#লাভার_নাকি_ভিলেন?
#পার্টঃ২৬
#লেখিকাঃ Snigda Hossain Mona
আহ আমার লাগছে ছাড়ুন,ছাড়ুন বলছি।প্লিজ ছাড়ুন ব্যাথা পাচ্ছি।একমনে আকুতি মিনতি করছে মেঘলা।
কিন্তু আকাশের কানে কিছুই ঢুকছে না সে টেনে হিচড়ে নিয়ে যাচ্ছে মেঘলাকে…..
আকাশ মেঘলাকে ঘরে নিয়ে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় ফেলে দিল আর দরজা লক করে দিল।
।
।
।
।
আকাশ মেঘলাকে ধমক দিয়ে বলল আবারো সুযোগ দিচ্ছি বল কি হয়েছে কেন এমন করছিস?
মেঘলাঃ কি হবে কিছুই হয় নি….
আকাশঃ এখন যদি না বলিস কিছুক্ষন পর কথা বলার অবস্থাতেই থাকবি না মেঘলা।
মেঘলাঃ আমার আপনাকে ভাল লাগে না…
আকাশঃভাল… খুবই ভাল কথা তাহলে আগে লাগত কি করে…??
মেঘলাঃ আগে তো বোঝি নি।
আকাশঃ তা আগে কি বোঝিস নি আর এখন কি বোঝেছিস?আগে ছেলে ছিলাম এখন কি মেয়ে হয়ে গেছি নাকি?ও আচ্ছা তোকে এখুনো বেডে নিয়ে যাইনি বেড শেয়ার করি নি সেটাই আমার দোষ?
মেঘলাঃ ছি… কি অসভ্যের মত কথাবার্তা আমি এসব বলি নি…
আকাশঃ তাহলে কি বলেছিস এটাই ত বোঝিয়েছিস…আমি আগেই যেমন ছিলাম এখনো তেমনি আছি আগে যদি ভাল লাগতে পাড়ে এখন কেন কেন লাগবে না? ও আচ্ছা টেস্ট করে দেখয়ে চাস তোকে ঠান্ডা করতে পাড়ি কিনা? আচ্ছা আমার তো কোন আপত্তি নেই চল এখুনি দেখিয়ে দেই আমি ছেলে নাকি মেয়ে…আর কেমন পাড়ি???
মেঘলাঃ আমি এসব বাজে কথা বলি নি বলেছি ওই ছেলেটা আপনার চেয়ে অনেক ভাল আপনার মত খারাপ না…
আকাশ জিন্স থেকে বেল্ট খুলে মেঘলাকে ভয় দেখিয়ে বলল তাই বোঝি…???
এই মেয়ে ভালই ভালই বলছি এসব ঘুরানি কথা না বলে সরাসরি সব বল কি হয়েছে?তুই যে আমায় কতটা পছন্দ করিস সেটা তো আমি জানি।
মেঘলাঃ কিছুই জানেন না আমি আপনাকে না ওই ছেলেটাকে ভালবাসি… আমি ওকে ছাড়া বাঁচব না…
।
অহ আচ্ছা তাহলে মরে যা…. বলেই মেঘলাকে মারতে শুরু করল আকাশ।
।
আকাশঃ কাকে ভালবাসিস বল আবার….
মেঘলা এমন মার আগে কখনো খায় নি।
সে চেঁচাচ্ছে, কাঁদছে কিন্তু আকাশের একটুও মায়া হচ্ছে না।সে একনাগাড়ে মেরেই চলেছে।
মেঘলা হাত দিয়ে বাঁধা দেওয়ার চেস্টা করছে কিন্তু তাতে মারের স্পীড তো কমছে না বরং হাতে বেশি আঘাত লাগছে, ২ হাতেই জায়গায় জায়গায় রক্ত জমে কালো হয়ে গেছে।আকাশ তবুও থামছে না।
মেঘলাঃআর মারবেন না প্লিজ,অনেক লাগছে…ব্যাথা পাচ্ছি ভাইয়া….
