#আমার_মনপাখি
#পলি_আনান
#পর্ব – ২১
রাত ২ টা. রাইসা এখনো অনলাইনে।তা দেখে শিহাবের মাঝে সন্দেহ সৃষ্টি হয়।
_রাইসা এতো রাতে অনলাইনে কি করছে। ও আবার কারো সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে যায় নিতো।নানা এটা হতে পারে না। এমন হলে আমার কি হবে।
শিহাব আর কোন কথা না ভেবেই রাইসাকে কল করে।।
।
অপর দিকে রাইসা শিহাবের কল দেখে ভ্রু কুচকে ফেলে,
_ কাহিনী কি শিহাব ভাইয়া এতো রাতে ফোন করেছে কেন। মনে হয় কোন দরকার আছে ধরে দেখি।
_ হ্যালো ভাইয়া কোন সমস্যা। এতো রাতে কেন ফোন করেছেন।
রাইফার মুখে ভাইয়া ডাক শুনে শিহাবের বুকে ছ্যাত করে উঠে।
_পুরোটাই সমস্যা।তুমি এতো রাতে অনলাইনে কি করছো আগে সেটা বলো।
_এমনি আমার ঘুম আসছে না তাই আর কি করবো।
_ ঘুম আসছে না। নাকি কার সাথে কথা বলছো।
_কার সাথে কথা বলবো আমি( ভ্রু কুচকে)
_না মানে তোমার কোন পছন্দের কেউ নেই।
_ না নেই। আপনাকে কতো বার বলবো শিহাব ভাই।আমি এগুলো পছন্দ করি না।
_ ওও আমি তো ভুলেই গেছিলাম। আচ্ছা শোন তুমি কি কাল বিকেলে ফ্রি আছ।
_ হুম কেন।
_না মানে আমিতো বিডির কিছুই চিনি না। আহাদ তো ভাবিকে নিয়ে বিজি তাই কাল তোমার সাথে বের হবো।
_আচ্ছা আমি তৈরি থাকবো।
_ভালো থেকো আল্লাহ হাফেজ।
শিহাব মোবাইলটি বুকে ধরে বলে,
কালকেই তোমায় আমার মনের কথা বলবো রাইসা রানী।
🌹🌹🌹
আহাদ আর রাইফার নামাজ পড়া শেষ হলে রাইফা খাটের উপর বসে চুপচাপ মোবাইল দেখা শুরু করে।রাইফার কান্ড দেখে আহাদ রেগে যায়।
_ বউ খাট থেকে নামো
_ কেন (ভ্রু কুচকে)
_নামতে বলছি নামো।
রাইফা তাড়াতাড়ি খাট থেকে নেমে পড়ে।
_ নেমেছি এবার বলুন।
আহাদ মুচকি হেসে বলে,
_ আমার পা ছুয়ে সালাম করো।
আহাদের কথা শুনে রাইফা হাবলার মতো আহাদের দিকে তাকিয়ে থাকে।
_আমার দিকে তাকিয়ে আছ কেন।যা বলছি তাই করো।
রাইফা আহাদ কে পা ছুয়ে সালাম করতে নিলে আহাদ রাইফা কে টেনে বুকের সাথে চেপে ধরে।
_ আরে আস্তে ধরুন আমি ধম বন্ধ হয়ে মরে যাব।
আহাদ এবার রাইফা কে আগলে ধরে।
_ তোমার জায়গা আমার পায়ে নয় বউ তোমার জায়গা হলো আমার বুকে।
_ কিহিনীটা কি হলো,, নিজেই তো বললেন সালাম করতে আবার নিজেই বাধা দিলেন।(অবাক হয়ে)
_ সালাম টা তুমি নিজে থেকে দেওয়ার কথা ছিল।আর এখন আমায় শিখিয়ে দিতে হচ্ছে।বুঝতে পেরেছো তুমি।
_ আমার ওতো বুঝে কাজ নেই।আমি এখন ঘুমাবো আমার ঘুম পাচ্ছে।(হাই তুলতে তুলতে)
রাইফা বিছানার উদ্দেশ্য যেতে নিলেই আহাদ তাকে পাজা কোলে তুলে নেয়,তার চোখের দিকে কিছুক্ষন চেয়ে গান ধরে,
