#শেষ_পাতার_তুমি
#ফারিয়া_আফরিন_ঐশী
#পর্বঃ২১
(
রায়ান ছলাকলা বুঝিয়ে আয়ুকে কোলে নিয়ে আবারও ঘরে গেল!!
আয়ানা ঘুমিয়ে পড়লেও রায়ানের যে চিন্তাতে ঘুম উবে গেছে!!
অপরদিকে,,
শান্ত—ট্রেইলার কেমন লাগছে সবার??সিনেমাটা কিন্তুু দারুন!!! রায়ান ছেলেটাকে যেমন ভেবেছিলাম তেমনটা না একদমই!!চেহারা বোকা মার্কা হলেও বেশ চালু!!
তবে যাই হোক আয়ুকে এমন করে আনবো যাতে রায়ান মনে ক্ষোভে আর কখনো আয়ুর খোঁজ না করে!!
অন্যদিকে,,
রায়ান আয়ুর বাবা-মায়ের খোঁজ করেও তেমন কোনো খবর পেলো না!!আয়ুর পারিবারিক ব্যাকরাউন্ডের খবর নিয়েও পারিবারিক শত্রুতার কোনো খোঁজ রায়ান পেলো না!!!
রায়ান সব ব্যাপারে বেশ ঘেটে আছে!!
আনমনে রাস্তা দিয়ে হাঁটছে!!
দিন ১৫ সে এই কাজেই ব্যস্ত!!আয়ানা এখন কিছুটা সুস্থ!! পায়ের ক্ষত ঠিক হচ্ছে!!! আচরণ এখন হুটহাট তেমন না বদলায় না!!তবে মাঝেমধ্যে বেশ উদ্ভট কথাবার্তা বলে!!!
হাইওয়ে ধরে রায়ান হাঁটার মাঝেই পকেটে থাকা ফোন খানা অসহ্য আওয়াজে বেজে উঠল!!
ফোন বের করে রায়ান দেখলো তার মায়ের ফোন!!
রায়ান–মা!!
রেশমি–বাবু,, তাড়াতাড়ি বাড়ি আয়!!সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে!!!
রায়ান–কি হয়েছে মা??
তবে রেশমি কিছু বলার আগেই ফোন কেটে গেলো!!
রায়ান দ্রুত ছুটে এসে হাতের সাহায্যে একটা অটো ডেকে উঠে পড়লো!!
বাড়ির গেটে নেমে কোনোমতে ভাড়া মিটিয়ে সদর দরজায় ধাক্কা দিতেই দরজা খুলে গেলো!!
রায়ানকে ঢুকতে দেখে,,
রেশমি হাউমাউ করে কেঁদে উঠে জড়িয়ে ধরলো রায়ানকে!!!
রায়ান–কি হয়েছে মা??কাঁদছো কেন??
রেশমি–আমার সব শেষ রে বাবা!!তোর বাবা!!!
রায়ান–কি হয়েছে বাবার??
রেশমি সেন্সলেস হয়ে ঢলে পড়লো,, রায়ান ধরে সোফাতে বসিয়ে দিল!!!
রেদোয়ানের ঘরে গিয়ে ফ্লোরে রক্ত দেখে রায়ানের বুকের মধ্যে ঢিপঢিপ করা শুরু হয়ে গেলো!!!
তাড়াতাড়ি বেরিয়ে এসে পানির গ্লাস নিতে গিয়ে দেখলো সোকেচের এক কোণায় গুটিসুটি হয়ে আয়ানা দাঁড়িয়ে আছে!!হলদে রঙের শাড়িটা রক্তে লাল হয়ে আছে!!হাতে, গলাতে অনেকটা রক্ত মেখে আছে!!ভয়ে মুখটা পানসে বর্ণ ধারণ করেছে!!ঠোঁট দুটো থরথর করে কাঁপছে!!!
রায়ান একটু এগিয়ে যেতেই আয়ানা ভয়ে আরেকটু সোকেচের গায়ে চেপে গেলো!!
রায়ান একহাত ধরে আয়ানাকে বের করে নিজের সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়!!!
রায়ান–কি হয়েছে বাড়িতে??বাবা,দাদি কোথায়??তোমার গায়ে এতো রক্ত কেন??
আয়ানা এখনও থরথর করে কাঁপছে!! রায়ান আয়ানার বাহু ধরে ঝাঁকা দিচ্ছে!!
