সাবিহার বিয়ে পর্ব ৪+৫+৬

সাবিহার বিয়ে”
পর্ব -৪-৬
সাবিহা
আর মেহবুবের বিয়ের প্রায়১মাস চলছে। ওর শাশুড়ির অসুস্থতার খবরে ওর বাবার বাড়ি হতে লোকজন আসল তাকে দেখতে। ও ওর মা বাবাকে দেখে কেঁদেছে খুব, তারা বার বার ওকে বুঝিয়েছে যে বিয়ের পরে এমন একটু কষ্ট হয় প্রথম প্রথম। ওকে সবার সাথে মানিয়ে নিতে বলল তারা। ও কিভাবে বুঝাবে আসলে সমস্যাটা কোথায়!! আসলে ও এখনই এই পরিস্থিতিতে কাউকে কিছুই বলতে চায় না। ও শুধু একটা কথাই জানে যে ও ওর মা বাবার অনেক আদরের ছোট মেয়ে। ওর কোন খারাপ অবস্থা তারা সহ্য করতে পারবে না। তারা মরে যাবে ওর টেনশনে আর ওর বড় বোন পাগল হয়ে যাবে।তখন ও কি নিয়ে বাচঁবে!!!? মেহবুবের মায়ের আসুস্থতার সময় ওর দুই বোন আর ওর ভাইয়ের আস্থিরতা নিজের চোখে দেখেছে। একটু হলেও বুঝতে পারছে মা বাবা হারানোর ভয়টা কি জিনিস, তাদের জন্য ও হাজারটা মেহবুবের কষ্ট সহ্য করতে রাজি। . সাবিহা সারাদিন হসপিটালে ব্যস্ত থাকে, ইচ্ছে করেই সারাদিন নিজেকে ব্যস্ত রাখে যাতে করে ওর মেজবুবের নিত্যকার খারাপ আচারন মনে না পরে।বাহিরেই খায়, রাতে বাসায় ফিরে তখন নিজের পড়া বা ওর ননদ জা বা শাশুড়ির সাথে গল্প করে কাটায়। তারা ওর আর মেহবুবের কথা শুনতে চায় কিন্তু ও কথা ঘুরিয়ে ফেলে। অনেক রাত করে মেহবুব বাড়ি ফিরত ও তার আগেই সোফায় শুয়ে পরত।কোন কোন দিন রাতে মাতাল হয়ে বাড়ি ফিরত, গন্ধে আর ভয়ে চুপসে ও বারান্দায় চলে যেত। ওখানেই ঘুমিয়ে পড়ত। আবার সকাল আটটার মধ্যে বাসা দিয়ে বের হয়ে যেত। ইচ্ছা করত না ওর বাড়ির খাবার মুখে দিতে। . মাঝে চেষ্টা করছে মেহবুবের সাথে সমস্যাগুলো নিয়ে কথা বলতে কারন এভাবে আর কতদিন!!? কিন্তু ও এমন রাগী রাগী কথা বলত ওর ইচ্ছাই করত না লোকটার চেহারা দেখতে। মাঝে ভাবল সব ছেড়ে ছুড়ে ঢাকায় ওর বোনের বাসায় গিয়ে থাকবে,আর আসবে না। পরে মেহবুবকে ডির্ভোস দিয়ে খলনায় পোষ্টিং নিয়ে বাবার বাসায় চলে যাবে। ওর মায়ের দিকে তাকিয়ে এতদিন সহ্য করছে কিন্তু তার ছেলে তো ওর ওর প্রতি কোন মায়া দেখায় নাই তাহলে কেন সহ্য করবে আর!!!