#রৌদ্র_কুয়াশা
Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
পর্ব ১৭
;;;;;
প্রিয় পাঠক/পাঠিকা,ইনশাহআল্লাহ অমর একুশে বইমেলা ২০২১ এ প্রকাশিত হতে যাচ্ছে আমার প্রথম উপন্যাস “আবেদিতা”।সবাই পাশে থাকবেন।
;;;;;
৪৯
-তোর জন্য আম্মাজান সকালে আমার গায়ে ঝাটা ছুড়ে ছিল।তোকে আজ মেরেই ফেলব আমি।
ফ্লোরে সাপের মতো ব্যথায় মুচড়াচ্ছে অনু।গোছাচ্ছে ব্যথায় কিন্তু আওয়াজ বাইরে আসছে না তারা।তার হাত পা মুখ সব বেধে রেখেছে নিবিড়।অফিস থেকে আজ বেশ রাত করে ফিরেছিল নিবিড়।অনু ভেবেছিল হয়তো সকালের জন্য মন ভালো নেই বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে সে।কিন্তু কে জানতো নিবিড় যে পুরো চিন্তা ভাবনা করেই এসেছে।আর যাই হোক রাত দশটার পর ইসমাত বেগম কখনো দরজা খুলবেন না।আগে আগে ঘুমানোর অভ্যাস তার।নিবিড় এই সুযোগ তাই নিতে চাইছিল।দরজা লাগিয়ে কোমড় থেকে মোটা চামড়ার বেল্টটা খুলেই অনুর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে সে।শব্দ বাইরে না যায় এজন্য হাত পা মুখ বাধতে ও ভোলেনি সে।
-আর জীবনে অবাধ্য হবি আমার কথার?তোকে মেরেই ফেলব আমি।
বেশ কিছুক্ষণ পর নিবিড় থামলো।সারাদিন খাটা খাটনির পর তারপর আবার অনুকে মারা।কতো কাজ করেছে সে।সে যে বড্ড ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।নিবিড় বসে কিছু টা শান্ত হয়ে অনুকে পর্যবেক্ষণ করছে।অজ্ঞান হয়ে গেছে অনু।নিবিড় আস্তে করে গিয়ে অনুর সব বাধন খুলে দিল।ফ্লোরের ওপর ই আবার অনুকে লাথি মেরে সরিয়ে দিল।অনুর শরীর দেখে নিবিড় এটুকু বুঝে গেছে আজ আর অনু তার চাহিদা মেটাতে পারবে না।ক্লান্ত হয়ে খাটের ওপর গা এলিয়ে দিল নিবিড়।তার বড্ড ঘুমের প্রয়োজন এখন ।
৫০
-কি বলছো কি তুমি মা?মাহিরের এতো বড় সাহস হলো কি করে!ও আমার অনুমতি ছাড়া বিয়ে করেছে।তাও কোন রাস্তার মেয়েকে।
আলফাজ সাহেব রেগে লাল হয়ে গেছেন পুরো।বার বার মাথায় পানি দিচ্ছেন।বরফের টুকরো ব্যাগে ভরে ওনার মাথায় মাঝে মাঝে ধরছে আফরিন।আদিবা বেগম চুপচাপ দেখছেন ছেলের কান্ড।
-শোন এসব নাটক বন্ধ কর।ছেলেটাকে বাঁচতে দে।
-কিসের বাঁচতে দেব আমি!এতোদিন ধরে খাইয়ে পরিয়েছি কি এই দিন দেখার জন্য।আমি আমার নতুন পার্টনার এর সাথে কথা বলছিলাম।ওনার বড় মেয়ে স্বামী পরিত্যক্তা।একটা ছোট বাচ্চা ও আছে।ওর সাথে মাহিরের বিয়ে দিলে মাহির ও বাচ্চা পেত,ওদের ও অভিযোগ থাকতো না আর আমার বিজনেস এর এতো লস হতো না।
আলফাজ সাহেবের কথাতে বিস্ফারিত চোখে তাকালেন আদিবা বেগম। বজ্রকন্ঠে বললেন,
-তুই কি মানুষ!নিজের স্বার্থ ছাড়া আর কিছু চিনিস না তুই!আগে ছেলেটার জীবন একবার নষ্ট করেছিস।এখন আবার!
-শোনো মা তুমি চুপ করো।এর মা একবার মাথা খেয়ে আমার অর্ধেক জীবন শেষ করেছে।এখন ছেলে ।উহ।
-এতোই যদি ওকে নিয়ে তোর সমস্যা তাহলে কেন ওর মায়ের কাছে দিলি না ওকে?
-আমি জানতাম নাকি!ভেবেছিলাম আমার মত হবে ও।না সে পুরো মায়ের ফটোকপি।অসহ্য।ছোট বেলায় যদি গলা টিপে মেরে ফেলতাম,,,,,,।
-আলফাজ!
