#অব্যক্ত_ভালোবাসা
#লেখনীঃআরভি_আহিয়াদ_তিহু
#দ্বিতীয়_পরিচ্ছেদ
#পর্বঃ২৮
সন্ধ্যা 7:00pm
রুশা ওর কেবিনে বসে ফাইল চেক করছিল। তখনই দরজায় নক পড়ল। রুশা ফাইল থেকে চোখ সরিয়ে দরজার দিকে তাকাল। দরজার সামনে হাসিমুখে আশিষ দাড়িয়ে আছে। রুশা ফাইল’টা বন্ধ করে স্মিত হেসে আশিষকে উদ্দ্যেশ্য করে বলল,
–“ভিতরে আসুন স্যার। আমার কেবিনে আসার জন্যে আপনার ফর্মালিটি মেইন্টেইন করার কোনো প্রয়োজন নেই।”
রুশার কথা শুনে আশিষের হাসিটা আরো চওরা হলো। ‘ও’ ভিতরে এসে চেয়ার টেনে বসতে বসতে বলল,
–“সে নাহয় বুঝলাম। বাট এই স্যার ডাকার অভ্যাস টা চেইঞ্জ করছ না কেন? আমি তো তোমার জিজু হই। যত দ্রুত সম্ভব আমাকে জিজু ডাকার প্রাকটিজ করো।”
রুশা ভেংচি কেটে বলল,
–“জিজু ডাকার মতো মহৎ কাজ এখনো আপনি করে উঠতে পারেন নি স্যার। আপনার বিয়ে সম্পর্কে এখনো তেমন কেউই জানে না। আগে পাব্লিক্যালি নিজের বউকে সবার সাথে ইন্ট্রিডিউস করিয়ে দিন। তারপর নাহয় আমি আপনাকে সবার সামনে জিজু বলে ডাকব।”
রুশার কথায় আশিষ মুচকি হাসল। হাতে থাকা সোনালী রংঙের ইনভিটিশন কার্ডটা রুশার দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল,
–“সেই মহৎ কাজটা খুব শীগ্রই করতে যাচ্ছি। আম্মু-আব্বু, চাচ্চুরা সবাই রাজি হয়ে গেছেন। সামনের সপ্তাহে বেশ গ্রান্ড করে একটা রিসিভশন পার্টির আয়োজন করব। সেখানে আমাদের আত্মীয়-স্বজন, ফ্রেন্ড সার্কেল, কলিগ সবাই উপস্থিত থাকবে। সেই পার্টিতেই আমাদের বিয়ের ব্যাপারটা পাবলিক করব। আর আশুকেও সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিব।”
রুশা আশিষের থেকে ইনভিটিশন কার্ড টা হাতে নিল। উল্টে পাল্টে দেখতে দেখতে বেশ উৎফুল্ল গলায় বলে উঠল,
–“দ্যাট’স গ্রেট। এত তাড়াতাড়ি সবাই সবটা মেনে নিল?”
আশিষ বলল,
–“হ্যাঁ, বাট আব্বুকে রাজি করাতে গিয়ে আমার বেহাল অবস্থা হয়ে গেছে। ভাগ্যিস আম্মু আমার ফেবারে ছিল। নাহলে অন্যের বাড়ির মেয়ে ভাগিয়ে নিয়ে আসার অপরাধে আব্বু সেদিনই আমাকে কিক মেরে বাসার বাইরে বের করে দিত।”
আশিষের কথা শুনে রুশা হেসে দিল। এরমধ্যেই একজন নার্স দরজায় নক করে কেবিনের ভিতরে ঢুকল। রুশা হাসি থামিয়ে নার্সের দিকে প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকাল। নার্স আশিষের দিকে এক নজর তাকিয়ে হাসি মুখে বলল,
–“যাক ভালোই হলো আশিষ স্যারও এখানে আছেন। আমাকে আর ডবল কষ্ট করতে হবে না।”
নার্সের কথা শুনে আশিষ ভ্রু কুচকে বলল,
–“কেন? আমাকে কিছু বলতে চাও না-কি?”
–“হ্যাঁ। রবিন স্যার আপনাকে আর রুশা ম্যামকে এক্ষুনি ওনার কেবিনে ডেকেছেন। এক মিনিটও লেইট না করে আপনাদের দুজনকে ইমিডিয়েট ওনার সাথে দেখা করতে বলেছেন।”
নার্সের কথা শুনে আশিষ আর রুশা একে অপরের দিকে তাকাল। কিছু একটা মনে পড়তেই আশিষের এক হাত অটোমেটিক ওর গালে চলে গেল। ‘ও’ রুশার দিকে তাকিয়ে ভিতু কণ্ঠে বলে উঠল,
–“সেদিনের মতো আবারও চড় টড় মারবে না-কি?”
