#অচেনা_শহর💖
#সিজন(২)
#লেখিকা:–তানজিনা আক্তার মিষ্টি
#পর্ব:–[৩২]
রুমে এসে আমার চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেল। সারা রুমে ফুল দিয়ে সাজানো দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করার সময় আমার উপর গোলাপের পাপড়ি পরতে লাগলো। আমি বিস্মিত হয়ে উপরে তাকাতে তাকাতে ভেতরে এলাম। আদ্র কিছুটা সামনে দাঁড়িয়ে আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। আমি আদ্রর এমন তাকানো দেখে লজ্জায় মাথা নিচু করে শাড়ির আঁচল আঙুলে পেছাতে লাগলাম।
জরোসরো হয়ে দাঁড়িয়ে আছি। তখন আদ্রর থেকে জানতে পারলাম আজ আমাদের বিয়ের একবছর পূরণ হলো।
চমকে মাথা তুলে তাকালাম। আদ্র আমার কাছে চলে এসেছে। আমি ভুলেই গেছিলাম কথাটা। আদ্র আমার কাছে এসে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।
আমি আদ্রর গভীর দৃষ্টির দিকে তাকিয়ে থাকতে পারলাম না। চোখ নামিয়ে নিলাম।
আচমকা আদ্রর হাতের স্পর্শ নিজের থুতনিতে পেলাম। আদ্র নিজের হাত আমার থুতনি ধরে মুখটা উঁচু করলো।আমি চোখ বন্ধ করে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে রইলাম।
আদ্রর এগিয়ে এলো আরো তার নিঃশ্বাস আমার মুখে আছড়ে পরছে। আমার প্রতিটা লোম খাড়া হয়ে গেল যেন। বুকের ভেতর ধুকপুক করছে আদ্র মৃদু কন্ঠে বলল,
ভালোবাসি বউ।
একবার না অনেক বার বললো আমি চোখ মেলে আদ্রর চোখের দিকে তাকালাম। যে চোখে আমার জন্য অফুরন্ত ভালোবাসা আমি দেখতে পাই।
আমি সেই চোখের দিকে তাকিয়ে ছিলাম।
সেদিন আমাদের ভালোবাসার পূর্ণতা পেয়েছো আদ্রর ভালোবাসায় আমি সারা না দিয়ে থাকতে পারিনি। আমিও যে ওনাকে খুব ভালোবাসি খুব।
সময়টা সুখের ছিলো। সব ভালো চলছে।
অনার্স সেকেন্ড ইয়ার এর ফাইনাল পরিক্ষা শুরু হয় অন্তরাকে শত বলেও দেওয়াতে পারিনা। মন খারাপ করে আমি একাই দেয়। আদ্র প্রতিদিন আমাকে দিয়ে আসে আবার নিয়ে আসে। হৃদয় জেলেই আছে এখনো। মাইশা ছাড়ানো হয়েছে।
দেখতে দেখতে অন্তরার একটা ফুটফুটে বাচ্চা হয়।
ছেলে বাবু আমি গিয়ে অন্তরার কাছে গিয়ে থাকি। দুই দিন তাই নিয়ে আদ্র কি রাগ? ও আমাকে থাকতে মানা করছিলো কিন্তু আমি শুনিনি তাই। দুইদিন পর তার রাগ ভাঙাতে খুব কষ্ট হয়।
বাসায় আসার কিছু দিন পর থেকে আমার নিজের কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করি আর আমি আশাকে নিয়ে হসপিটালে গিয়ে জানতে পারি আমি প্রেগন্যান্ট। খুশিতে আমার চোখে জল চলে আসে। পেটে হাত দিয়ে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। প্রথম মা হওয়ার অনুভূতি অনুভব করি।
আদ্র ও খুব খুশি হয়। খবরটা জানার পর। আশেপাশের সবাইকে মিষ্টি খাওয়ায়। বাড়িতে খুশির আমেজ। আমার শশুর মশাই সেদিন ফাস্ট কথা বলেন আমার সাথে উনি এই বাড়ি আসার পর আমার সাথে কথাই বলেনি। সেদিন উনাকে বাবা বলেছিলাম।
এর মাঝে সব আনন্দের হলেও আদ্র আমায় পাগল করে ছাড়ে কোন কাজ করতে দেয়না সারাদিন বসে থাকবা, খাবার খাবা, আর ঘুম। এতো এতো খাবার কি খাওয়া যায়?
