেতে হবে।”
রূপের কথায় গুটি গুটি পায়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে আসে ফাইয়াজ। এদিকে সিরাতের সমস্ত রিপোর্ট চেকআপ করার পর কপালে সুক্ষ্ম চিন্তার রেখা ফুটে ওঠে রূপের।
ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথেই ফাইয়াজের চোখ থেকেও ঘুমের রেশ ছুটে যায়। পিটপিট করে চোখ মেলে তাকায় সে। শেষ রাতের দিকে হুট করেই ঘুম এসে পড়ে যার ফলস্বরূপ বেডের পাশে এডজাস্ট করা সোফার উপরেই ঘুমিয়ে পড়ে সে। ঘড়ির দিকে তাকাতেই খেয়াল করে ফজরের নামাজের ওয়াক্ত চলে যাচ্ছে। তড়িঘড়ি করে উঠে দাঁড়ায় সে। কেবিন থেকে বের হওয়ার পূর্বে একবার সিরাতের মুখশ্রীতে চোখ বুলিয়ে নেয় ফাইয়াজ। নিস্তেজ দেহটার প্রতি তার যেন অভিমান, অভিযোগ সব বেড়েই চলেছে। তার হৃদয়কে এতটা কষ্ট দেয়া কি আদৌ ঠিক ভেবেই সে পা বাড়ায় হসপিটালের টপ ফ্লোরে থাকা মসজিদের দিকে। তার সিক্ত হৃদয়ের প্রতিটা প্রার্থনায় সে শুধু সিরাতকেই চায়।
কেবিনের ভেতর প্রবেশ করে চেয়ারের উপর চন্দ্রিকার স্থির মূর্তি চোখে পড়তেই পিলে চমকে উঠে রূপ। এতো ভোরে হঠাৎ করে কেবিনে বসে থাকার বিশেষ কোনো কারণ খুঁজে পায়না রূপ।
– “চন্দ্রিকা, তুমি এখানে এত সকালে?”
ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে রূপ। রূপের কন্ঠস্বর শুনে চন্দ্রিকাও হালকা নড়েচড়ে উঠে।
– “হ্যাঁ, আসলে ভাবলাম তাড়াতাড়ি চলে আসি। কিছুক্ষণ পূরবীর কাছে থাকা যাবে। তাছাড়া আন্টি আর ফাইয়াজের উপর ও যথেষ্ট ধকল যাচ্ছে।”
– “হুম বুঝলাম। তাহলে এখন কি কিছু খাবে? চা কিংবা কফি?”
– “না থাক। কোনো প্রয়োজন নেই। পূরবীর রিপোর্ট চেক করার পর কি মনে হচ্ছে? পূরবী খুব শীঘ্রই সুস্থ হয়ে যাবে তো?”