আয়ানা রায়ানের দিকে তাকিয়ে চোখ থেকে পানি ফেলছে শুধু!!!
রায়ান দ্রুত পানি নিয়ে আয়ানার এতহাত ধরে সোফার ঘরে নিয়ে গেল!!
রেশমির মুখে পানির ছিটা দেওয়ার পর সেন্স ফিরতে লাগলো!!!পিটপিট করে রেশমিকে চোখ খুলতে দেখে আয়ানা হাতে হাত ঘষছে!!!
রেশমি চোখ খুলেই আয়ানাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে জোরে চিৎকার করে বলল–এই মেয়ে,এখনো এখানে কেন তুমি??আমার সংসার শেষ করে শান্তি হয়নি??
রায়ান–কি বলছো মা??
রেশমি–বাবু!!ও তোর বাবাকে মেরেছে!!ছুড়ি দিয়ে আঘাত করেছে মানুষটাকে!!!তোর দাদি এ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছে!!
রায়ান–আয়ু!!এমন কেন করবে মা??ভুল হচ্ছে কোথাও??
রেশমি–না বাবু!!আমি নিজে ওর হাতে ছুড়ি দেখেছি!!!আমি দেখেছি তোর বাবাকে মেরে মাটিতে ফেলে ও পাশে দাঁড়িয়ে তার মরার অপেক্ষা করছিলো!!!
রায়ান–মা হাসপাতালে চলো!!
রেশমি–তোমাকে আমি পুলিশে দেবো!!আমার স্বামীকে মেরেছো তুমি!!!
রায়ান আর রেশমি হাসপাতালে চলে গেলো!!
আয়ানা কান্নারত কন্ঠে বলল–আমি এমন করিনি!!আমি কেনো বাবাকে আঘাত করবো??আমিতো আচমকা চোখ খুলে দেখলাম বাবা ফ্লোরে পড়ে আছে!!!
কথাগুলো বলে আয়ানাও হাসপাতালের উদ্দেশ্যে ছুটল!!
জুতোছাড়া খালিপায়ে পিচের রাস্তা দিয়ে দৌড়াতে বেশ কঠিন!!
আয়ানার হাতে টাকা না থাকায় এ ছাড়া তার কাছে উপায়ও নেই!!!
হাসপাতালে পৌছে একজন নার্সের সাহায্য নিয়ে রেদোয়ান কে রাখা কেবিনের সামনে আসতেই দেখলো সবাই একদৃষ্টিতে কেবিনের দিকে তাকিয়ে আছে,,, কখন আপন মানুষের একটা খবর পাবে!!!
আয়ানা ধীর পায়ে পাশে এসে দাঁড়াতেই রেশমি উঠে সামনে এসে চাপা গলাতে বলল–বাকিটা মারতে এলে বুঝি!!!যাও মেরো ফেলো!!
আয়ানা–মা,,বিশ্বাস করো!!!
রেশমি কিছু বলার আগেই রায়ান এসে দাঁড়ালো পাশে,,
রায়ান–মা,তুমি বসো!!আমি দেখছি!!
রেশমি সরে যেতেই আয়ানা ফিরে তাকালো রায়ানের দিকে!!রায়ানের চোখ মুখ ফুলে লাল হয়ে আছে!!
আয়ানা কিছু বলতে যাবে,তার আগেই রায়ান গম্ভীর আওয়াজে বলল–বাড়ি যাও!!আর আমার পরিবারের ক্ষতি করো না!!
কথাটা বলে আয়ানার হাতে কিছু টাকা ধরিয়ে দিল!!!
আয়ানা হতবাকের মতো দাঁড়িয়ে থেকে রাস্তায় হাঁটা ধরলো!!
বাড়ি এসে উঠোনের চৌকিতে ধপ করে বসে পড়লো আয়ানা,,
সন্ধ্যা নেমেছে বেশক্ষণ!!
আয়ানা বসে কাঁদছে!!তাকে কেন সবাই দোষী বলছে তা এখনো তার বোধগম্য হচ্ছে না!!
আচমকা গেল ঠেলে কিছু লোককে ভেতরে আসতে দেখে আঁতকে উঠলো আয়ানা!!!কারণ তারা পুলিশের লোকজন ছিল!!
আয়ানা চৌকি থেকে উঠে দাঁড়ালো!!
