#অপ্রেমের_প্রিয়_অধ্যায়
#পর্ব_২ (মিস. তনুজা, বিয়ে করবেন?)
#লেখনীতে_নবনীতা_শেখ
শুদ্ধের প্রথম কথাটা যেভাবে পুরো ক্লাসে হট্টগোল লাগিয়ে দিয়েছিল, ঠিক সেই দ্বিতীয় কথাটা পিনপিনে নিস্তব্ধতা তৈরি করে দিলো। কেউ টু শব্দটি করার সাহস দেখাচ্ছে না। মাথাটা নিচু করে রেখেছে। এদিকে শুদ্ধের বন্ধুরা ভয়ে ভয়ে একবার তনুজা, আরেকবার শুদ্ধের দিকে পালাক্রমে তাকাচ্ছে। তনুজা নির্বিকার। তার আশ্চর্যের মাত্রা বাইরে প্রকাশ পেল না। মিনিট তিনেক পর গম্ভীর স্বরে শুদ্ধের উদ্দেশ্যে বলল, “স্ট্যান্ড আপ।”
শুদ্ধ বিনা বাক্য ব্যয়ে দাঁড়িয়ে পড়ল। চোখ রাখল তনুজার ভস্ম করে দেওয়া অগ্নি দৃষ্টি পানে। সে চোখে খেলছে তীব্র রাগ। শুদ্ধ বিমুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে বলল, “ইয়েস, ম্যাম?”
তনুজা কড়া চোখের শাসানো দৃষ্টি দিয়ে দারুণ ভাবে শুদ্ধর মুখশ্রী অবলোকন করে বলে উঠল, “সামনে এসে দাঁড়াও।”
শুদ্ধ তার পিছু পিছু সামনে গিয়ে দাঁড়াল। সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। সামনে যেতেই তনুজা শুদ্ধকে দরজার দিকে দেখিয়ে বলল, “ওখানে গিয়ে কানে ধরে ওঠ-বস করো। তোমাদের শিক্ষা হওয়া উচিত। কিছু বলি না বলে, ভেবেছ—সব সহ্য করে নেব? যাও।”
একুশ বছরের একটি তাগড়া যুবককে ভরা ক্লাসের সম্মুখে কানে ধরে ওঠ-বস করানোর জন্য তনুজার নিজেরই গা শিরশির করা লজ্জা লাগছে। সে লজ্জা শুকনো ঢোকের সাথে গিলে নিয়ে শুদ্ধকে পানিশমেন্ট দিয়েই দিলো; যদি এতে জাত হয় আর কি! তবে, এই একটি কথায় পুরো ক্লাসে যেন বিস্ফোরণ হলো। শুদ্ধের ফ্রেন্ডরা হাই-বেঞ্চে মাথা ঠেকিয়েছে। কী লজ্জা! ওদিকে শুদ্ধ মুচকি হেসে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ওঠ-বস শুরু করল। মাথা নষ্ট করা বয়স তারতম্যের মাঝেও যেখানে সে প্রেম সমুদ্রে গলা অবধি ডুবতে পেরেছে, খানিকটাও গায়ে লাগেনি, সেখানে এই সামান্যতে তার খুব একটা গেল এলো না। আসলে, সে নির্লজ্জ বটে! নির্লজ্জ স্বভাব, মাদকাচ্ছন্ন নির্লজ্জ দৃষ্টি আর সেই সাথে ঠোঁটের কোন ঘেষে নির্লজ্জ এক মোহময়ী হাসি গেঁথে, ওঠ-বস করার সাথে প্রতিবার বড্ড মিনমিনে স্বরে বলছে, “ম্যাম, আই লাভ ইউ।”
যেটা তনুজা বাদে কেউ শুনতে পারল না। মিস. তনুজা আরেকবারের মতো কঠিন চাহনি নিক্ষেপ করে পড়ানো শুরু করল। বিনিময়ে শুদ্ধ দুইধারে মাথা নেড়ে দুনিয়া এলোমেলো করা হাসি দিলো। ক্লাসের কত মেয়ে যে সেদিকে তাকিয়ে রইল! বোধকরি কতগুলো মেয়ে তো বর্তমানের বিখ্যাত খাবারটাও খেয়ে নিল। উম্… ক্রাশ!
