অজানা_অনুভূতি পর্ব ৭+৮

#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ৭
#লেখাঃInsia_Ahmed_Hayat

ফোনের রিংটোন এ ঘুম ভেঙে গেলো হায়াতের। হায়াত লাফ দিয়ে উঠলো। ফোনের স্ক্রিনে আয়াত নাম ভেসে আসছে। আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো কোথাও কেউ নেই। আরহাম হয়তো ওয়াশরুমে গিয়েছে। ঘড়িতে ৬.৩০ বাজে। হায়াত ঘুম ঘুম চোখে ফোন রিসিভ করলো।

হায়াতঃহ্যালো (ঘুমে দুলছে)

আয়াতঃ হ্যালো হায়াত তুই কি এখনো ঘুমিয়ে আছিস।

হায়াতঃ হুম(😴)

আয়াতঃ আরে গাধী তুই এখন হায়াত না মিসেস আরহাম চৌধুরী তাই উঠে সবার জন্য নাস্তা পানি বানাবি। আর হ্যা আমি হোয়াটস অ্যাপে রেসিপি লিখে পাঠিয়েছি তা দেখে দেখে রান্না করে ফেলবি। আমি রাখলাম ২ মিনিট পর আবার কল দিবো।

হায়ায় ফোন কানে রেখেই আবার ধপাস করে শুয়ে পরলো।

কানের কাছে রিংটোন এর আওয়াজে লাফ দিয়ে উঠলো ঘুম উধাও।

হায়াতঃ এই আয়াত দিলি তোহ আমার ঘুম টা ভেঙ্গে (বিরক্ত নিয়ে)

আয়াতঃ আমি জানতাম তুই আবার ঘুমিয়ে যাবি। তুই এখন আমাদের বাড়িতে না শ্বশুরবাড়িতে এতো বেলা করে ঘুমালে সবাই কি ভাববে। ঊঠে ফ্রেশ হয়ে। রান্না ঘরে যা। আর হ্যা ইউটিউব দেখে এরপর শাড়ি পরে নিবি। ওকে বাই।

ফোন রেখে দিলো। হায়াত ফোনের দিকে তাকিয়ে হালকা হাসলো। মেয়েটা আসলেই হায়াতের মা হয়ে গিয়েছে। সব রেডি করে দিয়েছে ব্যাস গিয়ে রেসিপি দেখে বানাবে।

হায়াত উঠে ফোন চার্জে দিয়ে। রুমটা ভালো করে গুছালো।
হায়াতঃ এতোক্ষন লাগে বাথরুমে। (হায়াত বাথরুমে দরজায় নক করছে) বরবাবু ও বরবাবু বাথরুমে কি ঘুমিয়ে গেলেন নাকি। এখন যলদি বের হোন। নীলবাবু। আরে ওই নীল চোখওয়ালা। এই মিয়া বের হোন নয়তো মুলার জুস খাইয়ে দিবে।

বেশ কিছুক্ষণ ঢেকে সারা শব্দ না পেয়ে দরজা খুলে অবাক কেও নেই। এতো সকাল সকাল আরহাম কোথায় চলে গেলো। হায়াত আরহামের দাদীর দেওয়া শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো।

★★★
৩০ মিনিট ধরে রুটি বেলছে হায়াত। সবজি ভাজি, ডিম ভেজে, চা করে রেখে রুটি বেলছে৷ আয়াত সুন্দর করে সব রেসিপি দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু রুটি যে এতো কঠিন হবে জানা ছিলো না হায়াতের। কাজের মেয়ে দুটুকে বাহিরে দাড় করিয়ে রেখেছে৷ আরহামের মা চাচী হায়াতের কান্ড দেখে হেসে কুটিকুটি।

আরহাম বাড়িতে ডুকে নিজের মা ও ছোট মায়ের হাসির শব্দে সেদিকে গিয়ে দেখলো ওর মা ও চাচী ডাইনিং টেবিলে বসে হাসছে। আরহাম ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে।

আরহামঃ মা ছোট মা তোমরা এভাবে হাসছো কেনো।

আরহামের মা হাসি থামিয়ে রান্না ঘরের দিকে ইশারা করলো। রান্না ঘরের বাহিরে মিনা আর মিনার মা দাঁড়িয়ে আছে। আরহাম ভ্রু কুচকে ওদের কাছে গেলো।

আরহামঃ কি হলো আপনারা দুজন এখানে দাঁড়িয়ে আছেন কেনো।

মিনাঃ নতুন বউমনি আমাদের রান্না ঘরে পা দিতে মানা করেছে।

মিনার কথা শুনে রান্না ঘরে তাকিয়ে অবাক। আরহাম অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। না চাওয়া স্বত্বেও চোখ সরাতে পারছে না। হায়াত একটা নীল জর্জেট শাড়ি পড়ে শাড়ির আচল কোমরে বেধে গালে হাত দিয়ে ভ্রু কুচকে রুটির দিকে তাকিয়ে আছে। গালে আটা লেগে আছে। চুল বেয়ে পানি পড়ছে। আরহাম মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে। একটা মেয়েকে একদিনে এতো পরিবর্তন লাগছে আরহামের কাছে। অপরুপ রমনী লাগছে। এতোদিন আরহাম হায়াতকে তেমন ভাবে খেয়াল করেনি। আজ কেন যেনো নিজেকে আটকে রাখতে পারছে না।

ফোনের রিংটোন এ আরহামের ধ্যান ভেঙ্গে যায়। হায়াত দরজার দিকে তাকিয়ে দেখলো আরহাম। আরহাম ফোন নিয়ে চলে গেলো

★★★
খাবার টেবিলে বসে আছে সবাই। হায়াত সাইডে দাঁড়িয়ে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।সবাই খাবার খাচ্ছে।

দাদীঃ বাহ আজকের ভাজিটা তোহ দাড়ুন হয়েছে।

আরহামের মা ঃ মা আসলে আজকে হায়াত সব রান্না করেছে।

আরনাবঃ তাই তোহ বলি রুটি আফগানিস্তানের মানচিত্রের মতো কেনো।

সবাই হেসে দিলো।এরপর সবাই খাবারের অনেক প্রশংসা করলো আরহাম চুপচাপ বসে খাচ্ছে।
হায়াত আয়াতকে ধন্যবাদ দিয়ে দিলো। এরপর হায়াত অনলাইনে ডুকে একটা পোস্ট দিলো,

“”আমার হাতে বানানো রুটি

আফগানিস্তানের মানচিত্রের মতো হয় “”

রাতে হায়াত ম্যারিড পোস্ট। ৫০ টা কাপল পিক।নিজের পিক আপলোড দিয়েছে। সবাই হঠাৎ বিয়ের জন্য প্রশ্ন করছে। হায়াত কোনো জবাব দিচ্ছে না।

হায়াত বেশ কিছুক্ষন পর আবার ফেসবুকে গিয়ে দেখলো আরহাম ওর পোস্টে হাহা৷ রিয়েক্ট দিয়েছে তা দেখে ভ্রু কুচকে আরহামের দিকে তাকিয়ে আছে।