পুলিশের পোশাক পরিহিত একজন মাঝবয়সী লোক আয়ানার সামনে এসে ভয়ংকর কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো–আপনি মিসেস আয়ানা??
আয়ানা থতমত খেয়ে ভয়ার্ত চোখে মাথা ঝাঁকালো!!
পুলিশের লোকটি বললো—আপনাকে এরেস্ট করা হচ্ছে!! আপনার স্বামী রায়ান আহমেদ রিপোর্ট করেছেন আপনি তার বাবাকে একাধিক বার খুন করার চেষ্টা করেছেন!!
আয়ানা হা করে তাকিয়ে আছে!!লোকটি মহিলা কনস্টেবলকে ইশারা করতেই সে আয়ানার হাত ধরে টেনে গাড়িতে তুলে নিলো!!!
আয়ানা গাড়িতে বসে শুধু ফোঁপাচ্ছে তাতে বিরক্ত হয়ে এক মহিলা কনস্টেবল জোড়ে ধমক দিলো!!
আয়ানা কেঁপে উঠলো!!!
থানায় আনার পর আয়ানাকে জেলে রাখা হলো!!কাল নাকি কোর্টে চালান করা হবে!!
অন্য দিকে,,
রেদোয়ানের ক্ষত থেকে রক্ত পরা বন্ধ হয়েছে!! সেন্স না আসা অবধি ডাক্তার তেমন ভরসা দিতে পারছে না!!!
রায়ান কপালে হাত ঠেকিয়ে বসে আছে!!!
চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে!!
দুদিন পর,,
রেদোয়ানের কিছুটা সেন্স ফিরেছে আজ সকালে!!!
ডাক্তার বাড়ির সবাইকে দেখার অনুমতি দিয়েছেন তবে বেশি কথা বলতে বারণ করেছেন!!
রেশমি ভেতরে গিয়ে রেদোয়ানের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে!!
দাদি ছেলের হাত ধরে দোয়া দুরুদ পড়ছেন!!
রায়ান পায়ের কাছে দাঁড়িয়ে আছে!!!
রেদোয়ান ধীর কন্ঠে –আয়ু মা!!!
রেশমি–ওর কথা একদম বলবে না!!আমার সংসারটা শেষ করে দিলো!!
রেদোয়ান বেশ কষ্ট করে বললো–না না!!
রায়ান এবার তার মাকে থামিয়ে দিয়ে বলল–তাহলে কি বলো বাবা!!!
রেদোয়ান –শান্ত!!!ও মারে নি!!ওকে তো ড্রাগ দেওয়া হয়েছিলো সকালে!!!
এটুকু বলতেই একজন নার্স এসে সবাইকে বের করে দিলো!!!
রায়ান বাইরে এসে–মা,,আমি যাচ্ছি!!
রেশমি–কিন্তুু!!
রায়ান কিছু শোনার আগেই ফোন হাতে দৌড়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে গেলো!!!
বাড়ির ফোনে ফোন করলেও কেউ যখন রিসিভ করলো না তখন রায়ান ছুটে বাড়ি এলো!!
বাড়ির সদর দরজায় তালা ঝুলতে দেখে –আয়ানা গেলো কোথায়??ওর মা- বাবার খোঁজ তো ও জানে না!!তাহলে??
উঠোনের চৌকিতে বসে পড়ল রায়ান!!!
কারো সাইকেলের বেলের শব্দে গেটের দিকে তাকাতেই দেখলো ডাকপিয়ন!!
সে এসে বললেন–রায়ান আহমেদের বাড়ি কি এটা??
রায়ান–জি!!আমিই রায়ান!!
ডাকপিয়ন –চিঠি আছে,,এখানে সই করে চিঠি নিন!!
রায়ান ভ্রু কুঁচকে –চিঠি!!!
ডাকপিয়নের দেখানো জায়গায় সই করে হাত বাড়িয়ে চিঠিখানা নিল!!
ডাকপিয়ন যেতেই চিঠির খামে দেখলো আয়শা খান নামক কেউ পাঠিয়েছে!!
খাম খুলে দেখল বেশ অনেক কাগজ!!
কাগজ বের করতেই একখানা ভাজ করা সবুজ কাগজ রায়ানের কোলে পড়লো!!রায়ান সবুজ কাগজ পাশে রেখে ওই গোটাকতক কাগজ খুলে দেখলো ডিভোর্স পেপার!!
