#মন_যাকে_চায়
#পর্ব_৫
#সুবর্ণা_আক্তার_জুথি ✍️✍️
তুমি আমার কল কেন রিসিভ করোনা আবার নিজে থেকেও কল ব্যাক করছো না।
“কেন আমাকে ইগনোর করছো?”
“হোয়াট হ্যাপেন্ড অনুরাগ?”
“প্লিজ আনসার মি!!”
“হ্যালো, হ্যালো”…..
“ডিড ইউ হেয়ার মি?”
“হ্যালো”…
ইশিতার হাত থেকে ছো মেরে ফোনটা কেড়ে নিয়ে কল কেটে দিলো অনুভব।
আরে এভাবে নিয়ে নিলে কেন ঠিক করে কিছুই তো শুনতে পেলাম না। তবে এটুকু বুঝতে পেরেছি এই মেয়েটি তোমার খোঁজ করছিল।
“হাউ ডেয়ার ইউ ইশিতা কার পারমিশন নিয়ে তুমি আমার ফোন টাচ করেছো?” ইশিতার হাত ধরে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে রেখেছে অনুভব।
অনুভবের চোখের দিকে তাকিয়ে ইশিতা ভয় পেয়ে গেল।এই প্রথম অনুভবকে এতোটা রাগতে দেখছে।
ছাড়ো অনুভব আমার কষ্ট হচ্ছে। কাঁদতে কাঁদতে বলল ইশিতা।
ইশিতার করুন সুর শুনে অনুভব ইশিতার হাত ছেড়ে দিয়ে সরে আসলো।
“আই এম সরি।” আমার এতোটা রিয়্যাক্ট করা ঠিক হয়নি।
ইশিতা হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলো লাল হয়ে গেছে।
সামান্য একটা বিষয় নিয়ে তুমি আমার সাথে এমন করতে পারলে?
” বললাম তো সরি।”
আরে রাখো তোমার সরি কি করেছি আমি? নিজের বরের ফোন টাচ করেছি। তাই বলে তুমি এমন আচরণে করবে?
“অনুভব ইশিতার হাতের দিকে তাকিয়ে দেখলো, আসলেই ঐভাবে হাত ধরাটা উচিত হয়নি।”
আপু বাবা এসেছে তোমাদের ডাকতেছে।
ইশিতা ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে আসলো আর আসার সময় অনুভব কে আসতে বললো।
_____________
ইশিতা এসে বাবার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লো। বাবার বুকে মুখ লুকিয়ে কাঁদতে লাগলো।” কি হলো আমার ইশিতা মা কাঁদছে কেন?”
“ইশিতা মনে মনে বলল তোমার মেয়ে ভালো নেই বাবা।”
আনোয়ারা বেগম এসে বললো দুটো দিন বাবাকে না দেখেই এই অবস্থা সারাজীবন তো এখনো বাকি আছে।
একে একে সবাই এসে উপস্থিত হলো।
অনুভব এসে আজিজুল হক কে সালাম জানালো। ইশিতা তার মাকে রান্না ঘরে সাহায্য করছে।
আজিজুল হক আর আনোয়ারা বেগম অনুভবের সাথে বসে অনেক গল্প করছেন।এতে অনুভব খুব বিরক্ত হচ্ছিল। এতো অল্প সময়ের মধ্যে সবার বিষয়ে জানা হয়নি কি বলতে কি বলে ফেলবে।
অবশেষে ঈশান এসে বাঁচিয়ে নিলো বাবা… মা তোমাদের খেতে ডাকছে।ঈশানের মুখ থেকে বাবা ডাক আজিজুল হকের পছন্দ নয় তবুও অনুভবের সামনে চুপ করে গেলেন অন্য সময় হলে ঈশানের খবর করে ছাড়তেন।
আচ্ছা দাদুভাই তুমি যাও অনুভব কে সাথে নিয়ে তোমার বাবা খেতে যাচ্ছে।
সবাই মিলে একসাথে খেতে বসেছে। শায়লা হক খাবার পরিবেশন করছেন। অনুভবের পছন্দের সব খাবার রান্না করা হয়েছে।
আজিজুল হক লক্ষ্য করেছেন অনুভব ঠিক করে কিছুই খাচ্ছে না। শায়লা হকের দিকে তাকাতেই তিনি খুব ভয় পেয়ে গেলেন। “অনুভব তুমি তো কিছুই খাচ্ছো না রান্না ভালো হয়নি?”
