শিমুল ফুল পর্ব -১৩

#শিমুল_ফুল
#পর্ব_১৩
#জাকিয়া_সুলতানা_ঝুমুর

দুপুরে শিমুল মিজান শেখের হোটেলে যায়।দুপুরের সময় মানুষ হুড়মুড়িয়ে ভাত খেতে আসছে,মিজান শেখ ক্যাশে বসে আছে।শিমুলকে দেখে তাকায়।চেয়ারম্যানের ছেলে তার উপরে ছাত্রলীগের সভাপতি একালায় বেশ দাপট তার।রাগী,একরোখা অতিরিক্ত ধূমপান করা শিমুলকে তার খুব বেশী একটা পছন্দ না।কিন্তু সামনা-সামনি ভালোই ব্যবহার করে,বাজারে হোটেল চালায় নেতাদের তোষামোদ না করলে কিভাবে হবে?
শিমুল এগিয়ে গেলে মিজান শেখ বললো,
“কালু শিমুল বাবা আসছে খাওন দে জলদি।”

শিমুল টেবিলে না বসে মিজান শেখের পাশের চেয়ারে বসে।
কিছুক্ষণ চুপ থেকে কথা গুছিয়ে নেয়।আজকে এখানে আসার আগে অনেক ভেবেছে তার মনে হয়েছে ঝামেলা করার চেয়ে আগে পুষ্পর বাবার সাথে কথা বলাই ভালো।মিজান শেখ বললো,
“বাবা কি দিয়ে ভাত খাবে বলো।”

শিমুল মাথা নেড়ে বললো,
“চাচা ভাত খেতে আসিনি।”

“তাহলে কেন এসেছো?কোন কাজ ছিল নাকি এদিকে?”

“চাচা আমাকে বাবা থেকে জামাইবাবা বানানো যায় না?”

শিমুলের কথা শুনে মিজান শেখ স্তব্ধ হয়ে যায়।জামাই বাবা মানে!পুষ্পকে বিয়ে করতে চায়?তিনি মাথা নেড়ে বললেন,
“কি বললে বুঝলাম না।”

শিমুল মাথাটা নিচু করে গোপনে শ্বাস নেয়।নিজের বিয়ের কথা নিজে বলতে কেমন যেন লাগছে।তারপরেও বলতে হবে।পুষ্পকে নিজের করে নিতে হবে।

“পুষ্পর কথা বলছিলাম।”

মিজান অবাক হয়ে সামনে বসা তে*জী ছেলেটার দিকে তাকিয়ে থাকে।কই শিমুল আর কই পুষ্প!দুজনের বয়স,পরিবার সব কিছুই অসাদৃশ্য।তারপরেও কি কঠিন আবদার!মিজান শেখের মুখের আদল মূহুর্তেই শক্ত হয়ে যায় গম্ভীর গলায় বলে,
“কি বলছো এসব মাথা ঠিক আছে?”

শিমুল সোজা হয়ে বসে বললো,
“জ্বী।”

মিজান শেখ চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে থাকে।কোনভাবেই তার নিষ্পাপ মেয়েকে এমন রা*গী,চ*ন্ডাল ছেলের কাছে বিয়ে দেয়া যাবে না।
“এটা কোনভাবেই সম্ভব না শিমুল।”

শিমুলের কপাল কুঁচকে যায়।
“কেন সম্ভব না?”

“তুমিই ভালো বুঝ কেন সম্ভব না।”

“আমি বুঝেই আপনার কাছে আবদার করেছি।”

“তোমার বয়স আর পুষ্পর বয়সের পার্থক্য দেখেছো?”

“মনের মিল থাকলে বয়সের পার্থক্য দিয়ে কি হবে?”