পরিবারের সবাই খুব যত্ন করতে লাগলো। চাচির দিকে তাকালেই কাকির কথা মনে পরতো। এনার সাথে জোর করে বিয়ে না দিলে কাকি এই বাড়ি থাকতেন।
দীর্ঘ শ্বাস ফেলা ছাড়া কিছুই করার থাকতো না। উপর নিচ করতে কষ্ট হয় বিধায় আদ্র নিচে সিফট করলো আমাকে নিয়ে।
একদিন জানতে পারলাম মাইশার বাবা মা এক্সিডেন্ট এ গুরুতুরু আঘাত পেয়েছে হসপিটালে নিয়ে জানতে পারেন তারা মারা গেছেন আঘাত গভীর ছিলো একজন কেও বাচানো যায়নি।
মাইশা ভেংগে পরলো আর একদিন আমার কাছে এসে ক্ষমা চেয়ে গেল।মেয়েটাকে দেখে খুব কষ্ট হয় আমার ক্ষমা করে দেয়।
আমার যখন নয় মাস তখন একদিন মাইশা সাথে একজন কে নিয়ে এলো তাকে দেখেই আমি চমকে উঠলাম,
সে আর কেউ না ভাবি। সেদিন জানতে পারলাম মাইশার আসল পরিচয়।
ভাবি এসে আমার পা জরিয়ে কাঁদতে লাগলো।
বিষ্ময়ে হতভম্ব হয়ে আমি পা সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলাম কিন্তু ব্যর্থ হলাম। শক্ত করে ধরে আছে।
আমিও ধরতে পারছি না কারন তখন আমি নরাচরা করতে পারিনা বেশি আমার পেট তখন অনেক বড় হয়ে গেছে।
তাই বাধ্য হয়ে দাড়িয়ে রইলো,
স্নেহা বোন আমার ক্ষমা করে দাও আমাকে আমি জানি আমি ক্ষমার অযোগ্য। কিন্তু তবুও ক্ষমা চাইছি। আমি অনেক ভুল করেছি। অনেক অন্যায় করেছি আমি তোমাদের উপর। আর তার শাস্তি এখন পাচ্ছি। আমার সব শেষ আমি নিঃস্ব। আমাকে ক্ষমা করো তোমাদের অভিশাপ এ আজ আমার সব শেষ মা বাবা হারালাম। স্বামীকে ছেড়ে যার হাত ধরলাম সেও আমাকে ঠকালো তাড়িয়ে দিলো। সব নিজের কুকর্মের ফল।
বলেই হু হু করে কেঁদে উঠলো। আমি ছলছল চোখে তাকিয়ে আছি।
আমি পারবো না তুমি আমার পা ছাড়। চলে যাও তোমাকে দেখলে আমার মায়ের মুখটা মনে পরে। প্লিজ চলে যাও।
আমাকে ক্ষমা করো না হলে আমার মরা ছাড়া কোন গতি থাকবে না।
আমি পারবো না পারবো না আমি।এই মানুষটির জন্য আমার জীবন নষ্ট হয়েছে আমি এতিম হয়েছি।তাকে আমি ক্ষমা কখনো না।
আমি বিছানায় বসে পরলাম আমার শরীর খারাপ লাগছে অস্থির লাগছে আমার শাশুড়ি মা পাশেই ছিলো আমার এমন দেখে তিনি কাছে এসে বলল,
কি হয়েছে খারাপ লাগছে কি?
আমি বলল, মা পানি দিন একটু।
উনি পানি এনে দিলো আমি একটু খেয়ে পেটে হাত দিয়ে চোখ বন্ধ করে রইলাম বাবা মায়ের মুখটা ভেসে উঠছে। চোখ দিয়ে পানি পরছে। আমার অবস্থা দেখে ভাবি কান্না থামিয়ে দিয়েছে।
শাশুড়ি মা ওদের জোর করে বের করে দিলো বাসা থেকে।
তারপর আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো শুইয়ে।
বেশি খারাপ লাগছে কি আদ্র কে কল করবো।
আমি চোখ মেলে না বললাম।
আস্তে আস্তে ঠিক হলে ঘুমিয়ে পরলাম।
ভাইয়া আদ্রর ওই বাসায় আছে যেখানে আমি ছিলাম।ভাইয়া বোনের শ্বশুরবাড়ি থাকতে চায়না তাই ওইখানে আদ্র একজন লোক রেখে দিয়েছে।
ভাইয়া তাও চেয়েছিলো না কিন্তু আদ্র আর আমার জরাজরিতে রাজি হয়েছে।কোথায় যাবে এই অবস্থায় পা ঠিক না একা চলাচল কষ্ট তার জন্য।
ঘুম ভাঙল আদ্রর ডাকে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। রাত হয়ে গেছে।
তোমার নাকি শরীর খারাপ হয়েছিলো।
না তো।
আম্মু যে বলল।
ও কিছু না এমনি আপনি কখন এলেন।
একটু আগে।
ওহ।
আদ্র কে ভাবির সব বললাম। আদ্র গম্ভীর হয়ে শুনলো তারপর বলল, ওইসব নিয়ে না ভাবতে।
চাইলেই কি বাদ দেওয়া যায় । তবুও ও ভুলে রাত পার করলাম।পরদিন আবার এলো ভাবি এসে পাগলামো করতে লাগলো আমাকে ক্ষমা করিয়েই ছারবে। শেষে আমাদের ডায়নিং টেবিল থেকে চাকু নিয়ে হাতের উপর রেখে বলল আমি ক্ষমা না করলে এটা দিয়ে হাত কেটে মরে যাবে।
কি বিপদ বলুনতো।উনার উপর রাগ অনেক তাই বলে উনার মৃত্যু আমি চাইনা । চমকে তাকিয়ে আছি শেষে না পেরে ক্ষমা করলাম।
সেদিন রাতেই আদ্র আর আমি পাশাপাশি শুয়ে আছি। বিছানায় অর্ধেক এর বেশি জায়গা আমার লাগে। আদ্র এক কোণে শুয়ে আছে। মাঝরাতে কান্নার শব্দে ঘুম ভেঙ্গে যায় আদ্রর। ধরফরিয়ে উঠে বসে দেখে স্নেহা পেটে হাত দিয়ে ঠোট কামড়ে ধরে ব্যাথা কাঁদছে।
স্নেহার কান্না দেখে আদ্র ঘাবড়ে যায়।ওর দুনিয়ার অন্ধকার হয়ে যায় তারাতাড়ি আলো জ্বালিয়ে স্নেহার কাছে এসে উত্তেজিত হয়ে জিজ্ঞেস করতে লাগে,
কি হয়েছে তোমার কাঁদছো কেন? কোথায় কষ্ট হচ্ছে আমাকে বলো?