______
সন্ধ্যায় শুদ্ধ বারান্দায় তার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু–গিটারটা হাতে নিয়ে বসে ভাবছিল—সকালে ওরকম করাটা কি ঠিক হলো? খালি ক্লাসে ম্যামকে বসে বসে নোট মেক করতে দেখে, শুদ্ধ ক্যাম্পাসের বাগান থেকে ফুল নিয়ে প্রপোজ করে বসল। ব্যাপারটা একদমই অহেতুক! না করলেই চলত! যেভাবে চলছিল, সেভাবেই চলত! এমনিতেও, ম্যাম কি কখনই মানবে তাঁকে? আত্মসম্মান-সম্পন্ন এক আত্মপ্রত্যয়ী নারী কখনই এমন কাউকে জীবনসঙ্গী হিসেবে মানবে না, কক্ষনও না। তারা সমাজকে খুব পরোয়া করে। আর তাতে যদি নিজেকে সিলিংয়ে ঝোলানো লাগে, তবে তাই করে! সেখানে শুদ্ধ কে?
ভাবতেই, শুদ্ধর বুকে জ্বালা-পোড়া শুরু হলো। মুহূর্তেই শুভ্রাঙ্গ আগুন-গরম হয়ে উঠল। তনুজার প্রতি বিমুগ্ধ দৃষ্টি এই ক’বছরে কবে যে এলো, শুদ্ধর জানা নেই। তার মনে পড়ল, ফার্স্ট ইয়ারের কথা। সে প্রচণ্ড ম্যাচিউর, গম্ভীর, স্বল্পভাষী এবং ভীষণ ভীষণ রকমের পরিপাটি এই নারীকে নিজের ব্যাচমেট মনে করে বসে, মনটা দিয়ে যে ভুলটা করে ফেলেছিল, তারই আক্ষেপ তাকে এই যে, এই অবধি এনেছে। “লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট!” প্রেম তো নয়, তবে ছিল এক আকর্ষণ! ধীরে ধীরে এই অনুরোক্তিটি যে তাকে প্রণয়ের দোরগোড়ায় এনে দাঁড় করাবে, বুঝল কই?
এই তো, সেদিন নিজের অনুভূতির সাথে পাঞ্জা লড়ে তনুজার হিস্ট্রি চেক দিলো। এবছর, ২৯ এ এসেও যে, তনুজা সিঙ্গেল; তাতেই শুদ্ধর তার প্রতি জানার আগ্রহ বেড়ে গেল। বাড়তে বাড়তে এমন পর্যায়ে গেল, এখন নিজেকে ফেরানো দায়। জিভ দিয়ে ঠোঁট ভিজিয়ে শুদ্ধ গিটারে টুংটাং শব্দ তুলল, গান ধরল..
অলস মেঘলা মন, আমার আবছা ঘরের ঘরের কোণ
চেয়ে রইতো ছুটে চাইতো, তুমি আসবে আর কখন।
শ্রান্ত ঘুঘুর ডাক, ধুলো মাখা বইয়ের তাক,
যেন বলছে যেন বলছে, থাক অপেক্ষাতেই থাক।
আমার একলা আকাশ, থমকে গেছে,
রাতের স্রোতে ভেসে,
শুধু তোমায় ভালবেসে।
আমার দিনগুলো সব রঙ চিনেছে,
তোমার কাছে এসে,
শুধু তোমায় ভালবেসে।
গানটা শেষ করে কিছুক্ষণ গিটারটা হাতের শক্ত গ্রিপে চেপে ধরে চোখজোড়া বন্ধ করে রাখল। এক, দুই, তিন! পাক্কা তিন সেকেন্ড অতিক্রম করতেই সে শশব্যস্তভাবে চোখ খুলল। পায়ের গতি সর্বোচ্চে রেখে, হুড়মুড়িয়ে বারান্দা থেকে রুমে প্রবেশ করল। শাওন শুদ্ধর বিছানায় উপুড় হয়ে ঘুমোচ্ছে। ঘুমোনো শ্রী দেখলে সবচেয়ে অগোছালো মামুষটাও নাক সিটকাতে ভুলবে না। শুদ্ধ সেদিকে খেয়াল না দিয়ে নিজের ফোন খুঁজতে লাগল। শাওন হালকা শব্দ পেয়ে আধখোলা চোখে তাকিয়ে বলল, “কী করতেছিস, দোস্তোওও?”
