#আবছায়া
#writer::প্রিয়া
১
ছিঃ ছিঃ তোর একটু ও লজ্জা নেই নিজের চাইতে দুই বছরের ছোট একটা ছেলেকে বিয়ে করতে চাইছিস।
-আমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসি।ভালোবেসে যদি আমরা বিয়ে করতে চাই এতে দোষের কি মা।
‘তুই এতোটাই নির্লজ্জ হয়ে গেছিস বিয়ের জন্য মুখে মুখে তর্ক করছিস।জীবন থাকতে ওই ছেলের সাথে তোর বিয়ে দিবো না।
-বিয়ে তোমাদের দিতেই হবে তোমাদের সম্মান রক্ষা করতে।
‘পালিয়ে যাবি যা আমরা বলবো মরে গেছে।
-পালিয়ে যাবো না মা। তবে তোমাদের সম্মান ঠিকই নষ্ট হবে।
‘আর কি নষ্ট করবি তুই।
-মা আমি প্রেগন্যান্ট ।আইজানের বাচ্চা আমার পেটে।
‘কিইই কি বললি তুই।
এতোটা খারাপ কি করে হতে পারলি তুই।তুই একবার তোর বাবার কথা ভাবলি না।তোর বড় দুইটা ভাইয়ের কথা ছোট বোনের কথা। ছিঃ ছিঃ।
মা-মেয়ের তর্কের মধ্যে এতোক্ষণ কেউ কথা বলেনি।
এই কথা শোনার পর ইনায়ার বাবা হুংকার দিয়ে উঠলেন।
-তোকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করেছি কি এইসব নষ্টামি দেখার জন্য।
-২৫বছরের বড় ছেলের সাথে একটা মেয়ের বিয়ে হলে সমস্যা নেই।
কিন্তু মাত্র দু বছরের ছোট একটা ছেলের সাথে প্রেম করেছি বলে কি এমন অপরাধ করেছি।তাতেই সবাই মিলে নষ্টা বানিয়ে দিলে।
বাহ!!
তুমি তো মা আর বাবা তুমি তো আমায় সবচেয়ে বেশি ভালোবাসতে পায়ে ধরি তোমাদের মেনে নাও আমাদের ভালোবাসা। তোমরা সবাই কেনো এরকম করছো কি ক্ষতি হবে আমাদের ভালোবাসাকে মেনে নিলে।
সমাজ কি বলবে সেটাই বড় হলো, আর তোমাদের মেয়ে যে ওই ছেলেকে ছাড়া বাঁচবে সেটা বুঝি কিছু না।
-তোকে সবচেয়ে ভালোবাসি বলেই তোকে এতোদূর লেখাপড়া করিয়েছি।আমার ছেলেদের মাত্র ইন্টার পড়িয়েছি আর তোকে অর্থনীতিতে অনার্স পড়াচ্ছি।
‘জন্ম দিয়েছো লালনপালন করা শিক্ষা দেয়া তোমার দায়িত্ব।
-তুই এতোটা বেয়াদব হয়ে গেছিস।তোকে আর কি বলবো বিয়ের আগেই যা করেছিস ছিঃ।
‘বিয়ে তো করবো দিয়ে দাও বিয়ে তাহলে তো সমাধান হয়ে যায়।
এরমধ্যে ইনায়ার বড় ভাই জানালার পর্দা থেকে রড খুলছে সেটা কেউ দেখেনি।
মুহূর্তে শুরু হয়ে গেলো ইনায়ার উপর আঘাত।কেউ থামাতে পারছে না ইকরাম কে।
একের পর এক আঘাত করেই চলছে ইকরাম।
ইনায়ার বাবা আহমেদ সাহেব কলিজার মেয়ের উপর এতো অত্যাচার সহ্য করতে পারছেন না।
ছেলেকে ফেরাতে ও পারছেন না। ইকরামের বউ, মা সবাই থামাতে না পেরে গিয়ে বসে আছেন।