না না আন্টি রান্না ভালো হয়েছে কিন্তু আমি এতো ওয়েলি ফুড খায়না। ((এসব অনুভবের পছন্দের খাবার আমার নয়))
ইশিতা সহ সবাই অবাক হয়ে গেল। কারণ অনুভব এর আগে অনেকবার এ বাড়িতে এসেছে আর ইশিতার মায়ের হাতের রান্না করা খাবার খেয়েছে।
কি ব্যাপার সবাই এইভাবে তাকিয়ে আছো কেন আমি ডায়েট করছি।
আচ্ছা তাই বলো আমি আবার ভাবলাম রান্না ভাল হয়নি বোধহয় তা তুমি কি খাবে বলে দিও আমি এরপর থেকে সেরকম করে ব্যবস্থা করব।ইশিতার মা হাসিমুখে বললো।
____________
ছাদে বসে আড্ডা দিচ্ছে ঈশান,অনুভব আর ঈশিতার কয়েকজন কাজিন। অনুভব প্রথমে আসতে চাইনি সবার জোরাজুরিতে আসতে বাধ্য হয়েছে।
তানিয়া ইশিতার বেস্ট ফ্রেন্ড আবার ইশিতার বাবার বন্ধুর মেয়ে সেই সুবাদে তার এ বাড়িতে আসা যাওয়া লেগেই থাকে। তাই আজকেও এসেছে।
এসেই ইশিতা কে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরল।
আন্টি তো বলল সবাই নাকি ছাদে আড্ডা দিচ্ছে আমিও সেখানে যাচ্ছিলাম। রুমের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় দেখি তুই এখানে। সবাই ছাদে তো তুই এখানে।
“তা একা একা কি করছিস?”
সবাই যখন ছাদে গেছে ঈশিতা তখন দাদীর ঘরে ছিল।এসে দেখে ওরা চলে গেছে ইশিতা ভেবেছিল অনুভব হয়তো ওর জন্য ঘরে অপেক্ষা করছে। কিন্তু ঘরে এসে ইশিতার মুখের হাসি মিলিয়ে গেল। অনুভব যেহেতু তাকে না নিয়ে চলে গেছে তাই ঈশিতা ও অভিমান করে আর যায়নি।
কি রে কথা বলছিস না কেন? আমার শরীর ভালো লাগছে না তাই যায়নি। তুই যা।
একদম মিথ্যে কথা বলবি না।” সত্যি করে বল অনুভবের সাথে কোন ঝামেলা হয়েছে?”
ইশিতা তানিয়া কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো আর এই দুই দিনে কি কি হয়েছে সব বললো।
এই বিষয় এতে এতো আপসেট হওয়ার কি আছে? অনুভব হয়তো তোকে সময় দিতে চাইছে।যতই তোরা আগে থেকে পরিচিত হসনা কেন? “বিয়ের পর নতুন পরিবেশ, নতুন মুখ নতুন সম্পর্ক এসবকিছুর সাথে মানিয়ে নিতে সময় দিচ্ছে অনুভব।”
তানিয়া ইশিতার মুখে সব শুনে নিজেও বেশ চিন্তিত তবুও ইশিতার মন ভালো করার জন্য এসব বললো।
যদি তোর কথা ঠিক হয় তাহলে আমি আর অনুভবের সাথে রাগারাগী করবো না।
আচ্ছা ইশিতা তুই এখানে থাক আমি কৌশলে অনুভবকে এখানে পাঠিয়ে দেবো।
“তারপর দুজনের সমস্ত ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে নিস।”
তানিয়া ছাদে গেল সাথে নিলো কিছু নাস্তা।
গিয়ে দেখলো সবাই সবার মতো গল্প করছে শুধুমাত্র অনুভব চুপ করে বসে আছে।
ঠিক হয়েছে বৌকে রেখে আসার শাস্তি। বসে থাক একা একা।
বাকিদের সামনে নাস্তা রেখে অনুভবের পাশে গিয়ে বসলো তানিয়া। “অনুভব একটু সরে বসতেই,” তানিয়া হেঁসে বলল আমার বান্ধবী কে একা রেখে এসে এখানে কি করছেন আপনি?”
আপনার বান্ধবী কি একা হেঁটে আসতে পারে না। না তার তো পায়ে ব্যথা তাই আপনি গিয়ে কোলে করে নিয়ে আসুন।
“হোয়াট…..?”
