অব্যক্ত ভালোবাসা পর্ব -২৩

#অব্যক্ত_ভালোবাসা
#লেখনীঃআরভি_আহিয়াদ_তিহু
#দ্বিতীয়_পরিচ্ছেদ
#পর্বঃ23

মাত্র সন্ধ‍্যা হয়েছে। আকাশে এখনো কিছুটা আলোর ছটা দেখা যাচ্ছে। অন্ধকারেরা একটু একটু করে আলোকে টুপ করে গিলে ফেলছে। দিনের ভ‍্যাপসা গরম কেটে গিয়ে অন্ধকারের সাথে সাথে মৃদ‍্যু বাতাস বয়ে চলছে। ফুরফুরে এই বাতাসে সূর্যের সমস্ত উত্তাপ চলে গিয়ে পরিবেশটাকে ধীরে ধীরে শীতল বানিয়ে তুলছে।

শান ওর পি.এ. জোভান আর ওর কয়েকজন গার্ডকে নিয়ে সিকদার ভিলার সামনে দাড়িয়ে আছে। ভিতরে পার্লারের মেয়েরা আশুকে রেডি করাচ্ছে। হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া গেস্টসহ বাড়ির সবাই-ই কমিউনিটি সেন্টারে চলে গেছে। শান আশুকে সাথে করে নিয়ে যাওয়ার জন‍্যে ওর গার্ডদের নিয়ে এখনো এখানে দাড়িয়ে আছে। হঠাৎ শানের ফোনের রিংটোন বেজে ওঠায় ‘ও’ পকেট থেকে ফোনটা বের করে এক সাইডে চলে গেল। ফোনটা রিসিভ করে কানে ধরতেই ফোনের ওপাশের ব‍্যাক্তির কথায় শানের পায়ের নিচের মাটি সরে গেল। ‘ও’ দ্রুত ফোনটা কেটে দিয়ে দৌড়ে জোভানের কাছে এলো। ব‍্যস্ত গলায় জভানকে উদ্দ‍্যেশ‍্য করে বলল,

–“আমাকে এক্ষুনি যেতে হবে জোভান। আমার একটা ফ‍্যাক্টরিতে আগুন লেগেছে। অনেক ওয়ার্কার’রা নাকি ভিতরে আটকে আছে। ওদের আমাকে প্রয়োজন।”

শানের কথা শুনে জোভান চমকে উঠল। দ্রুত কণ্ঠে বলল,
–“আপনি একা ওখানে গিয়ে কি করবেন স‍্যার? আমরাও আপনার সাথে যাই?”

–“না, তোমরা সবাই এখানে থাকো। আশু রেডি হলে ওকে নিয়ে তোমরা সোজা কমিউনিটি সেন্টারে চলে যাবে। আমার কথা কেউ জিজ্ঞেস করলে বলবে আমি একটা জরুরী কাজে আটকে গেছি। আর পথে যদি কোনো সমস‍্যা হয় তাহলে হৃদানকে ফোন করে সবটা জানাবে।”

কথাটা বলে শান আর এক মিনিটও সময় নষ্ট করল না। ব‍্যস্ত পাঁয়ে গেটের কাছে পার্ক করা নিজের গাড়ির দিকে হাঁটা দিল। কিন্তু আচমকা অন‍্য একটা দ্রুতগামী গাড়ি গেট দিয়ে ভিতরে ঢুকে শানের দিকে এগিয়ে আসতে লাগল। ঘটনার আকষ্মিকতায় শান ভরকে গেল। ওর হাত থেকে ফোনটা রাস্তার উপরে পড়ে গেল। আর ‘ও’ নিজেকে বাঁচাতে ছিটকে রাস্তার এক সাইডে চলে গেল। শান রাস্তার মধ‍্যে যেখানে দাড়িয়ে ছিল সেখানে এসে গাড়িটা হার্ডলি ব্রেক করল। গাড়ির দরজা খুলে ব‍্যস্ত ভঙ্গিতে আয়াশ বাইরে বেড়িয়ে আসলো। তারপর শানের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে অনুতপ্ত গলায় বলল,

–“আ’ম সো সরি শান। আমি একদম তোমাকে খেয়াল করিনি। তোমার কোথাও লাগেনি তো?”

শান মনে মনে বেশ বিরক্ত হলেও বাইরে সেটা প্রকাশ করল না। কপালে ভাজ ফেলে রাশভারী গলায় জবাব দিল,
–“নো, আ’ম ওকে।”

কথাটা বলে শান এগিয়ে এসে আয়াশের গাড়ির সামনে দাড়াল। নিচে রাস্তার দিকে ওর নজর যেতেই দেখতে পেল ফোনটা আয়াশের গাড়ির চাকার নিচে পড়ে ভেঙে একদম চুরচুর হয়ে গেছে। শান নাক-চোখ কুচকে মুখ থেকে বিরক্তি সূচক শব্দ করে বলল,
–“শিট!”

