অভিযোগ গুলা কি অযৌক্তিক পর্ব -০৮ শেষ

গল্প:-#অভিযোগ_গুলা_কি_অযৌক্তিক?
পর্ব:- ০৮ (শেষ)
লেখা:- AL Mohammad Sourav

তিন দিন পরেই সাহেদের বিয়ে আর তুমি ব্যাগ হাতে নিয়ে কোথায় যাচ্ছো বৌমা? সৌরভ তো বলেছে সাহেদের বিয়ের এক মাস পরে যাবে। আর তুমি তো দেখছি বিয়ের আগেই চলে যাচ্ছো? ( রুপা পিছনে চেয়ে দেখে ওর শ্বাশুড়ী দাঁড়িয়ে কথা গুলি বলছে) তখন রুপা ব্যাগটা নিচে রেখে বলে। মা আসলে আমি কোথাও যাচ্ছি না। ব্যাগটা কোথায় রাখবো তার জায়গা খুঁজতেছি। তখনি রুপার শ্বাশুড়ী ব্যাগটা রুপার হাত থেকে নিয়ে বলে।
শ্বাশুড়ী:- দাও আমার কাছে আমি রেখে দেয়। ওনি কাপড় গুলি বের করে সুন্দর করে ওয়াড্রোপের ভিতরে সাজিয়ে দিয়ে বলে। শুনো বৌমা সৌরভকে তুমি এখনো চিনতে পারোনি। সৌরভ তোমার জন্য আমার সাথে তর্ক করে বাড়ী থেকে আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর তুমি কি না সৌরভকে ছেড়ে চলে যেতে চায়ছো?
রুপা:- মা আমি কোথাও যেতে চাচ্ছি না।
শ্বাশুড়ী:- বৌমা আমি তোমার বয়সটা পার করে এসেছি। আমি তোমাদের সব কথা শুনেছি। তোমরা এক সাথে থাকো অথচ আলাদা জায়গা ঘুমাও?
রুপা:- আসলে মা। তখনি রুপাকে থামিয়ে দিয়ে বলে।
শ্বাশুড়ী:- তুমি জানো তোমার শ্বশুরের সাথে আমার কত ঝগড়া হয়ছে। কিন্তু রাতের বেলা কখনো আমি তোমার শ্বশুড়কে আলাদা করে থাকতে দেয়নি। স্বামী স্ত্রী মধ্যে ঝগড়া হবে কিন্তু দিন শেষে রাতে যখনি এক সাথে থাকবে তখনি সব ঝগড়া শেষ হয়ে যাবে। আর তোমরা দুজন দুই মাস আলাদা করে থাকতেছো? এভাবে থাকতে থাকতে একটা সময় তোমাদে মধ্যে অনেক বড় দুরুত্ব তৈরি হয়ে যাবে। শুনো রুপা আমি জানি তোমার সাথে অন্যায় করেছি কিন্তু তাই বলে কখনো মন থেকে চায়নি তোমরা দুজন আলাদা হয়ে যাও। সৌরভ তোমাকে ভালোবাসে যখন আমার মুখের উপর বলে দিছে যে আলাদা থাকবে। ঠিক তখনি আমি বুঝতে পারছি সৌরভ তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবে না। আর তোমাকে কে কি বলছে তাঁর জন্য তুমি বাড়ী ছেড়ে আবার চলে যাচ্ছো?