হায়াতঃ আপনি আমার পোস্টে হাহা দিলেন কেনো।

আরহামঃ আমার খুশি দিয়েছি তাতে তোমার কি।

হায়াতঃ আমার অনেক কিছু।

আরহামঃ তুমি আমার ছবি তোমার কভারে দিয়েছো কেন

হায়াতঃ কেনো আবার বিয়ে করেছি কাপল পিক ছাড়বো না নাকি। তার উপর দুইদিন পর তোহ ডিভোর্স পোস্ট দিতে হবে। তাই আপাতত এই ছয়মাস ইনজয় করি হু।

আরহাম হায়াতের দিকে স্বাভাবিক চাহনিতে চেয়ে আছে।

এরপর অর্পাকে আনার জন্য যাওয়া হলো। আশেপাশের মানুষদের বলা হয়েছে যে আগেই বিয়ে ঠিক করা ছিলো সবাইকে সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্য আরহাম বিয়েটা করেছে। তারপরও ওদের বিয়ের আলোচনা সমালোচনা চলছে।

ইভান আরহামকে একটা কথা বলেছে।
ইভানঃ আমার বোনকে তুমি যত কষ্ট দিবে তোমার বোনকে আমি ডাবল কষ্ট দিবো।

আরহাম কিছু বলেনি।
এরপর এভাবেই দিন যাচ্ছে। ইভান অর্পার সংসার ভালোই চলছে। ইশান আর প্রিসার বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে। ইফাত ও আনিশাও ভাবছে এক সাথে বিয়ে করবে। কিন্তু ইফাত তোহ এখনো স্টুডেন্ট তাই টেনশনে আছে বিয়েতে আনিশার বাবা মা রাজি হবে কি না। হায়াত ভালোই ছিলো। জেসিকা আরহামের সাথে দেখা করেনি। আরহামও নিজেকে গুছিয়ে নিতে শুরু করছিলো।এখন হায়াত আরহামকে অনেক জালায় নিজেকে পুরোপুরি ভাবে বদলে ফেলেছে। এখন সে একবাড়ির পুত্র বধু। কিন্তু এসবের মাঝে হায়াত ও আরহামের দুরত্ব অনেক। তারা আলাদা থাকে হায়াত ও আরহাম ঝগড়া করে একজন এক মাস খাটে আরেকজন সোফায় থাকবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মানে তিন মাস আরহাম খাটে থাকবে আর হায়াত বিছানায়। এইসবে হায়াত আরহামের অনেক খেয়াল রাখে আরহাম কলেজে যাওয়ার আগে ওর ড্রেস বের করে রেখে দেয়। ঘড়ি রোমাল সব কিছুর খেয়াল রাখছে হায়াত আরহামও কিছু বলেনা। এসবে অভ্যাস করে ফেল্বছে।।একদিন হায়াত রুমে কাজ করছে এমন সময় আরহাম এসে সোফায় চুপচাপ বসলো। হায়াতের অভ্যাস আরহাম আসলেও ওকে লেবুর শরবত দেওয়া। হায়াত আরহামকে লেবুর শরবত দিলো। আরহাম টেবিলে রেখে চুপচাপ বসে আছে৷ আর হায়াতের দিকে তাকিয়ে আছে। হায়াত কাজ করছে।

হহঠাৎ আরহামের ফোন বেজে উঠলো আরহাম ফোন রিসিভ করলো।

আরহাম কোনো কথা বলছে না হায়াত একবার আরহামের দিকে তাকালো। হয়তো অপর পাশেরজন কথা বলছে। আরহাম ফোন রেখে চুপচাপ বসে আছে।হঠাৎ শরবত টা নিয়ে একটু মুখে দিয়ে ছুড়ে ফেলে দিল। হায়াত অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।

হায়াতঃ কি হলো ফেলে দিলেন কেনো।(হায়াত গ্লাসে টুকরো উঠাতে উঠাতে বলল)

আরহামঃ আমার গ্লাস আমি ফেলেছি তাতে তোমার কি।

হায়াত্ঃআচ্ছা আমি আরেক গ্লাস নিয়ে আসছি।

আরহামঃ আমি কি তোমাকে বলেছি।এতো দরদ দেখাতে হবে না।

হায়াতঃ দরদ আপনি এমন কেনো করছেন বুঝতে পারছি না।

আরহামঃ বুঝা লাগবে না যাও এখান থেকে। আর হ্যা এইগুলো সুন্দর করে পরিষ্কার করবা।

হায়াতঃ আমি কি আপনার চাকর নাকি যে। নিজে নষ্ট করেছেন নিজে পরিষ্কার করুন।
বলে চলে গেলো। আরহাম ফোনটা কানে নিলো।

আরহামঃ এবার খুশি। শুনতে পেয়েছো নাকি আরো কিছু বাকি আছে।

বলেই ফোন কেটে দিলো। ফোনের ওপাশে বসে থাকা একজন হো হো করে হেসে দিলো।

এভাবে কিছুদিন কেটে গেলো। আরহাম হায়াতকে নানান ভাবে অপামান, অত্যাচার করে যাচ্ছে।হায়াতও তার জবাব দিচ্ছে। একদিন বিকালে আরহাম বসে বসে ল্যাপটপ নিয়ে কাজ করছে।

হায়াত রুমে এসে আরহামের সামনে দাড়ালো।

হায়াত্ন ঃআজকে আপনি এমন করলেন কেনো। মানলাম আমি ভালো রাধুনি না। তাই বলে সবার সামনে এভাবে আমাকে কটু কথা শোনালেন কেনো।
আপনার আমার ডিভোর্স তোহ হবেই তাহলে আপনি এমন কেনো করছেন। আমাদের সম্পর্কটা কি তাদের সামনে দেখাতে চাচ্ছেন নাকি।

আরহামঃ ল্যাপটপ রেখে বলল কেনো করছি তুমি আমার ও জেসিকার মাঝে এসেছো তার জন্য তোমাকে শাস্তি দিতে হবে।

হায়াতঃ ভুলে যাবেন না আমার ভাইয়ের বউ আপনার বোন।আপনি আমার সাথে যা যা করবেন আমার ভাইও আপনার বোনের সাথে তাই তাই করবে।

আরহাম ওর কানে ব্লুটুথ পড়া তাতে হালকা হাত লাগালো।এরপর বলল
আরহামঃ তুমি যদি তোমার ভাইকে এই ব্যাপারে বা অন্য কাউকে এই ব্যাপারে কিছু বলো তাহলে আয়াতকে আমার ভাই আরনাবের সাথে বিয়ে দিবো না।

হায়াতঃ রাগি চোখে তাকিয়ে বলল আয়াত ও আরনাবের বিয়ে আটকানো আপনি কে। আমিও দেখি কিভাবে ওদের আলাদা করেন।

আরহাম কিছুক্ষন চুপ থেকে আবার বলল
আরহামঃ যদি আয়াতই না থাকে তাহলে।

হায়াতঃ মানে।

আরহামঃ মানে কিছুক্ষন পরই ট্রেলার দেখবা। ইউ জাস্ট ওয়েট এন্ড ওয়াচ।

হায়াতঃ কি বলতে চাচ্ছেন আপনি কি করবেন…

হায়াত আর কিছু বলার আগেই ওর ফোন বেজে উঠলো। আরনাব কল দিয়েছে।
হায়াতঃ হ্যালো আরনাব ভাইয়া হ্যা বলুন।