আকাশঃ এতক্ষন যে সুযোগ দিয়েছিলাম তখন আমাকে পাত্তা দিতে ইচ্ছে করে নি তাই না? এখন কাঁদছিস কেন?আকাশ কতটা খারাপ সেটা আজ দেখে নে আর প্রেম করার স্বাদটাও মিটিয়ে নে।
মেঘলা বেল্টের এক একটা আঘাতে কেঁপে উঠছে চোখ মুখে ভয়ের ছাপ।এতক্ষনে সে বোঝে গেছে আকাশ আজ আর মানবে না।আকাশ মেঘলাকে ততক্ষন মারল যতক্ষন না মেঘলা জ্ঞান হারাল…
মেঘলা অজ্ঞান হওয়ার পর আকাশ মেঘলাকে টেনে তুলে কোলে করে নিয়ে বিছানায় শুয়িয়ে দিয়ে বাইরে দিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল।
আকাশ বাইরে আসার সাথে সাথে নাবিলের ফোন আসল।
নাবিলঃ হ্যালো আকাশ কোথায় চলে গেছিস তুই মিটিং এ আসলি না যে…
আকাশঃ একটা কাজ পড়ে গেছিল তাই মিটিং এ যাই নি।না পেঁচিয়ে সোজাসোজি বল কি হয়েছে বল?মিটিং এ যাই নি বলে সিনিয়র না রাগ করেছে?
নাবিলঃ আরে কি বলিস তোর উপড়ে কেউ কথা বলার সাহস পাবে না নাকি?আজ থেকে সবাই জুনিয়র তুই সিনিয়র।দোস্ত তুই এতদিন ধরে যে পদ টা চাচ্ছিল আজ মিটিং এ তোকে দেওয়া হয়েছে…!!! তুই এবার থেকে দলের মাথা….তোর স্বপ্ন পুরন হয়েছে।
আকাশ কিছু বলছে না….
নাবিলঃ কি ব্যাপার তোর এতদিনের স্বপ্ন আজ পুরন হল অবশ্য তুই এটার যোগ্যই ছিলি তাই বলে খুশি হবি না?কিছু বলছিস না কেন?
আকাশঃ জাহান্নামে যাক দল এসব দিয়ে কি হবে যে জন্য ক্যারিয়ার গড়তে চেয়েছিলাম সেটাই তো হারাতে বসেছে আর কি হবে পদ দিয়ে?
নাবিলঃ কি হয়েছে আকাশ? মন খারাপ কেন?
আকাশ গম্ভির গলায় বলল মেঘলাকে খুব মেরেছি নাবিল….
নাবিলঃ মেরেছিস মানে?
