আমার গল্পে শুধু তুমি পর্ব ১১+১২

গল্প: আমার গল্পে শুধু তুমি
লেখক:হাচনাইন হোসেন সাব্বির
পর্ব:১১

অন্তী ছুটে ঘরে আসার সময় দরজার কাছে এসে হুরমুরিয়ে পড়তে নিলে কেউ একজন অন্তীর কোমর জড়িয়ে ধরে।অন্তী প্রথমে তূর্য ভাবলেও পড়ে বুঝতে পারে এটা তূর্যর ছোঁয়া নয়।অন্তী ঝটপট হাতটা সরিয়ে দেয়।

পেছন ফিরে তাকাতেই দেখে সাগর দাত কপাটি বের করে হাসছে…. অন্তীর কাছে সাগরের এই হাসিটা কেমন একটা অস্বস্তিকর মনে হয়। অন্তী সাগরের পাশ কেটে যেতে নিলে সাগর আবার অন্তীকে ডাক দেয়,

-অন্তু….

-সাগর ভাই আপনাকে কতোবার বলেছি আমাকে অন্তু বলবেন না!

-বা রে ঐ তূর্য তো বলে,
-তূর্য ভাইয়া আপনারে চেয়ে বড়।বড়দের নাম ধরে ডাকতে নেই জানেন না!

-ওহ্ সরি তূর্য ভাইয়া এবার হইছে?
-হু।

-তো তূর্য ভাইয়া ডাকলে কোনো সমস্যা না আমি ডাকলেই যতো দোষ??

-আপনি আর তূর্য ভাইয়া এক হলেন বুঝি!

-তাই নাকি?

-হ্যা তাই!!

অন্তী কথাগুলো বলে চলে যেতে নিলে সাগর অন্তীর পথ আটকে দাড়ায়,, -অন্তী তুমি তূর্য ভাইয়াকে কেন বিয়ে করলে?

-মানে?

-মানে তুমি না আমাকে ভালোবাসতে তাহলে ঐ তূর্য ভাইকে কেন বিয়ে….

-সাগর ভাই আপনার মাথা টাথা কি খারাপ হয়ে গেছে??

-কেন?

-কি বলছেন এইসব?

-অন্তী তোমাকে না বলছি আমাকে ভাই বলবা না…..(কথাটা বলেই সাগর অন্তীর বাহু চেপে ধরে) -শোনেন সাগর ভাই আমি মোটেও আপনাকে…..

অন্তী কথাটা বলতে গিয়ে কারো গলা ঝাড়ার আওয়াজে থেমে যায়।অন্তী পেছন ফিরে তাকাতেই দেখে তূর্য দুই হাত বুকের কাছে ভাজ করে দেওয়ালের সাথে হেলান দিয়ে দাড়িয়ে চোখ বড় বড় করে অন্তী আর সাগরের দিকে তাকিয়ে আছে।

অন্তী তূর্যর দিকে তাকাতেই অন্তীর গলা পর্যন্ত শুকিয়ে যায়। অন্তী তূর্যকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই তূর্য বলতে শুরু করে.

-হয়ে গেছে তোমাদের গোপন কথা?

-না মানে আসলে…..

-এতো রাতে ঘর ছেড়ে বর ছেড়ে যখন কোনো মেয়ে তার প্রাক্তনের সাথে ঢলাঢলি করতে আসে তখন তাকে কোন শ্রেনীর মেয়েদের সাথে তুলনা করা হয় জানিস??(অন্তীর দিকে তাকিয়ে) _সাগর কিছু একটা বলতে যাবে তার আগেই তূর্য সাগরকে ধমকিয়ে থামিয়ে দেয়। -অনেক সাহস বেড়ে গেছে তোর তাই না?সেদিনের পিটানির কথা ভুলে গেলি নাকি আবার মনে করিয়ে দিতে হবে?

