ভালোবাসাময় প্রহর পর্ব -১৫+১৬

#গল্পের_নাম_ভালোবাসাময়_প্রহর
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza
পর্ব:১৫

রক্তিম অধরাকে কোলে নিয়ে নিজ রুমে চলে আসলো অধরাকে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে রুমের দরজাটা লাগিয়ে দিলো।অধরার কেন জানি অনেক লজ্জা লাগছে সে বিছানার চাদর এক হাতে মুষ্টিবদ্ধ করে রাখলো।রক্তিম ধীর পায়ে তার কাছে চলে আসলো এরপর অধরার কপালে ঠোঁট ছুইয়ে দিয়ে বললো,

~আমার স্বপ্নের রানী আমি তোমাকে আজ নিজের করে পেতে চাই এই নরম বাহুডরে নিজেকে আবদ্ধ করতে চাই। আমাকে কী অনুমতি দিবে?

রক্তিমের কথা শুনে অধরা চোখ বন্ধ করে ফেললো রক্তিম অধরার বন্ধ চোখ গুলোতে চুমু খেলো।অধরার নিশ্বাস বেড়ে চলছে মনে হচ্ছে এখনই তার প্রাণপাখিটি উড়ে যাবে।অধরা নিজেকে সামলাতে না পেরে রক্তিমকে জড়িয়ে ধরলো রক্তিম মুচকি হেসে অধরাকে বিছানায় শুইয়ে দিয়ে তার দিকে ঝুকে দেখলো এখনো অধরা চোখ বন্ধ করে আছে।রক্তিম অধরার হাতে গভীর ভাবে ঠোঁট ছুইয়ে বললো,

~চোখ খুলে তাকাও অধরা।

অধরা মিনমিন স্বরে বললো,

~আমার লজ্জা লাগছে রক্তিম অনেক লজ্জা।

রক্তিম অধরা ঘাড়ে মুখ গুজে ঠোঁট ছুইয়ে দিতে ব্যস্ত অধরা রক্তিমের শার্ট খা/ম/চে ধরলো।রক্তিমের এই অসীম ভালোবাসা সে সহ্য করতে পারছেনা হারিয়ে যাচ্ছে অন্য কোনো দুনিয়ায়।অধরা রক্তিমের সকল আদর সাদরে গ্রহন করছে রক্তিম অধরাকে নিজের করে নিতে ব্যস্ত এই রাতটা যে তাদের মিলনের সাক্ষী হয়ে রইলো হালকা হাওয়ায় ভেসে আসছে তাদের গভীর নিশ্বাসের শব্দ তাদের এই “ভালোবাসাময় প্রহর” এভাবেই তাদের জীবনে সবসময় বিচরণ করুক।

সকালবেলা তন্নি কলেজের জন্য রেডি হয়ে প্রভাকে স্কুলের জন্য রেডি করে বাসার বাহিরে চলে আসতেই দেখলো রাত দাড়িয়ে আছে।তন্নি রাতকে দেখে যতোটা না অবাক তার চেয়ে বেশি অবাক রাতের অবস্থা দেখে চুলগুলো এলোমেলো,চোখ গুলো লাল,শার্টের অবস্থা না/জে/হা/ল।তন্নির সামনে এসে রাত দাড়ালো এতে তন্নি নিজের ভাবনা থেকে বের হলো।প্রভা রাতের হাত ধরে বললো,

~তোমার কী হয়েছে আমাবস্যার রাত?

রাত মৃদু হেসে বললো,

~কঠিন রো/গ হয়েছে আমার।

তন্নি বললো,

~কী হয়েছে তোমার রাত ভাইয়া?

রাত বললো,

~সময় হলে সব জানতে পারবি এখন চল তোদের ড্রপ করে দিয়ে আসি।

তন্নি কিছু বলবে তার আগেই অধরার বাবা সেখানে উপস্থিত হয় তন্নি তাকে দেখে বললো,

~নাহ রাত ভাইয়া তার কোনো দরকার নেই বাবা এসে পরেছে আজ আমরা তার সাথে যাবো।

রাত অধরার বাবার দিকে তাকিয়ে বললো,

~আজ আমি তাদের দিয়ে আসবো আঙ্কেল।

অধরার বাবা বললেন,

~নাহ রাত আজ আমি আমার দুই মেয়েকে দিয়ে আসবো রাস্তায় অনেক মজা।

প্রভা খুশিতে ইয়াহু বলে উঠতো তন্নি তাকে নিয়ে সামনে চলে গেলো অধরার বাবা রাতকে বললো,

~তোমার এ অবস্থা কেন বাবা?শরীর কী খা/রা/প?