আয়াশ চিন্তিত ভঙ্গিতে শানের দিকে তাকিয়ে বলল,
–“এ‍্যানি প্রবলেম? তোমাকে এত টেন্সট দেখাচ্ছে কেন? আর তখন এভাবে ছুটেই বা কোথায় যাচ্ছিলে?”

শান আঙুল দিয়ে নিজের কপাল ঘসছে। টেনশনে ওর ব্রেনের নার্ভ কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। ‘ও’ খানিকটা অন‍্যমনস্ক গলায় বলল,

–“আমার একটা ফ‍্যাক্টরিতে আগুন লেগেছে। ভিতরে নাকি অনেকে আটকা পড়ে আছে। তারমধ‍্যে এই ফোনটাও ভেঙে একদম টুকরো টুকরো হয়ে গেছে। এখন আমার কি করা উচিৎ আমি কিচ্ছু বুঝতে পারছি না।”

–“ওহ এই ব‍্যাপার। আরেহ টেনশন নিও না। আমি তোমার সাথে যাচ্ছি চলো। তোমার কাউকে কল করার প্রয়োজন হলে আমার ফোন থেকে করে নিও।”

আয়াশের কথায় শান কৃতজ্ঞতার দৃষ্টিতে আয়াশের দিকে তাকাল। এই বিপদের সময় আয়াশকে পাশে পেয়ে শান একটু ভরসা পেল। ‘ও’ আর কোনো কথা না বলে দ্রুত গিয়ে আয়াশের গাড়িতে উঠে বসল। আয়াশ ঠোঁট বাঁকিয়ে একটা হাঁসি দিয়ে নিজেও গিয়ে ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি স্টার্ড দিল।

প্রায় মিনিট পঁচিশ পরে শহর থেকে খানিকটা দূরে একটা শূনশান রাস্তায় এসে আয়াশ গাড়ি দাড় করাল। কাঙ্খিত গন্তব্যস্থলে আসার সাথে সাথে শান গাড়ির দরজা খুলে বাইরে বেড়িয়ে আসলো। কয়েক পাঁ হেঁটে ফ‍্যাক্টরির সামনে যেতেই শানের কপালে ভাঁজ পড়ল। কারন ফ‍্যাক্টরিতে আগুন লাগা তো দূরের কথা, ফ‍্যাক্টরির আশপাশের কোথাও একটা আগুনের কুড়ি পযর্ন্ত দেখা যাচ্ছে না। দুজন সিকিউরিটি গার্ড গেটের সামনে দাড়িয়ে দাড়িয়ে অন‍্যদিনের মতোই নরমালি পাহাড়া দিয়ে যাচ্ছে। শান কিছু বুঝতে না পেরে হাঁটা দিয়ে ওদের দিকে যাওয়ার জন‍্যে উদ‍্যত হলো। কিন্তু তখনই পিছন থেকে গাড়ি স্টার্ডের শব্দ শুনে ওর পাঁ জোড়া থেমে গেল। ‘ও’ ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে তাকাতেই দেখতে পেল আয়াশ নিজের গাড়ি নিয়ে চলে যাচ্ছে। শান কোমড়ে হাত দিয়ে কপাল কুঞ্চিত করে আয়াশের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইল। আয়াশ কিছুদূর গিয়ে গাড়িটা থামিয়ে দিল। তারপর জানালার কাচ নামিয়ে জানালা দিয়ে মাথা বাইরে বের করে শানকে উদ্দ‍্যেশ‍্য করে উচ্চ স্বরে বলল,

–“ব্রো আমি তোমার বোনের বিয়ে খেতে যাচ্ছি। ততক্ষণ তুমি এখানে বসে বসে প্রকৃতির ন‍্যাচারাল বাতাস উপভোগ করো। কব্জি ডুবিয়ে খাওয়ার পরে যদি আমার শরীরে বিন্দুমাত্রও এনার্জি অবশিষ্ট থাকে, তাহলে আমি আবার এসে তোমাকে এখান থেকে নিয়ে যাব। আর যদি ভুলে যাই, তাহলে আজকের রাতটা মশাদের সাথে একটু এডযাস্ট করে নিও প্লিজ।”