“তানিয়া এবার উঠে দাঁড়িয়ে সবার উদ্দেশ্যে বলল, অনুভব ভাইয়া আমার সাথে বাজী ধরেছে সে সিঁড়ি বেয়ে ইশিতা কে ছাদে নিয়ে আসতে পারবে।”
“আর যদি না পারে তাহলে আমরা যা বলবো তাই করবে।”
বলে অনুভবের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে।
তানিয়া যে এমন কিছু বলবে অনুভব ভাবতে পারেনি।
তার এখন, “ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি অবস্থা ”
সবাই খুব উৎসাহ নিয়ে বললো তাহলে তো আমরা সিউর অনুভব ভাইয়া হেরে যাবে তাই চল সবাই মিলে ঠিক করি কি তাকে দিয়ে কি করানো যায়।
আরে সবাই চুপ করো আগে দেখি অনুভব কি করে? সবাই চুপ করে অনুভবের দিকে তাকিয়ে আছে।
“অনুভব মনে মনে বলল, তানিয়া যা ডেন্জারাস মেয়ে না জানি আবার কি করতে বলে বসে তার থেকে বরং ফার্স্ট অপশন টাই বেটার।”
“হনহন করে চলে গেল অনুভব।”
অনুভব বেরিয়ে যেতেই সবাই মিলে একসাথে হাসতে শুরু করলো আর তানিয়ার বুদ্ধির প্রশংসা করল।
ইশিতা সবেমাত্র নতুন একটা শাড়ি পরে এসে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে চুল ঠিক করছে।
ঘরে ঢুকে ইশিতা কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে কোলে তুলে নিল। আচমকা এমন ঘটনায় ইশিতা চোখ বন্ধ করে নিল তারপর বললো, ” আরে কি হচ্ছে এসব কে আপনি আমাকে এভাবে উঠিয়ে নিয়ে কোথায় যাচ্ছেন?”
“চেঁচানো বাদ দিয়ে চোখ মেলে দেখো।”
ইশিতার মনে হচ্ছে সে ক্রমশ উপরের দিকে উঠছে।
অনুভবের গলা শুনে ইশিতা পিটপিট করে তাকালো তারপর দেখলো অনুভব তাকে নিয়ে ছাদের দিকে যাচ্ছে।
“এটা কি করছো?”
“ওয়েট বেবি একটু পরেই বুঝতে পারবে।”
মানে ভয়ে ভয়ে বলল ইশিতা।
“ছাদ থেকে যখন নিচে ফেলে দেবো তখন মজা বুঝবে।” বান্ধবীর সাথে মিলে আমাকে জব্দ করা হচ্ছে তাই না।
ও তার মানে এসব তানিয়ার বুদ্ধি। বেশ জব্দ করেছে দেখছি আমার দুষ্টু মিষ্টি বরকে।
অনুভব ইশিতা কে নিয়ে ছাদে পৌঁছে গেল।
সবাই অনুভবের জয়ধ্বনি দিতে শুরু করলো।
অনুভব ফিসফিস করে বলল কি দেবো নাকি ফেলে?
আমি তো কবেই পড়ে গেছি।
“হোয়ার?”
“তোমার প্রেমে ”
মিয়া বিবি কি সারারাত এইভাবেই দাঁড়িয়ে থাকবে নাকি তাই যদি হয় তাহলে আমরা বরং চলে যায় ইশিতার কাজিন হেনা বললো।
ইশিতা টুপ করে নেমে পড়লো।
তানিয়া ইশিতা আর অনুভবকে এক জায়গায় বসিয়ে দিল।
ছাদের উপর বড় একটা মাদুর পেতে বসেছে সবাই।
ঘন্টাখানেকের মধ্যে অনুভব ছাড়া সবাই ঘুমিয়ে পড়লো। ইশিতা অনুভবের কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে। তাই অনুভব উঠে যেতে পারলো না ছাদের দেয়ালের সাথে হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করলো।
____________
কেটে গেছে এক সপ্তাহ।এই কয়দিনে ইশিতা অনুভবের সাথে আর রাগ করে নি।এসব বিষয়ে অবশ্য অনুভবের কিছু যায় আসেনা। কারণ সে ইশিতার সাথে দুরত্ব বজায় রেখে চলাফেরা করে। মাঝে মাঝে ইশিতার খুব কষ্ট হয় তখন নিজেই নিজের মনকে শান্তনা দেয়।
সকাল থেকেই খুব তোড়জোড় চলছে। কারণ আজকে ইশিতা আর অনুভব গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যাচ্ছে। তাদের সাথে লিজা আর ঈশান ও যাবে।
গন্তব্যস্থল অনুভবের নানাবাড়ি। সেখানে বিন্দুমাত্র ইচ্ছে ছিল না অনুভবের। মায়ের কথা রাখতে যেতে হচ্ছে। জীবনে প্রথম তার মা কোন আবদার করল তাই মায়ের কথা ফেলতে পারেনি।