-না?( সাগর মাথা নিচু করে উওর দেয়) -তাহলে যা হা করে দাড়িয়ে আছিস কেন?(ধমকিয়ে) সাগর মাথা নিচু করে সেখান থেকে একরকম পালিয়ে যায়।

এদিকে অন্তী চুপ চাপ মুখে তালা এটে দাড়িয়ে আছে…. তূর্য অন্তীর কাছে গিয়ে অন্তীর হাত চেপে ধরে, -তোর কলিজা আসলেই অনেক বড় হয়ে গেছে।না হলে আমি থাকা অবস্থায়….কি আর বলবো তোকে…আসলেই তোর সাহসের তারিফ করতে হয়!!

-তুমি…

-Just keep your mouth shut….

অন্তী আর কিছু বলে না।তূর্যও কথা বারায় না অন্তীকে টেনে ঘরে এনে বিছানায় শুয়ে দিয়ে লাইট অফ করে দেয়। অন্তী চুপ চাপ শুয়ে আছে।

কিছুক্ষন পর তূর্য বিছানায় এসে ধপ করে উল্টো দিকে ঘুরে শুয়ে পড়ে। অন্তী তূর্যর কাছে এমনটা আসা করে নি সে ভেবেছিলো তূর্য হয়তো রাগের মাথা কিছু একটা করে বসবে হয়তো জোড় করবে আগের মতো কিন্তু তূর্য শান্ত হয়ে অন্যদিক ফিরে আছে….

অন্তী অনেক ক্ষন অন্য পাশ ফিরে শুয়ে আছে।কিন্তু ঘুম আসছে না। বলতে গেলে উঠানে এমন কিছু দেখার পর থেকেই অন্তীর মাথা কাজ করছে না।

কবে এতো কিছু ঘটে গেছে দুজনের তা অন্তী কেন সবারই হয় তো অজানা।কিন্তু যা ঘটছে তা কি ঠিক?ফুপ্পি কি মানবে?? এমন হাজারো চিন্তা মাথায় ঘুরছে অন্তী,,, অন্তী বার কয়েক এপাশ ওপাশ করেও তূর্যকে কিছু একটা বলতে গিয়েও থেমে যায়।এবার, অন্তী শোয়া থেকে উঠে তূর্যর উপর ঝুকে পড়ে দেখার জন্য তূর্য ঘুমিয়েছে কি না।

অন্তী উবু হতেই তূর্য দুম করে এপাশ ঘুরে যায়।অন্তীও হুমরি খেয়ে তূর্যর গায়ের উপর পড়ে যায়। তূর্য মুচকি হেসে অন্তীর দিকে তাকায়, -মাঝ রাতে একা অসহায় ছেলে পেয়ে বেশ তো ঝাপিয়ে পড়েছিস….ঘরে তোর বাবা ভাই নাই?

-মানে??

-মানে আমি একা একটা ছেলে মানুষ একা ঘরে আমার উপর…. (তূর্য কথা গুলো বলে দাঁত কেলিয়ে হাসি দেয়)

-আমার বয়েই গেছে তোমাকে….ছি ছি আপনি আসলেই খুব খারাপ!! অন্তী রাগে ফসফস করতে করতে উঠতে নিলে তূর্য অন্তীর মাথাটা তার বুকের উপর চেপে ধরে,

তূর্য মুচকি হেসে জবাব দেয়,, -তোর ছোটবেলার স্বভাব আর গেলো না!

-মানে?

-এই যে তুই মাঝে মাঝে আমাকে তুমি আপনি সব মিলিয়ে গুলিয়ে আমার উপর মানে ঐ আরকি!!

-ধূর
-অন্তু
-হু?
-কিছু বলবি???

এবার অন্তী বেশ চিন্তায় পড়ে যায়।তূর্যকে বলবে কি না।কথাগুলো তূর্যকে বলা ঠিক হবে কি না তা ওর মাথায় ঠুকছে না।

[তখন….

