#সাপলুডুর_সমাপ্তিতে
তন্বী ইসলাম
০৫
অনেক চিন্তা ভাবনার পর আমি একটা সিদ্ধান্ত নেই। সন্ধ্যের পর আমি তাকে উত্তর দেওয়ার প্রস্তুতি নেই। তবে মুখে নয়, লিখে। আমি ফেইসবুকের মেসেজ অপশনে গিয়ে টাইপ করতে থাকি আমার মনের অব্যক্ত কথা।
প্রথম ভালোবাসায় ব্যর্থ সৈনিক আমি, ভেবেছিলাম তার ভালোবাসার স্মৃতি নিয়েই সামনে এগিয়ে যাবো। দ্বিতীয়বার আর কাউকে ভালোবাসবো না। তবে এই বয়সটাই যে খারাপ। এ বয়সে না চাইতেও ভালোবাসা বার বার এসে উঁকি দেয়, যে ভালোবাসার কাছ থেকে নিজেকে দূরে রাখা খুব কষ্টকর হয়ে পরে। আমিও পারলাম না তার ভালোবাসাকে দূরে ঠেলে দিলে। দ্বিতীয় বারের মতো জরিয়ে পরলাম আবারও ভালোবাসার প্রাচীরে।
মৃদুলের ভালোবাসা পেয়ে আমি প্রথম ভালোবাসাকে ভুলতে শুর করলাম আস্তে আস্তে। বার বার মনে হতে লাগলো, আমি আমার জীবনের সত্যিকারের ভালোবাসা পেয়ে গেছি। সত্যিই তাই, সে প্রচন্ড পরিমাণে ভালোবাসে আমাকে। আমার কোনো বিপদে সে আমাকে সাহস যোগায়, আমার অসুস্থতায় নিজে অসুস্থ অনুভব করে।
ধীরে ধীরে আমাদের ভালোবাসা গভীর থেকে গভীরে যেতে থাকে। সেদিন ভালোবাসা দিবসের দিন মৃদুল বায়না করে আমাকে নিয়ে ঘুরতে বেরোবে। ব্যাপারটায় বেশ ঘাবড়ে যাই আমি। আগে কখনো এমন অভিজ্ঞতা ছিলো না আমার। আমি মানা করে দেই, মৃদুল বার বার অনুনয় করতে থাকে। এটা তার প্রথম ভ্যালেন্টাইন্স, কোনো মতেই সে এটা মিস করতে চায় না। অবশেষে তার আকুতি মিনতির কাছে পরাস্ত হয়ে রাজি হয়ে গেলাম। সারাদিন ঘুরাঘুরি করলাম ভালোই… সাথে ওর কয়েকটা ফ্রেন্ড আর ফ্রেন্ডসদের গার্লফ্রেন্ডরাও ছিলো। সবাই মিলে একসাথে বেশ আনন্দ করেছি আমরা।
সেদিনের পর আমাদের ভালোবাসা আরও বেশি গভীর হয়। এমন এক পর্যায়ে আমরা পৌছে গেছি, যে দুজন দুজনকে ছাড়া বাঁচবো না।
সেদিন সন্ধ্যার পর হঠাৎ মৃদুল ফোন দিয়ে কান্নাকাটি শুরু করে দেয়৷ আমি অবাক হই। বিচলিত হয়ে প্রশ্ন করি..
“কি হয়েছে তোমার? কাঁদছো কেন এভাবে?
“আমার একটা কথা রাখবে?
“অবশ্যই রাখবো। তার আগে বলো কি হইছে তোমার?
সে তরিঘরি করে বলে উঠে
“আমরা কোর্ট ম্যারেজ করবো। মানা করবে না তুমি বলে দিলাম।
হঠাৎ এমন কথায় আমি যথেষ্ট অবাক হই। বিস্ময় নিয়ে বলি
“হঠাৎ এই কথা কেন বলছো? আর আমরা এভাবে কেন বিয়ে করবো? আমরা এখনো স্টুডেন্ট, আগে লেখাপড়া শেষ করি, তুমি কোনো চাকরিবাকরি করো, তারপর নাহয় ফ্যামিলির পার্মিশন নিয়েই আমরা বিয়ে করবো।
সে শক্ত গলায় বলে উঠলো
“এভাবে হবে না। আমরা এখনই বিয়ে করবো, আর যদি আমাকে তুমি হারাতে না চাও তাহলে কোর্ট ম্যারেজ করতে রাজি হয়ে যাও প্লিজ।
হঠাৎ তার এমন কথার মানেটা আমার বুঝে এলো না। তবে কিছু একটা হয়েছে এটা বেশ বুঝতে পেরেছি। আম বার বার প্রশ্ন করতে থাকলাম কি হয়েছে তার, সে উত্তর দিচ্ছেনা। অনেকবার জিজ্ঞাসা করার পর সে বললো
“আমার মা আমার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে।
আমি অবাক হলাম, সেই সাথে বুকে প্রচন্ড ব্যাথাও অনুভব করতে লাগলাম। যে মানুষটাকে নিয়ে আমি ঘর বাধার স্বপ্ন দেখছি, সেই মানুষটা কি আবারও অন্য কাউকে নিয়ে ঘর বাধবে?
