#সাহেব_বিবি_গোলাম
#নুশরাত_জেরিন
#পর্ব:১১
,
,
সকালে ঘুম ভাঙতেই মনে হলো কেউ আমায় আষ্টেপৃষ্টে জাপটে ধরে আছে।আমার কেমন যেনো অসস্তি হতে লাগলো।
আমার ঘাড়ে মুখ গুজে আছে সে।নিশ্বাস তার ঘরন ঘন পরছে।হয়তো ঘুমিয়ে আছে।
আমার পেটের কাছে তার হাত রাখা।
আমি ছাড়ানোর জন্য হাত ধরতেই চমকে উঠলাম।
এতো শক্ত হাত!এটা তো আপার হতে পারেনা।মেয়েদের হাত বুঝি কখনো এতো শক্ত হয়?
তাহলে কে হতে পারে এটা?তাছাড়া এ রুমে আসবেইবা কে?এটা তো আপার রুম।আমার চোখ বড় হয়ে গলো মুহূর্তেই।
ভয়ে হাত পা জমে গেলো।
কে হতে পারে সে?আমাকেই বা এমন জাপটে ধরে আছে কেনো?
ভয়ে আমার কথা আটকে এলো।চিৎকারও করতে পারছিনা।
ঘেমে নেয়ে উঠলাম ভয়ে।
মোচড়ামুচড়ি শুরু করলাম ছোটার জন্য।
পেছনের ব্যক্তিটির ঘুম বোধহয় ভেঙে গেলো।সে একটু নড়ে মুখ উচু করে ঘুমঘুম কন্ঠে বললো,
—কি হয়েছে?মৃগী রোগির মতো মোচড়াচ্ছো কেনো?
আমি লাফিয়ে উঠে বসলাম।
চোখ কুঁচকে রাগী দৃষ্টি ফেলে বললাম,
—আপনি?আপনি এখানে কি করছেন?
শুভ হাই তুলতে তুলতে উঠে বসলো।
—কি করছি মানে?আমার বউ এখানে তো আমি কি অন্যরুমে থাকবো নাকি?বউ যেখানে স্বামী সেখানে,কথাটা জানোনা?
—তাই বলে আমাকে জাপটে থাকবেন?
আর আপা কোথায়?
—আমার বউকে আমি জাপটে ধরি আর যাই করি,তাতে তোমার কি?
তুমি কে জিজ্ঞেস করার?হু?
আর আপা আমার রুমে।আমি ই অনেক বলে কয়ে তাকে এ রুম থেকে বের করেছি।
—কেনো?
—আরে বিয়ে করেছি বউকে অন্যরুমে থাকতে দেওয়ার জন্য নাকি?
আমি চোখ তীক্ষ্ণ করে তাকালাম।
লোকটা তো মহা পাঁজি। সাথে বেলজ্জিত ও।নয়তো বড় বোনকে কেউ বলে সে বউয়ের সাথে থাকবে?
বউ কথাটা মনে পরতেই মনটা বিষন্ন হলো আমার।
প্রিতম আমায় বলপছিলো,বিয়ের পর সে কখনো আমার নাম ধরে ডাকবেনা।বউ বলে ডাকবে।
সারাদিন রাত বউ বউ বলতে বলতে জ্বালিয়ে মারবে।
আমি তখন মুখ ফুলিয়ে লিখতাম,
—তখন বুঝি আর আমাকে মায়াবতী বলবে না?
সে তখন রিপ্লাই দিতো,
—ডাকবো তো,কিন্তু সবসময় না।রোমান্টিক মুহুর্তে ডাকবো।
আমার কি যে হাসি পেতো তখন।এমন একটা পাগল ছেলের প্রেমে কি করে যে পরেছিলাম।ভালবাসতাম তো খুব!এখনো বাসি।সারাজিবন বাসবো।
আচ্ছা প্রিতমকে ছাড়া কোনদিন অন্য কাউকে ভালোবাসতে পারবো আমি?এইযে সামনে দাড়ানো ছেলেটাকে?যে আমার স্বামী, তার তো অধিকার আছে আমার ভালবাসা পাবার?আর প্রিতম?সে কি কখনো আমায় মেনে নেবে?তাকে পাবো কখনো?