কথাটা বলে আয়াশ শা করে গাড়ি টেনে চলে গেল। শান স্তব্দ হয়ে কিছুক্ষণ ওখানেই ঠায় দাড়িয়ে রইল। কিছু সময় পর ওর হুশ আসতেই ওর মাথার মধ‍্যে এতক্ষণ ঘটে যাওয়া সব ঘটনা গুলো একে একে ঘুরতে লাগল। সব ঘটনা গুলো মস্তিষ্কে পরপর সাজাতেই পুরো ব‍্যাপারটা শানের কাছে স্পষ্ট হয়ে গেল। শান চোয়াল শক্ত করে দাঁতে দাঁত চেপে বিরবির করে বলল,

–“কাজটা তোমরা ঠিক করলে না। এর ফল যে কতটা ভয়ংকর হবে তা তোমরা ভাবতেও পারছো না।”
_________________________

বিউটিশিয়ান’রা আশুকে সাজানোর মধ‍্যেই সৃজা রুমের দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকে পড়ল। তারপর এগিয়ে এসে একটা টাকার বান্ডেল ওদের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল,

–“তোমরা এখন যাও। বাকিটা আমরা নিজেরাই করে নেব।”

সৃজার কথায় মেয়ে দুটো অবাক দৃষ্টিতে একে অপরের দিকে তাকিয়ে মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে লাগল। সৃজা ভ্রু নাচিয়ে ইশারা করে ওদের টাকাটা ধরতে বলল। ওরাও বিনাবাক‍্যে টাকার বান্ডিল টা হাতে নিয়ে নিজেদের জিনিসপত্র গুছিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেল।

বিউটিশিয়ান’রা নিচের মেন গেট দিয়ে বের হওয়ার সাথে সাথে রুশা ভিতর থেকে গেট’টা লক করে দিল। তারপর দৌড়ে বাড়ির পিছনের দিকের দরজার কাছে গিয়ে সেই দরজাটা খুলে দিল। দরজা খুলতেই আশিষ, একজন মধ‍্যবয়স্ক হুজুর আর একজন উকিল দ্রুত পায়ে বাসার ভিতরে প্রবেশ করল। ওরা ভিতরে আসতেই রুশা দরজা আটকে ওদের নিয়ে উপরের দিকে চলে গেল।

এদিকে জোভান আর অন‍্যান‍্য গার্ডেরা বিউটিশিয়ানদের কাছ থেকে সবটা শুনে দ্রুত এসে দরজায় নক করতে লাগল। কিন্তু ওপাশ থেকে কোনো রেসপন্স না পেয়ে বাধ‍্য হয়ে জোভান হৃদানের কাছে কল দিল। হৃদানকে সবটা জানাতেই হৃদান বলল, দরজা ভাঙার চেষ্টা করতে। জোভানও ওর কথায় দ্বিমত পোষণ না করে ফোনটা কেটে সবাইকে নিয়ে দরজা ভাঙার চেষ্টা করতে লাগল।

কাজি ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী আশু আর আশিষের বিয়েটা সম্পূর্ন করলেন। পুরো ঘটনাটা সৃজা ওর ফোনে ক‍্যামেরা বন্ধি করে নিল। ধর্ম অনুযায়ী বিয়ে হওয়ার পর পরই উকিল আইন অনুযায়ীও ওদের বিয়েটা সম্পূর্ন করে ফেললেন। কাগজে আশিষের হয়ে সাক্ষী হিসেবে সাইন করল রুশা। আর আশুর হয়ে সাক্ষী হিসেবে সাইন করল সৃজা। সব কাজ কর্ম দ্রুত কম্পিলিট করে ওরা সবাই রুম থেকে বের হয়ে দৌড়ে নিচে আসলো। নিচে আসতেই ওদের কানে দরজা ভাঙার আওয়াজ ভেসে আসতে লাগল। ওরা আর বিলম্ব না করে পিছনের দরজা দিয়ে সবাই বাড়ির পিছনের গার্ডেনের বেড়িয়ে আসলো। কাজি আর উকিল ওদের থেকে বিদায় নিয়ে দ্রুত স্থান পরিত‍্যাগ করল। ওরা যেতেই রুশা, আশিষ আর আশুকে উদ্দ‍্যেশ‍্য করে ব‍্যস্ত স্বরে বলল,

–“তোমরাও আর লেইট করো না। দ্রুত বেড়িয়ে পড়। ওরা যেকোনো সময় এখানে চলে আসতে পারে।”

রুশা কথাটা বলতেই আশিষ এসে রুশার হাতের কব্জি চেপে ধরল। তারপর আদেশের ভঙ্গিতে বলল,

–“তুমি আর সৃজাও আমাদের সাথে চলো। তোমাদের দুজনকে এখানে রিস্কে রেখে আমরা কিছুতেই যেতে পারব না।”

রুশা আশিষের হাত থেকে নিজের হাতটা ছাড়িয়ে নিল। তারপর ওকে আশ্বস্ত করে বলল,

–“আপনাদের আমাদেরকে নিয়ে ভাবতে হবে না স‍্যার। আমাদের কেউ কিচ্ছু করতে পারবে না। আপনারা যান এখান থেকে।”