আমি নরম হয়ে বললাম
“কি বলো এইসব? যে সমস্যাটা মেয়ে হিসেবে আমার হবার কথা ছিলো, সেটা তোমার বেলায় হচ্ছে। কিন্তু কেন? কেন তোমাকে এক্ষুনি বিয়ে করাতে চাইছেন তোমার মা?
মৃদুল কিছুটা সময় চুপ করে রইলো। আমি আবারও প্রশ্ন করলাম। সে নিরীহ গলায় বললো
“আমার মা লোভে পড়েছে।
“মানে?
“মেয়ের পরিবার অনেক বড়লোক। তাদের মেয়েকে যদি আমি বিয়ে করি তাহলে আমার ব্যাবসাটা আরো বড় করে দিবে, আর নগদ ক্যাশ দিবে কয়েক লক্ষ টাকা।
আমি বিস্ময় নিয়ে বললাম
“যৌতুকের জন্য তোমার মা তোমাকে বিয়ে দিতে চায়?
সে ভেজা গলায় বললো
“হ্যাঁ।
আমি কি বলবো কিছু বুঝতে পারছিলাম না। বুক ভারী হয়ে আসছিলো আমার। আমি নরম হয়ে বললাম
“তুমি তাকে বলো নি, তুমি বিয়ে করবে না?
“বলেছি, কোনো কাজ হয়নি। যে করেই হোক, মা আমাকে ওই মেয়ের সাথে বিয়ে করাবেনই।
আমি হতাশ গলায় বললাম
“তুমি তো আমাকে ভালোবাসো, এটা বলে দেখো তোমার মাকে।
“আমি সব বলেছি। কিছুতেই কাজ হচ্ছে না বলেই তো তোমাকে বলছি কোর্ট ম্যারেজ করার জন্য, যাতে এই উছিলায় হলেও বিয়েটা আটকাতে পারি।
আমি আবারও বললাম
“তুমি তো বললে মেয়েরা অনেক বড়লোক, তাহলে এতো টাকা যৌতুক দিয়ে তোমার সাথে কেন বিয়ে দেবার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে? চাইলে তো উনারা আরো ভালো যায়গায় তাদের মেয়েকে বিয়ে করাতে পারে?
সে নিরাশ গলায় বললো
“মেয়েটির পরিবার ধনী ঠিকই, তবে মেয়েটা ডিভোর্সি, দেখতেও কুৎসিত। অন্য কোথাও চেষ্টা করেও তারা এই মেয়ের বিয়ে দিতে পারছেনা। যে কারণে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আমার সাথে তার বিয়ে দিতে চাইছে, আর টাকার পরিমাণ এতোই যে আমার মা সেই টাকার লোভ ছাড়তে পারছেনা।।
আমি অবাক হলাম, এমন মাও দুনিয়াতে আছে যে টাকার জন্য নিজের পেটের সন্তানকেও বলি দিতে পারে?
সে আবারও আমাকে তাড়া দিতে লাগলো
“আমাকে বিয়ে করবে কিনা বলো? যদি না করো, আমি প্রয়োজন হলে সুইসাইড করবো, তবুও ওই মেয়েকে বিয়ে করবো না।
আমি কি বলবো না বলবো বুঝতে পারছিলাম না, তাকে মাথা ঠান্ডা করতে বললাম। অনেক বুঝিয়ে শান্ত করে ফোন রাখলাম। কিন্তু মনের অস্থিরতা কমছিলোনা কিছুতেই। তাকে ছাড়া আমি বাচতে পারবো না নিশ্চিত, কিন্তু এভাবে একা একা কোর্ট ম্যারেজ করাটাও আমার পক্ষে সম্ভব না। যে বাবা মা এতো কষ্টে আমাকে মানুষ করেছেন, তাদেরকে কষ্ট দিয়ে কি করে একা একা বিয়ে করি?