আমার চোখ থেকে টুপ করে অশ্রুকনা ঝরে পরলো।
শুভ হকচকিয়ে উঠলো।
সে হঠাৎ আমার কান্নার কারন হয়তো বুঝতে পারেনি।তাড়াহুড়ো করে এগিয়ে এসে বলতে শুরু করলো,
—কি হয়েছে পিহু,কি হয়েছে তোমার?খারাপ লাগছে?মায়ের জন্য কষ্ট হচ্ছে? আমার কোন কথায় কষ্ট পেয়েছো?কে কি বলেছে তোমায়?কি সমস্যা পিহু?
কাঁদছো কেনো?
আমি অবাক হয়ে তার দিকে তাকালাম।কি অস্থির দেখাচ্ছে তাকে!কিন্তু আমি কাদলে সে অস্থির হবে কেনো?
আমি তীক্ষ্ণ চোখে তাকালাম।আমার তাকানোর ভঙ্গিমা দেখে শুভ স্বাভাবিক হয়ে দাড়ালো।আমতাআমতা করে মাথা চুলকাতে লাগলো।
আমি চোখের জল হাত দিয়ে মুছতে চাইলে শুভ দৌড়ে এসে নিজের হাতে মুছে দিলো।
কাজ সেড়ে সে আবার পিছিয়ে গিয়ে আগের জায়গায় দাড়িয়ে পরলো।
তার এমন কাজে আমি বেশ অবাক হলাম।ছেলেটা অদ্ভুত! খুবই অদ্ভুত!
কখন কি করে মাথায় ঢোকেনা।
আমাকে অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে সে মাথা নিচু করে মিষ্টি হাসলো।
রুম থেকে বাইরে যেতে যেতে বললো,
—রাতে মন ভরে আমায় দেখো বউ,এখন আমার সময় নেই।
আমি আবার কপাল কুঁচকলাম।
,
,
সকালে খাবার টেবিলে বসে বসে আমি আর আপা নাস্তা করছি।শুভ তাড়াহুড়ো করে না খেয়েই অফিসে চলে গেছে।সুট বুট পরে তাকে দেখতে একদম ছবির নায়কদের মতো লাগছিলো।হাতের ঘড়িটা ঠিক করতে করতে যখন সিড়ি বেয়ে নামছিলো তখন আমি হা করে তাকিয়ে ছিলাম।তবে পরক্ষনেই চোখ সরিয়ে নিজেকে ধিক্কার দিয়েছিলাম।
ছেলেটা দেখতে যতোই সুন্দর হোকনা কেনো?স্বভাব তার পুরো শয়তানের মতো।
কি পরিমানে জ্বালায় সে আমায়?
খাওয়ার মাঝেই আমার মনে পরলো,আজ সকালে শুভর ফোনটা নিতে চেয়েছিলাম আমি,কিন্তু মনে নেই।
রাতে নেবো ভেবে মনে মনে শান্তি পেলাম।
যাক প্রিতমের সাথে যোগাযোগ তো হবে।
মামা যখন জানতে পারে প্রিতমের কথা তখন থেকেই আমার ফোন কেড়ে নিয়েছিলেন।যাতে আমি তার সাথে কোনরকম যোগাযোগ করতে না পারি।
এ কটা দিন প্রিতম আমাকে না পেয়ে কি অবস্থায় আছে কে জানে?হয়তো কষ্টে আছে খুব!
আমার কষ্ট হলো।
আপা বিষয়টা লক্ষ করলেন।
গম্ভীর গলায় বললেন,
—পুটোটা খাবার শেষ না করলে হাড্ডি একটাও আস্ত থাকবে না কিন্তু!
আমি মুচকি হাসলাম।গম্ভীর, রাগী হলেও মানুষটা ভালো,খুবই ভালো।রাগের মাঝেই সে তার ভালবাসা প্রকাশ করে।
দুটো দিনেই আমাকে কেমন আপন করে নিয়েছে সে।প্রথমে এসে তাকে ভুল বুঝলেও এখন তাকে মোটেও ভয় করছেনা আমার।উল্টো ভেতরটা প্রশান্ত হচ্ছে এই ভেবে যে,আমাকে ভালবাসার মতো আরেকটা মানুষকে পেয়ে গেছি।
আমাকে বিয়ে করার জন্য শুভর উপরে এতো এতো রাগ পুষে রাখলেও তার প্রতি রাগটা কমে গেছে।কাটন তার জন্যই তো আমি আপাকে পেলাম এখানে!
