ব্লাক ডায়মন্ড পর্ব ২৮

#ডার্ক ডায়মন্ড
#আফরিন ইভা
#পর্ব-২৮

___________________

– মীরার কষ্ট মেথিসের বুকে এসে লাগছে। মেথিস মীরা কে নিজের দু-হাত দিয়ে উঠিয়ে চোখের জল আলতো হাতে মুছিয়ে দিয়ে বললো, প্রিন্সেস প্লিজ কেঁদো না তুমি কাঁদলে আমার বুকের বাঁ পাশে এসে লাগে, যেনো কেউ তীর দিয়ে অনবরত আঘাত করে যাচ্ছে। তুমি যদি এমন করো তাহলে সত্যি আমি তোমায় আর যেতে দেবো না।


মীরা মেথিসের দিকে তাকিয়ে দেখলো মেথিস মীরার কষ্টগুলো যেনো ভাগ নিতে চাইছে।
মীরা নিজেকে সামলাতে না পেরে মেথিস কে জড়িয়ে ধরে শার্ট খামছে ধরে বলতে লাগলো, প্রিন্স আমার মা খুবি অসুস্থ উনাকে আমি গিয়ে দেখতে পাবো কি-না তা-ও জানি না।
আমাকে যে খুব শীঘ্রই দেশে ফিরতে হবে।
আমি আমার মা কে খুব বেশি ভালোবাসি। মম কে হারিয়েছি কিন্তু আমি আমার মা কে হারাতে চাইনা।
আমি যে আর কাউকে হারাতে চাই না।

– মেথিস মীরা কে খুব গভীরভাবে জড়িয়ে ধরে রেখেছে একে অন্যের গভীর নিঃশ্বাস অনুভব করছে। বুকের লুকায়িত ডিপ ডিপ শব্দগুলো একে অন্যকে ভালোবাসার অনুভূতিগুলো জানিয়ে দিচ্ছে। তবুও জীবনের তাগিদে প্রিয়জনকে ছেড়ে ছুটে যেতে হচ্ছে আরেক প্রিয়জনের কাছে।
মেথিস মীরার চুলে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে আর বলছে প্রিন্সেস চিন্তা করো না তোমাকে আর কাউকেই হারাতে হবে না।
তুমি খুব শীঘ্রই দেশে ফিরতে পারবে।
চিন্তা করো না খুব শীঘ্রই তোমাকে আমি আমার পূর্ণ প্রিন্সেস রূপে গ্রহণ করবো আমাদের ভ্যাম্পায়ার কিংডমে।
আমার তোমার জীবন আমরা আমাদের স্বপ্নের ডার্ক ডায়মন্ড প্যালেসেই কাটিয়ে দেবো। মেথিস মীরার কপালের গভীর চুমু খেয়ে বললো ভালোবাসি প্রিন্সেস খুব বেশি ভালোবাসি

– মীরারও আজ বলতে বাঁধা নেই, ভালোবাসি প্রিন্স বড্ড বেশি ভালোবাসি।

_________________

– একে তো সান্ড্রা কাঁদছে লিজ নেই বলে।
তবুও মীরা কে আঁকড়ে ধরে বাঁচতে চেয়েছিলো সান্ড্রা।
কিন্তু দেশ থেকে হঠাৎ এমন খবর আসাতে সান্ড্রাও পারছে না মীরা কে আগলে ধরে রাখতে।

– মীরা সান্ড্রা কে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললো এবং বললো সান্ড্রা চিন্তা করো না, লিজ কে হারিয়েছো জানি ওকে হয়তো তোমার কাছে আর ফিরিয়ে দিতে পারবো না কিন্তু আমি আবার ফিরে আসবো।
আর হ্যাঁ আজ থেকে আমি তোমায় মম বলেই ডাকবো।

– সান্ড্রার মন যদিও খারাপ ছিলো
সান্ড্রা মীরা কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো, আমি আমার লিজ কে হারিয়ে আমার আরেক ডটার্স কে ফিরে পেয়েছি এর থেকে গড থেকে আর কি বেশি আশা করতে পারি?