আদিবা বেগমের ধমকে চুপ হয়ে গেলেন আলফাজ সাহেব।
-লজ্জা করে না তোর!লজ্জা করে না!নিজের সন্তানকে মেরে ফেলার কথা বলছিস।তুই বাপ না কি অন্য কিছু বলতো?
-তোমার যা ইচ্ছা ভাবো।কাল দেখব তোমার নাতি কিভাবে সংসার করে।আমার পছন্দের মেয়ের সাথেই ওর ঘর করতে হবে।প্রয়োজনে ঐ রাস্তার মেয়েকে ডিভোর্স দেওয়ানোর ব্যবস্থা করব আমি।
-আমার মাহিরের দিকে তুই সামান্য নজর দিয়ে দেখ তোকে এইবার শেষ করে দেব আমি।তোর জন্য আমার প্রিন্স এর জীবন টা আজ পুরো শেষ হয়ে গেছে।
-কেউ আটকাতে পারবে না আমাকে বুঝেছো।
আলফাজ সাহেব সোফা থেকে উঠে নিজের ঘরের দিকে গেলেন।আফরিন গিয়ে আদিবা বেগমের কাঁধে হাত রাখলো।
-দাদীমা আপনি কেন উত্তেজিত হচ্ছেন?
-আফরিন তুই বুঝতে পারছিস না এই শয়তান টা আবার আমার মাহিরটাকে শেষ করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।
-আপনি না বলেন আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্য করেন।তবে দেখবেন মাহির ভাই এর ভালোই হবে।আর মাইশা ভাবির কথা বাদ দিলাম।ওটা হয়তো আল্লাহর পরীক্ষা ছিল।
-আফরিন রে চিন্তা হয় বড্ড।আর কদিন বা আছি আমি।আমার মাহিরটা যে কবে সুখ পাবে!
হতাশায় চোখ দুটো ভিজে গেল আদিবা বেগমের।বুক ভরা দীর্ঘশ্বাস।
৫১
লাইটার দিয়ে সিগারেট টা জ্বালিয়ে মুখে ধরলো আরিয়ান।নদীর ওপর ব্রিজের কাছে দাঁড়িয়ে আছে সে।রাত অনেক হয়েছে।কিন্ত তার ঘরে ফেরার কোনো হেলদেল নেই।কোনো পিছুটান তো নেই তার।একা বাড়ি তে থাকা।তার চেয়ে বরং একাকিত্বের রাতের থেকে নদীর পানির কলকল শব্দ,ঠান্ডা হাওয়া,দূর থেকে জাহাজের সাইরেন শোনা যাবে।নিচের দিকে তাকিয়ে জাহাজ গুনছে আরিয়ান।এই নিয়ে ৯ টা হলো।এতো কম কেন?আরিয়ানের মনে প্রশ্ন জাগে।পরক্ষণেই মনে হয় আরে এখন তো রাত।আর সবাই তো আরিয়ানের মতো রাত জাগা পাখি না।
সিগারেটের আরেক টান দিয়ে হাওয়ার নিজের মুখের ধোয়া টাও উড়িয়ে দিল আরিয়ান।খোলা জায়গার বাতাসে সিগারেটের ধোঁয়া গুলো যেন তার দিকেই আবার ফেরত আসলো।হয়তো এই ধোঁয়ার ঘনত্ব কম।বাতাসের কাছে হার মেনেছে সে।আবার ফিরে এসেছে উৎপত্তির কাছে।
ফোনের মেসেজ টোন বেজে উঠতেই সিগারেট টা হাতে নিয়ে ফোন বের করলো আরিয়ান।এতো রাতে তাকে কে মেসেজ দেবে?নিশ্চয়ই সিম কোম্পানি।ভাবতেই আরিয়ানের মুখে বিরক্তির ছাপ ফুটে উঠলো।সারাদিনে কমপক্ষে দশটা হলেও মেসেজ আসবে এই সিম কোম্পানি থেকে।মাঝে মাঝে তো মনে হয় আরিয়ান পারলে ফোন ছুড়ে ফেলতো।এতোটাই বিরক্ত লাগে তার।পরে আবার ভাবে ফোন ছুড়লে সিম কোম্পানি র কিছু আসবে যাবে না।উল্টে তার এতো টাকার ফোনটা অকালে মরে যাবে।
ফোনের লক খুলতেই সামনে ভেসে উঠলো “নীল” নাম।
“আরিয়ান স্যার,
মজিদ নামে একটা লোককে আজ থেরাপি দেওয়া হয়েছে।কেস টা দেখবেন।থানা অবধি যেন না যায়।”
মেসেজ থেকেই চট করে নীলের নাম্বারে কল করলো আরিয়ান।রিং হতেই ফোন রিসিভ করলো নীল।
-আসসালামু আলাইকুম স্যার।
-ওয়ালাইকুম আসসালাম।কি হয়েছে নীল?