,
,
,
সারাটাদিন আমি আর আপা গল্প করে কাটালাম।বাড়িটা বিশাল।এতো বড় বাড়িতে দুজন কাজের লোক আর আপা আর শুভ ছাড়া আর কেউ থাকেনা।আমার খুব কৌতুহল হয়েছিলো, বলতে ইচ্ছে করছিলো,
—আপনাদের বাবা মা কোথায়?তারা আপনাদের সাথে থাকেনা?কোথায় থাকেন?পরিবারে আর কেউ নেই আপনাদের?
তবে বলতে পারিনি।মনের ভেতরই প্রশ্নগুলো ঘুরপাক খাচ্ছিলো।
শুভ বাড়ি ফিরলো রাত করে।
আপা তাকে খাবার বেড়ে দিলেন।
শুভ রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলো খাবার খেতে।
আমি উপরে রুমে বসে বসে হাত দিয়ে নখ কাটছি।এভাবে আমার ভালো লাগছেনা।প্রিতমের সাথে কথা না হওয়া পর্যন্ত ভেতরটা ছটফট করছে।
তাছাড়া মায়ের সাথেও কথা বলার আছে।তার সাথেও তো কথা হয়নি।না জানি সে এখন কেমন আছে?মামা মামি কেমন ব্যবহার করছে?
আমি শুভর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে থাকলাম।দরজার দিকে চোখ রেখে বসে রইলাম।
শুভ ফিরলো মিনিট দশেক পরেই।
ছেলেটা সব কাজেই ফাস্ট দেখছি!খুব দ্রুত কাজ সেরে ফেলতে পারে।
আমি তাকে দেখেই ফট করে দাঁড়িয়ে পরলাম।দ্রুত পায়ে তার সামনে গিয়ে দাড়িয়ে একহাত সামনে বাড়িয়ে দিলাম।
শুভ আমার দিকে একবার তাকিয়ে হাতের দিকে তাকালো।
এক ভ্রু উঁচু করে বললো,
—কি?
—আপনার ফোনটা দিন?
—কেনো?কি করবা ফোন দিয়ে?গার্লফ্রেন্ড আছে নাকি চেক করবা?
আমি কপাল কুঁচকালাম।ছেলেটা সবসময়ই আজেবাজে কথা বলে।
আমি বিরক্তি নিয়ে বললাম,
—আপনার গার্লফ্রেন্ড আছে নাকি তা জেনে আমি কি করবো?
—তাহলে আমার ফোনে তোমার কি কাজ?
—কল করবো?
—কাকে?
—মা এবং আর একজন কে।
শুভ চোখ তীক্ষ্ণ করে তাকালো।কপালে তার ভাজ পরলো।মুখটাও একটু গম্ভীর হয়ে গেলো মনে হয়।
বললো,
—আর একজন টা কে?
—বলা যাবে না!
শুভ থমথমে গলায় বললো,
—সে কি প্রিতম?
আমি চমকে উঠলাম।শুভ প্রিতম নামটা জানলো কিভাবে?তাকে কে বলেছে?মামা?
শুভর দিকে তাকাতেই দেখলাম তার মুখের আদল পরিবর্তন হয়েছে।মুখে রাগী রাগী একটা আভাস দেখা যাচ্ছে। চোখদুটোও লাল বর্ন ধারন করছে।
আমি কিছুটা পিছিয়ে ভয়ে ভয়ে ঢোক গিললাম।
মাথায় ঢুকলো না আমার কিছুতেই,
শুভ হঠাৎ এতোটা রাগলো কেনো?প্রিতমের কথাটা শুনে?
,
#সাহেব_বিবি_গোলাম
#নুশরাত_জেরিন
#পর্ব:১২
,
,
একটা কথা মনে পরতেই রাগ আমার মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো।শুভ জানতো প্রিতমের কথা?জানতো আমি প্রিতমকে ভালবাসি,তার জন্যই বিয়ের আসর ছেড়ে পালাতে চেয়েছিলাম।এরপরও আমায় বিয়ে করলো কেনো?
