#আধারের_মায়াবী_ডাক
#লেখক_তুষার_আহমেদ_কাব্য
#পর্ব_১৪
নাদিয়া চোখ খুলতেই দেখে তানভীর তার মুখ চেপে ধরে আছে আর পাশে মাইশা,তিথী, নীলাদ্রিতা আর একজন স্পেশাল মানুষ বসে আছে। সবাই ঝোপের ভেতর থেকে মাঠের দিকে চেয়ে আছে। নাদিয়া দেখল গাছটার কাছে সেই লোকটা সুতো খোলার চেস্টা করছে।
তখনই নাদিয়া ইশারায় ওকে থামাতে বলে।মাইশা বন্দুক বের করে লোকটার পায়ে গুলি চালায়। লোকটা আতকে উঠে খোড়াতে খোড়াতে কুয়াশার ভেতরে হারিয়ে যায়
তারা দ্রুত ঝোপ থেকে বেরিয়ে আসে।
লোকটাকে খুজে আর পায় না
:তোরা আমাকে এভাবে চেপে ধরলি কেন?(নাদিয়া)
:আমরা তোকে এভাবে না আনলে লোকটা দূর থেকেই পালিয়ে যেতো!(তানভীর)
:তোদের আসতে এতো দেরী কেন? কাল আসার কথা ছিলো(নাদিয়া)
:সরি সিস. আসলে ব্যস্ত…(তিথী)
:হ বুঝলাম(নাদিয়ার চোখ পড়ে স্পেশাল মানুষ টার দিকে) আপু তুমি….
নাদিয়া সবাই কে নাদিয়ে গ্রামে প্রবেশ করে।
বাড়িতে সবাই চিন্তায় মগ্ন হয়ে বসে আছে।তখনই নাদিয়া সবাই কে নিয়ে প্রবেশ করে।
:নাদিয়া তুমি কোথায় ছিলে আর..(তামিম বাকিদের দিকে তাকায়) তোমরা?
এরপরে নাদিয়া সবাই কে সব কিছু খুলে বলে। তামিম তার গার্ডদের পাঠায় গাছের কাছে। শহর থেকে যারা এসেছে তারা নাদিগার বন্ধু আর… একটু পরই জানবেন।
আয়েশা এসে মাইশা কে জড়িয়ে ধরে
:আপুউউ এতো দেরী কেন?(আয়েশা)
:আরে..বাদ দাও,কেমন আছো(মাইশা)
এরপর আয়েশা সবাই কে গ্রামের অবস্থা বুঝিয়ে বলে। তখনই ঘরে কাব্য প্রবেশ করে, সবাই ঝট করে দাড়িয়ে যায়। কেন তা জানেনা, তাও কেন জানি দাঁড়িয়ে যায়।
:কাব্য শহর থেকে এরা আমাদের সাহায্য করতে এসেছে (নাদিয়া)
তানভীর এসে কাব্যের সামনে দাঁড়ায়
:hello I’m tanvir(হাত বাড়িয়ে)
কাব্য একবার হাতের দিকে তাকায় আবার মুখের দিকে তাকায়। তারপর সবাই কে এড়িয়ে ভেতরের দিকে যেতে থাকে। কিন্তু তখনই…
কাব্যের হ্রদস্পন্দন বেড়ে যায়। মনে হচ্ছে চারদিক কেমন শান্ত হয়ে গেছে।কাব্য ঘুরে তাকায়
দরজা দিয়ে প্রবেশ করে সেই স্পেশাল মানুষ… কথা! কিন্তু এই কথা আগের জন না। ও কাব্যের খুব চেনা৷
সবাই কাব্যের দিকে তাকায়। কাব্যের একভাবে কথার দিকে তাকিয়ে আছে।
সবাই একটু অবাক হয়। কারন কাব্য আশার পর কারো দিকে এক পলকের বেশি তাকায়নি কিন্তু কথার দিকে একভাবে তাকিয়ে আছে ..