– “আমি মিথ্যে বলব না চন্দ্রিকা। সিরাতের রিপোর্ট দেখার পর ও বোঝা যাচ্ছে না সামনে কি হতে চলেছে। সবটাই ৫০-৫০ পার্সেন্ট। আর সম্পূর্ণটাই এখন আল্লাহ তায়ালার হাতে।”
রূপের কথা শুনে একটা চাপা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চন্দ্রিকা।
দেখতে দেখতে অপেক্ষার প্রহর ক্রমশ আরো তীব্র হতে থাকে। দুপুরের দিকে চন্দ্রিকা আর নিশাতকে নিচতলায় ক্যান্টিনে নিয়ে যেতেই ফাইয়াজের মনে পড়ে মানিব্যাগটা সিরাতের রুম থেকে আর আনা হয় নি। তাই ওদের দুজনকে ক্যান্টিনে বসিয়ে রেখে দ্রুত পায়ে লিফটের কাছে চলে আসে ফাইয়াজ। মিনিট কয়েক পর থার্ড ফ্লোরে পৌঁছে সিরাতের কেবিনে প্রবেশ করে সে। কেবিনে প্রবেশ করতেই খেয়াল করে মানিব্যাগ টা সোফার এককোণে পড়ে আছে। মানিব্যাগ টা পকেটে গুঁজে নিয়ে বাইরের দিকে পা বাড়াতে নিলেই কারো জোরে জোরে নিঃশ্বাস নেয়ার শব্দ কানে পৌঁছাতেই আঁতকে উঠে সে। পিলে চমকে পেছন ফিরতেই সমস্ত শরীর যেন হিম হতে শুরু করে। সিরাতের নিস্তেজ শরীরে প্রাণের সঞ্চার হলেও হার্টবিটের মাত্রা কমতে শুরু করেছে দ্রুত। নিঃশ্বাস ক্রমশ তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। নিজের চোখের সামনে সিরাতের এমন ভয়ঙ্কর অবস্থা দেখতেই ভয়ে চিন্তায় আতকে উঠে ফাইয়াজ।
দ্রুত পায়ে কেবিন থেকে বেরিয়ে নার্স, ডক্টর বলে চিৎকার করা শুরু করে ফাইয়াজ। যার ফলস্বরূপ পাশেই নিজের কেবিনে বসে থাকা ডক্টর রূপ সহ বাকি নার্স রাও একপ্রকার ছুটে আসে। কেবিনে সিরাতের এমন খারাপ অবস্থা দেখে রূপ দ্রুত একটা ইনজেকশন নিয়ে পুশ করে দেয় সিরাতের হাতে। মিনিট দশেক পর ধীরে ধীরে সিরাতের অবস্থা প্রশমিত হতেই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে রূপ।
– “সিরাতের কি হয়েছিল ডক্টর রূপ? ও এরকম করছিল কেন?”
– “কাম ডাউন ফাইয়াজ। সিরাতের একটা প্যানিক অ্যাটাক এসেছিল, আর কিছু নয়।”
– “কিন্তু তিন দিন তো হয়ে যাচ্ছে প্রায় ডক্টর রূপ। কিন্তু সিরাতের জ্ঞান ফিরছে না কেন? আপনি তো বলেছিলেন অপারেশনের পর আর কোনো সমস্যা থাকবে না। তাহলে সিরাত এখনো বেডে এভাবে নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছে কেন?”
ফাইয়াজের প্রশ্নোত্তরে কি বলা উচিত তা খুঁজে পায় না রূপ। আসলেই তো; নিজের চোখের সামনে দিনকে দিন এভাবে ও নিজের প্রিয় মানুষটির করুণ অবস্থা হৃদয়কে তো মর্মাহত করে তুলবেই। কিছু বলতে গিয়েও থেমে যায় রূপ। ফাইয়াজ ও যেন বুঝতে পেরে বিষয়টা গিয়ে গটগট করে বাইরে চলে যায়। কষ্ট, ক্ষোভে যেন দম বন্ধ হয়ে আসছে প্রতিনিয়ত তার।
এদিকে ফাইয়াজের বেশ খানিকক্ষণ সব সময় ধরে অনুপস্থিতি দেখে একে একে চন্দ্রিকা, নিশাত আর ফারিহা সহ সবাই উপরে চলে আসে। কিন্তু ফাইয়াজকে চোখে পড়ে নি। সিরাতের কেবিনে নার্সকে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখে ভ্রু কুঁচকে নেয় চন্দ্রিকা। পরবর্তীতে নার্সের কাছ থেকে সিরাতের প্যানিক অ্যাটাকের কথা শুনতেই বিস্ময় আর চিন্তা যেন কয়েক গুণ বেড়ে যায় তার।