আশু রুশার কথার বিরোধিতা করে বলল,
–“রুশা তুমি শান ভাইয়াকে এখনো চিনো না। ভাইয়া যখন সবটা জানতে পারবে তখন তোমার কি অবস্থা করবে সেটা তুমি ভাবতেও পারছো না। শুধু তোমার না, ভাইয়া যদি জানতে পারে সৃজাও তোমার সাথে ইনভলব আছে, তাহলে ওকেও জ‍্যান্ত পু’তে ফেলবে। বোন বলে ওকেও তখন কনসিডার করবে না।”

রুশা কিছু বলতে যাবে তার আগেই সৃজা কঠিন গলায় বলল,
–“মিঃ শান রায়জাদা যদি নিজের ইগোর জন‍্যে নিজের ছোট বোনকেও জ‍্যান্ত পু”তে ফেলতে পারেন, তাহলে আমারও আর বাঁচার ইচ্ছে নেই। উনি যদি ভাই হয়ে আমাকে মে”রে ফেলতে চান, তাহলে আমি হাসতে হাসতে ম”রে যাব। আর বাকি রইল রুশা আপুর কথা। আমার যতদূর মনে হয়, তাতে শান রায়জাদা আর যাই করুক না কেন রুশা আপুর গায়ে একটা আচড়ও কাটবে না। তাই আমাদের চিন্তা বাদ দিয়ে তোমরা এবার নিজেদের চিন্তা করো। সময় থাকতে থাকতে এখান থেকে বের হয়ে যাও। নাহলে ওরা চলে আসলে তোমাদের আটকে ফেলবে।”

সৃজা কথাটা শেষ করতে না করতেই বাড়ির সামনের গেট দিয়ে পরপর কয়েকটা গাড়ি বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করল। রুশা আতঙ্কগ্রস্ত গলায় বলল,

–“ওহ শিট। কেউ বোধহয় এসেছে। তোমরা তাড়াতাড়ি যাও।”

আশিষ আর দেরি করল না। আশুর হাত ধরে পিছনের গেটটা খুলে পিছনের রোডে পার্ক করা ওর গাড়িটায় গিয়ে উঠে বসল। তারপর হাত নেড়ে রুশা আর সৃজার থেকে বিদায় নিয়ে দ্রুত গাড়ি স্টার্ড দিয়ে ওখান থেকে চলে গেল।

ওরা চলে যেতেই রুশা গিয়ে গেটটা লক করে সৃজাকে নিয়ে পিছনের দরজা দিয়ে আবারও বাসার ভিতরে প্রবেশ করল। তারপর ওই দরজাটাও লক করে দিয়ে নিজেদের স্বাভাবিক করে ড্রইংরুমে গিয়ে দাড়াল। এরমধ‍্যেই গুলির বিকট শব্দ ওদের কানে ভেসে আসতেই দুজন নিজেদের কান চেপে ধরল। বাইর থেকে কেউ দরজার লকে অনবরত শুট করে যাচ্ছে। পরপর চার-পাঁচ বার শুট করতেই দরজার লকটা ঝাজরা হয়ে খুলে ফ্লোরে পড়ে গেল। রুশা আর সৃজা চোখ তুলে সামনে তাকাল। তাকাতেই দেখতে পেল হৃদান বরের সাজে দরজার সামনেই দাড়িয়ে আছে। ওর হাতের রিভলবার দিয়ে ধোয়া উড়ছে। পাশেই জোভান আর শানের গার্ডগুলোও দাড়িয়ে আছে। এছাড়াও হৃদানের পিছনে আরো কিছু ছেলেরা দাড়িয়ে আছে। যারা গার্ডদের মতো ফরর্মাল পোশাকে নেই। এদের পোশাক আর লুক দেখেই বোঝা যাচ্ছে এরা বখাটে-গুন্ডা টাইপ ছেলেপুলে। সৃজা গলা খ‍্যাকারি গিয়ে নিজেকে স্বাভাবিক করে দু-পাঁ সামনে এগিয়ে গিয়ে হৃদানের দিকে তাকিয়ে বলল,

–“এসব কোন ধরনের বেয়াদবি? আরেকটু সময় ওয়েট করলেই তো দরজাটা খুলে দিতাম। এভাবে শুট করে লকটাকে ভাঙার কি প্রয়োজন ছিল?”

