বিকেলে ভোরের ফুল পর্ব ১২

#বিকেলে_ভোরের_ফুল

#পর্ব_১২

#Ishita_Rahman_Sanjida(Simran)

পূর্ব আকাশে সূর্য উঁকি দিচ্ছে। সূর্যের লাল আভা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। পাখিরা সব কিচিরমিচির করছে, কিছু কিছু পাখি আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে আর কিছু পাখি এই সকালে মাছ শিকার করছে। কতগুলা কাঠবিড়ালী আশেপাশে ঘুরঘুর করছে ফলের সন্ধানে। বাতাসে দোল খাচ্ছে গাছের পাতা। এই মুহূর্তে ফুল ঘুমাচ্ছে। কাল রাতে ঘুমিয়ে পড়েছিল বাইরে। আর ঘরে ফেরা হয়নি। স্পর্শ দুপকেটে হাত দিয়ে ফুলের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। সূর্যের আলোকে আড়াল করে দাঁড়িয়ে আছে যাতে সূর্যের আলো ফুলের মুখে না পড়ে। যদি ফুলের ঘুম ভেঙ্গে যায়??তাই স্পর্শ দাঁড়িয়ে আছে যাতে ফুলের ঘুম না ভাঙ্গে। ফুলের এই ঘুমন্ত মুখটা দেখতে যে স্পর্শ খুব ভালোবাসে। সারারাত ফুলের ঘুমন্ত মুখটা দেখেছে তবুও ওর মন ভরেনি। তাই এখনও দেখে চলেছে। ওদিকে ফুল বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। সারারাত ঘুমিয়েও ওর মন ভরেনি। একজনের ঘুমিয়ে মন ভরেনি আরেকজনের ঘুমন্ত মুখ দেখে মন ভরেনি।

অনেকক্ষণ পর ফুল মোচড়াতে মোচড়াতে ঘুম থেকে উঠে বসে। উঠেই চোখ ডলতে ডলতে সামনের দিকে তাকালো। স্পর্শ সাথে সাথে বলে উঠলো,

–“গুড মর্নিং।”

ফুল একটু অন্যমনস্ক হয়ে বলল,

–“মর্নিং।”

কথাটা বলেই চোখ বড়বড় করে স্পর্শের দিকে তাকালো। স্পর্শ এখানে এভাবে দাঁড়িয়ে আছে কেন?? স্পর্শকে কেমন যেন দেখাচ্ছে। সারারাত কি ঘুমায় নি?? ফুল জিজ্ঞেস করল,

–“আপনি এখানে দাঁড়িয়ে কেন?? সারারাত কি ঘুমাননি??”

–“সেটা ইম্পর্টান্ট নয়। ইম্পর্টান্ট কথা হচ্ছে আমরা আজকে ব্রেকফাস্ট করব কিভাবে??”

–“কিভাবে??”

–“সেজন্য আমাদের ওই পাশের জঙ্গলে যেতে হবে।”

–“আমি যাব কেন??”

–“তাহলে তুমি খাবে কি?? আমি তো জঙ্গল ঘুরে তোমার জন্য খাবার টেনে নিয়ে আসব না। তোমাকে আমার সাথে যেতে হবে।”

–“আচ্ছা ঠিক আছে আমি যাব।”

স্পর্শ হাত ভাজ করে দাঁড়িয়ে বলল,

–“গুড”

–“একটা কথা জিজ্ঞেস করব??”

–“বল।”

–“আপনি বদলে গেছেন।”

–“কিরকম??”

–“মানে আমি প্রথম দিনে আপনাকে যে রূপে দেখেছি এখন আপনার মধ্যে সেই রূপটা নেই। সেটা কেন বলতে পারেন??”

–“তুমি আমার কোন রূপের কথা বলছো??”

–“প্রথম দিন যখন আপনাকে দেখলাম সেদিন আপনার মধ্যে হিংস্রতা ছিল কিন্তু এখন তা নেই।”

স্পর্শ বিড়বিড় করে বলল,

–“তোমার ভালোবাসার চুম্বক আমার সব হিংস্রতা টেনে নিয়ে গেছে ফুল।”

–“কি বললেন আমি তো শুনতে পেলাম না।”

স্পর্শ উচু গলায় বলল,

–“খিদে পেয়েছে চলো।”

–“কিন্তু আমার প্রশ্নের জবাব দিলেন না যে এখনও।”

–“সময় হলে সবটা জানতে পারবে।”

ফুল আর কথা বাড়ালো না সে উঠে সমুদ্রের ধারে গিয়ে মুখে পানি দিলো। ওড়না দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে এসে স্পর্শের সামনে এসে দাড়িয়ে বলল,

–“চলুন কোথায় যেতে হবে??”