আমি শুভর রাগী মুখের দিকে সরাসরি তাকালাম।তার রাগের বিন্দুমাত্র পাত্তা দিলামনা।ছেলেটাকে আমি ভালো ভেবেছিলাম।একটু দুষ্টু হলেও ভেবেছিলাম আসলে সে ভালো মানুষ।
কিন্তু নাহ।এখন মনে হচ্ছে সে মোটেও তেমনটা না।
সে ইচ্ছে করে আমাকে আর প্রিতমকে আলাদা করেছে।কিন্তু কেনো?
আমি গম্ভীর গলায় বললাম,
—আপনি প্রিতমের কথা জানতেন?
জানতেন আমি ওকে ভালবাসি?
শুভর রাগী মুখটা আরও কঠোর দেখালো।চোয়াল শক্ত করে সে বললো,
–হ্যাঁ,তো?
–তো মানে?আপনি জেনেশুনে কেনো করলেন এমনটা?আমি অন্যকাউকে ভালবাসি জেনেও কেনো করলেন আমায় বিয়ে?কেনো?
শুভ নির্লিপ্ত ভাবে জবাব দিলো,
—কারন আমি তোমাকে ভালবাসি!
আমি চমকে তাকালাম। চোখ নিমিষেই বড় হলো আমার।কি বলছে শুভ?সে আমায় ভালবাসে?আমায়?কাল আপার কথাগুলো তাহলে সত্যি ছিলো?কিন্তু এ কেমন ভালবাসা?যে ভালবাসা তার ভালবাসার মানুষটির সুখই কেড়ে নেয়।
আমি তার চোখে চোখ রেখেই বললাম,
—কিন্তু আমি প্রিতমকে ভালবাসি।আর সারাজীবন বাসবো।
শুভ রেগে গেলো বোধহয়।তার চোখ কেমন রক্তবর্ন হয়ে গেলো।আমার দিকে তেড়ে এসে দুকাধ আকড়ে ধরলো।
আমি ব্যাথায় কুকিয়ে উঠলাম।
শুভ দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
—ওই নাম আর কক্ষনো উচ্চারন করবেনা,কক্ষনো না।
আমি যেনো কখনো তোমার মুখে ওই নাম না শুনি।
আমি কেন যেন ভয় পেলাম না কথাগুলো শুনে।প্রিতমের ব্যপারে আমি খুব সাহসী হয়ে উঠি সবসময়।ওর জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত আমি।আমার ভালবাসা যে সে।
কতো খুনসুটি কতো স্মৃতি আছে আমাদের!কতো রঙিন দিনছিলো তখন!
আমি বলে উঠলাম,
—মুখে না বললেও মনে যে থাকবে!ওর নাম খোদাই করে লেখা আছে যে মনে।
শুভ এবার গাল চেপে ধরলো।আমার মুখে এমন কথা হয়তো সে আশা করেনি।
বললো,
—মন থেকেও মুছে ফেলবো আমি!তোমার পুরোটা জুরে শুধু আমার নাম থাকবে,ওই বেইমানটার নাম নয়!
বলেই আমাকে ছেড়ে দুরে দাড়ালো শুভ।
লাইট ওফ করে বিছানায় শুয়ে পরলো।
আমি অবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম।
সে প্রিতমকে বেইমান কেনো বললো?কি বেইমানি করেছে সে?তাছাড়া শুভ তো প্রিতমকে চেনেই না,তাহলে এমন কথা বললো কেনো?নাকি আমারই জানার ভুল?হয়তো সে ঠিকই চেনে!
আমিও চুপচাপ খাটের একপাশে শুয়ে পরলাম।
শুভ আর জালালো না আমায়।
তবে কেন যেনো রাতভর ঘুমের দেখা পেলামনা।ভেতরটা খুব ছটফট করতে লাগলো।
শেষ রাতের দিকে খাট ছেড়ে উঠে বসলাম।
ঘুম না এলে শুধু শুধু শুয়ে থাকা যায়না।বিরক্ত লাগে।
আস্তে আস্তে রুম থেকে বেরিয়ে এলাম আমি।এমন সময় এককাপ চা হলে মন্দ হতোনা।কিন্তু এতো রাতে চা পাবো কোথায়?