হৃদান সৃজার কথার কোনো উত্তর দিল না। হিংস্র দৃষ্টিতে ওর দিকে এক পলক তাকিয়ে চোখের ইশারায় সবাইকে উপরে যেতে বলল। সবাই কোনো কথা না বলে দ্রুত দৌড়ে উপরে চলে গেল। হৃদান সেখানেই ঠায় দাড়িয়ে সৃজা আর রুশাকে চোখ দিয়ে গিলে খেতে লাগল। কিছুক্ষণ পর জোভান আর বাকি লোকগুলো নিচে নেমে আসলো। জোভান হৃদানের দিকে এগিয়ে গিয়ে শুকনো গলায় বলল,

–“স‍্যার, আশু ম‍্যাডাম কোথাও নেই। মনে হয়, উনি পালিয়ে গেছেন।”

জোভানের কথায় হৃদানের হিংস্র চেহারাটা যেন মুহূর্তের মধ‍্যে আরো কয়েক শো গুন বেশি হিংস্র হয়ে গেল। ‘ও’ গটগট পায়ে এগিয়ে এসে এক হাত দিয়ে রুশার চুলের মুঠি চেপে ধরে আরেক হাতে থাকা রিভলবার টা রুশার গলায় চেপে ধরল। ঘটনার আকষ্মিকতায় সৃজা আর জোভান দুজনেই হতবাক হয়ে গেল। রুশা চোখে-মুখে ক্রোধ নিয়ে হৃদানের দিকে তাকিয়ে চোয়াল শক্ত করে বলল,

–“হাউ ডেয়ার ইউ।”

রুশা কথাটা বলার সাথে সাথে হৃদান নিজের সর্বশক্তি দিয়ে রুশার চুলের মুঠি চেপে ধরল। এতে রুশা ব‍্যাথায় কুকিয়ে উঠলেও নিজেকে স্ট্রং রাখার জন‍্যে চেহারায় কাঠিন‍্য ভাব এনে সটান হয়ে দাড়িয়ে রইল। হৃদান হুংকার দিয়ে বলল,

–“আশু কোথায়?”

রুশা অগ্নি দৃষ্টিতে হৃদানের চোখে চোখ রাখল। শক্ত গলায় দাঁতে দাঁত পিষ্ট করে বলল,
–“যেখানে থাকার সেখানেই আছে। নিজের বরের সাথে একদম সেফ প্লেসে আছে।”

রুশার কথার প্রতিউত্তরে হৃদান কিছু বলার জন‍্যে উদ‍্যত হলো। কিন্তু মুখ থেকে কিছু বের করার আগেই ওর মাথার পিছনে ভারি কিছু একটা দিয়ে কেউ খুব জোরে আঘাত করল। হৃদানের হাতটা আলগা হয়ে গেল। ‘ও’ রুশার চুলের মুঠি ছেড়ে দিয়ে নিজের মাথার পিছনে হাত দিয়ে চেপে ধরল। হাত দেওয়ার সাথে সাথে গলগল করে বের হওয়া গরম ব্লা’ডে হৃদানের হাতের তালু ভিজে উঠল। ‘ও’ অবাক হয়ে ঘাড় ঘুরিয়ে পিছনে তাকাল। পিছনে তাকাতেই আরো কয়েক দফা অবাক হলো। কারন ওর পিছনে ফুলদানী হাতে সৃজা দাড়িয়ে আছে। সৃজার চোখে মুখে রাগের আভা থাকলেও হাতটা থরথর করে কাঁপছে। রুশা আর জোভান টাস্কি খেয়ে সৃজার দিকেই তাকিয়ে আছে। সৃজা রাগি কিন্তু কম্পিত গলায় বলল,

–“বাস্টার্ডের বাচ্চা তোর সাহস তো কম না? তুই আমার রুশা আপুকে স্পর্শ করেছিস? আমার ভাইয়া যদি জানতে পারে না? তাহলে তোকে একদম কু”চি কু”চি করে কে”টে ফেলবে।”