আরনাবঃ হ্যা হ্যা হায়াত আয়াতের.. (ভয়ার্ত গলা)

আয়াতের নাম শুনে হায়াত ভয় পেয়ে গেলো। আরহাম ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে। হায়াত আরহামের দিকে তাকালো,
।হায়াতঃ ক..কি হয়েছে আয়াতের আর ভাইয়া আপনার কথা এমন শোনাচ্ছে কেনো। আপনারা কোথায় আজ তোহ আপনারা ঘুরতে যাওয়ার কথা।

আরনাবঃ আমরা x হাসপাতালে আছি তুমি যলদি চলে আসো।

হায়াত্ঃ হাসপাতালে কিন্তু কেন কি হয়েছে হ্যালো হ্যালো। (ফোন কেটে দিয়েছে)

হায়াত আরহামের কলার ধরে।
হায়াতঃ কি করেছেন আয়াতের সাথে। আয়াতের কিছু হলে আমি আপনাকে ছাড়বো না।

এই বলে হায়াত আনিশা, প্রিসাদের কল দিতে দিতে দৌড় দিলো। আরহাম অবাক হয়ে আছে। আরহাম কানে হালকা হাত দিলো

আরহামঃ হ্যালো আমি ভাবতেও পারছি না তুমি এতো নিচে নেমে যাবে। আমি ভাবলাম তুমি এমনি বলেছো কিন্তু তুমি যে সত্যি। যদি আয়াতের কিছু হয় আমি তোমাকে ছাড়বো না।

এতোক্ষনে ব্লুটুথ এ কথা বলছিলো আরহাম।কথা না আরহামকে যা বলা হচ্ছিলো আরহাম তাই বলছিলো হায়াতকে।

আরহামও দৌড় দিলো।

হাসপাতালে পৌঁছে জানতে পারে আয়াতের একটা ছোট খাটো এক্সিডেন্ট হয়েছে। আয়াত সাইডে দাঁড়িয়ে ছিলো হঠাৎ একটা বাইক এসে আয়াতকে সাইড দিয়ে ধাক্কা দেয়।আয়াত ছিটকে দেয়ালের সাথে বারি লেগে মাথা ফেটে যায়। আরনাব রাস্তার অপর পাশে পানি কিনতে গিয়েছিলো। এরপর এসে দেখলো এই অবস্থা তারাতারি হাসপাতালে নিয়ে গেলো।
হায়াত চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে ওর পাশেই আরহাম। প্রচুর রাগ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে দুজন।

আয়াতঃ আরে আমি ঠিক আছি আরনাব। এতো হায়পার কেনো হচ্ছো। সামান্য মাথায় আঘাত পেয়েছে।

ইফাত্নঃ তুই বাইকওয়ালার বাইকের নাম্বার দেখেছিস।

আনিশাঃ কি বলছো ধাক্কা খেয়ে বেহুস হয়ে গিয়েছে। দেখবে কিভাবে। আর একবার দেখলেও তোহ মনে থাকে না।

আয়াতকে বাসায় নেওয়া হলো। হায়াত আরহামকে কিছু বলে না। এরমাঝে জেসিকা ফিরে এসেছে আর আরহামের সাথে সব কিছু ঠিক। এখন দুজন মিলে হায়াতকে নানান ভাবে অত্যাচার, অপমান করে বেরাচ্ছে। আরহাম বাধ্য হয়ে করছে।

একদিন হায়াত ওয়াশরুম এ গিয়ে ধপাশ করে পিছলে পড়ে খেয়াল করে দেখলো ওয়াশরুমে শ্যাম্পু মেঝেতে ঢালা। হায়াতের আর বুঝতে বাকি রইলো না যে কে করেছে। আর মুখ বুঝে সব সহ্য করছে আর যে কিছু করার নেই তার। সে যে নিরুপায়। হয়তো তারও সময় আসবে আর সে সবাইকে তার নিজ নিজ ভুল ধরিয়ে দিয়ে যাবে।

আরহাম ও জেসিকার মেলামেশা দিন দিন বেড়েই চলছে। এইতোহ হায়াত ও আরহামকে জোর করে হানিমুনে কক্সবাজার পাঠানো হয় সেখানে জেসিকা আগে থেকেই ছিলো। ৩ দিন সেখানে থেকে চলে এসেছি। এই তিনদিনে হায়াত রাত ১ টায় নিজের রুমে থাকতে পারতো না কারন জেসিকা রুমে এসে হায়াতকে বের করে দিতো। হায়াতও চুপচাপ বের হয়ে যেতো। একটা সময় প্রতিবাদী মেয়েটাও হার মেনে যায়। হায়াত ৩,৪ ঘন্টা একা একা সমুদ্রের পাড়ে বসে থাকতো। মাঝে দুইদিন আরহাম এসে হায়াতের পাশে বসেছিলো। কিন্তু আরহামের কাছে একটা ফোন আসে ওমনি সে চলে যায় হায়াতকে একা ফেলে। একবার ডাক দেওয়ারও প্রয়োজন মনে করেনি।

এরমাঝে ইশান ও প্রিসার বিয়ে হয়। আরহাম ও হায়াত সবার সামনে নিজেদের সুখি উপস্থাপন করে। কেউ জানে না ওদের মাঝে কি চলছে। হয়তো আদৌ জানবে না। বিয়ে পর থেকে হায়াত ইভানের সাথে কথা বলে না।
আসল লেখিকা ইনসিয়া আহমেদ হায়াত। কপিবাজ কপি করে নিজের নামে চালিয়ে দিচ্ছে। তাই কপিবাজদের বলছি কার্টেসি ছাড়া গল্প কপি করবেন না।
আয়াত অনেক বার জিজ্ঞেস করেছিলো সব ঠিক কিনা বিনিময়ে হায়াত হেসে হ্যা বলেছিলো। হায়াত সবাইকে সুখি দেখতে চায়। কেই বা চাইবে তার নিজের কাছের মানুষদের কষ্ট দেখতে তাও নিজের কারনে প্রিয় মানুষদের কষ্ট দিতে। সবাই তোহ আর স্বার্থপর হয় না। আর একটা কথা আছে না।দুঃক্ষ সব সময় থাকে না সুখ একদিন না একদন আসবে। আর হ্যা দুঃক্ষ না থাকলে সুখ কি জিনিস বুঝবো কিভাবে। তেমনি হায়াতের জিবনের অন্ধকারটাই দেখছি এই অন্ধকারের আলো কবে জলবে কে জানে।

একদিন হায়াত ও আরহাম ইভানদের বাড়িতে যায়। হায়াতের বাবা মায়ের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে। ওইদিন হায়াত নিজের রুম থেকে বের হয়নি। শেষ ফলে ইভান রুমে এসে দরজা লক করে। হায়াত ইভানকে দেখে অন্য দিকে চেয়ে থাকে।

