স্বামী পর্ব -০১

-বারবার ব্যাথায় কুকিয়ে ওঠছে অনু।ধবধবে সাদা বিছানার চাদরে ছোপ ছোপ রক্ত লেগে গেছে। কিন্তু তাতে বিন্দু মাত্র ভুরুক্ষেপ দেখাচ্ছে না নির্ঝর।সে তার নিজের কাজে ব্যাস্ত।

নির্ঝরের প্রত্যেকটা স্পর্শে কেবল রাগ আর ক্ষোভ মিশে রয়েছে।একটুও ভালোবাসা নেই।
অসহ্য যন্ত্রনা মুখ বুজে সহ্য করছে অনু।

অনুর চোখ দিয়ে টুপটুপ করে পানি পড়ছে।আজই নির্ঝরের সাথে পারিবারিক ভাবে বিয়ে হয়েছে অনুর।
অনুর বাবা মা বেশ বেছে বেছে একমাত্র মেেয়র জন্য পছন্দ করেছে নির্ঝরকে।তারপর ধুমধাম করে বিয়েটা সম্পূর্ন হয়েছে।

বিয়ের প্রথম রাতেই স্বামীর এমন ভয়ংকর রূপ কিছুতেই মানতে পারছে না অনু।বড্ড কষ্ট হচ্ছে।বড্ড বেশি

রাতের প্রায় শেষের দিকে নির্ঝর ক্লান্ত হয়ে অনুকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পড়েছে।

কিন্তু অনুর চোখে ঘুম নেই।স্মৃতির আঙ্গিনায় বার বার উকি মারছে কেউ একজন।
নিজেকে নির্ঝরের বাহুবন্ধন থেকে মুক্ত করে কোনো রকমে একটা ওড়না পেচিয়ে বাথরুমে চলে যায় অনু।

শাওয়ারটা ছেড়ে দিয়ে ইচ্ছে মতো কান্না করতে থাকে।

যদি না সায়ন অনুকে এভাবে একা ফেলে চলে যেত তাহলে নির্ঝর নামের এই মানুষটা কখনোই তার জীবনে আসতো না। আর না কখনো এভাবে নিজের স্বামীর কাছে….।

কথাগুলো ভাবতেই অনুর দুচোখ ভিজে ওঠে।।।

অনু কোনো রকমে সাওয়ারটা শেষ করে ওযু করে বেরিয়ে আসে।
বিছানার দিকে চোখ পড়তেই দেখে নির্ঝর গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।
গায়ে কাথাটা টেনে দিয়ে জায়নামাজ আর কোরআন শরীফটা বুকে নিয়ে ঘরের এককোনে চলে যায়।প্রথমে কয়েকপাতা কোরআন পড়তেই বাহিরে আজানের ধব্বনি কানে আসে।তারপর নামাজ

অনু নামাজ শেষ করে পাশ ফিরতেই চোখ যায় তার ঠিক পাশেই সাদা ধবধবে পান্জাবী পরে নামাজে বসেছেন তার স্বামী নির্ঝর।

এতোক্ষন নামাজে এতো মগ্ন ছিলো যে পাশে কেউ আছে সেদিকে খেয়ালই ছিলো না।

নামাজ শেষ করে অনু ওঠে দাড়াতেই নির্ঝরও ওঠে দাড়ায়।
তারপর অনুকে একটানে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। কাছে টেনে এনে কপাঁলে একটা চুমু এঁকে দেয়।

তারপর ধপ করে ছোফায় গিয়ে শুয়ে পড়ে।

ঘটনাটা আকষ্মিকভাবে ঘটায় সবই অনুর মাথায় উপর দিয়ে যায়।

:::কই এই ছোয়াই তো কোনো ঘেন্না নেই যা আছে তা হলো ভালোবাসা।
তহলে রাতের ছোয়াই কি ছিলো??

অনু অবাক হয়ে অপলক তাকিয়ে আছে নির্ঝরের দিকে।সে সোফায় একটা বালিস জড়িয়ে চোখ বন্ধ করে আছে।

কি নিষ্পাপ মুখটা।বিয়ে থেকে শুরু করে এতোটা সময় নির্ঝরের সাথে থাকলেও লোকটাকে ভালো করে দেখা হয়নি অনুর।

“আসলে হৃদয়ের মাঝে কেউ লুকিয়ে থাকলে কি আর কারো দিকে চোখ যায়”

হটাৎই অনুর চোখ যায় বিছানার দিকে।বিছানার বেশ কিছু জায়গায় রক্তের দাগ স্পষ্ট
অনুর চোখ আবার জলে ভিজে যায়……

এরকম একটা লোকের সাথেই তাকে কাটাতে হবে জীবনের বাকি রাতগুলো।

চলবে……
###__স্বামী__###
পর্ব-১

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here