#অবুজ_পাখি
#নাম_না_জানা_পথিক
পাট:১৬
রিফাত তাড়াতাড়ি করে একপ্রকার দৌড়ে বিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলো। এটা নিয়ে সবাই নানা কথা বলতে লাগলো আম্মু কোনো মতে কিছু একটা বুঝিয়ে তাদের চুপ করায়।
রিফাত খুব দ্রুত ড্রাইভ করে বাড়ি চলে এসে সোজা পরির রুমে চলে যায় কিন্ত পরিকে পায়না রিফাতের ভিতরে একটা হারানোর ভয় নাড়া দিতে থাকে রিফাতে কি তাহলে পরিকে হারিয়ে ফেললো। রিফাত পরির রুমের ফ্লোরে হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে।
মুনিয়া: আপনি এখানে কি করেন পরি আপা তো আপনার রুমে গেছে।
রিফাত মুনিয়ার কথা শোনার সাথে সাথে তার রুমে দৌড়ে যায়। রিফাতের সাথে মুনিয়াও দৌড়ে যায় তাই রিফাত রুমে ঢুকেই দরজা বন্ধ করে দেয়।
মুনিয়া: একি আপনি দরজা বন্ধ করলেন কেন আপনার মতলব তো ভালা লাগতাছে না।
রিফাত: আমার রুমের দরজা আমি বন্ধ রাখবো না খোলা রাখবো আপনাকে বলতে যাবো কেনো
মুনিয়া: আম্মায় আমাকে বলছে পরিকে দেইখা রাখতে আমি এখনা আম্মারে ফোন দিতাছি।
রিফাত: দরজা খুলে যদি আম্মুর কানে কথা যায় আপনাকে আর এই দুনিয়াতেই থাকতে দিবোনা।
মুনিয়া ভয় পেয়ে চলে যায়।
রিফাত: অসহ্য মহিলা বলে দরজা লাগিয়ে পিছে ঘুরে চমকে যায় পুরো ফ্লোর কাঁচের টুকরা দিয়ে ভরা। কাঁচের সব জিনিস ভেঙ্গে পরে আছে। পরি এক কোনে হাঁটুতে মাথা দিয়ে বসে আছে। পরির চুল দিয়ে টুপটুপ পানি পড়তেছে পরি মাত্র গোসল করছে।
রিফাত: আমি ফ্রেশ হতে যাচ্ছি এসে যেনো দেখি চুল মুছে ফেলছো বলে রিফাত ওয়াসরুমে চলে গেলো।
রিফাত এসে দেখে পরি এখনো এইভাবেই বসে আছে।
রিফাত পরিকে বসা থেকে উঠিয়ে নিজের কাছে নিয়ে বসিয়ে চুল মুছতে লাগলো পরি ছোট বাচ্চাদের মতো খালি নড়তেছে যার জন্য রিফাতের চুল মুছতে অনেক সমস্যা হচ্ছে।
রিফাত: উফফ এতো নড়লে চুল মুছবো কিভাবে একটু শান্ত হয়ে বসো।
পরি: রিফাতের বোকা খেয়ে গাল ফুলিয়ে বললো হুহ
রিফাত: তোমার এত জামা থাকতে আমার পান্জাবিটা কেন পড়লা।
পরি: আমার ভাল লাগছে তাই আমি পড়ছি।
রিফাত: পান্জাবিতে তোমায় ভালোই লাগতেছে কিন্তু ঢোলা অনেক।
পরি: আমি একটা ছোট বাচ্চা তুমি একটা হাতি আমার লাগবে কিভাবে হু
রিফাত: পরির চুল মুছা শেষে এখন বলো ফারিহা তোমাকে কি বলছে?
পরি: রিফাতকে ধাক্কা দিয়ে বিছানায় শুয়ে রিফাতের পেটে উঠে বসলো ঐ মেয়ে নাকি তোমার জন্য হাত কাটছে। আমি ওর থেকে বেশি ভালোবাসি আমিও কাটবো কিন্তু হাত কাটলে সবাই দেখে ফেলবে তাই পা কাটবো কেমন হবে।
রিফাত: ফারিহা তোমারে বুঝাইছে একটা তুমি বুঝছো আরেকটা আমার অবুজ পাখিটা ও কার জন্য কাটছে তার কোনো ঠিক নাই। ফারিহা যে কতগুলো ছেলের সাথে রিলেশন করছে ও নিজেও জানে না। তাই ওর এসব উল্টা-পাল্টা কথায় কান দিও না।
পরি: হু আমার ঠ্যাকা লাগছে যে আমি ঐ শাঁকচুন্নির কথা শুনতে যামু ও বলছে তাই কইলাম।
রিফাত: এখন পেট থেকে নেমে শুয়ে পড়ো কাল সকালে আমার আবার অফিস আছে।
পরি: ঘুম আমি বের করতেছি বলেই রিফাতের শাট ধরে টানতে লাগলে এক পযায় শাটটা ছিঁড়ে যায়।
রিফাত: উফফ তুমি কি লাগাইছো আমার শাট টানতেছো কেনো?