এই চিন্তাগুলো বার বার আমাকে তাড়া দিচ্ছিলো। পরের দিন কলেজে গেলে তার সাথে দেখা হলো। তখনও সে আমাকে একই কথা বলছিলো। আমি তাকে আমার কোর্ট ম্যারেজ করার অক্ষমতার কথা জানালাম। সে রেগে গেলো, তাকে বিয়ে না করলে সুইসাইড করবে.. নানান ধরনের কথা শোনালো। আমি ভেঙ্গে পরলাম, কি করবো না করবো বুঝতে পারলাম না। ওর কাছ থেকে দুদিনের সময় নিলাম।
এই দুইদিন অনেক ভেবেছি, বার বারই মনে হয়েছে ওকে ছাড়া আমি নিঃস্ব। কোর্ট ম্যারেজ করাটা আমার জন্য কষ্টসাধ্য, আবার ওকে ছাড়া বাচাটাও অসম্ভব। অবশেষে সিদ্ধান্ত নিলাম, ওকে ফোন দিয়ে শর্ত দিলাম, আমি কোর্ট ম্যারেজ করবো ঠিক, তবে পরবর্তীতে আমাকে পারিবারিক ভাবে বিয়ে করতে হবে আবারও। আর তার আগে পর্যন্ত আমি আমার বাড়িতেই থাকবো, আর এই ব্যাপারটাও আমাদের এখানকার কাউকে জানানো যাবেনা।
সে রাজি হলো।
যেদিন আমাদের কোর্ট ম্যারেজ হলো, সেদিন খুব ভয়ে ভয়ে ছিলাম আমি, কাজটা ঠিক করছি নাকি ঠিক করছি না, বুঝতে পারছিলাম না। সে আমাকে বার বার সাহস দিচ্ছিলো, অভয় দিচ্ছিলো, কিন্তু মন মানছিলো না। বার বার মনে হচ্ছিলো বাবা মাকে ঠকাচ্ছি না তো?
যখন রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন দিচ্ছিলাম, হাত কাঁপছিলো থরথর করে। সে সেটা খেয়াল করে তখনও আমাকে সাহস যুগিয়েছে।
বিয়ের পর আমি আমার বাড়িতে চলে এলাম, আর সে চলে গেলো তার বাড়ি। আমি চলে আসার সময় আমার দিকে সে এক নজরে তাকিয়েছিলো, আমার বেশ খারাপ লাগছিলো তখন। নিজের বিয়ে করা বর, ইচ্ছে করছিলো দৌড়ে গিয়ে জড়িয়ে ধরি, বলি সংসার করার কথা। কিন্তু এভাবে বাবা মাকে কষ্ট দিয়ে সংসার কি আদৌ সুখের হবে?
আরো অনেকগুলো দিন কেটে গেছে। সে বিয়ের পর আমার প্রতি আরও বেশি কেয়ারিং হয়েছে। যদিও আমরা এখনো এক হতে পারিনি, তবে মনের মিলন অনেক আগেই হয়ে গেছে। এর মাঝে ওর বাড়ি থেকে বিয়ের চাপ তো আছেই। সে জানিয়ে দিয়েছে তার আর আমার বিয়ের কথা, কিন্তু তার মা এটা মানতে নারাজ। তবে আমার বাপের বাড়ি থেকে যদি ওই মেয়ের ফ্যামিলির মত করে এতো এতো টাকা দেওয়া হয় তবে তারা আমাকে মেনে নিবে, নতুবা ওই মেয়েকে তাকে বিয়ে করতেই হবে।
মৃদুল নতুন সৃষ্ট হওয়া সমস্যার কথা আমাকে জানালো। আমি তাকে সাফসাফ বলে দিলাম
“আমার বাবার এতো টাকা পয়শা নেই যে তোমার পরিবারের মন খুশি করে যৌতুক দিতে পারবে। আর তাছাড়া, যেখানে তারা এখনো তোমার আমার বিয়ের কথা জানেই না সেখানে যৌতুকের কথা আসছে কোথা থেকে?