অন্তী কান্না করতে করতে বাড়ির উঠানে আসতেই চোখ যায় উঠানের শেষ প্রান্তে দাড়িয়ে থাকা দুজন ছায়া মূর্তির দিকে…. মৃদু চাঁদের আলো আফছা সবকিছু….অন্তী দেখতে পায়,, দুজন ছায়া মূর্তী একে অপরের সাথে লেপ্টে দাড়িয়ে আছে অন্তী ধীর পায়ে এগিয়ে যায় সেদিকে।একটু এগোতেই অন্তীর কাছে ছায়া মূর্তীদুটো একটু একটু করে স্পষ্ট হতে থাকে।

মৃদু চাঁদের আলোতেও দুজনকে চিন্তে একটুও কষ্ট হলো না অন্তীর।

অথৈ আর তিয়াশ।
অথৈ তিয়াশের বুকে মাথা রেখে দাড়িয়ে আছে।আর তিয়াশ অথৈকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রেখেছে।

অথৈ একটু সরে আসতেই তিয়াশ অথৈকে আবার কাছে টেনে নেয়।অথৈয়ের কপালে একটা গভীর চুমু একে দেয়। অন্তী আর সেখানে দাড়ায় না ছুট লাগায় ঘরের দিকে….

তখনই সাগর অন্তীর দেখা হয়।তারপর উটকো ঝামেলা।] তূর্য অন্তীকে চুপ থাকতে দেখে এবার তূর্য মুখ খোলে,, -কি হলো তাড়া তাড়ি বল।কাল কিন্তু তোক খুব ভোরে উঠতে হবে।নামাজ পড়ে পড়তে বসা লাগবো!

অন্তী মুখ কালো করে জবাব দেয়
-হু
-কি হলো বল?
-আসলে ভাইয়া আর অথৈকে…..

-কাবাব মে হাড্ডি হওয়ার স্বভাব তোর কখনো যাবে না তাই না??
-মানে

-ওরা দুজন দুজনকে ভালোবাসে।অনেক আগে থেকেই…..
-কিহ্??(অবাক হয়ে)
-হু আপাতোতো তোর এসব নিয়ে না ভাবলেও চলবে।ঘুমাই যা,,
-কিন্তু
-চুপ।শুভ রাত্রি!!
-হু শুভ রাত্রি

অন্তী তূর্যকে এইটুকু বলেই তূর্যর গায়ের উপর সবটুকু ভর ছেড়ে দেয়।তূর্যও অন্তীকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে,, আমার সবটুকু যাতনা আমি জমিয়ে রেখেছি।সব টুকু অভিমান জমিয়ে রেখেছি,,

জমিয়ে রেখেছি সব টুকু ভালোবাসা।একদিন সব উপচে পড়বে।ভেঙ্গে যাবে সেই ধৈর্যের বাঁধ

এইটুকু বলেই তূর্যও চোখ বুজে নেয়। খুব ভোর বেলা তূর্য অন্তী দুজনেই জেগে যায়।দুজনেই একসাথে ওজু করে নামাজ পড়ে নেয়।তূর্য অন্তীকে পড়তে বসিয়ে বাহিরে চলে যায়।

বরাবরই তূর্যর স্বভাব সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে খোলা আকাশের নীচে হাটা। অন্তী পড়তে পড়তে হটাৎ ই তার ফোনটা বেজো উঠে।মেসেজ এসেছে।অন্তী সেদিকে গ্রাহ্য না করে আবার পড়ায় মনোযোগ দেয় কিন্তু এবার পর পর বেশ কয়েটা মেসেজ একসাথে আসে।

এবার আর অন্তী কৌতূহল ধরে রাখতে না পেড়ে পড়া থেকে উঠে পড়ে।ফোনটা হাতে তুলে নেয়। একটা আননোন নাম্বার থেকে বেশ কয়েকটা এমএমএস এসেছে।অন্তী বেশ অবাক হয়েই এমএমএস গুলো ওপেন করতেই অন্তীর বুকটা ধক করে উঠে।

এমএমএসে কেউ একজন বেশ কয়েকটা ছবি পাঠিয়েছে।ছবিগুলো তূর্য আর জিনিয়ার বেশ ক্লোজ পিক।সব গুলো ছবিতেই দুজন বেশ কাছাকাছি যতোটা কাছাকাছি স্বামী স্ত্রীর থাকা উচিৎ……
গল্প: আমার গল্পে শুধু তুমি
লেখক:হাচনাইন হোসেন সাব্বির
পর্ব:১২