রুপা:- আসলে মা আমার রাগ উঠে গেছিলো। আমি সত্যি ওনাকে বুঝতে পারিনি।
শ্বাশুড়ী:- ঠিক আছে। আর যেনো এমনটা না হয়। তুমি নিচে আসো অনেক কাজ বাকী আছে। বাড়ীতে মেহমান আসতে শুরু করবে আগামীকাল থেকে।
রুপা:- আপনি যান আমি আসতেছি। রুপা তাঁর শ্বাশুড়ীকে যেনো প্রতিদিন নতুন করে চিনতেছে। রুপার শ্বাশুড়ীর মধ্যে এত পরিবর্তন হবে রুপা ভাবতে পারছে না। রুপা এসব ভাবতে ভাবতে রান্না ঘরে যাচ্ছে তখনি দেখে সৌরভ রুমে গেছে। রুপা কোনো কিছুনা ভেবেই সোজা দৌরে রুমে এসে দরজা বন্ধ করে দিছে।
সৌরভ:- রুপা কি হলো এমন ভাবে দৌরে এসেছো কেনো আর দরজা বন্ধ করলে কেন? কেউ তোমাকে কিছু বলেছে? তখনি রুপা দৌর দিয়ে গিয়ে সৌরভকে জড়িয়ে ধরে বলে।
রুপা:- আমি আপনাকে আগের চায়তে বেশী ভালোবাসি। আগের চায়তে এখন বেশী বিশ্বাস করি। আমাকে আপনি সবসময় ভালোবাসবেন তো এমন করে?
সৌরভ:- রুপা কি হয়ছে এমন করছো কেনো? দেখি ছাড়ো।
রুপা:- ছাড়বো না। কতদিন পড়ে আপনাকে জড়িয়ে ধরেছি। আমার মনে হচ্ছে কতদিন পড়ে একটা শান্তির জায়গা খুঁজে পেয়েছি।
সৌরভ:- রুপা তুমি জানো না আমি তোমাকে কতটা ভালোবাসি। সবাই হয়ত মনে করে আমি আমার মায়ের কথা একটু বেশী শুনি কিন্তু কি করবো বলো জন্মদাত্রী মা। ওনাকে কষ্ট দিয়ে কথা বলতে আমার যে খুব ভয় হয়। তাই তো তোমার দেওয়া অভিযোগ গুলা কে আমি পাত্তা না দিয়ে বলেছি মানিয়ে নিতে। রুপা এখন থেকে আমি সবসময় তোমার পাশে নয় তোমার সাথে থাকবো।
রুপা:- সত্যি বলতে আমারও সব অভিযোগ গুলা দেওয়াটা ঠিক হয়নি। এখানে মায়ের যে সব দোষ তা কিন্তু একদম না। আমারও অনেক দোষ আছে। তবে এখন মায়ের মধ্যে কেমন একটা পরিবর্তন হয়ে আসছে।
সৌরভ:- যতই পরিবর্তন আসুক আমরা আলাদা থাকবো। বাবা মায়ের ভরণ পোষনের খরচ দিয়ে দিবো। যদি সাহেদ আর সবুজ তখন মা বাবার সাথে থাকতে না চায়। তখন না হয় আমাদের সাথে নিয়ে রাখবো। এখন আমরা আলাদা থাকবো।
রুপা:- আপনি যেইটা ভালো মনে করবেন তাই হবে। এখন আমাকে আদর করেন। তখনি সৌরভ রুপাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে। রুপার কপালে ছোট করে কিস করে বলে।
সৌরভ:- রুপা সারাটা জীবন তুমি আমার পাশে এমন ভাবে থেকো।
রুপা:- তা আর বলতে হবে না। তখন রুপাও সৌরভকে ছোট ছোট কিস করে দিচ্ছে। ঐদিকে যে রুপার শ্বাশুড়ী রুপাকে বলে গেছে অনেক কাজ পড়ে আছে সেই কথা রুপা এখন ভুলে গেছে। এদিকে সৌরভ আর রুপা দুজনে প্রায় দুই মাস পড়ে দুজন দুজনকে আপন করে নিতে ব্যাস্ত হয়ে আছে। সৌরভ আর রুপা আজ অনেক খুশি রুপা কিছুক্ষণ পড়ে ফ্রেশ হয়ে যখন রুমে আসছে তখনি মনে পড়ছে ওর শ্বাশুড়ী যে বলে গেছে সেই কথা। রুপা তাঁড়াতাড়ি করে রান্না ঘরে গিয়ে দেখে সব কাজ শেষ। তারপর বসার রুমে গিয়ে দেখে সেখানেও সব কাজ গোচানো সবাই খাবার টেবিলে বসে আছে। রুপা তাঁর শ্বাশুড়ীকে দেখে ভয়ে চুপসে গেছে তখনি রুপা শ্বাশুড়ী বলে।
শ্বাশুড়ী:- রুপা দাঁড়িয়ে আছো কেনো? এসো খাবার খেতে বসো। সৌরভ কোথায় ওকে ডাক দাও। ( শ্বাশুড়ীর কথা শুনে রুপার সব ভয় ডর চলে গেছে। আর রুপা তাঁর শ্বাশুড়ীর এমন ব্যবহার বিশ্বাস করতে পারছে না। তখনি আবার বলে) এই রুপা দাঁড়িয়ে আছো কেনো? যাও সৌরভকে ডেকে নিয়ে আসো।
রুপা:- হ্যা মা যাচ্ছি। তখনি সৌরভ এসেছে। রুপা আর সৌরভ ওদের সাথে খেতে বসেছে। সবাই খেয়ে যার যার মত করে চলে গেছে। রুপা বার বার তাঁর শ্বাশুড়ীর কথা ভাবছে। ওনি এতটা পরিবর্তন কি করে হয়ে গেছে। এসব ভাবতে ভাবতে রুমে গেছে।
সৌরভ:- কি হলো রুপা কি এমন চিন্ত করছো?