বন্ধুবান্ধব, মা বাবা, বোন, আত্মীয় সব্জন সবার কাছে মিথ্যা সুখী ভাব ধরতে গিয়ে আজ ও ক্লান্ত। . এরই মাঝে রাতে ওর শাশুড়ি আর শ্বশুর ওকে তাদের রুমে ডাকল। -মা তোমাদের তো বিয়ের অনেক দিন হল এরই মধ্যে তোমার শাশুড়ি অসুস্থ হল, তোমার দিন রাত সেবার জোরেই তাকে ফিরে পেলাম, বাসায় আসার পর মানুষের আসা যাওয়া, তাদের সামলানোর সাথে সাথে তোমার হসপিটালের কাজ করা নিশ্চই তুমি ক্লান্ত। আমার বিভিন্ন কাজের মধ্যে মনেই ছিল না আমার ঘরে নতুন একটা বউ আসছে। -না বাবা, আমি ঠিক আছি। -না মা এটা আমার দায়িত্ব তোমার খেয়াল করা। তোমার শাশুড়ি আর আমি চাই তোমরা কয়দিন ঢাকার বাইরে গিয়ে ঘুরে আস। সাবিহার মনে হল ওর মাথায় আকাশ ভেংগে পরল, কি বলে এই লোক!! দুনিয়ার সবথেকে খারাপ লোকটার সাথে যাবে ও ঘুরতে তাও যেত যদি ওরা একে ওপরকে মানত। একবার মনে মনে ভাবল সব সমস্যার কথা বলবে কিনা পরে ভাবল থাক। -আচ্ছা মা, তুমি একটু মেহবুবকে ফোন দাও তো ওর ছুটির হিসেবটা মিলিয়েই আমি টিকিট কাটব। . এবার কি হবে ওর কাছে তো ঐ লোকের নাম্বারও নেই। ও বলল যে আমি রুমে গিয়ে ফোন দেই।বলেই দৌড়ে চলে আসল। ওর শাশুড়ি হেসে ফেলল সে ভাবল হয়ত ও তাদের সামনে কথা বলতে লজ্জা পাচ্ছে। ও রুমে এসে চুপচাপ বসে রইল, এখন কি হবে!!!ওর কাছে তো নাম্বারও নেই এসব ভাবতে ভাবতে ওর জায়ের রুমে গেল। ভাবিকে বলল-ভাবি তোমার দেবরের নাম্বারটা দেয়া যাবে?? আমি হারিয়ে ফেলেছি। ওর জা মুচকি হেসে বলল-সাবিহা আমি কিন্তু সব জানি বোন। মা বাবা দুপুরে আমার সামনেই তোমাদের ব্যাপারে আলোচনা করেছে তোমার ভাইয়ার সাথে। তোমাকে শুধু একটা কথাই বলব যে আমার দেবরটা কিন্তু খারাপ না, সময় ওকে খারাপ বানিয়েছে। তুমি প্লিজ একটু সময় নাও। সব ঠিক হয়ে যাবে।
.
