ব্লাক ডায়মন্ড পর্ব ১

#ডার্ক ডায়মন্ড
#আফরিন ইভা
#পর্ব-০১
____________________

“রক্তের তৃষ্ণা পেয়েছে মীরার, ঘুমের ঘোরে হাত দিয়ে বিছানার চাদর খামচে ধরে আছে, এদিক-ওদিক পা ছুড়াছুঁড়ি করছে, গলাটা শুকিয়ে আসছে মীরার, তৃষ্ণা মেটাতে বড্ড প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, হঠাৎ চোখের সামনে ভেসে আসলো ঘুটঘুটে অন্ধকার, কেউ একজন এক গ্লাস রক্ত বাড়িয়ে দিলো, মীরার দিকে,মীরা গ্লাসটা হাতে নিয়ে ঢকঢক করে গিলে ফেললো।
ক্ষণিকের মধ্যে তৃষ্ণাটা মিটে গেলো, খুব শান্তি লাসছে মীরার, শরীরটা বেশ চাঙা লাগছে এখন , গ্লাসটা দিলো কে, তা দেখার জন্য সামনে তাকালো মীরা, তাকিয়ে দেখলো, ঘুটঘুটে অন্ধকার ছাড়া কিছুই দেখা যাচ্ছে না, মীরা হতাশ হয়ে চোখ ফেরালো। ”

মুহুর্তেই মীরার শরীরটা ঝাঁকিয়ে উঠলো, পুরো শরীর ঘেমে একাকার, ডিপ ডিপ করতে লাগলো কলিজা খানা, তড়িঘড়ি করে উঠে গেলো মীরা।

” চোখ খুলে তাকিয়ে দেখলো, রুদ্র ভাই, বেশ নিখুঁত ভাবে তাকিয়ে দেখছে মীরাকে।
ভয়ে মীরার বুক মুচড়ে উঠলো।
মীরা ওড়না ঠিক করতে করতে রুদ্র ভাইকে জিজ্ঞেস করলো, রুদ্র ভাই আপনি কখন এসেছেন, আমাকে ডাকেননি কেনো?”

রুদ্র ভাই চোখের পলক ফেলে বললো, ডাকবো কি করে বল, তুই তো ঘুমের মধ্যে
যে রেসলিং শুরু করেছিস, ভাবলাম, বিনা পয়সায় বিনোদন না নিয়ে যাই কিভাবে?
তাই আর ডাকিনি।

“আমি নিজের দিকে আবার একবার তাকিয়ে দেখলাম ওড়নাটা ঠিকঠাক আছে কি-না?
রুদ্র ভাইয়ের কথা শুনে মনে মনে বেশ রাগ উঠলো, কেনো যে স্বপ্নটা দেখতে গেলাম, তাহলে তো আর উনি আমাকে এভাবে অপমানটা করবার ইস্যু খুঁজে পেতোনা।”

– রুদ্র ভাই, আমার মোবাইলটা হাতে নিয়ে বললো, আচ্ছা বলতো তুই এ মোবাইলটা বুকে নিয়ে শুয়েছিস কেনো, এর ভেতর কি তোর প্রেমিক আছে, যাকে তোর হৃদয়ের সাথে উনাকে বেঁধে ঘুমোতে হবে?
না-কি রাতে কোনো বাজে বাজে কিছু দেখিস? কথাটা বলে উনি আমার দিকে তাকিয়ে মুখ চেপে হাসতে লাগলো।

” উনার কথা শুনে আমার পুরো শরীর জ্বলে উঠল, আর আমার ইচ্ছে করছিলো, রুদ্র ভাইয়ের সবগুলো চুল ছিঁড়ে কুকুরের লেজে লাগিয়ে দিতে। আমাদের পাশের ফ্ল্যাট টাই রুদ্র ভাইদের, ছোট বেলা থেকেই উনাদের ফ্যামিলির সাথে আমাদের ফ্যামিলির এক মায়াবী আত্মার সম্পর্ক।
ছোটবেলা থেকেই রুদ্র ভাই এমন স্বভাবের, সামান্য একটু বাহানা পেলেই এটাকে ডাক ঢোল পিটিয়ে অপমান করে ছাড়ে।