একেরপর এক আঘাত পেতে পেতে ইনায়া অজ্ঞান হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়ে।
শরীর থেকে ঘাম ঝড়ছে ইকরামের রাগে থরথর করে কাঁপছে।
হাতে থাকা রড মেঝেতে পেলে রুমে চলে যায় ইকরাম।
আহমেদ সাহেব সোফায় বসে পড়েন।সবাই যে যার মতো বসে আছে ইনায়ার পাশে।
এ যেনো একটা লাশ সবাই মিলে পাহারা দিচ্ছে।
কলিংবেল বাজতেই ইকরামের বউ দরজা খুলতে যায়।
ইসহাক এসেছে ইনায়া ছোট ভাইয়া।
-কি হলো ভাবি দরজায় দাঁড়িয়ে আছো ভিতরে যাবো না কি।
‘তুই।
-আমি তো আমি কি ভূত না কি।
-আমি হাতমুখ ধুইয়ে আসছি তাড়াতাড়ি খেতে দাও।
ড্রইংরুমে আসতেই ইসহাক দেখতে ফেলো রক্তভেজা ফ্লোরে পরে আছে ইনায়া পাশে সবাই স্তব্ধ হয়ে বসে আছে।
কারো মুখে কথা নেই কারো যেনো শ্বাস চলছে না।
ইসহাক চিৎকার করে উঠে।
-কি এসব কি, কে মেরেছে ওকে কি হয়েছে।
কেউ কথা বলছে না।
-মা ইনায়ার কি হয়েছে।
‘মরে গেছে।
-পাগলের মতো কি বলছো তোমরা এভাবে কে ওকে আঘাত করেছে।
ইসহাক তাকিয়ে দেখে ইনায়ার হাত নড়ছে।
ইসহাক গিয়েই বোনকে কোলে তুলে নেয়।দরজার কাছে আসতেই পিছন থেকে ইকরাম ডাক দেয়।
-কোথায় যাচ্ছিস।
‘হাসপাতালে।ওকে এভাবে মরে যেতে দিতে পারিনা।
-মরলে ঘরে মরবে মাটিচাপা দিয়ে দিবো। বাইরে গিয়ে লোক জানানোর প্রয়োজন নেই।
‘আমি আমার বোনকে এভাবে মরে যেতে দিবো না।
-ওকে রুমে শুইয়ে দিয়ে আয় ডাক্তার আসছে ফোন করেছি।
ইসহাক আর তর্ক করেনি ইকরামের সাথে।ইনায়াকে ওর রুমে নিয়ে গিয়ে শুইয়ে দিলো।
আহমেদ সাহেব সোজা রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলেন।
ছেলেমেয়ে মানুষ করতে পারেননি।যদি মানুষের মতো মানুষ করতে পারতেন তাহলে চোখের সামনে আজ এতোকিছু দেখতে হতো না।
আহমেদ সাহেবের চারজন ছেলেমেয়ে দুই ছেলের পর দুই মেয়ের জন্ম হয়।
ছেলে দুটো কে ইন্টার পর্যন্ত পড়িয়ে ব্যবসার কাজে লাগিয়ে দিয়েছেন।
আহমেদ সাহেব নিজেও মৎস,গরুর ফার্ম দেখাশুনা করেন।
বড় ছেলে ইকরাম শান্তশিষ্ট,ভদ্র সহজে রাগে না।তবে রেগে গেলে থামানো কষ্টকর।
সফল ব্যবসায়ী অল্প বয়সে ব্যবসায় অনেক সুনাম অর্জন করেছে। বিয়ে করেছে অল্প কিছুদিন হলো।
আর ইসহাক ও ছোটখাটো ব্যবসা করে।
ইনায়া অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ে অর্থনীতি বিভাগ।
আনায়া ইন্টার দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে।