“এটা সম্ভব না।”

শিমুল ঠোঁট চেপে হাসে।
“আপনার মেয়ে বলেছে আজকে যারা দেখতে আসবে পুষ্প সে ছেলেকে বিয়ে করবেনা।”

মিজান শেখ অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে।তার মেয়ে বলেছে মানে?তারপর বিস্মিত নয়নে শিমুলের দিকে তাকালে শিমুল বলে,
“পুষ্প আর আমি দুজন দুজনকে ভালোবাসি।সুতরাং পুষ্পকে আমিই বিয়ে করব।”

মিজান শেখ অবিশ্বাস্য চোখে তাকিয়ে থাকে।শিমুল আবার বললো,
“আজকে যারা আসে বলে দিবেন যে এখন বিয়ে দিবেন না।”

“আমি তোমার কাছে মেয়ে কখনোই দেবো না।”

শিমুল মাথা নেড়ে বলে,
“কেন বুঝেন না চাচা?আমার কাছেই আপনার মেয়ে সুখে থাকবে।”

মিজান শেখ কিছু না বলে চুপ করে তাকিয়ে থাকে।শিমুল মিজান শেখের হাত ধরে বললো,
“চাচা আপনার মেয়েকে আমি খুব ভালোবাসি,রানির মতো করে রাখবো।”

“যে ছেলে রাজনীতি করে যার পদে পদে শ*ত্রু তার কাছে আমি মেয়ে কখনোই বিয়ে দেবো না।”

“চাচা এগুলো কোনো ব্যাপার না।”

“শিমুল এসব নিয়ে আর একটা কথাও না।”

শিমুল ভাবে তার কথাগুলো কি বেশী কড়া হয়ে গেলো?আসলে সব জায়গায় এমন লেকচার দিতে দিতে কখন যে লেকচার চলে আসে খেয়াল থাকে না।সে উঠে দাঁড়ায়।মিজান শেখের দিকে তাকিয়ে বললো,

“চাচা আমাদের সম্পর্কের কথা শুনে পুষ্পকে আবার মাই*রেন না।আর যা বললাম মনে রাখবেন।পুষ্পকে আমিই বিয়ে করবো”

মিজান দাঁতে দাঁত চে*পে তাকিয়ে থাকে।শিমুল তার মতো চলে যায়।রেখে যায় এক বাবার বুকভরা হা*হাকার।মিজান পুষ্পকে নিয়ে এমন কথা কখনো আশা করেনি।পুষ্পকে পাখির মতো উড়তে দিয়েছিলো।

দুপুর দুইটায় ঢাকা থেকে সবাই আসে।সাথে আসে মুন্নী।পুষ্প প্রচন্ড জ্বর আর ব্যা*থা নিয়েও সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলে।ব্যা*থার দাগ ঢেকে রাখতে ফুলহাতা জামা পড়ে নেয়।সাফিনের মুখ থেকে হাসি সরছেই না।সবাই রাজি পুষ্পও রাজি।এবার বুঝি পুষ্প তার হয়েই গেলো।মিজান শেখ আসেন তার কিছুক্ষণ পরে।পুষ্পর দিকে একবার তাকিয়ে রা*গে শরীর রি রি করে উঠে।মেয়েটা এ কার সাথে জড়িয়ে গেলো?সেই তখন থেকে মাথাটা প্রচন্ড ঘুরছে,প্রেসারটা বোধহয় বেড়ে গেছে কাউকে কিছু বলল না,সবার সাথে হাসি-খুশি মুখেই কথা বলে।পুষ্পকে সাফিনের বাবা মায়ের খুবই পছন্দ হয়।তাছাড়া ছেলের যেহেতু এতো পছন্দ তাহলে আর অমত করার প্রশ্নই আসে না।উনারা জানায় সামনের শুক্রবার সাফিনের দাদী আর বোন আসলে ফাইনাল ডেট করা হবে।মাগরিবের সময় সবাই চলে যায় শুধু মুন্নী থাকে।
পথে হঠাৎ করেই সাফিনদের সি এন জি ন*ষ্ট হয়ে যায়।সি এন জির ড্রাইভার নেমে ঠিক করার চেষ্টা করে সাথে সাফিনও নামে।
তখনি বাইক এসে সাফিনের কাছে থামে।সাফিন শিমুলকে দেখেই চিনে ফেলে সেদিনের উ*গ্র ছেলেটাই এটা।
শিমুল এগিয়ে এসে কাছে দাঁড়ায়।
“কেমন আছেন?”