রুপা:- নাহ তেমন কিছু না। আপনি জানেন আজকে আম্মা রুমে এসে আমাকে বলে গেছিলো অনেক কাজ জমে আছে। আমি সেই কাজ গুলি করতে গেছিলাম। কিন্তু আপনাকে দেখে রুমে এসে সব ভুলে গেছি তাও মা আজকে কিছু বলেনি।
সৌরভ:- তাহলে তো ভালোই। মনে হয় আম্মা তাঁর ভুল বুঝতে পারছে।
রুপা:- হ্যা তা ঠিক বলেছেন। জানেন আজকে রুমে এসে আমার কাপড় নিজের হাতে সাজিয়ে দিয়ে গেছে।
সৌরভ:- জানি না। হয়ত নতুন কোনো প্ল্যান করছে। এসব কিছুতে মনোযোগ দেওয়ার দরকার নেই। আচ্ছা আমার কিছু কাজ আছে আমি সেই গুলি করতে যাই। সৌরভ রুপার কপালে চুমু দিয়ে বেড়িয়ে গেছে। রুপা তাঁর মত বাহিরে এসেছে। রুপাকে দেখে তাঁর শ্বাশুড়ী ডাক দিয়ে বলে।
শ্বাশুড়ী:- রুপা দেখো এই হচ্ছে সাহেদের বউয়ের গহনা। তখনি আরেকটা বাক্স এগিয়ে দিয়ে বলে নাও এই গহনা গুলি আমার তরফ থেকে তোমাকে দিলাম। বিয়ের সময় তোমাকে তো আমি তেমন কিছুই দেয়নি। নাও ধরো আজ থেকে এই গুলা তোমার।
রুপা:- না মা আমার তো অনেক গহনা আছে। (তাও জোড় করে রুপার হাতে দিয়ে বলে)
শ্বাশুড়ী:- আমি জানি আমার বর্তমান ব্যবহারে তুমি অনেকটা চিন্তায় আছো। তবে সত্যি করে বলছি বৌমা এসব সব আমি মন থেকে করতেছি। এতদিন যা করেছি সেই গুলি এখন তোমার কাছে খারাপ মনে হবে কিন্তু যখন তোমার বাচ্চা হবে তখন তুমি বুঝতে পারবে আমি যা করেছি তা তোমার ভালোর জন্য করেছি। যে সংসারে অপচয় হয় সেই সংসার কখনো উন্নত করতে পারে না। নাও এই গুলা তোমার আর এই গুলি সাহেদের বৌয়ের আর সবুজের বৌয়ের। (রুপা কিছু বলেনি গহনার বক্সটা নিয়ে রুমে চলে এসেছে। এখন কিছুদিন রুপার ভালোই যাচ্ছে এর মধ্যে সাহেদের বৌকে উঠিয়ে নিয়ে এসেছে। সাহেদের বউ বড় লোক বাবার এক মাত্র মেয়ে এইটা সাহেদের বৌকে দেখে একদম মনে হচ্ছে না। সংসারের সব কাজ পারে। রুপা নিজেই অবাক এই মেয়ে এত কাজ পারে কি করে? রুপা একদিন মজা করে সাহেদের বৌকে জিজ্ঞেস করে বসে)
রুপা:- আচ্ছা নিলুফা তুমি এত কাজ পারো কি করে? তখন নিলুফা মুচকি হেসে বলে।