সে মৃদু কন্ঠে বললো
“আমি কখনোই তোমার ফ্যামিলির কাছ থেকে যৌতুক দাবি করবো না, আমি শুধু তোমাকেই চাই। কিন্তু আমার মা অনেক কড়া। ওরা অনেক ঝামেলা করছে।
“তুমি তোমার মাকে বুঝাও, যৌতুক দেবার মতো সামর্থ্য আমার নেই।
“মায়ের মুখে কথা বলার দুঃসাহস আমার নেই, তবুও আমি তাকে বুঝানোর চেষ্টা করবো।
আমি এবার কিছুটা রেগে গিয়ে বললাম
“শুনো মৃদুল, যদি তুমি আমাকে চাও তাহলে যৌতুকের আশা ছাড়তে হবে। আর যদি তোমার মায়ের মন ভরানোর জন্য যৌতুকের এতই প্রয়োজন হয়, তাহলে আমার আশা ছেড়ে দাও। আমি নিজের সুখের জন্য বাবা মায়ের উপর এতটা কঠোর হতে পারবোনা।
“আমি কি এটা বলেছি? আমার যৌতুক চাই না, আমার তোমাকেই চাই। আমি মাকে বুঝানোর চেষ্টা করবো।
সেদিনের পর তার উপর দিয়ে অনেক ঝড় ঝাপটা গেলো। তার মা কিছুতেই আমাকে মেনে নিবে না যদি আমার বাপ অঢেল পরিমাণ যৌতুক তাকে না দিতে পারে। ঐদিকে ওই মেয়ের পরিবার থেকেও চাপ আসছে দ্রুত তাদের মেয়েকে মৃদুলের সাথে বিয়ে দেওয়ার জন্য। তখনও পর্যন্ত ঐ মেয়ের পরিবার আমার আর মৃদুলের বিয়ের ব্যাপারে জানে না।
একটা সময় পরিস্থিতি যখন অতিমাত্রায় খারাপ হতে থাকে তখন মৃদুল ডিসিশন নেয় আমাকে এক্ষুনি তার বাড়িতে নিয়ে যাবে। এমনিতেও বিয়ে হয়েই আছে আমাদের, এখন যদি বউকে বাড়ি নিয়ে যায় তাহলে ঐ মেয়ের পরিবারও চাইবেনা শতীনের ঘরে মেয়েকে বিয়ে দিতে। তার উপর বউ ঘরে এলে মা ও নিশ্চয়ই এতটা কড়া থাকবে না। হয়তো একটু হলেও নরম হবে।
মৃদুল আমাকে চাপ দিতে থাকে তার সাথে চলে আসার জন্য। আমি অবাক হই, আমার দেওয়া শর্ত সে এতো সহজেই ভুলে গেলো কি করে? আজ ওর মায়ের করা ভুলের জন্য আমি কেন আমার বাবা মাকে কষ্ট দিবো? মৃদুলকে বুঝালাম, সে বললো আমার বিয়ের কথা যেনো ফ্যামিলিতে জানাই।
আমি মেয়ে হয়ে কিভাবে নিজের বিয়ের কথা পরিবারকে বলতে পারি?
অবশেষে সিদ্ধান্ত হলো, সে নিজে এসে আমার পরিবারের কাছে সব বলবে।
আমার বাড়িতে তখন থমথমে পরিবেশ। আমার আব্বু আর বড় ভাই বেশ চটে আছে আমার উপর। মা এক কোনে বসে আছে, চোখেমুখে বেশ দুশ্চিন্তা তার। আমি সামনেই মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছি। আমার পাশেই মৃদুল দাঁড়ানো। সে আমার আর ওর বিয়ের ব্যাপারটা সবটা জানিয়ে দিয়েছে আমার পরিবারকে। সেই সাথে তার সাথে যা যা ঘটছে সেগুলোও জানালো। সে অনুরোধ করছে বাবাকে, যেন এই বিয়েটা তিনি মেনে নেন, তাতে সে এই সমস্যাটা থেকে খুব সজনেই পরিত্রাণ পাবে, আর আমাকেও সে যথেষ্ট সুখে রাখবে।
আমার ভাই বার বার আমাকে মারতে উদ্ধত হচ্ছেন। আব্বু খুব কড়া কড়া ভাষায় আমাকে বকাবকি করছেন, মা যেনো কিছু বলার ভাষাটাও হারিয়ে ফেলেছেন। আব্বু বললেন
“এ বিয়ে আমি মানবো না কিছুতেই। তবে হ্যাঁ, তোমার মা নিজে এসে যদি আমার মেয়েকে তার ঘরের বউ করে নিতে চায় তবে আমি মেনে নিবো।।
মৃদুল খুবই ভদ্রতার সহিত বললো
“এটা কখনোই হবে না, আমার মায়ের ডিমান্ড অনেক বেশি থাকলেও আমি যদি ওকে নিয়ে বাড়িতে গিয়ে উঠি তাহলে নিশ্চয়ই তিনি তনুকে মেনে নিবেন, তবে নিজে থেকে কখনোই আসবেন না এ বিয়ের জন্য। আমি শুধু তনুকেই চাই, আমার আর কিছুই প্রয়োজন নেই। দয়া করে আপনারা মেনে নিন।
আব্বু রেগে গিয়ে বললেন
“তোমার মায়ের এতোই আত্মমর্যাদা, আর আমরা কি বানের জলে ভেসে এসেছি? উনি যদি না আসতে পারেন, তবে আমিও মেয়েকে তোমার হাতে কখনোই তুলে দিবো না। চলে যাও তুমি। আমার মেয়ের আশা ভুলে যাও।
“আপনারা যদি মেনে না নেন, তাহলে ওকে আমি এভাবেই নিয়ে যাবো। দরকার নেই আপনাদের অনুমতির
আমার ভাই রেগে গিয়ে মৃদুলকে মারতে চাইলো।
আব্বু তাতে বাধ সেধে আমার দিকে তাকিয়ে বেশ কড়া গলায় বললেন
“যদি এই ছেলেকে চাও তবে আমাদেরকে তোমার ছাড়তে হবে, ভুলে যেতে হবে এ বাড়ির মেয়ে তুমি।
আমার বুকে বাজ পরলো। এ কি বলছে আব্বু?