আকাশঃ মেরেছি মানে মেরেছি,বেল্ট দিয়ে মেরে অজ্ঞান করে দিয়েছি।
নাবিলঃ কি বলছিস এসব? একটা মেয়েকে তুই মারলি? তাও আবার যাকে এত ভালবাসিস।
আকাশঃ তো কি করব বল আমাকে রেখে অন্য ছেলের সাথে ডেটিং এ যায়।আজ রেস্টুরেন্ট এ গিয়ে দেখি এক ছেলের হাত ধরে বসে আছে।
রাগ কন্ট্রোল করার চেস্টা করেছিলাম শেষ পর্যন্ত পাড়ি নি তাই যতক্ষন ছটফট করেছে ততক্ষনি মেরেছি।
নাবিলঃ ছি আকাশ এটা তুই কি করলি?যা এক্ষুনি হাসপাতালে নিয়ে যা।
আকাশঃ দরকার নেই মরবে না… মরার মত করে মারি নি। আগে কখনো মার খায় নি তাই সহ্য করতে পাড়েনি অজ্ঞান হয়ে গেছে কিছুক্ষন পর এমনি জ্ঞান ফিড়বে।
নাবিলঃ তুই এসব ভাল বোঝিস…লোকজনদের কত মারলি।মারার সময় যদি বলিস একটা হাঁড় ভেংগেছে তবে পরিক্ষা করে দেখা যায় একটাই ভাংগেছে তুই তো এক্সে ছাড়াই বলতে পড়িস কোন হার টা ভেংগেছে এখন যখন বলছিস কিছু হয় নি তখন হয়ত ঠিকি বলছিস কিন্তু মেঘলাকে মারাটা একদম উচিত হয় নি ও একটা মেয়ে…
আকাশঃ কিছু হয় নি কে বলল সারা শরীরে রক্ত জমে গেছে।অনেক বার বোঝিয়েছিলাম কি হয়েছে বলতে বলেছিলাম কিন্তু ও বলে নি বরং উল্টে আমাকে রাগিয়ে দিল…
নাবিলঃ আমার মনে হয় এর পিছনে কোন রহস্য আছে তাছাড়া মেঘলা এমন করার মেয়ে নয়। হয়ত এমন কিছু ঘটেছে যা তোর সাথে শেয়ার করা যাবে না।আমার মনে হয় ও কিছু একটা লুকাতে চাচ্ছে তোর কাছ থেকে এমন তো হতেই পাড়ে তোর পরিবার থেকে হয়ত ওকে বোঝানো হয়েছে তুই ওকে বিয়ে করলে তোকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হবে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা হবে তুই সব হারাবি আর তাই তোর ভালর জন্যই ও তোর থেকে দূরে সরে যেতে চাইছে…
আকাশঃ যদি সেটাই হয় আমার সাথে শেয়ার কেন করছে না?
নাবিলঃ তুই বাড়িতে রাগারাগি করবি,হয়ত ওকে নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবি তাতে তোর কস্ট করে ইনকাম করতে হবে। বিলাশবহুল জীবন ছেড়ে রাস্তায় গিয়ে দাঁড়াতে হবে তোকে।তোর পড়াশুনা বন্ধ হয়ে যাবে রাজনীতির স্বপ্ন পুরন হবে না।তাই মেঘলা চায় না তুই ওর জন্য এত কিছু হারিয়ে ফেল তাই ও তোকে রাগিয়ে দিচ্ছে যায়ে তুই ওকে ছেড়ে দিস।তানাহলে কেন তোর দেওয়া একাউন্ট দিয়েই প্রেম করবে আর তোর দেওয়া নাম্বার দিয়েই কেন ছেলেদের সাথে কথা বলবে…??বাজারে কি সিম কার্ডের অভাব নাকি ও ফেসবুকের একাউন্ট খুলতে পাড়ে না কোনটা।আর ওয়েটিং এর মধ্যে তোর কল ঢুকার পরো কেন ফোন কেটে তর ফোন ধরে না?কেন লুকিয়ে কিছু করে না?সব কেন তোর সামনেই করে?
কখনো শুনেছিস এক্স এর সামনে কেউ নিউ বিএফ কে আনে? আর এখানে তো তোদের ব্রেকাপই হয় নি রিলেশান থাকা অবস্থায় তোকে দেখিয়ে দেখিয়ে অন্য ছেলেদের সাথে প্রেম করছে কেন?