সাফিন অবাক হয়ে যায় দুজনের পরিচয় হয়নি যে ভালোমন্দ জিজ্ঞেস করার কোন দরকার আছে।সে চুপ করে থাকে।শিমুল আবার বলে,
“পুষ্পদের বাড়িতে গিয়েছিলেন?”

“জ্বী।”

শিমুল সোজা সাপটা বলে,
“আমি আর পুষ্প একে অপরকে ভালোবাসি।আমাদের রাস্তায় আসলে পেটের না*ড়ি*ভুঁ*ড়ি বের করে হাতে ধরিয়ে দিবো।”

সাফিন স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে।ছেলেটা ঠান্ডা মাথায় হুমকি দিচ্ছে!শিমুলের এলাকায় কোন কথা বলেও লাভ নেই তাই সাফিন কথা না বাড়িয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে।

সাফিনের এই নিরুত্তর থাকা শিমুলের সহ্য হয় না।শক্ত হাতে সাফিনের শার্টের কলার ঠিক করে বলে,
“ফোন করে জানিয়ে দেবেন আপনি এই বিয়েটা করবেন না।এখনি ফোন করেন না করুন।”

সাফিন আড়চোখে বাবা মায়ের দিকে তাকিয়ে মুন্নীর নাম্বারে ফোন দেয়,
“ভাবী আমি আপনার বোনকে বিয়ে করতে পারবোনা।”

মুন্নী আৎকে উঠে বললো,”কেন?”

“এমনি।”

এটা বলে ফোন কেটে দেয়।
শিমুল বলে,
“গুড বয়।আর যেনো এই এলাকায় না দেখি।শিমুলের ফুল তুলতে চাইলে শিমুল গাছের কাটা ফুটতেও সময় লাগবেনা।আর একবার কাটা ফুটলে যন্ত্র*নায় ম*রা ছাড়া উপায় থাকবে না।”

সি এন জি ড্রাইভারের হাতে পাঁচশো টাকার নোট দিয়ে শিমুল চলে যায়।সাফিনের খুশির জোয়ারে ভাটা পড়ে।উচ্ছাসে ফুলানো বুক হাহা*কারে নেতিয়ে যায়।শিমুল চলে যাবার পরে ড্রাইভার গাড়ি চালু করে সাফিন বুঝতে পারে গাড়ি ন*ষ্ট এটাও শিমুলের ইশারা ছিলো।

মুন্নী খুব আশা নিয়ে বলেছিলো সাফিন পুষ্পকে খুব পছন্দ করে।এখন হঠাৎ না করে দেওয়াতে মুন্নী ঘাবড়ে যায়।এদিকে মিজান শেখের প্রেশার বেড়ে বিছানায় শুয়ে পড়েছে।রোকসানা মাথায় তেল পানি দিয়ে তেতুলের শরবত বানিয়ে খেতে দেয়।মুন্নী যখন এই খবর বলে,তখন মিজান শেখ বুঝতে পারে এটাও শিমুলের গুটি নাড়ার চাল নাহলে পথেই কি এমন হলো যে না করে দিলো।তিনি অ*সুস্থ শরীরে লাফিয়ে উঠে দাঁড়ায়।পুষ্পর সামনে গিয়ে দুইগালে দু’টো থা*প্পড় দিয়ে বললো,
“বেশী বড় হয়ে গেছিস?”