পেপারটাতে নিজের সাইন দেখে মনে পড়লো ফর্ম টা সেই তুলে এনে সই করে রেখেছিলো!!পাশটাতে আয়ানার সই দেখে রায়ানের বুকটা ধক করে উঠলো!!
দ্রুত সবুজ কাগজ খুলে পড়তে শুরু করলো,,,
চিঠিটা আয়ানার মা পাঠিয়েছে!!
রায়ান,,
তোমার বাবা আমাদের খুব বিশ্বস্ত একজন মানুষ ছিলেন তাই তার ভরসায় আমার মেয়েকে তোমার হাতে তুলে দিয়েছিলাম!!ভেবেছিলাম মেয়েটা এবার হয়তো ষড়যন্ত্র থেকে বেরিয়ে ভালোবাসাময় পরিবার পাবে!!তবে দেখো আমার মেয়ের ভাগ্যে তাও নেই!!
যদি চিঠিটা পড়ে থাকো আমার মেয়েকে বাঁচাও!!
আয়ানা আমার ১ম পক্ষের মেয়ে!!তবে তা আজও আয়ানার অজানা!!!কারণ ও গর্ভে থাকা কালীনই ওর বাবার মৃত্যু হয়!!আমার ১ম স্বামী আহাদ,,পেশায় একজন ব্যবসায়ী ছিলেন!!শান্তর মা তখন আমার ১ম স্বামী এ্যাসিসটেন্ট হিসেবে কাজ করতেন!!শান্ত আর তার মা-বাবা আমাদের বাড়ির নিচতলার থাকতেন!!
একদিন আহাদ কাজের বাহানাতে শান্তদের ঘরে যায়!!শান্ত তখন ৭/৮ বছরের বাচ্চা!!
আহাদের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে ওর মায়ের ওপর!!শান্তর বাবা ঘরে না থাকায় আহাদ তার সুযোগ নেয়!!
ছোট্ট শান্তর সামনে তার মায়ের হাহাকার চিৎকার অবশেষে মৃত্যু!!!
শান্তর বাবা বাড়িতে ফিরে সবটা জেনে পুলিশকে খবর দেওয়ার আগেই আহাদ তাকে টাকার লোভ দেখিয়ে ব্যাপারটা আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দেন!!!
ঘটনার ৬ মাস পরে সব স্বাভাবিক হলেও স্বাভাবিক হয়নি শান্ত!!
আয়ানা তখন ৪ মাস আমার গর্ভে শান্ত আহাদের গাড়ির ব্রেকের তার কেটে দেয়!!
মাঝ রাস্তায় গাড়ি ব্রেকফেল হয়ে মারা যায় আহাদ!!!
শান্তর বাবা তখন আফজালের সাথে আমার বিয়ে দেন!সব ঠিক ছিলো!!আয়ানার যখন ১০ বছর বয়স তখন বুঝতে পারি আফজাল মেয়ে পাচারের সাথে জড়িত!!ভয়ে কখনো প্রতিবাদ করিনি!!!আমার বাচ্চার জীবন বাঁচানো দরকার ছিলো!!
আয়ুর যখন ১৮ বছর হলো তখন জানলাম শান্তও জড়িত এই বিষয়ে,,শান্ত প্রতিশোধ চায়!!আমার আর আহাদের মেয়েকে পতিতালয়ে বিক্রি করে নরক যন্ত্রনা দিতে চায় ও!!আফজালও টাকার জন্য সব করছে!!!
তাই আমি সেদিন আফজালের ইনফরমেশন ডিলের ফাইল সরিয়ে পুড়িয়ে ফেলি যাতে ডিল না হয় আর কোম্পানির লস হয়!!শান্ত বিদেশে ছিল আর শান্তর বাবার সাথে আফজালের ২ মাস আগেই কথা-কাটাকাটি হয়েছে তাই তিনিও সাহায্য করবেন না!!
মনে মনে চাইছিলাম মেয়েটাকে দূরে রাখবো তাই আফজালকে ঘুরিয়ে আয়ুর বিয়ের কথাও বলেছিলাম!!তারপর তুমি জানো!!