-জানোয়ার স্যার।মানুষের রূপ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল।এলাকার মেয়ে গুলো অতিষ্ঠ পুরো।কেউ কেউ তো মুখে বলতে পারে না সম্মানের ভয়ে।আর কেউ বললে ঐ বেটার চ্যালা রা আসে সাপোর্ট করতে।বৃদ্ধ হলেও বেশ নামডাক এলাকাতে ওর।তাই আজ একটু লাল থেরাপি দিলাম।
-ভালো করেছো।মাহির বলেছে নাকি?
-হ্যা স্যার।স্যার ই নির্দেশ দিয়েছেন।আপনি আজ আসলেন না কেন?
-আর বলোনা এক সাংবাদিকের সাথে মিটিং এ পড়ে গেছিলাম।না হলে মিস করতাম না।ভাবী কেমন হয়েছে?
-মাশাল্লাহ স্যার।এখন মাহির স্যার সুখে থাকলেই হলো।
-আসলেই।অর্থ থাকলে সুখ থাকে না গো।
-স্যার আপনিও এবার নিজেকে গুছিয়ে নিন।মাহির স্যার ও তো নিজেকে গুছিয়ে নিলেন।
-দেখি।পাই না তো কাউকে।
-আপনি যে বিধ্বস্ত খোঁজেন এজন্য।
-সে যেন তাড়াতাড়ি আসে নীল।সেই দোয়া করো। সিগারেটের নেশা ভালো লাগে না।প্রেয়সীর নেশার বড্ড প্রয়োজন।
-স্যার আপনার আর মাহির স্যারের খুব মিল আছে।
-যেমন?
-এই যে দুজনে র জন্ম তারিখ এক,দু জনের জীবনটাও কতো কষ্টের, দুজনেই খুব ভালো বন্ধু।একদম জীগিরের দোস্ত আজ মাহির স্যার যখন নিজেকে গুছিয়েছেন দেখবেন আজ আপনার ও একটা সমাধান হবে।
-কিভাবে?এতো গভীর রাতে কে আসবে বলোতো?আসমান থেকে তো আর নামবে না।
-তাও ঠিক।
-যদিও আসে সেটা ও ভালো।সিগারেটের নেশা ছেড়ে দেব,প্রিয়তমা ওষ্ঠে মাতোয়ারা হব।
– কি যে বলেন না স্যার আমার সামনে।
-তুমি ছোট বুঝি!
ফোনের এপাশে হেসে খুন হয়ে যাচ্ছে আরিয়ান ওপাশে নীল।হাসি থামিয়ে আরিয়ান বললো,
-আচ্ছা ভালো থাকো।
-আচ্ছা স্যার।আল্লাহ হাফেজ।
-আল্লাহ হাফেজ।
৫২
বাস থেকে নেমে প্রানপনে দৌড়াচ্ছে অনু।বাসের কন্ডাক্টর ও দুটো লোক নিয়ে অনুর পিছনে তাড়া করছে।
কয়েক ঘন্টা আগে।
ব্যথায় আস্তে আস্তে জ্ঞান ফিরলো অনুর।চোখ মেলতেই নিজেকে ফ্লোরে আবিষ্কার করলো।নিজের দিকে তাকাতেই অনু বুঝতে পারলো নিবিড় তার বাধন সব খুলে দিয়েছে।বিছানার দিকে চোখ যেতেই অনু দেখলো নিবিড় নাক ডেকে ঘুমোচ্ছে।নিবিড় কে দেখেই গা টা জ্বলে উঠলো অনুর।ক্রোধে র আগুনে পারলে সে নিবিড়কে শেষ করে দিত। কে বলেছে এটা স্বামী।এটি জানোয়ার।
“মুক্তি, খাচা, মুক্তি, খাচা”।
অনুর কানে যেন সকাল বেলার শব্দ গুলো এখনো বাজছে।অনু ধীরে ধীরে উঠে দাড়ালো।ঠিক হয়ে দাঁড়াতে পারছে না সে।পাশের ড্রেসিং টেবিল ধরে উঠে দাঁড়ালো সে।আয়নায় চোখ যেতে নিজেই নিজেকে দেখে আতকে উঠলো অনু।এতো টা কালচে দাগ পড়ে গেছে শরীরে।নিবিড়ের দিকে তাকাতেই বিছানার পাশে সেই বাধন গুলো দেখ তে পেলো অনু।যেটা দিয়ে একটু আগে নিবিড় তাকে বেধে রেখেছিল।
অনু ধীর পায়ে গিয়ে ওগুলো হাতে নিল।নিবিড়ের পা দুটো একসাথ করে বেশ ভালো করে বেধে দিল খাটের পায়ার সাথে।নিবিড় গভীর ঘুমের মানুষ।ঘুমের মধ্যে সে কিছু টের পায়না।অনুর আরো সুবিধা হলো।নিবিড়ের হাত দুটো ও দুদিক থেকে টেনে খাটের সাথে বেধে দিল অনু।এবার মুখের পালা।যেই বাধতে যাবে নিবিড় জেগে উঠলো।
-তুমি!