সান্ড্রা মীরার কপালে চুমু খেয়ে বললো দীর্ঘজীবী হও তুমি।

– মীরা সান্ড্রার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে মেথিসের সাথে গাড়িতে উঠে বসলো।
সবাই কে ছেড়ে মীরার মন যেতে চাইছে না কিন্তু ওদিকে মায়ের জন্য মীরার মন উড়ো পাখি হয়ে আছে। মীরা পারছেনা পাখির মতো করে উড়ে গিয়ে মায়ের বুকে ঝাঁপিয়ে পড়তে।
মীরার চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে, সময় যতো অতিবাহিত হচ্ছে মীরার বুকের কষ্টগুলো আরো বেশি যেনো ব্যাথিত করছে।
মীরা চোখের জল লুকিয়ে মুছে নিলো।
মেথিসের দিকে মীরার চোখ পরলো, মেথিসের মন হয়তো খুব একটা ভালো নেই, দেখেই মীরা বুঝতে পারলো।
মেথিস কে দেখে মীরার কষ্ট যেনো এক মুহুর্তেই সব উধাও হয়ে যায়।
মেথিসের মায়াবী নীল চোখ মীরা কে যেনো খুব কাছে টানছে, মেথিসের গোলাপি ঠোঁট মীরাকে অজানা নেশায় হারিয়ে নিতে চাইছে। মীরা নিজেকে সামলাতে চোখ ফিরিয়ে নিলো।

-মেথিস খুব শান্তভাবে গাড়ি চালাচ্ছে আর একটু পর পর মুখের উপর উড়ে আসা চুলগুলোকে ফুঁ দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছে।
এ দৃশ্য দেখে মীরার অনুভূতি গুলো যেনো ভালোবাসা পেতে চাইছে। মীরা নেশা ভরা চাহনিতে মেথিসের দিকে তাকিয়ে রইলো।

হঠাৎ গাড়ি এসে থামলো ইংল্যান্ডের এয়ারপোর্টে।
মীরার খুব ঠান্ডা ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে।
মীরা সিটে গুঁজে আছে দেখে মেথিস নিজের গায়ের ব্ল্যাক ব্লেজার টা মীরা কে পড়িয়ে দিয়ে মীরার হাত নিজের ভেজা ঠোঁট দিয়ে গভীর চুমু খেয়ে বললো, খুব শীঘ্রই ফিরে এসো আমি তোমার অপেক্ষায় থাকবো প্রিন্সেস।

– মীরার মনে অদ্ভুত ভয় কাজ করতে লাগলো। মনে হচ্ছে মীরা যদি সত্যি মেথিস কে হারিয়ে ফেলে তখন কি হবে।
মীরার চোখ বেয়ে আপনা-আপনি জল গড়িয়ে পড়ছে।
মীরা ভাবতে পারছে না কিছুতেই। কিভাবে মীরা এই অজানা ভয়ের কথা মেথিস কে বলবে।
মীরার দম আঁটকে আসছে, মীরার গলা শুকিয়ে আসছে।
মীরা জিহ্বা দিয়ে গলাটা ভিজিয়ে নিলো।
মীরা মেথিসের হাত এই প্রথম নিজের হাতে নিয়ে শক্ত করে বুকের সাথে চেপে ধরে রাখলো এবং বললো, প্রিন্স আপনাকে আমি হারিয়ে ফেলবো না তো?

– মেথিস মীরার চোখের জল শুষে নিয়ে চোখে চোখ রেখে বললো ভয় নেই প্রিন্সেস, সত্যিকারের ভালোবাসা কখনো হারিয়ে যায় না হয়তো কিছুদিনের জন্য হারাতে পারে কিন্তু বিধাতা উনি ঠিক সময় তা আবার ফিরিয়ে দেন।
মেথিস মীরার কপালে গভীর চুমুর ছোঁয়া দিলো।

মীরার পুরো শরীরে অদ্ভুত এক অনুভূতি খেলে গেলো। মেথিসের গভীর স্পর্শে মীরা কেঁপে উঠলো।মীরা চোখ মেলে মুগ্ধ নয়নে মেথিস কে দেখে যাচ্ছে।
মীরার ইচ্ছে করছে না এই হাত আজ ছেড়ে যেতে।