রাত বললো,

~সব ঠিক আছে আঙ্কেল।

অধরার বাবা রাতের কাঁধে হাত রেখে তন্নি আর প্রভার কাছে চলে গেলো।দূর থেকে রাত তাদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে সে মনে মনে বললো,

~নিজেকে প্রস্তুত করেই তোর সামনে দাড়াবো।

রোদের আলো রক্তিমের চোখে পরতেই সে পিটপিট করে চোখ খুলে তাকালো হাত দিয়ে বিছানার অপরপাশে অধরাকে খুজতে লাগলো। কিন্তু অধরার ছোয়া পেলো না তাই সে উঠে বসলো সারা রুমে চোখ বুলালো কোথাও অধরা নেই। রক্তিম বিছানা ছেড়ে উঠে কার্বাড থেকে নিজ কাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে চলে
গেলো ফ্রেশ হতে। অধরা রান্নাঘরে শাশুড়ির সাথে নাস্তা তৈরি করছে আর কথা বলছে অধরা পরোটা বেলছে আর রক্তিমের মা চা তৈরি করছে। রক্তিমের মা বললেন,

~রাত টা দুদিন ধরে কিছুই খেতে চাইছেনা কী জানি ছেলেটার কী হয়েছে?

অধরা বললো,

~আমার মনে হয় ওর শরীরটা অসুস্থ ও তো এমন চু/প/চা/প থাকেনা।

রক্তিমের মা বললেন,

~তুমি ঠিকি বলেছো অধরা ছেলেটাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

তখনই বাহির থেকে রাতের আওয়াজ ভেসে আসলো সে জোরে জোরে বলছে,

~মা মা নাস্তা দেও।

রক্তিমের মা পরোটা ভাজি নিয়ে দ্রুত ডাইনিং রুমে চলে আসতেই রাতকে দেখে অবাক হয়ে গেলো রাত একদম ফরমাল গেটাপে বসে আছে চেয়ারে। রাত মাকে দেখে বললো,

~এভাবে দাড়িয়ে কেন আছো?

রক্তিমের মা ছেলের সামনে খাবার রেখে দিলো অধরাও রান্নাঘর থেকে এ বের হয়ে এসে রাতের অবস্থা থেকে হা হয়ে গেলো।রক্তিমের মা রাতের মাথায় হাত দিয়ে বললেন,

~জ্বর তো নেই তাহলে এমন করছিস কেন?

রাত বিরক্তি নিয়ে বললো,

~আজ থেকে ভাইয়ার সাথে আমিও অফিস যাবো।

রক্তিমের মা অবাক হয়ে চেয়ারে বসে পরলেন অধরা খুশি হয়ে বললো,

~এতো অনেক ভালো কথা।

রাত অধরার দিকে তাকিয়ে একটা হাসি দিলো রক্তিমের মা বললেন,

~যে ছেলেকে ব/কে কোনোদিন অফিস পাঠানো যায় না সে আজ নিজ ইচ্ছায় যাচ্ছে ব্যাপারটা খুবই আশ্চর্যজনক।

রাত বললো,

~এতে ভাবার কিছু নেই লাইফে এখন এগিয়ে যেতে হবে।

অধরা রাতের কথায় মুচকি হেসে রান্নাঘরে চলে গেলো রক্তিমের মা ছোট ছোট চোখ করে তার দিকে তাকিয়ে বললেন,

~মেয়েটা কে রাত?

রাতের খাওয়া বন্ধ হয়ে গেলো সে পরোটার টুকরো প্লেটে রেখে আমতা আমতা করে বললো,

~কোন মেয়ে মা কার কথা বলছো?

রক্তিমের মা বললেন,

~রাত,আমি তোর মা তোকে আমি হাড়ে হাড়ে চিনি মুখ খোল তুই এখন।

রাত বললো,

~মা এমন কিছুই না তুমি ভুল ভাবছো আমি

পুরোটা শেষ না করেই রাত ধু/ম করে দৌড় দিলো রক্তিমের রুমের দিকে। রক্তিমের মা বললেন,

~এই ছেলে কী ঘটাবে আল্লাহ জানে।

রাত হাফ ছেড়ে বাঁচলো রক্তিমের রুমের দরজা ঠেলে ভিতরে চলে গেলো রক্তিম আয়নার সামনে দাড়িয়ে অফিসের জন্য তৈরি হচ্ছে।রক্তিম রাতকে দেখে ভ্রুকুচকে বললো,

~তোর এ অবস্থা কেন?