💝💝বলতে যে মনে হয়,বলতে তবু দেয় না রিদয় কতোটা তোমায় ভালোবাসি।💝💝
💝💝চলতে গিয়ে মনে হয় দূরত্ব কিছু নয় তোমারি কাছে ফিরে আসি।💝💝
💝💝তুমি তুমি শুধু এই মনের আনাচে কানাচে,সত্যি বলোনা কেউ কি প্রেম হীনা কখনো বাচে।(২)
💝💝বলতে যে মনে হয় বলতে তবু দেয় না রিদয় কতটা তোমায় ভালোবাসি💝💝
আহাদ রাইফাকে নিয়ে বিছানায় শুয়ে দেয়।আর রাইফা অবাক হয়ে আহাদের দিকে তাকিয়ে আছে।
_ কি দেখছো বউ।
_ আপনি গান গাইতে পারেন। তাও এতো সুন্দর করে (অবাক হয়ে)
_ হুম পারি তো।বউ কে গান শুনাবো তাই শিখেছি।
আহাদ বিছানায় শুয়ে রাইফার মাথার নিচ থেকে বালিশটা একটানে সরিয়ে ফেলে ।
_এটা কি করলেন আমি ঘুমবো কি ভাবে বালিশ না থাকলে(রাগে)
_ কেন ঘুমতে কি বালিশ লাগে।
_ তাহলে কি ভাবে ঘুমবো আপনার মাথায়।
_ মাথায় কেন,আমার বুকে ঘুমাবে(বুক দেখিয়ে)
আহাদের কথা শুনে রাইফা রেগে বোম হয়ে যায়।
_ আপনিকি পাগল।(রেগে)
_ হুম তোমার জন্য। (মুচকি হেসে)
_ উফফ অসহ্য,(বিরক্ত হয়ে)
_ সহ্য
রাইফা রেগে আহাদের দিকে তাকায়।আহাদ তার দাত বের করে হেসে রাইফাকে টেনে বুকে নেয়।
রাইফা নিজেকে ছাড়াতে ছোটাছুটি করলে আহাদ আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।
_ আরে,এভাবে ছোটা ছুটি করেনা বউ আমি ব্যাথা পাবো।
রাইফা চোখ গরম করে তাকিয়ে আছে আহাদের দিকে। আর আহার দাত বের করে হেসেই যাচ্ছে।আহাদ পাঞ্জাবির পকেট থেকে একটা আংটি বের করে রাইফার হাতে পড়িয়ে দেয়।আর রাইফা অবাক হয়ে আহাদের দিকে তাকায়।
_ এভাবে তাকানোর কি আছে বউ। তোমার উপহার,।
_ চাইনা আমার আপনার উপহার। (রেগে)
_ বেশি কথা বললে আজ রাতেই কসিয়ে দুটো চড় দেবো। চুপচাপ আমার বুকে মাথা রেখে ঘুমাও।(ধমক দিয়ে)
রাইফা ঠোঁট উলটে তাকিয়ে থাকে আহাদের দিকে,
_ কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছ কেন।আমার মুড টাই নষ্ট করে দিলে তুমি,,কই ভেবেছি দূর ভাল্লাগেনা ।
_ তাই বলে আপনি আমাকে মারবেন।
_মারবো বলেছি, কই মারি নি তো।(ভ্রু কুচকে)
_ ওই একই কথা।
রাইফার কথায় আহাদ রাইফার কপালে একটি চুমু খেয়ে বলে,
_ এবার আদর করে দিলাম।,খুশি তো।
রাইফা আর কোন কথা না বলে আহাদের বুকে মুখগুজে শুয়ে পড়ে।আহাদ ও তাকে জড়িয়ে ধরে।
🌹🌹🌹
পরের দিন বিকালে,শিহাব বসে আছে একটি লেকের পাড়ে সাথে রাইসা। রাইসা চুপচাপ বাদাম চিবুচ্ছে। শিহাব আড় চোখে তাকে দেখছে।শিহাবের ফোনে আহাদের কল আসে,শিহাব রাইসার থেকে দূরে গিয়ে কল টা রিসিভ করে,