– মেথিস মুখে হাসি ফুটিয়ে বললো, চিন্তা করো না প্রিন্সেস তুমি আমার আমারই হবে। শত বাঁধা পেরিয়ে শত বিপদ তুচ্ছ করে আজ দু’জন আমরা এক হয়েছি নিশ্চয়ই আমরা আগামীতে দু’জন আবার এক হবো।

মেথিস মীরা কে আকাশের দিকে ইশারা করে বললো, উপরের উনিই তোমার কপালে আমাকে লিখে দিয়েছেন।
তা-ই তো আমরা শত বাঁধা পেরিয়েও এক হই।
আর এটাই হলো আমাদের প্রেমের পূর্ণ সার্থকতা।

– মেথিসের কথা শুনে হারানোর ভয় টা একটু কাটলেও পুরোপুরি কাটেনি।
তবুও মনে একটু স্বস্তি পেলো মীরা।

মীরা বিমানে উঠবার সময় বার-বার মেথিসের দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে ছিলো।

এ তাকানো মীরার বুকে এসে লাগলো।
মেথিসেরও খুব কষ্ট হচ্ছে মীরা কে বিদায় দিতে। তবুও নিজেকে শক্ত রেখে মীরা কে বিদায় জানালো।

__________________

-প্লেনের জানালার পাশে মীরার সীট।মীরা বাহিরের দিকে তাকিয়ে ভাবছে কি অদ্ভুত এক অনুভূতি হচ্ছে মীরার।
বাংলাদেশ থেকে যখন বিদায় নিয়ে ইংল্যান্ডের উদ্দেশ্যে যাত্রা করছিলো মীরা ঠিক যতোটা খারাপ লেগেছিলো, তাঁর চেয়েও দ্বিগুণ খারাপ লাগা নিয়ে ফিরছে মীরা আবারো বাংলাদেশে। একে তো মা অসুস্থ তাঁর উপর আবার মেথিস কে ছেড়ে থাকা।
দেশ থেকে কবে ফিরতে পারবে ইংল্যান্ডে তাও অজানা মীরার।
এদিকে মায়ের জন্য মনটা ভীষণ খাঁ খাঁ করছে মীরার।
মীরার ভাবতে কষ্ট হচ্ছে হঠাৎ এমন কি হলো যাঁর জন্য স্ট্রোক পর্যন্ত করে বসে আছে জাহানারা বেগম । মীরার কাছে সব যেনো এলোমেলো লাগছে।

– মীরার বাবা শফিক সাহেব মীরা কে ইরার ব্যাপারে কিছু একটা বলতে চেয়েছিলো কিন্তু বলতে পারেনি। তাঁর আগেই মীরা ফোন ফেলে দিয়েছিলো। এখন মীরা প্লেনে বসে বসে ভাবছে মা কেনো এতোটা স্ট্রেস নিলো আবার স্ট্রোক ই বা করে ফেললো।
মীরা গভীর ভাবনায় থেকে মেথিস কে মিস করছে ভীষণ।
আবার কখন দেখা হবে মেথিসের সাথে তা-ও জানা নেই মীরার।

মীরা প্ল্যানের বাহিরের আকাশ দেখছে।
আজ অনুভূতি রা যেনো আকাশ ছুঁইছুঁই করছে কিন্তু পারছে না কিছুতেই।
মীরা চোখ বন্ধ করে মেথিসের মুখ টা মনে করতে লাগলো।
মেথিসের নীল চোখ গুলো মীরা কে ইশারা করে চুপিচুপি কি যেনো বলে যাচ্ছে, মীরা কান পেতে শুনতে চেষ্টা করছে।

হঠাৎ কারো কথা বলার শব্দে মীরার ঘোর ভাংলো।

মীরা ফিট ফিট করে তাকিয়ে দেখলো একজন সুদর্শন মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মীরা অচিরেই বুঝতে পারলো মীরা কে মেয়েটা কিছু বলে যাচ্ছে মুখ দিয়ে কিন্তু মীরা বুঝতে পারছে না কিছু।
বহুকষ্টে মীরা নিজেকে শান্ত করে বুঝতে চেষ্টা করলো।

মেয়েটা মীরা কে পুনরায় আবার বললো ম্যাম আপনার কিছু লাগবে?