–“ফলো মি।”

বলেই স্পর্শ হাটা ধরলো। ফুলও চললো স্পর্শের পিছু পিছু। জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে ওরা দুজন হেঁটে চলেছে। কিন্তু কোন কিছুর সন্ধান পাচ্ছে না। ফুল রিতিমত অবাক হয়ে চারদিকে দেখছে। জঙ্গলে এই প্রথম এসেছে ও। ওর কলেজের স্টুডেন্টসরা প্রতিবছর ফরেস্ট ট্রাভেলে যেত। কিন্তু ফুল যেত না। এত বড় শিল্পপতির মেয়ে হয়েও ও যেত না। ওর বাবা সম্পূর্ন নিষেধ করেছে। ফুলের প্রতিটা কাজের জবাবদিহিতা ওর বাবা আর দাদির কাছে দিতে হতো। এমনকি ফুলের কোন কলেজ ফ্রেন্ড ও নেই স্কুল লাইফেও ছিল না।গার্ডরা ওকে কলেজে নিয়ে যেত আবার নিয়ে আসতো। এক্সট্রা টাইম কলেজে থাকা ফুলের নিষিদ্ধ ছিল। ক্লাস টাইমেও ওর সাথে কেউ কথা বলত না। সবাই ভাবত ফুল খুব অহংকারী তাই কলেজে বেশিক্ষণ থাকে না, কলেজের কোন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে না। কিন্তু সবাই তো আর জানত না যে কেন ফুল এরকম চুপচাপ থাকে??

ফুল স্পর্শের পিছু পিছু হাঁটছে আর চারিদিকে চোখ বুলিয়ে যাচ্ছে। পাখির কিচিরমিচির শব্দ শুনে খুশিতে উৎফুল্ল হয়ে উঠেছে ফুল। ওর ইচ্ছে করছে সারাজঙ্গল দৌড়াতে আর পাখির কলকাকলি শুনতে। কিন্তু স্পর্শ যদি কিছু বলে। হঠাৎ করেই ফুলের চোখ গেল ছোট একটা ডুমুর গাছের উপর। গাছটা ফুলের কোমড় পর্যন্ত বড়। ফুল আস্তে করে গাছটার দিকে এগিয়ে গেল। স্পর্শ পিছনে তাকিয়ে দেখল ফুল গাছের সামনে গিয়ে উঁকি ঝুঁকি দিচ্ছে। স্পর্শ ফুলের কাছে এসে বলল,

–“তুমি এ,,”

ফুল মুখে আঙ্গুল দিয়ে বলল,

–“হুসসসস,,,,একদম আওয়াজ করবেন না।”

কথাগুলো ফুল ফিসফিস করে বলল। স্পর্শ ইশারায় জিজ্ঞেস করল কেন?? ফুল গাছের পাতাটা সরিয়ে দেখালো। গাছের ছোট ছোট পাতার সাথে একটা পাখির বাসা সেখানে দুটো ছোট ছোট বাচ্চা আছে। বাচ্চাদুটো খুবই ছোট। কিচিরমিচির শব্দ করছে আর নড়াচড়া করছে বাচ্চাদুটো। সেটা দেখেই ফুলের চোখমুখে খুশির ঝিলিক বয়ে যাচ্ছে। এত কাছে থেকে পাখির বাসা আর বাচ্চা দেখার সৌভাগ্য কখনও হয়নি ফুলের। খুশি যেন ধরছে না ওর। হঠাৎ করেই স্পর্শ ওকে টেনে দূরে নিয়ে গেল। ফুল ভেজা গলায় বলল,

–“আমাকে এখানে আনলেন কেন??”

–“কারণ হলো বাচ্চা দুটোর মা এসেছে।”

–“কই আমি তো দেখলাম না।”

–“যেভাবে পাখির বাসা দেখছিলে ওর মাকে দেখবে কি করে??ওই দেখো এখন।”

স্পর্শ আঙুল দিয়ে ইশারা করতেই ফুল সেদিকে তাকালো। ছোট্ট বুলবুলি পাখিটা বাসার ভিতরে ঢুকেছে। স্পর্শ বলল,

–“এতক্ষণ যাবত পাখিটা আশেপাশে ঘুরছিল আমাদের জন্য বাসায় ঢুকতে পারছিল না তাই তোমাকে এখানে নিয়ে এলাম।”

–“থ্যাঙ্ক ইউ।”

আচমকা ফুলের থ্যাঙ্ক ইউ বলায় স্পর্শ ঘাবড়ে গেল। ফুল কেন ওকে থ্যাঙ্ক বলছে??

–“হঠাৎ ধন্যবাদ দিচ্ছো কেন??”