সবাই তো ধরেই নিয়েছিল সে যাবে না কিন্তু তাহেরা বেগম যখন অনুভবের হাত ধরে বললো তার নানী খুব অসুস্থ তাকে দেখতে চাইছে তখন আর না করতে পারেনি।
ইশিতা ব্যাগ গোছাতে গিয়ে পাসপোর্ট আর ভিসার কাগজ পত্র দেখতে পেয়ে গেল।
কিন্তু অনুভব এসে হাত থেকে কেড়ে নিয়ে ইশিতা কে দু চারটে কথা শুনিয়ে দিলো।
ইশিতা কাঁদতে কাঁদতে বাইরে এসে রাজীব চৌধুরীর সামনে পড়ে।
কি হয়েছে তা জানতে চেয়ে বেশ জোরাজুরি করতেই ইশিতা পাসপোর্ট আর ভিসার কাগজ দেখার কথা বলে।
রাজীব চৌধুরী সবটা বুঝতে পেরে ও ইশিতার মন রক্ষায় বলে অনুভব হয়তো তাদের হানিমুনে বাইরে যাওয়ার প্ল্যান করছে।
ইশিতা নিজের মাথায় হালকা হাতে বাড়ি মেরে বলে কি বোকা আমি অনুভবের সব প্ল্যান নষ্ট করে দিলাম তাই হয়তো ও এতো রেগে গেছে।
যাইহোক অবশেষে সবাই মিলে বেরিয়ে পড়ল গ্রামের উদ্দেশ্য। লিজার আসা নিয়ে তার মা অবশ্য ঝামেলা করেছিল ইশিতা আর অনুভব মিলে সামলে নিয়েছে।
অনুভব গাড়ি ড্রাইভ করছে ইশিতা তার পাশের সিটে।আর পেছনের সিটে বসেছে লিজা আর ঈশান।
“Congratulations লিজা তোমার এতো ভালো রেজাল্টের জন্য।”
“ধন্যবাদ ঈশান।”
ঈশান আর লিজা বেশ আস্তে আস্তে কথা বলছে।
“আমার তো খুব আনন্দ লাগছে ঈশান এবার থেকে তুমি আর আমি একই ভার্সিটিতে পড়বো। আর লুকিয়ে লুকিয়ে দেখা করতে হবে না।সব সময় তোমাকে দেখতে পাবো।”
“পরের কথা বাদ দাও বর্তমানের কথা ভেবেই আমার কি যে ভালো লাগছে।”
ভাগ্যিস আপু আমাদের বিষয়ে কিছু জানে না। তাহলে এভাবে তোমার সাথে বেড়াতে আসার এতো বড় সুযোগ হতো না।
এই তোরা কী নিয়ে ফিসফিস করছিস?
তেমন কিছু না ভাবী তোমার ভাই তো কথাই জানেনা তাই একটু কথা বলানোর চেষ্টা করছি।
ঈশান আর লিজা পুরো রাস্তায় আর তেমন কথা বলে নি।তারা দুজনেই চায়না তাদের বিষয়ে কেউ জানুক।
লিজার মা এমনিতেই ইশিতা কে সয্য করতে পারে না তার ওপর যদি জানতে পারে তার ভাইয়ের সাথে নিজের মেয়ে প্রেম করছে তাহলে একপ্রকার বিশ্বযুদ্ধ বাঁধিয়ে দেবে।
এবার সবাই গাড়ি থেকে নেমে ট্রেন স্টেশনে গেল। অনুভব ড্রাইভারকে কল করে গাড়ি নিয়ে যেতে বললো।
পাঁচ ঘণ্টা ট্রেন জার্নি করে তারা পৌঁছে গেল।
স্টেশনে নামতেই অনুভবের মামা ছুটে আসলো। এখানে আসার আগে রাজীব চৌধুরীর কাছে থেকে সবার বিষয়ে জেনে এসেছে অনুভব তাই নিজের মামাকে চিনতে খুব একটা অসুবিধা হলো না।
সবাই মামার সাথে কুশল বিনিময় করলো।
অনুভবের মামা তুষার একটা ভ্যানগাড়ি ডেকে আনলো। তারপর সবাইকে চড়ে বসতে বলল।
“হোয়াইট ইজ দিস?”অনুভব বললো”
সেকি ভাগিনা এতো তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে বছর তিনেক আগে যখন এসেছিল তখন তো এই ভ্যানগাড়ি করে গেছিলে।
অনুভবের না করার আর কোন উপায় রইল না হয়তো সত্যিকারের অনুভব তিন বছর আগে গ্রামে এসে এই ভ্যানগাড়িতে চড়েছে।
অনুভবের কথা খুব মনে পড়ছে অনুরাগের।তার সাথে তো মাএ কয়েকঘণ্টা কাটাতে পেরেছে।
গায়ের মেঠো পথ ধরে এগিয়ে চলছে ভ্যানগাড়ি। উঁচুনিচু হওয়ার কারণে রাস্তায় বেশ ঝামেলা পোহাতে হয়েছে তাদের।
“ইশিতা অনুভবের কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বলল আগে তো বলোনি তুমি গ্রামে এসেছিলে?”
“কি করে বললো যেখানে আমি নিজেই কিছুক্ষণ আগে জানতে পারলাম!!!”