এমএমএসে কেউ একজন অন্তীকে বেশ কয়েকটা ছবি পাঠিয়েছে।ছবিগুলো তূর্য আর জিনিয়ার ক্লোজ কিছু মোমেন্টের।সব গুলো ছবিতেই দুজন বেশ কাছাকাছি রয়েছে যতোটা কাছাকাছি স্বামী স্ত্রীর থাকা উচিৎ……

অন্তী বেশ কিছুক্ষন দিকে এক ভাবে তাকিয়ে আছে।কেন যেন অন্তীর নিজেকে বেশ অনুভূতিশূন্য লাগছে। তবে এমন কেন লাগছে তা অন্তীর অজানা।সে তো আগে থেকেই জানতো যে তূর্য ভাইয়া আর তার মেমসাহেবের সম্পর্কটা বেশ গভীর এতোটাই গভীর যতোটা গভীর হওয়ার সাধ্য অন্তীরও নেই।

বলতে গেলে এতোগুলো বছরেও সেই সাহস অন্তীর হয় নি।তূর্যও কখনো চায় নি। অন্তী মোবাইলটা ছুড়ে মারে বিছানায়।কাল রাতেও যাকে এতো আপন লাগছিলো আজ সে আবার দূরে সরে গেলো।অনেক দূরে তোতোটা দূরে যতোটা দূরে রাখলে অন্তর আত্মা শান্তি পাবে।

কারো পায়ের শব্দে অন্তী বইয়ের দিকে মনোযোগ দেয়।ঠিক মনোযোগ দেয় বললে ভুল হবে বলতে গেলে মনোযোহ দেওয়ার ভান করে। অন্তীর দাদী রাগে ফসফস করতে করতে অন্তীর দিকে ধেয়ে আসে,, এসেই মুখের উপর অন্তীর বইটা বন্ধ করে দেয়।অন্তী দাদীর দিকে মুখ তুলে তাকায়,,

-কিছু বলবে??
-হ্যা গা কেমন বউ তুই? বর সক্কাল সক্কাল বেড়িয়ে গেলো কোথায় তার জন্য নাস্তা পানি বানিয়ে অপেক্ষা করবি বরের জন্য সে যখন বাড়ি ফিরবে তার মুখের সামনে তুলে ধরবি তা নয় বইয়ে মুখ গুজে বসে আছিস….না জানি কতো বিদ্যেধরী হয়েছিস তুই!!

-তূর্য ভাইয়াকে ব্রেকফাস্ট দেওয়ার জন্য আম্মু আছে বোনেরা আছে সবচেয়ে বড় কথা তুমি আছো।আমি না থাকলেও চলবে….. -বেদ্দপ মেয়ে সোয়ামীকে ভাই বলে কেডায়।আর সোমামীকে সোহাগ না করলে সোহাগ পাবি তুই??হুহ

-তোমার নাতী যকে সোহাগ করে শান্তী পাবে তাকেই করুক আমি কিছুই বলবো না। -এ কেমন কথা হ্যা….কেমন বউ তুই??

-আমি বউ??শুধু বিয়ে করলেই কি বউ হওয়া যায়? -কিসব বলিস তুই!
-ঠিকিই বলছি দীদামুনি যেমন সব প্রেম ভালোবাসা হয় না তেমন সব বিয়েতেই স্বামী স্ত্রী হওয়া যায় না!! দীদুন কিছুক্ষন অন্তীর দিকে অপলক তাকিয়ে থাকে।অন্তীর ছলছল চোখ দীদুনুর চোখ এড়ায় না।ওনি তূর্য আর অন্তীর বিষয়টা যতোটা স্বাভাবিক ভেবেছিলেন ব্যাপ্যারটা তোতটা স্বাভাবিক নয়।