আমার তো মনে হয় এর পিছনে কোন কাহিনি আছে….তোর প্রতি মেঘলার ভালবাসাটা কে কেন্দ্র করে কেউ গেম খেলছে।মেঘলাকে ইমোশনালি ব্লেকমেইল করছে আর মেঘলা তো এমনেতেই সহজ সরল আর তারউপর যদি শুনে তোর ভালর জন্য ওর কিছু করতে হবে তাহলে তো সেটা করার জন্য ও মরে যেতেও ২ বার ভাব্বে বলে আমার মনে হয় না।
আকাশঃ নাবিল তুই এসব কি বলছিস?এগুলি আগে কেন বল্লি না আমি কি করে এত বড় একটা পয়েন্ট মিস করে গেলাম শুধু শুধু এত মারলাম মেয়েটাকে ছি ছি ছি….কোন মুখে দাঁড়াব ওর সামনে?নিজের প্রতি নিজের ঘিন্না করছে,
কোন কারন ছাড়া কুকুরের মত মেরেছি মেয়েটাকে।কতবার আকুতি করেছিল বলেছিল ভাইয়া আমার লাগছে আর মারবেন না আমি শুনি নি….আমার মরে যাওয়া উচিত,আমি তো ক্ষমা পাওয়ার ও অযোগ্য।
।
।
।#লাভার_নাকি_ভিলেন?
#পার্টঃ২৭
#লেখিকাঃ Snigda Hossain Mona
আকাশ ঘরে এসে দেখল মেঘলার জ্ঞান ফিরেছে,শুয়ে শুয়ে কাঁদছে মেঘলা।
আকাশের খুব খারাপ লাগছে কিন্তু সে বোঝতে দিতে চায় না।কারন মেঘলাকে শান্তনা দিতে গেলে সে আরো ভেংগে পড়বে।
আকাশঃ এই শুয়ে আছিস কেন….???
।
কোন সাড়া নেই মেঘলা ফেলফেল করে তাকিয়ে আছে আকাশের দিকে।
আকাশঃ কিরে কথা বলছিস না কেন? ব্যাথা করছে?
আকাশ ব্যাথার কথা বলতেই মেঘলার কান্নার আওয়াজ বেড়ে গেল।
আকাশঃ যা ভেবেছিলাম তাই হল।আকাশ মেঘলার কাছে গিয়ে বললো দেখে কোথায় বেশি লেগেছে…
মেঘলা রাগে উল্টো দিকে ঘুরে গেল….
আকাশঃ আচ্ছা এই কান ধরছি আর কখনো মারব না।এবারের মত মাফ করে দেন প্লিজ।
মেঘলা ভেংচি কাটল।
আকাশঃ আচ্ছা সুস্থ হয়ে আমাকেও মারিস…এখন ওষধ লাগাতে দে…
মেঘলা ওষধ লাগাতে চায় না কিন্তু জোর করার মত শক্তি নেই তাই আকাশ জোর করে মলম লাগাতে শুরু করল…
মলম লাগাতেই কাটা জায়গা জ্বালা করতে শুরু করল আর মেঘলাও ভ্যা ভ্যা করে কাঁদতে লাগল।
আকাশঃ কাঁদিস না প্লিজ তোর কান্না আমার সহ্য হয় না মেঘলা।একটু পড়েই ঠিক হয়ে যাবে কাঁদিস না প্লিজ।আকাশ মেঘলা বোঝাচ্ছে আদর করে দিচ্ছে কিন্তু কে শুনে কার কথা মেঘলা কেঁদেই চলেছে….
আকাশের মা এতক্ষন বাসায় ছিল না এই মাত্র বাসায় এসেছে এসেই মেঘলার কান্না শুনতে পেয়ে আকাশের ঘরে আসল।
মেঘলা শুয়ে শুয়ে কাঁদছে দেখে আকাশের মা গিয়ে বলল কি হয়েছে মেঘলা কাঁদছিস কেন?
মেঘলা ২ হাত উঁচু করে আকাশের মা কে দেখাল…
আকাশের মা অবাক হয়ে বলল কি সর্বনাশ তোকে এভাবে কে মেরেছে?
মেঘলার নিশব্দ চাহনি প্রমান করলো এটা আকাশের কাজ।
আকাশের মা সাথে সাথেই আকাশ কে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিল।
আকাশের মাঃ একটা মেয়ের গায়ে হাত তুলতে তোমার হাত কাঁপল না? এতদিন বাড়ির বাইরে গুন্ডামি করতে এখন ঘরেও শুরু করেছো…??
