মনের গহীনে পর্ব ৮+৯

#মনের_গহীনে
৮ম পর্ব
লেখনীতে:নাদিয়া হোসাইন

সামায়া নিজেকে কিছুটা ঠিক করে নিলো। সে জানে না প্রিয় তার কথায় কেমন রিয়েক্ট করবে, কিন্তু তাকে তাকে সবার ভালোর জন্য হলেও বলতেই হবে৷
প্রিয় ভাইয়া, তোমাকে আজ যা বলবো ভেবো না তোমাকে ছোট করছি!
নাহ ইট’স ওকে। তোমার যা ইচ্ছা বলতে পারো। আই ডোন্ট মাইন্ড।
তুমি আমায় অনেক ভালোবাসো তাই না?
প্রিয় কোন জবাব দিলো না। মাথা নুইয়ে রাখলো।
দেখো, ভালোবাসা অন্যায় কিছু না। আমি তোমাকে জিজ্ঞেস করবো না, কীকরে আমায় ভালোবেসেছো৷ ভালোবাসা এমন এক জিনিস যা বলে কয়ে আসে না। আসল কথায় আসি৷
সামায়া কিছুটা থেমে আবার বললো, __সব সময় নিজের ভালোবাসা, ভালোলাগাকে মূল্য না দিয়ে অন্যের ভালোবাসাকেও একটু চান্স দিতে হয়। তুমি কি জানো কেউ একজন তোমাকে পাগলের মতো নিজের সবটুকু দিয়ে ভালোবাসে?
প্রিয় সামায়ার দিকে বিষ্ময় নিয়ে তাকালো৷ সে বুঝতে পারছে না, সামায়ার এসব বলার কারণ-ই বা কি। কিন্তু বুকের মধ্যে প্রচুর ভয় কাজ করছে।
আমি কিন্তু তোমায় একটুও ভালোবাসি না।তোমার ফিলিংসটা কে অবঙ্গাও করছি না।জানো, কিছু সময় আমাদের না চাওয়া জিনিসেও আমাদের ভালো নিহিত থাকে। আমি চাইলেই তোমার প্রতি নিজের ফিলিংস আনতে পারবো না।ইহানের নামে নিজের সব ভালোবাসা দিয়ে দিয়েছি। আর আমার কাছে সব চেয়ে ইম্পর্টেন্ট আমার ফ্যামিলির খুশি। আমার বাবা হয়তো ভেবেই তোমার সাথে আমার বিয়ের কথাটা আগাতে দেয় নি।
প্রিয় বুঝতে পারলো, সামায়ার এসব কথার কারন। ভিতরটা তার ছন্দ ছাড়া হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু নিজেকে শান্ত রেখে সামায়াকে উদ্যেশ্য করে বললো, __থাক সামায়া, আর বলতে হবে না!কি বলতে চাইছো বুঝেছি। তুমি যদি এই কথা গুলো কাল ফোনেই বলে দিতা, বিশ্বাস করো আমি একটুও মাইন্ড করতাম না।তোমার অযথা কষ্ট করে এখানে আসার দরকার-ই ছিলো না।উঠছি আমি। ভালো থেকো!
দাড়াও কথা শেষ হয়নি আমার। আর আমি আজ যা বলবো, তোমার ভালোর জন্যই বলবো। নায়লে একজন হয়তো আর অব্যক্ত ভালোবাসার কথা কখনো বলতেই পারবে না।
প্রিয় খুব অধৈর্য হয়ে উঠে পরছিলো। কিন্তু সামায়া কি বলতে চায়, তা শুনার জন্য শান্য ভঙ্গিমায় বসে রইলো।