রুশা সিরিয়াস কণ্ঠে বলল,
–“চড় মারার হলে আপনাকে একা ডেকে পাঠাত। আমাকে ডেকেছে মানে নিশ্চয়ই কোনো কাজ আছে।”
কথাটা বলে রুশা চেয়ার থেকে দাড়িয়ে এপ্রোন টা গায়ে জড়িয়ে কেবিন থেকে বের হওয়ার জন্যে দরজার দিকে হাঁটা দিল। আশিষও ভিতু চেহারা নিয়ে বসা থেকে দাড়িয়ে রুশার পিছনে পিছনে এগিয়ে গেল।
_________________________
ডাক্তার রবিনের কেবিনের সামনে এসে রুশা ওনার দরজায় নক করল। ভিতর থেকে ডাক্তার রবিন ওদের ভিতরে আসার পারমিশন দিলেন। রুশা আর আশিষ ভিতরে যেতেই ওদের চোখ গেল এক সাইডের চেয়ারে বসে থাকা চারজন মধ্যবয়স্ক ব্যাক্তির দিকে। ব্যাক্তি চারজনকে চিনতে না পেরে রুশা আর আশিষ দুজনেই ডাঃ রবিনের দিকে প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকাল। ডাঃ রবিন ওদের দুজনকে চোখের ইশারায় চেয়ারে বসতে বললেন। ওরা দুজন চেয়ারে বসতেই ডাঃ রবিন বলে উঠলেন,
–“এনারা চারজন হচ্ছেন আমাদের কান্ট্রিরির বেস্ট টেন নিউরো-সাইন্টিজদের মধ্যের চারজন।”
ডাঃ রবিনের কথা শুনে রুশা আর আশিষ দুজনেই বেশ অবাক হলো। এনাদের মতো জিনিয়াস পার্সনদের যে কখনো এতটা কাছ থেকে দেখতে পাবে সেটা ওরা কখনো ভাবেনি। ডাঃ রবিন আবারও বলে উঠলেন,
–“তোমাদের দুজনকে আমি এখানে একটা বিশেষ কারনে ডেকেছি। আশা করি, আমি এখন তোমাদের যে কথাগুলো বলব সেগুলো তোমরা নিজেদের মধ্যেই সিকরেট রাখবে। অবশ্য এই কথাগুলো যদি তোমরা বাইরে পাঁচ কান করো তাহলে তোমরা নিজেরাই প্রবলেমে পড়বে।”
রুশার কপালে ভাঁজ পড়ল। ‘ও’ চিন্তিত কণ্ঠে ডাঃ রবিনকে উদ্দ্যেশ্য করে বলল,
–“হোয়াট হ্যাপেন স্যার? এনিথিং সিরিয়াস?”
রুশার প্রশ্নের প্রতিউত্তরে ডাঃ রবিন উপর নিচ করে মাথা নেড়ে হ্যাঁ সূচক জবাব দিলেন। তারপর ল্যাপটব অন করে কিছুক্ষণ ঘাটাঘাটি করে একটা ভিডিও প্লে করে আশিষ আর রুশার সামনে ধরলেন। রুশা আর আশিষ একে অপরের দিকে এক পলক তাকিয়ে কৌতূহল নিয়ে ল্যাপটবের স্কিনে দৃষ্টি রাখল। ভিডিও টা একটা সাইন্স ল্যাবের। যেখানে প্রায় বিশ জনেরও অধিক লোক হোয়াইট এপ্রোন আর মুখে মাস্ক পড়ে এক সাইডে দাড়িয়ে আছে। আর একজন লোক তাদের সামনেই চেয়ারে বসে আছেন। লোকটার গায়েও তাদের মতো সেইম এপ্রোন জড়ানো। তবে মুখে কোনো মাস্ক নেই। চেহারার এক্সপ্রেশন দেখেই বোঝা যাচ্ছে উনি বেশ উৎফুল্ল হয়ে আছেন। কিছুক্ষণ পর অন্য একজন এপ্রোন পড়া লোক ইনজেকশন হাতে ওনার দিকে এগিয়ে আসলেন। উনি ওনার গায়ে জড়ানো এপ্রোনের হাতা টা সোল্ডার থেকে একটু উপরে উঠিয়ে ইনজেকশন নেওয়ার জন্যে প্রস্তুতি নিলেন। ইনজেকশন হাতে থাকা লোকটা এগিয়ে গিয়ে ওই লোকটার সোল্ডারে ইনজেকশন পুশ করে ওনার থেকে খানিকটা দূরে গিয়ে দাড়ালেন। প্রায় ত্রিশ সেকেন্ডের মতো লোকটা চেয়ারের উপরে স্বাভাবিক ভাবেই বসে রইলেন। কিন্তু তারপরেই ছটফট শুরু করলেন। ওনার শরীর থেকে ঘাম বের হওয়া শুরু হলো। উনি বসা থেকে দাড়িয়ে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নিতে লাগলেন। দেড় মিনিটের মাথায় ওনার