ধোঁয়া ওঠা তেলে ভেজা বেগুন ছুড়ল যেন। তারপর যা হওয়ার, তাই! অল্পতে শুদ্ধর মেজাজ খারাপ হওয়া রোজ সূর্য ওঠার মতোই ব্যাপার। এই যে, একে তো ফোন পাচ্ছে না, তার উপর শাওনের মসকারা! হাতের সামনে থেকে হাফ লিটারের পানির বোতল বাঁকা নিশানায় ছুঁড়ে মাড়ল শাওনের দিকে, গিয়ে লাগল তার ব্যাকে। শাওন ‘উহ! শালা করলিডা কী!’ বলে দ্রুত বেগে, প্রায় লাফ দিয়েই উঠে বসল। ঠিক ওর পেটের নিচে নিজের ফোনকে আ-রা-ম-সে পড়ে থাকতে দেখতে পেয়ে শুদ্ধ কিছুক্ষণ হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইল। বিস্ময়ভাব কাটিয়ে বলল, “আমি এলাকা খুঁজি, আর তুমি কইলজার ভিত্রে নিয়া ঘুমাও, মিয়াঁ?”
শাওনের ব্যাপারটা বুঝতে সময় লাগল সেকেন্ড কয়েক! পরপরই মাথা চুলকাতে চুলকাতে ‘হেহে’ শব্দে হাসল। শুদ্ধ ক্ষেপে উঠল। তড়িৎ বেগে হামলে পড়ল শাওনের উপর। থাপ্পড়, ঘুষি কয়েকটা একে অপরকে দিয়ে শান্ত হলো। হাতাহাতি থামল, তবে দুজনই দুজনকে গালি দিচ্ছে। শুদ্ধ উপায় না পেয়ে আবার বারান্দায় চলে গেল। আজ মাকে কল দেওয়া হয়নি। নিশ্চয়ই ফোনে না পেয়ে চিন্তা করছে!
ফোন হাতে নিয়ে দেখে সাইলেন্ট মোডে ফোনটা ঝিমোচ্ছে, ৭টার বেশি বাজছে; স্ক্রিনে এর সাথে সুভা বেগমের ৩টি মিসড কল দেখা যাচ্ছে। শুদ্ধ কল ব্যাক করল। সুভা বেগম ফোন হাতেই বসে ছিলেন। ছেলের কল পেতেই রিসিভ করলেন। গলায় একরাশ চিন্তা এঁকে বললেন, “বাবা, ভালো আছিস?”
“হ্যাঁ, মা। আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। তোমরা?”
“আলহামদুলিল্লাহ। কী করছিস?”
“এইত, একটু কাজ করছিলাম। ফোনটা সাইলেন্ট ছিল বলে শুনতে পাইনি।”
“সমস্যা নেই। দিনকাল ভালো যাচ্ছে?”
“চরম!”
“ভার্সিটির কোনো মেয়েকে পছন্দ হয়েছে?”
“আর কতবার জিজ্ঞেস করবে?”
“যতদিন না হয়, ততদিন করব। একটা ছেলে হয়ে তুই মেয়ে পছন্দ করতে পারিস না? তোর বাবা তো ক্লাস নাইনে থাকতেই আমাকে প্রপোজ করেছিল।”
“মা, এভাবে বলছ কেন?”
“এখন আমাকেই কি তোর জন্য কষ্ট করে হাড়ভাঙা খাটুনি খেটে মেয়ে খুঁজতে হবে? পারব না, পারব না। নিজেরটা নিজে খুঁজে নে।”
শুদ্ধ সশব্দে হেসে উঠল। বলল, “থাক! কষ্ট করতেও হবে না।”
“মানে পেয়েছিস?”
