“ভালোবাসার_ভুল Part-19+20

0
275

#ভালোবাসার_ভুল
#Writter_Sp_sanjana_(সাগরিকা)
🍁🍁🍁🍁
Part-19+20
সেদিন বাসায় এসে নীলিমা অনেক ভেঙ্গে পড়ে সে চায় না তার জন্য নীল আর আবিরের বন্ধুত্ব নষ্ট হোক।কিন্তু সে নীলকে ছাড়া অন্য কাউকে নিয়ে জীবনের কথা ভাবতেই পাযরবে না।ভাবতেই পারবে না।তার কি করা উচিৎ সে ভেবে পায় না। সারা রাত ভেবে সিদ্ধান্ত নেয় সে নীলকে ই বিয়ে করবে আর আবিরকে সবটাই জানাবে এতে হয়তো আবির কষ্ট পাবে কিন্তু তিনজনের ই জীবন নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচবে।পরদিন যখন নীল,নীলিমা আর আবির দেখা করে কফি শপে।তখন,
নীলিমা:- দেখ আবির আমি নীলকে ভালোবাসি।আর তাকেই বিয়ে করতে চাই তুমি জানতে চেয়েছিলে আমি বলেছি।প্লীজ এখন কোনো সিন তৈরি করো না।
আবির:- তুমি এমন করতে পারো না আমার সাথে কাল ই সন্দেহ হয়েছিল যে নীল আমার সাথে গ্রেইম খেলছে।আমাকে বলেছে আমারা যখন ই দেখা করবো একসাথে দেখা করবো। কিন্তু ও তোমার সাথে একা দেখা করতো শর্ত দিয়ে শর্ত ভেঙ্গেছে সে।
নীল:- দেখ বন্ধু আমাকে বিশ্বাস কর প্লিজ আমি এরকম কিছু করিনি।তুই আমায় বিশ্বাস করতে পারছিস না তোর বন্ধুকে?
আবির:- হ্যা পারছি না আর বিশ্বাস করতে পারছিনা তুই আমার সাথে এমন করবি? তুই মা মারা যাবার পর তোর কোনো বন্ধু ছিল না তখন আমি ছিলাম তোর পাশে।তুই তার প্রতিদান এভাবে দিলি। ছি আর কোনদিন আমার সামনে আসবি না তুই আজ থেকে আমরা চরম শত্রু।
ঐদিনের পর নীল নীলিমা বিয়ে করে নেয়। নীলিমার তার ভালোবাসাকে নিজের করে পেলেও নীলের মনে রয়ে যায় বন্ধুত্ব হারানো তীব্র জ্বালা।অন্যদিকে আবির নামে এক তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নীলের রাইব্যাল কম্পানি গড়ে তুলে ধীরে ধীরে। তখনই থেকে এই প্রতিশোধের আগুন জ্বলছে তার মনে।তাই তো নিঝুমকে তুলে এনেছে।
এখন বর্তমানে ফেরা যাক,
একদিকে নিঝুম এতোদিনের পুরনো কথা জেনে কষ্ট পায় ভাবে তার বাবা নিজের প্রিয় বন্ধুকে হারিয়ে কতটা কষ্টে আছে তাও সে মার জন্য তার জন্য সবসময় খুশি থাকে।এতো বড় কষ্ট তার বাবা মনে জমিয়ে রেখেছিল সে জানতেও পারেনি।
আবির শাহ্:- সে ঐদিন নীলিমাকে নিয়ে যায়নি আমার ভালোবাসাকে নিয়ে গিয়েছিল।আমার বাবা আর নীলিমার বাবার বন্ধুত্ব নষ্ট করেছিল।আমার মার স্বপ্ন ভেঙ্গে ছিল।ওর জন্য আমার মা মারা যায় যেদিন নীল নীলিমা কে বিয়ে করে ঐদিন মার নীলিমাকে বউ করে আনতে না পারার ব্যাথা সইতে না পেরে হার্ট এ্যাটাক করে আর মারা য়ায়।
প্রহর:- বাবা আমি ঐ নীল চ্যাটার্জি কে শান্তিতে থাকতে দেবে না সেও তিলে তিলে মরবে।
আবির শাহ্:- তাতো হবে এখন বিয়ে ব্যবস্হা করতে বলে যা সবাইকে বাকিটা আমরা পরে দেখব।
অন্যদিকে নীল নিঝুমের আসতে দেরি হচ্ছে দেখে বার বার ফোন করে কিন্তু ফোন সাইলেন্ট হওয়ায় কেউ ধরে না আর ফোনের উওর না পেয়ে নীল ফোন করে তার বন্ধু প্রিয়াঙ্ক ব্যানার্জিকে(রাতের বাবা) আর সব খুলে বলে।
অন্যদিকে রাত তার দিল্লীর শো তে অনেক বিজি। মায়া তার ম্যানেজার তাকে প্রোগ্রামের সিডিউল বুঝিয়ে দেয়।সে তার ফোন সাইলেন্ট করে মায়াকে দিয়ে জরুরি ফোন এলে দিতে বলে পার্ফোমেন্স এর জন্য চলে য়ায়। এদিকে পিয়াঙ্ক ব্যানার্জি বার বার ফোন করে যাচ্ছে।কিন্তু মায়া রাতকে ফোন দেয় না এতো বার ফোন করার পর ও।তার ধারনা ফোন দিলে রাতের পার্ফোমেন্স নষ্ট হবে। আজ এখানে সবাই যেন এক নতুন রাতকে খুঁজে পেয়েছে লাখো অডিয়েন্স এর সামনে সে গেয়ে চলেছে-