নাক, চোখ, কান, থেকে গলগল করে র’ক্ত বের হওয়া শুরু হলো। এটা দেখে পিছনে দাড়িয়ে থাকা লোকগুলো সবাই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়লেন। ওনারা দ্রুত দৌড়ে ওই লোকটার কাছে এগিয়ে আসলেন। শুধু যেই লোকটা ইনজেকশন পুশ করেছিলেন তিনি নিজের জায়গায় সটান হয়ে ঠায় দাড়িয়ে রইলেন। বাকিরা সবাই অন্য আরেকটা ইনজেকশন এনে অসুস্থ লোকটার শরীরে পুশ করে দিলেন। কিন্তু তাতেও লাভের লাভ কিছুই হলো না। সময় অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে লোকটা অস্বাভাবিক বিহেব করা শুরু করে দিলেন। বাকিরা সবাই একের পর এক ইনজেকশন দিয়ে ওনাকে স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসার চেষ্টা করতে লাগলেন। চার মিনিটের মাথায় লোকটার শরীরের সব জায়গার স্কিন থেকে ফোস্কার মতো কিছু একটা বের হলো। উনি বিকট আওয়াজে চিৎকার শুরু করলেন। এতক্ষণ যারা ওনাকে সুস্থ করার চেষ্টা করছিলেন তারা সবাই ভয় পেয়ে ছিটকে ওনার থেকে দূরে সরে গেলেন। সাড়ে পাঁচ মিনিটের মাথায় লোকটার স্কিনে ওঠা ফোস্কা গুলো থেকে র’ক্ত বের হওয়া শুরু হলো। লোকটার দিকে তাকাতেই সবাই ভয়ে আৎকে উঠলেন। ইনজেকশন পুশ করা লোকটা সুযোগ বুঝে বাইরে চলে গেলেন। বাকিরাও সবাই হুড়মুড়িয়ে বাইরে যাওয়ার জন্যে দৌড় দিলেন। কিন্তু দরজা দিয়ে সবাই বের হওয়ার পূর্বেই অসুস্থ লোকটা উঠে এসে দুজনের ঘাড় চেপে ধরে ভিতরের দিকে টেনে নিয়ে গেলেন। এটা দেখে যারা ভিতরে ছিল সবাই দৌড়ে বাইরে বের হয়ে আসলো। যেই লোকটা ইনজেকশনটা পুশ করেছিলেন সেই লোকটা দ্রুত এসে দরজাটা লক করে দিলেন। দরজাটা কাচের থাকায় ওনারা সবাই বাইরে দাড়িয়েই সবটা দেখতে লাগলেন। অসুস্থ লোকটা যেই দুটো লোককে ধরে নিয়ে গিয়েছিলেন তাদেরকে উনি জ্যন্ত অবস্থায়-ই কামড়ে খুবলে খুবলে খেতে শুরু করলেন। লোক দুটো অনেক চেষ্টা করেও ওই লোকটার হাত থেকে বাঁচতে পারল না। অসুস্থ লোকটা ওদের শরীরে বিভিন্ন অংশ খামচে বের করে নিয়ে হিংস্র মাংসাসী জানোয়ারের মতো চিবিয়ে খেয়ে ফেললেন।
চোখের সামনে এমন বিভৎস একটা সিন দেখে রুশা আর নিজেকে ঠিক রাখতে পারল না। মুখ চেপে ধরে দৌড়ে কেবিনের এক পাশে থাকা ওয়াশরুমে ঢুকে গেল। সেখানে গিয়ে গলগল করে বমি করে দিল। আশিষ দ্রুত এসে রুশার মাথা চেপে ধরল। ওর নিজের শরীরও অসম্ভব রকম কাঁপছে। এসির মধ্যেও শরীর থেকে দরদর করে ঘাম বের হচ্ছে। রুশা কোনো রকম নিজেকে সামলে নিয়ে চোখে মুখে পানি ছিটিয়ে নিল। আশিষ ওকে ধরে বাইরে নিয়ে এসে চেয়ারে বসিয়ে এক গ্লাস পানি ওর দিকে বাড়িয়ে দিল। রুশা ঢকঢক করে পুরো পানিটা শেষ করে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নেওয়া শুরু করল। ওর শরীর থেকেও দরদর করে ঘাম বের হচ্ছে। হাত-পাঁ অসম্ভব রকমের কাঁপছে। ডাঃ রবিন এক নজর রুশা আর আশিষের দিকে চোখ বুলিয়ে নিয়ে বলে উঠলেন,
–“ভিডিও দেখেই তোমাদের দুজনের এই অবস্থা? তাহলে ভাবো, আমরা যারা ওখানে উপস্থিত ছিলাম তাদের কি অবস্থা হয়েছিল?”