নিলুফা:- ভাবি আমি সত্যি বলতে এসব কোনো কাজ পারতাম না। সাহেদ আমাকে আপনার আর শ্বাশুড়ী মায়ের ব্যাপারে সব বলেছেে। আপনি কাজে ভুল করলে মা কেমন করতো। আমি তো এসব শুনে সাহেদকে বারণ করে দিছিলাম। তারপর নিজে নিজে চিন্তা করেছি যদি শ্বাশুড়ী মা কোনো দোষ খুঁজে না পান তাহলে আর ঝগড়া হবে কোথা থেকে। তাই আমি আম্মুর কাছে সব কাজ শিখি নিয়েছিে। আর সাহেদের কাছ থেকে এই বাড়ীর সবার পছন্দ অপছন্দ জেনে নিছি।
রুপা:- যাক ভালো করেছো। তবে মা এখন আর আমার কোনো কাজে ভুল ধরে না। আমার সাথে ঝগড়া করে না।
নিলুফা:- হ্যা তা জানি। আর আপনারা নাকী আলাদা থাকবেন?
রুপা:- হ্যা তোমার ভাই বাসা ভাড়া করে নিয়েছে। আমরা দশদিন পড়েই চলে যাবো।
নিলুফা:- তাঁর মানে আমি আসাতে আপনাদের সমস্যা হচ্ছে তাই না?
রুপা:- আরে না বোকা। আসলে সে অনেক কথা।
নিলুফা:- ভাবি মানুষ মনে করবে নতুন বৌ এসেছে তাই দুই ঝাঁল এক সাথে মিলে থাকতে পারেনা তাই বড় ছেলের বৌকে আলাদা করে দিছে। আমার বিয়ের এক মাসের মাথায় একটা বদনাম আমার উপরে পড়বে। আচ্ছা ভাবি আপনি ভাইয়াকে বলেন না। আপনারা আমাদের সাথেই থাকবেন। (রুপা কিছুটা চুপ থেকে বলে)
রুপা:- ঠিক আছে বলে দেখবো। রুপা রুমে গেছে সৌরভ বসে কাজ করছে। রুপা মনে মনেনে ভাবছে কথাটা বলবো কিনা তখনি সৌরভ বলে।
সৌরভ:- রুপা এখান থেকে শুধু নিজের জিনিস ছাড়া কিছুই নিতে হবে না। আমি ফ্ল্যাটের জন্য সব অর্ডার করে দিছি।
রুপা:- আমি বলিকি আমরা কি সত্যি সত্যি চলে যাবো বাড়ী ছেড়ে? তখনি সৌরভ হাতের কাজ রেখে বলে।
সৌরভ:- রুপা কি হয়ছে তোমার! এমন কথা বলতেছো কেনো? আমি সবকিছু ঠিক করে ফেলছি। এখন সব চিন্তা মাথা থেকে ছেড়ে দিয়ে আলাদা থাকার জন্য চিন্তা করো। আম্মা এখন কিছুদিন ভালো ব্যবহার করছে তাই এসব বলছো! যখন আবার আগের মত বলবে তখন তুমি আমার কাছে অভিযোগ দিতে শুরু করবে। সৌরভ রুপাকে আরো কিছু কথা বলেছে। সব শুনে রুপা রাজি হয়ছে আলাদা থাকবে। দেখতে দেখতে সাহেদের বিয়ের এক মাস শেষ হয়ে গেছে। এদিকে আজকে সৌরভ রুপা বাড়ী ছেড়ে চলে যাবে। সবাই সোফায় বসে আছে মন খারাপ করে। সৌরভ আর রুপা দুইজনে শুধু মাত্র দুইটা ব্যাগ নিয়ে এসেছে। তখন সৌরভের আব্বা বলে।
আব্বা:- সৌরভ তাহলে তোরা আজ সত্যি সত্যি চলে যাচ্ছিস?
