আবছায়া
writer::প্রিয়া
৩৫
হাসপাতালের বেডে শুয়ে ব্যথায় কাতরাচ্ছে অরিত্রি।আচমকা এক্সিডেন্টে সবকিছু এলোমেলো করে দিলো।চোখ দিয়ে অনবরত জল ঝরছে কি জবাব দিবে আবেগকে। বাচ্চা হওয়ার কথা শুনে আবেগ কত খুশি ছিলো।
শহর ছেড়ে অনেকদূরে চলে যাওয়ায় আসতে প্রায় ঘন্টা লেগে গেছে আবেগের।
হসপিটালে এসে ছুটে চলে গেলো তিন তলায় কেবিনের বাইরে বসে আছেন আবেগের মা-বাবা।
-অরিত্রি কেমন আছে এখন মা ও ঠিক আছে তো।
-কেবিনে যা বাবা মেয়েটার এখন তোর সাপোর্ট প্রয়োজন।
আবেগ কেবিনে ঢুকে দেখে একপাশে হেলান দিয়ে শুইয়ে আছে আরু মাথায় ব্যান্ডেজ করা।
শরীরে আর কোন ব্যান্ডেজ নেই দেখে অনেকটা টেনশন মুক্ত হয় আবেগ।
অরিত্রির পাশে চেয়ার টেনে বসে ওর মাথায় হাত রাখে আবেগ।
অরিত্রির এ পাশ ফিরে আবেগকে দেখে কান্নায় ভেঙ্গে পরে।
-কাঁদছো কেনো পাগলি কিচ্ছু হয়নি তোমার আমি এসে গেছি সব ঠিক হয়ে যাবে।
অরিত্রি উঠে আবেগকে জড়িয়ে চিৎকার করে কাঁদে।
‘আমি পারিনি আবেগ আমি পারিনি শেষ রক্ষা করতে আমি পারিনি।
অরিত্রি আবেগের বুকেই অজ্ঞান হিয়ে যায়।
আবেগ ও শুইয়ে ডাক্তারকে ডাকে।
-উনাকে বেশি উত্তেজিত হতে দিবেন না। জানেনই তো একটা মেয়ের জন্য কত সুখের হয় বাচ্চা হওয়ার খবর। আবার সেই মেয়ের জন্য কত নির্মম হয় বাচ্চা নষ্ট হওয়ার খবর।
‘ডাক্তার কি বলছেন আমার বাচ্চা।
-সরি মিঃ বাচ্চা মিস ক্যারেজ হয়ে গেছে।উনাকে ঘুমের ইঞ্জেকশন দেয়া হয়ছে কেউ বিরক্ত করবেন না
ডাক্তার চলে যেতেই আবেগের মা বাবা ছেলের মাথায় হাত ভুলিয়ে দেন।
-চিন্তা করিস না বাবা সব আল্লাহর ইচ্ছে। এক্সিডেন্টে মেয়েটার কোনো দোষ নেই।আল্লাহর হুকুম হলে বাচ্চা আবার হবে।
আবেগ বেডের পাশে বসে অরিত্রি র মাথা নিজের কোলে তুলে নেয়।ওর চুলে হাত ভুলিয়ে দিতে থাকে।
কালকে রাতের কথা ভাবতে থাকে ইনায়ার বাচ্চাটার কথা। গুটিগুটি পা দিয়ে ওর পেটে আঘাতের কথা।
কোমল হাত দিয়ে ওর হাত জড়িয়ে ধরার কথা।কতশত চুমু দিয়েছিলো বাচ্চাটাকে।
সবকিছু ভাবতে ভাবতে ওর চোখ থেকে দু ফোঁটা অশ্রু অরিত্রির গালে পরলো।
অরিত্রির গাল থেকে জলগুলো মুছে ওর কপালে গালে চুমু দিলো।
*সন্ধ্যের কিছুক্ষণ আগে ইনায়াদের বাড়ির কাছে একটা কালো প্রাইভেট কার এসে থামলো।
ইনায়ার ফুফি ছুটে ইনায়ার কাছে গেলেন।
-ইনায়া ওই ছেলেটা আসছে।
‘কোন ছেলে ফুফু।
-যে ছেলে আমাকে থাকতে দিয়েছে।আমাকে মা বলে ডাকে।
‘আমাকে এখানে দেখলে উনি কিছু মনে করবেন না তো।
‘আরে দূর কি মনে করবে ছেলেটা বড্ড ভালো।
ইনায়া অন্যরুমে গিয়ে বসে আছে।ছেলেটা এসেই ডাকতে শুরু করে দিলো।
মা ও মা কই তুমি।
ইনায়ার ফুফু ছুটে গিয়ে ছেলেটাকে জড়িয়ে ধরলেন।
এতোদিন পর আসলি বাবা।
-কষ্টে ছিলাম মা তুমি তো জানো আমার কষ্টের কথা।