হাটতে হাটতে সিড়ি বেয়ে ছাদে এসে দাড়ালাম।
বাইরে এখনো অন্ধকার হয়ে আছে।চারপাশের দৃশ্য কেমন যেন ভুতুড়ে ভুতুড়ে লাগছে।
আমি সাধারণত ভীতু মানুষ হলেও আজ মোটেও ভয় লাগছেনা।
একা একা লাগছে খুব।মনে হচ্ছে এক দৌড়ে প্রিতমের কাছে চলে যাই।জাপটে ধরে জরিয়ে রাখি তাকে।যাতে আর কখনো হারিয়ে যেতে না পারে।যদিও হারাবেই বা কিভাবে?তাকে তো কখনো পায় ই নি।
হঠাৎ পাশে শব্দ হতে আমি ফিরে তাকালাম।দেখি শুভ।প্যান্টের পকেটে দু-হাত দিয়ে সে দৃষ্টি সামনে রেখে দাড়িয়ে আছে।
আমার দিকে তাকাতেই সে মুচকি হাসলো।তবে হাসিটা কেমন ফ্যাকাসে মনে হলো আমার।
জোৎস্নার মৃদু আলো চারিদিকে মেখে আছে।শুভর মুখটা স্পষ্ট দেখা না গেলেও আবছা আলোয় আমি তার দিকে তাকিয়ে রইলাম।
সে সামনে তাকিয়েই বললো,
—আমার উপর রাগ করেছো বউ?
আমি মুখ ফিরিয়ে নিলাম।ছেলেটা এখন যতোই নরম নরম কথা বলুক না কেনো,আমি তাতে একদম গলবো না।
সে আমায় একটু আগে কাধে হাত দিয়ে কাধ ব্যাথা করে দিয়েছে,গালটাও চেপে ধরেছিলো।মনে পরতেই গালে ব্যাথা অনুভব হলো আমার।আনমনে গালে হাত দিয়ে ডললাম।
শুভ আঁড়চোখে সেদিকে তাকিয়ে মাথা নিচু করে মৃদু হাসলো।
বললো,
—বেশি ব্যাথা পেয়েছো?
আমি তারপরও কথা বললাম না।আমি রেগে আছি তার উপর।রেগে থাকা ব্যক্তি কখনো কথা বলেনা।
শুভ এগিয়ে এলো।গালে হাত রাখতে চাইলেই আমি সরে দাড়ালাম।
শুভ এবার হাত টেনে ধরলো।আমাকে পেছন ঘুরিয়ে কাধে মাথা রাখলো।
শক্ত করে জড়িয়ে বললো,
—ভুল হয়ে গেছে বউ,আর কক্ষনো এমন করবোনা।
কিন্তু তুমি আমায় কেনো রাগাও বলোতো?যাকেতাকে ভালবাসি ভালবাসি বলে বেড়াও কেনো?কষ্ট হয়না আমার?
আমি ফট করে চোখ বড় করলাম।কি বলতে চাইছে শুভ?যাকে তাকে কাকে বললো সে?প্রিতমকে?প্রিতম যে সে?
আমি ঝটকা দিয়ে তাকে সরালাম।রক্তচক্ষু নিয়ে তার দিকে ফিরলাম।
কেনো যেনো প্রচুর রাগ হলো আমার।
প্রিতমের নামে কিছু বললে আমার সহ্য হয়না।ভালবাসার মানুষটার নামে কেউ বাজে কথা বললে সহ্য হয় নাকি?বরংচ কষ্ট হয়।বুক জ্বালাপোড়া করে।এইযে আমার করছে এখন!
তবে কেন যেন মনে হচ্ছে শুভ প্রিতমকে চেনে।খুব ভালভাবেই চেনে।
আমি তীক্ষ্ণ চোখে তাকিয়ে বললাম,
—প্রিতমকে আপনি চেনেন?
শুভ থতমত খেলো মনে হলো।সে আমতাআমতা করলো খুব।কেমন যেন অস্থির দেখাচ্ছে তাকে।
আমার চোখে চোখ রাখতেও তার কি দ্বীধা!
আমার সন্দেহের পরিমান বাড়লো।শুভ একবার চোখ তুলে তাকিয়েই চোখ নামিয়ে নিলো।গটগট পায়ে হেটে চলে গেলো সে।,
,
,
চলবে…..
(
,
,চলবে……