পুষ্পকে হঠাৎ আ*ঘাত করায় ছিটকে পড়ে।মিজান শেখ থামে না,পুষ্পর পিঠে দুমদাম করে কি*ল বসিয়ে দেয়।পুরুষ মানুষের জোড়ালো আ*ঘাত পুষ্প সইতে পারে না।সে তার স্বরে চেচিয়ে উঠে।
মিজান শেখের গলায় তখন হুংকার।
“এতোই যখন প্রেম করার সাধ আমাকে বলতি আমি বিয়ে ঠিক করতাম।কি করলি এটা?সন্ত্রাসের খপ্পরে গিয়ে পড়লি,নিজেও মরবি আমাদেরও মারবি।”

রোকসানা বুঝতে পারে মিজান শিমুলের ব্যাপারটা জেনে গেছে।
মিজান আবার তেড়ে মারতে গেলে রোকসানা সামিনে দিয়ে গিয়ে আটকায়,
“আর মেরো না,কালকে অনেক মেরেছি।”

মিজান রোকসানার গালে একটা থাপ্পড় দিয়ে বললো,
“তুই কই থাকিস?তুই থাকতে তোর মেয়ে নোংরামি করে বেড়ায় কেমন করে?ওই ছেলের সাথে কিভাবে সম্পর্ক হলো?চোখ কই থাকে তোর?”

রোকসানা হতবাক হয়ে গালে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।বিয়ের এতো বছরে মিজান কখনো গায়ে হাত তুলেনি,আজকে মেয়ের জন্য মা*রলো!নিভে যাওয়া গলায় বললো,
“কালকে জানতে পেরেছি।আমিও জানি না।”

মিজানের সব রা*গ যেনো রোকসানার উপরে গিয়ে পড়ে।চুলের মুঠি ধরে বললো,
“মাইয়ারে কি বানাইছিস?তোর মাইয়া আর পোলা পায় নাই?আর পাইতে হবে কেন বাবা মায়ের অপেক্ষা করা গেলো না।”

রোকসানা লজ্জায় চিৎকার করতেও ভুলে যায়।মুন্নী আর পুষ্প মিজানকে ছাড়ায়।পুষ্প বলে,
“আব্বা আম্মারে ছেড়ে দাও আব্বা।”

সাথে সাথে মিজান রোকসানা কে ছেড়ে পুষ্পর গলা টিপে ধরে,
“তুই আমারে আব্বা ডাকবি না।আমার পুষ্প মরে গেছে,যেই পুষ্প অনেক লেখাপড়া করে বড় অফিসার হওয়ার ইচ্ছা ছিলো সেই পুষ্প আর নাই।”

বলিষ্ঠ হাতের আঙুলের চা*পে পুষ্পর দ*ম আট*কে যায় মুন্নী টেনে তার আব্বাকে সরায়।
কালকের আঘা*তের ব্যা*থাই এখনো তাজা।আজকের আ*ঘাত পেয়ে পুষ্পর পাখির মতো ছোট্ট নরম শরীর নেতিয়ে পড়ে যায়।আলমারির হাতল ধরে কোনরকম দাঁড়িয়ে থাকে।রোকসানা চুপচাপ চেয়ারে বসে আছে পুষ্প সেদিকে তাকিয়ে গলা ফাটিয়ে কাঁ*দতে ইচ্ছা করে কিন্তু গলা দিয়ে কোন শব্দ বের হয় না শুধু চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।মুন্নী মায়ের মাথায় হাত ভুলিয়ে দিচ্ছে।মিজান শেখের শরীর কাঁ*পছে,মাথা ঘুরিয়ে আবার পুষ্পর দিকে তাকায়।কতো স্বপ্ন ছিলো মেয়েটাকে নিয়ে।তিনি তো বিয়েও দিতে চায়নি।রোকসানা জানে বিধায় এতো চাপ দিচ্ছিলো।আজকে শিমুলের বলা কথাগুলো মনে পড়ে আবার শরীরে রাগ তরতর করে লাফিয়ে উঠে,তাকে বলে কিনা পুষ্পকে না মা*রতে।কতো সাহস তার মেয়ের উপর অধিকার খাটাতে আসে।আবার বলে কিনা বিয়ে করবে।বিছানায় থাকা টর্চ লাইট হাতে নিয়ে আবার পুষ্পর কাছে যায়।কেউ কিছু বুঝে উঠার আগে,
“পুষ্পর চুল টেনে পিঠে টর্চলাইট দিয়ে আ*ঘাত করে।এবার যে আ*ঘাতের পরিমান আরো বেশী পুষ্প চুপ করে থাকতে পারে না শব্দ করে আম্মা আম্মা বলে কেঁদে উঠে।রোকসানা পাগলের মতো এসে মেয়েকে ঝাপটে ধরে বলে,
“কি করো মেরে ফেলবা নাকি?বাপে মেয়ে মারা অমঙ্গল।”