ডাঃ রবিনের কথায় রুশা আর আশিষ দুজনেই চমকে ওনার দিকে তাকাল। আশিষ বিষ্ময় ভরা কণ্ঠে বলে উঠল,
–“আপনিও ওখানে ছিলেন? কিন্তু কেন? আর ওই ইনজেকশনটা কিসের ছিল? ওটা দেওয়ার সাথে সাথেই ওই লোকটা এমন ভয়ংকর হয়ে গেল কেন?”
ডাঃ রবিন দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। ল্যাপটপ টা ওনার কাছে নিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বলা শুরু করলেন,
–“ভিডিও তে যেই লোকটা শুরুতে ইনজেকশন পুশ করেছিল তাকে দেখেছো না? ওনার নাম প্রফেসর সিউক। উনি অ্যামেরিক্যান একজন নিউরো-সাইন্টিস্ট। প্রায় দশ মাস আগে ওনার ল্যাব থেকে আমাদের কাছে একটা কল আসে। একটা প্রজেক্টের জন্যে উনি বাংলাদেশ থেকে পাঁচ জন নিউরো-সাইন্টিস্ট কে কল করে ওনার সাথে দেখা করার জন্যে বলেন। সেই পাঁচ জন নিউরো-সাইন্টিস্টের মধ্যে একজন আমিও ছিলাম। আর বাঁকি চারজন ছিলেন ওনারা।”
ডাঃ রবিন চোখ দিয়ে ইশারা করে ওখানে বসে থাকা সেই চারজন নিউরো-সাইন্টিস্টকে দেখায়। রুশা আর আশিষ এক নজর ওনাদের দিকে তাকিয়ে ডাঃ রবিনের কথা শোনায় মনোযোগ দেয়। ডাঃ রবিন বলেন,
–“আমরা ওখানে গিয়ে দেখি উনি আরো অন্যান্য দেশ থেকে আমাদের মতো নিউরো-সাইন্টিস্ট যারা আছে তাদেরকে ওখানে ইনভাইট করেছেন। ব্যাপারটা আমাদের কাছে বের ইন্টারেস্টিং লাগে। উনি আমাদের সবাইকে ওনার বাসায় ডিনারের জন্যে ইনভাইট করেন। আমরাও সবাই বেশ এক্সাইটেড হয়ে ওনার বাড়িতে চলে যাই। রাতে ডিনারের শেষে উনি ওনার প্লান সম্পর্কে আমাদেরকে জানায়। ওনার প্লান শুনে আমরা সবাই-ই খুব খুশী হয়ে যাই। আর কাজটা করতে রাজিও হয়ে যাই। কারন উনি বলেছিলেন, উনি এমন একটা মেডিসিন তৈরি করতে চান যেটা ব্রেইন টিউমারের রুগীদের কে কোনো রকম অপারেশন ছাড়াই সুস্থ করে দিবে। মানে ওই মেডিসিন টা যদি ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরে পুশ করা হয়, তাহলে ব্রেইন টিউমার টা আস্তে আস্তে ছোট হতে হতে একটা সময় একেবারে গায়ের হয়ে যাবে। আর এতে করে যেসব মানুষের ব্রেইন টিউমার থেকে ব্রেইন ক্যান্সার হয়, সেসব মানুষ ক্যান্সারের হাত থেকে বেঁচে যাবে। ওনার কথাগুলো আমাদের এতই ভালো লেগেছিল যে আমরা সবাই পরদিন থেকেই কাজে লেগে পড়ি। উনি আমাদের বলেছিলেন এই মেডিসিনের ফর্মুলা উনি আর ওনার টিম মিলে অনেক আগেই রেডি করে রেখেছেন। আমরা সবাই মিলে সেই ফর্মুলা অনুযায়ী-ই যেন কাজ শুরু করে দেই।”
এইটুকু বলে থামেন ডাঃ রবিন। রুশা কৌতুহলী কণ্ঠে বলে,
–“তারপর?”