আকাশের মার আচারনে আকাশ অবাক হলো…
কারন তার ধারনা মেঘলাকে তার মা একদম পছন্দ করে না।
আকাশ কিছু বলল না।
মেঘলাঃ উনার কোন দোষ নেই আন্টি…ছোট বোন ভুল করলে ভাইয়ের যা করা উচিত উনি তাই করছেন…
আকাশের মাঃ কি এমন করেছিস তুই? আর যাই করে থাকিস তাই বলে এভাবে মারবে…??অমানুষ কোথাকার।তুই দাঁড়া আমি ওষধ নিয়ে আসছি।বলে উনি চলে যাচ্ছিল তখন আকাশ বলল মা দাঁড়াও একটা কথা বলতে চাই।
আকাশের মাঃ হুম বল কি বলবি…
আকাশঃ আমি আজকেই মেঘলাকে বিয়ে করতে চাই তোমরা যদি মেঘলাকে মেনে না নাও আমি আজকেই বাড়ি ছেড়ে চলে যাব…বাড়ি ছাড়ত্র আমার কোন আপত্তি নেই।তোমরা তো মেঘলাকে এটাই বোঝিয়েছো তাই না? ওকে বিয়ে করলে তোমরা মানবে না আমাকে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করবে তাই না?
আকাশের মাঃ আজব তো আমরা কেন মেঘলাকে মেনে নিব না আমরা তোকে বলেছিলাম তোকে বিয়ে করতে বরং মেঘলায় তোকে বিয়ে করবে না বলে দিয়েছে আর কেন বিয়ে করতে চায় না সেটা এখন বোঝলাম এমন জানুয়ারকে কে বিয়ে করবে?
আকাশঃ তোমরা আমাদের বিয়ে দিতে চাও? এটা আমাকে বিশ্বাস করতে বলছো তুমি? যেখানে মেঘলা এত গরীব।
আকাশের মাঃ মেঘলা গরীব মানে কি?তুই কি জানিস না তোর দাদি তার সম্পত্তির অর্ধেক মেঘলার নামে লিখে দিয়েছেন তাহলে ও গরীব হয় কিভাবে?
আকাশ অবাক হয়ে বলল দাদি মেঘলাকে সম্পত্তি দিয়েছে মানে কি?
রাবেয়া বেগমঃ হ্যা দিয়েছেন মেঘলা এতদিন তোর দাদিকে দেখাশুনা করেছে তাই এটা মেঘলার প্রাপ্য তাই দিচ্ছেন কেন মেঘলা তোকে কিছু বলে নি?
আকাশঃ কি বলছো এসব তুমি…???
রাবেয়া বেগমঃ হ্যা এটাই তো সত্যি কিন্তু তুই মন খারাপ করছিস কেন তোর তো খুশি হওয়ার কথা। মেঘলা রাজি হলেই তোদের বিয়ে হবে।।
আকাশঃ কিভাবে খুশি হব মা এতক্ষন মেঘলার আমাকে এড়িয়ে যাওয়ার একটা ভাল কারন খুজে পেয়েছিলাম কিন্তু এখন তো মনে হচ্ছে নাবিলের কথা ঠিক নয়। মেঘলা পরিবারের কারোর কথায় নয় বরং সম্পত্তি পেয়ে বদলে গেছে(মনে মনে)
মা তুমি গিয়ে ওষধ নিয়ে আসো…
রাবেয়া বেগম চলে যাওয়ার পর আকাশ আবার গিয়ে মেঘলার পাশে বসল।
আকাশঃ মেঘলা হাত জোর করে বলছি,কেন তুই এমন করছিস প্লিজ আমাকে বল….
মেঘলাঃ সত্যিই জানতে চান?