সচ্ছল পরিবার ওদের সুখের কোনো কমতি ছিলোনা।
পরিবারে মধ্যমণি ইনায়া, মা মুখে তুলে খাইয়ে না দিলে খাবেই না।
বাচ্চাদের মতো স্বভাব হঠাৎ করেই সেই ইনায়া পাল্টে গেলো।
প্রেমের রঙে নিজেকে রাঙ্গিয়ে নিজেই নিজের অস্তিত্ব থেকে বিলীন হয়ে গেলো।
ডাক্তার এসে ইনায়াকে দেখছে কোনো জায়গা ফেটে গেছে আবার কোনো জায়গায় রক্ত গুলো জমাট বেঁধে আছে।
-এভাবে কি কেউ কাউকে মারে ইকরাম।
‘মাথা ঠিক ছিলো না বুঝতে পারিনি নিয়াজ।
ডাক্তার নিয়াজ হচ্ছে ইকরামের বন্ধু।
-জল গরম করে রক্ত গুলো মুছিয়ে দিতে বল।
আমি ওষুধ দিয়ে দিচ্ছি। ভাত খাইয়ে ওষুধ খাইয়ে দিস।
ইকরাম শোন।
-বল।
‘ওকে আর মারিস না রে।
-কেনো ভালোবাসিস ওকে।ওর মতো মেয়ে তোর ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য না।
‘যোগ্য দেখে কি ভালোবাসা হয়।ওকে আইজানের কাছে বিয়ে দিয়ে দে।মেয়েটা ভালো থাকুক।
নিয়াজকে বুকে জড়িয়ে ধরলো ইকরাম।
নিয়াজ বড্ড ভালোবাসে ইনায়া কে।
*জ্ঞান ফিরলে ও ইনায়া কিচ্ছু খায়নি।কান্না ও করছে না শুধু বসে আছে।
*আইজান কে মেনে না নেয়ার পিছনে শুধু বয়স দায়ী না সবার চোখে আইজান বখাটে।
রাত হয়ে গেছে ইনায়া কিছুই খায়নি।
ফোনের রিংটোন বেজেই যাচ্ছে ইনায়া ফোন ধরছে না।
চার পাঁচবার রিং বেজে কেটে যায়।এবার ফোন হাতে নিয়ে ফোন বন্ধ করে দিলো ইনায়া।
ফোন বন্ধ পেয়ে আইজান পাগল হয়ে যাচ্ছে।
অনেকক্ষণ পর এবার ফোন দিলো আনায়া কে।ও আইজানের নাম্বার দেখে ফোন ধরছে না।
আইজান অপারগ হয়ে মেসেজ দিলো আনায়া কে।
-যদি ফোন রিসিভ না করো আমি এই মুহূর্তে তোমাদের বাসায় আসছি।
আনায়া বেশ ভালো করে জানে আইজান সত্যি সত্যি চলে আসবে তাই ফোন রিসিভ করলো।
-আনায়া তোমার আপু কই।
‘ঘরে।
-আমার ফোন রিসিভ করছে না কেনো।
‘হয়তো ঘুমে।
-বিশ্বাস করিনা এক্ষুণি ফোন দাও ইনায়া কে।
‘পারবো না।আমি আপনার কথার চাকরানী না।
-আমি জানি ইনায়া ভালো নেই।
‘হ্যাঁ ভালো নেই নেই ভালো শুধুমাত্র আপনার জন্য।
কান্না করতে করতে আনায়া সব বলে আইজান কে।
-বাসার সবাই কি ঘুমিয়ে গেছে।
‘হ্যাঁ।
-দরজা খুলে দাও আমি ইনায়া কে দেখবো।
‘আপনি কি পাগল এখন আপনি বাসায় আসলে কেউ দেখলে কি কেলেঙ্কারি হবে বুঝতে পারছেন।
-বুঝতে চাই না। তুমি যদি আমায় ভিতরে আসতে সাহায্য না করো।
আমি কাল সকালে তোমার বড় ভাই ইকরাম কে খু করে ফেলবো।আমার ইনায়ার শরীরের দেয়া প্রতিটা আঘাত সুদেআসলে তুলে নিবো।