সৃজা পুরো কথাটা বলে নিঃশ্বাস নেওয়ার আগেই হৃদান ছো মেরে সৃজার হাত থেকে ফুলদানী টা টেনে এনে শরীরের সর্বশক্তি দিয়ে সৃজার মাথার ডান পাশে আঘাত করল। এতটাই জোরে আঘাত করল যে কাচের ফুলদানীটা মুহূর্তের মধ‍্যে খন্ড খন্ড হয়ে ফ্লোরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ল। সৃজা হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরে ড্রইংরুমের সোফার সামনে থাকা কাচের টি-টেবিলের উপর গিয়ে থপ করে বসে পড়ল। রুশা রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে কোনো কিছু না ভেবেই হৃদানের গালে কষিয়ে একটা চড় মারল। কিন্তু এই চড়টাই যে রুশার কাল হয়ে দাড়াবে সেটা ‘ও’ কখনো ভাবতেও পারেনি। রুশা হৃদানের গালে চড় মারার সাথে সাথে হৃদান রাগে নিজের হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলল। ‘ও’ আবারও রুশার চুল চেপে ধরে অন‍্য একটা কাচের টি-টেবিলের উপর রুশাকে ছুড়ে মারল। চোখের পলকের মধ‍্যে টি-টেবিলের কাচ ভেঙে রুশার মাথাটা টেবিলের কাচের মধ‍্যে ঢুকে আটকে গেল। ‘ও’ নড়েচড়ে নিজের মাথাটা সেখান থেকে বের করার চেষ্টা করতে নিলেই ভাঙা অংশের ছোট ছোট কাচগুলো ওর গলার চামড়ায় একে একে বসে যেতে লাগল। রুশার মাথার ফাটা অংশ এবং গলায় কাচের আঘাতে ছিলে যাওয়া অংশ থেকে গলগল করে র”ক্ত বের হয়ে ফ্লোরে পড়তে লাগল। জোভান থম মেরে দাড়িয়ে সবটা দেখতে লাগল। সেকেন্ডর মধ‍্যে ওর চোখের সামনে এতকিছু ঘটে গেল যে ‘ও’ একদম বাকশূন‍্য হয়ে গেল। হৃদান একটা টিস‍্যুর বক্স থেকে দুই/তিনটা টিস‍্যু বের করে নিজের মাথার পিছনের ব্লাডগুলো মুছতে মুছতে বলল,

–“এখনো সময় আছে, ভালোয় ভালোয় বলো আশু কোথায়। নাহলে তোমাদের দুজনের এমন অবস্থা করব যে তোমরা দুজন আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখেও নিজেরাই আৎকে উঠবে।”

সৃজা ঘোলা চোখে হৃদানের দিকে তাকাল। জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে নিতে দাঁতে দাঁত চেপে বলল,

–“কিচ্ছু বলব না। তোর যা খুশী তুই তাই কর। কিন্তু কিছু করার আগে এটা মনে রাখিস শান রায়জাদা এখনো বেঁচে আছে। আমাদের ক্ষতি করে তুই এই পৃথিবীতে শান্তির নিঃশ্বাস নিতে পারবি তো?”

সৃজার কথা শুনে হৃদান হো হো করে হেঁসে উঠল। ওর এমন বিদঘুটে হাঁসি দেখে সৃজার গাঁ গুলিয়ে উঠল। হৃদান এগিয়ে এসে সৃজার পাশে কাচের টেবিলটার উপর বসে ওর দিকে তাকিয়ে বিদ্রুপের ভঙ্গিতে বলল,

–“শুনেছিলাম, ছোট মরিচের ঝাল অনেক বেশি হয়। আজকে চোখের সামনে তার নমুনাটা বেশ ভালো ভাবেই দেখতে পেলাম । ব‍্যাপার না, এরকম তুলতুলে সুন্দর মরিচের ঝাল কীভাবে কমাতে হয় সেটা আমার ভালো করেই জানা আছে।”

কথাটা বলে হৃদান ওর লোকদের দিকে তাকিয়ে তিনটে লোককে হাতের ইশারায় ডাক দিল। তিনজন বাধ‍্য ছেলের মতো এসে হৃদানের সামনে দাড়াল। হৃদান সৃজাকে দেখিয়ে লোক গুলোকে উদ্দ‍েশ‍্য করে বলল,

–“এই ঝাল মরিচকে এখান থেকে নিয়ে যাও। এর ঝাল কমানোর প্রসেস শুরু করো। এমন অবস্থা করো যাতে মুখ থেকে একটা শব্দ বের করার মতোও অবস্থায় এই মেয়ে না থাকে। আশা করি বুঝতে পেরেছো আমি কি বুঝাতে চেয়েছি।”

লোকগুলো হৃদানের কথায় বিদঘুটে একটা হাঁসি দিয়ে মাথা নেড়ে সম্মতি জানাল। সৃজার বুকের মধ‍্যে ধুক করে উঠল। ওরা তিনজন লোলুপ দৃষ্টিতে সৃজার দিকে তাকিয়ে ক্ষুদার্থ হায়নার ন‍্যায় সৃজার দিকে এগিয়ে আসতে লাগল। সৃজা উপায়ন্তর না পেয়ে মাথাটা শক্ত হাতে চেপে ধরে উঠে দাড়িয়ে সিড়ি বেয়ে উপরের দিকে জোরে দৌড় লাগাল। ছেলেগুলোও একে অপরের দিকে চোখাচোখি করে শয়তানি হাঁসি দিয়ে ওর পিছন পিছন দৌড় দিল। জোভান এতক্ষণ চুপ থাকলেও এবার আর চুপ থাকতে পারল না। দৌড়ে হৃদানের কাছে এসে অনুরোধের স্বরে বলল,