অন্যদিকে মৃদুল বলে উঠলো
“যদি এই মুহূর্তে আমার সাথে না আসো, তাহলে সারাজীবনের মত আমাকে হারাবে। তোমাকে ছাড়া তো আমি বাঁচতে পারবো না, তাই সুইসাইড করে হলেও তোমার ভালোবাসার প্রমাণ দিয়ে যাবো। কি করবে তুমি তনু?
নিজের ফ্যামিলির সাথে থাকতে চাও নাকি ভালোবাসাকে আপন করে আমার হাত ধরতে চাও?
চলবে…..#সাপলুডুর_সমাপ্তিতে
তন্বী ইসলাম
০৬
অন্যদিকে মৃদুল বলে উঠলো
“যদি এই মুহূর্তে আমার সাথে না আসো, তাহলে সারাজীবনের মত আমাকে হারাবে। তোমাকে ছাড়া তো আমি বাঁচতে পারবো না, তাই সুইসাইড করে হলেও তোমার ভালোবাসার প্রমাণ দিয়ে যাবো। কি করবে তুমি তনু?
নিজের ফ্যামিলির সাথে থাকতে চাও নাকি ভালোবাসাকে আপন করে আমার হাত ধরতে চাও?
একদিকে বাবা মায়ের আকুতি… অন্যদিকে ভালোবাসার হাতছানি.. কি করবো আমি?
আমি পরলাম মহা ফ্যাসাদে। আমি কোনো একজনকে চাই না, সবাইকে চাই। বাবা মাকেও চাই, আবার আমার ভালোবাসার মৃদুলকেও চাই।।
আমি মাথা নিচু করেই আব্বুকে বললাম
“আমি কাউকেই ছাড়তে পারব না আব্বু। তোমরা আমাকে জন্ম দিলে, এতো কষ্ট করে বড় করলে, মানুষের মতো মানুষ বানালে, আমি কি করে তোমাদেরকে ভুলে যাব তুমিই বলো?
আব্বু হুংকারে বলে উঠলো
“তাহলে ওই ছেলের মায়া কাটাও।
আমি আবারও নতস্বরে বললাম
“আমি ওকেও চাই আব্বু।
আচমকা ভাইয়া এসে আমার দুগালে ঠাটিয়ে চর বসিয়ে দিলো। হিংস্র কন্ঠে বলে উঠলো
“এতটা নির্লজ্জ কি করে হতে পারলি? আব্বুর মুখে মুখে এইসব বলছিস, মুখে বাধে না একবারও?
ভাইয়ার দিকে অশ্রুভেজা চোখে তাকালাম আমি, তার চোখে আগুন ঝরছে। আমি নির্লিপ্ত কণ্ঠে বললাম
“যে লাজ আমাকে আমার ভালোবাসার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে নিবে, সে লাজ আমার চাই না। ও আমার শুধু প্রেমিকই না, ও আমার বর। আমার প্রাণপ্রিয় স্বামী, আমি কি করে তাকে ছেড়ে দিতে পারি?
তখন মৃদুল আমার দিকে তার প্রসস্থ হাতখানা বাড়িয়ে দিয়ে বললো
“তুমি কি যাবে আমার সাথে?
আমি ওর হাতপানে তাকিয়ে রইলাম কিছুক্ষণ। চোখ দিয়ে পানি পরছে টুপটুপ করে। মা এসে তৎক্ষনাৎ আমার দুবাহু তে চেপে ধরে বললেন
“তোর বাপ ভাই তোর খারাপ চায় না রে মা। তুই এমন টা করিস না। যদি তোরা দুজন সত্যিই ভালোবেসে থাকিস তাহলে ওর মাকে নিয়ে আসুক। আমরা কোনো আপত্তি করবো না।
আমি মাথা নত করে দাঁড়িয়ে রইলাম মায়ের সামনে। মা আবারও মৃদুলের দিকে তাকিয়ে বললো
“তোমার মাকে খবর দাও, উনাকে আসতে বলো এখানে। দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে।
মৃদুল নরম হয়ে বললো
“আমি আগেই তো বলেছি, মা আসবে না এখানে।
“তাহলে আমরা কি করে আমাদের মেয়েকে এভাবে তোমার হাতে দিয়ে দেবো? আর কোন ভরসাতেই বা দিবো?
মৃদুল আমার দিকে তাকিয়ে বললো
“আমার প্রতি ভরসা আছে তোমার?