রুদ্র ভাইয়ের কথা শুনে, আমি উনার চোখে চোখ রেখে অভিমানী স্বরে বললাম, সব মেয়েরা এক নয় রুদ্র ভাই, আপনি ভুল ভাবছেন, আমি মোটেও এমন নই।
আমার ভয়ভীতি খুব, পরজীবনের প্রতি আমার খুব বিশ্বাস, আমি আল্লাহকে ভালোবাসি, যাঁর কারণে ফেসবুকেও নিজের ছবি দেইনা, কিন্তু আমার অনেক ফ্রেন্ড ওঁরা হরহামেশাই ছবি দেয়, জানিনা তাঁরা কেনো দেয়।

– রুদ্র ভাই আমার কথা হাত দিয়ে ইশারা করে থামিয়ে বললো, হয়েছে, তোকে আর মহান সাজতে হবে না, প্রোফাইলে ছবি দিস না হয়তো, কিন্তু ছেলেদের ইনবক্সে নিশ্চয়ই দিস।
তোদের এই চব্বিশ বছরের মেয়েদের কে আমার খুব করেই চেনা আছে, তোরা কেমন?
আমি একজন সাইকোলজিস্ট, আমার কাছে তোদের বয়সী মেয়েরাই বেশি আসে, তোরা রাতে মোবাইল টিপে টিপে একজন আরেকজনের ছবি আদান-প্রদান করিস, আর সকাল বেলা তা ভাইরাল হয়, আর বিকেল বেলা মা-বাবা আমার কাছে নিয়ে এসে হাজির হয়।
কিন্তু তোরা বুঝিসনা হয়তো এই ছবিগুলোই পরবর্তিতে কাল হয়ে দাঁড়ায়, হয়তো তোরা নিজের মুখের ছবি দিস, কিন্তু এই ছবিকে ছেলেরা ব্ল্যাকমেইল করে তোদের কে নিজের বশীভূত করে, আর তোরা সইতে না পেরে হয় ডিপ্রেশন, আর নয়তো সুইসাইড করে বসিস।
কিন্তু তোরা হয়তো জানিস না, মৃত্যুর পরও আরো একটা জীবন আছে, আর তা হলো পরকাল।
পরকালে যখন আমাদের কঠিন বিচার হবে, তখন আল্লাহ আমাদের লজ্জা স্থান হেপাজত রাখবেন, কিন্তু তোরা কিছু মেয়ে কিছু ভুলের কারণে নিজেদের কে হেপাজত রাখতে পারিস না।

-আমি রুদ্র ভাইয়ের দিকে তাকিয়ে গভীর মনোযোগ দিয়ে কথাগুলি শুনছি, আর গিলছি, খুব ভালো লাগছে রুদ্র ভাইয়ের কথাগুলো আজ শুনতে,

“রুদ্র ভাই, গলাটা ভিজিয়ে আবার বলতে শুরু করলো, আমার কথাগুলো হয়তো শুনতে খারাপ লাগছে, কিন্তু শোন একটু হলেও কাজে আসবে তোর, আর একটু মানেই অনেক কিছু।
আমার চেম্বারে যে কোনো মেয়ে কে নিয়ে আসলে, আমি ওদের সাথে একাকী কথা বলি,

-একাকী কথা শুনে আমি রুদ্র ভাইয়ের দিকে চোখ বড়ো করে তাকালাম,

” কিরে এমনভাবে তাকিয়ে আছিস কেনো, একাকী কথা বলি এই না যে আমি ওদের সাথে রসের আলাপ করি, আমি ওদের কে একটা কথাই বুঝাই, একবার ভুল হয়েছে তো কি হয়েছে, বার-বার যেনো না হয়, একবার ছ্যাকা খেলেই যে বেঁকা হয়ে যেতে হবে তা নয়।
হতাশা আছে থাকবে, মানুষ হয়ে কেন হারবে, শুরু থেকে সব শুরু করো, দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে।

-আজ রুদ্র ভাইয়ের কথাগুলো শুনে বেপরোয়া মন যেনো একটু হলেও শান্ত হয়েছে। আমি মুগ্ধ হয়ে রুদ্র ভাই কে দেখে যাচ্ছি । ইচ্ছে করছে রুদ্র ভাই কে একটু ধন্যবাদ জানাতে, কিন্তু তা দিতেও মনে ভীষণ সংকোচ হচ্ছে।
তাই আর কিছু না বলে নিরব হয়েই থাকলাম। হাতটা হঠাৎ করে ওড়নায় চলে গেলো।