-আপনি কি পাগল।
‘হ্যাঁ আমি পাগল।ইনায়ার জন্য পুরো পৃথিবী ধ্বংস করে দিবো।
-বোঝার চেষ্টা করুন এখন আসলে।
‘১৫মিনিট ঘড়ির কাটা ধরে ১৫মিনিট পর দরজা খুলে দিবে।
-হ্যালো শুনোন।
আইজান ফোন কেটে দিলো।আনায়া মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে কি হবে এবার।
চলবে।
আবছায়া
writer::প্রিয়া
২
ঘড়িতে রাত দুটো বাজে আনায়া ভয়ে ভয়ে ড্রইংরুমে বসে আছে।
ফোনের টোন বাজতেই দরজা খুলে দিলো আনায়া।
(ঘরে ঢুকতে গিয়ে আইজান বললো।
-গুড গার্ল এবার আমাকে ইনায়ার রুমে নিয়ে চলো।
‘আস্তে আস্তে পা ফেলে আনায়া আইজান চলে যায় ইনায়ার রুমে।
গুটিসুটি মেরে খাটের এক কোণে শুইয়ে আছে ইনায়া।
চুলগুলো এলোমেলো হয়ে আছে চোখ ফুলে গেছে হাতে গলায় রক্তজমাট বেঁধে আছে।
এমন দৃশ্য দেখে আইজানের চোখ রক্তবর্ণ হয়ে গেলো।
-এইভাবে কেউ কাউকে মারে। ওকে মেরে ফেলতে চাইছো তোমরা ওকে মেরে ফেলার চাইতে আমার হাতে তুলে দিলে কি সমস্যা।
‘আস্তে কথা বলুন।কেউ শুনলে কেলেঙ্কারি হয়ে যাবে।
-আমি কাউকে ভয় পাইনা।ডাকো সবাইকে আজ সবকিছুর সমাধান হোক।
‘প্লিজ আপনি আপুকে দেখছেন এবার যান।
-খাবার নিয়ে আসো।
‘কি!
-খাবার নিয়ে আসো (দাঁত চেপে)
আনায়া আর কিছু না বলে রান্নাঘরে চলে যায়।
আইজান গিয়ে ইনায়ার পাশে বসে মাথায় হাত ভুলিয়ে দিচ্ছে।
ইনায়ার দুই হাত মুঠো করে চুমু দিতে গিয়ে ওর চোখের জল ইনায়ার হাতে পরে।
ইনায়া ঘুম ঘুম চোখে তাকায় আইজান কে দেখে লাফিয়ে উঠে।
বাচ্চাদের মতো কান্না করতে করতে নালিশ করে।
-আইজান দেখো না বড় ভাইয়া কত মেরেছে আমায়।আমার পুরো শরীর ব্যথা করছে আইজান।
ইনায়া কে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরলো আইজান।
‘কেঁদো না পাগলি আমি তোমায় এই জাহান্নাম থেকে নিয়ে যাবো।
আনায়া খাবারের প্লেট নিয়ে ঘরে ঢুকে।আইজান ইনায়া কে ছেড়ে একটু দূরে সড়ে বসে।
-আইজান তুমি আসলে কি করে।
‘আনায়া হেল্প করেছে।
-আনায়া তুই।
‘হ্যাঁ আমি হেল্প করেছি যাতে নতুন কোনো অশান্তি না হয়।
-আনায়া তুমি বাইরে যাও আমি ওকে খাইয়ে দিচ্ছি।
আনায়া রাগী দৃষ্টি নিয়ে বেড়িয়ে গেলো।
-তোমার এভাবে আসা ঠিক হয়নি আইজান।কেউ দেখলে আনায়া কে মেরে ফেলবে।
‘তোমরা কি ডাকাত পরিবার কথায় কথায় মারামারি।
-আমার বড় ভাইয়া খুব ভালো আর শান্ত কিন্তু আজ কেনো এতো রাগ করলেন।