আমি মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ জানান দিলাম।। আব্বু এবারে বেশ রেগে গেলেন আমার প্রতি। তিনি তেড়ে আসলেন আমাকে মারতে, মা আটকাতে গেলে তাকে এক ধাক্কায় ঘরের কোনে ফেলে দিলেন। যখনই আব্বু আমাকে মারবে ঠিক তখন আর সামনে এসে দাঁড়লো মৃদুল। ভাইয়া চটে গেলো এতে। সে মৃদুলের কলার চেপে ধরে বললো
“তোর সাহস কি করে হয় আমার আব্বুর পথ আগলে দাঁড়ানোর?
সে শক্ত গলায় বললো
” উনি তনুকে মারতে চাইছিলেন তাই আটকেছি।
“তাতে তোর কি? আমার বোনকে আমার আব্বু মারবে কাটবে, নয়তো আরো কিছু করবে।
মৃদুল রক্তচক্ষু নিয়ে বলে উঠলো
“ও আমার বউ, তাই ওর গায়ে আমি কাউকেই হাত উঠাতে দিবো না।
আমাকে বউ বলায় ভাইয়া আরো ক্ষেপে গেলো, সে রাগের মাথায় মৃদুলের বুকে ঘুষি বসিয়ে দিলো দুইটা। আমার আর সহ্য হলো না। অনেক হয়েছে, নিজের ভালোবাসার হেনস্তা আর দেখতে পারছি না আমি। সিন্ধান্ত নিলাম যা হবার হবে, আমি মৃদুলের সাথেই চলে যাবো। আমার সিদ্ধান্ত শুনে মা চমকে উঠলো, তিনি বার বার আমাকে বুঝাতে লাগলেন। কিন্তু আমার কানে সে-সব কথা যাচ্ছেনা। বারবার মনে হচ্ছে, আমার কারণে মৃদুল যদি এতটা অপমান সহ্য করতে পারে, আমি কেন তার জন্য তার মায়ের দুটো কটু কথা হজম করতে পারবো না!
বাড়ি থেকে চলে আসার আগে দেখলাম আব্বু কিছুটা নির্জীব হয়ে বসে আছে, মাকেও পাথরের মতো বাবার পাশে বসে থাকতে দেখলাম। ভাইয়া হুংকারে বলে উঠলো
“জীবনে এ বাড়িমুখো হবার সাহস দেখাবি না।
আমি শক্ত গলায় বলে আসলাম
“তার প্রয়োজন হবে না বোধহয়।
সেদিন সারাটা রাস্তায় আমি অনেক কান্নাকাটি করলাম, মৃদুল আমাকে বার বার শান্তনা দিচ্ছে, মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। কিন্তু আমার মন মানছে না। যে বাবা মা আমাকে এতটা বড় করলো, আমার জন্য এতো কষ্ট করলো, তারাই আজ আমার ভালোবাসাটা বুঝলো না।
মৃদুলদের বাড়ি পৌছানোর পর হলো আরেক ঝামেলা। আমাকে দেখার পর ওর মায়ের মাথা গেলো গরম হয়ে। উনি সারা বাড়ি চিল্লাপাল্লা করে মাথায় তুলে নিলেন৷ ওর বোনেরাও দেখলাম আমাকে দেখার পর চোখমুখ বাকাচ্ছে। তিনটে বোন ওর, তিনজনই ওর ছোট, তবে স্বাস্থ্য, লম্বা, দেহের গড়নে আমার চেয়ে বড় মনে হয়। এদের মধ্যে একজনের বিয়ে হয়ে গেছে, একজন ক্লাস টেনে পড়ে এবং অপরজন ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে।
মৃদুল আমাকে তার ঘরে নিয়ে বসালো। আমি চুপচাপ বসে আছি। ততক্ষণে হন্তদন্ত হয়ে পাড়া প্রতিবেশিরা এসে জমা হয়েছে ঘরের সামনে। মৃদুলের মা আমাকে উদ্দেশে করে যাচ্ছেতাই বলে যাচ্ছেন। ফকির মিসকিনের ঘর থেকে উঠে এসেছি, তাই খালি হাত পা নিয়েই চলে এসেছি। ছেলেকেও অনেক কটুক্তিকর কথা বলছেন তিনি, মুখের ভাষা অত্যন্ত বিশ্রী। এতো বড় ছেলের সামনে কি করে একজন মা এইসব ভাষা বলতে পারেন আমার বুঝে আসেনা।
মৃদুল আমার পাশেই বসে আছে, বার বার আমাকে বলে যাচ্ছে তার মা আগের দিনের সহজ সরল মানুষ। উনার কথায় যেনো আমি কিছু মনে না করি। রাগ কমে গেলে সব ঠিক হয়ে যাবে।
আমি মৃদুলের কথায় জোরপূর্বক হাসলাম, তবে এইটুকু ঠিকই বুঝলাম ওর মা ততটাও সহজ সরল না। আমাকে বসিয়ে রেখে মৃদুল বাইরে ওর মায়ের কাছে গেলো। ওকে দেখার পর ওর মা তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলো, অকথ্য ভাষায় গালাগাল দিতে লাগলো, সাথে আমার জাত বংশ, বাপ ভাই নিয়েও কথা বলছে।
আমি শুনে যাচ্ছি নিরবে। প্রতিবেশিরা এমনভাবে আমাকে দেখে দেখে যাচ্ছে যেনো আমি চিড়িয়াখানায় খাচার ভেতর আটকে থাকা কোনো প্রাণি। আমাকে দেখার পর একেকজন একেক রকমের মন্তব্য করছে। কেউ কেউ বলছে ছেলের সাথে মানিয়েছে ভালো, কেউ বলছে শুধু এভাবে মানালেই হয় না, টাকা দিয়েও মানাতে হয়। কেউ কেউ তো সরাসরি মুখের উপর বলে দিচ্ছে, “কিগো, বিয়ে করে যে এলে, তা তোমার বাপ মা কি কি দিয়ে দিলো সাথে করে?