_ হ্যা আহাদ সব রেডি তো।
_হুম রেডি, শালিকা কে নিয়ে চলে আয়।
_ আমার না ভয় করছে।কি করবো রে।
_ চুপ শালা।আসতে বলছি আয়।আমার যা করার আমি করেছি বাকিটা তোর হাতে।
_ আচ্ছা আসছি।
শিহাব রাইসার সামনে দাড়িয়ে আমতা আমতা করে বলে,
_চলো আমরা একটু সামনে এগোয়।
_ কেন এখানেই তো ভালো লাগছে সামনে গিয়ে কি হবে।(ভ্রু কুচকে)
_ আরে চলোই না।
_ আচ্ছা চলুন।
রাইসা শিহাবের পাশে পাশে হাটছে হঠাৎ পেছন থেকে কেউ রাইসার চোখ বেধে দেয়।রাইসা ছুটাছুটি করলে শিহাব রাইফার দুহাত জড়িয়ে ধরে বলে,
_প্লিজ ছোটাছুটি করিয়না।
_ আমার চোখ বেধেছেন কেন।(অবাক হয়ে)
_ একটু ধৈর্য্য ধরো সববুঝতে পারবে।
শিহাব পেছনে ঘুরে পেছনে আহাদের দিকে তাকায়।আহাদ তাকে ঈশারা করে রাইফাকে সামনে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
শিহাব রাইসাকে নিয়ে লেকের পাড়ে দাড়ায়। শিহাব আর আহাদের সাথে আছে রাইসার ৭ বন্ধু তাদের মধ্যে চারজন মেয়ে তিনজন ছেলে।
সবাই ঘিরে দাঁড়ায় রাইসা আর শিহাবের চারপাশে।আহাদ পেছন থেকে রাইসার চোখের রুমাল খুলে দেয় রাইসা চোখ খুলে দেখে লেকের পুরো একসাইট লাভ সেভের লাল রং এর বেলুন দিয়ে সাজানো আশে পাশে তার সকল বন্ধু বান্ধব।রাইসা অবাক হয়ে সবাইকে জিজ্ঞেস করে,
_ কিরে তোরা এখানে কি করছিস।
_ আমাদের দিকে তাকাতে হবে না পেছনে ঘুর তুই।(বান্ধুদের মধ্যে একজন)
রাইসা পেছনে ঘুরতেই দেখে শিহাব রাইসার সামনে হাটু মুডে বসে আছে তার হাতে একটা ডায়মন্ডের রিং
শিহাব রাইসার দিকে তাকিয়ে বলে,
_ রাইসা উইল ইউ মেরি মি,
রাইসা অবাক হয়ে শিহাবের দিকে তাকিয়ে আছে। সে কখনো ভাবতেও পারেনি শিহাব এমন একটা প্রস্তাব দিবে।তার মনে পড়তে থাকে শিহাবের সাথে কিছু দিন আগের কথা গুলোকে ,যখন শিহাব তাকে বার বার প্রশ্ন করতো,তোমার জীবনে কি পছন্দের কেউ আছে,কারো সাথে কি রিলেশন আছে তোমার।তুমি কেমন ছেলে পছন্দ করো।এমন শত প্রশ্ন শিহাব তাকে করতো,কিছু প্রশ্নের উওর সে দিলেও আবার কিছু প্রশ্নের উওরে পাশ কাটিয়ে যেত।তবে এই সেই কারন প্রশ্ন গুলো যানতে চাওয়ার।রাইসার বন্ধুদের চিৎকার ভেসে আসছে তার কানে।সবাই তাকে বলছে “ইয়েস বল রাইসা ইয়েস বল” কিন্তু কোথায় যেন রাইসার ভয় কাজ করছে।রাইসার কোন উওর না পেয়ে শিহাব একবার করুন চোখে আহাদের দিকে তাকায়। আহাদ রাইসারর পাশে এসে দাঁড়ায় আর বলে,