আমি আদ্রর হাত খামচে ধরে অস্পষ্ট সুরে বলি।
মাকে ডাক আমার খুব খারাপ লাখছে। এতো ব্যাথা মনে হচ্ছে মরে যাব।
কিছু হবে না আমি আছি তো।
আদ্র আমার কথা শুনে ভয় পেয়ে যায়। রুমে থেকে চিৎকার করে ডাকতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই সবাই জরো হয়ে যায়।
আদ্র আমাকে কোলে তুলে বাইরে গাড়িতে উঠে বসে। ওর কষ্ট হয় আমাকে কোলে করে আনতে কারণ আমার ওজন তো অনেক বেড়েছে।
আমাদের কোল জোরে আসে আদ্রিতা। আমি আগেই ভেবে রেখেছিলাম আদ্রর নামের সাথে নাম। ছেলে হলে আদি মেয়ে হলে আদ্রিতা।
মেয়ের মুখ দেখে সমস্ত কষ্ট ভুলে যাই।
এক সপ্তাহ হসপিটালে থাকতে হয়। কারন আমার সির্জার এ বাচ্চা হয়েছে তাই।
আদ্র আমার সাথে থাকতে চায় কিন্তু শাশুড়ি মা থাকতে দেয় না দিবেই কি করে তিনি কি কিছু বুঝে নাকি। শাশুড়ি মা থাকেন। শেষের দুই দিন আদ্র থাকে।
এতো আনন্দের মধ্যে আমরা হৃদয় এর কথা ভুলে বসে ছিলাম।সে যে ওইদিকে ছাড়া পেয়েছে তার বাবার ক্ষমতা আর চেষ্টায় আমরা খেয়াল ই করিনি।সেটা কাল হলো।
বাসায় ফিরছিলাম আমি আর আদ্র আর আমাদের রাজকন্যা আদ্রিতাকে নিয়ে।
তখন
#অচেনা_শহর💖
#সিজন(২)
#লেখিকা:–তানজিনা আক্তার মিষ্টি
#পর্ব:–[৩৩]
রাস্তায় আমি গাড়িতে থেকে জানালা দিয়ে মনে হলো হৃদয় কে দেখলাম। সে আমার দিকে বাঁকা হেসে তাকিয়ে আছে।আমি ভয় পেয়ে ঘাড় বাঁকিয়ে তাকাতে গেলে আদ্রিতার জন্য পারিনা ও আমার কোলে।
আমার বিসন্ন মুখ দেখে আদ্র গাড়ি ড্রাইভিং করতে করতে বলল,
কি হয়েছে এতো ভয় পাচ্ছ কেন?
আমি হৃদয়কে দেখলাম।
হোয়াট ও কিভাবে ও তো জেলে আছে?