– মীরা মেয়েটার কাছ থেকে পানি চেয়ে নিলো এবং পানিটা ঢকঢক করে পান করে ধন্যবাদ জানালো।

– মেয়েটা মিষ্টি হাসি ফুটিয়ে চলে গেলো।

– মীরা চাপা দীর্ঘশ্বাস ফেলে চোখ বন্ধ করে ফেললো।

হঠাৎ প্লেনটা বিরাট এক ঝাঁকুনি দিয়ে আস্তে আস্তে নিচে নামতে লাগলো।

– প্লেনটা যখন নিচে নামছিল মীরার তখন মনে হচ্ছিল বুকের ভেতর থেকে কি যেনো উড়ে যাচ্ছিল।মীরা বুকের উপর হাতটা রেখে চোখ বন্ধ করে চোখ খুললো।
চোখ খুলে মীরা তাকিয়ে দেখলো সবাই এক এক করে নামছিল।
মীরাও মীরার ব্যাগপত্র নিয়ে বের হলো।
বাহিরে এসে জোরে একটা নিঃশ্বাস নিলো। এ নিঃশ্বাস যেনো মীরার শান্তির নিঃশ্বাস, মায়ের আঁচলের মিষ্টি সুভাস যেনো মীরা এই বাতাসেই পাচ্ছে।
মীরা জোরে জোরে শ্বাস নিলো।

-মীরার হঠাৎ মায়ের কথা মনে পড়লো।
মায়ের জন্য মনটা বেশ কেঁদে উঠলো। মা’কে একনজর দেখবার জন্য মীরার মন আকুপাকু হয়ে আছে।
মীরা মীরার মা’কে বড্ড বেশি ভালোবাসে চোখ বন্ধ করলেই মায়ের মুখ খানা মীরার চোখে ভেসে উঠে।
মীরার ইচ্ছে করছে দু’টো ডানা ঝাপটিয়ে মায়ের বুকে মুখ গুঁজে কাঁদতে।

মীরা আর দেরি না করে একটা টেক্সি নিয়ে বাসায় রওনা দিলো।
গাড়িতে বসে সিটে হেলান দিয়ে ভাবছে কি থেকে কি হয়ে গেলো।
মীরা মনের অজান্তে মেথিস কে খুব ভালোবেসে ফেলেছে।
মীরার ভীষণ কষ্ট হচ্ছে মেথিস থেকে এতো টা দূরে আসাতে।
মা অসুস্থ না হলে মীরা কখনোই আসতো না। মীরার বুকে শুধু একজনের জন্যই গভীর ভালোবাসা আর সে হলো মেথিস।

হঠাৎ ড্রাইভারের কথায় মীরার ঘোর কাটলো।

আফা এটাই কি আপনার বাসা?

– মীরা একটু এলোমেলো চোখে তাকিয়ে নিজে সিউর হয়ে ড্রাইভার কে ব্যাগ পৌঁছে দিতে বললো।

-মীরা দরজার সামনে দাঁড়িয়ে কলিং বেল বাজিয়ে যাচ্ছে কিন্তু কেউ এসে খুলছে না।

মিনিট পাঁচেক পর মীরার বাবা এসে দরজা খুললো।

– মীরা বাবা কে দেখে জড়িয়ে ধরে চোখের জল ফেলতে লাগলো আর বললো বাবা তুমি কেমন আছো?

– মীরার বাবা অনেক দিন পর মেয়ে কে পেয়ে যেনো বুক ছাড়া করতে চাইছেন না।
মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বলতে লাগলো ভালোই ছিলাম মা কিন্তু ইরা….

ইরা বলে উনি থেমে গেলেন।

-মীরা কান্না বন্ধ করে বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে বাকি কথা শুনবার জন্যে।

– মীরার বাবা চোখের জল মুছে মীরার দিকে হতাশ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বলতে লাগলো, ইরা রুদ্র কে রেখে ওর পছন্দ করা ছেলের কে বিয়ে করে নিয়েছে।

– মীরা বাবার মুখে কি শুনছে নিজের কান কেও যেনো বিশ্বাস করাতে পারছেনা।
মীরা যেনো একে বারে স্তব্ধ হয়ে নির্বিকার দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।

– মীরার বাবা মীরার মায়ের বিষয়ে সবকিছু খুলে বললেন এবং এটাও বললেন মীরার মা এসব সহ্য করতে না পেরে স্ট্রোক করে বসেন।