_ আমাকে তো তুই বিশ্বাস করিস তাই না।আমি তো তোর ভালো চাই।তাই বলছি,শিহাবকে তুই মেনে নে।হ্যা বল।একটু একটু করে ওকে ভালোবাসিস আগলে রাখিস।আমি যানি তুই নিজেও শিহাব কে ভালোবাসিস।হয়তো কাউকে বুঝতে দিস না।
আহাদকে দেখে প্রথমে রাইফা ঘাবড়ে যায়।কিন্তু আহাদের বলা কথা গুলো রাইফার কেন যেন ভালো লাগে।একবার মন চাইছে তার হ্যা বলতে আবার কোথায় যেন পিছুটান কাজ করে।সবকিছু ভাবতে ভাবতে রাইসা কাপাকাপা গলায় শিহাবকে বলে,
_ ই..য়ে..স।
#আমার_মনপাখি
#পলি_আনান
#পর্ব – ২২
চুপচাপ বারান্দায় দাড়িয়ে আছে রাইফা। সন্ধ্যা হয়ে গেছে অনেকক্ষন হয়েছে।আহাদের সাথে সেই সকালে তার দেখা হয়েছে।তখন ছিল সকাল সাতটা সূর্যের আলো কাচের জানালা ভেদ করে রাইফা আর আহাদের মুখে পড়ছে।চিকচিকে রোদের ঝিলিকে আহাদের ঘুমটা ভেঙ্গে যায়।ঘুম থেকে উঠে নিজের বুকে রাইফাকে দেখতে পায়ে কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে সে।আহাদ মুচকি হেসে রাইফার কানে কানে বলে,
_ বউ ও বউ।
_হু(ঘুমের ঘোরে)
_ বউ উঠো সকাল হয়ে গেছে।(কানে ফিসফিস করে)
_ হু।
_কি হু, হু করছো।উঠো আর কতোক্ষন ঘুমাবে।
_ রাইসা জ্বালাবি না একদম। আমাকে ঘুমাতে দে(ঘুমের ঘোরে)
আহাদ বুঝতে পারছে সহযে রাইফার ঘুম ভাঙ্গবে না।তাই সে মুচকি হাসি দিয়ে রাইফার গালে টুপ করে দুটো চুমু খেয়ে নেয়।
গালে কারো ঠোঁটের স্পর্শে জেগে রাইফা। নিজেকে আহাদের বুকে দেখে লাফিয়ে উঠে যায়।
_ আপনি আমার রুমে কি করছেন(চমকে)
আহাদ রাইফার দিকে তাকিয়ে আছে ঘোর লাগা দৃষ্টিতে।যেন কত বছর তাকে দেখেনি।নিজের প্রেয়সীকে কাছে পাওয়ার বছরের পর বছরের সাধনা আজ পূরণ হয়েছে।ঘুমন্ত প্রেয়সীকে দেখে নিজের মনের মাঝে উথাল পাথাল ঢেউ বার বার বয়ে যাচ্ছে।প্রেয়সীর ঘুমন্ত চোখের দিকে তাকিয়ে যেন হাজার কবিতা লেখা যাবে।ঠোঁট দুটো বড্ড শুষ্ক হয়ে গেছে। যেন একটু কোমল স্পর্শে আবার তাজা গোলাপের মতো আবার ফুটে উঠবে।চুল গুলো এলোমেলো।নাকটা কিছুটা লাল।এই মুহূর্তে আহাদ যেন তার প্রেয়সীর কাছে নিজেকে হারাতেও প্রস্তুত ।
কিছু মুহূর্তের জন্য রাইফা ভুলে যায় আহাদ কাল রাতে তার রুমে ছিল।আহাদের চাহনি সে বুঝতে পারছে। কি যেন মায়া চোখ দুটোতে এই চোখদুটো হাজার কথা বলতে বলতে চায়।সূর্যের চিক চিক হলুদ আলোয় আহাদের মুখের একপাশ টায়।দাড়ি গুলো চিকচিক করছে।তার একটু ইচ্ছে করছে ছুয়ে দিতে। অধিকার থেকেও কোথায় যেন সংকোচ বোধটা লাগছে।পেরেও ছুতে পারছে না আহাদ কে।নিজের উত্তাপ মনের আবেগ টাকে বিসর্জন দিয়ে সে বলে উঠে,
_আপনি এখনো আপনার রুমে……….……..