আমি নিরবে শুনে গেলাম কথাগুলো, উত্তর দেওয়ার মতো ভাষা আমার মুখে থাকলেও তখন ছিলাম আমি নতুন বউ। তাই সবকটি কথাই নিরবে হজম করা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না আমার।।
মৃদুল যখন বাইরে গেলো তখন ওর এক চাচী ওকে প্রশ্ন করলো,।
“কিরে মৃদুল, শুনলাম শশুরবাড়ি গিয়েই বউ রে আনছিস, তা কেমন যত্ন পাইছিস? শশুড়ে কি দিলো তোরে? বউরে গয়না গাটি সব দিয়ে দিছে তো নাকি?
মৃদুল হেসে বললও
“আমাদের বিয়েটা তো তেমন ভাবে হয় নাই চাচী, তাইলে দেওয়ার কথা কেন আসছে এখন?
তখনই ফুসে উঠলেন শাশুড়িমা। তিনি তার জা কে উদ্দেশ্য করে বললেন
“ওর মুখের মইধ্যে ঝাড়ু দিয়া দুইটা বাড়ি দে হালিমা । সবেমাত্র বউ আনছে, এই মইধ্যেই বউ এর গোলাম হইয়া গেছে। কত বড় সাহস, ওয় আমার সামনে বউ এর হইয়া উকালতি করে।
এরপর খানিক থেমে তিনি আমার উদ্দেশ্যে বললেন
“তা আমার পুলাডারে কি জাদুটুনা কইরা দিলো তোর বাপ মা মিইলা? ওতো তারাতাড়িই তোগো কথা কয় যে?
মৃদুল তখন হেসে হেসে বললো
“ও মা, তুমি মাথাটারে ঠান্ডা করো তো। কেউ আমারে জাদু করে নাই, আমি ঠিকই আছি।
এ কথার পর তিনি আগের তুলনায় দ্বিগুণ পরিমাণে ক্ষেপে গেলেন, তবে আর কোনো কথা না বলে মাটিতে বসে বিলাপ করা শুরু করে দিলেন। মায়ের এমন অবস্থা যেনো মৃদুলকে ভেতর থেকে কষ্ট দিচ্ছে। সে আর যাইহোক, মায়ের কান্না সহ্য করতে পারেনা। সে মায়ের পাশে বসে খুবই বিনয়ের সাথে মাকে থামানোর চেষ্টা করছে, কিন্তু মায়ের বিলাপ থামছেই না। এক সময় সে ব্যর্থ হয়ে তার বোনদের ডাকে। বোনেরা তাকে সাফ সাফ বলে দেয়
“আমরা কেন থামামু, তুমি আকাম করছো, এখন তুমিই মায়েরে সামলাও। আগে মনে আছিলো না মায়ের কথা?
মৃদুল বোনদেরকেও মুখের উপর কিছু বলতে পারেনা। মা বোনদের ব্যাপারে সে অত্যন্ত নরম মনের মানুষ।
অতঃপর আমি গেলাম উনার কাছে। ততক্ষণে আশাপাশের অধিকাংশ মানুষ চলে গেছে, তবে গুটিকয়েক রয়েছে। আমি গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে গেলাম তার কাছে। খুবই ধীর গতিতে তার পাশে বসে হাতে ধরতেই তিনি এক ঝটকায় আমার হাত সরিয়ে দিলেন। আমি পুনরায় তাকে ধরতে যাবো তার আগেই তিনি মাটিতে নিজ থেকে পরে গিয়ে চিৎকার করে বললেন
“মৃদুল রে, বাপ তুই কই? তোর বউ আমাকে ধাক্কা দিয়া ফালাইয়া দিছে, আমার কোমড় টা শেষ বুঝি আইজ। উনার এমন কথায় আমি থতমত খেয়ে গেলাম। আশেপাশে তাকালাম ভয়ার্ত চোখে। সবাই কেমন যেনো ফিসফিস করছে। আমাকে তার মায়ের দিকে আসতে দেখে মৃদুল সেখান থেকে উঠে গিয়ে বারান্দায় তার বোনদের পাশে দাঁড়িয়েছিলো। তার মায়ের চিৎকারে সে আবারও হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এলো। পেছন থেকে তার বোনেরা তখন সমস্বরে বলে উঠলো
“তোমার এতো গুণের বউ আসতে না আসতেই আম্মারে ধাক্কা দিয়া ফালাইয়া দিলো, কোন জমিদারের ঘর থেকে তুলে আনছো তারে? এখনই এতো পাওয়ার, বাকি দিন তাইলে কি করবো!