পর্ব-৫

রুমে গিয়ে ফোন দিল মেহবুবকে ওপাশ হতে কিছুক্ষণ পর ফোন ধরল ও। -হ্যালো, আপনি কি মেহবুব বলছেন? -জি, কে আপনি? -আমি সাবিহা। আপনার সাথে কথা বলার ছিল। বাবা আপনাকে ফোন দিতে বলেছে। -তুমি আমার নাম্বার কিভাবে পেলে? আর তোমার সাহস কিভাবে হয় আমাকে ফোন দেয়ার? কথাটা শুনার সাথে সাথে ওর চোখে পানি চলে আসল। কিছু বলতে যাবে ওমনি দেখে ওর শাশুড়ি দরজায় দাঁড়িয়ে, ও সাথে সাথে ফোন কেটে দিল।ওর চোখে পানি দেখেই সে বুঝে নিয়েছে। বলল- মা শোন মেহবুব আসলে ওকে বলবি আমার রুমে আসতে। আর ও বকা দিলে তুই কাঁদবি কেন? আসলে ব্যস্ত থাকে তো তাই রাগ করছে। বাসায় ফিরলে তুই উলটো ওকে বকা দিয়ে দিবি। ওর শাশুড়ি যাবার কিছুক্ষণ পর ওর জা আসল বুঝল ওর মন ঠিক করতে সেই পাঠিয়েছে। -এই সাবিহা আসো তোমার প্যাকিং করে দেই। আরে উঠ তো। মুখ কাল করে বসে থেক না। ও দৌড়ে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিয়ে ভাবিকে জড়িয়ে ধরে খুব কাঁদল। আসলে ও এ একটা মাস যতটা কষ্ট পেয়েছে তা মুখ ফুটে কাউকে বলতে পারেনি আজ একটা সান্ত্বনার কাধ পেয়ে সব দুঃখ গুলো চেপে ধরেছে। সব এখন পর্যন্ত যা যা হয়েছে সব বলল। ভাবি বলল-দেখ সাবিহা এটা ঠিক তোমার বয়স কম আর মেহবুবের উচিৎ ছিল তোমাকে সময় দিয়ে সব সমস্যাগুলো বলে ফেলা। ও যদি সংসার নাই করতে চায় তাহলে শুধু শুধু তোমার জীবনটা কেন নষ্ট করল, তার মা আর বাবাকে দেখানোর জন্য??? -ভাবি আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আজ এতটা খারাপ বিহেভ করল ফোনে। আমি কোনদিনও এতটা অপমানিত হই নি কারও কাছে।তুমিই বল আমি কি করব? -তুমি ধৈর্য হারা হয়ো না, শান্ত হও।আমি এব্যাপারে তোমার ভাইয়ার সাথে কথা বলব। -উনি যদি রাগ করে? -রাগ করলে করবে, তুমি একটা এস্টাবলিসড মেয়ে তুমি কেন ওকে ভয় পাবা?? ওর কোন অধিকার নেই তোমার লাইফ নষ্ট করার। -আচ্ছা ভাবি তুমি যা ভাল মনে করার কর। কিন্তু আমি ঐ লোকের সাথে কোথাও যাব না। -সাবিহা, পাগলের মত কথা বল না। যেহেতু একটা সময় পেয়েছ একটু কাছাকাছি থেকে নিজেদের জানার সুযোগটা হাত ছাড়া কর না। আমি তো তোমাকে বলেছিই, আমার দেবর ওতটাও খারাপ না যতটা তুমি ভাবছ, তুমি নিজেই একদিন আমাকে বলবা দেখ। এই বলে ভাবি চলে গেল।সাবিহা বিছানায় বসে মনে মনে বলল-এটা তোমার ভুল ধারনা ভাবি তোমরা তো এই লোকের বাইরেরটা দেখ আর আমি তো বন্ধ রুমে খারাপ আচারন গুলো দেখি। সে কোনদিন বদলাবে না। নিজের মনেই একটা দীর্ঘ শ্বাস বের হয়ে আসল। . ওদিকে মেহবুব অফিসে রাগে অস্থির। এই মেয়ের এত সাহস, ওকে ফোন দিয়ে বলে যে বাবা ফোন দিতে বলছে। ওকে ওর ওয়াইফের কোন মর্যাদাই দেয় নি কেন শুধু শুধু ওর বাড়িতে ও পরে আছে???