‘বাদ দে বাবা তোর জন্য অন্য ভালো মেয়ে নিশ্চয় আসবে।
-মা খেতে দাও তাড়াতাড়ি।
‘আমি আজ রান্না করিনি বাবা টাকা পায়নি তো।
-আমি তো তোমাকে আগেই বলেছি মা প্রতিমাসের বাজার করে দিবো।তুমি কেনো শুনোনা আমার কথা।
-নিজের ছেলেই জায়গা দিলো তার উপর তুই পরের ছেলে হয়ে ও যা করছিস বাবা।
‘আমি পরের ছেলে ঠিক আছে আমি চলে যাচ্ছি।
-আরে পাগল ছেলে আয়।
‘দাঁড়াও গাড়ি থেকে খাবার নিয়ে আসি।
ফুফুর সাথে অচেনা ছেলেটার এতো ভালোবাসা দেখে ইনায়া বড্ড অবাক হয়। যেখানে নিজের ছেলে তাড়িয়ে দেয় সেখানে অন্যকারো ছেলে বুকে আশ্রয় দেয়।
-মা তাড়াতাড়ি বাজার নাও রাতে খেয়ে যাবো।আর এখানে কিছু ফলমূল আছে কেটে দাও খিদে লাগছে।
-তুই বস আমি এক্ষুনি কেটে দিচ্ছি।
-মা এই বাচ্চাটা কার।
-আমার মতো আরেক হতভাগি আমার ভাইঝি।
‘কি হয়েছে।
-ইনায়ার ফুফু সবকিছু খুলে বলেন ছেলেটাকে।
‘মা উনাকে ডাক দাও তো।
ইনায়ার ফুফু গিয়ে ইনায়াকে নিয়ে আসেন। ছেলেটা তখন মারজানের সাথে খেলছে।
-দীপক এই দেখ আমার ভাইঝি ইনায়া।
দীপক পেছন ফিরে তাকিয়ে থমকে যায় উঠে দাঁড়িয়ে ছোট্র করে শুধু বলে।
-ইনায়া তুমি।
দীপককে দেখে চমকে উঠে ইনায়া।অপমানবোধ হচ্ছে ওর স্বামীর কাছ থেকে অবহেলিত নারীরা বুঝে অন্যের সামনে দাঁড়ানো কতোটা লজ্জার।
মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে ইনায়া।
-দীপক,ইনায়া তোরা চিনিস দুজন দু’জনকে।
‘হ্যাঁ মা ইনায়া তো আমার জুনিয়র ছিলো কলেজে কত শান্ত ভদ্র একটা মেয়ে ছিলো।আইজান ছেলে যে এতো শয়তান কোনোদিন বুঝতেই পারিনি।
ইনায়া তুমি লজ্জা পাচ্ছো কেনো আমি তোমার ভাইয়ের মতো।লজ্জা তো আইজানের মতো ছেলেরা পাবে আর তোমার মেয়েরা মাথা উঁচু করে বাঁচবে।
-কি করে বাঁচবো কত আদরে বড় হয়েছিলাম পরিবারে। কপালে বুঝি এতোকিছু ছিলো।
‘তোমাকে বাঁচতে হবে তোমার ছেলের জন্য।
দীপক অনেকক্ষণ কথা বলে ইনায়ার সাথে দুজনেই বেশ ঘনিষ্ঠ হয়।
মারজানকে দীপকের কাছে রেখে ফুফু আর ইনায়া রান্না করতে যায়।
রাতে খাওয়া শেষ করে দীপক চলে যাওয়ার আগে একটা কার্ড দিয়ে যায়।
-যোগাযোগ করো এই ঠিকানায় চাকরির ব্যবস্থা করে দিবো।
‘আপনার মতো একজন ভালো মানুষকে কেনো অরিত্রি বারবার রিজেক্ট করেছিলো।
-হয়তো ওর চোখে আমার চাইতে আবেগ বেশি ভালো ছিলো।
ওরা সুখে আছে এতেই আমি খুশি।
-অরিত্রির বাচ্চা হবে।
‘খুশির খবর। আমি যাই ইনায়া আবার আসবো অনেক কথা হবে।বাবা অপেক্ষা করবেন।
-আপনার মা নেই।
‘এক মা ছেড়ে চলে গেছেন ওপারে এই যে আরেক মা পেয়েছি।
**ইনায়া ওর বাচ্চাটাকে নিয়ে কাঁদছে একা একা রাস্তায় হাটছে।একি ইনায়া অন্ধকারে মিলিয়ে যাচ্ছে ওর বাচ্চাকে নিয়ে সাথে আরেকটা বাচ্চা অরিত্রি আটকানোর চেষ্টা করে পারেনি।
চিৎকার করে উঠে অরিত্রি ঘামে পুরো শরীর ভিজে একাকার।