– মীরা মায়ের হাত ধরে কাঁদছে।
ডাক্তার নিষেধ করে দিয়েছেন জাহানারা বেগম যেনো কিছুতেই কোনো কারণেই উত্তেজিত না হোন সবাই যেনো এ খেয়াল রাখেন।

হঠাৎ মীরার চোখের জল জাহানারা বেগমের হাতে গিয়ে পড়লো।
সাথে সাথে জাহানারা বেগম চোখ খুলে তাকালো।জাহানারা বেগম মীরা কে দেখে চমকে গেলেন।
উনি মীরার মাথায় আস্তে আস্তে হাত বুলাতে লাগলেন।

– মীরা মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে নিজের চোখের জল মুছে নিলো।
কাঁপা কাঁপা ঠোঁটে মা বলে ডাকলো।

– মা ডাক টা জাহানারা বেগমের বুকে গিয়ে লাগলো।
জাহানারা বেগম আগের মতো কারো সাথে তেমন কথা বলে না কিন্তু আজ মীরা কে দেখে তিনি চুপ থাকতে পারলেন না ।
মীরার দিকে ছলছল করে বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে চোখ দিয়ে মীরা কে কিছু একটা ইশারা করলেন।

মীরা বুঝতে পেরে মা’কে জড়িয়ে ধরলেন।
দু’জনের আত্মা আজ এক করে মিশে আছে।
মা’কে এভাবে জড়িয়ে ধরতে পেরে মীরার সব কষ্ট যেনো উবে গেছে।
মীরা মনে মনে সৃষ্টিকর্তা কে ধন্যবাদ জানালো এমন একজন মা পেয়ে।

– জাহানারা বেগম মীরার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো, কেমন আছিস মা? কষ্ট হয়নি তো আসতে ?

– মীরা মায়ের সব কথার জবাব দিয়ে বললো, তোমার শরীর টা কেমন লাগছে এখন?

– জাহানারা বেগম ম্লান হেঁসে জবাবে বললো, ইরা যেমনটা রেখে গেছে।

– কথাটা শুনে মীরার হাসিমুখ কালো হয়ে গেলো।

– জাগানারা বেগম মীরার হাত নিজের বুকে নিয়ে বললো, আমার ভালো, মন্দ তোর উপর নির্ভর করছে মা।

– মীরা অবাক চোখে শফিক সাহেবের দিকে একনজর তাকিয়ে মায়ের দিকে ছলছল চোখে তাকালো।মীরার মনে হঠাৎ কেমন ভয় ভয় কাজ করতে লাগলো।
অজানা এক অদ্ভুত ভয়ে মীরার হাত-পা কাঁপছে।

– জাহানারা বেগম স্বামীর দিকে একনজর তাকিয়ে মীরা কে বললো, ইরা যা করেছে আমি ওকে কখনোই মাফ করবো না, কিন্তু তোকেও আমার শেষ কথা নয়, আমার শেষ আবদার টুকু রাখতেই হবে।
জাহানারা বেগম মীরার হাত শক্ত করে ধরে বললো, তোকে রুদ্র কে বিয়ে করতে হবে।

– মায়ের কথা শুনে মীরার চোখ বন্ধ করে ফেললো। মায়ের বলা শেষ কথাটা মীরা যেনো বিশ্বাস করতে পারছে না। মীরা কি স্বপ্ন দেখছে তাহলে।
একসময় মীরা রুদ্র ভাইকে পছন্দ করতো, একতরফা ভালোবাসতো কিন্তু মেথিস কে ভালো-লাগা, ভালো বাসার পর মীরা রুদ্র কে কখনো কল্পনাও করে নি।

#চলবে—–

বিদ্রঃ আগামীকাল শেষ পর্ব।
আমি জানি অনেকেই এখন আমার সাথে ঝগড়া করতে আসবেন, তাঁর আগেই লুকিয়ে পড়ি। গল্পের এন্ডিং যা-ই হোক সবাই মেনে নিবেন। রহস্যময় গল্পগুলো এমনই হয়। গল্প আগামীকালও আসবে।
সবাই গঠনমূলক মন্তব্য করবেন কার কেমন অনুভূতি বলে যান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here