ও তো ভাবছিল শিক্ষিত মেয়ে, নিজের সস্মান আছে। বিয়ের ররাতে খারাপ বিহেবে পরদিনই চলে যাবে কিন্তু না সে যায় নি পরে ভাবছিল ওর মা অসুস্থতার জন্য হয়ত যায় নি, সে সুস্থ হলে চলে যাবে। নাহ আজ একটা মাস হল এখনও যাচ্ছে না। সাবিহা যখন দিনরাত পরিশ্রম করে ওর মাকে সুস্থ করে তুলল তখন ওর খুব ভাল লাগছিল, আসলে ও তো এমন বউই চাইছিল যে ওর মা বাবাকে নিজের করে আগলে রাখবে। ওকে একটা ধন্যবাদ দিতে চাইছিল কিন্তু পরে ও হয়ত নরম হয়ে যাবে ওর প্রতি এই ভেবে আর দেয় নি আর ও তো চায়ই ওকে তাড়াতে। ও শুধু মাএ বিয়ে করেছে ওর মা বাবার জন্য। মেহবুবের মনের ধারনা সব মেয়েরা রিতার মত। সবার মনের মধ্যে থাকে কিভাবে পুরুষকে ফাঁদে ফেলানো যায়। যখন আর ভাল লাগবে না তখন ছেড়ে ছুড়ে অন্য দিকে ঝুকবে।তাই তো আজ ওকে ও বাবার কথা বলে ফোন দিছে, ওকে ওর প্রতি আকৃস্ট করার ফন্দি। কিন্তু ওর মনে কোন মেয়ের জন্য জায়গা নেই। এসব ভাবতে ভাবতে ও গাড়ি থেকে নামল, বাসায় ঢুকে সোজা ওর রুমে গিয়ে দেখল সাবিহা ওর ব্যাগ গুছাচ্ছে । দরজাটা আটকিয়ে ওর হাত ধরে টেনে বলল -তোমার এতবড় সাহস তুমি আমার মুখের উপর ফোন কেটে দিয়েছ। -তাহলে কি করব? আপনি আমার সাথে কেন বাজে বিহেব করেছেন? -বাজে বিহেব তো তুমি আরও দেখবা। খবরদার আমাকে ক ন্টোল করার চেষ্টা ছেড়ে দাও। এই বলতে বলতে মেহবুব ওর হাত জোরে চেপে ধরল ও ব্যাথায় আহ্ করে উঠল আর চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ল।সাথে সাথে ও ওর হাত ছেড়ে দিল। তখন মেহবুব ওর দিকে ব্যাথাতুর দৃস্টিতে কয়েক সেকেন্ড তাকিয়ে থাকল। পরে সরি বলে ওয়াশরুমে চলে গেল। হঠাৎ এই পরিবর্তন ওর সাবিহার মনে ধাক্কা দিল। . ওয়াশরুমে গিয়ে বেসিনের আয়নায় মেহবুব নিজেকে দেখে ভাবল ওকি সত্যি এমন???!!! দিন দিন ও কঠিন হয়ে যাচ্ছে, দোষ তো সব রিতার যে ওকে ঠিক মত থাকতে দিচ্ছে না, এই মেয়েটার তো কোন দোষ নেই। আজ সাবিহার কান্না সত্যি ওকে নাড়া দিয়ে গেছে। বাথরুম হতে বের হয়ে দেখে বাবা আর বড় ভাইয়া বসে আছে। -কি ব্যাপার হঠাৎ তোমরা? -তোর সাথে জরুরী কথা ছিল। বাবা বলল-তুই যে এখনও তোর মাথা হতে ওই মেয়ের চিন্তা নামাতে পারিস নি তা তো জানতাম না। -কি বলছ তোমরা? আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। ভাইয়া রেগে গিয়ে বলল-তুই নাকি প্রতিনিয়ত সাবিহার সাথে খারাপ ব্যবহার করিস?? -সাবিহা