জানো প্রিয় ভাইয়া, আমাদের চারপাশে এমন অনেক মানুষ থাকে। যারা নিজেদের ভালোবাসার কথাটা তার সেই মানুষটাকে বলতে পারে না। যেমন দেখোই না আমি!তোমার এতো বছরের ভালোবাসা বুঝলামই না। তুমি অবাক হবে কি না জানি না, প্রাচুর্য তোমাকে তিন বছর আগ থেকে ভালোবাসে।ও আমায় বলেনি আগে, কিন্তু বুঝে গিয়েছিলাম। আর তুমি এখনো বুঝলে না। তোমাদের বাসা থেকে আসার পর কেমন জানো হয়ে গিয়েছে ও। দেখে হয়তো খেয়াল করেছ। কারন তুমি তাকে বলেছিলে, আমাকে কতোটা ভালোবাসো। আর মেয়েটা আমার কথা ভেবে তোমায় আর কিছুই বলে নি। নিজের অনুভূতিগুলো নিজের মধ্যে লুকিয়ে এসেছিলো। তোমার একটুখানে সান্নিধ্য পেলেই মেয়েটার আর কিছুই লাগতো না।তিনটি বছরেও তোমাকে ভুলতে পারে নি। তোমার ভালোলাগা খারাপ লাগার কথা ভেবে তোমার কাছে যায়ও নি।তুমি দিনের পর দিন একটুও বুঝতে চেষ্টা করোনি। উলটো মরিচিকার পিছু ছুটে গেছো।
প্রিয় এই কথাগুলো কখনোই আশা করে নি।প্রাচুর্যকে নিয়ে কখনো এসব মাথায়ও আসে নি।কিন্তু মেনেও নিতে পারছে না কিছু। তাই সামায়াকে বললো, __বেশ করেছো বলে। কিন্তু আমার ভালোবাসা এতোটাও সস্তা নয়, একজন থেকে আরেকজনের মধ্যে মিনিটেই ট্রান্সফার হয়ে যাবে। বাকিটা আমি বুঝে নিবো।
সামায়া বুঝতে পারলো প্রিয় রেগে গেছে। কিন্তু তাও না থেমে বললো,__সেটা হয়তো তোমার ইচ্ছা হতেই পারে। কিন্তু তুমি যদি তাকে একটাবার চান্স দাও, তাহলে তো ক্ষতি নেই।কিছু সময় আমাদের না চাওয়া জিনিসের খুশি লুকিয়ে থাকে। প্রাচুর্যের মতো ভালো তোমাকে কেউ বাসতে পারবে কি না, আমার জানা নেই।তুমি যে সারা জীবন আমার বিরহে কাটাবে না তা জানি। কারন এটা সম্ভব না। তোমার পরিবার এটা মেনেও নিবে না।তাই কাউকে না কাউকে তো মনে যায়গা দিবেই। সেই মানুষটা প্রাচুর্য হলে তো ক্ষতি নেই। মেয়েটাকে একটু যায়গা দেও মনে, দেখবে সবটা উজাড় করে হলেও তোমায় ভালোবাসবে।
প্রিয় সামায়ার কথা আর শুনার চেষ্টা করলো না। হুট করে উঠে লম্বা লম্বা পা ফেলে চলে গেলো। সামায়া হতভম্ভ হয়ে প্রিয়র যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো। সামায়া বুঝতে পারলো, ব্যাপারটা এতো সহজ নয়। প্রাচুর্যর প্রিয়কে পেতে হলে অনেক ভোগান্তিতে পরতে হবে। সে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস নিয়ে বেড় হয়ে এলো।