অস্তায়মান প্রায় সূর্য আকাশের পশ্চিমে হেলে পড়েছে। লাল আবিরের মতো টকটকে লাল সূর্যের প্রখরতা নেই বললেই চলে। পুরো আকাশ জুড়ে শুধু লাল আভার রেখা। হসপিটালের সামনে থাকা পরিত্যক্ত লেকটার পাশ ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে ফাইয়াজ। দৃষ্টি তার নিচে থাকা স্বচ্ছ পানির দিকে। ঠিক কদিন আগেই তো জীবনটা তার এত সুন্দর ছিল। সিরাতের সাথে কাটানো প্রতিটা মুহূর্ত যেন জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় ছিল তার। কিন্তু হুট করে চোখের পলকেই জীবনের পাতা গুলো এভাবে ওলোটপালোট হয়ে যাবে তা কোনোদিনই ভাবে নি সে।
মাগরিবের আজানের ধ্বনি কর্ণপাত হতেই ভাবনায় ছেদ পড়ে ফাইয়াজের। আজানের শব্দে পা বাড়ায় মসজিদের দিকে। শুনেছে মন থেকে উপরওয়ালার কাছে কিছু চাইলে সে ফিরিয়ে দেন না। ফাইয়াজ ও সেই আশা নিয়েই পা বাড়ায় সেদিকে। আজ আর প্রেয়সীকে ফিরে পাওয়ার জন্য যত প্রার্থনা আছে সব সে করতে রাজি।
আর মাত্র কয়েক প্রহর বাকি। ৭২ ঘন্টা পূর্ণ হবার আর দেড় ঘণ্টা বাকি। ফাইয়াজ নির্ঘুম চোখে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সিরাতের মুখশ্রীতে। সিরাতের এক হাত তার মুঠোয় আবদ্ধ।
– “এই সিরাত, হয়েছে তো। এবার প্লিজ ওঠো। দেখ আই প্রমিজ আমি আর কোনোদিন তোমার কোনো ক্ষতি হতে দেব না, তোমাকে সবসময় নিজের কাছে আগলে রাখব। কোনোদিন কিছু লুকাব না, কিন্তু এভাবে কষ্ট দিও না আর। দেখ সবাই, আমি তোমার জন্য ওয়েট করছি। এবার তো ফিরে আসো, প্লিজ।”
কাঁপা কাঁপা গলায় বলে উঠল ফাইয়াজ। কথাগুলো গলায় আটকে আটকে যাচ্ছে বারবার। চোখের কোণ বেয়ে টুপ করে এক ফোঁটা উষ্ণ অশ্রু গড়িয়ে পড়ে চিবুক বেয়ে। পুরুষদের নাকি কান্না করায় মানায় না। তবুও সেই নিয়মের উর্ধ্বে গিয়ে নিঃশব্দে কেঁদে ওঠে ফাইয়াজ। যে কান্নায় লুকিয়ে আছে সিরাতকে ফিরে পাওয়ার তীব্র ব্যাকুলতা।
হুট করে বাম হাতের আঙুল নড়েচড়ে ওঠে সিরাতের। আর সেটা ফাইয়াজের চোখে পড়তেই বিস্মিত হয় সে। অবিশ্বাস্য চোখে তাকিয়ে আছে সিরাতের দিকে। বিস্ময়ে মুখ দিয়ে কোনো কথাও বের হচ্ছে না। ধীরে ধীরে পুরো হাত নড়ে উঠতেই সে তড়িঘড়ি করে উঠে দাঁড়ায়।
– “ডক্টর রূপ!!”
পুনরায় ফাইয়াজের চিৎকার শুনে এবার হালকা ভয় পায় রূপ। দ্রুত পায়ে কেবিনের দিকে এগোয় সে।
– “কি হয়েছে ফাইয়াজ? সিরাত ঠিক আছে তো?”
প্রলাপ বকতে বকতে কেবিনে প্রবেশ করে রূপ। কিন্তু পরক্ষণেই সিরাতের জ্ঞান ফিরতে দেখে সে নিজেও খানিকটা বিস্মিত হয়। মেডিকেল লাইফে এমন কেস পাওয়াটা খুবই রেয়ার। তবুও তার মুখে তৃপ্তি আর কৃতজ্ঞতার হাসি ফুটে উঠে উপরওয়ালার প্রতি।
– “নার্স, নার্স!”