বলছে? -সাবিহা কেন বলবে? মা আজকে ওকে কাঁদতে দেখছ,তোর ভাবি বিয়ের পরদিনই সকালে ওকে সোফায় ঘুমুতে দেখছে। মেহবুব ভাবছে এ সবই সাবিহার শিখানো কথা। ও ই বলছে মা আর ভাইয়াকে তারাই বাবা আর ভাইয়াকে পাঠিয়েছে। ভাইয়া আরও বলল-দেখ মেহবুব তুই প্লিজ পিছনের কথা ভুলে যা, বিয়ে করেছিস সব ভুলে সাবিহাকে নিয়ে সামনে আগা। আর কত বুঝাব তোকে, বয়স ও তো হল। তোর বন্ধুরা বিয়ে শাদী করে সবাই কত ভাল আছে দেখ। বাবা বলল-যাই হোক, আমি কোন কথা শুনতে চাই না। আমি তোদের ব্যাংককের টিকিট কাটতে চাচ্ছিলাম কিন্তু এখন যা দেখছি আমি চাই তুই কালই দিমকয়েক এর জন্য সিলেট গিয়ে সাবিহাকে ঘুরিয়ে নিয়ে আয়। -আমার ছুটি নেই, পারব না। -আমি কোন কথা শুনতে চাই না। তোর জন্য আমি অপরের মেয়ের সাথে অন্যায় করতে পারব না। তোর যেতে হবেই। এই বলে বাবা আর ভাইয়া চলে গেল। মেহবুব রাগে ফুসঁতে ফুসঁতে পুরো বাসায় সাবিহাকে খুজঁল কিন্তু পেল না ও নাইট ডিউটিতে হসপিটালে গেছে। মনে মনে বলল কোথায় আর যাবা?? আমার নামে নালিশ!!! দেখে নেব।

পর্ব -৬

পরের দিন সকালে সাবিহা যখন বাসায় ফিরে তখন ও জানে না যে মেহবুব বাসায়,না জেনেই রুমে ঢুকে যায়। ঢুকে তো পুরো অবাক ও এই সময় বাসায়!!! এদিকে এত কিছু হয়েছে ও জানেই না। সারা রাত ডিউটি করে ক্লান্ত।রুমে ঢুকে দেখে মেহবুব ল্যাপটপে কাজ করছে। ওর দিকে তাকিয়ে বলল-আমার রুমে কেউ নক না করে ঢুকে তা মোটেই পছন্দ না। -সরি, আমি জানতাম না আপনি রুমে। ও ব্যাগ রেখে ওয়াশরুমে ঢুকতে যাবে ওমনি মেহবুব ওর হাতটা জোরে চেপে ধরে দেয়ালের উপর ধাক্কা মেরে ফালালো।হঠাৎ এধরনের ব্যবহারে ও পুরো শকড তাছাড়া ও মাথায় প্রচণ্ড ব্যাথা পেল।মেহবুবের রাগী চেহারা দেখে ব্যাথার কথা ভুলে গেল। কিন্তু মেহবুবের ওদিকে হুস নেই, পাগলের মত বলল, -আমি জীবনে মেয়ে দেখেছি অনেক তোমার মত বেহায়া মেয়ে দেখিনি।তুমি আমার নামে নালিশ কর মায়ের কাছে? -কি বলছেন আপনি এসব??? -ওহ, এখন কিছু বুঝতে পারছ না, না? যখন তোমার মুখের উপর ডির্ভোস পেপার ছুড়ে মারব তখন বুঝবা। আমি এই মাএ আমার উকিলের সাথে কথা বলছি। খুব তাড়াতারি ডির্ভোস নোটিশ পেয়ে যাবা। -আপনার সাথ আমার ডির্ভোস না হলেও যে আমি থাকব না এটুকু আমি জানি। কিন্তু এই খারাপ ব্যবহারের মানে কি?? -তোমাকে এতবড় সাহস কে দিসে? আমার মা, ভাবি এদের কাছে ছোট করার..। তারপর কিছুক্ষণ থেমে বলল-তুমি চিনো আমাকে আমি কে? এক নিমিষে আমি তোমাকে, তোমার ক্যারিয়ার, ফিউচার সব শেষ করে ফেলতে পারি। এবার আর সাবিহা চুপ করে থাকার কোন উপায়ই পেল না। ও চিৎকার করে বলল-ও তাই, আপনি কে?? বলুন তো? আপনি আমার কি হন?