–“আপনার সাথে থাকায় আমি আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত গুলো উপভোগ করছি। আপনি যদি আমাকে কিডন্যাপ না করতেন তাহলে এসব কিছু দেখতাম না আমি।”

স্পর্শ প্রতুত্যরে কিছু বলল না শুধু হাসলো। তা দেখে ফুল বলল,

–“তাই বলে ভাববেন না যে আপনি একজন ভালো মানুষ। আপনি খুবই খারাপ মানুষ। আমাকে কিডন্যাপ করে আটকে রেখেছেন। আমি আপনাকে কিছুতেই ক্ষমা করব না।”

বলেই ফুল সামনের দিকে হাঁটা ধরলো। স্পর্শ তো অবাক। এ কেমন মেয়েরে বাবা একচোখে ভালো কথা বলছেন আরেক চোখে ঝাড়ি মারছে। স্পর্শ এবার ফুলের পিছন পিছন হাঁটতেছে। কিন্তু দূর্ভাগ্য যে খাওয়ার মতো এখনও কিছু পায়নি ওঁরা। চারদিকে বাশগাছ, বড়বড় ঝাউগাছ আর কলাগাছ। এছাড়া ও নাম না জানা ছোট-বড় অনেক গাছই আছে। কিছুদূর গিয়েই ওঁরা দেখতে পেল কলাগাছে এক কাঁদি কলা ঝুলছে। কিছু কলা কাঁচা আর কিছু পাকা। আবার কতগুলোতে হলুদ রঙ উঠেছে। স্পর্শ একটু খুশি হলো সাথে ফুল ও। দুজনেরই খিদে পেয়েছে। স্পর্শ এগিয়ে গিয়ে কাঁদি থেকে একটা কলা ছিঁড়ে খেতে লাগলো। ফুল ভ্রু কুঁচকে বলল,

–“এই যে আপনি একা একাই খাবেন আমি খাববনা??”

–“আমি কি তোমাকে ধরে রেখেছি??পেড়ে খাও।”

–“আমি কি নাগাল পাই নাকি?? আমি তো আপনার মতো অতো লম্বা খাটাইশ না।”

–“কি বললে??”

–“কিছু না কিছু না।”

–“তাহলে যাও পেড়ে খাও।”

ফুল মুখটা গোমড়া করে গাছের দিকে এগিয়ে যায়। কিন্তু কিছুতেই কলার নাগাল পাচ্ছে না। অনেকক্ষণ লাফালো তবুও পেল না শেষে হাঁপিয়ে গেল ফুল। হঠাৎ স্পর্শ ফুলের কোমড় ধরে উঁচু করে ধরল। আচমকা স্পর্শ এরকম কাজে ফুল হতভম্ব হয়ে গেল।

–“আরে কি করছেন??নামান আমাকে।”

–“তোমাকে সাহায্য করছি আর তুমি আমাকে নামাতে বলছো।”

–“এভাবে তো সাহায্য করতে বলিনি।”

–“আমার এভাবেই সাহায্য করতে ইচ্ছে করছে।”

–“আপনি খুব খারাপ লোক অসভ্য।”

–“ভালো লাগছে??”

–“মানে??”

–“দোলনা চড়তে ভালো লাগছে??”

–“আশ্চর্য তো, আমি কি ইচ্ছে করে দোলনায় চড়েছি আপনি তো আমাকে তুলেছেন।”

–“কথা না বাড়িয়ে পুরো কলার কাদিটা কেটে নিচে নামাও।”

–“কি?? আমি কলার কাদি।”

স্পর্শ একহাতে ফুলের কোমড় জড়িয়ে ধরে আরেক হাতে ছুড়িটা ফুলের দিকে এগিয়ে দিলো। ফুল ছুরিটা নিতেই আবার দুহাতে ফুলের কোমড় ধরে উঁচু করে ধরলো। ফুলের কেমন যেন লাগছে??বুকটা ধুকধুক করছে। এভাবে কোন ছেলের এত কাছে আসেনি ও। স্পর্শ বলে উঠলো,

–“এই যে ভাবুক কুমারী কাজটা তাড়াতাড়ি করো। তোমার মতো ময়দার বস্তা কে তুলে ধরতে আমার কষ্ট হচ্ছে।”

ফুল তাড়াতাড়ি কলার কাদিটা কেটে নামালো। স্পর্শ সাথে সাথে ফুলকে ছেড়ে দিলো। ফুল পড়তে গিয়েও নিজেকে সামলে নিলো। রাগি দৃষ্টিতে স্পর্শের দিকে তাকালো। স্পর্শ ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে নিচে বসে পড়ল। তারপর কলা খেতে লাগলো। ফুল কিছু বলল না ও বসে বসে কলা খেতে লাগলো। দুজনে পেট ভরে কলা খেয়ে উঠে দাঁড়ালো। স্পর্শ বলল,

–“এবার কলার কাদিটা হাতে নাও। আর ফিরে চলো।”

ফুল এবার চটে গিয়ে বলল,

–“কি ভেবেছেন কি আপনি যখন যা বলবেন আমি তাই করব?? ইমপসিবল।”

–“পসিবল। কারণ আমি যা বলব তুমি তাই করতে বাধ্য।”

–“না আমি বাধ্য নই। কি করবেন কি আপনি??”