“রুদ্র ভাই চেঁচিয়ে উঠলো, কিরে তুই কি ভাবছিস,আমার চোখ দু’টি কি সিসি ফুটেজ, তোকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখে নিচ্ছি, না-কি আমাকে বার-বার জানান দিচ্ছিস যে, তুই একজন মেয়ে এখানে বসে আছিস।

– আমি অবাক হয়ে তাকালাম, এই আমি কাকে ধন্যবাদ দিতে যাচ্ছি, যে আমাকে কথায় কথায় অপমান করে ছাড়ে।
ভেবেছে কি উনি আমি কী সেই ছোট মীরা আছি নাকি, আমাকে যখন তখন অপমান করবে।
হু.. আমি এখন বড়ো মীরা, সামনের দিকে আমিও আর উনাকে ছাড়বোনা।
কিন্তু কি বলবো, উনাকে দেখলেই যে আমার বুকে সাত সাগরের ঢেউ উঠে, যে ঢেউয়ে চারদিক ছন্নছাড়া লাগে।
উনার মায়াবী দুটি চোখ যে চোখে আছে মাদকতা, আছে হাজারো মুগ্ধতা, সুন্দর দুটি ঠোঁট, মেঘের মতো কালো কেশ, যেনো এক মায়াবী পুরুষ, যে কোনো মেয়ের স্বপ্নের পুরুষ।
মীরা মুগ্ধ নয়নে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে রুদ্র কে, আর মন ভরাচ্ছে, কিন্তু মন যেনো আর ব্যাকুল হতে চাইছে, এ যে বেহায়াপনা মন, যা চায় তা চাই চাই,বারণীয় জিনিস যেনো আরো বেশি করে চাই।
মীরা পরলো, এক মহা ঝামেলায়।
বিবেক বলে চোখ ফিরিয়ে নে, আর মন বলে মন ভরিয়ে নে।
মীরা বিবেকটাকেই বেছে নিলো।
তাঁর কারণ হলো, বিবেকহীন মানুষ পশুর সমান, পশুদের কে যেমন আল্লাহ বিবেক দিয়ে পাঠান না, তাই তাঁরা নিজেদের কে সংযত রাখতে পারেন না, কথাটা মনে করতেই মীরা চোখ নিচে নামালো।

“রুদ্র ভাই চলে যেতে গিয়েও ফিরে এসে আবার বললেন, তোকে আম্মা আমাদের বাসায় যেতে বলেছে।”

-আমি অবাক হয়ে তাকালাম একবার, উনার চোখে চোখ রেখে কথা বলতে গেলেই আমার যেনো দম বন্ধ হয়ে আসে।
নিজেকে বহুকষ্টে সামলে নিয়ে বললাম, কোনো ইম্পর্ট্যান্ট কিছু?

-রুদ্র ভাই দাঁতে দাঁত চেপে ধরে বলতে লাগলেন, মনে হয় তোকে পূজোর ঢালা সাজিয়ে বরণ করে নিয়ে যেতে হবে।

” রুদ্র ভাইয়ের কথাটা ঠিক বুকের মাঝখান টায় এসে নাড়া দিলো, আমি এমন কি-ই বা জিজ্ঞেস করলাম, এভাবে আমাকে বলতে পারলো।
রুদ্র ভাই ভীষণ কষ্ট পেলাম, আপনি সেই ছোট বেলা থেকেই আমাকে আঘাত করে আসছেন, কিন্তু কখনো একটুও ভাবেননি এ বুকে আছে অনেক ব্যাথা যা শুধু আপনাকে ই ঘিরে।
আমি কখনো আপনাকে আঘাত করিনি।
আপনাকে আঘাত করলে যে দ্বিগুণ আঘাত আমি নিজেই পাবো, সেটা যদি আপনি বুঝতেন, তাহলে হয়তো পৃথিবী টা, অন্যরকম হতো।
সে যাই হোক কথাগুলো আমি মনে মনে বললেও রুদ্র ভাইকে কিছুই বুঝতে দেইনি।
নিজে নিজে ব্যাথিত মন নিয়ে উনাকে বললাম, আপনি যান, আমি আসছি।