ডাঃ রবিন বলেন,
–“উনি ফর্মুলাটাকে টোটাল চার ভাগে বিভক্ত করেন। এবং ছয় জন বিশিষ্ট একটা করে মোট চারটা টিম তৈরি করেন। এই চারটা টিমের মধ্যে সেই মেডিসিনের ফর্মুলাটাকে চার ভাগে ভাগ করে দেন। আমরা চার ভাগে টোটাল চব্বিশ জন ছিলাম। প্রায় চার মাস সময় লেগেছিল আমাদের এই পুরো প্রসেস টা কম্পিলিট করতে। ফর্মুলা অনুযায়ী আমরা সবাই আমাদের ভাগের ক্যামিক্যাল টা তৈরি করে প্রফেসর সিউকের কাছে জমা দিয়েছিলাম। উনি বলেছিলেন, এটাতে আরো কিছু কাজ আছে। উনি সেটা কম্পিলিট করে এক্সপেরিমেন্ট শেষে ফলাফল আমাদের জানাবে। আমরা ওনার কথা অনুযায়ী এক্সপেরিমেন্টের রেজাল্ট আসা পযর্ন্ত ওয়েট করতে লাগলাম। প্রায় দশ দিন পর উনি আমাদের কল করে আবারও ল্যাবে ডাকলেন। এবং আমাদের বললেন, মেডিসিনটার এক্সপেরিমেন্ট নাকি সফল হয়েছে। উনি নাকি একটা বিড়ালের উপরে এপ্লাই করেছিলেন। সৌভাগ্যবশত বিড়ালটাল নাকি কোনো রকম সাইড এফেক্ট হয়নি। তাই উনি এখন একজন মানুষের উপরে এটা এপ্লাই করে দেখতে চান মানুষের শরীরে এই মেডিসিনটা কতটা কার্যকরী। ওনার কথা শুনে প্রথমে আমরা সবাই বেশ খুশী হয়ে গিয়েছিলাম ঠিকই। কিন্তু পরক্ষণেই যখন উনি আমাদের কারো শরীরে ওই মেডিসিন টা এপ্লাই করতে চাইলেন, তখন আমরা সবাই পিছিয়ে গেলাম। এত বড় একটা রিস্ক নিতে আমরা কেউই রাজি ছিলাম না। তাই উনি আমাদের বেশ মোটা অংকের একটা এমাউন্ট অফার করছিলেন। টাকার এমাউন্ট’টা এত বড় ছিল যে কোনো কিছু না ভেবেই ওই ছেলেটা এক্সপেরিমেন্টের জন্যে রাজি হয়ে গিয়েছিল। আমরা চোখ দিয়ে ইশারা করে ওকে অনেকবার বারন করেছিলাম। কিন্তু তখন ‘ও’ আমাদের কারো কথায় কোনো পাত্তা দেয়নি। প্রফেসর সিউকের কথায় অতিরিক্ত এক্সাইটেড হয়ে গিয়েছিল। আর অতিরিক্ত লোভে পড়ে নিজের লাইফটা একেবারে নষ্ট করে ফেলল।”
ডাঃ রবিন উদাশ মনে একটা ভারী নিঃশ্বাস ছাড়লেন। আশিষ কপালে ভাঁজ ফেলে বলল,
–“তারমানে আপনারা যে মেডিসিন টা তৈরী করেছিলেন, সেটার সাইড এফেক্টের জন্যে ওই ছেলেটার ওই অবস্থা হয়েছে, তাইত? কিন্তু সেটা কীভাবে সম্ভব? একটা মেডিসিনের সাইড এফেক্টের জন্যে একটা মানুষ এরকম মাংষাসী কিভাবে হয়ে যায়? আর তাছাড়া মিঃ সিউক তো বলেছিলেন উনি বিড়ালের উপরে ওই মেডিসিন টা এপ্লাই করেছিলেন, কিন্তু বিড়ালের কোনো রকম সাইড এফেক্ট হয়নি। বিড়ালের যখন কোনো সাইড এফেক্ট হলো না, তখন মানুষের শরীরে ওই মেডিসিনটা কীভাবে এতটা খারাপ প্রভাব ফেলল?”
আশিষের প্রশ্নে ডাঃ রবিন ওর দিকে চোখ তুলে তাকাল। তারপর থমথমে মুখে বলল,
–“ডাঃ সিউক ওই মেডিসিন টা কোনো বিড়ালের উপরে এপ্লাই-ই করেন নি। ইনফ্যাক্ট ওই মেডিসিনের সাইড এফেক্টের জন্যেও ওই ছেলেটার এমন অবস্থা হয়নি। বরং উনি যেই মেডিসিন টা বানাতে চেয়েছিলেন, সেটা সাকসেস হয়েছিল বলেই ওই ছেলেটার এমন অবস্থা হয়েছিল।”
ডাঃ রবিনের কথা বুঝতে না পেরে আশিষ ওনার দিকে প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল। উনি চোখ-মুখ শক্ত করে বলে উঠলেন,
–“ওটা কোনো ব্রেইন টিউমারের মেডিসিনের ফর্মুলা ছিল না। ওটা একটা ভয়ংকর ভাইরাসের ফর্মুলা ছিল। যেই ভাইরাস শরীরে ইনজেক্ট করার সাথে সাথে শরীরের সমস্ত ব্লাড সেলস গুলোতে অ্যাটক করে শরীরের সব ব্লাড সেলস গুলো নষ্ট করে ফেলে। যার ফলে শরীরে চলাচলরত ব্লাড গুলো নাক, কান, চোখ, এবং স্কিনের বিভিন্ন জায়গা থেকে বাইরে বের হয়ে আসে। এবং ব্রেনের কোষ গুলোকে এমন ভাবে নিজেদের কন্ট্রোলে নিয়ে নেয় যে মানুষ আর নিজের হুশেই থাকে না। ওদের ব্রেইন টা তখন পুরোপুরি ওই ভাইরাসের দখলে চলে যায়। যার ফলে ওরা হিংস্র মাংসাসী প্রানীর মতো আচরণ শুরু করে। এতটাই হিংস্র হয়ে যায় যে যখন খাওয়ার জন্যে জীবন্ত মানুষ হাতের কাছে না থাকে। তখন নিজের শরীর নিজেই কামড়ে খেতে শুরু করে।”
ডাঃ রবিনের কথা শুনে রুশা আর আশিষ দুজনেই “হোয়াট” বলে চিল্লিয়ে উঠল। রুশা কম্পিত কণ্ঠে প্রশ্ন করল,
–“তারমানে কি ওই ছেলেটা শেষে নিজেকেও কা”ম”ড়ে খেয়ে ফেলেছিল?”