ইভানঃ হায়াত

হায়াতঃনিশ্চুপ।

ইভানঃ হায়াত আজ বাবা মায়ের মৃত্যুর ৬ বছর পূর্ন হলো। অথচ এই ছয় বছরে আমরা একে অপরের সাথে ঠিক মতো কথা বলিনি। আজ আমি তোর কাছ থেকে জানতে চাই ওইদিন কি ঘটেছিলো আর কেনোই বা তুই চুপ। তোরা হাসিখুশি ৩ জন মিলে ঘুরতে গিয়ে একা ফিরে কেনো এলি। ওইদিন যদি তুই জোর না করতি তাহলে আজ বাবা মা বেচে থাকতো।কেনো তুই ওইদিন ওনাদের নিয়ে ঘুরতে গেলি। ওনাদের বিবাহবার্ষিকীকে মৃত্যুবার্ষিকী বানিয়ে দিলি।

হায়াতঃ এখানে আমার কোনো দোষ নেই বড় ভাই।

ইভান ঃ তাহলে কার দোষ বল আমায় কার দোষ শুধুমাত্র তোর জেদের কারনে বাবা মা বাহিরে গিয়ে ফিরে আসেনি(জোরে বলল)

হায়াতঃ চিৎকার করবি না বড় ভাই। আমার কারনে না তোর কারনে হয়েছে। তোর ওই রাজনীতির কারনে আমরা আজ এতিম। বড় ভাই রাজনীতি ছেড়েছিস তোহ ছেড়েছিস আমাদের বাবা মাকে কেড়ে নিয়েই ছেড়েছিস।(বলেই কাদছে হায়াত)

ইভান অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।
ইভানঃ কি বলছিস।

হায়াত্নঃঠিকই বলছি আমি চুপ ছিলাম কারন আমি চাইনি কেউ তোর উপর দোষ দিক। ওইদিন আময়ার জেদের বশে বাবা মা এক সাথে ঘুরতে বের হয়েছিলো। আমি আগে আগে তার আমার পেছনে হেটে হেটে কথা বলছিলো। আমরা রাস্তা পার হয়ে ওপর পাশের রেস্তোরাঁতে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ বাবা আমাকে ধাক্কা দেয় আমি হুমড়ি কজেয়ে পড়ি আর এক মাইক্রো এসে বাবাকে পিষে চলে যায়। মা ওখানেই স্ট্রোক করে মারা যায় আমি নির্বাক হয়ে দেখছিলাম। বাবা আমাকে বাচাতে গিয়ে মারা যায়। হ্যা আমার কারনেই মারা যায়। এর আগেও তোর বিরোধী দলেরা আমার উপর হামলা কররা চেষ্টা করে। রাজনীতি রাজনীতি রাজনীতি এছাড়া তোর চোখে আর কিছুই ছিলো না।

ইভান নির্বাক হয়ে হায়াতের দিকে চেয়ে আছে নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে।
ইভান কিছু বলবে তার আগেই।

হায়াতঃ মাইক্রোর কোন নাম্বার ছিলো না। আর আমি একদম সিউর এটা তোর রাজনীতির কারনে হয়েছে। তাইতোহ কেসটা রোড এক্সিডেন্টেই শেষ হয়ে গেলো।
আর হ্যা প্রমান ছাড়া দুনিয়াতে কিছুই টিকা যায় না। আমার কাছে প্রমান নেই তোকে দেওয়ার।

হায়াত উঠে দাড়ালো আর এক মূহুর্ত থাকতে ইচ্ছে করছে না। চুপচাপ চলে গেলো ইভান ওখানেই বসে আছে।
এই ছয় বছর দুই ভাই বোন একে অপরকে দোষ দিয়ে যাচ্ছে। আসলেই কার কারনে হয়েছে জানা নেই কারন হয়তো ওদের বাবা মায়ের মৃত্যুর কারন বের হবে। কে হায়াতকে মারতে চেয়েছিলো।

হায়াতরা অনার্সে ভর্তি হয়। ক্লাস করছে ওদের কলেজ ও ভার্সিটি পাশাপাশি ওখানেই আরহাম ও আরনাব জব করছে। জেসিকা প্রায়ই আরহামের সাথে দেখা করতে আসে। অর্পা অনেকবার হায়াতকে জিজ্ঞেস করেছে জেসিকা কেনো।হায়াত বলেছে ওরা ফ্রেন্ড তাই আসে একটা কাজে। সবাইকে ধোয়াশার মাঝে রেখেছে। এভাবেই কেটে গিয়েছে ৫ মাস। আরহাম হায়াতকে যেমন অত্যাচার করেছে তেমনি সাহায্য করেছে। এইতো কিছুদিন আগে হায়াতের হাত কেটে যাওয়ায় ফাস্টএইড বক্স খুজছিলো। তা দিয়ে নিজের কাটা আংগুলে মল লাগিয়ে ব্যান্ডেজ করতে পারছে না। আরহাম এসে ওর হাত থেকে মলম নিয়ে লাগিয়ে দিবে।

হায়াতঃ আরে কি করছেন আমি পারবো।

আরহামঃ আমি করছি তোহ।

৫ মিনিট ধরে আরহাম হায়াতের হাতে ফু দিচ্ছে। কিন্তু মল্ম লাগাচ্ছে না।

হায়াতঃ আজকেই লাগাতে হবে।

আরহামঃ হ্যা লাগাচ্ছি তোহ।

হায়াতঃ আরে হাত কেটেছে আমার আর অনুভূতি হচ্ছে আপনার যলদি মলম লাগান।

আরহাম একবার হায়াতের দিকে তাকালো। হায়াত বুঝতে পেরে জিভে কামর দিলো।
আরহাম হাতে ব্যান্ডেজ করে চলে গেলো।

তেমনি একদিন জেসিকা হায়াতের হাতে গরম কফি ঢেলে দেওয়ায় অনেক চিল্লিয়ে ছিলো জেসিকার উপর। এরপর নিজেই স্বাভাবিক হয়ে। হায়াতকে বকেছে। হায়াত অবাক একজন মানুষের দুটি রুপ কিভাবে হয়। হায়াত আরহামকে বুঝতে পারছে না। লোকটা কি চায়। একবার ভালো ব্যবহার পরক্ষণেই খারাপ ব্যবহার কিন্তু কেনো। সব কিছুই সহ্য করে যাচ্ছে হায়াত।

হায়াত ক্লাস করছে আর জেসিকা কলেজ্ব এসেও শান্তি দিচ্ছে না। আরহাম ও জেসিকাকে এক সাথে দেখলে হায়াতের কেনো জেনো কষ্ট হয়। বুক টা ধুক করে উঠে। মনে হয় কেউ ছুড়ি দিয়ে আঘাত করছে। হায়াততো আরহামকে ভালোবাসেনা তাহলে এমন কেনো হয় জানা নেই হায়াতেত। হায়াত আরহামকে যতবার বোঝার চেষ্টা করে ততবারই গোলমাল লেগে যায়। সব কিছু এলোমেলো হয়ে যায়। জীবনটা এমন না হলেও পারত। আর ধৈর্য ধরতে পারছে না হায়াত।সব কিছু কবে শেষ হবে জানে না। আর মাত্র ১ মাস বাকি আছে ডিভোর্সের। আসলেই কি ওদের ডিভোর্স হবে। নাকি নতুন মোড় ঘুরে যাবে।