আবেগ লাইট অন করে অরিত্রি কে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে।
-কি হয়েছে আরু দুঃস্বপ্ন দেখেছিলে।
‘আমার বাচ্চা আবেগ আমার বাচ্চা ছিলো এইটা।
-আরু প্লিজ শান্ত হও।বাচ্চা আবার হবে আমাদের।
‘আমি পাপ করেছি আবেগ আমি পাপ করেছ তাই আমি শাস্তি পাচ্ছি।
-কিসের পাপ আরু তোমার মতো মেয়ে পাপ করতে পারেনা।
‘পারে আবেগ নিজের স্বার্থের জন্য পারে।
-আচ্ছা শান্ত হয়ে এখন ঘুমাও।
‘আবেগ সত্যি জানলে তুমি আমায় মাফ করবে তো।আমাকে দূরে টেলে দিবে না তো আমাকে ভালোবাসবে তো আবেগ।
-কি বলছো কিসের সত্যি আরু।
‘আবেগ আমি যা করেছি তোমাকে পাবার জন্য আবেগ আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না আবেগ। তুমি আমাকে ছেড়ে যেওনা আমি মরে যাবো আবেগ আমি মরে যাবো।
অরিত্রি আবার ও সেন্সলেস হয়ে গেলো।
**আইজানের জ্ঞান ফিরে চারিদিকে তাকাচ্ছে।
-কাকে খুঁজছিস আইজান এই যে আমি তোর মা দেখ তোর বাবা।
-ইনয়া কোথায় মা।
-ওই মেয়ের কথা তুই কেনো বলছিস তোকে মেরে মেয়েটা পালিয়ে গেছে।
পালিয়ে গেছে শুনে আইজান লাফ দিয়ে উঠে বসে।
-কোথায় গেছে।
‘কোন জাহান্নামে গেছে আমি জানিনা তোকে খুন করতে চেয়েছিলো ওই খুনি মেয়েটা।
-মা ফোন দাও তো।
উনি নিজের ফোন এগিয়ে দিতেই চারিদিকে ফোন দিয়ে আইজান ইনায়াকে খুঁজে দেয়ার কথা বললো।
আবছায়া
writer::প্রিয়া
৩৬
দু দিন অনেক খোঁজাখুঁজি করার পর কোথাও ইনায়াকে পাওয়া গেলো না।
আইজান নিজে বের হতে পারছেনা ওর পা ভাঙ্গার জন্য।চারিদিকে লোক লাগিয়েছে ইনায়াকে যে করেই হোক খুঁজে বের করতে হবে।
*মারজানকে ফুফুর কাছে রেখে ইনায়া দীপকের অফিসে গেলো।
ইনায়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা খুবই কম ইন্টার পাস অনার্স শেষ করতে পারেনি সেই হিসাবে দীপকের অফিসের হিসাবরক্ষক পোস্টে ওর চাকরির ব্যবস্থা করে দেয় দীপক।
বেতন ৯০০০টাকা এতেই অনেক তিনজনের সংসার চলে যাবে।
দীপক ওকে বললো কাল থেকে জয়েন করার জন্য।অফিস থেকে বাসায় ফিরে আসে ইনায়া চাকরি ছোট কিন্তু চলার বুঝ তো হয়েছে এতেই খুশি ইনায়া ওর ফুফু।
প্রতিদিন অফিস যাওয়া আসা ভালোই চলছে ইনায়ার দিনকাল। অফিসে থাকাকালীন ওর ফুফু মারজানকে নিয়ে অফিসের পাশের একটা রুমে বসে থাকেন দীপক ব্যবস্থা করে দিয়েছে।খাবার সময় ইনায়া বাচ্চাটাকে গিয়ে খাইয়ে দেয়।
**অরিত্রির সুস্থ হতে ১সপ্তাহ কেটে গেলো এই কয়েকদিন আবেগ ওর কাছেই ছিলো।১সপ্তাহ পর আবেগ অফিসে যায়।ফেরার পথে ইনায়াকে খুঁজে শহরের অলিগলি কোথাও নেই ইনায়া।
আবেগ কি জানি ভেবে বাসায় গেলো প্রতিটি রুম তন্নতন্ন করে খুঁজছে যাওয়ার সময় ইনায়া কোনো চিঠি রেখে গেছে কিনা দেখার জন্য।