কি বললে তুমি
যা শুনতে পেলে তাই বলেছি।
ইশিতা ভেংচি কেটে অন্যদিকে মুখ ঘুরিয়ে নিল।
বিশাল বড় একটা বাড়ির সামনে তাদের নামিয়ে দিয়ে ভ্যানচালক চলে গেল।
পুরো বাড়িটা টিন দিয়ে ঘেরা। তুষার এসে সবাইকে ভেতরে নিয়ে গেল।
ভেতরে গিয়ে দেখলো পুরো বাড়িটা সুন্দর করে সাজানো মনে হচ্ছে এটা কোন বিয়ে বাড়ি।
অনুভব তার মামাকে জিজ্ঞেস করে বললো এভাবে সাজানো কেন বাড়ি।
অনুভবের নানী দিলারা জামান লাঠি নিয়ে ঠকঠক করে শব্দ করে এসে উঠানে দাঁড়ালো।
তাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে অনুভবের চোখ কপালে উঠে গেল।
“একি তুমি তো সম্পূর্ণ সুস্থ নানী তাহলে মা যে বললো তুমি সয্যাশায়ী হয়ে গেছো।”
একে একে সবাই এসে উপস্থিত হলো। অনুভবের মামী রাহেলা, মামাতো ভাই রাতুল, বোন রিয়া। অনুভবের নানা তাদের বাড়ির কাজের লোককে সাথে নিয়ে বাজারে গেছে।
“কি হলো কেউ কোন কথা বলছে না কেন?”
ইশিতার দিকে একবার তাকাল অনুভব। ইশিতা ঈশান আর লিজা ভয়ে চোখ নামিয়ে নিলো।
আহ্ রাগ করোছ ক্যান নানুভাই এমনি এমনি বললে তো আর তুমরা আইতা না। তাই একটু খানি মিছা কথা বলছি।
আর তোমার বিয়াতে তো আমি যাইতে পারি নাই নাতবৌ দেখবার জন্যে আমার মনডা উতলা হয়তেছিল।
তাই আমি সবাইরে মিছা কথা বলছি।
আমরা সবাই তোমার জন্য টেনশন করছি আর তুমি আমাদের এতো বড় মিথ্যা কথা বলতে পারলে।
“অনুভব রেগেমেগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যেতে গিয়ে গোবরে পা পিছলে পড়ে গেল!”
।
।#মন_যাকে_চায়
#পর্ব_৬
#সুবর্ণা_আক্তার_জুথি✍️✍️
ইশিতা অনেকক্ষন ধরে ঘরের বাইরে পায়চারি করছে সেটা দেখতে পেয়ে দিলারা জামান লাঠিতে ভর দিয়ে চেয়ার থেকে উঠে এলেন।
“কি নাত বৌ আমার নাতী রে ভয় পাও?”
আসলে নানী অনুভব খুব রেগে আছে তাই একটু একটু ভয় করছে তুমিও চলো না আমার সাথে।
“ক্যান আমি যামু, আমি কি ওরে বলেছিলাম গোবরের মধ্যে লাফ দিতে।”
শোন নাত বৌ তুমি যাও ভিতরে, ওরে খাওয়ার জন্য ডাইকা নিয়া আসো। আমি আছি এইখানে।
ইশিতা ভয়ে ভয়ে ঘরের ভেতর গেল।
তখন গোবরে পা পিছলে পড়ার পর অনুভব কে দেখে সবাই হাসতে শুরু করে। অনুভব বেচারা কি করবে বুঝতে পারছিলো না এভাবে তো বাড়ির বাইরে যেতে পারবেনা। তাহলে তো হয়েই গেল।
শেষমেষ মামার সাথে পুকুরে গিয়ে গোসল করে এসেছে অনুভব। মজার ব্যাপার হলো অনুভব প্রথমে পুকুরকে গ্রামের বানানো সুইমিং পুল ভেবেছিল।এ নিয়ে কম হাসাহাসি হয় নি।
এতো কিছুর পর অনুভব সেই ঘরে ঢুকেছে আর বের হবার নাম নেই।রাতে খাওয়ার জন্য ইশিতা কে পাঠিয়েছে ডেকে আনতে।
ভয়ে ইশিতার হাত পা কাঁপতে শুরু করলো।টিন দিয়ে ঘেরা ঘরটা খুলতেই ভ্যাপসা গরম বেরিয়ে আসলো। তিনদিকে জালানা গুলো খোলা আছে। মাঝেমধ্যে হীমশীতল করা বাতাস আসছে জানালার গ্রিল ভেদ করে। তবুও ইশিতা ঘামছে।
অনুভব কে কোথাও দেখতে না পেয়ে ইশিতা চমকে গেল। গেলো কোথায়?