বর্তমানে,,
#অজানা_অনুভূতি
#পর্বঃ৮
#লেখাঃInsia_Ahmed_Hayat

হায়াত ক্লাস শেষ করে আরহাম এর কাছেই যাচ্ছে। আরহাম হয়তো এতক্ষনে ক্লাস শেষ করে ফেলেছে। ভার্সিটি থেকে কলেজের দিকে পা বাড়াচ্ছে।কিছুদূর যাওয়ার পর দেখলো জেসিকাকার সাথে জেনো ফোনে কথা বলছে৷ হায়াত ওইদিকে নজর না দিয়ে ক্লাসে দিকে নজর দিতেই অবাক কারন ক্লাসের অর্ধেক মেয়েরা আরহামকে ঘিরে আছে। হায়াতের প্রচুর রাগ লাগছে ক্লাস শেষ তাহলে এইভাবে বাহিরে সবাই আরহামকে ঘিরে আছে কেন। জেসিকার দিকে তাকালো দেখলো ওর সেইদিকে কোনো খেয়াল নেই অথচ রাগ হওয়ার কথা জেসিকার সেদিকে হায়াতের প্রচুর রাগ লাগছে।

হায়াতঃ এই জেসিকার কি কোনো কান্ড জ্ঞ্যান নেই নাকি খুব তোহ ভালোবাসা দেখায় আরহাম আমার সাথে থাকলেই হলো আর এখানে যে এতো গুলো ডাইনি আমার বরবাবুর উপর নজর দিলো সেই দিকে তার কোনো খবরই নেই। সে ফোনে কথা বলায় ব্যস্ত হুহহ। ঢং। যা করার আমারই করতে হবে।

হায়াত হেটে হেটে আরহামের দিকেই যাচ্ছে। মেয়েগুলোর কাছে গিয়ে বুঝলো ওরা আরহামের কাছে পড়া জিজ্ঞেস করছে আর আরহাম বুঝিয়ে দিচ্ছি তাই বলে ক্লাসের বাহিরে কেন ক্লাসে কি করেছিলো। যে ক্লাসের বাহিরে এসে ঘেরাও করে পড়া বুঝতে হবে। যতসব লুচি মেয়ে🤬

হায়াত ওদের পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছিলো। এতো ভিড়ে অনেক মেয়ের মাঝে যাওয়াটা অনেকটা কঠিন হায়াত সামনে যাবে হঠাৎ এক মেয়ের ধাক্কায় হায়াত নিচে পড়ে যায়। কিছু মেয়ে না দেখেই হায়াতের হাতের উপর পা রেখে দেয়। তাতে হায়াত হালকা চিৎকার করে।

হায়াতঃ আয়া আমার হাত এই মেয়ে আমার হাত ছাড়ো বলে মেয়েদের কিল ঘুষি দিচ্ছিলো।

আরহাম হায়াতের আওয়াজ পেয়ে ভাবতে লাগলো যে এটা তোহ হায়াতের আওয়াজ কোথা থেকে আসছে এমন সময় আশেপাশের মেয়েরা সরে গেলো আরহাম হায়াতকে দেখে হাতের বই ফেলে হায়াতের কাছে চলে গেলো।

আরহামঃ হায়াত কি হয়েছে এভাবে নিচে বসেছো কেনো। একি তোমার আঙুল কাটলো কিভাবে।

হায়াতঃ কিভাবে আবার আপনার এই ডাইনি স্টুডেন্ট গুলো আমায় ধাক্কা মেরে আমার হাতে ওদের ডিস্কুমার্কা জুতা দিয়ে পারা মেরে আমার হাত কেটে ফেলেছে। (হায়াত নিজের হাতে ফু দিচ্ছে)

আরহাম হায়াতকে তুলে মেয়েদের দিকে রাগী চোখে তাকালো।

আরহামঃ আমার ওয়াইফকে কি তোমরা চোখে দেখোনি। সরো এখান থেকে। কে ধাক্কা দিয়েছে। ওকে কি তোমাদের চোখে পড়ে না। একটা মানুষকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছো কেনো। তোমাদের যা পড়া দিয়েছি তা ৫০ বার করে নিয়ে আসবা। তোমরা সবাই। চেহারা আমি দেখে রেখেছি। খুব তোহ পড়া পড়া করো কাল কলেজে না আসলে যেদিন আসবা ১০০ বার করে নিয়ে আসবা।যাও ক্লাসে(প্রচুর রেগে)

সবাই মাথা নিচু করে চলে গেলো। হায়াত অবাক চোখে আরহামের দিকে চেয়ে আছে। আরহাম হায়াতের হাতে ফু দিচ্ছে। কার জানি উচু জুতা ছিলো সেটার পারা লেগে আঙুল ছিলে গিয়েছে।

আরহাম রুমাল বের করে হায়াতকে বাসায় নিয়ে যাচ্ছে। ওইদিকে জেসিকা আরহাম ও হায়াতকে দেখে ওদের কাছে আসতে আসতেই আরহাম গাড়ি নিয়ে চলে গেলো।

★★
হায়াত ঃ এমা আপনি আমায় এখানে কেনো আনলেন বাসায় যাবো তোহ। চলুন বাসায়।

আরহাম কিছু না বলে হায়াতকে গাড়ি থেকে বের করলো। আরহাম হায়াতকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে। হায়াত গাড়িতে ঘুময়ে পড়েছিলো। আরহামের ডাকে জেগে উঠে দেখলো হাসপাতালের সামনে। আরহাম হায়াতকে ধরে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। হায়াত কি রিয়েক্ট করবে বুঝতে পারছে না লোকটার হঠাৎ কি হলো।

ডাক্তারের কেবিনে গিয়ে ডাক্তারের সাথে ঝগড়া করছে আরহাম।

আরহামঃ কি বলছেন কিছু হয়নি। আঙুল দেখছেন না কেমন থেতলে গিয়েছে। আর বলছেন তেমন কিছু হয়নি। মলম লাগিয়ে দিলেই হবে৷ এতো বড় বড় জুতা দিয়ে আঙুলে পারা দিয়েছে। আর আপনি বলছেন তেমন কিছুই না সামান্য জিনিস। হায়াত উঠো আমরা অন্য ডাক্তারের কাছে যাবো।

ডাক্তারঃ দেখুন মিস্টার আরহাম…

আরহামঃ আমার দেখার সময় নেই চলো হায়াত। আপনার হাসপাতাল আমি বন্ধ করে ছাড়বো।

হায়াত বিরক্ত নিয়ে আরহামের কান্ড দেখছে। কারন হায়াত জানে এখন এই রুপ কিছুক্ষন পর আরেকরুপ বুঝিনা লোকটার মাঝে মাঝে কি হয় একটুতেই হায়পার হয়ে যায় আবার নিজেই হার্ট করে।