তখনি ওর চোখ গেলো রুমের সি,সি ক্যামেরার দিকে।
এক সপ্তাহ আগের ফুটেজ খুঁজতে খুঁজতে পেয়ে যায়।সব দেখে আবেগের চোখ ছানাবড়া স্পষ্ট দেখা যায় অরিত্রি আর ইনায়া কথা বলছে অরিত্রির চোখে মুখে আগুন।
কি কথা হচ্ছে সেটা বুঝা যাচ্ছে না।
অরিত্রি বেড়িয়ে যাওয়ার পরই ইনায়া চলে যায় তারমানে অরিত্রি বাধ্য করেছে ইনায়াকে চলে যেতে।
রেগেমেগে আবেগ দারোয়ানকে চড় মারে সেদিন কেনো তুমি বলোনি অরিত্রি এসেছিলো।
-স্যার স্যার মারবেন না আমি গরীব মানুষ ম্যাডাম আমাকে টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ রাখতে বলছিলেন।
দারোয়ানকে মেরে কোনো লাভ নেই যা বোঝাপড়ার সব অরিত্রির সাথেই করতে হবে।
পাগলের মতো গাড়ি চালিয়ে আবেগ বাসায় আসে চোখমুখ ওর লাল হয়ে গেছে।
বাসায় ফেরার সাথে-সাথেই অরিত্রি ছুটে আসে নিজের ওড়নাটা দিয়ে আবেগের মুখ মোচাতে চাইলে আবেগ ওর হাত ধরে টানতে টানতে রুমে চলে যায়।
আবেগের মা-বাবা দুজনই অবাক হয়ে যায় আবেগের রাগ দেখে।
রুমে নিয়ে ধাক্কা দিয়ে ওকে খাটের উপর ফেলে দেয় আবেগ। দরজা আটকিয়ে অরিত্রির সামনে যায়।
-আবেগ কি হয়েছে তোমার এমন করছো কেনো ঠিক আছো তুমি।
‘আমি এখন পুরো ঠিক আছি তুই আমার সাথে এমন করলি কেনো বল কেনো করলি।
অরিত্রি ভয়ে কেঁপে উঠে সত্যির মুখোমুখি দাঁড়ানোর ক্ষমতা ওর নেই।
মাথা নিচু করে ফেলে।
-অরিত্রি তুই সেদিন ওই বাসায় কেনো গিয়েছিলি বল আর তোর সাথে ইনায়ার কি কথা হয়েছে।
‘আমি কই কোথায় গিয়েছিলাম।
-আমি নিজের চোখে দেখেছি তুই ওই বাসায় গিয়েছিলি এবং তুই বেড়িয়ে যাওয়ার পরই ইনায়া বাসা ছেড়ে চলে যায়।
‘আমি তো ইনায়াকে আমার সাথে এই বাসায় আনতে গিয়েছিলাম ।
-তুই মিথ্যে বলছিস তুই ইনায়াকে বাসা ছেড়ে যেতে বলেছিস দারোয়ানকে টাকা দিয়েছিস যাতে দারোয়ান আমাকে কিছু না বলে।
‘তুমি কি আমাকে বিশ্বাস করো না আবেগ।
-তোকে বিশ্বাস করবো তুই আমার সাথে প্রতারণা করলি।ইনায়া তো তোর বেস্টফ্রেন্ড ছিলো তোকে নিজের বোনের মতো ভালোবাসতে।
কি এমন হলো যে অসহায় মেয়েটাকে তুই এইভাবে বের করে দিলি বল।
-অরিত্রি নিশ্চুপ কথা বলছে না।
-অরিত্রি আমাকে খারাপ হতে বাধ্য করিস না বল তুই ইনায়ার সাথে এমন করলি কেনো।
‘ভয়ে।
‘কিসের ভয় কিসের ভয় তোর।
-তোমাকে হারানোর ভয় আমি ভেবেছিলাম তুমি যদি আবার ইনায়ার প্রতি দূর্বল হয়ে যাও তখন আমার কি হবে।
‘তোর কি আমাকে দুশ্চরিত্র,লম্পট মনে হয় একজন অসহায় মেয়ের অসহায়ত্বের সুযোগ নিবো আমি।
-তুমি তো ওকে ভালোবাসতে আবেগ আমার একমুহূর্তের জন্য মনে হয়েছিলো তোমাকে হারিয়ে ফেলবো।
‘এই তোর ভালোবাসা এই তোর বিশ্বাস ছিঃ।
অরিত্রি আবেগের পায়ের ধরে বসে পরে।