ওনি অন্তীকে কিছু একটা বলতে গিয়েও থেমে যান।তূর্য এলে দুজনকে নিয়ে একসাথে বসবেন ওনি,,, এদিকে এই এক দিনেই জিনিয়া প্রায় হাপিয়ে উঠেছে এ বাড়িতে।তূর্যকে ছাড়া জিনিয়ার কাছে যেন গোটা বাড়িটাই শূন্য।কোথাও কিছু নেই কেউ নেই।

তবে তূর্য আর তিয়াশ বাড়িতে না থাকায় প্রভা আর জিনিয়ার বেশ সুবিধা হয়েছে তমসা বেগমের মন গলাতে। আপাতোতো তিনি পণ করেছেন ঐ মেয়েকে আর বাড়িতে তুলবেন না।

তূর্যও যদি ফিরিয়ে আনতে চায় তবে তিনি সোজা বলে দিবেন হয় এই মেয়ে এই বাড়িতে থাকবে না হয় আমি ,, জিনিয়া প্রভা আর তন্ময়(তূর্যর বড় ভাই) বাড়ি এসেই সোফায় গা এলিয়ে দেয়।

তিন জন প্রায় ভোরের দিকেই বেরিয়েছিলো কোনো এক বিশেষ কাজে বেরিয়েছিলো তিনজনই।যদিও আরো পরে বেরুনোর কথা ছিলো তবে জিনিয়া আর অপেক্ষা করতে চাইছিলো না তাই সকাল সকালই বেরিয়েছে দুজনই।

তমসা বেগম তিনজেন জন্য চা বানিয়ে এনে সোফার টেবিলটাতে রাখে।প্রভা আর জিনিয়ার মুখে কেমন খুশির ঝিলিক লক্ষ করছেন তমসা বেগম।তবে তন্ময় কেমন মুখ কালো করে রেখেছে,, তমসা বেগম তিনজনকেই উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন করেন,,,

-এতো সকাল সকাল কোথায় গিয়েছিলে তোমরা?? প্রভা শ্বাশুড়ির প্রশ্নের উওর দেয়,,

-একটু বাহিরে বেরিয়েছিলাম।আসলে জিনিয়া তো বাংলাদেশে প্রথম এসেছে তাই ওকে একটু সকালের আবহাওয়া দেখাতে গিয়েছিলাম আরকি!!

-ওওও

তমসা বেগম সেখান থেকে উঠতে নিলে দেখে তন্ময় চোখ মুখ কালো করে সোফায় হেলান দিয়ে চোখ বুজে আছে,,, তমসা বেগম এবার তন্ময়কে প্রশ্ন করে,,

-কি হয়েছে?
-আসলে আম্মু ওর একটু মাথা ব্যাথ্যা করছে(প্রভা)
-ওও আচ্ছা

তমসা বেগম চলে যেতেই জিনিয়া এবার প্রভার দিকে ঘুরে বসে,, -প্রভা আপি তুমি ঐ অন্তু নাকি অন্তী ওদের বাড়ি চিনো?? -একবার গিয়েছিলাম তবে এতো মনে নাই,, -ওওও আচ্ছা!

-কেন??
-কেন আবার যেতাম একবার তূর্যর কাছে আইমিন অন্তীকে দেখতে….

(কথাটা বলেই জিনিয়া হেসে দেয়) প্রভাও জিনিয়ার সাথে তাল মিলিয়ে হাসতে থাকে। -আমি না চিনলে কি হবে তন্ময় চিনে।তন্ময় নিয়ে যাবে আমাদের।

কথাটা বলেই প্রভা আর জিনিয়া দুজনই তাকায় তন্ময়ের দিকে।তন্ময় চুপচাপ দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে,, -কি হলো বলো নিয়ে যাবে না?

তন্ময় একটু বিরক্ত হয়ে,, -তোমরা আবার কেন যাবে সেখানে??

– তূর্যর জন্য(জিনিয়া)

-তোমার এতো কথা কিসের নিয়ে যেতে বলেছি নিয়ে যাবে ব্যাস(প্রভা),,, -না মানে এভাবে হটাৎ করে মামার বাসায় যাওয়া ঠিক হবে??