মিজান রাগে কাঁপতে কাঁপতে বলে,
“মেরেই ফেলবো।এমন অবাধ্য সন্তান লাগবে না।”

পুষ্প তখন হাত দিয়ে তার পিঠ ঢলে যাচ্ছে এতো ব্যাথা মনে হচ্ছে ম*রে যাবে।
মুন্নী তার আব্বার হাত থেকে লাইটটা নিতে নিতে বললো,
“কি শুরু করলা আব্বা?”

এবার মিজান মহিলাদের মতো কেঁদে উঠে,
“কি শুরু করছি?তোর বোন কি করে এগুলা?শিমুল আমাকে হোটেলে এসে হু*মকি দিয়ে যায়।এই হু*মকি ধামকি শুনার জন্য মেয়ে জন্ম দিয়েছিলাম?আল্লাহ আমি মরি না কেন আল্লাহ।এতো অবাধ্য সন্তান কিভাবে হলো?”

তারপর কেঁদে কেঁদে বলে,
“আমাকে তোর বোন বলে অফিসার হবে, মা বাপের দায়িত্ব নিবে এই তার নমুনা?স*ন্ত্রাসের ঘরে গিয়ে লাঠি*পেটা খেয়েই তো কুল পাবেনা আবার দায়িত্ব?মুন্নী ওরে বের হয়ে যেতে বল,আমার পুষ্প ম*রে গেছে।”

পুষ্প তার আব্বাকে খুব ভালোবাসে।ছোটবেলা থেকেই সে বাবার আহ্লাদী মেয়ে।যখন যা চেয়েছে তাই পেয়েছে।এখন তার আব্বা এই আহাজারি শুনে পুষ্পর ম*রে যেতে ইচ্ছে করে।ব্যা*থা-বে*দনা সয়ে ছলছল নয়নে তার আব্বার দিকে তাকিয়ে আছে এই প্রথম তার আব্বা তার গায়ে হাত তুললো।মুন্নী মিজান শেখের মাথায় পানি ঢালছে।প্রেসার বেড়ে চোখ লাল হয়ে গেছে।রোকসানা পাশে বসে কাঁদছে।পুষ্পর দিকে তাকিয়ে বলে,
“সর্ব*নাশী রে তুই কি সর্ব*নাশ ঘরে আনলি।আমার সুখের সংসারে আ*গুন লাগিয়ে ছাড়লি।”

পুষ্প চোখ বন্ধ করে শিমুলকে দেখে।তার শিমুলকে সে খুব ভালোবাসে অনেক বেশি।কিন্তু তার থেকেও তার আব্বাকে সে ভালোবাসে।সারা দুনিয়ার সবার চেয়ে বেশী ভালোবাসে।তার আব্বার ক*ষ্ট তার সহ্য হচ্ছে না।পুষ্প ধীরপায়ে গিয়ে তার আব্বার পায়ের কাছে দাঁড়ায়।মিজান পুষ্পকে দেখে বলে,
“মুন্নী ওরে এখান থেকে যাইতে বল।”