নিবিড় নিজের হাত পা নাড়তে পারছে না দেখে তাকিয়ে দেখে সব বাধা।অনু আর দেরী না করে নিবিড়ের মুখ ও বেধে দিল।নিবিড় ছটফট করছে।ফ্লোরের ওপর ফেলানো বেল্ট টা হাতে নিয়ে অনুর ক্রোধ আরো বেড়ে গেল।অনুর এলোপাথাড়ি মারতে শুরু করলো নিবিড়কে।রাতের কথা মনে পড়তেই আরো জোরে মারতে লাগল।এদিকে অনুর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।নিবিড় ছটফট করছে সাপের মতো।
-শয়তান।জানোয়ার।আজ থেকে কেউ নোস তুই আমার।কেউ না।
অনু নিবিড়কে মেরে হাঁপিয়ে উঠেছে। গায়ের ব্যথাটা যেন আরো বেড়ে গেছে।নিবিড় কাতরাচ্ছে।আবার অবাক চোখে অনুর দিকে তাকাচ্ছে।অনু নিজের একটা ওড়না বের করে নিবিড়ের চোখ দুটো ও বেধে দিল।
-মুক্তি চাই আমি।আমি চাই না তোর ঐ চোখ দুটো ও আমাকে দেখুক।অভিশাপ তুই।
আর কিছু না ভেবে অনু চোখ মুছে বোরাখা বের করে গায়ে জড়িয়ে নিল।নিবিড়ের মানি ব্যাগ টাও সাথে নিল।আজ তাকে বাঁচতে হবে।
দরজা খুলে বেরোনোর সময় ইসমাত বেগমের কথা মনে পড়লো অনুর।
-মাকে কি বলে যাব!
পরক্ষণেই সদর দরজার দিকে পা বাড়ালো সে।ইসমাত বেগম নিজেই তো বলেছিলেন তাকে বাঁচতে হবে তাকে।
অন্ধকার রাস্তায় পথ চলছে অনু।ভয় করছে।একা মেয়ে মানুষ।কি করবে কোথায় যাবে?বাপের বাড়ি!সেটা তো আরেক জাহান্নাম যেন তার কাছে।দেখতে দেখতে ব্যথায় হাঁটতে হাঁটতে বাস স্ট্যান্ড এ চলে এলো সে।একটা বাস দাঁড়িয়েই ছিল।কোথায় যাবে সে জানে না।সে উঠে পড়লো।ভীড় কম রাতের বেলা।বাস যেখানেই যাক অনুর গন্তব্য যেখানে সেটা থামবে।কোথায় যাবে সে জানে না?বাসের জানালা র কাছেই একটা সিট পেল সে।বসতেই ক্লান্ত শরীরে চোখ লেগে গেল তার।
বাসের ব্রেক কষাতেই সামনের সিটে মাথা লেগে ব্যথা পেল অনু।ঘুম ভেঙে গেল তার।বাইরের দিকে যা দোকান পাট অন্ধকারে দেখা যাচ্ছে সব বন্ধ।তার মানে অনেক দূর চলে এসেছে সে।কখন ঘুমিয়ে পড়েছে নিজের ও মনে নেই।হাসির শব্দ শুনে পাশে তাকায় অনু।
তিন চারটা লোক কি খাচ্ছে আর হাসি ঠাট্টা করছে।অনু সাথে সাথে পেছনে তাকায়।পুরো বাস ফাকা।অনুকে জাগতে দেখে পাশের লোক গুলো অনুর দিকে তাকায়।সবার লোভাতুর চাহনি দেখে অনুর গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।এ কি ভুল করলো সে?তবে কি আবার সে ফেসে গেল!
অনু ঢোক গিলে আল্লাহকে ডাকছে।তাকে ভয় পেলে চলবে না।এর মধ্যে কন্ডাক্টর এসে সব জানালা লাগাতে শুরু করেছে।অনুর বুক আরো কাপছে।সবাই বাজে ভাবে ওকে দেখছে।
হঠাৎ একজন বলে উঠলো,
-কি গো সুন্দরী কি দেখছো?
-ভাই বাস কোথায় থামবে?