হায়াতঃ বরবাবু আমি আইসক্রিম খাবো। আপ্পনি আমার জন্য আইসক্রিম নিয়ে আসেন। ততক্ষন ডাক্তার আপু আমার হাত ব্যান্ডেজ করে দিবে কেমন।(হায়াত আরহামকে কেবিন থেকে বের করার জন্য বলল কারন এর আগে যখন হায়াতের হাতে কফি পড়েছিলো তখন বাসায় এসে বাসা মাথায় তুলে ফেলেছে আবার পরক্ষনেই অন্যরকম হয়ে গিয়েছে)

আরহাম বাহিরে গেলো।
হায়াতঃ আপু আপনি আমার আঙুলটা ব্যান্ডেজ করে দিন। তাহলেই হবে।

ডাক্তারআপুঃ তুমি অনেক ভাগ্যবতী যে এতো কেয়ারিং বর পেয়েছো। সে মনে হয় তোমায় অনেক ভালোবাসে। দেখলে না তোমার সামান্য ব্যাথায় সে অস্থির হয়ে গিয়েছে।

হায়াত হালকা হাসলো। আসলে সে নিজেও জানে না আরহাম এমন কেনো করে। আরহামকে এই বিষয় এ জিজ্ঞেস করলে সে হয় চুপ থাকবে নয়তো কোনো কিছু দিয়ে অপমান করে কথা কাটিয়ে দিবে। এই লোককে দেখলে বুঝার উপায় নেই যে সকালে সে আর জেসিকা মিলে হায়াতকে অপমান করেছিলো। আর এখন সে অনেক বেশি কেয়ার করছে। এইসব যে আমি নিতে পারছি না। আরহামের ব্যবহার গুলো দিনদিন আমায় খুব ভাবাচ্ছে। আয়াতের কথা চিন্তা করে কোনো কিছুই করছি না। না পারছি সহ্য করতে না পারছি কাউকে বলতে।

আরহাম ও হায়াত গাড়িতে উঠলো। আরহাম হায়াতের হাতে একটা আইসক্রিম বক্স দিলো। গাড়ি স্টার্ট দিবে এমন সময় আরহামের ফোন আসলো। ফোনের স্ক্রিনে আদনান লেখা

আরহামঃ হ্যালো হ্যা ভাই বলো।

আদনানঃ…….

আরহামঃ কিহ কোন হাসপাতালে। আচ্ছা আমি আসছি।

হায়াত আইসক্রিম রেখে আরহামের দিকে তাকিয়ে আছে। আরহাম ফোন রেখে কল লিস্ট চেক করে দেখলো জেসিকা ২০+ কল দিয়েছে।
হায়াতঃ কি হয়েছে বরবাবু।

আরহামঃ কি হয়েছে তোমার কারনে অনেক কিছুই হয়ে গেছে(প্রচুর রেগে)

হায়াতঃ মানে

আরহাম নিজেকে স্বাভাবিক করে বলল
আরহামঃ আদনান ভাইয়ার আম্মু সিড়ি থেকে পা পিছলে পড়ে গিয়েছে।

হায়াত্ঃ আল্লাহ কি বলেন ফুপ্পি আম্মু পড়ে গিয়েছে। এখন কোথায় চলুন দেখা করে আসি।

আরহামঃ তোমার যাওয়ার প্রয়োজন নেই। তুমি গাড়ি থেকে নেমে রিক্সা করে চলে যাও।

হায়াত্ঃ নাহ আমি যাবো না।

আরহামঃ হায়াত(রাগী দৃষ্টিতে)

হায়াতঃ যতই রাগ দেখান আমি যাবো। না আমি আপনার সাথে হাসপাতালে যাবো। আর হ্যা এর সাথে তার আর আমার দেখাও হয়ে যাবে। চলুন কথা না বাড়িয়ে।

আরহাম আর কিছু না বলে গাড়ি স্টার্ট দিলো।হায়াত আইসক্রিম খাচ্ছে আরহাম মাঝে মাঝে আড়চোখে দেখছে।

আরহাম হায়াতকে নামিয়ে গাড়ি পার্ক করতে চলে গেলো। হায়াত হাসপাতালে গেলো।

★★★

কেবিনের বাহিরে দাড়িয়ে আছে হায়াত ভাবছে যাবে কি না। আদনান কেবিনের বাহিরে হায়াতকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে

আদনানঃহায়াত তুমি?

হায়াত্ন ঃআরে আদনান ভাইয়া আপনি কোথা থেকে আসলেন।আর আমি আপনার আম্মুকে দেখতে আসলাম। এখন উনি কেমন আছে আর কিভাবে হলো।

আদনানঃআমি আম্মুর জন্য কিছু ঔষধ আনতে গিয়েছিলাম। আর তেমন কিছুনা হালকা পা মচকে গিয়েছে।ডাক্তার বলেছে ঠিক হয়ে যাবে।

হায়াত্ঃঅহো।

আদনানঃ চলো ভেতরে।
আরহামও চলে এসেছে।
আরহামঃ ভাই ফুপ্পির কি হয়েছে ঠিক আছে তোহ। কিভাবে হলো। আর তোমরা কোথায় ছিলে।অস্থির হয়ে।

আদনানঃ রিলেক্স ব্রো তেমন কিছু না পা পিছলে পড়ে গিয়েছে। চল ভেতরে আম্মু তোদের দেখলে খুশি হবে।

আদনানের মাকে বিয়াইপি কেবিনে রাখা হয়েছে।
আরহাম ও হায়াত কেবিনে গেল।

হায়াত অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আদনানের মায়ের দিকে।কারন আদনানের মায়ের কথা শুধু শুনেছে ছবিও দেখেনি। এমনকি কোনো ছবিই রাখেনি আরহামের দাদী আদনানের মায়ের।হায়াতকে অবাক হতে দেখে আদনানের মা ওকে ডাকলো।হায়াত উনার কাছে গিয়ে বসলো।

আদনানের মাঃ বাহ তুমি তোহ ছবির থেকেও মিষ্টি একটা মেয়ে। নাম কি যেন তোমার।

হায়াত্ঃ জিই আমার নাম ইনসিয়া আহমেদ হায়াত। সবাই হায়াত বলেই ডাকে। আপনি এতো সুন্দর একদম সুন্দরী রেশমি চুড়ির মতো। সুন্দরী রেশমি চুড়ি হয়তো এমন বয়সে আপনার মতোই ছিলো।

আদনানের মা হায়াতের কথা শুনে হেসে কুটিকুটি।

আদনানের মাঃ হাহাহা তুমিও আমার মাকে রেশমি চুড়ি বলো। জানো আমার বাবাও মাকে রেসশি চুড়ি বলতো।

হায়াতঃ অহ। তোহ ফুপ্পিমা। আপনি পড়ে গেলেন কিভাবে সাবধানে থাকবেননা।

আদনানের মাঃ আর কি বলবো মা বুড়ি হয়ে যাচ্ছিতোহ।

হায়াতঃ আপনি আর বুড়ি। আপনাকে তোহ আবারও বিয়ে দেওয়া যাবে। কেউ বলবেও না আপনার এতো বড় ছেলে আছে। হিহিহি

আদনানের মাও হেসে দিলো।
আদনান ও আরহাম চুপচাপ দাঁড়িয়ে আদনানের মা ও হায়াতে কথা শুনছে। না চাওয়া স্বত্বেও আরহাম এই মূহুর্তের একটা ছবি ক্যাপচার করে নিলো নিজের ফোনে।