মিনিট পাঁচেক পরেই ছুটে আসে দুজন নার্স। রূপ ও সিরাতকে চেকআপ করে নেয়।
– “ডক্টর রূপ, ইজ এভরিথিং ওকে? সিরাত ঠিক আছে?”
– “রিল্যাক্স, ফাইয়াজ। সিরাত ইজ আউট অফ ডেঞ্জার। তোমার দোয়া কবুল হয়েছে। আল্লাহর রহমতে সিরাতের জ্ঞান ফিরে এসেছে।”
কৃতজ্ঞতা আর খুশি প্রকাশে বিনয়ের সাথে রূপকে জড়িয়ে ধরে ফাইয়াজ।
ভোরের আলো ফোটার পর পরই সিরাতের জ্ঞান ফিরে আসার কথা শুনে একে একে সবাই ছুটে আসে হসপিটালে। জ্ঞান ফিরলেও সদ্য চোখের অপারেশন হওয়ায় বেশ জটিলতার মধ্য দিয়েই কাটাতে হচ্ছে সিরাতকে। চোখ ব্যান্ডেজ করায় আরো বেশ খানিকটা সময় লেগে যাবে এই ব্যান্ডেজের পর্দা চোখ থেকে সরাতে। মিসেস সাবিনা আসার পর থেকেই সিরাতকে নানা রকম পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। ফারিহা আর নিশাত ও পিছু ছাড়ছে না। এদিকে ফাইয়াজের চেহারায় প্রেয়সীকে ফিরে পাওয়ার আনন্দ।
নভেম্বরের শেষের দিক। শীত ভালোভাবেই জেঁকে বসেছে শহরাঞ্চলে। বাইরের গ্লাস ভেদ করে কুয়াশার আবরণে সবটাই ধোঁয়াশা মনে হচ্ছে। রেলিং ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে চন্দ্রিকা। পাশে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে পাশ ফিরে তাকায় সে। ধোঁয়া ওঠা গরম চায়ের কাপ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে রূপ। চন্দ্রিকা পাশ ফিরে তাকাতেই চায়ের কাপ এগিয়ে দেয় রূপ। চন্দ্রিকাও নিঃশব্দে সেটি গ্রহণ করে নেয়। ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপে চুমুক দিতেই পাশ থেকে চন্দ্রিকা বলে উঠে,
– “ধন্যবাদ!”
– “ধন্যবাদ? কিন্তু কেন, জানতে পারি মিস চন্দ্রিকা?”
– “জানি ধন্যবাদ শব্দটা খুবই ছোট হয়ে যায়। একদম শুরু থেকেই সবটা জেনেও আমার পাশে থাকার জন্য, আমাকে ভালোবাসার জন্য।”
রূপ প্রত্যুত্তরে কিছু বলে না।
– “আপনি জানতে চেয়েছিলেন না আমি আপনাকে ভালোবাসি কি না? আপনার জন্য আমার হৃদয়ে কোনো অনুভূতি আছে কি না, তাহলে শুনুন। হ্যাঁ আমি আপনাকে ভালোবাসি। আপনার জন্য আমার হৃদয়ে অনুভূতি সীমাহীন।”
চোখ তুলে তাকায় রূপ। ঠোঁটে যেন তৃপ্তির হাসি। অবশেষে নিজের প্রেয়সীকে নিজের করে পাওয়ার অপেক্ষার অবসান ঘটে।
– “তাহলে মিসেস চন্দ্রিকা থেকে মিসেস চন্দ্রিকা হওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে নাও, মায়াবতী!”
রূপের কথায় লজ্জায় আপনাআপনি মাথা নতজানু হয়ে আসে চন্দ্রিকার। যেন সূচনা হলো নতুন আরেকটি অধ্যায়ের।………….
#চলবে