“হুঁ।”
“আল্লাহ! কী খুশির খবর! আগে বলবি না? নাম কী?”
“তনুজা।”
“মাশাআল্লাহ! কী সুন্দর নাম! তোর ক্লাসমেট?”
“না।”
“আরও ভালো। সেম এজ রিলেশনগুলো তেমন একটা সুবিধার না, বুঝলি?”
“কেন, মা?”
“তাদের পছন্দ-অপছন্দের অমিল বেশি থাকে। তারা একে অপরের জন্য অপেক্ষা করতে পারে না। এসব ক্ষেত্রে ছেলেরা সেটেল হওয়ার আগেই মেয়েদের বিয়ে হয়ে যায়। আমাদের ওসব সমস্যা নেই। তুই এখন বিয়ে করতে চাইলে, এখনই করতে পারিস। কিন্তু! মেইন সমস্যা হচ্ছে, তোদের বয়সী ছেলে-মেয়েগুলো ভীষণ জেদি হয়। তোরা নিজের মত ছাড়া অন্যকে প্রাধান্য কম দিস। আর এর চেয়েও বড়ো কথা, তুইতোকারি, গালিগালাজ আছেই। এসব সম্পর্কে না যাওয়াই ভালো।”
“ইশ, মা! যদি সিনিয়র পছন্দ করে ফেলি?”
“আস্তাগফিরুল্লাহ! উঠতে বসতে শাসনের উপরে রাখবে। আমার ছেলেকে আমার সামনে কেউ থাপড়াবে আর আমি সেটা মেনে নেব? বাপ, তুই ব্যাচমেট বিয়ে কর, তাও সিনিয়র না।”
শুদ্ধ হতাশার নিঃশ্বাস ফেলল। মাকে রাজি করানোটা তনুজার চেয়েও কষ্টসাধ্য হবে। তবুও এই কষ্ট সে করবে। সুভা বেগম আপন মনে আবারও বলা শুরু করলেন, “আচ্ছা, তনয়া নাকি কী যেন নাম বললি?”
“তনুজা।”
“হ্যাঁ। সম্পর্ক কত বছরের?”
“সম্পর্ক নেই।”
“সে কী! কী বলিস?”
“হুম।”
“প্রপোজ করেছিস?”
“আজ সকালেই করেছি।”
“কী বলল?”
“সোওওজা রিজেকশন।”
“ও-মা! আমার ওমন চাঁদের টুকরোকে রিজেক্ট করার সাহস কে পায়, হ্যাঁ? তোর গজদাঁতের ওই হাসি দেখলেই তো মেয়েদের হার্ট বিট মিস করবে। আর সে কিনা তোকে রিজেক্ট করে! নিশ্চয়ই পাষাণ মানবী!”
“হুঁ, মা। উনি পাষণ্ড!”
“উ-নি-ই?”
সুভা বেগম শুদ্ধের ব্যবহার করা সর্বনামটা টেনে টেনে, মজার ছলেই বললেন। শুদ্ধ তাতে মুচকি মুচকি হাসল। ফোনের ওপাশ থেকে সেই হাসি অনুধাবন করে সুভা বেগমও হাসলেন। নিশ্চিন্তমনে বললেন, “আচ্ছা, চিন্তা করিস না। আদা-জল খেয়ে লেগে পড়। শেষ হাসি আমরাই হাসব। ওকে?”
“ওকে, মা।”
“ছবি আছে তনুজার?”