আপনাকে কে সাহস দিয়েছে আমার ব্যাপারে কথা বলার? আপনি কে শুনতে চান, আপনি একটা খারাপ মানুষ আমার কাছে আর কিছুই না। -আমি খারাপ না??আর তুমি? বিয়ের রাত থেকে আমি খারাপ বিহেব করছি চলে কেন যাচ্ছ না?জানো কোন মেয়েরা এভাবে পুরুষের পিছনে পরে থাকে? -তাহলে আপনি কেন আমাকে বিয়ে করে এনেছিলেন? -মা বাবার কথায়। -আপনি কি একটা অমানুষ??!!আপনি আমার জীবনটা নষ্ট করেছেন। -তোমাদের মেয়েদের জীবন কখনই নষ্ট হয় না। তোমাদের মত বেহায়া মেয়েদের জন্যই ছেলেদের জীবন নষ্ট হয়।তুমি যদি ভাল হতা বা আত্ন সস্মান থাকত তাহলে বিয়ের পরদিনই চলে যেতা বা যেদিন তোমার মা বাবা আসল সেদিন। এই কথা শুনার পর সাবিহা আর নিজেকে ধরে রাখতে পারে নি।ও কান্নায় ভেঙে পড়ল। কাঁদতে কাঁদতে বলল-আমি কি দোষ করেছি যে আপনি আমাকে এই কথা গুলো বললেন?আমি তো আপনার সংসার করার জন্যই এসেছিলাম, আপনার বউ হয়ে থাকতে চেয়েছিলাম আর আপনি কিনা আমাকে খারাপ মেয়েদের সাথে তুলনা করলেন? ওর এই কথা মেহবুবের মনে কোন আঁচই ফেলল না উলটো আর রেগে বলল -ও তাই তুমি আমার বউ হতে চাও ওকে ফাইন আসো, বিছানায় আসো। বউ হও, আসো। এত ইচ্ছা তোমার যখন,আসো। এই বলে ওকে বিছানার উপর ছুড়ে মারল মেহবুব। যেই ওর কাছে আসল সাবিহা ওকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে হাপাতে হাপাতে উঠে বলল- চরম অসভ্য আপনি। আমি আর এক মূহুর্তও এখানে থাকব না। এতদিন আপনার খারাপ চেহারাটা দেখলাম আজ আপনার পশুর মত চেহারাটা দেখতে পেলাম। এই বলে ও দৌড়ে রুম থেকে বেরিয়ে এল। দেখল যে ড্রইং রুমে ওর জা আর ননদ গল্প করছে। ভাবিকে বলল-ভাবি মাকে বলো আমি চলে গেলাম। এই বলে ও আর দাড়াঁল না কারন তাহলে তারা নানা প্রশ্ন করবে আর ঐ লোকটাও বের হয়ে এসে না জানি কি না কি বলে, যাই হোক ওর কোন আর ও বাড়ির প্রতি পরোয়া নেই। কে কি বলুক বা করুক কিছু আসে যায় না। কাঠফাটা দুপুরবেলা কোথায় যাবে??? ওর বোনের বাসায় যাবে না কারন ও চায় না এখনি ফ্যামিলিকে সব কিছু জানাতে, এমনিতেই ওর শরীর, মন ভাল না। তাদের হাজারটা প্রশ্নের সামনে দাড়াঁনোর সাহস বা মনের জোর নেই। নিজেকে একটু সময় দিতে চায় ও।তাছাড়া রাত থেকে এক নাগাড়ে ডিউটি, সকালেও কিছুই খায় নি তারপর আবার এই অবস্থা। ঠিককরল ওর ছোটবেলার বান্ধবীর বাসায় যাবে যে ওর বেস্ট ফ্রন্ড। ওকে সব মনের কথা খুলে বলে ও। ও নিঃশ্চই এই কঠিন সময়ে ওকে বুঝবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here