Hansta rehta hoon
Tujhse mil kar kyu aajkal

Badle badle hain
Mere tevar kyun aajkal
Aankhein meri har jagah
Dhoondhe tujhe bewajah
Yeh main hoon ya
Koi aur hai meri tarah…

Kaise hua, kaise hua
Tu itna zaroori, kaise hua (x2)

Main baarish ki boli samajhta nahi tha
Hawaaon se main yun ulajhta nahi tha
Hai seene mein dil bhi
Kahan thi mujhe ye khabar

Kahin pe ho raatein
Kahin pe savere
Awargi hi rahi saath mere
Thehar ja, thehar ja
Ye kehti hai teri nazar

Kya haal ho gaya hai yeh mera
Aankhein meri har jagah
Dhoondhe tujhe bewajah
Ye main hoon ya
Koi aur hai meri tarah

Kaise hua, kaise hua
Tu itna zaroori, kaise hua (x3)

প্রোগাম শেষে সে নিজের ফোন হাতে নিতেই একটা ফোন আসে আর সে তাড়াহুড়ো করে বের হয়ে য়ায়।মায়া ভেবে পায় না রাত হঠাৎ এভাবে‌ কেন বের হয়ে গেল।
রাত প্রায় ভোর ৪ টা,
তখন প্রহরের বাড়িতে সিকিউরিটি ভেঙ্গে একদল লোক ঢুকে।
চলবে………