– রুদ্র ভাই আর এক মুহুর্তও দাঁড়িয়ে না থেকে হনহনিয়ে চলে গেলেন।

” রুদ্র ভাইয়ের যাওয়ার পানে তাকিয়ে থেকে ভাবছি, মানুষটা বড়ো বেশি অদ্ভুত।
সামান্য একটু ছুতো খুঁজে আমাকে অপমান করবার জন্য, বুঝিনা উনি কি মজা পান, আমাকে এভাবে অপদস্ত করে।”

রুদ্র ভাইকে দেখে কিছু সময়ের জন্য স্বপ্নটার কথা ভুলে গেলেও এখন খুব বেশি মনে পরছে আবারও।
বদ্ধ রুমে বসে না থেকে, আম্মাকে বলে রেডি হচ্ছি হালকা একটু সাজগোছ করতে আয়নার সামনে দাঁড়ালাম, চুল গুলো ড্রায়ার দিয়ে শুকাতে পেছনের চুলগুলো সামনে নিয়ে আসলাম, হঠাৎ খালি পিঠে কারো শীতল স্পর্শে পুরো শরীরের লোম কাঁটা দিয়ে উঠলো।
মুহুর্তেই হাত থেকে ড্রায়ার টা পরে গেল।

চুলগুলো পেছনে নিয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালাম কিন্তু কিছুই দেখতে পেলাম না।
মনে মনে ভয়ের আশংকা বাড়তে লাগলো।
কি হচ্ছে আমার সাথে, কিছুই বুঝতে পারছি না।
এক মনে ভাবলাম আম্মাকে বলবো, আরেক মনে ভাবলাম না কিছুই বলা যাবে না, পরে দেখা যাবে দুশ্চিন্তা করে করে শরীর খারাপ করে ফেলেছে।
মনের ভুল ভেবে রেডি হয়ে বাসা থেকে বের হয়ে, রুদ্র ভাইয়ের ফ্ল্যাটের সামনে এসে দাঁড়ালাম, কলিং বেল চাপবার সাথে সাথে, রুদ্র ভাই এসে দরজাটা খুলে দিয়ে হা হয়ে তাকিয়ে রইলো।

রুদ্র ভাইকে এভাবে তাকাতে দেখে মনে মনে ভীষণ লজ্জা পেলাম।
মনে মনে ভাবতে লাগলাম, আজ হয়তো আমাকে খুব বেশি সুন্দর লাগছে তাই হয়তো রুদ্র ভাই চোখ ফেরাতে পারছেন না।
মনে মনে খুব খুব খুশি লাগছে, জানি না এই খুশিটা ঠিক কতোক্ষণ স্থায়ী হবে।

” রুদ্র ভাই মুখ চেপে চেপে হাসতে লাগলো, আর বলতে লাগলো, কিরে মীরা তুই কি কোনো কমিউনিটির বিয়ে বাড়ি আসছিস, আর এভাবে পেত্নীর মতো সেজেছিস কেনো? তোকে দেখে দেখছি পেত্নীর রানীর নাক কান কাটা যাবে।”

– রুদ্র ভাইয়ের কথা শুনে ইচ্ছে করছিলো, মাটিটা ফাঁক করে এখুনি নিচে চলে যা-ই, বুক টা ফেটে যাচ্ছিলো,মাথাটা কেমন ঝিম ঝিম করছিলো, বুকের ভেতর অদ্ভুত কষ্ট হচ্ছিল। ইচ্ছে হচ্ছিল কাউকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে, কেঁদে কেঁদে নিজের এই ব্যাথিত মনকে হালকা করতে।
রুদ্র ভাইকে সেই ছোটবেলা থেকে চোখে চোখে রাখি আমি, এক মুহুর্ত যাকে না দেখলে আমার বুক ফেটে কান্না আসে, আর উনিই আমাকে বার-বার আঘাত হানে এই হৃদয়ে।