জানি কিন্তু আমি স্পষ্ট ওকে দেখেছি।
ভুল দেখেছো।
না আপনি থানায় ফোন করে দেখুন।
আদ্র চিন্তিত হয়ে ফোন করতে যাবে।আমি বাধা দেয়।
এখন না বাসা গিয়ে করেন। ড্রাইভিং করতে করতে ফোন না করাটাই ভালো।
হুম।
বাসা এসে আদ্রর বা আমার কারো আর এই বিষয়টা মাথায় থাকে না যা আমাদের কাল হয়ে দাড়ায়।আমার ছোট সোনাটা আমার থেকে আলাদা হয়ে যায় সেদিন।কেড়ে নেয় হৃদয়।
আমি বাসায় এসে বিছানায় শুয়ে পরি। আদ্র মেয়েকে নিয়ে ঘুরছিলো।বাসার সবাই ওকে নিয়ে মাতামাতি করছিলো।
আমি ঘুমে ছিলাম। তখন আমাদের বিদ্যুৎ নষ্ট হয়ে যায়। ইলেকট্রনিক এর লোক ফোন করা হয়। হঠাৎ বাসায় এমন প্রবলেম হওয়ার কারন কেউ বুঝতে পারেনা।
আমার শাশুড়ি মার কাছে আদ্রিতা ছিলো। ঘুমিয়ে পরেছে বিদায় আমার পাশে এনে শুইয়ে দেয়।আমি তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন।
আদ্র নিজেই বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় ঠিক করার ট্রাই করছে।
এই পুরো ঘটনাটা হৃদয় করেছে আমাদের দাঁড়ানো দিয়ে।টাকা খাইয়ে তার সাহায্যে বাসায় প্রবেশ করে আর আমার রুমে এসে আদ্রিতাকে অন্ধকার এ কোলে তুলে নেয়। এতেই আদ্রিতা জেগে কান্না করে দেয় আর আমি জেগে যাই।
অন্ধকার এ উঠে বসি। হাত বারিয়ে ওকে খুঁজি বিছানায় নাই। অন্ধকার এ একটা ছায়ার কোলে কাঁদতে দেখা যায়।আমি ভাবি ওইটা আদ্র তাই বলি,
আদ্র অন্ধকার কেন এতো লাইট দাও। আদ্রিতাকে আমার কাছে দাও।
বলতে বলতেই দেখতে পাই ছায়া টা দরজার দিকে যাচ্ছে আর একটাও কথা বলছে না ওদিকে আদ্রিতা চিৎকার করে কেঁদেই যাচ্ছে এবার আমার সন্দেহ হলো। আমি নিজের ফোন খুঁজে আলো জ্বালাতেই হৃদয় এর মুখ দেখি ও আদ্রিতাকে কোলে তুলে বেরিয়ে যাচ্ছে। আমি বিষ্ময়ে হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে চিৎকার করে উঠলাম। হৃদয় একটা কাগজ ছুড়ে দৌড়ে বেরিয়ে গেলো।আমি বিছানায় থেকে তারাতাড়ি নামতে গেলাম চিৎকার করতে করতে। আর অসাবধানতায় আমি বিছানায় থেকে ফ্লোরে মুখ থুবড়ে পড়ে গেলাম। একেতে সন্তান এর বিপদ তার উপর এভাবে পরায় পেটে আঘাত পেয়ে ব্যাথায় আতনাদ করে উঠলাম।
ততক্ষনে বিদ্যুৎ ঠিক হয়ে গেছে। তখন আদ্র সহ সবাই ছুটে আমার কাছে এসে আমার এই অবস্থা দেখে সবাই ভয় পেয়ে যায়। আমি এক হাত পেটে দিয়ে আদ্রিতা বলে কেঁদে যাচ্ছি আদ্র এসে আমার পাশে বসে বলে,
পরলে কি করে? আর আদ্রিতার কি হয়েছে কে নিয়ে গেছে কি সব বলছো?
কান্নার জন্য কথা বলতে পারছিনা।
আদ্র আমাকে ধরে বিছানায় বসিয়ে দেয়। শাশুড়ি মা এসে বলে,
আদ্রিতা কই স্নেহা ওকে তুলে তোমার কাছে শুইয়ে রেখে গেছিলাম।
আদ্র ও চমকে যায়।
হৃদয় ওকে নিয়ে চলে গেছে।
বলেই কেঁদে উঠলাম।
আদ্র আমার দিকে তাকিয়ে হতভম্ব হয়ে বললো,
কি সব বলছো ও কোথা থেকে আসবে?
ও এসেছিলো আমি বিকেলে আপনাকে বলেছিলাম।ওকে দেখেছি ও এখন আমাদের মেয়েকে নিয়ে চলে গেছে। আমার চোখের সামনে ও আমাদের মেয়েকে নিয়ে চলে গেল।আমি কিছু করতে পারলাম না।
আমি কাঁদতে কাঁদতে আদ্রর বাহুতে মুখ ঢেকিয়ে ফেললাম।
আমার কষ্ট হচ্ছে খুব।
বলতে বলতে আমার চোখ অন্ধকার হয়ে গেল। আর কিছু মনে নেই। চোখ খুলতেই নিজেকে হসপিটালে পেলাম। পরে যাওয়ার পেটে আঘাত পাওয়ায় জ্ঞান হারিয়ে ছিলাম।
কি ভাবছো এতো ঠান্ডায় মধ্যে এখানে বসে? ভেতরে চলো।
আদ্রর কথায় অতিত থেকে বাস্তবে ফিরলাম।
আদ্র আমার হাত ধরলো।আমি কিছু বললাম না আদ্রর সাথে ভেতরে চলে এলাম।
আবার কাঁদছিলে?
বলেই আদ্র দুই হাত আমার দুই গালে রেখে চোখের পানি মুছে দিলো।
খারাপ স্মৃতি মনে কেন করো?
