#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ১৪
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
কি বললি সাজ্জাদের সাথে আদ্রিতার বড় বোনের বিয়ে ঠিক হয়েছে?(S.R)
হ্যাঁ, বস আমি শুনে নিজেই অবাক এতোদিন ত মনে করেছিলাম সাজ্জাদ হয়তো আদ্রিতাকে ভালোবাসে তাই হয়তো ওকে রক্ষা করে। এখন বুঝলাম এমনি মানবিকতার জন্য আদ্রিতাকে সাহায্য করেছে আর কিছু না।
তাহলে ভালোই হলো আদ্রিতার বোনকে বিয়ে করে নিক পরে আমি আদ্রিতাকে দেখে নিবো। শুন তুই সব সময় ওদের উপর নজর রাখ। (S.R)
ওকে বস।
তারপর S.R ফোনটি কেটে দিলো। সামিরার সাথে সাজ্জাদের বিয়ের কথা শুনে কিছুটা নিশ্চিন্ত হলো এখন।
******
১০ বছরের একটি মেয়ের ছবি হাতে নিয়ে বসে আছে সাজ্জাদ। তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি তাই না? বিশ্বাস করো আমার হাত পা বাঁধা। উপায় নেই আর। সেদিন সন্ধ্যায় যদি তুমি না আসতে তাহলে আজকে এতো সমস্যার সৃষ্টি হতো না। S.R এর নজর তোমার উপর পড়তো না। তোমার থেকে এতো দূরে সরে যেতে হতো না আমার। চিন্তা করো না একটু কষ্ট করো আর কিছু দিন পর তোমাকে আমার নিজের করে নিবো। কিন্তু তুমি ত আমাকে খারাপ মনে করো? ভয় পাও অনেক।
কথা গুলো বলে সাজ্জাদ দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
এমন সময় রুসে স্বাধীন প্রবেশ করলো,
দোস্ত তোদের বিয়ের কার্ড ছাপানো হয়ে গেছে। কালকে আদ্রিতাদের বাসায় পাঠিয়ে দিবো সকালে। যেভাবে বলেছিলি সেভাবেই কাজ হচ্ছে। আঙ্কেল আর আদ্রিতার বাবা সব কিছু জানে ত?(স্বাধীন)
হ্যাঁ আমার সাথে কথা হয়েছে। কিন্তু মা আর আন্টিকে বলি নি কিছু। (সাজ্জাদ)
পরে ঝামেলা হলে? (স্বাধীন)
হবে না সব কিছু ঠিকঠাক হবে। আমার মনে হয় না আমার আর সামিরার বিয়েতে S.R এর লোক আসবে। যদি আদ্রিতার সাথে বিয়ে হতো তাহলে নিশ্চয়ই আসতো। ( সাজ্জাদ)
হ্যাঁ, আচ্ছা সেদিনের ঘটনার সাক্ষী একমাত্র আদ্রিতা। ওর মুখ থেকে একবার সব কথা বের করতে পারলে অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যেতো। ( স্বাধীন)
আমি অনেকবার চেষ্টা করেছিলাম বার বার আদ্রিতার আগের কথা মনে পড়লে সমস্যা হয়েছে। এজন্য ওকে বেশি চাপ দিচ্ছি না। আর S.R এখন কোথায় আছে তা যদি জানতে পারি তারপর আদ্রিতাকে জোর করে হলে ও সব কথা বলাতে হবে। সেদিন আদ্রিতা নিজ অজান্তেই অনেক বড় প্রমাণ নিয়ে নিয়েছিলো। সেদিন যখন ওদের বাসায় দাওয়াত ছিলো আমি দেখেছিলাম সোফার রুমে আদ্রিতার সেই ক্যামেরাটি রাখা আছে। আদ্রিতা অনেক যত্নশীল। আমার মনে হয় না আদ্রিতা আগের কোনো ছবি বা ভিডিও ডিলিট করেছে। এখন শুধু সঠিক সময়ের অপেক্ষা। (সাজ্জাদ)