রাত বললো,

~আমিও আজ থেকে অফিস যাবো।

রক্তিম বললো,

~তোর হাবভাব ভালো লাগছেনা আমার।

রাত বললো,

~তুমি শুধু শুধু সন্দেহ করো আমায়।

রক্তিম চুল ঠিক করে বললো,

~অধরাকে দেখেছিস?

রাত বললো,

~রান্নাঘরে।

রক্তিম দরজার সামনে গিয়ে বললো,

~তুই কী এখানে অফিস করবি?

রাত বললো,

~নাহ তুমি রোমান্স করে আসো আমি গাড়িতে গিয়ে বসছি।

রক্তিম আর কিছু না বলে রান্নাঘরের উদ্দেশ্যে রওনা হলো সেখানে গিয়ে দেখলো অধরা কাজ করছে। রক্তিম আশেপাশে দেখে অধরাকে পিছন দিয়ে জড়িয়ে ধরলো।অধরা এহেন কান্ডে একটু কে/পে উঠলে কিন্তু নিজেকে সামলে বললো,

~ভুলে যাচ্ছেন আমরা কিন্তু রান্নাঘরে।

রক্তিম বললো,

~বিদায় নিতে আসলাম অফিসে যাচ্ছি।

অধরা বললো,

~নাস্তা করবেন না?

রক্তিম বললো,

~আজ লেট হয়ে গেছে তাই বাহিরে খেয়ে নিবো।

অধরা নিজেকে ছাড়িয়ে নাস্তা টিফিন বক্সে ভরে রক্তিমের হাতে দিয়ে বললো,

~গাড়িতে খেয়ে নিবেন।

রক্তিম হেসে অধরার কপালে চুমু খেয়ে বললো,

~রাতে দেখা হবে আর ধন্যবাদ কালকের সারপ্রাইজটা অনেক সুন্দর ছিলো।

অধরা লজ্জা পেয়ে গেলো রক্তিম মুচকি হেসে মায়ের রুমে গিয়ে তার থেকে বিদায় নিলো রক্তিমের মা বললো,

~ছোট টাকে দেখে রাখিস হাবভাব ভালো ঠেকছেনা।

রক্তিম বললো,

~অবশ্যই মা দেখে রাখবো বাবা তো আগেই চলে গেছে অফিস আমি যাই এখন।

বলেই সে বাসা থেকে বের হয়ে গেলো রাত গাড়িতে অপেক্ষা করছে অতঃপর রাত আর রক্তিম রওনা হলো অফিসের উদ্দেশ্যে।

তন্নি কলেজ থেকে বাসায় ফিরতে ফিরতে আজ বিকেল হয়ে গেছে রিক্সা থেকে নেমে ভাড়া মিটিয়ে সে যেইনা বাসায় প্রবেশ করতে নিবে তখনই কেউ একজন তার সামনে এসে দাড়ালো।তন্নি মাথা উঁচু করে দেখলো একটা ছেলে হাতে ফুল আর চকলেট নিয়ে দাড়িয়ে আছে।তন্নি বললো,

~এভাবে দাড়িয়ে আছেন কেন?

সেই ছেলেটি চোখের সানগ্লাস খুলে বললো,

~হাই,আমার নাম রাজ আপনি কী এ বাসায় থাকেন?

তন্নি বললো,

~হ্যাঁ এ বাসায় থাকি।

রাজ হেসে তন্নিকে একবার ভালো মতো দেখে ফুল আর চকলেট এগিয়ে দিয়ে বললো,

~এসব আপনার জন্য।

তন্নি বললো,

~আমি অচেনা মানুষদের থেকে কিছু নেইনা।

রাজ বললো,

~আমি অচেনা নই ভাবতে পারেন আমি আপনার বন্ধু।

তন্নি রাজের কথা শুনে বললো,

~আপনি না হলেও বয়সে আমার ৪/৫ বছরের বড় হবেন আপনি আমার বন্ধু কীভাবে হন?