পরি: খুলবো
রিফাত: সেটা আমারে বললেআ তো হতো দেখলে তো শাটটা ছিঁড়ে গেছে।
পরি: এইটুকু ছিঁড়ায় কিছুই হবে না এখন শাট খুলো।
রিফাত: শাট খুলে বললো এখন হইছে।
পরি: আমার পান্জাবিটা খুলে দেও
রিফাত: পান্জাবি কেন খুলবা?
পরি: এই পান্জাবি পড়ে ঘুমানো যায় নাকি খুলে দেও না।
রিফাত পরির পান্জাবি খুলে দিয়ে পাশ ফিরে শুয়ে পড়ে কারন পরি এভাবে তার সামনে থাকলে সে নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারবেনা।
পরি: একি হলো আমাকে এইভাবে দেখেও শুয়ো পড়লো আজ তো আমি তোমার কাছ থেকে পুড়ো আদর নিয়েই ছাড়বো। দাভাই এদিকে ঘুরো আমার পিঠে হাত না বুলিয়ে দিলে আমার ঘুম আসে না।
রিফাত: মানে ঘুমানোর সাথে পিঠে হাত বুলানোর কি সম্পক।
পরি: তোমায় এত বুঝতে হবে না যা বলছি তা করো।
রিফাত দাঁতে দাঁত চেপে পরির পিঠে হাত বুলাতে লাগলো।
রিফাত: প্রায় ১০০ বার হাত বুলানোর পর এবার ঘুমাও।
পরি: এবার কান্নাই করে দিলো আমাকে আপনার ভাল লাগেনা তাই না ঐ ফারিহারে আপনার ভাল লাগে। আমার কাছে আসতে আমাকে আদর করতে খুব খারাপ লাগে আপনার তাই না।
রিফাত: পরিকে টান দিয়ে তার কাছে নিয়ে আসলো একদম বেশি কথা বলবা না এখানে ফারিহাকে টানো কেনো?
পরি: ১০০ বার বলুম।
রিফাত: পরিকে টান দিয়ে তার উপরে নিয়ে আসলো আজ যদি তোমার আদরের ভুত মাথা থেকে না নামাইছি তাহলে বইলো রিফাত পুরোপুরি পরির মাঝে ডুবে যায় স্বামী-স্ত্রী পবিত্র ভালোবাসার মিলন ঘটে।
সকালে পরির ঘুম ভাঙ্গলে দেখে রিফাত রেডি হচ্ছে।
পরি: তুমি এতো সকালে রেডি হয়ে কোথায় যাও
রিফাত: কোথায় আর যাবো অফিসে যাই।
পরি: তোমার কাছে অফিসই সব বাসায় কেউ নাই এখন তো তুমি আমার সাথে থাকতে পারো।
রিফাত: অফিসে একটা আজেন্ট মিটিং আছে আর কিছুক্ষনের মধ্যে সবাই বাসায় এসে পড়বে তাই তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নেও।
পরি: পারবো না আমি তুমি ফ্রেশ করে দেও।
রিফাত: রিফাতে পরির কাছে গিয়ে পরিয কপালে একটা কিস করে আমি যাই থাকো টাটা
পরি: সয়তান কুত্তা যা ভাগ
রিফাত মুচকি হেসে অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা হয়।
পরি উঠে অনেক কস্টে ফ্রেশ হয়। পরি অনেক কষ্টে ফ্রেশ হয়ে এসেই সোজা শুয়ে পড়ে পরির শরীর প্রচন্ড ব্যাথা করতেছে।
কিছুক্ষন পর বাড়ির সবাই ফিরে আসে। রুকু এসেই পরিকে বলতে থাকে বিয়ে বাড়িতে কি কি মজা করছে। পরিও উৎসাহের সাথে সেগুলো শুনতে থাকে।
কিছুক্ষন পর আম্মু পরিকে নাস্তার জন্য পরি আম্মুকে বলে তার নাকি শরীর খারাপ লাগতেছে তাই খাবেনা। তখন আম্মুর নজর যায় পরির গলায় কামুরের দাগের দিকে।
আম্মু: কাল রিফাতকে ঐভাবে আসতে দেওয়াটা ঠিক হয় নাই পরি একটা ছোট মেয়ে কি করছে ওরে আর এই মুনিয়াটাও কোনো কাজের না। আম্মু কিচেনে গিয়ে পরির জন্য এক গ্লাস গরম দুধে ২টা ব্যাথার ওষুধ গুলে পরি খেতে দিলো।
পরি: বাহ ছেলে ব্যাথা দেয় আর মা ঔষুধ দেয়।
বাকিটা দিন পরির ঘরেই কাটে এই দাগ নিয়ে বাহিরে বের হয়নি পরি। বিকেলে পরি তার রুমে ঘুমাচ্ছিল তখন ফারিহা পরির রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়।
ফারিহা: রিফাতকে আমি না পেলে তোরও হতে দিবো না বলেই একটা বালিশ নিয়ে পরির মুখে চেপে ধরলো পরি গোঙ্গাতে লাগলো।
চলবে…