কথা হাসি মুখে কাব্যের দিকে এগিয়ে আসে। কাব্য এক পা করে পিছিয়ে যায়। কথা এক পা এগোয় আর কাব্য পিছিয়ে যায়।।
সবাই এক ভাবে দেখতে থাকে। কথা এক ভাবে এগিয়ে কাব্যের ঠিক সমানে দাঁড়ায়।
:কেমন আছেন?(কথা)
:হ্যাঁ ভালো(কাব্য মৃদু হেসে)
সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। কাব্য প্রথমবার কারো সাথে হেসে কথা বলল।
কাব্য ঘুরে তার রুমে চলে যায়। কথা তাকিয়ে থাকে তারপর এসে সবার সাথে বসে।
:আপু ভাইয়া তোমার সাথে হেসে…(তারিন)
আয়েশা হেসে উঠে।
:এই তোমরা বসো আমি আসছি!(তানভীর)
তানভীর বেরিয়ে যায়। মাঠের থেকে একটু ফুরে একটা ঝোপের কাছে দাঁড়িয়ে প্রাকৃতিক কাজ সারছে।
হঠাৎ
:এই শুনুন!(দূর থেকে একটা মেয়ের মায়াবী ডাক)
তানভীর তাকায়।দেখল দূরে একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। প্রচন্ড রুপসী, চুল কোমর অব্দি। তানভীর মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে। মেয়েটা হঠাৎ হাতের ইশারায় ডাকছে।তখনই তানভীর একটা মায়ায় জড়িয়ে যায়। কিছু না বুঝেই মেয়েটার দিকে যেতে শুরু করে। মেয়েটা ধীরে ধীরে সেই বনেত ভেতর চলে যায়। তানভীর ও বনের ভেতরে চলে যায়
মোহগ্রস্ত হয়ে তানভীর হাটছে, চারদিকের গাছপালা আর ঝোপঝাড়ে লেগে তানভীর এর হাত পা ছড়ে যেতে থাকে। রক্তাক্ত হয়ে যায় হাত পা।
হঠাৎ তানভীর এর হুশ ফেরে।তখন সে প্রচন্ড ভয় পায়। কারন সে তখন একটা ডোবায় গলা অব্দি পানিতে। তানভীর দ্রুত পাড়ে উঠে গ্রামের দিকে দৌড়াতে শুরু করে। পেছন থেকে একটি হাসির শব্দ ভেসে আসছে। তানভীর গ্রামের ভেতর এসেই হুমড়ি খেয়ে পড়ে
শব্দ শুনে সবাই এসে দেখে তানভীর জ্ঞান হারিয়ে পড়ে আছে। তার সারা গায়ে রক্ত
তানভীর কে রুমে নেয়া হয়
ঘন্টা খানেক পর তার জ্ঞান ফিরে।
ফিরতেই তানভীর সবাইকে সব ঘটনা খুলে বলে।তামিম দ্রুত সেই গাছের কাছে চলে যায়।
হ্যাঁ ঠিক তাই হলো যেটা তামিম ভাবছিলো।
আজ ও কেউ সুতোর এক প্যাচ খুলে দিয়েছে।
কিন্তু এতো পাহারার পর ও কিভাবে?
তামিম গ্রামে ফিরে আসে।
সবাই কিছু সময়ের জন্য চুপসে যায়। তানভীর কে তামিম বলে যেন গ্রামের কেউ এই কথা না জানে।
তাই তানভীর ও কথা টা আড়াল করে।
রাতে…
তামিম বাইরে বসে আছে। কিছুই মাথায় ঢুকছে না।
হঠাৎ
দেখলো দূরে একজন মহিলা খোলা চুলে গ্রামের বাইরের দিকে হেটে যাচ্ছে। তাকে দেখে ঠিক মনে হচ্ছে না। শাড়ির আচল মাটিতে ঘেষে যাচ্ছে।
তামিম উঠে চুপি চুপি পিছু নেয়।
একটু কাছে যেতেই তামিম চমকে উঠে, এতো,,, এতো তারিনের মা…..তিনি এতো রাতে একা কোথায় যাচ্ছেন?
চলবে……