রুশার প্রশ্নের প্রতিউত্তরে ডাঃ রবিন উপর নিচ করে ঘাড় নাড়িয়ে হ্যাঁ সূচক জবাব দিলেন। আশিষ আর রুশা দুজনেই টাস্কি খেয়ে বসে রইল। ওদের দুজনকে চুপ করে বসে থাকতে দেখে ডাঃ রবিন নিজে নিজেই বলতে লাগলেন,
–“ওই ঘটনার পর প্রফেসর সিউক নিজেই আমাদের ওনার প্লানের ব্যাপারে বলেন। ওনার প্লান শুনে আমরা সবাই হতবাক হয়ে যাই। উনি আমাদেরকে ওনার প্লানের অংশীদার হওয়ার জন্যে আমাদেরকেও মোটা অংকের টাকার অফার করেন। কিন্তু আমরা কেউই ওনার সেই প্লানের অংশীদার হতে রাজী হই না। কয়েক জন ওনার মুখেই উপরেই ওনাকে মানা করে দেয়। এবং ওনাকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ারও ভয় দেখায়। যার জন্যে উনি রেগে গিয়ে আমাদের চোখের সামনে তাদেরকে শুট করে দেয়। অবস্থা বেগতিক দেখে আমরা সবাই তখনকার মতো ওনার কথা মেনে নেওয়ার নাটক করি। তারপর সেদিন সন্ধ্যায়-ই সবাই একত্রে দেখা করে ওখান থেকে পালিয়ে আসার সলিড একটা প্লান বানাই। সেই প্লান অনুযায়ী ওই ঘটনার প্রায় পনেরো দিন পর একদিন সন্ধ্যায় ল্যাব থেকে মিঃ সিউকের লোকেরা চলে যাওয়ার পর আমরা নিজেদের কাজে লেগে পড়ি। আমরা ভেবেছিলাম, আমরা ওখান থেকে আসার সময় ওই মেডিসনসহ ওটার ফর্মুলা টা নষ্ট করে ফেলব। এবং আমাদের বিষয়ে ওখানে যত ডাটা কম্পিউটারে সেইভ করা আছে, সেই সব ডাটা কম্পিউটার থেকে ডিলেট করে দিব। যাতে পরে ওনারা আমাদের আর খুঁজে না পায় সেইজন্যে। প্লান অনুযায়ী আমরা আমাদের সমস্ত ইনফরমেশন ওখানের কম্পিউটার থেকে ডিলেট করে ফেলি। তারপর সবাই একসাথে মিঃ সিউকের কেবিনে এসে সেই ভাইরাস মেডিসিন টা আর সেটার ফর্মুলাটা খুঁজতে শুরু করি। ঠিক সেই সময়ে মিঃ সিউকের একজন স্টাফ সন্দেহের বশে ওনার কেবিনে ঢুকে পড়ে। আর আমরা সবাই তার কাছে ধরা পড়ে যাই।”
এইটুকু বলে ডাঃ রবিন থেমে যান। একটু সময় চুপ থেকে আবারও বলা শুরু করেন,
–“প্রথমে আমরা ছেলেটাকে দেখে ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু পরে ওর কথা শুনে বুঝতে পারলাম ‘ও’ নিজেও আমাদের মতো এখানে ফেসে গেছে। আমরা আমাদের প্লানের ব্যাপারে ওকে সবটা বলতেই ‘ও’ এমন কিছু ইনফরমেশন আমাদের দিল যেটা শুনে আমাদের পাঁয়ের নিচের মাটি সরে গিয়েছিল। ‘ও’ আমাদের জানিয়েছিল, মিঃ সিউক আসলে কোনো সার্টিফায়েড নিউরো-সাইন্টিস্ট-ই না। আর ওই ফর্মুলাটাও ওনার বানানো না। ওটা একজন ফেইমাস নিউরো-সাইন্টিস্টের ফ্লপ মেডিসিনের পরিণতি। অ্যাকচুলি বছর দুইয়েক আগে একজন সাইন্টিস্ট একটা ভাইরাস নিয়ে গবেষণা শুরু করেছিলেন। তিনি সেই ভাইরাস টা দিয়ে যেকোনো একটা মেডিসিন বানানোর প্রসেস শুরু করেছিলেন। কিন্তু আনফরচুনেটলি ওনার গবেষণা টা ফেইল্ড হয়ে যায়। উনি যখন মেডিসিন টা বানিয়ে একটা বানোরের উপরে এপ্লাই করেন, তখন উনি সেই বানোরের এমন ভয়াবহ পরিণতি দেখে দ্রুত ওই মেডিসিন টা নষ্ট করার সিদ্ধান্ত নেন। তখন