আহাদ আর রাইফাকে কোন কথা বলতে না দিয়ে রাইফার শুষ্ক ঠোঁট নিজের দখলে নিয়ে নেয়।এই ঠোঁট দুটতে আজ প্রান দিতে না পারলে তার আজ সারাদিনেও অস্থিরতা থামবেনা।তাই অতীতের সব কথা উপেক্ষা করে রাইফার ঠোঁট দুটো দখল করে নেয় সে।রাইফা প্রথমে নিজেকে ছাড়াতে চালেও পরে আহাদের সাথে তাল মেলায়।
বারান্দায় হালকা হাওয়া তার সাথে এইসব কথা মনে করতেই রাইফার মাঝে অন্যরকম শিহরন বয়ে যায়।নিজে না চাইতেও আহাদ কে দূরে সরাতে পারচ্ছে না।আবার কাছে ও রাখতে পারছে না।হাজারো ধিদ্ধা, সংকোচ, তাকে ঘিরে ফেলছে। মুক্ত ঐ তারা ভারা আকাশের দিকে তাকিয়ে রাইফা বলে,
_ চলছে যেমন তেমনি চলুক।সময় ঠিক করে দিবে কোনটা ঠিক।আর কোনটা ভুল।
রাইফা নিজের রুমে এসে ফোনটা হাতে নেয়।সেই অ চেনা লোকটি আবার মেসেজ দেয়।
_ কি মনপাখি খুব খুশি মনে হচ্ছে আজ কাল।আহাদ কে নিজের জীবনে পেয়ে।তবে মনে রাখো আহাদ আর বেশি দিন তোমার জীবনে থাকবেনা। বেশি দিন না।আমি আহাদকে সরিয়ে দেব তোমার কাছে থেকে। আহাদ তো আমার সামনেই আছে। কি করি ওকে বলোতো হাত দুটো ভেঙ্গে দি।নাকি পা।আচ্ছা থাক চোখ দুটো গেলে দি।কি করবো বলো।আমার আর দৈয্য হচ্ছেনা।
রাইফা মেসেজ টা পড়েই দম বন্ধ কর অবস্থা।তার নিজের কারনে আহাদকে বারবার বিপদে পড়তে হচ্ছে।
_ ম,মেসেজ দিয়েছে ১৬ মিনিট আগে তার মানে আহাদ কে,,,,,ন….না কিছু হবে না আহাদ ভাইয়ের।আমার জন্য একজন মানুষ কেন বিপদে পড়বে বার বার।
রাইফা আর কোন কথা না ভেবে ছুটে যায় আহাদদের ঘরে ।মিসেস হাবিবা আর মিসেস জমিলা সোফায় বসে টিভি দেখছিল।রাইফা কে ছুটে আসতে দেখে তারা অবাক হয়ে যায়।রাইফা মিসেস হাবিবার সামনে দড়িয়ে বলে,
_ ম.. মামনি আহাদ ভাই কোথায়।
_ কেন কি হয়েছে,(অবাক হয়ে)
_ বলোনা আহাদ ভাই কোথায়।
_ আরে তুই এতো কাপছিস কেন আগে সেটা বল
_ আমার দাদুভাইরে ছাড়া বুঝি থাকতে পারো না। নাত বউ(মজা করে দাদিমা)
_ তোমরা আমায় বলোনা আহাদ ভাই কোথায়(কাদো কাদো সুরে)
_ আহাদ তার রুমেই আছে উপরে যা(মিসেস হাবিবা)
আহাদ এইমাএ বাড়িতে প্রবেশ করেছে। রাইসাকে সন্ধ্যায় বাড়িতে পৌছে দিয়ে শিহাব আর সে মিলে একটু গুরতে গিয়েছে।রুমে এসে কাভাড থেকে টি র্শাট আর টাউজার বের করে নেয়।ওয়াশরুমে ঢুকার মুহূর্তে রাইফা তার রুমে হুরমুর করে ডুকে পড়ে।রাইফার কান্ড দেখে আহাদ থমকে যায়।রাইফা আহাদের সামনে এসেই আহাদের পুরো শরীর দেখা শুরু করে,
_আপনার কোথায় লেগেছে দেখি। বেশি আঘাত করেছে, কই কোথায় লেগেছে (ব্যাস্ত হয়ে পুরো শরীর দেখতে দেখতে)
_ আরে কি করছো আমার কোথায় লাগবে কোথাও লাগেনি।তো।
_ সত্যি লাগে নি। ( চোখের দিকে তাকিয়ে)
_ না কেন লাগবে।কি হয়েছে তোমার।
রাইফা একপলক আহাদের দিকে তাকিয়ে হু,হু করে কেঁদে উঠে। রাইফা প্রচন্ড ভয় পেয়েছে।ভয়ে তার পুরো শরীরে কাঁপন ধরে গেছে।সারা শরীরে ঘাম ঝরছে।দম বন্ধ হয়ে আসছে।আহাদ রাইফাকে টেনে বুকে জড়িয়ে নেয়।
_ কি হয়েছে বউ কাদছো কেন। বলো আমায়।