আরহামের মাঃ আরহাম তুই তোহ খুব সুন্দর আর মিষ্টি বউ এনে দিলে। আমার আদনানের জন্যও এমন একটা মেয়ে চাই।

আদনান চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে। আরহাম ভাবছে কি বলবে৷ হায়াত ভ্রু কুচকে আরহামের দিকে চেয়ে আছে।

হায়াতঃ এখন মুখ দিয়ে কথা বের হবে না। হিংসুটে আমার কেউ প্রশংসা করলে জ্বলে পুড়ে ছাই জয়ে যায় হুহহহ(মনে মনে)

আরহামঃ আব আচ্ছা ফুপ্পি তুমি কিভাবে পড়ে গেলে।

আরদনানের মাঃ আর বলিস না৷ সব ঠিক আমি সুন্দর করে সিড়ি বেয়ে নামছিলাম হঠাৎ করে শেষ সিড়ির ২ সিড়ির উপরে পা রাখতেও পা পিছলে পড়ে যাই। পড়ে দেখি সেখানে তেল পড়া ছিলো।

আরহাম কিছু বললনা এরপর সবাই কথা বলল। আরহাম হায়াতকে নিয়ে চলে গেলো। আদনানের মাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হলো আপাতত উনি রেস্ট নিবে। আদনান আরহামের কিছু ১ বছরের বড়।

পরেরদিন কলেজে
হায়াত ক্লাস করে ক্যানটিনে গিয়ে বসলো।
হায়ায়ঃ অর্পা তোর ভাইরা এমন অর্ধেক পড়া লেখা করে বিদেশ থেকে চলে আসছে। আর গেলোই যখন না আসলেই পারতো। নয়তো এখানেই থাকতো।

অর্পাঃ আর বলিশ না ভাইয়ারা জেদ করেই গিয়েছিলো। আর দাদী তোহ একদমই রাজি ছিলো না।পড়ে জেসিকার বাবা মা ওখানে আছে আমাদের পরিচিত তাই পাঠিয়েছে। ভাইয়ারা আলাদা থাকতো মাঝে মাঝে আন্টিদের সাথে দেখা হতো। ওখান থেকে জেসিকা আর জেনির সাথে পরিচয়। তখন ওরা ছোট ছিলো। এরপর দাদী প্ল্যান করে ভাইয়াদের দেশে আনে। হার্ট অ্যাটাক এর কথা বলে। এরপর আর যেতে দেয় না তাই ভাইয়ারা এখন দেশে। আর হ্যা ভাইয়ারা যাওয়াত পর একবারও দেশে আসেনি তাই দাদী অনেক রাগ করে।

আয়াতঃ আসলো তো আসলো পুরো পড়া শেষ করেই আসতো তাহলে আজ কলেজের না ভার্সিটির স্যার থাকতো। আমরা কলেজ শেষ করেছি আর ওনারা ওই ডাইনিদের এখন পড়াচ্ছে। না জানি আমার আরনাবকে কে না কে নজর দিচ্ছি। আমি ভাই দেখে আসি।

হায়াতরা সিংগাড়া খাচ্ছে আর কথা বলছে। আজ অনেক খুশি লাগছে জেসিকা নামের মানুষ আজকে আসেনি। দুইদিন পর পর এসে পড়ে যেদিনই আমি ভার্সিটিতে আসবো ওইদিনই আসা লাগে ডাইনির।

হায়াত্ন ঃআচ্ছা সব বুঝলাম আরহামরা এখানে এসে গেছে কিন্তু এই জেসিকা এখানে কি করছে।

অর্পাঃ কি জানি এখানে কি করে। পড়াশোনার নামে ঠনঠনানি। সে এসে এখানে বসে আছে। ওর নানীর বাড়িতে থাকে নানীর সাথে। পড়ে নাকি যাবে সময় হলে।

হায়াতঃ আচ্ছা এই জেনিটা কোথায়।

প্রিসাঃ অফফো তুই এতো প্রশ্ন করছিস কেনো বলতো। চুপচাপ সিংগাড়া খা।

হায়াতঃ রেস্পেক্ট আমি তোর ৫ টা না ১০ টা না ২ নাম্বার ননদ হই। তাই সম্মান দিয়ে কথা বল

প্রিসাঃ আমিও তোর দুই নাম্বার ভাবি হই সম্মান তুই আমাকে দে।

হায়াতঃ ইশ আসছে সম্মানওলা আমার ভাইকে অত্যাচার করে বেরায় ডাইনি।

প্রিসাঃ তোর ভাই ডাইনি হুহহ।

হায়াতঃ আমার ভাইয়া তোর সাইয়া হয় বুঝলি।

অর্পাঃ হয়েছে তোদের। এই আনিশা তুই কিছু বলছিস না কেনো। আর কিছু খাচ্ছিসও না এমনিতে তোহ খুব খাবার নিয়ে ঝগড়া করিস। আজ কি হলো।

আনিশাঃ ভালো লাগছে না। আচ্ছা আমি বাসায় গেলাম।

প্রিসাঃ এই আনিশার আবার কি হলো।

অর্পাঃ কি জানি।

হায়াত আনিশার যাওয়ার দিকে চেয়ে আছে।
এরপর আরহামের সাথে বাসায় চলে গেলো। এর মাঝে হায়াত ও ইভানের মাঝের ঝামেলা শেষ হয়েছে। ওরা একে অপরের সাথে কথা বলে তা দেখে হায়াতের দাদী অনেক খুশি। হায়াত ইভানকে বাবা মায়ের মৃত্যুর কথা সবাইকে বলতে মানা করেছে। বলেছে সময় আসলে সবাইকে সে নিজেই বলবে।

এভাবে ৫ মাস ও আরো ১৫ দিন কেটে গেলো।
এসবে হায়াত খুব ভালো পুত্র বধু হয়ে গিয়েছে। মাঝে মাঝে শ্বাশুড়ি এটা সেটা বলে যে পাড়ে না কিছু। তারপর আবার সুন্দর করে শিখিয়ে দেয়। হায়াত ওনাকে দেখলে নিজের মায়ের কথা মনে পড়ে যায়। সব সময় শুনে এসেছে। শ্বাশুড়িরা নাকি দরজাল টাইপ হয়। আবার ভালো হয়। হায়াত বুঝতে পারছে না তার শ্বাশুড়ি কেমন দরজাল নাকি অনেক ভালো। এই দুইটার মাঝামাঝি হবে।
এইতোহ হানিমুনে যাওয়া নিয়ে। আরহাম এসে হুট করে হায়াতকে বলল সবাইকে গিয়ে হানিমুনে যাওয়ার কথা বলতে। হায়াত তোহ অবাক একে তোহ তাদের এটা নামে মাত্র বিয়ে সেখানে হানিমুন কোথা থেকে এলো। ৬ মাস পর ডিভোর্স দিয়ে সবাইকে অনেক কিছু বলবে। এখানে তোহ হানিমুনের প্রশ্নই আসে না। তারপরও আরহামের কথায় সবাইকে বলার পর শ্বাশুড়ি মা কেমন যেনো নাকোজ করে দিলো। বলল আগে আমাদের বিয়েটা আনুষ্ঠানিক ভাবে হোক। আমরা বিয়ের অনুষ্ঠান না করে দেওয়ায় ওনার মাঝে হউ একটু ক্ষোভ লেগেছে। এরপর হানিমুনে সবাইকে অনেক কষ্টে রাজি করায়। হায়াতের এমন কাজে শ্বাশুড়ি হালকা রাগ করেছিলো। সব কিছুর মাঝে হায়াত শ্বাশুড়িকে ম্যানেজ করে ফেলে। আরহামও খুশি শ্বাশুড়িও খুশি। কারন এখন তোহ ইনিই ওর মা। ৬ মাস তাতে কি মা তোহ মাই হয়। একটা সময় আরহামের মাও হায়াতকে বুঝতে শুরু করে। এরপর তাদের সম্পর্কটাও ভালো হয়। আর হায়াত কি জানতো যে হানিমুন সে তাদের জন্য না তার আর জেসিকার জন্য করেছে। জেসিকা কোথাও ঘুরতে যায়নি তাই এই সুযোগে তাকে ঘোরানো হলো।