ঘরের দরজা তো একটা আর ইশিতা আধা ঘন্টা মতো সেখানে আছে অনুভবের যদি বাইরে যেতো তাহলে তো তার চোখে পড়তো।
এবার পিছনে ফিরতেই দেখলো অনুভব দাঁড়িয়ে আছে। ভয়ে ইশিতার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। শুকনো গলায় বলল, স…স..বাই তোমাকে ডাকছে, খেতে এসো।
অনুভব কে পাশ কাটিয়ে ইশিতা চলে যেতে চাইলো কিন্তু পারলো না তার আগেই অনুভব তার হাত ধরে ফেলল। “ইশিতা মনে মনে বলল এবার আর রক্ষা নেই।”
অনুভব মিষ্টি হেসে বললো, “ওয়েট বেবি এতো তাড়া কিসের মাএই তো এলে এক্ষুনি চলে যাবে?” আগে একটু গল্প করি তারপর একটু আদর যত্ন করি।
না না আমার এখন গল্প করার সময় নেই খুব খিদে পেয়েছে।
তাই নাকি বেবি তাহলে আসো একটু রোমান্স করি।
ইশিতা খুব ভালো করেই বুঝতে পারছে অনুভবের মাথায় কোনো শয়তানি বুদ্ধি আছে তাই এতো সহজে ধরা দেয়া যাবেনা।তার চেয়ে বরং সুযোগ মতো কেটে পড়তে হবে।
ইশিতা একবার দরজার দিকে তাকিয়ে দেখলো নাহ্ দিলারা জামান ইশিতা কে বাঁচানোর জন্য দাঁড়িয়ে নেই।
“ইশিতা মনে মনে বলল বুড়ি তোমাকে পরে মজা দেখাচ্ছি। আমাকে বাঘের মুখে ফেলে দিয়ে পালানো হচ্ছে।”
অনুভব ইশিতা কে কোলে তুলে নিয়ে ঘোরাতে শুরু করলো। কি করছো অনুভব দরজা খোলা আছে কেউ এসে পড়লে কেলেংকারি হয়ে যাবে।
ইশিতা কে ধপাস করে বিছানায় ফেলে দিলো তারপর বললো কেনো আমাকে দেখে তখন তো খুব হাসছিলে, “এখন হাসো কয় হাসো?”
“অনুভব ইশিতার খুব কাছে চলে আসলো।ইশিতার নিঃশ্বাস ভারী হয়ে আসছে।”
দুজনের মধ্যে ইঞ্চি পরিমাণ দুরত্ব রয়েছে। ইশিতা চোখ বন্ধ করে নিল।দমকা হাওয়ায় জানালার পাল্লাগুলো একে অপরের সাথে বাড়ি খাচ্ছিল।দড়াম দড়াম করে আওয়াজ হচ্ছে।
হুট করে অনুভব ইশিতার কাছে থেকে সরে এসে বাইরে চলে গেল।
“চোখ মেলে দেখলো ইশিতা, কেনো তুমি আমার থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে চাইছো অনুভব?”
_______________
সকাল সকাল ইশিতার ঘুম ভেঙ্গে গেল। অনুভব এখনও ঘুমিয়ে আছে। সারারাত গরমের কারণে ঘুমোতে পারেনি।ফ্যান চলছে তবুও তাদের তো এসির বাতাসে ঘুমানোর অভ্যাস আছে। অনুভব অনেক রাত করে ঘরে এসেছে। রাতে খাওয়ার পর ঈশান, রাতুল আর অনুভব ঘুরতে বেরিয়েছিল।
অনুভব ঘরে ঢুকে চুপচাপ শুয়ে পড়েছে সে হয়তো ভেবেছিল ইশিতা ঘুমিয়ে গেছে। কিন্তু ইশিতা এমনিতেই চোখ বন্ধ করে শুয়ে ছিল।
অনুভব শুয়ে উসখুস করছে ঠিক করে ঘুমাতে পারছেনা দেখে ইশিতা উঠে সমস্ত জানালা খুলে দিল। তারপর ঘরের মধ্যে একটা হাতপাখা পেয়ে গেল। সেটা দিয়ে বাতাস করছিল তারপর অনুভব আরাম করে ঘুমিয়েছে।
সে অবশ্য ইশিতার বাতাস করার ব্যাপারে জানতে পারে নি।
ইশিতা বাইরে বেরিয়ে দেখলো বাড়িতে কিছুসংখ্যক মহিলা গিজগিজ করছে।
তাকে বেরিয়ে আসতে দেখে সবাই ছুটে আসলো।
সবাই এসেছে অনুভবের বৌ দেখতে।
কেউ কেউ ইশিতার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। আবার অনেকেই তার রুপের প্রশংসা করছে। ইশিতা তাদের সাথে হাসি মুখে কথা বলছে।কথায় কথায় ইশিতা জানতে পারলো ছোটবেলায় অনুভব প্রায়ই মা বাবার সাথে গ্রামে বেড়াতে আসতো।
“আমরা তো ভাবছিলাম তুমি শহরের মাইয়া আমাদের দেখে ঘৃণা করবা আমাদের সাথে কথা বলবা না । কিন্তু তুমি তো দেখি পুরাই উল্টা।”