তিনি এতটাই আতঙ্কগ্রস্ত ছিলেন যে কোনো মাস্ক এবং সেইফটি ছাড়াই ওই মেডিসিন টা নষ্ট করার প্রসেস শুরু করেন। কিন্তু উনি মেডিসিনটার কিছু করে ওঠার আগেই ওটার ভাইরাস গুলো ওনার নিঃশ্বাসের মাধ্যেমে শরীরে ঢুকে ওনাকেও সম্পূর্ন ইনফেক্টেড বানিয়ে ফেলে। সেই সময়ে ওনার টিম মেম্বারেরা এসে ওনাকে ওনার কেবিনেই লক করে দেয়। আর উনি ভিতরে বসে নিজেকেই নিজে কামড়ে কামড়ে খেতে শুরু করেন। এবং একটা পর্যায়ে এসে উনি মৃতুবরন করেন। মিঃ সিউক সেই সময়ে ওনার বিশ্বস্ত একজন সহকারী ছিলেন। উনি এই মেডিসিনটার বিষয়ে সবকিছু জানতেন। তাই ওই সাইন্টিস্ট মারা যাওয়ার পর খুব সাবধানে উনি সেই মেডিসিনের ফর্মুলাটা চুরি করে নিয়ে ওখান থেকে বের হয়ে আসেন। এবং যারা এই বিষয়টা পুরোটা জানত তাদেরকেও সাথে করে নিয়ে আসেন। তারপর সবাই মিলে গোটা ল্যাবটাকে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেন। পরবর্তীতে মিঃ সিউক একটা টেরোরিস্ট সংস্থার সাথে হাত মিলিয়ে একটা ডিল করেন। উনি ওই মেডিসিন টা টেরোরিস্টদের কাছে বিক্রি করে টাকা হাতানোর ডিসিশন নেন। তারপর থেকেই ওনার এসব অনৈতিক কাজের সূচনা হয়েছিল। উনার যেহেতু এসব বিষয়ে কোনো রকম নলেজ ছিল না। তাই উনি বাহিরের দেশ থেকে ফেইমাস নিউরো-সাইন্টিস্টদের নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেছিলেন। এবং তারা যাতে রিসার্চের সময় মেডিসিটার ব্যাপারে কিছু বুঝতে না পারে তাই সেটাকে চার ভাগে ভাগ করে আলাদা আলাদা ভাবে কাজটা কম্পিলিট করানোর ডিসিশন নিয়েছিলেন। আর উনি যেমন, যেমন নিজের প্লানটা সাজিয়ে ছিলেন তেমন, তেমন ভাবে সবটা হয়েও গিয়েছিল।”
রুশা আর আশিষ থম মেরে বসে আছে। এত সব শোনার পর ওদের মাথাটা বনবন করে ঘুরছে। রুশা কিছুক্ষণ চুপ মেরে বসে থেকে হঠাৎ বলে উঠল,
–“ওই মেডিসিন টা এখন কোথায় আছে স্যার? ওটাকে কি আপনারা সেদিন নষ্ট করতে পেরেছিলেন না-কি এখনো ওটা মিঃ সিউকের কাছেই রয়ে গেছে?”
ডাঃ রবিন তপ্ত নিঃশ্বাস ফেলে বললেন,
–“মেডিসিন টা এখন অবদি নষ্ট করতে পারিনি রুশানি। তবে আসার সময় সেদিন ওটা আর ফর্মুলাটা দুটোই সাথে করে নিয়ে এসেছিলাম। আপাতত ওই দুইটা আমার কাছেই আছে। তবে মনে হচ্ছে না বেশি দিন ওগুলোকে নিজের কাছে রাখতে পারব। মিঃ সিউক আর ওই টেরোরিস্ট সংস্থার লোকেরা আমাদের পাগলের মতো খুঁজছে। আমাদের টিমে থাকা অলরেডি তিনজন নিউরো-সাইন্টিস্টকে মেরেও ফেলেছে। এরপর হয়ত ওদের নেক্সস্ট টার্গেট আমরা। যদি ওরা একবার আমাদের সন্ধান পেয়ে যায়, তাহলে আমাদের কাউকে প্রানে বাঁচতে দিবে না।”
আশিষ আৎকে উঠল। ভীতি চোখে ডাঃ রবিনের দিকে তাকিয়ে রইল। ছেলের চোখে-মুখে লেপ্টে থাকা ভয়টা ডাঃ রবিনের চোখ এড়াল না। তবে উনি দেখেও না দেখার ভান করে চুপচাপ বসে রইলেন। রুশা গম্ভীর কণ্ঠে জিজ্ঞেস করল,
–“এখন আপনাদের নেক্সট প্লান কি স্যার? গভমেন্টকে সবকিছু জানাবেন?”