পুষ্প হঠাৎ করে মিজানের পা ঝাপটে ধরে ফুপিয়ে কেঁদে বললো,
“আব্বা আমার ভুল হয়ে গেছে আব্বা।আমি আর কখনো শিমুলের সাথে দেখা করবো না।তোমরা যেখানে বিয়ে দিবে সেখানেই বিয়ে করবো।আব্বা তুমি আর টেনশন কইরো না আব্বা।”

মিজান,মুন্নী,রোকসানা সবাই কাঁদে।পুষ্প মিজানের পা আঁকড়ে ধরে বসে থাকে।
“আব্বা আব্বা আমারে মাফ করে দাও আব্বা।আমি ভালো মেয়ে হয়ে থাকবো আব্বা।তোমাদের কথার অ*বাধ্য হবো না।আজকে থেকে শিমুলের সাথে সব সম্পর্ক শেষ।আর দেখা করবো না কথা বলবো না।কথা দিলাম আব্বা।”

বাড়ির বাহির থেকে তিয়াস শক্ত করে শিমুলের কোমড়ে জড়িয়ে আ*টকে রেখেছে।শিমুল ফুসে ফুসে বলে,
“তিয়াস ছাড়।”
তিয়াস হাতের বাধন শক্ত করে পেছনে টানতে টানতে বলে,
“না ভাই।”
উনত্রিশ বছরের রা*গী এক*রোখা শিমুলের বুকে ব্যা*থা হয়,পুরু ঠোঁট মৃদু কাঁপে নাকের পাটাতন ফুলে চোখের বর্ন হয় লাল।পুষ্পর শেষ কথাগুলো শুনেই কিনা বুকটা চিনচিন করে ব্যা*থা করে চোখের কোন বেয়ে গড়িয়ে পড়ে দুই ফোট পানি।
ফুপিয়ে ফুপিয়ে বলে,”পুষ্প!তিয়াশ পুষ্প কি বললো রে?”

চলবে…..

❝মিজান বা রোকসানা দুজনকেই খারাপ মনে হতে পারে বা ভাবতে পারেন এতো মারার কি আছে?আসলে সব বাবা মা চায় ছেলে মেয়েকে দেখেশুনে ভালো বিয়ে দিতে।কিন্তু যদি শুনে রাজনীতি করে উগ্র মেজাজ,একরোখা টাইপের কারো সাথে মেয়ের সম্পর্ক তখন কেমন লাগবে?খুবই খারাপ লাগে বাবা মায়ের জায়গায় দাঁড়িয়ে ভাবুন।❞

❝আর প্রেমিক প্রেমিকার ব্যাপারে কিছু বলার নেই,প্রেমে পড়লে নাকি মানুষ পাগল হয়ে যায়।প্রিয় মানুষকে পাওয়ার অদম্য ইচ্ছা মাথায় ঝেকে বসে।কি ভালো কি মন্দ সেটা দেখার অবকাশ থাকে না।তখন নেশার মতো একটা কথাই মাথায় ঘুরে তাকে চাই যেকোনো ভাবে তাকেই চাই।এই জন্যই তো বলে,যে প্রেমের মরণ বি*ষ পান না করে সে কখনো এর জ্বালা বুঝতে পারে না।❞

❝আজকের পর্বের মতো এমন হাজারো ঘটনা চারদিকে ঘটে।হয়তো আমরা জানতেও পারি না,কতোশত মন পরিবারের দিকে তাকিয়ে ভেঙে যায়।❞

(ছেলেরা পরিবার থেকে বকা খায়,কিন্তু মাই*র বেশী খায় মেয়েরা।)

❝আজকে সবার মন্তব্য আশা করছি,যা মন চায় লিখে যাবেন।❞

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here