-কেন হবে না।আমরা গিয়ে বলবো মামাকে দেখতে এসেছি।আর সাথে এটাও বলবো বাড়ির নতুন বউকে নিতে এসেছি।যদিও ঐ মিডিলক্লাস মেয়েটা ফিরবে বলে মনে হয় না তবুও,বেশ মজা হবে কিন্তু…(প্রভা)

কথাগুলো বলেই প্রভা হাসতে শুরু করে আর জিনিয়াও।তবে তন্ময়ের মুখে হাসি নেই।আসলেই নেই……

খুব ছোটবেলা থেকে মামাদের সাথে তন্ময় তিয়াশ তূর্যর সম্পর্কটাই আলাদা ছিলো।তূর্য হওয়ার বেলায় তন্ময়ের খুব ইচ্ছে ছিলো বোন হবে তবে ভাই হলো।তিয়াশের বেলায় ও একই ঘটনা।সেবার তন্ময়ের মন খারাপ দেখে কে….

তারপর যখন অন্তী হলো তখন মামা তন্ময়ের কোলে অন্তীকে তুলে দিয়ে বলেছিলো। এই নে তোর বোন।পুতুল বোন।তুই কিন্তু বড় বোনকে সবসময় দেখে রাখবি।আমার পরে তুই তো এই বাড়ির বড় ছেলে,,,

কথাগুলো মনে হতেই তন্ময়ের চোখ মুখ আরো বেশি কালো হয়ে আসে…. মামা ছাড়া ওরা যে বড্ড অসহায় কোথায় আমার উচিৎ ওদের পাশে দাড়ানো তা নয়,,,,

তন্ময় না চাইতেও প্রভা তন্ময়কে একরকম জোড় করেই অন্তীদের বাড়ি নিয়ে যায়। এদিকে তূর্যকে নিয়ে এবাড়ির সবাই বেশ চিন্তায় পড়ে গেছে।সেই সকালে ছেলেটা হাটতে বেড়িয়েছে অথচ এখনো ফিরেনি।

তবে অন্তী সেসবের মধ্যে নেই।সে একবারও ঘরের উপার পা রাখে নি। প্রায় বেশ কিছু সময় পড় তূর্য ফিরে আসে।তার নাকি কোনো এক ছোটবেলার বন্ধুর সাথে দেখা হয়েছিলো তাই দেরী হয়ে গেলো।

অন্তী না চাইতেও তাকে তূর্যর কাছে যেতে হয় দাদীর জোড়ে। অন্তী তূর্যকে পানি আর তোয়ালে এগিয়ে দেয়,, তূর্য অন্তীকে দেখে রেগে যায়। -কাল দিন পর তোর পরীক্ষা তুই এখন এসব করে বেড়াচ্ছিস??

-হু করছি তো আমাদের বর বউ খেলার বরের সেবা যত্ন করছি।

-মানে?

-দীদামুনি বলেছে তাই….

-ওওও আমি ভাবলাম যাই হোক অনেক সেবা করেছিস এখানে অথৈ অর্না সবাই আছে তুই গিয়ে পড়তে বস…..

অন্তীর দাদী তূর্যর কথায় কিছু বলতে গিয়েও চুপ হয়ে যায়।অনেক কিছুই তার বলতে ইচ্ছে করছে কিন্তু পারছে না। এদিকে অন্তী ঘরে যেতে নিয়ে বাড়ির কলিং বেলটা বেজে উঠে।অন্তী দরজার দিকে যেতে নিলে তূর্যই উঠে যায় দরজা খুলতে।

তূর্য দরজা খুলে একটু সরে দাড়াতেই কেউ একজন তূর্যকে জড়িয়ে ধরে….. অন্তী সেদিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে ভেতরে চলে যায়।এদিকে অন্তীর দাদীর চোখ দুটো রসগোল্লার মতো করে সেদিকে তাকিয়ে আছে…..

তার এতো আদরের নাতীকে না কি তারই বউয়ের সামনে একটা অন্য মেয়ে ছেলে জড়িয়ে রেখে!তাহলে এটাই আসল ব্যাপার

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here