আরেকজন উওর দিল,
-থামবে কেন?আজ সারা রাত চলবে।একে একে আমরা সবাই চালাব।হর্ন ও বাজবে।
সাথে সাথেই সবাই বিশ্রী রকমের হাসি দিল।অনু নিজেকে শক্ত করছে।নিজেকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টা করতে হবে তার।
-ভাই বাস টা থামান না।
-কেন?থামবে না।
-ভাই আমার কাপড় নষ্ট হয়েই গেছে।আর হতে দেবেন না।
-কাপড় নষ্ট হয়েছে মানে!
-আমি হসপিটাল থেকে আসছি।ডায়েরিয়া হয়েছিল আমার।
-কিহ!
লোকগুলো সব নাক টিপে এর ওর দিকে তাকাচ্ছে।
একজন বললো,
-আমাদের বোকা পেয়েছিস হ্যাঁ।
-সত্যি।তাহলে এখানে গন্ধ শুকে দেখুন।
অনুর কথা শুনে সবাই আরো দূরে ছিটকে গেল।এর ওর দিকে ইশারা করলো বাস থামাতে।একটা জায়গায় এসে বাস থামলো।
-শোন সামনে ব্রিজ আছে।যা করবি তাড়াতাড়ি কর।
অনু মাথা নাড়িয়ে বোরখা চেপে উঠে দাড়ালো
একজন অনুর পেছনে নামলো।
-আপনি কেন আসছেন ভাই?
-পাহারা দেব।কাজ শেষ করে চলে আসবি।
লোকটার কথা শেষ হতে দেরী অনু পায়ের জুতো খুলে লোকটার মাথা র দিকে ছুড়ে মারলো।হিলের শক্ত অংশ মাথায় লাগতেই লোকটা চিতকার দিয়ে উঠলো।অনু কে আর পায় কে।অনু প্রান পনে দৌড়াচ্ছে।ব্রিজের ওপর চলে এসেছে দৌড়াতে দৌড়াতে।হয় আজ সে বাচবে না হলে পানিতে ঝাঁপ দেবে।তবু নিজের সম্মান নষ্ট হতে দেবে না।অনু আর পারছে না।ব্যথায় গা টান টান হয়ে যাচ্ছে।লোক গুলো ও অনু র বেশ কাছাকাছি চলে এসেছে।
-আল্লাহ তুমি আমার সহায় হও।আমার ইজ্জত সম্মান সব তোমার হাতে।তোমার বান্দার সহায় হও।
হুট করেই হোঁচট খেয়ে মুখ থুবড়ে পড়লো অনু।মাথা তুলতে যাবে তার আগে সামনে জুতো পড়া এক জোড়া পা।অনুর আর মাথা তোলা হয়নি ।
#রৌদ্র_কুয়াশা
Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
পর্ব ১৮
;;;;;
প্রিয় পাঠক/পাঠিকা,ইনশাহআল্লাহ অমর একুশে বইমেলা ২০২১ এ প্রকাশিত হতে যাচ্ছে আমার প্রথম উপন্যাস “আবেদিতা”।সবাই পাশে থাকবেন।
;;;;;
৫৩
দূর থেকে মুয়াজ্জিনের ডাক আসছে।নামাজের জন্য আহব্বান করছে সে।পাখির কিচিরমিচির শব্দ ভেসে আসছে।আড়মোড়া দিয়ে চোখ খুলে পিটপিট করে তাকালো মাহির।পর্দার ফাকের থেকে পরিষ্কার থাইগ্লাসের থেকে দেখা যাচ্ছে বাইরে আধার কাটছে।রাতের কথা মনে পড়তেই নিজের দিকে তাকালো মাহির।একি?সে তো বালিশে শুয়ে নেই।মাহির তাকিয়ে দেখে সে ইলার কোলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে।চোখ উপরে তুলে তাকালো মাহির।ইলা দিব্যি খাটের সাথে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছে।চটপট উঠে পড়লো মাহির।নিজের প্রতি নিজের ই খারাপ লাগছে তার।নিজের ইচ্ছে পূরণ করতে গিয়ে সারা রাত সে আরামে ঘুমিয়েছে ঠিক ই।কিন্তু ইলার ঘুমের বারোটা বাজিয়েছে।বেচারী কত কষ্ট পেয়েছে।মুখ ফুটে কিছু বলতেও পারেনি।মাহির উঠে ইলাকে ডাকতে যাবে তার আগে থেমে গেল।ইলার ঘুমের প্রয়োজন।তাকে এখন ডাকা ঠিক হবে না।পরক্ষণেই তার মনে পড়লো আজান দিচ্ছে।ইলা এখন না উঠলে নামাজ কাজা হয়ে যাবে।তাই বাধ্য হয়ে মাহির ইলার গায়ে হাত দিয়ে ধীরে ধীরে ডাকতে শুরু করলো।
-পানিজল।পানিজল।উঠে পড়ো।আজান দিচ্ছে তো।
মাহির বেশ কয়েক ডাক দেওয়ার পর ইলা চোখ খুললো।চোখ কচলাতে কচলাতে মাহিরের দিকে তাকালো।
-ওঠো।আজান দিচ্ছে।নামাজ শেষ করে তারপর ঘুমিয়ে নেবে।
-হুম।
ইলা আর কথা বাড়ালো না।ঘুম চোখে ঢুলতে ঢুলতে ওয়াশরুমের দিকে গেল।মাহির এদিকে বাসি বিছানা টা ঠিক করে নিল।ইলা বের হতেই মাহির ও ওয়াশরুমে গেল।
দুজনে একসাথে নামাজ আদায় করলো।
-পানিজল।এখন ঘুমিয়ে নেও।আমি দুঃখিত।কাল রাতে আমার জন্য তুমি ভালো করে ঘুমোতে পারোনি।
-দুঃখিত বলছেন কেন?আমার সমস্যা হয়নি।
-এখন ঘুমিয়ে পড়ো তুমি।কেউ ডিস্টার্ব করবে না।
-না এখন ঘুমানো যাবে না।
-কেন?