“না না আপনারা ভুল ভাবছিলেন আমার ভাবী খুব ভালো যেমন সুন্দর দেখতে তেমন সুন্দর ব্যাবহার।”
কথাটা বলতে বলতে রিয়া আসলো ওর পেছন পেছন লিজা, ঈশান আর রাতুল আসলো।
মহিলা গুলো আরো কিছুক্ষণ কথা বলার পর বেরিয়ে গেল।
ইশিতা দের এখানে আসার মূল উদ্দেশ্য হলো রিয়ার বিয়ে। আজকে রিয়ার গায়ে হলুদ আর কালকে বিয়ে।
রিয়া আর লিজা সমবয়সী তাই একদিনেই দুজনের মধ্যে বেশ ভাব জমে উঠেছে।
রাহেলা বেগম সকাল সকাল উঠে সবার জন্য নাস্তা বানিয়েছে। ইশিতা, লিজা, ঈশান কল পাড়ে গিয়ে হাতমুখ ধুয়ে বারান্দায় পাতা মাদুরে গিয়ে বসলো।
যদিও এই পরিবেশে তারা প্রথম তবুও খুব উপভোগ করছে।
অনুভব ঘুম ঘুম চোখে উঠে এসে ইশিতা কে বললো কফি দিতে।
“দিলারা জামান বললেন ওসব কপি টপি পরে খাইও আগে হাতমুখ ধুইয়া নাসতা কইরা নাও।”
অনুভব খাবারের দিকে তাকিয়ে দেখলো সেখানে আছে রুটি, দু-তিন রকমের ভাজা,আর ডিম ভাজি।
সাতসকালে আমি এসব ভারী খাবার খেতে পারবোনা বলে অনুভব ঘরে চলে গেল।
তুষার আহমেদ বাজারে ছুটলো কফির প্যাকেট কিনে আনতে।
রাহেলা বেগম বললেন অনুভব তো আগে এমন ছিল না। বিয়ার পর অনেক বদলাই গেছে।
কথাটায় ইশিতার মন খারাপ হয়ে গেল। তুমি কিছু মনে কইরো না ভাবী মা, তোমারে কিছু বলে নাই।
“দুপুরের মধ্যেই আত্নীয় স্বজনে বাড়ি ভরে গেল। রিয়ার মামা, খালা, খালাতো মামাতো ভাই বোন সবাই এসে উপস্থিত হলো।”ইশিতার বেশ ভালো লাগছে।”
সবাই খুব আন্তরিক ভাবে কথা বলছে তার সাথে।
কয়েকজন মহিলা উঠানে বসে হলুদ আর মেহেদী বাটছে।
অনেকক্ষণ ধরে লিজা আর ঈশান কে দেখতে পাচ্ছে না ইশিতা। আর এদিকে অনুভবের কোনো পাত্তা নেই। সেই যে কফি আর নাস্তা দিয়ে এসেছে তারপর আর যাওয়া হয়নি।
রিয়া ইশিতার পাশে বসে চুপিচুপি বললো জানেন ভাবী আমারও আপনার মতো প্রেমের বিয়ে। বিয়ের কথা “বলে খুব লজ্জা পেলো রিয়া।”
“তাই নাকি সে তো খুব ভালো।”
আরে আস্তে বলেন ভাবী।
সবাই জানে আমাদের পারিবারিক ভাবে বিয়ে হচ্ছে। এখানে এসে ইশিতা রিয়ার সাথে কথা বলে শান্তি পাচ্ছে বাকিদের কথা বুঝতে কিঞ্চিত অসুবিধা হচ্ছে। শিক্ষিত মেয়ে হওয়ায় ইশিতার সাথে তাল মিলিয়ে কথা বলতে পারছে।
“রাতুল অনুভবের সমবয়সী তাছাড়া শহরে থেকে পড়াশোনা করছে তাই অনুভব রাতুলের সাথে কমফোর্ট ফিল করছে।” অনুভব রাতুলের সাথে তার এক বন্ধুর বাড়িতে এসেছে।এই বাড়ির পরিবেশ অনুভবের বেশ পছন্দ হয়েছে। তেমন কোন মানুষ জনের ভীড় নেই।
ও বাড়িতে এতো মানুষ আর সবাই ঘরে গিয়ে উঁকি দিয়ে অনুভবকে দেখছে এটা তার মোটেও পছন্দ হয়নি।তাই রাতুল কে নিয়ে বেরিয়ে এসেছে কিন্তু এবার বাড়ি ফিরতে হবে।
তুষার আহমেদ ফোন করে তাদের দুজনকে বাড়ি আসতে বলেছে।
লিজা আর ঈশান বাড়ির পেছনে দাঁড়িয়ে গল্প করছিল ওদিকে খুব একটা মানুষ যাওয়া আসা করছে না। কিন্তু অনুভব কে আসতে দেখে দুজনে দৌড়ে পালাল।
বাড়িতে ঢুকতেই চমকে গেল অনুভব। পুরো বাড়িতে হলুদের ছড়াছড়ি।আর প্রায় সবার পোশাক হলুদ।এতো লোক জনের ভীড়ে ইশিতা কে খুঁজে পেতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি অনুভবের।
“সবার মধ্যে থেকে ইশিতা কে টেনে নিয়ে গেল অনুভব। আরে কি করছো তুমি?”