ছলছল চোখে তাকিয়ে দেখি রুদ্র ভাইয়ের আম্মা এসেছে, আমি আর দাঁড়িয়ে না থেকে দৌড়ে গিয়ে আন্টিকে জড়িয়ে ধরে হু হুহু করে কেঁদে উঠি।
আন্টি পরম মমতা মাখা হাত বুলিয়ে বলতে লাগলো, কিরে মামনী এভাবে কাঁদছিস কেনো, রুদ্র কি তোকে আবারো কিছু বলেছে?
বল আমাকে বল, আমি আচ্ছা করে তোর হয়ে ওকে বকে দিবো।

– আমি চাইলেও পারবো না আন্টি রুদ্র ভাইকে বকুনি খাওয়াতে, চাইলেও পারবো না আমি উনাকে কষ্ট দিতে।
আমি তো উনাকে……..
বলতে গিয়েও বলতে পারলোনা মীরা।
মনের কথাগুলো মনে রেখেই, আন্টিকে বললো কিছু না আন্টি, আসলে আমার একটা ফ্রেন্ডের বিয়ে হয়ে যাচ্ছে তাই কান্না টা আর চেপে রাখতে পারি নি। তাই কেঁদে ফেললাম।

” আন্টি মীরার চোখের পানি মুছছে আর বলছে দূর পাগলি মেয়ে, একদিন তো তোকেও বিয়ে দিয়ে দিতে হবে বল , মেয়েদের কাজই হলো, দুই বংশের প্রদীপ হয়ে থাকা, যেনো বিয়ের পর নিজের মা-বাবার মতো শ্বশুর-শ্বাশুড়িকে ভালোবেসে আপন করে নেওয়া বুঝলি তো।

– মীরা মনে মনে বেশ খুশি হলো, আর মনে মনে বললো, তোমাকে সেই কবেই মা হিসেবে ভেবে রেখেছি, কতো স্বপ্ন আমি সাজিয়ে রেখেছি।

” রুদ্র ভাইয়ের আম্মা, আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বলছে, বাহ্ আজ তো আমার মীরাকে বেশ লাগছে, কাজল কালো চোখ দু’টি দিয়ে বুঝি আজ সবাইকে ভ্রম্মান্ড করে দিবি।

আন্টির কথায় লজ্জা পেয়ে মীরা লাল হয়ে গেলো।লজ্জিত চোখ নিয়ে মীরা এদিক ওদিক রুদ্র কে খুঁজে দেখলো, কিন্তু কোথাও পেলো না।
হতাশ মন নিয়ে আন্টির দিকে তাকালো।

-আন্টি মীরাকে হাত ধরে টেয়ার টেনে বসালো। মীরা তো রীতিমতো স্বপ্ন দেখছে, টেবিলে হরেক রকম সুস্বাদু খাবার।
মীরা মনে মনে ভাবছে হয়তো বাসায় কোনো মেহমান আসবে তাই এতসব আয়োজন।

” আন্টি মীরার প্লেটে খাবার দিতে দিতে বললো, তুই ভাবছিস মেহমান এসেছে, কিন্তু না, তোকে খাওয়ানোর জন্যই এতসব আয়োজন।”

মীরা অবাক চোখে আন্টির দিকে তাকালে, আন্টি মীরার প্লেটে কাবাব দিতে দিতে বললো, তোকে কেনো জানি নিজ হাতে খাওয়াতে ইচ্ছে হলো, তাই রুদ্র কে দিয়ে তোকে ডেকে নিয়ে আসলাম।

” কথাটা শুনে মীরার চোখে জল এসে ছলছল করছে, মীরা বুঝতে পারেনা কেনো আন্টি ছোট বেলা থেকেই মীরাকে খুব খুব আদর করে, একদম নিজের মায়ের মতো করে।
মীরা খেতে খেতে হঠাৎ গলায় গিয়ে আঁটকে যায় খাবার, আন্টি খালি গ্লাসে পানি ঢেলে মীরার সামনে বাড়িয়ে ধরলো।
আর মীরা গ্লাসের দিকে তাকিয়ে দেখলো পানির জায়গায় লাল রক্ত, একদম টাটকা রক্ত।

মীরা গ্লাস টা, হাতে নিয়ে সজোরে এক আছাড় মারলো।

#চলবে——–

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here