আকাশঃ হুম
মেঘলাঃ কিন্তু আমি যে আপনাকে এতটা কস্ট দিতে চাই না। সত্যিটা আপনি সহ্য করতে পাড়বেন না….
আকাশঃ কি এমন সত্যি? আমি জানতে চাই আমি সহ্য করতে পাড়ব তুই বল মেঘলা তুই কি সত্যিই আমায় ভালবাসিস না?
মেঘলাঃবলতে বাধ্য করছেন তাই বলছি,
হ্যা এটাই সত্যি আমি আপনাকে কোনদিনি ভালবাসি নি… এতদিন আমার কোন আশ্রয় ছিল না তাই আপনাকে আখরে ধরতে চেয়েছিলাম।
আমি তো প্রথমেই বোঝেছিলাম আপনি আমার প্রতি দুর্বল তাই সেটাকে কাজে লাগালাম।আমাকে আপনার বোকা বলেন কিন্তু আমি কখনোই বোকা ছিলাম না।বোকা তো আপনি…এতদিন যা যা হল সবি ছিল মিথ্যা ছিল কিন্তু আপনি বোঝেন নি এসব কিছুই ছিলি আমার প্লেনের অংশ…
সেদিনের সেই যে মাঝির বলা কথা আর আপনাকে দেওয়া সারপ্রাইজ সবি ছিল আমার সাজানো আপনাকে ফাঁদে ফেলার জন্য নাটক করেছিলাম।আমি তো জানতাম না দাদি এমন কিছু করবেন,আমি আপনাকে ফাঁসিয়ে এই বাড়িতে নিজের জায়গা করে নিতে চেয়েছিলাম আর কিছুই না। আরে আপনাকে যদি আমি এতই ভালবাসতাম তাহলে গত ১০ বছরে কেন একবারো আপনার সাথে যোগাযোগ করলাম না? একবারো ভাবেন নি?আমি চাইলে কি লুকিয়ে আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পাড়তাম না?আর সেটাও না হয় বাদ দিলাম আমি যদি আপনাকে ভালবাসতাম তাহলে সেদিন কি করে বিয়ে করতে চেয়েছিলাম? নাবিল ভাই গন্ডগোল না করলে তো সেদিনি আমার বিয়ে হয়ে যেত।ভালবাসলে কি আপনাকে ছেড়ে অন্যকারোর সামনে বউ সেজে বসতে পাড়তাম?আসলে আমি আপনাকে নয় বরং চেয়েছিলাম একটা সুখি জীবন। আর হ্যা আন্টি সত্যি বলছেন আংকেল আমার আর আপনার বিয়ের কথা বলেছিল কিন্তু আমি জানি আপনার মাও এমনি এমনি রাজি হন নি সম্পত্তির জন্য হয়েছেন আর আমি তো আপনার সাথে আমি থাকতে চাইনা তাই আমিই বিয়েতে না করে দিয়েছি।
সত্যি এটাই আপনার প্রতি আমার কোন ফিলিং নেই।সেটার প্রমান পেয়েও আপনি বোঝেন নি,যেখানে আপনি আমার পুতুল ১০ বছর ধরে গুছিয়ে রেখেছেন সেখানে আমি আপনার দেওয়া রিংগুলি খোলে ফেলে দিয়েছি এর পরেও আপনি বোঝেন নি?
আপনি আমাকে বলেছিলেন আমি যেন একটু চালাক হই কিন্তু ভাইয়া আহ আমি আপনাকে বলছি আপনি একটু চালাক হোন আজ আপনি যেভাবে ফেঁসে গেছেন এটা থেকে বের হতে আপনার অনেক সময় লাগবে….
।
।
।
আকাশের চোখ থেকে টপ টপ করে পানি পড়ছে আকাশ যেন পাথর হয়ে গেছে….
বুকে অসম্ভব যন্ত্রনা হচ্ছে নিশ্বাস ঘন হয়ে আসছে কথা বলার শক্তি সে হারিয়ে ফেলেছে….