রাইফা কেদেই যাচ্ছে।এভাবে আরো কিছুক্ষন যাওয়ার পর রাইফার হুস আসে সে আহাদের বুকে তাই সে ছিটকে সরে যায়।রাইফা রুম থেকে বের হতে নিলেই আহাদ রাইফার হাত ধরে নেয়।
_ কি হয়েছে বলো। কাদছো কেন।
_ কি…..কিছুনা(নাক টানতে টানতে)
_ কিছু একটা তো হয়েছে বলো আমায়।
_ আমাকে ছাড়ুন আমি বাসায় যাবো (নিজেকে ছাড়াতে ছাড়াতে)
_তুমি তো তোমার নিজের বাসায় আছো(মুচকি হেসে)
_ মানে(অবাক হয়ে)
_ ওল্লে আমার বউ টা কিচ্ছু বুঝে না। এটা তোমার শশুরবাড়ি।আর শশুর বাড়ি মানে তোমার নিজের বাড়ি।
রাইফা আড় চোখে আহাদকে দেখে আবার নিজেকে ছাড়াতে ব্যাস্ত হয়ে যায়।
আহাদ রাইফাকে আরো নিজের সাথে চেপে ধরে।
_ আমি সেদিন কি বলেছিলাম মনে আছে তোমার।
_ কি বলেছিলেন🙄,
_ আমি বলেছি যেদিন তুমি নিযে এসে আমার কাছে ধরা দিবে সেদিন তোমাকে আমার কাছে নিয়ে আসবো।আর কোন ছাড়াছাড়ি নাই।
রাইফা আহাদের কথা শুনে এক ঢোক গিলে আমতা আমতা করে নিজেকে ছাড়াতে বলে,
_প্লিজ আমায় যেতে দিন।আম্মু, রাইসা কেউ যানেনা আমি এখানে।তারা আমায় খুজবে।
_আচ্ছা আজ ছেড়ে দিলাম।তবে সামনে আর ছাড়বোনা মনে রেখো।
রাইফা ছাড়া পেয়ে দৌড়াতে নিলেই আবার আহাদ রাইফাকে পেছন থেকে হাত ধরে নেয়।রাইফা করুন চোখে একবার আহাদের দিকে তাকায়।
আহাদ রাইফার দিকে তাকিয়ে চোখ গরম করে বলে,
_ খবরদার আজ বারান্দার দরজা লাগাবেনা।আর আমি না আসা পর্যন্ত ঘুমাবেনা। আমি আসবো রাতে।
রাইফা আহাদের দিকে তাকিয়ে বিরক্ত প্রকাশ করে আবার চলে যায়।রাইফাকে নিচে নামতে দেখে দাদিমা মুচকি মুচকি হাসছে।রাইফা সবাইকে উপেক্ষা করে নিজের বাড়ি চলে যায়।
🌷🌷🌷🌷
রাতের কালো ওই খোলা আকাশের নিচে দাড়িয়ে আছে শিহাব আর রাইসা।কারো মুখে কোন কথা নেই। শিহাব আড় চোখে রাইসাকে দেখছে।মেয়েটাকে যত দেখে তত ভালোলাগে।নিষ্পাপ চেহারা।ডাগর ডাগর চোখ,গোলাপের মতো ফুটন্ত ঠোঁট দুটো দেখতে মায়াবী লাগছে।শিহাবের ভাবনার মাঝে রাইসা প্রশ্ন করে,
_কি দেখছেন আপনি।
_ তোমাকে( আনমনে)
_ আমাকে দেখার কি আছে আর কখনো দেখেন নি।
_ হুম দেখেছি তবে তখন দেখতাম আড় চোখে। এখন তো সামনে থেকে দেখবো।
শিহাবের কথা শুনে রাইসা মুচকি হেসে প্রশ্ন করে,
_আচ্ছা রাইফা আপুকে কবে বলবো আমাদের এই সর্ম্পকের কথা।
_ না এখন বলোনা।
_ কেন,,,, কেন বলবো না আপুকে।(ভ্রু কুচকে)
_ বেচারি এমনি তেও শকের মধ্যে আছে।প্রথমে শুনেছে আমি বিবাহিত তারপর অনিকের ব্যাপারটা তারপর বিয়ে।সব মিলিয়ে সে কিন্তু মেন্টালি শকে আছে।
_ হুম ঠিক বলেছেন।
_ যানো আহাদ রাইফাকে খুব ভালোবাসে।ওর সাথে যখন ছিলাম সারাদিন শুধু রাইফা রাইফা।কিন্তু রাইফা আহাদকে বুঝলো না।
_হুম আপনি ঠিক বলেছেন।তবে আপু এবার ধীরে ধীরে বুঝবে।
_ বুঝলেই ভালো।
আবার নিরবতা ছেয়ে যায় তাদের মাঝে। আকাশ পানে তাকিয়ে আছে দুজনে।যেন আকাশ টাই তাদের ভালোবাসা প্রকাশের মাধ্যম।
চলবে…
(ভুলগুলো ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন)
চলবে..……
(ভুলগুলো ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন)