#মেঘের_দেশে_তারার_মেলা 💚
#Mishka_Moon (লেখনীতে)
#পর্ব_৫
এক ঘন্টা যাবত পা টিপতে টিপতে ক্লান্ত পিহু। কিন্তু আহির কিছুতেই ঘুমাচ্ছে না।
~ কি রে হাত চলে না কেন?
~ পা না দিয়ে তোর গলাটা দে! তাহলেই বুঝবি হাত চলে কিনা!
~ হায় হায় তুই তো দেখছি ডেঞ্জা*রাস মাইয়া রে। বিয়ের রাতে স্বামীকে মে*রে ফেলার প্লান করছিস?
~ হয়! তাতেই আমার শান্তি।
কালকের খবরের হেড লাইন হবে ~ “” বিয়ের রাতে বউয়ের হাতে স্বামী খু*ন””। আসল কারণ কি মেয়ের কি তাহলে অন্য কারো সাথে কিছু ছিল নাকি অন্য কিছু? জানতে আমাদের সাথেই থাকুন।
~ তুই চুপ করবি এবার কিন্তু বেশি বেশি বলছিস।
~ যা আজকের মতো ঘুমিয়ে পর। কালকে বলার আগেই কাজে লেগে পরবি বুঝলি।
~ সুযোগ আমারো আসবে মনে রাখিস।
~ কখন থেকে তুই আমাকে তুই তুই করছিস কেন? স্বামী হই তোর আমি সম্মান দিয়ে কথা বলবি। হয় তুমি বলবি নইলে আপনি মনে থাকবে?
~ পারবো না। তুইও তো আমাকে তুই বলছিস তার বেলায়।
~ তোর সাথে কথা বলাই ভুল।
পিহু মুখ ভেঙ্গচি দিয়ে শুয়ে পরে। আহিরও আর কিছু না বলে ঘুমিয়ে পরে। পিহু এখনো এটাই ভাবছে তার আর আহিরের সম্পর্ক আগের মতোই আছে। সা*প আর নেউ*লের মতো।
সকালে পিহুর আগেই ঘুম ভেঙে যায়। রান্না ঘরে গিয়ে দেখে বড় আম্মু চা বানাচ্ছে।
~ বড় আম্মু কি করছো?
~ চা বানাচ্ছি দেখতে পাচ্ছিস না!
~ পাচ্ছি কিন্তু তুমি কি রেগে আছো? আমি আর আহির ভাই কেউ তো রাজি ছিলাম না। তুমি কিছু করলে না কেন?
~ প্রথম কথা রাগ করে লাভ নেই। যা ভাগ্যে ছিল তাই হয়েছে। আর দ্বিতীয় কথা আমি যেনো আর কখনো আহির কে ভাই বলা না শুনি।
~ আচ্ছা বড় আম্মু।
~ যা সবাই কে চা দিয়ে আয়।
~ ঠিক আছে।
পিহু বুঝতে পারে তার বড় আম্মু মুখে কিছু না বললেও মনে মনে রাগ করেই আছে। বসার রুমে এসে দেখে ফুলমতি আর আরফান রহমান বসে আছে।
~ বড় আব্বু তোমার চা।
~ তুই কেনো আনলি তোর বড় আম্মু কই?
~ সমস্যা নেই বড় আম্মু কাজ করছে।
~ দিদুন তোমার চা।
~ বড় খোকা ওকে বলে দে ওর হাত থেকে আমি কিছু খাবো না।
~ মা এসব কি বলছো।
পিহু আমি খাবো আমাকে দে। পিহু পেছনে তাকিয়ে দেখে আহির ঘুম থেকে উঠে পরেছে। পিহু কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে চা নিয়ে খেতে শুরু করে। চায়ে চু*মুক দিতে দিতে আরফান রহমান কে উদ্দেশ্য করে বলে,,, বাবা রাতে আমি আর পিহু চলে যাবো। আর বখা*টে ছেলে গুলোর একটা ব্যবস্থা করে যাবো। অর্পাকে কোথাও পাঠাতে হবে না তোমাদের কাছেই রাখো।
পিহু বলে ~ আমি যাবো না। আর গেলে অর্পাকে সাথে নিয়ে যাবো।
~ সামনে এডমিশন তোরা দুটো এক সাথে থাকলে আর পড়া হবে না। তাই আলাদা ভাবেই প্রেপারেশন নিবি। আর যদি এক জায়গায় চান্স পাস তা হলে তো আবার এক হয়ে যাবি।
আরফান রহমান বলে~ আচ্ছা কিন্তু পিহুর বাবা মার সাথে একটু কথা বলে নিস।
~ ঠিক আছে। পিহু তোর কাগজ পত্র রেডি করে রাখ যা।
পিহু বাড়ি গিয়ে ম*রা কান্না জুড়ে দেয়। সে কিছুতেই আহিরের সাথে যাবে না। বাধ্য হয়ে আহান রহমান একটা ধমক দিয়ে চলে গেছে। সেই থেকে বলে যাচ্ছে~ আব্বু আর আমায় ভালোবাসে না। বিয়ে দিয়ে আমায় পর করে দিয়েছে। আর আসবো না আমি কখনো। তোমরা ভালো থেকো বিরবির করতে করতে কাপড় গোছাচ্ছে। পিহুর মা সাথে সাহায্য করছে। মেয়েকে ছেড়ে ২দিনের বেশ থাকে নাই এখন দিনের পর দিন কেমনে থাকবে? বুক ফে*টে কান্না আসছে তার। তবুও মুখে কিছু বলছে না। পিহু একবার বুঝতে পারলে কিছুতেই যেতে চাইবে না।
পিহুর সামনে যতোই কঠিন হয়ে থাকুক আহান রহমান। শুধু মাত্র সে নিজেই জানে তার মনের মধ্যে কি চলছে। মনে মনে পিহু কে উদ্দেশ্য করে বলে~ আমার ওপর রাগ করিস না মা। আমি যে কাউকে কথা দিয়ে ছিলাম তোকে দেখে রাখবো।তোর কোনো ক্ষ*তি হতে দিবো না। ঔ ব*খাটে গুলো চেয়ারম্যানের চ্যা*লা। পুলিশ যতই থাকুক তারা সব সময় দেরিতেই আসে। এসব ভাবতে ভাবতে দুফোঁটা চোখের পানি গড়িয়ে পরে আহান রহমানের খুব সাবধানে তা মুছে ফেলে। কেউ যদি দেখে ফেলে তখন কি বলবে!