-আপনার অফিস আছে।রান্না করতে হবে।দাদীমা কাল বার বার বলে গেছিলেন আপনি বাইরের খাবার খেতে পারেন না।খেলে অসুবিধা হয়।আপনার খেয়াল না রাখলে নাকি উনি আমাকে পাঁচ ইন্ঞি পুরুত্বের বেত দিয়ে মারবেন।ওটা দিয়ে মারলে আমার হাড়গোড় একটাও তো আস্ত থাকবে না বলুন।
ইলার বোকা বোকা কথা শুনে হো হো করে হেসে উঠলো মাহির।আদিবা বেগম তাকে হয়তো দুষ্টুমি করে কথাগুলো বলেছে।অথচ ইলা এই সামান্য কথাগুলোকেও সিরিয়াস ভাবে নিয়ে বসেছে।
ইলা মাহিরের কান্ডে অবাক হয়ে বললো,
-আপনি হাসছেন কেন?
-হাসির কথাই তো বললে।বাদ দেও।এতো চিন্তা এখন করতে হবে না।আমি নিজেও রান্না করতে পারি।ওতো ভালো পারিনা।কিন্তু পারি।
-কিভাবে?
-ঐ তো সিক্রেট।
-কি সিক্রেট?আমাকে বলুন না।
-বলব না।
-বলব না।
-দেখুন ভালোয় ভালোয় বলুন বলছি।
-না বললে কি করবে শুনি?
মাহির এক টু ইলার দিকে এগিয়ে গিয়ে কথাটা বললো।ইলা মাথাটা একটু পিছিয়ে নিয়ে মাহিরের দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে।
-কি হলো বলো?
-কিউট বদদোয়া দিয়ে দেব বলে দিলাম।
-তা কি দেবে শুনি?
-আপনার জীবনে বিয়ে হবে না বলে দিলাম।
-ও বাবা এতো বড় বদদোয়া।
-হুহ।
ইলা গাল ফুলিয়ে ঠোট উল্টে কথাটা বললো।এদিকে মাহির হাসতে হাসতে খাটে গড়াগড়ি খাচ্ছে।ইলা ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল মাহিরের কান্ডে।
-আপনি হাসছেন কেন?আজব!
-হাসব না।আমার বিয়ে করা বউ।কাল রাতে যার সাথে বাসর ছিল।সারা রাত তার কোলে মাথা রেখে ঘুমালাম।সে সকাল সকাল আমাকে বদদোয়া দিচ্ছে আমার নাকি জীবনে বিয়ে হবে না।ভাবা যায় এগুলো!
মাহির আবার হাসছে।ইলা বেশ লজ্জা পেয়ে গেল মাহিরের কথায়।নিজেই নিজেকে মনে মনে গালি দিচ্ছে।কি একটা কথা বলে ফেলেছে সে!
-দেখুন আপনি আর হাসবেন না।
-ঠিক আছে।
মাহির এবার উঠে বসলো।
-আসলে সিক্রেট টিক্রেট তেমন কিছু না।বিদেশ যখন থাকতাম তখন বাইরের খাবার খেতে আর কত ভালো লাগে বলো।তাই মাঝে মাঝে দাদীমাকে ফোন করে এটা ওটা রেসিপি শুনতাম।
-ও আচ্ছা।
-হুম।এখন ঘুমিয়ে পড়ো।আজ না হয় আমি আমার বিবিজান কে রান্না করে খাওয়াব।অখাদ্য হলেও খেতে হবে কিন্তু।
মাহির আবার হাসিতে মেতে উঠলো।ইলা চুপ হয়ে মাহিরের হাসি দেখছে।এখনো অবধি কখনো মাহিরকে এভাবে মন খুলে হাসতে দেখেনি ইলা।হাসলে মাহিরকে বেশ লাগে।টোল পড়া গাল দুটো আরো কিউট লাগে।ইলা মনে মনে এটাই ভাবছে।ইলার মনে হচ্ছে মাহিরের গাল দুটো টুক করে টেনে দিতে।
-আপনি এভাবে তো হাসি খুশি থাকতে পারেন।সব সময় কেমন একটা মন মরা হয়ে থাকেন।কেন বলুন তো?