ডাঃ রবিন বললেন,
–“নাহ। গভমেন্টকে সবটা জানাতে গেলে আমরা নিজেরাই ফেশে যাব। কারন আমরা নিজেদের অজান্তেই এই কাজটা সম্পূর্নটা ইল-লিগ্যালি করেছি। এখন গভমেন্ট সবটা জানতে পারলে আমাদের লাইসেন্স তো বাতিল করবেই, সাথে আমাদের জেলেও ঢোকাবে। তাই আগে ওই মেডিসিনটা নষ্ট করব। তারপর মিঃ সিউকের বিরুদ্ধে কিছু প্রমান কালেক্ট করে ওনাকে গভমেন্টের হাতে ধরিয়ে দিব।”
কথাটা বলে ডাঃ রবিন বসা থেকে দাড়িয়ে গেলেন। টেবিলের পাশে থাকা কার্বাডের লক খুলতে খুলতে বলে উঠলেন,
–“বাই দ্যা ওয়ে তোমাদের দুজনকে এসব বলার কারন হচ্ছে একটাই। আমি তোমাদের গুরুত্বপূর্ণ একটা দ্বায়ীত্ব দিতে চাই। আশাকরি তোমরা যথাযথ ভাবে দ্বায়ীত্বটা পালন করবে।”
কথাটা বলে ডাঃ রবিন কাবার্ড থেকে একটা কাচের বক্স বের করে রুশা আর আশিষের সামনে টেবিলের উপরে রাখল। ওরা দুজন কৌতূহল নিয়ে তাকাতেই দেখল এই কাচের বক্সের মধ্যে ছোট একটা কাচের জাড়। যেটার মধ্যে রেড কালারের একটা লিক্যুইড ক্যামিকেল দেখা যাচ্ছে। আশিষ ক্যামিক্যাল টার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল,
–“এইটা কি সেই মেডিসিন টা?”
ডাঃ রবিন মাথা নেড়ে হ্যাঁ সূচক জবাব দিলেন। চেয়ার টেনে বসতে বসতে বলে উঠলেন,
–“এই মেডিসিনটার সিকিউরিটির দ্বায়ীত্ব আমি তোমাদের দুজনকে দিলাম। খবরদার এটার ব্যাপারে ভুলেও যেন কেউ কিছু জানতে না পারে। আমি এটা নিজের কাছেই রাখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আপাতত আমি কিছুদিন খুব ব্যস্ত থাকব। আমাদের টিমের বাকিরা সবাই নিজ নিজ দেশ থেকে আগামীকাল আমাদের এখানে আসবে। যত দ্রুত সম্ভব আমরা সবাই মিলে এই মেডিসিন অ্যান্টি-ডোট বানানোর প্রসেস শুরু করব। তাই আপাতত এটাকে নিজের কাছে রেখে রিস্ক বাড়াতে চাচ্ছি না। তোমরা এটাকে তোমাদের কাছে সেইফলি রেখে দাও। আর পাশের ভবনটা পুরোপুরি খালি করার ব্যবস্থা করো। রিসার্চ আর সবার থাকার ব্যবস্থা আমি সেখানেই করব।”
রুশা আর আশিষ একে অপরের দিকে তাকিয়ে শুকনো ঢোক গিলছে। জীবনে প্রথম বার কোনো দ্বায়ীত্ব নিতে গিয়ে ওদের দুজনের ভয়ে এক প্রকার হাঁটু কাপছে। এত ভয় লাগছে যে ওরা বক্স টা স্পর্শ করারও সাহস পাচ্ছে না। আশিষ রুশার কানের কাছে এসে ফিশফিশ করে বলল,
–“রুশা ব্যাই এ্যানি চান্স এই বক্সটা টাচ করতেই যদি আমরা দুজন ইনফেক্টেড হয়ে যাই, তখন কি হবে?”
রুশা শুকনো গলায় বলল,
–“কি আবার হবে? নিজেদের মাংস নিজেরা খেয়ে সোজা উপরে টাটা-বায়, বায় হয়ে যাব।”
#চলবে…..
বিঃদ্রঃ যেই ভাইরাস এবং মেডিসিনের কথাটা এখানে উল্লেখ করা হয়েছে, সেটা সম্পূর্ন কাল্পনিক একটা বিষয়। এটাকে সিরিয়াসলি নিয়ে নিজেদের মাইন্ডকে বিভ্রান্তিতে ফেলবেন না।
(রি-চেক করা হয়নি। লেখায় ভুল থাকলে কষ্ট করে একটু বুঝে নিবেন।)