দুদিন ধরে প্রিয় বাসার বাইরে বেড় হয়নি। সব কিছুই ছন্নছাড়া লাগছে। সেই সাথে নিজের কাছে কিছুটা অপরাধবোধ হচ্ছে প্রাচুর্যের জন্য। নিজের অজান্তে হলেও প্রিয় প্রাচুর্যকে অনেক কষ্ট দিয়েছে। নিজের ভালোবাসার মানুষটা যখন অন্য কাউকে ভালোবাসে, সেই কষ্টটা সহ্য করা অনেক করুন। তেমনি প্রিয়ও নিজ অজান্তে প্রাচুর্যকে সামায়ার প্রতি তার সকল অনুভূতি বলেছে। তখন প্রাচুর্যরও হয়তো কষ্টের পরিমাণটা প্রিয়র মতোই ছিলো । তাই প্রিয় এক কঠোর সিদ্ধান্ত নিলো। কিছু সময় নিজের মনের বিরুদ্ধে গিয়ে অন্যের জন্য কিছু করাও মঙ্গলের। প্রিয়ও এখন সেই মঙ্গলময় কাজটাই করবে৷

কাল সামায়ার এনগেজমেন্ট শেষ হয়েছে।দু’দিন অনেকটা বিজি ছিলো প্রাচুর্য। সেই সাথে প্রিয়র জন্য খুব টেনশনে আছে প্রাচুর্য। ছেলেটা নিশ্চয়ই খুব কষ্টে আছে। প্রাচুর্য প্রিয়কে ফোনও দিতে পারছে। কারণ প্রাচুর্যর ফোন কি হিসেবে নিবে প্রিয়, তা তার জানা নেই। আগে প্রিয়কে হাড়ানোর যন্ত্রনা হতো, কিন্তু এখন প্রিয়র যন্ত্রনাও প্রাচুর্যকে আঘাত দিচ্ছে। ভালোবাসাকে না পেলে যে মানুষিক যন্ত্রনাটা হয় সেই যন্ত্রনা সহ্য করার ক্ষমতা সবার থাকে না, তাই তো অনেকে মিত্যুটাকেই নিয়তি হিসেবে মেনে নেয়। প্রাচুর্যরও মাঝে মাঝে এই ইচ্ছেটা অদম্যভাবে যেগে উঠে৷

পরদিন সকাল সাতটায় প্রাচুর্যর ফোনটা বেজে উঠলো। প্রাচুর্য রাত জাগলেও ভোরের দিকে কোন ভাবেই জেগে থাকতে পারে না।দু’ঘন্টা আগেই ঘুমিয়েছিলো। ফোন ধরতেই ইচ্ছে করছে না প্রাচুর্যের। কিন্তু বার বার ফোনে বিরক্ত হয়ে আর না ধরে পারলো না।
হ্যালো! কে বলছেন?
প্রাচুর্য, আমি প্রিয় বলছি।
হঠাৎ প্রিয়র কন্ঠস্বর শুনে ঘুম যেনো নিমিষেই হাড়িয়ে গেলো প্রাচুর্যের। এক্সাইটমেন্টে কি বলবে বুঝতেই পারছে না। কোন রকম নিজের অবস্থান ঠিক করে বললো, __জ্বী ভাইয়া কোন সমস্যা।
প্রিয় কিছুটা হাসলো আর মনে মনে বললো, বাহ কি সুন্দর লুকানোর চেষ্টা। ছেলেদের কেউ নিঃস্বার্থ
ভাবে ভালোবাসলে, তাদের মনে এক ধরনের ভালো লাগার সৃষ্টি হয়। প্রিয়রও তার ব্যাতিক্রম কিছু হচ্ছে না।
#মনের_গহীনে
৯ম পর্ব
লেখনীতে :নাদিয়া হোসাইন

প্রিয় অনেকক্ষণ চুপ করে রইলো, যা প্রাচুর্যের টেনশন আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। তার অনেক জানতে ইচ্ছে করছে প্রিয়র মনে কি চলছে। প্রাচুর্য নিজের নখ গুলো দাঁত দিয়ে কামরাচ্ছে। প্রিয় আচমকা বলে উঠলো, __ এখন বাসা থেকে বেড় হতে পারবে, প্রাচুর্য? আবেগে উত্তর না দিয়ে ভেবে চিন্তা করে দিও। কারন এখন বেড় হলে বাসায় আসতে অনেক দেরি হবে।
প্রাচুর্য কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না। প্রিয় বললে ও সারাদিন থাকতে রাজি। প্রিয়কে একটুখানি দেখতে পাওয়াও তার জন্য অনেক। তাই কোন রকম না ভেবেই প্রাচুর্য প্রিয়কে হ্যাঁ বলে দিলো। মনে আর কোন প্রশ্ন আসলো না,কেনো প্রিয় তাকে এতো সকালে আসতে বলেছে। প্রাচুর্য প্রিয়র থেকে আধা ঘণ্টা সময় চেয়ে নিলো। আধ ঘন্টার মাঝে প্রাচুর্য ফ্রেশ হয়ে একটা বেবি পিংক লং ফ্রগ, ঠোঁটে কমলা কালার লিপস্টিক আর চুলে খোপা করে বেড় হয়ে এলো। বাসার সবাই ঘুমিয়েছিলো, তাই কাওকে কিছু বলে আসতে হয়নি৷ প্রিয় প্রাচুর্যের বাসার নিচেই গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো। আঁড় চোখে প্রিয়কে পর্যবেক্ষণ করে নিলো প্রাচুর্য । নেভি ব্লু কালারের শার্ট, ছাই রঙের জিন্সের প্যান্ট, হাতে ব্রান্ডের ঘড়ি পরা। প্রিয়কে দেখে বরাবরের মতো মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে প্রিয়র দিকে এগিয়ে গেলো । প্রাচুর্য ভেবেই নিয়েছিলো, প্রিয় সামায়ার ব্যাপারে কোন কথা বলতেই প্রাচুর্যকে ডেকেছে। প্রিয়র চুল গুলো অগোছালো , আর চোখটা ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে। গাড়িতে উঠে প্রিয়র পাশে বসে পরলো। প্রিয়কে কোন কিছু জিজ্ঞেস করলো না। প্রিয় খুব বেশি কথা বলা পছন্দ করে না। তাই প্রাচুর্যও প্রিয়র সামনে বেশি কথা বলে না৷ প্রিয়রা দুই ভাই-ই এমন শান্তশিষ্ট। তার মধ্যে প্রিয়র মধ্যে গম্ভীরর্যতা কিছুটা কম।