★★
একদিন খবর আসলো হায়াতের দাদীর অবস্থা ভালো না৷ আরহামের মা হায়াত ও আরহামকে পাঠায়। ওরা গিয়ে রাতে রৌনা দেয় বাসায় উদ্দশ্যে। ওইদিন প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছিলো। অনেকবার বলেছিলো কিন্তু আরহামের নাকি কাজ আছে তাই হায়াতও আরহামের সাথে এসে পড়ে।

আরহামঃ তোমাকে বলেছি থেকে যেতে তুমি থাকলে না কেনো। সবার সামনে কি আমাদের সম্পর্ক টা দেখাতে চেয়েছিলে নাকি।

হায়াতঃ কি বলছেন আমি এমন কেনো করবো।আমি..

আরহামঃআমি.. কিছু শুনতে চাচ্ছি না।চুপ করে বসো।

হায়াতঃ আপনি কিন্তু অকারণেই আমায় কথা শোনান।

আরহামঃ নিশ্চুপ

হায়াতও কিছু বলল না। গাড়ি চলছে। বাহিরে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে হায়াত বাহিরের দিকে চেয়ে আছে।পরিবেশটা বেশ ঠান্ডা। কিছুদূর যেতেই আরহামের ফোন বেজে উঠলো আরহাম সাইডে গাড়ি থামিয়ে ফোন বের করলো চেহারাই বিরক্তির ছাপ। হায়াত আড়চোখে আরহামকে দেখছে।

আরহামঃ হ্যালো হ্যা বলো।

ওপাশ থেকে কিছুই শোনা যাচ্ছে না।

আরহামঃ আমি গাড়িতে বাসায় যাচ্ছি।

ওপাশেঃ……..

আরহামঃ হ্যা আছে।

……..

আরহামঃ কিন্তু

……..

আরহামঃ ঠিক আছে আমি আসছি।

আরহাম ফোন রেখে হায়াতের দিকে তাকালো।
আরহামঃ হায়াত

হায়াতঃ হুম(বাহিরের দিকেই তাকিয়ে আছে)

আরহামঃ তুমি গাড়ি থেকে নামো।

হায়াত অবাক চোখে তাকিয়ে আছে।
হায়াতঃ নামবো মানে অনেক বৃষ্টি বাহিরে।

আরহামঃ নামো বলছি।

হায়াত আরহামের দিকে তাকিয়ে আছে। এরপর কিছু না বলে নেমে গেলো। বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে। আরহাম হায়াতকে ছাতা এগিয়ে দিয়ে বলল

আরহামঃ সামনেই আমাদের বাড়ি একটু কষ্ট করে হেটে যাও। আমার কাজ আছে।

এই বলে গাড়ি ঘুরিয়ে নিলো। হায়াত ছাতা হাতে আরহামের যাওয়ার দিকে চেয়ে আছে। প্রচুর বৃষ্টি আশেপাশে কেউ নেই। নির্জন রাস্তায় আরহাম হায়াতকে রেখে চলে গেলো।

আরহাম একটা রেস্তোরাঁর বাহিরে গাড়ি পার্ক করছে। এমন সময় ফোনের রিংটোন শোনা যাচ্ছে। কিন্তু ফোন তোহ আরহামের বাজছে না তোহ কার। ফোনের ফ্ল্যাশ জালিয়ে আওয়াজ অনুসরণ করে দেখলো। এটা তোহ হায়াতের ফোন এখানে ফেলে গিয়েছে। ফোনটা হাতে নিলো আয়াত কল দিয়েছে।

আরহামঃ হ্যা আয়াত আমি আরহাম।

আয়াতঃ আরহাম ভাইয়া আপনারা এখনো বাসায় পৌছাননি। কোথায় আপনারা।

আরহামঃ আমি তোহ একটা রেস্তোরাঁতে আছি।

আয়াতঃ ওহ আচ্ছা। না আমি আরনাবকে কল দিয়েছিলাম ও বলল আপনারা এখনো পৌছানঞ্জ আমি একটু ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তোহ হায়াত কোথায় ওকে ফোনটা দিন।

আরহামঃ আব হায়াত তোহ ওয়াশরুমে গিয়েছে ও আসলে দেবো।

আয়াতঃ আচ্ছা তাহলে থাক কালকে কথা হবে।

আরহাম ফোন রেখে তারাতারি গাড়ি ঘুরালো হায়াত বাসায় যায়নি তোহ কোথায় আছে।
আরহাম এর মাথায় নানান চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। হায়াত এখনো পৌছালো না কেনো। যদি কিছু হয়ে যায় কি জবাব দিবে সবাইকে। কিছু হয়নি তোহ। আরহাম অস্থির হয়ে আছে হায়াতকে বাসায় পৌছে দিয়ে যাওয়া উচিত ছিলো। ওইদিকে আরহামের ফোন বেজে চলছে আরহাম ফোন বারবার কেটে দিচ্ছে।

লাস্টে বাধ্য হয়ে কল ধরলো।
আরহামঃ সমস্যা কি বারবার ফোন দিচ্ছো কেনো। আমি আসতে পারবো না খুব জরুরি কাজে যাচ্ছি। আর একবারও কল করবে না বলে দিলাম।

আরহাম ওই যায়গায় এসে থামলো যেখানে হায়াতকে রেখে গিয়েছিলো। গাড়ি থেকে নেমে চারপাশে খুজছে কোথাও হায়াত নেই। প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। আরহাম পাগলের মতাও এদিক ওদিক ছোটাছুটি করছে। বেশ কিছু দূরে হায়াতের ছাতাটা পড়ে আছে তা দেখে বুকটা ধক করে উঠলো। হায়াত কোথায়। ছাতা এখানে হায়াত কোথায় গেলো। আরহাম রাস্তায় বসে পড়লো। ওর চোখ দিয়ে পানি পরছে কিন্তু বৃষ্টির পানির সাথে তা মিশে যাচ্ছে। এভাবে হায়াত কোথায় উধাও হয়ে গেলো।

চলবে

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here