–“স‍্যার প্লিজ আপনার লোকদের বারন করুন। সৃজা এখনো ছোট। ‘ও’ না বুঝে উল্টাপাল্টা কথা বলে ফেলেছে। আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি, আমি যেখান থেকে পারি আশু ম‍্যামকে আপনার সামনে এনে হাজির করব। ওই বাচ্চা মেয়েটার কোনো ক্ষতি করবেন না স‍্যার, প্লিজ।”

–“যাস্ট শাটআপ। যতটুকু আমি বলব ততটুকুই কাজ করবে। তার বাইরে একটা অতিরিক্ত কথাও মুখ থেকে বের করলে তোমার অবস্থা সৃজার থেকেও খারাপ হবে।”

জোভান বুঝল হৃদান ভালো কথা শোনার মানুষ না। তাই ‘ও’ কোমড় থেকে নিজের রিভলবার টা বের করে হৃদানের মাথায় চেপে ধরল। তারপর হুমকির স্বরে বলল,

–“এতক্ষণ যা করেছিস সবটা দাড়িয়ে থেকে দেখেছি। কিচ্ছু বলিনি। কিন্তু সৃজার গায়ে যদি তোর লোকেরা একটাও আচড় কেটেছে তাহলে তোর চৌদ্দ গুষ্টির র”ক্ত দিয়ে আমি তোকে গোসল করাব। এটা শুধু হুমকি দেওয়ার জন‍্যে বলছি না। যেটা বলছি সেটা করেও দেখাব।”

হৃদান জানে জোভান যেটা বলেছে সেটা করার সে ক্ষমতা রাখে। তাই জোভানের কথার প্রতিউত্তরে ‘ও’ কোনো কথা বলল না। ঘাড় কাৎ করে ওর লোকদের দিকে তাকিয়ে চোখ দিয়ে ওদেরকে কিছু একটা ইশারা করল। ইশারা করার সাথে সাথে ওর লোকেরা নিজেদের রিভলবার বের করে পিছন থেকে জোভানকে শুট করল। পরপর দুটো গুলি এসে গায়ে লাগতেই জোভান ফ্লোরে লুটিয়ে পড়ল। শানের বাকি গার্ডেরা কিছু করে ওঠার আগেই হৃদানের লোকেরা ওদেরকেও শুট করে দিল। মুহূর্তের মধ‍্যে ফ্লোরে র”ক্তে”র বন‍্যা বয়ে গেল। রুশা চোখের সামনে সবটা দেখেও কিছু করতে পারল না। কারন ওর মাথাটা এখনো কাচের টেবিলের সাথে সাথে আটকে আছে। এখান থেকে ওঠার চেষ্টা করতে নিলেই ওর গলায় কাচের সুচালো অংশগুলো ঢুকে যাচ্ছে। শান গাড়ি থেকে ধাক্কা দেওয়ার পর রুশা মাথায় যে আঘাত গুলো পেয়েছিল, সেই পুরনো আঘাতের ক্ষতগুলো এখন আবারও তাজা হয়ে উঠেছে। সবমিলিয়ে ওর মাথার মধ‍্যে অসম্ভব যন্ত্রণা শুরু হয়েছে। চোখের সামনে সবকিছু ঘোলা হয়ে আসছে। মেয়ে হিসেবে রুশা যথেষ্ট স্ট্রং হলেও মাথার মতো এমন সেনসেটিভ একটা জায়গায় এভাবে পরপর দুটো ভয়ংকর আঘাত পাওয়ার পর ওর শরীর একদম নেতিয়ে পড়েছে। মস্তিষ্কের সমস্ত নার্ভ গুলো যেন একে একে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে। নিজেকে প্রটেক্ট করার মতো ক্ষমতাও ওর মধ‍্যে এখন অবশিষ্ট নেই।

হৃদান ফ্লোরে পড়ে ছটফট করতে থাকা লোক গুলোর দিকে এক নজর চোখ বুলিয়ে বসা থেকে উঠে দাড়াল।তারপর একপাঁ একপাঁ করে রুশার দিকে এগিয়ে গেল। রুশা নিভু নিভু চোখে হৃদানের দিকে তাকিয়ে নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করতে লাগল। হৃদান এগিয়ে এসে রুশার দিকে একটু ঝুকে বলল,

–“সবার কি অবস্থা হয়েছে সেটা তো দেখতেই পেলে। এবার আশু কোথায় সেটা বলবে না-কি তোমার অবস্থাও এদের মতো করব?”