–“এই দ্বীপে একা ফেলে চলে যাব। তখন রবিনসনের মতো একা একা থাকতে হবে।”

স্পর্শের কথা শুনে ফুল ভয় পেয়ে যায়। স্পর্শ যদি সত্যি সত্যি ফুলকে এখানে ফেলে চলে যায় তাহলে ও এখানে থাকবে কি করে??ভুতে তো ওর ঘাড় মটকাবে। ফুলের ভয়ার্ত মুখ দেখে স্পর্শ হাসলো। কিছু না বলেই ও হাটা ধরলো। ফুলের আর উপায় নেই। বড় কলার কাদিটা হাতে তুলে নিয়ে স্পর্শের পিছু পিছু চলল। স্পর্শ হাঁটছে আর মনে মনে হাসছে। ওর ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল।

ছোটবেলায় ফুলকে এভাবেই ব্ল্যাকমেইল করে সব কাজ করাত। ফুল ও ভয় পেয়ে স্পর্শর সব কাজ করতো। ফুল তখন ভয় পেতো স্পর্শর কাজ না করলে স্পর্শ যদি ওর সাথে কথা না বলে যদি না খেলে??ফুলকে খাটাতে স্পর্শর খুব ভালো লাগতো। তাই আজকে সুযোগটা স্পর্শ মিস করলো না। স্পর্শ এসব ভাবনার মাঝেই ফুল “আহহহহ” শব্দ করে উঠলো। স্পর্শ সাথে সাথে পিছনে ঘুরে তাকালো দেখল ফুল এক পা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। স্পর্শ দ্রুত ফুলের কাছে গিয়ে বলল,

–“কি হয়েছে??”

–“জানি না তবে মনে হচ্ছে পায়ে কিছু বিধেছে।”

স্পর্শ হাঁটু মুড়ে বসে ফুলের পা উঁচু করে তুলে দেখল জুতো ভেদ করে বড় একটা কাটা বিধেছে ফুলের পায়ে। স্পর্শ একটানে কাঁটা টা বের করে ফেল। সাথে সাথে ফুল চোখ বন্ধ করে ফেলল। রক্ত ঝড়ছে ফুলের পা থেকে। এটা দেখে স্পর্শ পাগল প্রায়। এদিক ওদিক দৌড়াতে লাগলো স্পর্শ। লতপতা এনে হাতে ঘষে রস বের করে ফুলের পায়ে লাগিয়ে দিলো। এতে রক্ত পড়া বন্ধ হয়ে যায়। স্পর্শ ফুলের দিকে তাকিয়ে বলল,

–“সরি ফুল আমার জন্য তোর এই অবস্থা, সরি।”

ফুল তো অবাক। স্পর্শ ওকে সরি বলছে। এটা তো অবিশ্বাস্য। যে স্পর্শ ওকে সবসময় ধমকের উপর রাখতো সেই স্পর্শ কি না ফুলকে সরি বলছে। ফুল ঘাবড়ে গেল হঠাৎ স্পর্শের এরকম করার কারণ কি??ফুল বলল,

–“আপনি আমাকে সরি বলছেন!! আচ্ছা আপনার হয়েছে কি বলবেন কি??”

স্পর্শ আমতা আমতা করতে লাগলো। এখন ও কি বলবে?? নিজের আসল পরিচয় দিয়ে দিবে কি?? না না এখন ফুলকে সবটা বলা যাবে না। ফুলকে নিজে থেকে চিনতে হবে ওর স্পর্শকে। এভাবে ধরা খেলে চলবে না তোর স্পর্শ। স্পর্শ এসব ভাবছে আর বুদ্ধি বের করার চেষ্টা করছে কি করে ফুলকে এড়াবে। ওদিকে ফুল স্পর্শকে একের পর এক প্রশ্ন করেই যাচ্ছে। ফুল দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করেছে আজকে ও স্পর্শর ভেতরে থাকা রহস্যকে বের করে ছাড়বে। ফুলের প্রতিজ্ঞায় বালু ঢেলে স্পর্শ হঠাৎ করেই ফুলকে কোলে তুলে নিলো। এতে ফুল ভ্যাবাচেকা খেয়ে যায়। বুঝতে পারছেনা যে ওর এখন কি করা উচিৎ।

চলবে,,,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here