আহির ছেলে গুলোকে মে*রে থা*নায় রেখে আসে। রাতে পিহুকে নিয়ে বাসায় যেতে যেতে মাঝ রাত হয়ে যায়। পিহুর অনেক মন খারাপ। বাসে একটা কথাও বলেনি আহিরের সাথে তাই আহির ও আর কিছু বলেনি। রাতের খাবার না খেয়েই দুজন শুয়ে পরে।
সকালে আজকে আহিরের ঘুম ভাঙে আজকেও তার ছুটি। দুদিনের ছুটি নিয়ে ছিল সে পিহুকে কোচিং এ ভর্তি করে দেওয়ার জন্য একদিন হাতে রেখেই এসেছে। পিহুর ঘুম উঠতে উঠতে অনেক বেলা হয়ে যায়। তবে আহির তাকে একবারো ডাকেনি ভেবে কিছুটা অবাক হয়।
ফ্রেশ হয়ে বাহিরে এসে দেখে আহির চা দিয়ে পাউরুটি খাচ্ছে। পিহুকে উঠতে দেখে বললো ~ মহারানীর ঘুম ভাঙলো তাহলে?
~ হুম।
~ এটাই খেয়ে নে আপাতত বাহিরে খেতে নিয়ে যাবো। আর শোন প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে নিস কোচিং ভর্তি করিয়ে দিবো আজকেই পরে আর সময় নাও পেতে পারি।
~ ঠিক আছে।
~ তোর কি এখনো মন খারাপ?
~ নাহ
~ ছা*গল ও তাহলে চুপ থাকে?
~ তুই কিন্তু আমাকে অপ*মান করছিস।
~ পুলিশকে তুই করে বলিস এতো বড় সাহস তোর আজকেই তোকে থা*নায় দিয়ে আসবো।
~ তো কি আপনি বলবো?
~ আপনি বা তুমি যা ইচ্ছা বলতে পারিস কিন্তু তুই বলিস না। লোকে শুনলে কি বলবে?
~ তুমি বলতে পারবো না। তুমি বললে কাছের মানুষ মনে হয় কিন্তু তুই তো আমার পর, আমার বড় শ*ত্রু তাই মানুষের সামনে আপনি বলবো। কিন্তু একটা শ*র্ত আছে?
~ তোকেও আপনি বলতে হবে।
~ হাসালি তোকে আমি আপনি বলবো?
~ তাহলে আমিও বলবো না।
~ আচ্ছা তুই যা বললি তাই হবে। আর শোন কালকে থেকে আমি থা*নায় সকাল সকাল বের হয়ে যাবো। তুই সকালে খেয়ে কোচিং এ চলে যাবি।
~ সকাল সকাল থা*নায় গিয়ে কি করেন?
~ কাজে যাই ঘুরতে নই।
~ কি জানি সব সময় তো পুলিশ শুধু লেট করে। খু*ন হওয়ার পরে পুলিশ গিয়ে বলবে আমরা খু*নি কে বের করবো আপনারা চিন্তা করবেন না। কেন রে আগে যেতে পারিস না? তাহলে লোক গুলো বেঁচে যায়।
~ তোর সাথে কথা বলাও ভুল যা রেডি হয়ে নে।
~ যাচ্ছি। তবে আরেকটা কথা সেদিন টেলিভিশনে দেখলাম এক লোক সুই*সাইড করার জন পাঁচ তোলায় উঠেছে। যখন তখন লা*ফ দিবে এমন সময় পুলিশ এসে বলল~ তাড়াতাড়ি নেমে আসুন নইলে কিন্তু গু*লি করে মা*রবো।
~ তোকে কিন্তু আজকে,,,,, পিহু হাসতে হাসতে দৌড়ে চলে যায়। এবার ওর ভালো লাগছে আহির কে বি*রক্ত করতে পেরে।
আহির আর কিছু বললো না। যাক ওকে বি*রক্ত করে হলেও হেসেছে তো।
আহির পিহুকে নিয়ে বেরিয়ে পরলো। কোচিং এ পিহুকে ভর্তি করিয়ে দিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে যায়। হঠাৎ একটা টেবিলে চোখের যায় পিহুর।
আহির কে উদ্দেশ্য করে বলে ~ ওটা,,,,
#চলবে?
( বিঃদ্রঃ আমার পরিবারের প্রায় সবাই অসুস্থ তাই সময়
মতো গল্প দিতে পারছি না। গল্প রাতে বা সকালে যেকোনো এক সময় পাবেন ইনশাআল্লাহ 🖤)