-আমাকে ক্ষমা করে দাও আবেগ প্লিজ ক্ষমা করে দাও।
আবেগ অরিত্রির বাহু ধরে টেনে উপরে তুলে।
-তুই প্রথম থেকে চাইতিস না আমার ইনায়ার সম্পর্ক না হোক।
‘না আবেগ আমি এটা চাইনি।
-তুই এটাই চাইতি না হলে আমি সেদিন ইনায়াকে চিঠি লিখেছিলাম সেটা আইজানের নামে ইনায়ার কাছে গেলো কি করে।আমি ওকে বলতে চেয়েছিলাম তুই সেদিন আটকে দিয়েছিলি।আমি ইনায়াকে রক্ত দিলাম ইনায়া জানলো আইজান দিয়েছে এই কথাও আমি বলতে চেয়েছিলাম তুই ইশারা দিয়ে না করলি।
এবার বুঝতে পারছি সবকিছুর পেছনে তোর হাত ছিলো।
-তুমি আমায় ভুল বুঝছো আবেগ।
‘ভুল এতোদিন তোর মিথ্যে ফাঁদে পরে আমি তোকে ভালোবেসেছিলাম এটাই ছিলো আমার ভুল।
-আমি প্রতারণা করেছি আবেগ তবে তোমাকে পাবার জন্য। আমি পাগলের মতো তোমায় ভালোবাসতাম।
আবেগ আমার ভালোবাসা মিথ্যা ছিলো না।আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি আবেগ।
“ভালোবাসা মাই ফুট আমি তোকে এখন এই মুহূর্ত থেকে ঘৃণা করি।
-না আবেগ এতো বড় শাস্তি আমায় দিও না। তোমার ভালোবাসা ছাড়া আমি বাঁচতে পারবো না।
তুমি আমায় মারো কাটো যা কিছু করো আমি মাথা পেতে নিবো।
-ড্রামা বন্ধ কর ননসেন্স।
অরিত্রি আবার গিয়ে আবেগের পায়ে লুটিয়ে পড়লো।আবেগ না তাকিয়ে পা ছুটিয়ে বেড়িয়ে গেলো।
দরজা বাইরে থেকে আবেগের মা-বাবা সব কথা শুনেন ছেলেকে থামানোর সাহস হয়নি উনাদের।
অরিত্রি ফ্লোরে পরে পাগলের মতোই কান্না করতে থাকে।আবেগের মা-বাবা ওর কাছে যায়নি।
‘দু দিন আবেগ বাসায় ফিরেনি অরিত্রি জল ছাড়া কিছুই খাচ্ছেনা। আবেগের মা-বাবা টেনশনে শেষ এদিকে অরিত্রি না খেয়ে মরতে বসেছে আবেগের খোঁজখবর নেই।
দু দিন পর আবেগ ফিরে আসে অরিত্রি বারান্দায় চেয়ারে বসে আছে আবেগ এসেই কাপড় চোপড় গুছাতে শুরু করলো লাগেজ নিয়ে বাইরে আসতে গেলে পিছন থেকে অরিত্রি বলে উঠলো।
-যদি কখনো ক্ষমা করতে পারো ফিরে এসো যুগ যুগান্তর অপেক্ষা করবো। ভুল মানুষ মাত্রই হয়ে থাকে আমার ভুলের যদি ক্ষমা থাকে তবে মরে ও শান্তি পাবো।
মনে রেখো আবেগ আমি তোমাকে ভালোবাসি বড্ড বেশি ভালোবাসি।
আবেগ কিছু না বলে রুম থেকে চলে গেলো মা-বাবার রুমে গিয়ে বিদায় নিয়ে বেড়িয়ে গেলো। আজ রাতের ফ্লাইটে চলে যাচ্ছে ইটালি।কয়েকমাস আগেই ইটালি থেকে ফিরে আর বিদেশে যাওয়ার কোনো ইচ্ছে ছিলো না ওর।কিন্তু এখন মনে হচ্ছে পালিয়ে গেলে বাঁচতে পারবে।
**আইজান হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে বাসায় গেছে।
চারিদিকে ইনায়ার স্মৃতি তাড়া করছে ওর মা ওকে বারান্দায় নিয়ে গিয়ে বসিয়ে দিলেন।
পাশের বাসার বিল্ডিং থেকে রূপসা ওর দিকে হাত নাড়াচ্ছে।
কুত্তার লেজ কি সোজা হয় মুহূর্তে আইজান ইনায়াকে ভুলে রূপসার দিকে হাত নাড়ালো।
চলবে
চলবে