হ্যাঁ, দেখি কি হয়। চারটি জীবন কোনদিকে যাচ্ছে কিছু বলা যাচ্ছে না। আমি ওদের ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছি। সব কিছু ভালোই। ( স্বাধীন)
কার ব্যাপারে তোর অসময়ী বৃষ্টির ব্যাপারে?(সাজ্জাদ)
হ্যাঁ, দোস্ত ওই আর কি মা বাবাকে বলেছি তারা রাজি আছে। প্রথমে একটু আপওি করেছিলো পরে রাজি হযে গিয়েছে। ( স্বাধীন)
যাক ভালোই হয়েছে একদিকে চিন্তা মুক্ত। আদ্রিতার সাথে সেদিন যেই ছেলেটাকে দেখলাম তার ব্যাপারে খোঁজ নিয়েছিলি? ( সাজ্জাদ)
হ্যাঁ, আদ্রিতা আলো তানহা আবির ওরা চারজন খুব ভালো ফ্রেন্ড। আর সেদিন তুই আবিরের সাথে আদ্রিতাকে দেখেছিলি। ( স্বাধীন)
ও আচ্ছা। ( সাজ্জাদ)
********
রাতের খাবার খেয়ে দির রুমে গেলাম।
কিরে এতো রাতে কিছু বলবি? ( সামিরা,)
দি আমার কেনো জানি ভয় লাগছে আজকে তোর সাথে ঘুমাবো। ( আদ্রিতা)
হ্যাঁ ঘুমা তোকে একটি প্রশ্ন করি? (সামিরা)
বল। (আদ্রিতা)
সাজ্জাদকে এখনো ভালোবাসিস? আমার সাথে বিয়ে হলে মেনে নিতে পারবি ত?
দি ঘুমা ভালো লাগছে না। কথাটি বলো শুয়ে পড়লাম।আজকে সাজ্জাদের যেই রূপ দেখেছি আমার শুধু তাকে ভয় লাগছে। সে কি আসলেই আমাকে তখন স্যুট করে দিতো?
আদ্রিতা কিছু বলছে না দেখে সামিরা আর কিছু বললো না।ঘুমিয়ে পড়লো।
*******
অসময়ী বৃষ্টির দেখা পাওয়ার জন্য স্বাধীন আবার রাতে এসেছিলো কিন্তু দেখা পায় নি। এক আকাশ পরিমাণ আফসোস নিয়ে ফিরে গেলো।
******
মায়াপরীর চিন্তায় একজনের মন টিকছে না। ইচ্ছে করছে এখনই গিয়ে মায়াপরীকে তার কাছে নিয়ে আসতে। কিন্তু এখন অধিকার নেই তার। সে মায়াপরীকে হালাল ভাবে তার কাছে টেনে নিতে চায়।
*******
নওশিনের হাতে সাজ্জাদের একটি ছবি। সাজ্জাদকে দেখার জন্য যেনো পাগল হয়ে যাচ্ছে। আবার অন্য দিকে আদ্রিতার প্রতি নওশিনের রাগ বেড়ে যাচ্ছে।
ক্লাসে সর্বোচ্চ নাম্বার যেমন তুই ছিনিয়ে নিস তেমন ভাবে সাজ্জাদকে আমার থেকে ছিনিয়ে নিতে পারবি না তুই আদ্রিতা। কথাটি বলে আদ্রিতার একটি ছবি নিয়ে তা দুভাগ করে ফেলল।
সকালে ~
আদুরিরিরিরি (সামিরা)
দি আস্তে কি হয়েছে ঘুমাতে দে। অনেক ঘুম পাচ্ছে। (আদ্রিতা)
না ঘুম থেকে উঠ কলেজে যা তোর না কলেজে কিসের অনুষ্ঠান আছে? দায়িত্ব তোদের গ্রুপের আর তোরা কলেজে না গিয়ে বাসায় বসে থাকিস। যা কলেজে। (সামিরা)
উঠছি দি,( আদ্রিতা)
সামিরা আদ্রিতাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে চলে গেলো রুম থেকে।
আমি আবার ফোনে একটু বেশি আসক্ত। ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলাম। ২য় নাম্বার থেকে আবার মেসেজ এসেছে,