‘তুমি কি উল্টোপাল্টা কিছু বলেছো।
মাথা চুলকাতে চুলকাতে ইনায়া হ্যাঁ বুঝালো।
-কি বলেছো তুমি।
‘আমি না আসলে আমি রাগের মাথায় সবাইকে রাজী করানোর জন্য বলে দিয়েছি আমি প্রেগন্যান্ট। তোমার বাচ্চা আমার পেটে।
এই কথা শুনে আইজান কাশতে শুরু করলো।সাথেসাথে ইনায়া ওর মুখ চেপে ধরলো।
-কি করছো এতো জোড়ে কাশতেছো কেনো।
‘এই মেয়ে বয়সে তো আমার সিনিয়র বুদ্ধিতে এতো কাঁচা কেনো।
-তুমি ও আমায় সিনিয়র বলে খোঁটা দিচ্ছো।
‘কি বোকার মতো কান্ড করলে বলতো।
এখন পর্যন্ত একটা কিস করতে দিলে না আর সেই তুমি সোজা বাচ্চা পর্যন্ত চলে গেলে।
ইনায়া লজ্জায় মাথানিচু করে আছে।
-হয়ছে এবার হা করুন খাইয়ে আমাকে যেতে হবে।
‘চলে যাবে।
-তো থাকতে দিবে না কি।
-ধ্যাত ফাজিল ছেলে।
ইনায়া হা করে আইজান নিজ হাতে ইনায়া কে খাইয়ে দেয়।
খাওয়া শেষ হতেই নিজের হাত এগিয়ে দেয়।
আইজানের শার্টের হাতায় মুখ মুছে ইনায়া।এটা ও প্রতিবার করে।
আনায়া তখন ওদের রুমে আসে।
-আপু কি দরকার ছিলো এই মিথ্যা নাটকের। এতো আঘাত পেয়ে শান্তি লাগছে।
‘তুই শুনে নিয়েছিস।
-কেনো যে এসব করতে গেলি তোর জন্য আমার আফসোস হচ্ছে।
‘এই যে শ্যালিকা আমার বউকে আর কথা শুনাতে হবে না।
মলম থাকলে ক্ষত স্থানে লাগিয়ে দাও।
-নিজেই লাগিয়ে দেন। মায়ের চাইতে তো মাসীর দরদ বেশী।
‘ওলে বাবু আমার শ্যালিকা রাগ করছে দেখি।
দাও আমিই লাগিয়ে দিচ্ছি।
-না না এই আইজান কি বলছো আমি লাগিয়ে নিতে পারবো।
আনায়া-থাক আর ড্রামা করতে হবে না আমি লাগিয়ে দিবো।এবার আপনি যান।
-থেকে যাই না।
হু হু করে হেসে উঠলো আইজান।আনায়া রাগী চোখে তাকালো।
আইজান আনায়ার রাগ দেখে আবার জোড়ে হাসতে লাগলো।
ইনায়া আইজানকে চিমটি দিলো।
-হাসছো কেনো উফফ জ্বালিয়ে মারলে।
আইজান চুল ঠিক করতে করতে আনায়াকে ইশারা করে বাইরে যেতে বললো।
-উফফ কি শুরু করলে তোমরা আপু এই লোকটাকে যেতে বল।
‘এভাবে বলছিস কেনো।ও বয়সে তোর বড়।
রাগ করে আবার আনায়া আবার বাইরে চলে গেলো।
আইজান ইনায়ার কপালে চুমু দিয়ে সাইড হাগ করে।
-যতদিন পর্যন্ত এই বাড়িতে আছো প্লিজ নিজের খেয়াল রেখো আর সাবধানে থেকো।আমার কাছে নিয়ে যাওয়ার পর আর কিছুই করতে হবে না তোমার।তখন তোমাকে ভালো রাখার দায়িত্ব আমার।
‘হুম।
-শুধু হুম আর যদি উল্টো পাল্টা কিছু করো তখন কিন্তু খুব খারাপ হয়ে যাবে।