রাজ বললো,

~এগুলো আমার মায়ের তরফ থেকে আপনাকে দেওয়া হয়েছে।

তন্নি বললো,

~আপনার মা আমাকে চেনে কীভাবে?

রাজ বললো,

~কয়েকদিন আগে আপনি একজনকে রাস্তায় সাহায্য করেছিলেন যে রাস্তায় পরে গিয়েছিলো সেই মহিলাটি আমার মা।

তন্নির মনে পরলো সেই ঘটনাটা সে কিছুদিন আগেই এই কাজটা করেছিলো তন্নি মুচকি হেসে চকলেট আর ফুল গ্রহন করলো।রাজ বললো,

~আগামী কাল আমার মা আপনাদের বাসায় আসতে চায়।

তন্নি বললো,

~অবশ্যই আন্টিকে নিয়ে আসবেন।

রাজ সানগ্লাসটা চোখে পরে নিলো তারপর বিদায় নিয়ে চলে গেলো তন্নিও বাসায় চলে গেলো।দূর থেকে দাড়িয়ে রাত এসব দেখছিলো তার বুকে কেন যেন চিনচিন ব্যাথা করছে সে তন্নিকে অন্যজনের সাথে সহ্য করতে পারছেনা।রাত কিছু না ভেবেই তন্নির বাসায় চলে গেলো তারপর সোজা আসলো তন্নির রুমে

চলবে

(বিদ্র:কেমন হয়েছে জানাবেন।ভুলগুলো ক্ষমার চোখে দেখার অনুরোধ রইলো🥰🥰।Happy Reading🤗🤗)#গল্পের_নাম_ভালোবাসাময়_প্রহর
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza
পর্ব:১৬

রাত তন্নির রুমে প্রবেশ করে দেখলো তন্নি পড়ার টেবিলে বসে মনোযোগ সহকারে পড়ছে।রাত তন্নির কাছে গিয়ে দাড়িয়ে বললো,

~ছেলেটা কে ছিল রে?

তন্নি রাতের কন্ঠ শুনে বই থেকে মুখ উঠিয়ে তার দিকে তাকিয়ে বললো,

~কোন ছেলে?

রাত নিজের রা/গ/কে কন্ট্রোল করে বললো,

~যে তোকে চকলেট আর ফুল দিলো।

তন্নি ভ্রুকুচকে রাতের দিকে তাকিয়ে বললো,

~তুমি কী আমার ন/জ/র রাখছো?খুবই খা/রা/প কথা রাত ভাইয়া।

বলেই সে মুখ টি/পে হেসে ফেললো রাতের রা/গ আরো বেড়ে গেলো তন্নির হাসি দেখে।রাত তন্নির বাহু চে/পে ধরে চেয়ার থেকে উঠিয়ে বললো,

~রাস্তায় দাড়িয়ে একটা অচেনা ছেলের সাথে দাড়িয়ে কথা বলছিলি যদি সেই ছেলেটা তোর কোনো ক্ষ/তি করতো।এই ফুল আর চকলেটে যদি কিছু মিশিয়ে দিয়ে তোর সাথে কোনো
খা/রা/প কিছু করতো তখন কী করতি?আজ কাল কতো কিছু হয় রাস্তায় এই জ্ঞান আছে তোর?

রাত একনাগাড়ে কথা গুলো বলে থামলো তন্নি রাতের থেকে নিজেকে ছা/ড়ি/য়ে বললো,

~আমি তো তার মাকে সাহায্য করেছিলাম তাই আমাকে ধন্যবাদ জানাতে এসেছিলো আর সে ভালো একজন মানুষ তার মা আমাকে তার ব্যাপারে অনেক কথা বলেছে।

তন্নির কথা শুনে রাত তন্নির মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,

~তুই বড় হয়েছিস তোর এখন থেকে সব বুঝে শুনে চলতে হবে।

তন্নি বললো,

~আমি জানি রাত ভাইয়া।

রাত আর কিছু না বলে তন্নির থেকে বিদায় নিয়ে বাসা থেকে বের হয়ে আসলো রাতের কেন যেন ছেলেটাকে সুবিধার মনে হচ্ছে না। রাতের মন বলছে ছেলেটার কোনো উদ্দেশ্য আছে না হলে এভাবে বাসা খুজতে তো বের হতো না।রাত এসব কথা ভাবতে ভাবতে বাসায় চলে আসলো বাসায় আসতেই দেখতে পেলো সবাই একসাথে বসে আলোচনা করছে।অধরা রাতকে দেখে বললো,

~রাতও এসে পরেছে আমরা সবাই তোর জন্য অপেক্ষা করছিলাম।

রাত বললো,

~কীসের এতো আলোচনা?