প্রিয়র মনে এক ধরনের অস্থিরতা ব্যাপকভাবে নাড়া দিচ্ছে। সব থেকে বড় ডিসিশনটা সে নিয়ে নিলো। কিন্তু জানে না তার এই সিদ্ধান্ত কতোটা ভুল বা ঠিক। কিন্তু এখন এছাড়া সে আর কোন পথ দেখতে পাচ্ছে না। নিজে খুশি না হোক, সে এখন অন্যকে খুশি করার প্রতিঙ্গায় আবদ্ধ হয়েছে।

আধ ঘন্টা হয়ে যাচ্ছে তারা দু’জন নীরবে বসে আছে।প্রাচুর্য প্রিয়কে লুকিং গ্লাসে দেখে যাচ্ছে, আর কিচ্ছুক্ষণ পর পর রাস্তা দেখে যাচ্ছে। ঢাকা শহরে সকাল হোক আর রাত হোক রাস্তা কখনো নির্জন থাকে না। একটু পর রস্তায় ট্রাফিক সিগনাল দিলো। প্রাচুর্যের গাড়িতে বসলে এসি সব সময় সহ্য হয় তা। তাই গ্লাস খুলে দিলো। প্রিয় এবার প্রাচুর্যের দিকে তাকালো। প্রাচুর্যকে সে কখনো ভালোবাসে দেখে নি৷ কখনো ওকে নিয়ে মাথায়ও কিছু আসে নি। মেয়েটার মনে কোন প্যাচ নেই। সেই জন্যিই সামায়াকে ভালোবাসার কথাটা ওকে জানায়। প্রিয়র হঠাৎ-ই আফসোস হতে লাগলো৷ আজ যদি প্রাচুর্যকে এসব না বলে সামায়াকে সাহস করে কথাগুলো বলে দিতো,তাহলে সামায়াকে পাওয়ার একটা চান্স অন্তত থাকতো৷ কিন্তু সেসব এখন কোন দূর দেশের স্বপ্ন ছাড়া কিছুই নয়। কিছুক্ষন পরই সিগনাল অপর পাশের রাস্তায় দিলো। প্রিয় প্রাচুর্যের দিক থেকে দৃষ্টি সরিয়ে ড্রাইভিংয়ে মনোযোগ দিলো। প্রাচুর্যকে নিয়ে রমনা পার্কে চলে এলো। গাড়ি পার্কিং সাইডে নিয়ে এসে দুজনে নেমে গেলো। প্রাচুর্য বুঝতে পারছে না এখানে আসার কারন। কিন্তু প্রিয়কে কিছুই জিজ্ঞেস করলো না। এতো সকালে রমনায় বেশিরভাগ মানুষই হাঁটতে আসে। প্রিয় সামনের দিকে হাটছে আর প্রাচুর্য তার পথ অনুসরণ করে এগিয়ে যাচ্ছে৷ কিছুক্ষণ পরই প্রিয় একটা বড় গাছের নিচে দাঁড়ালো। গাছটা অনেক সুন্দর, কিন্তু গাছের নামটা কি সেটা সে জানে না। প্রিয় হঠাৎ প্রাচুর্যকে বলে উঠলো, __ প্রাচুর্য, আমি জানি না এখন যা করছি তা ঠিক কি-না। তুমি কি রিয়েক্ট করবে। তুমি আমার সম্পর্কে সবই জানো। সামায়াকে আমি কতোটা চাইতাম, তাও তুমি জানো আর দেখে এসেছো। ওকে পাওয়া আমার ভাগ্যে নেই। জীবনে আমি চাইলেই সন্যাসী হয়ে ওর বিরহে থাকতে পারবো না। ইনফ্যান্ট আমার ফ্যামেলিরও আমাকে নিয়ে অনেক আশা আছে। জীবনে চলার পথে এখন আমার বেস্ট চয়েজ তোমাকেই মনে হলো। প্রিয় প্রাচুর্যকে আর সামায়ার সাথে