সে তো মনে পরবেই আমার কলিজার টুকরা মেয়ে কে নিয়ে আমাকে মনে করিয়ে রেখেছে সব। ওই একটা চিঠি ছাড়া আর কিছু নেই। কোথায় আছে হৃদয়?কোথায় হারিয়ে গেল আমাদের মেয়েকে নিয়ে?
ও দেশে নেই আমার মতে কোন স্থানে ওকে খোঁজ বাজ রাখিনি আমরা কেউ বলতে পারেনা কোথায় আছে। আর চিঠি পরে আমি এটা বুঝতে পেরেছি ও আমাদের মেয়ের কোন ক্ষতি করবেনা।
চিঠিতে লেখা ছিলো,
” স্নেহা সুইটহার্ট তোমার একমাত্র মেয়েকে আমি নিয়ে গেলাম। মেয়েকে পেতে চাইলে তোমাকে ওই আদ্রর হাত ছারতে হবে।ওকে ডিভোর্স দিতে হবে। আমার চিরকালের জন্য আমার হতে হবে। যদি পারো তো চলে এসো। তোমার মেয়ে আমাকে বাবা জানবে আর তোমাকে মা সো এখানে আদ্রর স্থান নাই।”
নিচে চলো খাবে।
খেতে ইচ্ছে করছে না।
তুমি এখন এসব ভেবে না খেয়ে আমাদের আরেক সন্তান এর ক্ষতি করতে চাও।
আদ্রর কথায় অবাক হয়ে তাকালাম।
কি হলো বলো তাই চাও? তাহলে থাক খেতে হবে না।আমি ও খাব না।
বলেই আদ্র উঠে যেতে চাইলো আমি ওর হাত আঁকড়ে ধরলাম।
খাবো চলেন। রাগ করেন কেন এতো?
আদ্র আমার দিকে ফিরে বলল,
তো কি করবো সব সময় ওইসব ভেবে কাঁদছ কেন? এতো টেনশন কেন করো এতে তোমার ক্ষতি হবে বুঝতে পারো না নাকি। তুমি কি চাও আমাকে ছেড়ে ওই হৃদয় এর কাছে যেতে?
চমকে উঠলাম আমি,
কি সব বলছেন? আমি ওই হৃদয় এর কাছে ফিরে কেন যাব।
মেয়ের জন্য।ওতো আমাকে ছারলে মেয়েকে ফিরিয়ে দিবে বলেছে।
আপনি পাগল হয়েছেন। আমি কখনো আপনাকে ছারতে পারবো না কখনো না। আমার আপনাকেও চাও মেয়েকেও চাই। কেন বুঝেন না?
আদ্র গম্ভীর হয়ে তাকিয়ে ছিলো আমার দিকে এবার আমার হাত ওর হাত থেকে ছারিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
আমি ছলছল চোখে তাকিয়ে আছি। পাঁচ মিনিট এ আদ্র হাতে খাবার নিয়ে রুমে এলো।
আমার পাশে বসে খাইয়ে দিতে লাগলো,
আমি বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে আছি। ভেবেছিলাম আদ্র রাগ করেছে কিন্তু মনে মনে প্রশান্তি পেলাম।
কালকে আমাকে ভাইয়ার কাছে দিয়ে আইসেন তো দুইদিন থাকবো সেখানে।
আমার কথা শুনে আদ্র আমার মাথা বুকে থেকে তুলে মুখোমুখি করে ধরলো।
সেখানে কেন? আর যাবে যেহেতু থাকার কি দরকার?
আমি কি নিজের ভাইয়ের কাছে যেয়ে থাকতেও পারবোনা।
পারবে কিন্তু…
কোন কিন্তু না আমার কিছু দরকার আছে। সেসব করেই চলে আসবো।
কিন্তু আমি তোমাকে ছাড়া কি করে থাকবো?