ইলার প্রশ্ন শুনে থেমে গেল মাহির।
-মানে?
-এরকম মন মরা হয়ে না থেকে হাসি খুশি তো থাকতে পারেন।হাসলে মন ও ভালো থাকে।
-হাসতে তো চাই।হাসার কারণ তো পাই না পানিজল।আমি তো সেই কারণ টার জন্য ই বার বার তোমার কাছে ছুটে যাই।
-আমার কাছে!
-হুম।
ইলা অবাক হয়ে মাহিরের দিকে তাকিয়ে আছে।মাহির ও হাঁটুতে মুখ বাধিয়ে ইলার দিকে তাকিয়ে আছে।
দুজনেই নিরব।মাহির নিরবতা কাটিয়ে বললো,
-ঘুমিয়ে পড়ো।আমি রান্না বসাই।
-না।আমিও চলুন আপনাকে সাহায্য করি।
-না।
-দেখুন আপনার সাথে কথা বলতে গিয়ে ঘুম ভেঙে গেছে।এখন আর ঘুম আসবে না।আপনি যাওয়ার পর নিরিবিলি ঘুমাব।
-ঠিকাছে চলো।
৫৪
গরম গরম চা নিয়ে তুলি রান্নাঘর থেকে বেরোলো।সামনের ঘরের দিকে এগিয়ে গেল।কোরআন তিলওয়াতের সুর ভেসে আসছে ঘর থেকে।
-ভাইয়া আসব?
তুলি চায়ের কাপ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।আয়াত শেষ করে কোরআন শরীফে চুম্বন করে সেটা সযত্নে উঠিয়ে রাখবো আরিয়ান।
-আয়।
-তোর চা।
-দে।অনেক দিন পর তোর হাতের চা খাব।
-তুই তো আমাকে ভুলেই গেছিস।
-এ কি কথা?তোকে কি আমি ভুলতে পারি!
-তা নয়তো কি।কাল রাতে ওরকম ঘটনা না ঘটলে তো আমাকে আনতেও যেতি না।
-ওসব কিছু না।এমনিতেও আনতে যেতাম।কতো দিন তোকে দেখিনা।এই অবস্থায় এতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকিস না।আয় বস।
আরিয়ান তুলি কে ধরে এনে বিছানায় বসালো।তুলি সব সাবধানে পেট টা ধরে বসলো।সাড়ে ছয় মাসের গর্ভবতী সে।
-মেয়েটার কি অবস্থা এখন?
-এখন একটু ভালো।জ্বর কমেছে।ঘুমিয়ে আছে।
-কি বাজে একটা ঘটনার শিকার হতে যাচ্ছিল।সব সময় এ ধরনের কেস হ্যান্ডেল করি।কিন্তু এই প্রথম একদম নিজের চোখের সামনে ঘটতে দেখলাম।
-মেয়েটা বোধ হয় বিবাহিত ভাইয়া।
-বিবাহিত!
-তাই তো মনে হলো।বিবাহিত মেয়ে ছাড়া আর কোন মেয়ে তো এরকম গলায় চেইন,হাতে চুড়ি নাকে নাক ফুল,দুল এসব সব সময় পড়ে ঘোরেনা।
-জানিনা।মেয়েটাই বলতে পারবে কে ও।
-ও শরীরের দাগ গুলো দেখেছিস?
-হ্যা রে।কাল রাতে ওকে এখানে আনার পর ডাক্তার ডেকে আনি।মহিলা ডাক্তার তো
উনি ভেবেছিলেন ও আমার ওয়াইফ।তাই ওর ঘাড়ের দাগ গুলো দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করছিল এসব কি করে হলো।আমি পরে ওনাকে সব খুলে বলি।
-ওহ।কি অত্যাচার করেছে মেয়েটাকে।আমি নিশ্চিত এ বিবাহিত।আর স্বামী ই অত্যাচার করে ওকে।না হলে এতো রাতে এভাবে একা মেয়ে বাইরে ঘুরবে কেন।
-সেটাই।হতে পারে।ওনার হাতে পুরুষদের মানি ব্যাগ ছিল।ওটা খুলে দেখিনি আমি।অনুমতি ছাড়া দেখা উচিত না।উনি উঠুক তার পর দেখা যাবে।
-হুম।তুই থানায় যাবি না?