“আছে।”
“হোয়াটসঅ্যাপে সেন্ড কর। দেখি তোর পাষণ্ড মহামানবীকে।”
শুদ্ধ হেসে বলল, “আচ্ছা, মা। পাঠাচ্ছি।”
এরপর অ্যানুয়াল ফাংশনে তোলা সেই হার্টথ্রব ছবিগুলো মাকে পাঠাল। সেখানে একটা সাদা শিফনের শাড়ির সাথে ম্যাচিং ব্লু ব্লাউজ পরা তনুজা! দেখে বয়স কখনই ২৯ লাগে না। বড়োজোর ২৪! শুদ্ধ একটা একটা করে সবগুলো ছবি আবারও দেখল। কম দেখা হয়নি! তবুও যেন আশ মেটে না। সে মিটবেও না। এরপর ডিপার্টমেন্টের গ্রুপে চলে গেল। সেখানে গত বারের ফাংশনের ছবিগুলোতে তনুজাকে জুম করে দেখতে লাগল।
রাতের খাওয়া শেষে শাওন আর শুদ্ধ নিজেদের রুমে চলে গেল। শুদ্ধ দরজা আঁটকে বারান্দায় গিয়ে তনুজার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ওপেন করল। একদম সাদা-মাটা প্রোফাইল। কিচ্ছুই নেই। তবুও মুগ্ধ নজরে শুদ্ধ প্রতিবারের মতোই দেখতে লাগল।
শেষ হয়েও হয় না শেষ। পুরোনো হয়েও নতুনত্বের ছোঁয়া। যতবার দেখা যায়, দুচোখ ভরে শুদ্ধ দেখে যায়। মন আর এজনমে বুঝি ভরবে না! হঠাৎ এক দুঃসাহসী কাজ করে বসল শুদ্ধ। প্রোফাইল ইনফরমেশন থেকে তনুজার কন্ট্যাক্ট নম্বর টুকে নিয়ে কল লাগাল। রিং হচ্ছে। প্রতিটি রিংয়ে শুদ্ধর বুকে দুড়ুমদুড়ুম বাজছে। অসহনীয় খুশি লাগছে। খুশিতে পাগল পাগল লাগছে। কিছু খুশি এমনই মারাত্মক হয়! প্রতি রিংয়ে মনে হয়, এই বুঝি রিসিভ করল, আর এ-ই হৃৎপিণ্ডটা বের হয়ে এলো। কী সাংঘাতিক!
তৃতীয় রিংয়ে, তনুজা কল পিক করল। ওপাশ থেকে সালাম দিয়ে বলল, “কে বলছেন?”
শুদ্ধ বলার ভাষা হারিয়ে ফেলল। সারাদিন ননস্টপ চলতে থাকা মুখ দিয়ে কথা বেরোচ্ছে না। গলা শুকিয়ে আসছে। এত এত বাতাসের মাঝেও অসম্ভব রকমের ঘামছে। তার মনে হচ্ছে—পৃথিবীর সবচেয়ে সুরেলা আওয়াজ ফোনের ভেতর থেকে আসা তার ম্যামের গম্ভীর গলার স্বরটা।
শুদ্ধর নিস্তব্ধতায় ওপাশ থেকে তনুজা আবার বলল, “হ্যালো!”
হকলকা কেশে গলাটা ঝেড়ে সালামের জবাব দিয়ে বলল, “মিস. তনুজা বলছেন?”
“জি।”
শুদ্ধ বুকের বাঁ পাশটা ডলতে ডলতে বলল, “ফ্রি আছেন?”
“জি, আছি। কিন্তু আপনার পরিচয়টা?”
শুদ্ধ আবার কেশে বলল, “আমি আপনার ডিপার্টমেন্টের এক স্টুডেন্টের বড়ো ভাই বলছি।”
তনুজা বিনয়ী ভঙ্গিতে বলল, “ওও আচ্ছা! বলুন, কী সাহায্য করতে পারি!”
“মিস. তনু! আসলে..”
“তনুজা! নাম শর্ট না করলে খুশি হব।”
“শুধু তনুজাই? আগে পরে কিছু নেই?”
“না, নেই। কী যেন বলছিলেন?”
শুদ্ধ ততক্ষণে রুমে এসে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছে। সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে তনুজার উদ্দেশ্যে কিছু জাদুকরী শব্দ মিলে এক অদ্ভুত বাক্য ছুঁড়ে দিলো, “মিস. তনুজা, আপনি কি আমায় বিয়ে করবেন?”
চলবে…