শান্ত ফিরে এসে আমার মেয়ের জীবনটা আবারও বিষিয়ে তুলল!!ওকে ড্রাগস দিচ্ছিল যাতে ওর আচরণ নরমাল না থাকে,,,তোমার বাবা আয়ুকে ড্রাগ দিতে দেখেছিলো তাই তাকে আঘাত করে আমার মেয়েটার দোষ দিয়ে দিলো!!তাই তোমরা ওকে পুলিশে দিয়ে দিলে!!জানিনা আমার বাচ্চার কপালে কি আছে!!কাল থেকে ৬ বার আমার সন্তানকে আঘাত করেছি যাতে সুস্থ না হয় কারণ ও সুস্থ হলেই ওর জীবনে আগুন জ্বালিয়ে দেবে শান্ত!!!
পারলে বাঁচাও আমার আয়ুকে!!!
এই আমার গোপন নাম্বার,,ম্যাসেজ করতে পারো!!যা সাহায্য দরকার আমি করবো!!!
চিঠিটা পড়ে রায়ান হতবাকের মতো বসে আছে!!একটা মেয়ের জীবনের সূচনা লগ্ন থেকে এতটা বিপদ!!আর পুলিশ!!রায়ানতো আয়ানার নামে কোনো কেস করেনি তাহলে??রায়ান আর ভাবতে পারছে না!!!
চিঠিতে দেওয়া নম্বরে একটা ম্যাসেজ করলো!!তারপর হাসপাতালে গিয়ে চিঠিটা তার মাকে দেখালো!!!
রেশমি–এখন কি করবি বাবু??
রায়ান–ম্যাসেজে ঠিকানা চেয়েছি!!আয়ুর সাথে দেখা করতে যাবো!!যেভাবেই হোক ওকে ফিরিয়ে আনতে হবে!!!
রেশমি–তোর কিছু হলে আমি বাঁচবো না বাবা!!!
রায়ান তার মাকে জড়িয়ে ধরে বলল–ঠিক এভাবেই আয়ুর মাও কাঁদছে না!!সে তো তার সন্তানের বিপদ নিশ্চিত সামনে দেখতে পাচ্ছে!!আর আয়ু আমার দায়িত্ব মা!!
রায়ান বাড়ি এসে ফ্রেস হয়ে,,আয়ানার মায়ের পাঠানো ঠিকানাতে রওনা হলো!!
অটো থেকে নেমে দেখল বেশ বড় আর নামীদামী একটা ফ্লাট!!
রায়ান গেট দিয়ে ঢুকতেই সিকিউরিটি বলল–কাকে চাই??
রায়ান–আয়ানা!!
সিকিউরিটি –ম্যাডামের সাথে দেখা করার অনুমতি নেই!!
রায়ান–আমি ওর হাজবেন্ড!!!ফোন করে এটাই বলুন!!
সিকিউরিটি ওপরে ফোন করে বলল,,তারপর রায়ানকে ওপরে যেতে দিল!!!
রায়ান লিফটে উঠে ১০ তলায় এলো,,
দরজা খোলা দেখে ধীর পায়ে ভেতরে পা রাখল,,
ঘরের মেঝে সাদা ধবধবে টাইলসের,,দামী আসবাবে ঠাসা ঘর!!
রায়ান ভেতরে এসে সোফাতে বসতেই একজন মেইড এসে পানি আর কিছু খাবার সামনে রাখলো আর জিজ্ঞেস করলো–আপনার কাকে দরকার??
রায়ান–আয়ানা!!
মেইড একবার ওপরে তাকিয়ে বলল–ম্যাম তো সম্ভবত কথা বলার মতো অবস্থায় নেই, আপনাকে হয় স্যার নয় বড় ম্যাডামের সাথে কথা বলতে হবে!!
মেইডের কথা শুনে রায়ানের মনে হতে লাগলো তার বুকে কেউ বারবার একই জায়গায় ছুড়ি দিয়ে আঘাত করছে!!!
তখনই চশমা মুছতে মুছতে আফজালের আগমন!!
আফজাল–তুমি??
রায়ান– আসসালামু আলাইকুম!!
আফজাল–কোনো দরকার??
রায়ান হালকা হেসে বলল–আমার বউকে দরকার!!দেখা করতে চাই!!
আফজাল–তালাকের কাগজ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে আর আসল কপি কোর্টে জমা দেওয়া হয়েছে আশা রাখি মাসখানেকের মধ্যে পুরোপুরি তালাক হয়ে যাবে!! এখন বলছো বউ??
রায়ান–আগে তালাক হোক!!তারপর না হয় বউ বলবো না!!!
#চলবে
১৭২৫ শব্দের পর্ব♥️😊