-হ্যা।এই তো তৈরী হব।
-আচ্ছা থাক।চুলায় তরকারি রেখে এসেছি।আমি যাই।
-এই অবস্থায় তোকে খাটতে হচ্ছে।
-হুর।বাদ দে তো।তোর ঐ পেয়ারি ভগ্নিপতি তো আমাকে পানিও ঢেলে খেতে দেয়না।এভাবে তো শরীর টাই জমে যাচছে আমার।একটু করলে কিছু হবে।
-আচ্ছা যা।
তুলি সাবধানে উঠে চলে গেল ঘর থেকে।আরিয়ান বসে চায়ের কাপে চুমুক দিচ্ছে।আর কাল রাতের কথা ভাবছে।
ব্রিজের ওপর দিয়ে সিগারেট খেতে খেতে গাড়ির দিকে পা বাড়াচ্ছিল সে।কোথ থেকে হুট করে একটা মেয়ে এসে পরে।একদম তার পায়ের কাছে।আর তার পেছনে লোভাতুর কিছু জানোয়ার।তাদের কথা মনে পড়তেই হাত মুষ্টিবদ্ধ হয়ে গেল আরিয়ানের।ভেতরের আগুন টা আবার জ্বলে উঠলো।আজ থানায় গিয়ে উচিত শিক্ষা দেবে ওদের।
ফোন বেজে উঠলো আরিয়ানের।ফোনের স্ক্রিনে কনস্টেবলের নাম দেখে রিসিভ করল আরিয়ান।
-স্যার।
-বলো।
-ওদের কি করব?
-তোমাদের সর্বোচ্চ থেরাপি টা ওদের দেও।কাটা জায়গায় লবন মরিচ ছিটিয়ে দিও।আমি এসে বাকিটা করব।
-ওকে স্যার।
আরিয়ান ফোন কেটে দিল।মনে মনে তার অন্য ভাবনা।সে একা হয়তো পারবেনা এই জানোয়ার গুলোকে সমাজ থেকে উৎখাত করতে।কিন্তু যতটুকু পারে ততটুকুই নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে সে করবে। তাতে যদি একটা মেয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে।স্বাধীন ভাবে নিরাপত্তার সাথে চলাফেরা করতে পারে।
৫৫
দরজার বাইরে তালা লাগানো দেখে চমকে গেলেন ইসমাত বেগম।সকাল সকাল নিবিড় অনু কে ডেকেছেন তিনি বেশ কয়েকবার।কিন্তু কোন সাড়াশব্দ পাননি তাদের।নিচে এসে দেখেন দরজায় তালা ঝোলানো।তাড়াতাড়ি নিজের ঘরে গেলেন ইসমাত বেগম।ডুপলিকেট চাবি এনে তালা খুলে ভেতরে ঢুকলেন।
-নিবিড়!
বিছানার দিকে তাকিয়ে নিবিড়কে দেখে আতকে উঠলেন তিনি।বাধা অবস্থায় নিবিড় ছটফট করছে।ইসমাত বেগম দৌড়ে গিয়ে সব বাধন খুললেন নিবিড়ের।পানির গ্লাস এনে নিবিড়ের সামনে ধরলেন।নিবিড় গ্লাস নিয়ে একটানে সব শেষ করে দিল।ঘরের অবস্থা দেখে আত্মা কাঁপছে ইসমাত বেগমের।তবে কি কাল রাতে ডাকাত পড়েছিল?এমন প্রশ্ন মনে জাগছে তার।
-নিবিড় অনু কোথায়?বাইরে দরজা ও তালা লাগানো ছিল।সদর দরজা কোন রকমে টেনে দেওয়া।
-আপনাকে বলেছিলাম না আম্মাজান ওর চরিত্র খারাপ। কোন নাগরের হাত ধরে পালিয়ে গেছে সে।
নিবিড়ের কথা বিশ্বাস হচ্ছে না ইসমাত বেগমের।অনু কেমন মেয়ে তিনি ভালো করেই জানেন।
-সত্যি করে বলো নিবিড়।তোমার গায়ে এগুলো কিসের দাগ।
আমতা আমতা করতে করতে সবকিছু খুলে বললো নিবিড়।ইসমাত বেগম আর নিজেকে সংযত করতে পারলেন না।ঠাসিয়ে দুটো থাপ্পড় বসিয়ে দিলেন নিবিড়ের গালে।
-তুমি মানুষ!মানুষ তুমি!তবে খুশি হয়েছি আমি।অনু নিজেই খাচা থেকে বেরিয়েছে।এটাই চাইছিলাম আমি।জখম ও করেছে তোমাকে।আল্লাহ দেখবেন ওকে।আমার দোয়া কবুল করেছেন তিনি।দেখবে অনু ই সুখি হবে।তুমি কাপুরুষ জ্বলবে তুমি।কয়লা হয়ে যাবে।
চলবে———-
—