রক্তিমের মা বললেন,

~আমরা তোর জন্য মেয়ে দেখা শুরু করবো। সেটা নিয়েই আলোচনা করছে সবাই।

রাত বললো

~আমি এখন বিয়ে করবো না।

রক্তিমের মা বললেন,

~এমন কথা আমি শুনবোনা এক বউ এসে পরেছে আরেক বউও আমি এ বাসায় চাই।

রক্তিম রাতের কাঁধে হাত রেখে বললো,

~বিয়েটা করে ফেললে ভালো হয় তুই তো এখন অফিসেও যাওয়া শুরু করেছিস।

রাত বললো,

~আমি বিয়ের জন্য প্রস্তুত না তাই এ নিয়ে আর কথা বলবে না।

রক্তিমের বাবা বললেন,

~তোর কী কোনো পছন্দ আছে থাকলে বলতো পারিস।

অধরাও রাতের কাছে বসে বললো,

~হ্যাঁ রাত বল তোর মনের কথা।

রাত মাথা নিচু করে ফেললো অধরা, রক্তিম সহ সবাই রাতের দিকে তাকিয়ে মুখ টি/পে হাসছে রাত মিনমিন স্বরে বললো,

~হ্যাঁ আছে একজন।

অধরা ব্যাকুল হয়ে বললো,

~কে সে?

রাত বললো,

~এখন বলা যাবে না কারণ আমি মেয়েটিকে এখনও নিজের মনের কথা বলিনি।

অধরা বললো,

~মেয়েটি কী আমাদের ভার্সিটির?

রাত বললো,

~নাহ।

রক্তিম অধরাকে বললো,

~থাক ও নিজে আগে সিউর হোক তারপর আমাদের কাজ আমরা করে নিবো।

রক্তিমের মা বললো,

~হ্যাঁ তাহলেই ভালো হয়।

রাত সেখান উঠে নিজের রুমে চলে গেলো অধরা রান্নাঘরে গিয়ে রাতের খাবার তৈরি করতে লাগলো আর ভাবতে লাগলো কে সে মেয়ে?তখনই রক্তিম এসে তাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরলো অধরা তার ছোঁয়া পেয়ে ভাবনার জগত থেকে বের হয়ে আসলো। রক্তিম অধরার গালে ঠোঁট ছুঁইয়ে বললো,

~কার ভাবনায় ব্যস্ত?

অধরা বললো,

~আছে কেউ একজন যার ভাবনায় বিভোর আমি থাকি।

রক্তিম বললো,

~এখন ভাবনা থেকে ছুটি নিন ম্যাডাম কারণ আপনার বর এখন আপনাকে নিয়ে ব্যস্ত হবে।

অধরা বললো,

~রান্না করছি এখন কোনো সময় নেই আমার।

রক্তিম বললো,

~ডিনারের পর আমরা ঘুরতে বের হবো তখন কিন্তু কোনো বাহানা চলবে না।

অধরা বললো,

~যথা আজ্ঞে মহারাজ।

অধরাকে ছেড়ে দিয়ে রক্তিম রান্নাঘর থেকে চলে গেলো অধরা মুচকি হেসে নিজ কাজে মনোযোগ দিলো একটু পর রক্তিমের মাও তাকে সাহায্য করতে আসলো।রক্তিমের মা অধরাকে বললো,

~অধরা,তোমরা কিছুদিনের জন্য বাহিরে থেকে ঘুরে আসো নিজেদের মতো করে সময় কা/টা/ও।এখন এসব সংসারের কাজ তোমার করতে হবে না আমি আজই রক্তিমকে বলবো তোমায় নিয়ে যেতে।

অধরা বললো,

~মা,আমরা সবাই মিলে ঘুরতে গেলে কেমন হয়?একসাথে পিকনিক টাও হয়ে যাবে।

রক্তিমের মা অধরার দিকে তাকিয়ে বললো,

~আমরা গেলে তো সেই বাসার পরিবেশই হয়ে যাবে আমি চাই রক্তিম আর তুমি একা কিছুদিন একসাথে থাকো।