আইজান ফিরে যাওয়ার জন্য দরজার কাছে যেতেই ইনায়া ডাক দিলো।
-আইজান।
‘বলো।
-আই লাভ ইউ।
‘আই লাভ ইউ টু পাগলি।
দরজা খুলে বাইরে এসে দেখে আনায়া দাঁড়িয়ে আছে।
-সরি তোমাকে কষ্ট দেয়ার জন্য।
‘আপনি কি সত্যি কি আপুকে এতোটাই ভালোবাসেন যতোটা দেখাচ্ছেন।
-তার চাইতে অনেকগুণ বেশী ভালোবাসি যা দেখানো যায় না।
আনায়া আর কিছু বললো না।আইজান ঠোঁটের কোণে মুচকি হাসি ফুটিয়ে বেড়িয়ে গেলো।
**ইনায়া খাটে বসে বসে ভাবছে আইজানের সাথে প্রথম দেখা হওয়ার দিনের কথা।
ইনায়া তখন কানে হ্যাডফোন লাগিয়ে খোলা চুলে ছাদের রেলিং এর উপর বসে বসে গান শুনছিলো।
রাস্তা থেকে একটা ছেলে বারবার চিৎকার করে ডাকছিলো।
কিন্তু ইনায়া শুনতে পায়নি।
তখনি ছেলেটা নিচ থেকে ঢিল মারলো। ইনায়া রাগে হ্যাডফোন খুলে নিচের দিকে তাকালো।
একটা প্রাইভেট কারে হেলান দিয়ে একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে।
-এই ছেলে ঢিল মারলে কেনো অসভ্য ছেলে।
‘এই সাইকো মেয়ে মরার ইচ্ছে হয়ছে না কি এভাবে রেলিং এর উপর বসে আছো।
-আমার বাসার ছাদ আমার ছাদের রেলিং বসে থাকি ঘুমিয়ে থাকি আপনার কি।
‘এই মেয়ে নিচে আসো তাড়াতাড়ি আসো।
দাঁড়া ফাজিল ছেলে ভাইয়াদের দিয়ে তোর হাড় গুড়ো করবো।
ইনায়া দ্রুত ছাদ থেকে নেমে বাসার গেইট খুলে বাইরে যায়।
ইনায়া সামনে গিয়ে দেখে অসম্ভব সুন্দর একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে।
৫.৯ ইঞ্চি লম্বা চুলগুলো স্পাইক করা দেখে ক্রাশ খাওয়ার মতো।
-আপনি আমায় ঢিল মারলেন কেনো।
‘এভাবে কেউ বসে একটু বাতাস দিলেই তো পরে যেতেন।
-তো আপনার কি।
‘এতো সুন্দর একটা মেয়ে মারা গেলে জাতির ক্ষতি হয়ে যাবে না।
-আপনি চরম অসভ্য।
‘আপনি কিন্তু চরম সুন্দরী।
খোলা মেঘের মতো চুল, আঁকাবাঁকা দাঁত,থুতনিতে টোল পড়ে।একটা মেয়ের মধ্যে এতো সৌন্দর্য থাকতে পারে আপনাকে না দেখলে জানতাম না।
নিজের রূপের এতো প্রশংসা শুনে কিছুটা লজ্জা পায় ইনায়া।
তা ও মুখ কালো ভাইয়াদের ডাকতে গিয়ে ডাকতে পারলো না।
মায়া হলো ছেলেটার জন্য।
মুখ বেঁকিয়ে চলে আসছিলো পিছন থেকে ছেলেটা ডাক দিলো।
-এই যে মিস নাম কি জানতে পারি।
‘অসভ্য।
-ভালো নাম।
‘খরগোশ।
-নামের মতোই মিষ্টি আপনি।
‘ও হ্যালো আমার নাম ইনায়া।
-এই না বললেন খরগোশ।
‘আপনাকে বলেছি খরগোশ।
-মাই নেইম ইজ আইজান।
‘আমি জানতে চাইছি ধ্যাত পাগল না কি।
চলবে।