সৌরভ:- হ্যা। আম্মা আমরা যাই। আর সাহেদ সবুজ তোরা আম্মা আব্বার খেয়াল রাখিস। রুপা আম্মা আব্বাকে সালাম করে আসো।
রুপা:- হ্যা যাচ্ছ বলে যখনি আম্মার পায়ে হাত দিতে যাবে তখনি আম্মা রুপাকে জড়িয়ে ধরে বলে।
আম্মা:- রুপা আমি তোমার সাথে অন্যায় করেছি। তুমি আমার সাথে থাকতে কি একেবারে ইচ্ছে করছে না?
আমি তোমাকে কোথাও যেতে দিবো না তুমি আমার সাথে থাকবে। (আম্মার কথা শুনে রুপা একদম চুপ হয়ে গেছে। সাথে সৌরভ চেয়ে আছে তখনি আব্বা বলে)
আব্বা:- সৌরভ আমরা যতদিন বেচে আছি ততদিন না হয় এক সাথে থাকি। যখন আমি আর তোর মা মরে যাবো তখন না হয় তোরা আলাদা হয়ে যাস।
সাহেদ:- হ্যা ভাইয়া আব্বা যা বলেছে তাতে কিন্তু মন্দ হয় না।
আম্মা:- সৌরভ আমাকে একটু সুযোগ দে। আমি সবাইকে দেখিয়ে দিবো শ্বাশুড়ী আর বৌদের মধ্যে কেমন সম্পর্ক থাকে।
সৌরভ:- আম্মা আমি সবকিছু ঠিকঠাক করে ফেলছি। আর তাছাড়া এখন সাহেদের বউ এসেছে। আর তাছাড়া রুপা এমনিতেই অনেকটা কষ্ট করে এসেছে আমি ওকে কিছুই দিতে পারিনি।
আম্মা:- রুপা তুমি চুপ করে আছো কেনো? তোমার মা যদি তোমার কাছে এমন ভাবে বলতো তাহলে কি তুমি চলে যেতে পারতে? রুপা এখনো চুপ করে সৌরভের দিকে তাকিয়ে আছে। তখন আব্বা বলে।
আব্বা:- সৌরভ তোর আম্মা গতকাল রাতে অনেক কান্না করেছে। শেষ বারের মত আমাদের কথাটা রাখ বাবা।
সৌরভ:- কিন্তু আব্বা এখন কি করে সম্ভব। আর যদি এমনটা আপনাদের মনে থাকে থাহলে আগে আমাকে বলতেন। আমি এত টাকা খরচ করে সব কিছু রেডি করে ফেলছি।
আম্মা:- আমি এত কিছু বুঝিনা। আমি রুপাকে কোথাও যেতে দিবো না। মা রুপা তুমি আমাকে ছেড়ে যাবে?
রুপা:- মা আপনি যেহেতু এত করে বলছেন। তাহলে আমি আপনাদের সাথেই থাকবো। তখনি সৌরভ বলে।
সৌরভ:- রুপা কি বলছো তুমি?
রুপা:- ঠিক বলছি। মা যেহেতু এত করে বলছে সেহেতু আমরা এই বাড়ীতে থেকে যায়। তখন সৌরভ কোনো কথা না বলে চুপ করে রুমে চলে গেছে রেগে মেগে।
আম্মা:- রুপা তোমাকে আমি সত্যি বুঝতে আর চিনতে ভুল করেছি। আমি তোমাকে তোমার পাপ্য সম্মান দিবো মা।
রুপা:- আচ্ছা মা আমি গিয়ে ওনার রাগ ভাংগায়। রুপা গিয়ে দেখে সৌরভ রেগে মেগে আগুন হয়ে আছে। রুপা কোনো কিছু না ভেবেই সৌরভকে জড়িয়ে ধরে বলে। দেখুন রাগ করে কি হবে বলুন।
সৌরভ:- আমি রাগ করছি না। দুইদিন ভালো যাবে তিনদিনের মাথায় তুমি আবার অভিযোগ করবে তখন কি করবো বলো?