সে কিছু বললোনা। আমি একবার তাকালাম তার বোনেদের দিকে। তারা মুখ বাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলো।। মৃদুল খুবই যত্নসহকারে তার মাকে ধরে এনে বিছানায় শুইয়ে দিলো। আমাকে বললো উনার সেবাযত্ন করতে। প্রথম দিনেই আমার উপর এতবড় একটা বদনাম দিলেন তিনি, যার কারণে ইচ্ছে হলোনা তার পাশে দ্বিতীয় বার যাওয়ার। কিন্তু যেতে তো হবেই। আমি গেলাম, তার সেবাযত্ন করলাম। তিনি তখন আর কিছু বললেন না।।
সেদিন রাতে ছিলো আমাদের বাসর রাত। ছোট বেলা থেকেই প্রচুর স্বপ্ন ছিলো আমার বাসর ঘড়টা সুন্দর সুন্দর ফুল দিয়ে সাজানো থাকবে। তবে বাস্তবে হলো তার উলটো। বড় ঘরে দুটো বিছানা। একটাতে আমার শাশুড়ি গিয়ে শুয়ে পরলেন। আরেকটায় আমার দুই ননদ। মৃদুলের ঘরেও আমার যায়গা হলো না। আমার আরেক ননদ তার স্বামীকে নিয়ে এ ঘরে শোবার বায়না করলও তার ভাইয়ের কাছে। এ ঘরের বিছানাটা নাকি খুব নরম, তার বরের ইচ্ছে হয়েছে এখানে থাকার। মৃদুল এমতাবস্থায় আমার দিকে একবার অসহায়ের মতো তাকিয়ে তার বোনকে বলেলো
“আজ হঠাৎ আমার রুমে থাকতে ইচ্ছে হলো তোর বরের। তোরা এখানে থাকলে তনু থাকবে কোথায়?
আমার ননদ হেসে বললো
“আম্মা বলছে আজকের রাতটা ভাবীরে নিয়া বারান্দার রুমে থাকতা। তাছাড়া কাল তো ও চলেই যাবে। আর তাছাড়া সারাজীবন ভাবিরে নিয়া তো এই ঘরেই থাকবা, আইজ নাহয় আমরাই থাকি।
মৃদুল হাসিমুখে সেটা মেনে নিলো। যাই হয়ে যাক, মা বোনের মনে কষ্ট দেওয়া যাবে না আর। এমনিতেই অনেক বড় একটা কষ্ট মাকে দিয়ে বসেছে অলরেডি।
মৃদুল আমাকে সাথে করে বারান্দায় রুমটায় গেলো। ভাবলাম, ছোটখাটো একটা রুম বুঝি। কিন্তু রুমের ভেতরে গিয়ে থ মেরে গেলাম।। এটা কি করে একজন মানুষের থাকার রুম হতে পারে। রুমের এক কোনে একটা সিঙ্গেল চকি পাতা। তার উপর পাতলা একটা কাথা বিছানো, আর তেল চিটচিটে একটা বালিশ রাখা। আমি অবাক হয়ে মৃদুলের দিকে তাকালাম, বিস্ময় নিয়ে বললাম
“এ রুমে এ কে থাকতো?
” কেউ থাকে না এখানে। পুরনো জিনিসপত্রই পরে থাকে এখানে
“তাহলে এই কাথা বালিশ?
” আমাদের জন্যই বোধহয় রেখে গেছে ওরা।
আমি অবাক হলাম তার কথায়। এমন নোংরা বিছানায় মানুষ কি করে থাকতে পারে? তার উপর একটা মাত্র বালিশ, তাও আবার তেল চিটচিটে। উপর দিকে তাকিয়ে দেখলাম মাথার উপর কোনো ফ্যান নেই,এই গরমের দিনে ফ্যান ছাড়া কি করে থাকা যায়?
সে আমার মনের অবস্থা বুঝতে পেরে মৃদু গলায় বললো
“আজকের রাতটাই তো, একটু কষ্ট করে সয়ে নাও। কাল থেকে তো আমরা আমাদের রুমেই থাকবো। ছোট বোনের আবদার, ফেলি কি করে বলো।
চলবে…