হৃদানের কথাটা স্পষ্ট শুনতে পেলেও রুশা কোনো রেসপন্স করল না। হৃদান রুশার থেকে প্রতিউত্তর পাওয়ার অপেক্ষা করতে করতে হঠাৎ ওর চোখ গেল রুশার লেহেঙ্গার দোপাট্টার ফাকা অংশ থেকে বের হওয়া ওর ফর্সা পেটের দিকে। হৃদান সেদিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে এক টান দিয়ে রুশার কাধ থেকে দোপাট্টা টা খুলে ফেলল। রুশা মৃদ‍্যু চিৎকার দিয়ে ব‍্যাথাতুর স্বরে বলল,

–“খবরদার হৃদান নিজের লিমিট ক্রস করবেন না। আমার দোপাট্টা আমাকে ব‍্যাক করুন, নাহলে কিন্তু খুব খারাপ কিছু হয়ে যাবে।”

রুশার কথায় হৃদানের মধ‍্যে মোটেও ভাবান্তর হলো না। ‘ও’ হাত বাড়িয়ে রুশার উন্মুক্ত পেটে স্পর্শ করল। রুশা চেচিয়ে উঠে চোখ-মুখ কুচকে ফেলল। রুশার চেচানোতে হৃদান যেন অদ্ভুত পৈশাচিক একটা শান্তি পেল। ‘ও’ শরীরের সর্বশক্তি দিয়ে রুশার পেটে একটা খামচি দিয়ে ওর পেটে নিজের সবগুলো নখ বসিয়ে দিল। রুশা ব‍্যাথায় আর্তনাদ করে উঠল। শরীরটা যেন মুহূর্তের মধ‍্যে ঘিনঘিনিয়ে উঠল। জীবনে প্রথমবার নিজের কাছে নিজেকে ভিষণ হেল্পলেস মনে হলো। রুশা মনে মনে কয়েকবার আল্লাহ্ কে ডেকে দু-চোখের পানি ছেড়ে দিল। হৃদান আপাদমস্তক রুশার পাঁ থেকে মাথা পযর্ন্ত একবার চোখ বুলিয়ে নিল। তারপর বাঁকা একটা হাঁসি দিয়ে একটা ফুলদানী এনে কাচের টেবিলটার উপর আঘাত করল। মুহূর্তের মধ‍্যে ঝরঝর করে টেবিলের কাচগুলো ভেঙে ফ্লোরে পড়ে গেল। রুশা ছাড়া পেয়ে নিজের গলা চেপে ধরে ফ্লোরে বসে হাপাতে লাগল। হৃদান এগিয়ে এসে রুশার পাশে হাঁটু গেড়ে বসে ঠোঁটের কোনে প্রসস্ত হাঁসি ঝুলিয়ে বলল,

–“চোখের সামনে এত সুন্দর একটা লটারি থাকার পরেও আমি কিনা এতদিন সাদা কাগজের পিছনে ছুটছিলাম? ছিহ! শেইম অন মি।”

হৃদানের কথাটা রুশার কর্নগোচর হলেও রুশা আপাতত কিছু বলার বা করার মতো অবস্থায় নেই। ওর মাথায় এত যন্ত্রণা হচ্ছে যে ‘ও’ নিজের শরীরের ব‍্যালেন্স পযর্ন্ত ঠিক রাখতে পারছে না। হৃদান বসা থেকে দাড়িয়ে রুশার হাতের বাহু চেপে ধরে ওকে টেনে ফ্লোর থেকে উঠিয়ে দাড় করাল। তারপর রুশাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ওকে টানতে টানতে বাড়ির বাইরের দিকে নিয়ে যেতে লাগল। রুশা হৃদানের থেকে ছাড়া পাওয়ার চেষ্টা করেও ছুটতে পারল না। ওর শরীর ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে আসলো। হৃদান ওকে টেনে হিচড়ে নিয়ে গিয়ে গাড়ির সিটের উপর ছুড়ে মারল। তারপর নিজেও গিয়ে রুশার পাশে বসে রুশার লম্বা চুলগুলোকে নিজের হাতের সাথে পেচিয়ে শক্ত করে চেপে ধরে রাখল। বাড়ির মধ‍্যে থেকে সৃজার ভয়ংকর চিৎকারের শব্দ রুশার কানে এসে বারি খেতে লাগল। কিন্তু রুশা কিছুই করতে পারল না। আধমরা মানুষের মতো নেতিয়ে পড়ে রইল। হৃদানের কথায় ড্রাইভার গাড়ি স্টার্ড দিয়ে কাঙ্খিত সেই গন্তব‍্যে ছুটে চলল। পিছনে রয়ে গেল কিছু মানুষের রক্তা”ক্ত দেহ। আর একটা বাচ্চা মেয়ের রুহ কাপানো চিৎকারের শব্দ।

#চলবে…….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here