কারন মেঘলা যা যা বলল সবি সত্যি সত্যি ঘটেছে।
মেঘলা আরো কিছু বলতে চাইল….
আকাশ মেঘলাকে থামিয়ে দিয়ে বলল কিছু কথা নাহয় না বলাই থাক… আমি হয়ত আর নিতে পাড়ব নারে মেঘলা…তুই যেভাবে প্রমান সহ ব্যাখ্যা দিলি এভাবে আর একটু বল্লে আমি হয়ত সেন্সলেস হয়ে যাব আমার নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে আমি ভাবতেই পাড়ছি না আমার এতদিনের সাজানো স্বপ্নগুলি আজ এক মুহুর্তের ঝড়ে ভেংগে গেল….
মেঘলাঃ আমি এগুলি বলতে চাই নি কিন্তু আপনি জোর করেছেন আমার কিছু করার নেই ভাইয়া ভালবাসা তো জোর করে হয় না।
আকাশ হেসে বললো ঠিকি বলেছিস জোর করে আর যাই হোক ভালবাসা হয় না।আসলে
জীবন পরিবর্তনশীল দেখ কালকের তুই আজো আছিস কিন্তু সেই তুই আর এই তুই এর মাঝে কত পার্থক্য।জানিস মেঘলা সময় বরই নির্মম মানুষ সেই আগেরটাই আছিস কিন্তু সময় টা আর নেই তাই আজ এত কাছে থেকেও আমাদের মধ্যে কত দুরত্ব।একটু আগেই এত অধিকার নিয়ে যার গায়ে হাত তুল্লাম এখন তাকে মারা তো দূর একটা ধমক দিওয়ার ক্ষমতাও আমার নেই।
এ অবস্থায় আমার কি বলা উচিত আমি জানি না কিন্তু শেষ একটা কথা বলি আমাকে নিয়ে এভাবে না খেল্লেও পাড়তি রে…
এরপর হয়ত কখনো আর কাউকে বিশ্বাস করতে পাড়ব না।
তবে কখনো আর তোকে বাধা দিব না আজ থেকে তুই মুক্ত এতদিন যা যা করেছি পাড়লে ক্ষমা করে দিস।যার সাথেই থাক ভাল থাক এটাই চাই….
আকাশ চোখের পানি মুছতে মুছতে বেড়িয়ে গেল।
আকাশ রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবছে…..
আকাশ….হুম আমিই আকাশ,সেই আকাশ
যে ছোট বেলা থেকে সে চাইত তার পরিবার তার ভালবাসাকে মেনে নিক।আজ সবাই মেনে নিয়েছে এতদিন ধরে সমাজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে যে রাতদিন মারামারি করেছে আর জীবন বাজি রেখে নিজের জায়গাটা আজ করেই নিয়েছে জানেন আজ আকাশের সব স্বপ্ন আজ পুরন হয়েছে। আজ তার মন খুলে হাসা উচিত কিন্তু হাসি তার মুখে শোভা পাচ্ছে না কারন হাজার বাধা দেওয়ার পড়েও চোখের জল যে হাসিটাকে মলিন করে দিচ্ছে।
কারন তার সব স্বপ্ন যাকে কেন্দ্র করে ছিল যে মেয়েটার জন্য সে পাগল ছিল,
অসুস্থ অবস্থাতে হাসপাতালে বেডে শুয়েও সে যে মেয়েটার ফিরে আসার অপেক্ষায় রাস্তার দিকে তাকিয়ে থাকত… আজ সেই মেয়েটা ভালবাসার সকল টান ছিন্ন করে চলে গেছে।
জানিস মেঘলা আজ থেকে এই আকাশ আর কখনো বৃস্টিতে ভিজে বলবে না আমিও তোকে ভালবাসি মেঘলা…!!!
।
।
।
চলবে…
।
চলবে…!!!