রুপা:- ঠিক আছে আমি আর অভিযোগ করবো না। আর আপনাকে ছেড়ে কোথাও যাবো না। আমার জয়েন পরিবার ভালো লাগে। মা বকা দিলেও এর মাঝে শিখার আছে। আপনি দেখেন মা আর আমাকে বকা ঝকা করবে না।
সৌরভ:- কথা গুলি মনে থাকলে হবে। সৌরভ বেড়িয়ে গেছে। এখন সবাই আবার এক সাথে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেখতে দেখতে মাস দুইয়েক হয়ে গেছে। রুপা তাঁর শ্বাশুড়ীর সাথে কোনো রকম ঝগড়া হয়না বরং এখন দেখে মনে হয় মা মেয়ে ওরা তিনজন। আম্মা এখন সংসারে কোনো কিছু বলে না। সব রুপা আর নিলুফা দুজনে মিলে করে নেই। তবে নিলুফার প্রশংসা করতে হবে। সৌরভ এখন ঠিক মত ব্যবসায় মনোযোগী হয়েছে। একদিন সৌরভের বাবা বলে।
আব্বা:- সৌরভ কি আমার প্ল্যান কাজে দিছো তো?
সৌরভ:- হ্যা বাবা আপনি সত্যি অনেক সুন্দর প্ল্যান করেছেন।
আব্বা:- হ্যা। আমি চিন্তা করে দেখছি তুই যদি আলাদা থাকতে বলিস তাহলে তোর মা রুপাকে আর কোনো যন্ত্রনা দিবে না। আর সেই প্ল্যান করে এখন সেই প্ল্যান কাজে দিছে। তবে সৌরভ সবসময় বৌকে মানিয়ে নিতে না বলে মাঝে মাঝে মাকে কিছু বলতে হয়। সব দোষ বৌদের হয় না কিছু দোষ মায়ের থাকে। আর মাকে রাগের মাথায় না বলে ঠান্ডা মাথায় বসিয়ে সুন্দর করে বলতে হবে। এখন দেখ রুপা আর তোর মায়ের মধ্যে মনে হয় ওরা মা আর মেয়ে।
সৌরভ:- হ্যা বাবা আপনার কথাটা ঠিক। যাক এখন সংসারে তো শান্তি আছে তবে দেখার বিষয় এমন ভাবে কতদিন থাকে। তখনি আব্বা হেসে দিয়ে বলে।
আব্বা:- হ্যা তা ঠিক বলেছিস। তবে তোর মা আর কোনো বৌয়ের সাথে খারাপ আচরন করবে না। এখন একটা বাচ্চা নিয়ে নে দেখবি আরও ভালো হবে তখনি সৌরভ লজ্জা পেয়ে চলে গেছে। এখন বৌ শ্বাশুড়ী ভালোই চলছে তবে একটা কথা কেউ অভিযোগ দিলে সেইটা যাচায় বাচায় করে সিদ্ধান্ত নিলেই সংসারে শান্তি বজায় থাকবে। একজনকে বলবে মানিয়ে নিতে আরেকজনকে কিছুই বলবে না তাহলে অন্তত সংসারে শান্তি থাকবে না। আর সেই সংসার এক সাথে বেশী দিন থাকবে না। এই যাত্রা তো আমি আমার মা বৌকে বুঝিয়ে সুজিয়ে এক সাথে রেখে দিছি এখন বাকী দিন গুলি কেমন যায় সেটা আল্লাহ ভালো জানে।
।।
কিছু কথা:- গল্পটা এখানে শেষ করে দিলাম। ভুল ত্রুটি হয়ে থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আর হ্যা অনেক দিন পরে গল্প লিখেছি তাই ঠিক করে সাজিয়ে উঠতে পারিনি। তবে খুব তাঁড়াতাড়ি নতুন কোনো কাহিনির গল্প নিয়ে হাজির হবো। যারা যারা এতদিন কষ্ট করে গল্পটা পড়েছেন সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আস্সালামু আলাইকু। সবাই ভালো থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
!!
সমাপ্তি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here