তার কথা গুলো জানালো না। এতে প্রাচুর্যের মনে হতে পারে, তাকে প্রিয় করুনা করছে। প্রিয় কিছুক্ষণ থেমে আবার বললো,__ আমি জানি, হুট করেই তোমাকে ভালোবাসতে পারবো না। কোন মানুষই পারে না হুট করে একজনকে ভুলে অন্য জনের উপর ভালোবাসাটা প্রয়োগ করতে। আমি চাই তোমার মায়ায় দ্বিতীয়বার ভুলতে। জানি না তোমায় কতোটা ভালোবাসতে পারবো। হয়তো কোন এক সময় নিজের থেকেও বেশি ভালো তোমাকেই বাসবো৷ দ্য মোস্ট ইম্পর্টেন্ট, আমি তোমার সাথে মুভ অন করতে চাই। আরো একটা জীবন চাই, যে জীবনে আমার সকল অগোছালো সমস্যাকে তুমি গুছিয়ে নিজের করে নিবে। পারবে কি, আমাকে নিজের মতো করে মানিয়ে নিতে? তুমি চাইলে সময়ও নিতে পারো।
প্রাচুর্য প্রিয়র দিকে ঘোর লাগানো দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে। সব কিছুই তার স্বপ্ন মনে হচ্ছে। এতো ছোট জীবনটাকে হঠাৎ করেই খুব বড় মনে হচ্ছে। এই প্রাপ্তিটা যে ওর ভাগ্যে লিখা ছিলো, তা ভাবতেও পারে নি। আচমকাই প্রাচুর্যের চোখে জল এসে পরলো। প্রাচুর্যের কি হয়েছে ও নিজেও জানে না। ছোট বেলা একবার ইমোশনাল হয়ে প্রাচুর্য তার মা কে জরিয়ে ধরে এভাবে কেদেছিলো। আজ প্রিয়র বলা কথা গুলোয় আজ অত্যন্ত খুশিতে ফুপিয়ে কেঁদে উঠলো।
আকষ্মিক প্রাচুর্যের এহেন কান্ডের অর্থ প্রিয় বুঝতে পারছে না। সে কি কোন ভাবে প্রাচুর্যকে কষ্ট দিয়ে ফেলেছে। সে শান্ত কন্ঠে প্রাচুর্যকে জিজ্ঞেস করলো, __ এনিথিং রঙ প্রাচুর্য! আমি কি খুব বাজে কথা বলে ফেলেছি, যা তুমি মানতে পারছো না?
প্রাচুর্য কাঁন্নার মাঝ খানেই মাথা নাড়িয়ে না বুঝালো।আর আচমকাই প্রিয়কে জড়িয়ে ধরলো। প্রিয় বুঝতে পারলো না, এমন করার কারণ। পরক্ষনেই মাথায় এলো, প্রাচুর্য হয়তো বেশি-ই এক্সাইটেড হয়ে গেছে। এমন অনেকেই আছে, যারা অধিক খুশিতে কেঁদে ফেলে। পরক্ষনেই প্রিয়র মুখে মুচকি হাসি ফুটে উঠলো। আজ নিজেকে খুব সার্থক মনে হচ্ছে প্রিয়র। নিজে হয়তো খুশি হতে পারলো না, কিন্তু আজ প্রাচুর্যের খুশিতে নিজেকেও খুশি মনে হচ্ছে। থাকুক না নিজের কষ্টটা নিজের মনের গহীনে। বাইরের মানুষটা নাহয় অন্য জনকে খুশি করুক৷ হতেও তো পারে একদিন শ্রেষ্ঠ জিনিসটা সে-ই পাবে, কিছু না পাওয়ার মাঝে।

চলবে,
চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here