দুইদিন তো বেশি না।
আমার জন্য বেশি।
তাহলে এক সপ্তাহ থেকে আসবো।এমনিতে ও বাপের বাড়ি থাকলে তো থাকায় হতো তখন কি করতেন? সেটাই করতে হবে দেখছি।
আমিও গিয়ে থাকবো।
আপনার অফিস।
ধুর।
ঘুমান তো।
আদ্র গোমড়া মুখে তাকিয়ে আছে আবসা অন্ধকারে আমি এগিয়ে আদ্রর বুকে মাথা রেখে চুমু দিলাম।
আদ্রর গোমরা মুখে হাসি ফুটে উঠল। আদ্র আমাকে নিজের সাথে মিশিয়ে নিলো শক্ত করে।
পরদিন আদ্রর সাথে আমি এই বাসায় আসলাম। সারা রাস্তা গাল ফুলিয়ে বসে ছিলো। বাসার সামনে আসতেই আদ্র আমার সাথে নেমে পরলো। আর আমার কপালে কিস করে বাই বলে চলে গেলো।
কলিং বেল চাপতেই দরজা খুললো ভাবি। আমাকে দেখেই এক বিরাট হাসি দিলো।
আমাকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পরলো। আমি শুধু তার কর্ম কান্ড দেখলাম।
ভাইয়াও এসে আমাকে কাছে বসলো তারপর প্রেগন্যান্ট এর খবর জানাতেই ভাইয়া সেকি খুশি।
ভাইয়ার সাথে গল্প করতে লাগলাম।
রাতে ভাইয়ার রুমে এসে ভাইয়ার পাশে বসে ভাবিকে নিয়ে কথা বলতে লাগলাম।
ভাইয়া তুমি ভাবিকে ক্ষমা করে দাও আর তাকে মেনে নাও।ভাবি তো তার ভুল বুঝে নিজেকে সুধরে নিয়েছে। আর শাস্তি ও পেয়েছে এখন তার আর আপন বলতে কেউ নেই তুমি ছাড়া। তাকে ক্ষমা করে নতুন করে শুরু করো সব।
ভাইয়া অবাক হয়ে বললো, পাগল হয়েছিস তুই। ওকে মানতে বলছিস। কিভাবে ওর জন্য আমরা বাবা মা হারিয়েছি। আমাদের সুখের সংসার নষ্ট হয়েছে। তাকে তুই ক্ষমা করতে বলছিস।
হুম বলছি ভুল সবাই করে তাই বলে কি তার ভুল ধরে তাকে শেষ করে দিবে। তাকে ক্ষমা করে ভালো হওয়ার সুযোগ দেবে না বলো। ভাবি তার ভুলের প্রাশ্চিত্য করছে আমাদের উচিত তাকে ভালো হওয়ার একটা সুযোগ করে দেওয়া।
আমি ওকে মানতে পারবো না কখনো না।
প্লিজ ভাই।
আমি পারবো না তুই ওকে নিয়ে কথা বলা অফ কর।
হতাশ হয়ে ভাইয়ের মুখের দিকে রইলাম।
______________
নিশাত কফিসপে মাইশার মুখোমুখি বসলো আছে।
বলো কি জানো তুমি?
আমি জানি যে হৃদয় দেশে নাই ও বিদেশ আছে।
কোন দেশ?
সেটা আমি জানি না।
তাহলে বলে কি লাভ দেশের তো অভাব নেই কোথায় আছে বুঝবো কি করে? এটা তুমি ফোনেই বলতে পারতে।
আরেকটা নিউজ আছে।
কি?
হৃদয় নাকি দেশে আসছে?
হোয়াট?
হুম আমি এটা জানতে পেরেছি ওর লোকের থেকে লুকিয়ে। কিন্তু কবে সেটা জানি না।
তাদের থেকে কোন দেশে আছে জানতে পারলে না।
না কারন তারা ও জানে না।
#অচেনা_শহর💖
#সিজন(২)
#লেখিকা:–তানজিনা আক্তার মিষ্টি
#পর্ব:–[৩৪]
মাইশার সাথে কথা শেষ করে অফিসে গেল নিশাত। চেয়ার হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করে কপালে আংগুল চালাতে লাগলো।
এর জন্য তো হৃদয়ের খোঁজ পাওয়া যায়নি।এতো তন্ন তন্ন করে খুঁজে ও পাওয়া যায় নি। কোন দেশে গিয়ে লুকিয়ে আছে হৃদয়।কিভাবে জানবো?
ওর পরিবার কিন্তু সেখানেও কেউ তো ওর খবর জানে না বলেছে।
হৃদয় তো আসবে দুই দিনের মাঝে তাহলে এখন আমার একটা কাজই করণিয়। ওকে ধরতেই হবে।
:
ভাইয়ার সাথে কথা বলে বুঝতে পারলাম একে মানানো আমার সম্ভব না। ভাইয়া ভাবিকে বাসায় রাখবে কি স্ত্রীর অধিকার আর দেবে না। আমি হাল ছেড়ে রুম থেকে বেরিয়ে এলাম।
ভাবির কাছে গিয়ে দেখি সে বিছানায় বসে চোখের জল ফেলছে আমাদের কথা শুনেছে আমি দেখেছি।
আর ভেতরে ঢুকলাম না নিজের রুমে চলে এলাম।
বিছানায় এসে ফোন হাতে নিয়ে দেখলাম আদ্র কল করেছিলো।আমি জানতাম কল করবে মিনিট এ মিনিট এ কল করতে হবে উনার।
ফোন হাতে বসে রইলাম ফোন দিচ্ছে না ধুর বিরক্ত হয়ে কল লিস্ট এ গিয়ে ফোন করতে গিয়ে কি মনে করে যেন আদ্রর বদলে অন্তরাকে কল করলাম ওকে জানানো হয়নি।
হ্যালো কেমন আছিস?
ভালো, তুই?
আলহামদুলিল্লাহ। অয়ন কেমন আছে?
ভালোই আছে। বসে বসে আকাম করছে?
কি করছে?
গাড়ি ভেঙে সেটা ইন্জিনিয়ার হয়ে ঠিক করছে।
ভালো তো ওর কাছে দে।
আচ্ছা ধরো।
অন্তরাকে স্নেহা ডাকছে কিন্তু সে আসলো না বললো, মাম্মা তুমি আম্মু ( স্নেহাকে আম্মু বলে অয়ন) কে পরে কল করতে বলবো। আমি এখন বিজি আছি ইম্পর্টেন্ট কাছে।কথা বলতে পারবো না।
ওর সিরিয়াস কথা শুনে হেসে ফেললাম।
আচ্ছা ওকে ওর ইম্পর্টেন্ট কাজ করতে দে।
অন্তরা আর স্নেহা অনেক সময় কথা বললো। এদিকে আদ্র কল করেই যাচ্ছে আর বারবার বিজি পাচ্ছে নাম্বার বিরক্ত হয়ে উঠে বসলো বিছানায়।
এতো কার সাথে কথা বলছে স্নেহা। এদিকে আমি ওর জন্য ছটফট করছি আর ও আমার কথা না ভেবে কার সাথে এতো কথা বলছে।
অন্তরার সাথে কথা শেষ করতেই আদ্রর কল এলো। এতোক্ষণ কল করে নিশ্চয়ই বিজি পেয়েছে। ফোন কানে ধরতেই আদ্র ককর্শ আওয়াজ এলো,
এসব স্নেহা আমি তোমাকে পাগলের মতো কল করে যাচ্ছি। আর তুমি আমার ফোন রিসিভ না করে অন্য কারো সাথে কথা বলে যাচ্ছ।
আরে শুনুন তো।
কি শুনবো তুমি একটু ও আমাকে ভালোবাস না? এখন পর্যন্ত আমার তোমার প্রতি যে টান সেটা তোমার ক্ষেত্রে দেখলাম না।
অলস মুখ করে দাঁড়িয়ে আদ্রর কথা শুনছি কিছু হলেই এইসব কথা বলতে লাগে লোকটা।
আদ্র নিজের অভিযোগ এর পালা শেষ করে থামলো।এবার আমি বললাম,
আমি অন্তরার সাথে কথা বলছিলাম। আপনার কল দিতে দেরি হচ্ছিল তাই।আর তার আগে আমি ভাইয়ার কাছে ছিলো ফোন রুমে রেখে তাই ধরতে পারিনি।
খাইছো?
হুম, আপনি?
এখনো না খাবো।
এখনো খাননি কেন? হালকা রেগে।
কাজ করছিলাম। আম্মু খাবার দিয়ে গেছে খাব এখন।
আচ্ছা তাহলে খেয়ে কল করেন রাখি।
না না তোমাকে আমি কি রাখতে বলছি।
আপনি খাবেন তো পরে কথা বলেন।
না আগে বলো আমার রাজকন্যা কেমন আছে?
আদ্রর কথায় অবাক হলাম।
সাথে মন খারাপ হলো। আদ্র বুঝতে পেরে।
আরে মন খারাপ করবে না বলে দিচ্ছি। না হলে কিন্তু আমি খাব না।
উফফ বিরক্ত করেন না তো তারাতাড়ি খেয়ে কল করবেন রাখি না হলে কল রিসিভ করবো না।
এমন করলে আমি এই রাতে তোমার কাছে চলে আসবো কিন্তু। আমার ক্লান্ত শরীর নিয়ে কষ্ট হবে তাও আসবো কল কেটে দেখো শুধু।
আদ্রর হুমকি শুনে আর কল কাটতে পারলাম না।যে লোক উনি তখন সত্যি চলে আসবে।
আদ্র কল কাটলো না খেতে খেতে কথা বললো।
ফোন কানে নিয়ে আমি ঘুমিয়ে পরলাম।
__________
পাপ্পা তুমি আমাকে রেখে কোথায় যাবে?
মন খারাপ করে হিয়া বললো হৃদয় এর দিকে তাকিয়ে।
হৃদয় ওর কাছে এসে গালে চুমু খেল তারপর হেসে বললো,
তোমার মাম্মা কে আনতে যাচ্ছি তাকে নিয়ে চলে আসবো ততক্ষন তুমি ন্যানির কাছে থাকবে লক্ষি মেয়ে হয়ে ওকে।
মাম্মা কে আনতে? পাপ্পা মাম্মা কোথায় আছে?
সেটা তো বলা যাবে না এটা সারপ্রাইজ?
আমাকে নিয়ে চলো তাহলে?
না তুমি এখানেই থাকবে ?
হিয়া মন খারাপ করে বসে তাকিয়ে রইলো।
মন খারাপ করো না। আমি তো খুব দ্রুত ফিরে আসবো। এই যাব আর আসবো।
কিন্তু আমার তো কষ্ট হবে মিস করবো তোমাকে?
ফোন করবো তো।
তবুও।
অনেক কষ্টে হিয়াকে মানতে চাইছে মানছে না। হৃদয় বিরক্ত হয়ে ঠাস করে চড় মেরে বসলো হিয়ার গালে। রাগে ওর চোখ লাল হয়ে গেছে এতো বিরক্ত করতে পারে অসহ্য।
হিয়া কাঁদতে কাঁদতে রুমে চলে গেলো। তারপর স্নেহার একটা ছবি নিয়ে কাঁদতে কাঁদতে বললো,,
মাম্মা পাপ্পা আমাকে মেরেছে তুমি এসে পাপ্পাকে বকে দিবে কেমন?
বলেই স্নেহার ছবি বুকে নিয়ে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পরলো। কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পরলো।
হৃদয় হিয়ার দেখাশোনা করার জন্য একজন মহিলাকে রেখেছে তার নাম এলিনা তাকে ডেকে উঠলো দৌড়ে আসলো,
আমি কিছু দিনের জন্য দেশের বাইরে যাচ্ছি তুমি হিয়াকে সামলে রেখো।
আপনি কোথায় যাচ্ছেন?
সেটা তোমার জানার দরকার নাই। যতটুকু বলেছি করো।
বলেই বেরিয়ে গেলো।
_______________
পরদিন নিশাত পুলিশ ফোর্স নিয়ে ইয়ারপোট ঘেরাও করে ফেলেছে হৃদয় কে ধরবে বলে।
এদিকে হৃদয় বাংলাদেশ পা রেখেই নিজের আমেরিকার সমস্ত জিনিস ফেলে দেয়। ওর ভয় যদি জেনে যায় কেউ তাই। ও বাথরুমে গিয়ে ছদ্রবেশে ইয়ারপোট বাঁকা হেসে বেরিয়ে আসে।
বাইরে এসেই নিশাত ও তার লোকদের দেখে শয়তানি হাসি দেয়।
সানগ্লাস বের করে চোখে দিয়ে সবার সামনে একটা গাড়িতে গিয়ে বসে কেউ ওকে চিনতে ও পারেনা।
পরদিন স্নেহা বাসায় চলে আসে ভাইকে আরেকবার বুঝিয়ে সাথে ভাবিকে ও বলেছে সে যেন আশা না ছাড়া আস্তে আস্তে ঠিক ক্ষমা করে দেবে ভাইয়া বলে চলে আসে।
অন্তরা অয়ন কে নিয়ে শপিং করতে এসেছে। অয়নকে ধরতেই পারছে না খালি দৌড়ে দৌড়ে এদিকে ওদিকে চলে যাচ্ছে এতো দুষ্টু হয়েছে ছেলেটা কি বলবো?
ও পেছনে থেকে রেগে ওকে থামাতে বলছে।
হৃদয় ড্রেস কেনার জন্য শপিং এ এসেছে। বিদেশ থেকে কিছু নিয়ে আসে নি এখন ড্রেস কিনে বাসা ভাড়া করতে হবে। ও ব্যাগ হাতে ছদ্রবেশে চলে আসতে নেয় তখন এখন বাচ্চা ছেলের সাথে ধাক্কা লাগে ফলে হাতের ব্যাগ পরে যায় ও রেগে অয়ন কে ধমকে উঠে। অয়ন চঞ্চল হলেও ধমক শুনে চুপ মেরে দাঁড়িয়ে যায়। অন্তরা এসব দেখে দ্রুত অয়নের কাছে যায় অয়ন মাম্মা বলে ওর হাত জরিয়ে ধরে।
হৃদয় বকতে বকতে ব্যাগ হাত তুলে নেয়।
তারপর মাথা উঁচু করে সামনে তাকাতেই থমকে যায় অন্তরাকে দেখে। তিন বছর পর অন্তরাকে দেখছে অন্তরাকে। গায়ে নীল রঙের থ্রি পিস পড়া। আগের থেকে মোটা হয়েছে কিছুটা সাথে সুন্দর ও হয়েছে। থমকে অন্তরার দিকে তাকিয়ে আছে। ওকে চিনে ফেলে নিতো ভয় পেয়ে চোখ সরিয়ে নেয়।
অন্তরা এগিয়ে এসে হৃদয় কে বলে,
সরি মিস্টার। আমার ছেলে বুঝতে পারেনি। খুব চঞ্চল অয়ন আন্কেল কে সরি বলো আসো।
অয়ন এগিয়ে এসে হৃদয় এর দিকে তাকিয়ে বলে,
নো মাম্মা আমি সরি বলবো না।
অয়ন সরি বলো।
নো।
অন্তরা চোখ রাঙিয়ে তাকালো তাতেও কাজ হলো না। তাই হালকা হাসি টেনে বললো,
কিছু মনে করবেন না। আসি।
বলেই রেগে অয়ন এর হাত ধরে টানতে টানতে চলে গেলো হৃদয় বিষ্ময়ে হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলো।
অন্তরার ছেলে অবাক হয়ে ওর তো নিশাত এর সাথে বিয়ে হয়েছে শুনেছি এটা কি নিশাত এর সন্তান। তাই হবে হয়তো।
চলবে~~~
চলবে~~~
(খুব তারাতাড়ি শেষ পর্ব পাবেন। )
চলবে~~