“এতো কিসের নাচানাচি তোমার ঐ ছেলেগুলো তোমাকে কোন নজরে দেখছিল দেখতে পাওনি?”
“আমি কি করে জানবো কে আমাকে দেখছে আমি তো সবার সাথে হলুদ মাখামাখি করছিলাম।”
তুমি হলুদ পরী সেজে হলুদ মাখামাখি করছো আর এই ছেলেগুলো উঁকিঝুঁকি মেরে তোমাকে দেখছে।
ফের যদি এরকম নাচানাচি করতে দেখেছি সাথে সাথে ঢাকা নিয়ে চলে যাবো মনে থাকে যেন।
অনুভবের এই রকম কথা শুনে প্রথমে ইশিতার খারাপ লাগলেও পরে এটা ভেবে হাসলো যে অনুভব তাকে কেয়ার করছে।
অনুভব ঘর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল ইশিতা পথ আটকে দাঁড়ালো আর বললো দুপুরে নিশ্চয় কিছু খাওনি সেই সকালে বেরিয়েছ সন্ধ্যা নেমে এসেছে।
আর কোথাও যাওয়া হবে না ঘরে থাকবে আমি গিয়ে খাবার জন্য কিছু নিয়ে আসছি।
ইশিতা কিছু পিঠে পুলি হাতে নিয়ে দৌড়ে আসলো। অনুভবের সামনে রেখে বলল।
আমরা তো এখানে রিয়ার বিয়ের জন্য এসেছি। কোথায় সবাই মিলে একসাথে আনন্দ করবো তা না তোমাকে কেউ খুজেই পাচ্ছে না।
“এতে তোমার নানা, নানী, মামা, মামী, ভাই, বোন কতো কষ্ট পাচ্ছে জানো তুমি?”তাদের কতো টা খারাপ লাগছে। কালকে তোমার মা বাবা এসে যখন সব শুনবে তখন তাদের কেমন লাগবে?”
আমরা তো এখানে সারাজীবন থাকতে আসিনি। বিয়ের পর তো চলে যাবো।
গ্রামের পরিবেশে মানিয়ে নিতে আমারও অনেক সমস্যা হচ্ছে কিন্তু সবার খুশির কথা ভেবে মানিয়ে নিচ্ছি।
এই যে পাঞ্জাবি রেখে গেলাম।পিঠা খেয়ে এটা পরে বাইরে আসো সবাই খুব খুশি হবে।প্লিজ আমার এই অনুরোধ টা রাখ।
ইশিতা চলে যেতেই অনুভব প্যাকেট খুলে দেখলো একটা হলুদ রঙের পাঞ্জাবী রাখা।
সাত পাঁচ না ভেবে পাঞ্জাবী পরে নিলো তারপর বাইরে এসে সবাইকে অবাক করে দিলো।
অনুভব কে আসতে দেখে সবাই একসাথে হৈ হৈ করে
উঠলো।
অনুভব তাদের সাথে যোগ দিলো। ঈশান, রাতুল সহ আরো অনেকেই নাচে গানে মেতে উঠলো।
ইশিতা দূরে দাঁড়িয়ে সব দেখছে। আনন্দে তার চোখে পানি চলে আসলো।
দিলারা জামান ইশিতার কাঁধে হাত রেখে বলল ভালোবাসা মানুষকে দিয়ে সব করাতে পারে। “আমার নাতি তোমাকে খুব ভালোবাসে তাই তোমার এককথায় কেমন রাজি হয়ে গেল।”
“দোয়া করি দুজনে সারাজীবন যেন একসাথে থাকতে পারো।”
____________
“কিন্তু কে জানত ইশিতার এই আনন্দ ছিল খনিকের জন্য।”
হুট করে একটা মেয়ে এসে ঢুকলো বাড়িতে তার সাথে গ্রামের কয়েকজন লোক আছে। তাকে দেখে সবার চোখ কপালে উঠলো। মূহূর্তের মধ্যে বিয়ে বাড়ি নিরব নিস্তব্ধ হয়ে গেল।
মর্ডান পোশাকে সাদা চামড়ার একটা মেয়ে এসে অনুরাগ অনুরাগ বলে চিৎকার শুরু করলো…………….
।
।
।
)