Part-20

রাত প্রায় ভোর ৪ টা,
তখন প্রহরের বাড়িতে সিকিউরিটি ভেঙ্গে একদল লোক ঢুকে।সবাই ভিতরে ঢুকে নিঝুমকে খুঁজতে থাকে।রাত একটা রুমে নিঝুমকে বাধা দেখে নিঝুমের কাছে যায় এবং তার বাঁধন খুলে দেয়।নিঝুমের জ্ঞান না থাকায় তাকে জলের ছিটা দেওয়া হয়।রাত চিৎকার করে নিঝুমকে ডাকতে থাকে তাকে ঝাকিয়ে তোলার চেষ্টা করে তারপর চোখে মুখে জল দিলে তার জ্ঞান ফিরে।নিঝুম রাতকে দেখেই জড়িয়ে ধরে আর বলতে থাকে তুমি আর কখনো আমায় ছেড়ে যাবে না তো তাই নাহলে আমি মরেই যাবো।রাত তাকে সান্তনা দেয়।বাকিরা গ্যাংকে ধরে আবির শাহ্ আর প্রহর কেও।
প্রহর:- তোর মা বাবা কে কাঁদতে ই হবে বিয়ে হয়নি তো কি হয়েছে তুই মরবি এখন আমার হাতে বলেই কেউ কিছু করার আগেই নিঝুমকে গুলি করে।আর নিঝুম মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।প্রহর আবির সহ বাকিদের কিডন্যাপিং আর মারার চেষ্টা করার জন্য জেলে ঢুকানো হয়।নিঝুমকে নিয়ে রাত হসপিটালে যাত্রা করে।
রাত:- বৃষ্টিবিলাসী তোমাকে আমি কিছু হতে দেব না।বিশ্বাস করো তো আমায়?
নিঝুম:- আমি নিজের থেকেও বেশি তোমায় বিশ্বাস করতে শুরু করেছি।
রাত:- প্লিজ নিঝুম চোখ খুলে রাখার চেষ্টা করো তুমি হার মানতে পারো না।তোমাকে বলার অনেক কথা বাকি আছে শুনতে হবে সব।
লাল রক্তে রাতের শার্ট ভিজে যাচ্ছিলো আর রাত তাকে বুকে জড়িয়ে রেখেছে আর ড্রাইভার কে তাড়াতাড়ি যাওয়ার জন্য বলছে।রাতের চোখ থেকেও পানি পড়ছে।
হসপিটালে পৌঁছাতেই নিঝুমকে অপারেশন থিয়েটারে তে নেওয়া হয়।বাইরে রাত চিন্তায় পায়চারি করছে।খবর পেয়ে সবাই হসপিটালে চলে এসেছে নীল,নীলিমা,প্রীতি, প্রিয়াঙ্ক।রাতকে বিধস্ত দেখে সবাই অবাক হয় কি হয়েছে নিঝুমের জানতে চায় তাদের শুধু হসপিটালে আস্তে বলা হয়েছিল কেন সেটা বলা হয়নি।প্রীতিকে( রাতের মা) কাছে পেয়ে রাত জড়িয়ে কাঁদতে থাকে আর বলে মা বৃষ্টিবিলাসীর কিছু হবে না তো মা? এমন সময় ডাক্তার বেরিয়ে এসে বলে অপারেশান সাকসেশফুল মিস্টার রাত।ভাগ্য ভালো আপনারা ঠিক সময় পেসন্টকে নিয়ে এসেছেন দেরি হলে তাকে বাচানো যেতো না।
ডাক্তার:- কিছুক্ষনের মধ্যেই তাকে কেবিনে দেওয়া হবে আপনারা দেখা করতে পারবেন।
নীল:- ওকে ডাক্তার আপনাকে ধন্যবাদ।
কিছু সময় পর নিঝুমকে বেডে দিলে সবাই একসাথে দেখা করতে য়ায়।নিঝুমের জ্ঞান এখনও ফেরেনি।তাই সবাই দেখেই চলে আসে শুধু রাত থেকে যায়।রাত নিঝুমের হাতধরে সেখানেই বসে থাকে।নিঝুমের জ্ঞান ফিরলে সে অনুভব করে তার হাতে তরল জাতীয় কিছু পড়ছে তাই চোখ খুলে আর সামনে দেখে রাত তার হাত ধরে বসে আছে আর নীরবে চোখের জল ফেলছে।
রাত:- আমি সামনে থাকতে তোমাকে গুলি খেতে হলো তোমার ২ দিন আটকে রাখা হল ।আমি কখনো নিজেকে মাফ করব না এই বোকামির জন্য।
নিঝুম সবটা শুনতে পাচ্ছিলো আর বুঝতে পারছিলো রাত তাকে কতোটা ভালোবাসে। হঠাৎ নিঝুমকে চোখ খুলতে দেখেই রাত,নীল নীলিমা প্রীতি প্রিয়াঙ্ক সবাইকে ভেতরে ডেকে আনে।
নীল:- মামনী তুমি ঠিক আছোতো কে তোমার নিয়ে গিয়েছিল।
নিঝুম:- তোমার বন্ধু আবির শাহ্ আর তার ছেলে প্রহর।তারা এখনও তোমায় দোষী ভাবে আমি সব জানি বাবা।
নীলিমা:- তুই তোর বাবাকে ভুল বোঝিস না সবটাই আমার দোষ।আমি ওকে জোর না করলে ও কখনোই আমাকে বিয়ে করতো না ওর জন্য ওর বন্ধুই সব ছিল।
নিঝুম:- মা তুমি যা করেছো ঠিক করেছো।তোমাদের কোনো দোষ নেই।আচ্ছা রাত কিভাবে পৌঁছালো সেখানে আর ঐ লোকগুলো ওকে স্যার বলছিল কেন?
প্রিয়াঙ্ক:- আমি বলছি তোমায় মা আসলে রাত শুধু রকস্টার ই নয় সে সি.আই.ডি অফিসার। যখন নীল আমায় ফোন করে তখন আমি রাতকে তোমার ট্রিপে নজর রাখার কথা বলি আর কাল ও আমি ই ফোন করে কিডন্যাপিং এর ব্যাপারে বলি।
রাত:- হম নিঝুম, বাবা বলার সাথে সাথে আমি তোমার ফোনের লাস্ট লোকেশান বের করতে বলি এবং সেখানে যাই এরপর যা হয় তুমি তো জানোই।এসবের মধ্যে নার্স চলে আসে। সবাইকে কেবিনের বাইরে পাঠিয়ে দেয় দুদিন পর নিঝুমকে বাড়ি নিয়ে যেতে পারবে এটাও বলে দেয়।এই দুদিন সারাক্ষন রাত ঐ খানেই ছিলো মাঝে কিছু সময় এর জন্য বাসায় যেত খেয়ে ফ্রেশ হয়ে চলে আসত।বাকি সময় নিঝুমের দেখাশোনা করত আর তার সাথে কথা বলত।পরদিন মৌ,নিকি, আকাশ ,মেঘ, বিথী,অর্নব সবাই আসে নিঝুমের সাথে দেখা করতে । আর কেবিনে ঢুকতেই সবার চোখে যায় নিঝুমের হাত ধরে থাকা ছেলেটির দিকে।মৌ নিঝুম বলে ডাক দিতেই রাত সামনে ফিরলে সবাই তাকে দেখে অবাক হয়ে যায়।সবাই একসাথে বলে উঠে বাহ্ রকস্টার রাত এখানে আমাদের বান্ধবীর হাত ধরে বসে আছে।😳
নিকি:- আমাদের রাতের কথা কিছুই বললি না তুই।
মৌ:- তাহলে রোজ তোকে ফুল রাত ই পাঠাতো?
রাত:- তোমারা থামো ও এখন অসুস্থ।ডাক্তার কথা কম বলতে বলেছে নিঝুম বাড়িতে গেলেই তোমরা জানতে পারবে। কিছুক্ষন বসতে পারো তোমারা এখন ওর সাথে।
শেষের দিন হসপিটালে আসতে রাত এক গুচ্ছ লাল গোলাপ নিয়ে আসে।
চলবে…..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here