মায়াপরী তোমাকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখার ইচ্ছেটা তীব্র হচ্ছে। খুব ভালোবাসি তোমাকে আমার পিচ্চি মায়াপরী।
মায়াপরী নামটা সুন্দর। কিন্তু আমাকে এই মেসেজটি কে দিতে পারে। একথা ভাবছিলাম। তখন ১ম নাম্বার থেকে আবার মেসেজ আসলো সেখানে লেখা,
আশা করি প্রিয় আজকে তুমি কলেজে আসবে।
কি একটা অবস্থা একজন আমাকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে চাচ্ছে আর একজন কলেজে দেখতে চাচ্ছে। যাই হোক ফোন রেখে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করার জন্য বসলাম।
শুনলাম কয়েকদিন পর তোদের কলেজে নাকি কিসের অনুষ্ঠানে আছে সেখানে নাকি সাজ্জাদ আর স্বাধীন ও আসবে? ( আদ্রিতার বাবা)
হ্যাঁ বাবা। ( আদ্রিতা)
অনুষ্ঠানে ওদের কাছাকাছি থাকবি। তাদের যেকোনো দরকার হলে সহযোগিতা করবি। (আদ্রিতার বাবা)
ঠিক আছে বাবা। (আদ্রিতা)
আদ্রিতার মা শুনছো, সামিরার বিয়ের কার্ড ছাপানো হয়ে গেছে। (আদ্রিতার বাবা)
কই দেখি ত কার্ড কেমন হযেছে।( আদ্রিতার মা)
স্বাধীনের কাছে আছে পরে আমাদের পাঠিয়ে দিবে বলেছে। ( আদ্রিতার বাবা)
ঠিক আছে। (আদ্রিতার মা)
মা আমি কলেজে গেলাম। কথাটি বলে বেরিয়ে পড়লাম।
****কলেজে****
কলেজে আমি আর আলো প্রবেশের সময় রাইসা আর নওশিন আসলো। আমি ওদের পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে নওশিন বলে উঠলো, খুব ত বড়লোকদের হাতে রাস্তায় খাচ্ছিছ ওদের জড়িয়ে ধরে রাখিছ লজ্জা করে না?
আমি কাকে জড়িয়ে ধরবো, কার হাতে খাবো এগুলো আমার ইচ্ছে। তোর এতো গায়ে লাগছে কেনো?
সমস্যা কি তোর। (আদ্রিতা)
সাজ্জাদকে ভালোবাসি আমি নেক্সট টাইম যদি সাজ্জাদের আশে পাশে তোকে দেখি তাহরে একদম শেষ করে দিবো তোকে কথাটি বলে নওশিন চলে গেলো। আমি আর আলো অবাক হয়ে গেলাম। সত্যি কি নওশিন ভালোবাসে সাজ্জাদকে নাকি আমার সাথে প্রতিযোগিতা? কিন্তু সাজ্জাদ ত আমাকে ভালোবাসে না।
*****ক্লাস রুমে****
ক্লাসে আমি আলো তানহা আবির বসে আছি।বাকি স্টুডেন্ট রাও আছে এমন সময় আরিয়ান স্যার আসলেন।
তোমাদের অনুষ্ঠানের আর মাএ ৩ দিন বাকি আছে। এবারের প্রধান অতিথিদের জন্য আমরা গিফটের ব্যবস্থা করেছি সে জন্য আমার সাথে তোমাদের গিফট কিনতে যেতে হবে। আদ্রিতা তোমরা ৪ জন কলেজ ছুটির পরে আমার সাথে আসবে। আর এখন আদ্রিতা একটু আমার রুমে আসো। (আরিয়ান)
কিরে দোস্ত তোকে আবার আলাদা রুমে ডাকলো কেনো? কিছু চলছে নাকি তোদের মাঝে? ( আবির)
হুম আমার ও মনে হচ্ছে কিছু এটা চলছে। ( তানহা)
পাগল হয়ে গেছিছ নাকি তোরা। হয়তো কোনো কাজে ডেকেছে। তোরা বস আমি দেখে আসছি। আলো চল। তারপর আলোকে নিয়ে স্যারের রুমে গেলাম।
স্যার আসবো? (আদ্রিতা)
হ্যাঁ এসো। ( আরিয়ান)
আমি আর আলো রুমে আসলাম।
তোমাকে একা আসতে বলেছিলাম আলোকে নিয়ে না।
ওকে বাইরে যেতে বলো। (আরিয়ান স্যার)
ওকে স্যার (আদ্রিতা)
আলো বাইরে চলে আসলো।
*****
সাজ্জাদ আদ্রিতার সাথে দেখা করতে এসেছিলো। দেখলো একসাথে আলো আর আদ্রিতা আরিয়ানের রুমে ঢুকছে। তাই সাজ্জাদ একটু দুরে দাঁড়িয়েই ওদের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলো। কিন্তু যখন দেখলো আলো রুম থেকে বেরিয়ে এসেছে আর আদ্রিতা রুমে একা সাজ্জাদের রাগ আর ও বেড়ে গেলো।
#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ ১৫
#লেখিকাঃ আদ্রিতা খান অদ্রি
স্যার কিছু বলবেন?( আদ্রিতা)
হ্যাঁ, কালকে তোমাকে দেখলাম সাজ্জাদের সাথে কলেজে আসবে বলে গাড়িতে উঠেছো। তারপর কলেজে আসো নি কেনো? ( আরিয়ান)
স্যার কলেজে আসতাম কিন্তু হঠাৎ রাস্তায় হঠাৎ শরীর দুর্বল লাগছিলো তাই সাজ্জাদ ভাইয়া বাসায় নিয়ে গিয়েছিলো। তাই আসতে পারি নি (আদ্রিতা)
তোমাকে আমি প্রায় সময় সাজ্জাদের সাথে দেখেছি। কার সাথে তুমি আসবে যাবে এইটা সম্পূর্ণ তোমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। কিন্তু তুমি একা সাজ্জাদের সাথে আসা যাওয়া করো না তোমার সাথে আলো ও থাকে। সাজ্জাদ হয়তো তোমার বাবার বন্ধুর ছেলে কিন্তু তাই বলে কি তোমাদের কলেজ থেকে নিয়ে আসার বা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব তার?এমন কিছু করো না যেনো আমাদের কলেজের সুনাম নষ্ট হয়। আশা করি তুমি বুঝতে পেরেছো কি বলতে চাচ্ছি। (আরিয়ান)
মেজাজ খারাপ হয়ে গেলো।আমি কার সাথে আসবো এইটা আমার ব্যাপার স্যার কেনো এ বিষয়ে কথা বলবে। শান্ত গলায় স্যারকে বললাম,
স্যার আমরা কার সাথে আসা যাওয়া করবো সেটা সম্পূর্ণ আমাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। আর এমন না যে আমার বাসায় জানে না যে আমি সাজ্জাদ ভাইয়ার সাথে এসেছি। আলোর পরিবার ও জানে। আর আমরা এমন কিছু করি নি যে কলেজের সুনাম নষ্ট হবে। (আদ্রিতা)
ওকে এখন যেতে পারো তুমি। (আরিয়ান)
আদ্রিতা রুম থেকে বাইরে চলে গেলো।
আরিয়ান বসে বসে ভাবতে লাগলো আদ্রিতাকে কিছু বলে লাভ নেই। সাজ্জাদের সাথে আসা যাওয়া করবেই। আনমনে বলে উঠলো,
আমি ত চাই না আমার প্রিয়তমা অন্যের সাথে যাওয়া আসা করুক। প্রিয়তমা তুমি কি বুঝতে পারো না আমি চাই না তুমি অন্য কারোর সাথে আসা যাওয়া করো। কতোবার ত আমি তোমাদের পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেছিলাম তখন ত রাজি হলে না। তাহলে সাজ্জাদের সাথে কেনো যাও? আরিয়ান দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
স্যারের রুম থেকে বের হবার পর হঠাৎ কেউ আমার হাত ধরে টান দিলো। তাকিয়ে দেখি সাজ্জাদ।
আপনি এইখানে? (আদ্রিতা)
এতোক্ষণ একা আরিয়ানের রুমে কেনো ছিলে?(সাজ্জাদ)
মেজাজা আর ও খারাপ হয়ে গেলো, সাজ্জাদের গাড়ি দিয়ে আসলে আরিয়ান স্যারের সমস্যা। আবার আরিয়ান স্যারের রুমে আসলে সাজ্জাদের সমস্যা। আমি যাবো কোথায়। সাজ্জাদের থেকে হাত ছাড়িয়ে তাকে বললাম,
কোন সাহসে আপনি আমার হাত ধরেছেন? নিজের লিমিটের মধ্যে থাকেন। ভুলে যাবেন না কয়েকদিন পর আপনার সাথে দির বিয়ে।
মুখে খুব কথা ফুটেছে দেখি। আমার সাথে এইভাবে কথা বলার সাহস কিভাবে পাও? তোমার সাহস দেখে অবাক হয় আমি। যাই হোক তোমার উপর সম্পূর্ণ অধিকার আমার আছে। তাই নেক্সট টাইম আমার কথার বাইরে একটা কাজ ও যেনো না দেখি।আশা করি বুঝতে পেরেছো। (সাজ্জাদ)
পাগল হয়ে গেছেন আপনি কিসের অধিকারের কথা বলছেন? আপনার আমার উপর অধিকার কেনো থাকবে? আপনার দির সাথে বিয়ে ঠিক হয়েছে আমার সাথে না। ( আদ্রিতা)
আদ্রিতা আর কিছু বলার আগেই সাজ্জাদ আদ্রিতার হাত শক্ত করে ধরে টানতে টানতে কলেজের বাইরে পেছনের মাঠে নিয়ে আসলো।সেখানে সচারাচর কেউ আসা যাওয়া করে না। এতো শক্ত করে সাজ্জাদ আদ্রিতার হাত ধরেছে আদ্রিতা কোনোভাবে হাত ছাড়াতে পারছে না। মাঠের মধ্যে এনে আদ্রিতাকে ধাক্কা দিয়ে একটু দুরে সরিয়ে বললো। এখন বলো কি বলবে? কি যেনো বলছিলে আমার তোমার উপর অধিকার নেই? আমার কথাটি বলে সাজ্জাদ আদ্রিতার দিকে আগাতে লাগলো।
আদ্রিতা খেয়াল করলো সাজ্জাদের চোখগুলো রক্ত লাল হয়ে আছে। আদ্রিতা এক পা করে পিছিয়ে যাচ্ছে।আদ্রিতা ভাবছে সাজ্জাদ হয়তো সেদিনের মতো আদ্রিতার মাথায় বন্দুক ঠেকাবে। কিন্তু আদ্রিতাকে অবাক করে দিয়ে,
সাজ্জাদ কেমন যেনো নেশাক্ত চোখে আদ্রিতার দিকে এগিয়ে আসছে আর তারপর সাজ্জাদ আদ্রিতার কোমর ধরে ওকে একটু উচু করে আদ্রিতার ঠোঁটের সাথে নিজের ঠোঁট মিশিয়ে দিলো।
সাজ্জাদের এমন কাজে আদ্রিতা বরফের মতো শক্ত হয়ে গেলো। যেন পুরো শরীর অবশ হয়ে আসছে। সাজ্জাদের থেকে দুরে সরতে চাইলে সাজ্জাদ আর ও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো ওকে
সাজ্জাদ নিজে ও যেনো আদ্রিতার নেশা থেকে মুক্ত হতে পারছে না। আর ও গভীর নেশায় পরে যাচ্ছে। পরে কি মনে করে যেনো হঠাৎ আদ্রিতাকে ছেড়ে দিলো। তারপর বললো অধিকারের কথা বললে পরের বার এর থেকে আর ও বেশি কিছু হয়ে যাবে।
আদ্রিতার থেকে দূরে সরে গিয়ে নিজের মুখ মুছতে লাগলাম।
লজ্জা করে না আপনার? আমার বোনের সাথে বিয়ে ঠিক হওয়া শর্তে ও কিভাবে পারলেন আমার সাথে? ছিঃ ঘৃণা হচ্ছে আপনার উপর। ( আদ্রিতা)
এখনই ঘৃণা হচ্ছে আর ও কিছু করবো নাকি? কথাটি বলে সাজ্জাদ এগিয়ে আসতে নিলে।
আর এক পা ও এগিয়ে আসলে আপনার সামনে নিজেকে শেষ করে দিবো। কোন সাহসে আপনি আমার শরীরে স্পর্শ করলেন? (আদ্রিতা)
বললাম না আমার সম্পূর্ণ অধিকার আছে তোমার উপর। (সাজ্জাদ)
ভুলে যাবেন না দির সাথে আপনার বিয়ে (আদ্রিতা)
কার সাথে কার বিয়ে হয় কে কার ভাগ্যে লেখা আছে তা ভবিষ্যতেই বোঝা যাবে। এখন ক্লাসে যাও। চুপচাপ ক্লাস করবে কোনো ছেলের সাথে একা কোথাও যেনো না দেখি। (সাজ্জাদ)
সমানে চোখের জল পড়ছে যে মানুষটা কিছুদিন পর আমার বোনের স্বামী হবে সে কিভাবে এখন আমার সাথে এ কাজ করতে পারলো। আবার সেদিন আমার মাথায় বন্দুক ঠেকালো। সাজ্জাদ কি আসলেই খারাপ কাজের সাথে জড়িত? (আদ্রিতা)
মাঠে দাঁড়িয়ে কথা গুলো ভাবছিলাম। তখন সাজ্জাদ কাছে এসে নিজের সাথে জড়িয়ে আমার কানের সামনে নিজের মুখ এনে বললো, ম্যাডামের কি হেঁটে যাওয়ার ইচ্ছে নেই? আমি আমার পদ্ধতিতে নিয়ে যাবো নাকি? কথাটি বলে সাজ্জাদ আদ্রিতাকে কোলে তুলে নিলো।
ছাড়ুন আমাকে নামান আমি নিজেই চলে যাচ্ছি। ছাড়ুনননননন (আদ্রিতা)
সাজ্জাদ ওকে নামিয়ে দিলো। আদ্রিতা দৌড়ে সেখান থেকে চলে গেলো। আদ্রিতা যাওয়ার পর সাজ্জাদ ও চলে গেলো। কিন্তু সেই এলাকার মধ্যেই আছে। কারন সাজ্জাদের কিছু কাজ রয়েছে এলাকাতে।
রুমে যাওয়ার আগে ভালো করে চোখ মুখ ধুয়ে নিলো।
এতোক্ষণ কোথায় ছিলি? ( আলো)
স্যারের সাথে কথা বলে একটু ক্যানটিনে গিয়েছিলাম।(আদ্রিতা)
স্যার কি বললো তোকে? (আলো)
স্যার যা যা বলেছে সব আলোকে খুলে বললাম। সব শুনে আলো বললো,
সাজ্জাদের সাথে তোর একটা ভালো সম্পর্ক ছিলো আগে। আর তুই কার সাথে যাবি এইটার ব্যাপারে স্যার কেনো কথা বলবে। আবার আমাকে ও তোদের মধ্যে টেনেছে। (আলো)
এমন সময় তানহা আর আবির আসলো,
কিরে কোথায় ছিলি আর স্যার কি অনুষ্ঠানের ব্যাপার কিছু বলেছে? (আবির)
ওদের দু’জন কেও সব কিছু বললাম
দেখ আমার মনে হচ্ছে, স্যার চাচ্ছে না তোরা অন্য ছেলের সাথে ঘুরাঘুরি করিছ। বাই এনি চান্স তোদের মধ্যে কাউকে পছন্দ করে না ত? (আবির)
আবিরের কথা শুনে আমি আর আলো চমকে উঠলাম। আবিরের কথা ঠিক কিন্তু কাকে পছন্দ করতে পারে?
আরিয়ান স্যার রুমে আসলেন,
আদ্রিতা বাকি কাজ গুলো কি শেষ হয়েছে? বাকি কাজ গুলো সেরে তুমি আলো তানহা আবির আমার সাথে আসো গিফট কিনতে হবে।
আমরা বাকি কাজ গুলো সেরে স্যারের সাথে বেরিয়ে পড়লাম।
এতোক্ষণ সাজ্জাদের খবর হয়ে গেছে আদ্রিতা আরিয়ানের সাথে বাইরে গেছে। সাজ্জাদ ও সেই জায়গার জন্য রওনা হলো যেখানে আদ্রিতারা গিয়েছে।
#চলবে
[