অধরা বললো,

~তাহলে রাত আর তন্নিকে সাথে করে নিয়ে যাই তারাও একটু ঘুরে আসলো।

রক্তিমের মা বললো,

~হ্যাঁ তাদের নিয়ে যেতে পারো আমি সব ব্যবস্থা করে দিবো।

ডিনারের সময় রক্তিমের মা সবাইকে তার কথা জানালো কেউই তার কথায় অমত করলো না রাত একটা রির্সোটে যাওয়ার প্ল্যান করলো।রক্তিম আর অধরাও তাতে সহমত পোষন করলো অধরা তন্নিকে ফোন করে বললো আগামীকাল সন্ধ্যায় তার রওনা দিবে।তন্নিও রাজি হয়ে গেলো রাত মনে মনে ঠিক করলো সে তার মনের কথা তন্নিকে জানিয়ে দিবে।ডিনারের পর রক্তিম আর অধরা গাড়ি নিয়ে বের হয়ে গেলো রক্তিম অধরার একহাত ধরে গাড়ি ড্রাইভ করছে। তারা এই নিরব শহরে ঘুরে বেরালো গভীর রাত পর্যন্ত সারাটাসময় রক্তিম অধরাকে নিজের কাছে রেখেছে।আইসক্রিমের আবদার করায় রক্তিম একটু রা/গ করলেও পরে অধরার কথায় মেনে নেয় তার আবদায়।রক্তিম আর অধরা অনেক রাত করে বাসায় ফিরে এসে সোজা ঘুমাতে চলে যায় কারণ তারা প্রচুর ক্লান্ত হয়ে গেছে তাই আর অন্যদিকে রাত বারান্দায় বসে তন্নির খেয়ালে ডু/বে আছে। রক্তিম আর অধরার মতো কী রাত আর তন্নিও এক হতে পারবে তাদের ও কী “ভালোবাসাময় প্রহর” আসবে তা সময় ধীরে ধীরে বলে দিবে।

সকালবেলা কলিংবেল বেজে উঠলো তন্নি প্রভাকে নাস্তা দিচ্ছিলো তাই অধরার মা গিয়ে দরজা খুলতেই এক ভদ্রমহিলা আর এক যুবক তাকে সালাম জানালো।অধরার মা সালামের জবাব দিয়ে বললো,

~আপনারা কে?

সেই যুবকটি বললো,

~আমার নাম রাজ উনি হলেন মা।মিস তন্নি আমাদের ভালো মতে চিনেন।

অধরার মা তাদের ভিতরে আসতে দিলেন তন্নি তাদের দেখেই হাসি মুখে সালাম দিয়ে তার মাকে সব বুঝিয়ে বললো।অধরার মা বললেন,

~আপনারা বসুন আমি নাস্তা নিয়ে আসি।

রাজের মা বললেন,

~নাহ আপা এগুলো কিছু করতে হবে না আপবি যদি একটু তন্নির বাবাকে ডেকে দিতেন তাহলে ভালো হতো।

অধরার মা বললেন,

~উনি রুমেই আছে তন্নি যাও ডেকে নিয়ে আসো।

তন্নির কাছে বিষয়টা ভালো ঠেকছেনা সে গিয়ে তার বাবাকে ডেকে নিয়ে আসলো।অধরার বাবা রাজের মায়ের সামনে গিয়ে বসে বললেন,

~জ্বী বলেন আপা।

রাজের মা রাজের দিকে তাকিয়ে বললেন,

~আমরা আপনার মেয়েকে বাড়ির বউ করে নিতে চাই।

কথাটা শুনে তন্নির মাথা ঘুরে উঠলো সে কিছু বলতে যাবে তার আগেই কেউ উচ্চস্বরে বলে উঠলো,

~তন্নি এখনো অনেক ছোট আমরা তার বিয়ে নিয়ে ভাবছিনা।

সবাই হতবাক হয়ে সামনে তাকিয়ে দেখলো রাত দাড়িয়ে আছে তন্নি রাতকে দেখে ঘা/ব/ড়ে গেলো কারণ রাতের চোখ গুলো লাল হয়ে আছে পুরো মুখ লাল হয়ে গেছে।রাত রুমে প্রবেশ করে ঠান্ডা গলায় বললো,

~শুনতে পাননি আমি কী বলেছি?বসে থেকে লাভ হবে না।

চলবে

(বিদ্র:কেমন হয়েছে জানাবেন।ভুলগুলো ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ রইলো🥰🥰।Happy Reading🤗🤗)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here