#আমি_তারে_দেখেছি (দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ)
#৪র্থ_পর্ব
শান্ত মার্কার দিয়ে সংখ্যাটাকে গোল করলো। ২০০৭২০ এটা কিসের নম্বর। আচ্ছা কোনো তারিখ কি? হতে পারে। জুলাই বিশ, ২০২০। কি ঘটেছিলো বিশ সালের বিশ জুলাই? এটা কি তুষারের জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ দিন নাকি এই তারিখেই কি তুষার নিখোঁজ হয়েছিলো? গাল ফুলিয়ে তপ্ত নিঃশ্বাস ফেললো শান্ত। তার চোখ স্থির। তুষার কি বেঁচে আছে? আড়ালে প্রতিশোধ নিচ্ছে? নাকি কেউ তুষারকে ঢাল বানিয়ে তার সুপ্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করছে? শান্ত কিছু একটা ভেবে একটি নাম্বারে ফোন করলো। গাঢ় স্বরে বলল,
“তুমি কাল আমার সাথে দেখা করবে”
নীলয় হতবাক দৃষ্টিতে চাইলো ফোনের স্ক্রিনের দিকে। চোখে মুখে অদ্ভুত বিস্ময়। অনেকটা ভুত দেখার মতো চমকেছে সে। কণ্ঠ অতীব পরিচিত হলেও নম্বরটি নয়। সে নিশ্চিত হতে নম্র গলায় বলল,
“আপনি কে বলছেন?”
“তোমার শ্বশুর আব্বা, চিনতে পারা যাচ্ছে?”
“আপনি আমার নম্বর পেলেন কোথায়?”
“সেই কৈফিয়ত তোমাকে দিবো, এতোটা ভাগ্যবান তুমি নও। যা বলেছি সেটা কি শুনেছো?”
শান্ত ছাড়া এই মানুষটি আর কেউ হতেও পারে না। একমাত্র সেই এতোটা অশিষ্ট, অভদ্র। নীতু যে কি দেখে এই মানুষটাকে পছন্দ করেছে এখন হিসেব মিলছে না নীলয়ের। হৃদয়ের এক কোনে জমে থাকা অব্যক্ত অনুভূতিগুলো আবারোও মাথা উচিয়ে চিৎকার করলো, “তুই আস্তো গ’বে’ট। তাই তো বেস্টফ্রেন্ডের মোড়কেই থেকে যাবি”। ছোটবেলায় একটি সিনেমা দেখেছিলো নীলয়, সেখানে বলতো, “ভালোবাসার প্রথম সিড়ি বন্ধুত্ব”। এই থিওরি হিমু আর রুপার ক্ষেত্রেও খেটেছে। তাই তো নীলয় ও সেই সূত্রটি নিজের জ্বলন্ত অনুভূতিগুলোর ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করেছে। ফলাফল বড় একখানা শূন্য। অন্তস্থলে চাপা দীর্ঘশ্বাসটা গোপন করলো নীলয়। কাঠ কাঠ কণ্ঠে বলল,
“দুপুর দুটো, ঠিক দুটো। আমি জার্মান টাইমে চলি, বাঙ্গালী টাইমে আসলে পাবেন না। কলেজের বাম পাশের চায়ের দোকান আছে। ওখানে থাকবো, আপনি দশ মিনিটের সময় পাবেন”
“ওরে আমার লাট সাহেব। ঠিক আছে ঠিক আছে। আর আসার সময় মাস্কটা নিয়ে আসতে ভুলবে না। ওটা সবচেয়ে জরুরি”
বলেই খট করে ফোন কেটে দিলো শান্ত। মাথা ব্যাথাটা বাড়ছে ক্রমশ। আজকে অনেক কিছু হয়েছে। এখন একটু ঘুমাবে, প্রশান্তির ঘুম। এর মাঝেই দরজায় কড়া নাড়লো রেবা। আমতা আমতা করে বলল,
“ভাইজান কি ঘুম?”
“কি চাই?”
শান্তর অনুমতি পেতেই সে ঘরে ঢুকলো। মেয়েটি ছোট থেকে এই বাড়ি। পড়াশোনা করাতে চেয়েছিলেন হেনা বেগম। কিন্তু সে পড়বে না। বাচালপ্রকৃতির মেয়েটিকে ভালো বা খারাপ কিছুই লাগে না শান্তর। অনেকটা অভ্যেস হয়ে গেছে। বলে না, থাকতে থাকতে সয়ে যাওয়া। শান্তর ক্ষেত্রেও তাই। মেয়েটি হেনা বেগমের ডানহাত বলা চলে। শান্ত স্থির স্বরে শুধালো,
“কি হলো? কি চাই?”
“ভাইজান এক্কান কথা আছিল, কই?”
“কও, আমি না করলেও তুই বলবি। তাই বল”
“এক্কান মানত করছিলাম, যদি আপনাগোর বিয়া হয় তয় এক্কান খাসি জব দিতাম। মানত আর কি! আসলে ভাবিরে আমার খুব ভাল লাগছে। তয় আপনার শ্বশুরডা তার ছেড়া। ঐ ব্যাডা লাইগ্যা এতো ঝামেলা। তাই আইসিলাম কিছু টেকা চাইতে”
“মানত তুই করছিস, টাকা আমি দিব কেন?”
“এ মা, এইডা কিতা কন ভাইজান। আপনে আমার মালিক। আমারে টেকা তো আপনেই দিবেন নাকি। আমি কি আমার লাইগ্যে চাইছি, চাইছি আপনের লাইগ্যা। আপনের বউ এর লাইগ্যা”
বলেই ফ্যাসফ্যাস করে কাঁদতে লাগলো। এই হল রেবার ঝামেলা। কথা বলার আগে চোখ থেকে পানি পড়ে। শান্ত বিরক্তি নিয়ে বলল,
“হইছে থাম এবার। কিন্তু কথা হচ্ছে। বিয়ে তো এখন হয় নি। এখন জবাই দিয়ে কি হবে। আগে বিয়েটা হোক। যদি বিয়েটা না হয়? তাহলে মানত তো অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। যদিও আমি মানতে বিশ্বাস করি না। তবে আমার মতে আগে বিয়েটা হোক। এর পর নাহয় তুই ছাগল জবাই দিস। আমি নিজে থেকে কিনে দিবো”
“এইডা কি কথা? বিয়া হইবো না ক্যা?”
শান্ত উত্তর দিলো না। শুধু ঠোঁট বাকিয়ে হাসলো। রেবা ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে রইলো। শান্ত হাতপা টান দিতে দিতে বললো,
“যাওয়ার সময় দরজা দিয়ে যাস। আমার ঘুম পাচ্ছে, এখন যা”
রেবা বেরিয়ে গেল। শান্ত গা এলিয়ে দিলো বিছানায়। মাথা এখন দুটো জিনিস ঘুরছে, প্রথমত মাস্ক, দ্বিতীয়ত তুষার_______
*************
ব্যালকনির কর্ণিশ ধরে দাঁড়িয়ে আছে নবনীতা। দমকা হাওয়ার উন্মাদনায় উড়ছে তার খোলা চুল। চোখজোড়া বিষন্ন। নির্ঘুম রাতের প্রমাণ দিচ্ছে চোখের নিচের কালি। অনেক প্রশ্নেরা অগোচরে হামলা দিচ্ছে শান্ত চিত্তে। বিয়েটা তাহলে হচ্ছেই। ব্যাপারটার জন্য সে প্রস্তুত ছিলো বটেই। কিন্তু কোথায় যেন ভয় হচ্ছে। শান্ত সবজেনেও স্বাভাবিক, আশ্বাস দিচ্ছে সে তাকে বিশ্বাস করে। ব্যাপারটিতে নবনীতার খুশি হবার কথা। কিন্তু সে খুশি হতে পারছে না। বরং অধিক ভয়ে শিটিয়ে যাচ্ছে হৃদয়। অনেকটা সব পেয়ে হারিয়ে যাবার ভয়। যদি হুট করে শান্তর বিশ্বাস চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যায়, যদি হুট করে এই সাজানো পৃথিবীটা ঝলসে যায়? একটু একটু করে সঞ্চারিত সাহসগুলো হাটু ভেঙ্গে গুড়িয়ে যাবে। আচ্ছা, সে কি শান্তকে ভালোবাসে? তার সাথে স্বাভাবিক জীবন কাটানোর জন্য মরিয়া হয়ে আছে? অস্বীকার করার জো নেই শান্ত তার জন্য জরুরি। একটু একটু করে মানুষটি তার বিশ্বাস, ভরসা সব জিতে নিয়েছে। প্রচন্ড ভয়ংকর সময়ে মানুষটির কথাই সর্বপ্রথম মস্তিষ্কে হানা দেয়। শান্তর সাথে মুহূর্তগুলো অটপটে বটে কিন্তু নবনীতার ভালো লাগে। শান্ত যখন শ্যামলী বলে তাকে আশ্বস্ত করে, তখন মনে হয় হৃদয় পূর্ণতা পেলো। আর কিছু চাই না। এটাই কি যথেষ্ট নয়? একটা এমন পুরুষ যে তাকে আগলে রাখবে, তার বিষাদ, ভয় শুষে নিবে; এটাই তো সব রমনী চায়। তাহলে ভালোবাসার কি প্রয়োজন। নবনীতা ভালোবাসার প্রশ্নটির উত্তর খুজলো না। পাছে হতাশা হাতে মেলে। এমন সময় পাশে এসে গলা খাকারি দিলেন জসীম সাহেব। নবনীতা শান্ত কণ্ঠে শুধালো,
“কি লাগবে বাবা?”
“তুমি অখুশী নও তো?’
“কি বিষয়ে বাবা?”
“এই যে বিয়ে এগিয়ে দিলাম”
“অখুশী নই, শুধু একটি কৌতুহল, তুমি তো শান্তকে পছন্দ করো না। তাহলে রাজি হলে কেন?”
নবনীতার প্রশ্নে দীর্ঘশ্বাস ফেললেন জসীম সাহেব। কিছু সময় নীরব থেকে বললেন,
“আমি হেনা আপাকে অপছন্দ করি। হেনা আপা আমার ভার্সিটির সিনিয়র ছিলেন। যথেষ্ট সুন্দরী এবং দাপটি ছিলেন। কিন্তু আমাদের সময় বড় ভাই বোনদের বেশ জোর ছিলো। তারা এতোটাই ইন্টারফেয়ার করতো যে, মাঝে মাঝে নিজেদের প্রেমজীবনেও আঘাত হানতো। হেনা আপাও তেমন ছিলো”
“তুমি মাকে বাদেও অন্য কাউকে পছন্দ করতে?”
“নাহ, তোর মাকেই আমি পছন্দ করতাম। কিন্তু ওই মহিলা ওখানেই ঝামেলা পাকিয়েছিলো। রীতিমতো আমাদের বিচ্ছেদ হতে গিয়েছিলো। তাই আমার এই বিয়েতে আপত্তি ছিলো। কিন্তু তোমার মা সে তো হেনা আপা বলতে পাগল। আসলে কি মহিলা মানুষের মস্তিষ্ক বড়ই জটিল বিষয়। যতই মনে করো তুমি বুঝে ফেলেছো, ততই জড়িয়ে যাবে। এই দেখো, ভেবেছিলাম তোমার মাও আমার মত হেনা আপাকে পছন্দ করবে না। কিন্তু তার ঢলাঢলি দেখলে বুঝতেই পারবে না ওই মহিলার জন্য আমাদের সম্পর্ক ভাঙতে বসেছি’লো”
জসীম সাহেবের আপেক্ষমাখা কথায় হেসে উঠলো নবনীতা। হাসতে হাসতে বললো,
“তাহলে রাজি হলে কেনো?”
“কারণ শান্ত তোমাকে আগলে রাখবে। পুলিশ কিপ্টে হতে পারে, আ/হা/ম্ম/ক হতে পারে, কিন্তু তার চোখে তোমার প্রতি একটা দৃঢ় অনুভূতি দেখেছি। যা সচারচর দেখা ভার”
জসীম সাহেবের কথা নিশ্চুপ হয়ে শুনলো নবনীতা। হ্যা, শান্ত তার প্রতি আকৃষ্ট। কিন্তু আকর্ষণটা কত সময়ের সেটাই দেখার পালা_____
*********
কলেজের বাম পাশের চায়ের দোকানে মুখোমুখি বসে আছে শান্ত এবং নীলয়। নীলয় কিছুটা বিব্রত। শান্তর গম্ভীর চাহনী তাকে অস্বস্তিতে ফেলে দিচ্ছে। এদিকে শান্ত স্থির নয়নে তাকিয়ে আছে তার দিকে। আর ঘন ঘন চায়ে চুমুক দিচ্ছে। নীলয়ের চা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তার খেতে ইচ্ছে করছে না। শান্ত শেষ বারের মতো চায়ে চুমুক দিলো। তারপর কাপটা বেঞ্চে রেখে বলল,
“আমি তোমাকে দুটো প্রশ্ন করবো। সেফ দুটো। একদম ভনিতা ছাড়া উত্তর দিবে। সময় তোমার কাছেও দামি আমার কাছেও”
“কি প্রশ্ন?”
“প্রথম পার্কে নবনীতা ওভাবে রিয়েক্ট কেন করেছিলো?”
“একটা মাস্ক আমার ব্যাগে দেখেছিলো। কিন্তু আমার মাস্ক না ওটা। আমি জানিও না ওটা আমার কাছে কিভাবে এলো। নীতু ওটা দেখেই ভারসাম্য হারায়। আমাকে খু নী পর্যন্ত বলে। এই যে মাস্কটা”
নীলয় মাস্কটা সাথে নিয়ে এসেছে। কেন যেন আন্দাজ করেছিলো মাস্কজনিত প্রশ্ন ই করবে শান্ত। তাই সেফ থাকা ভালো। শান্ত একটা রুমালে করে মাস্কটা নিয়ে পকেটে ভরলো। তারপর গম্ভীর গলায় বলল,
“তুষারকে চেন? যদি চিনে থাকো, যা জানো আমার সব জানা চাই”
তুষারের নামটি শুনতেই চমকে উঠলো নীলয়। কারণ সেই এই নামটি প্রথম শান্তকে বলেছিলো। কিছুটা ইতস্তত স্বরে বলল,
“আপনি ওর সম্পর্কে জানতে চাইছেন কেন?”
“অবশ্যই কারণ আছে। চিনো তো অবশ্যই এবার বলে ফেলো তুষারের জীবনকুন্ডলি”
নীলয় সময় নিলো। তুষার অধ্যায়টি দুবছর আগে বন্ধ হয়ে গেলেও আবারো পাতা উল্টাতেই হবে তাকে_______
******
মধ্যাহ্নের শেষ প্রহর। দোকানে দোকানে চড়কির মতো ঘোরাটা নিতান্ত অপছন্দ হলেও মা, ভাবী আর হবু স্ত্রীর জন্য তা করতে হচ্ছে শান্তকে। হাতে পাঁচ-ছয়টা ব্যাগ। ঘেমে নেয়ে একসার হাল। তাও এই মহিলাবর্গের শপিং শেষ হয় না। আরে কিনবি তো এক শাড়ি তাতে এতো কি? শান্ত গাল ফুলিয়ে শুধু বিরক্তির নিঃশ্বাস ফেলছে। গাড়ির কাছে আসতেই মাদার বাংলাদেশের মনে পড়েছে নবনীতার হলুদের চুড়ি কেনা হয় নি। মাদার বাংলাদেশ আবার তাল তুলতেই শান্ত বলল,
“এখানেই বস তোমরা, আমি কিনে আনছি”
“তুমি ব্যাটা ছেলে চুড়ি কিনবে কিভাবে?”
“হাত আর চোখ দিয়ে”
“তোমার কি পছন্দ আছে নাকি?”
“না থাকলে নেই, পড়বে তো আমার বউ ই”
মাদার বাংলাদেশের মুখের উপর কথাটা বলল শান্ত। নবনীতার শ্যামমুখখানা লাজে রক্তিম হয়ে উঠলো। এই মুখরা লোককে নিয়ে বড্ড জ্বালা। যা মুখে আসে তাই বলে। শান্ত তোয়াক্কা করলো কাউকে। সকলের সম্মুখে নবনীতার হাত ধরে আবার শপিং মলের ভেতরে চলে গেলো। একটি চুড়ির দোকানে এসে দোকানীকে বলল,
“চুড়ি দেখান”
দোকানী চুড়ি দেখালে নিজ হাতে একটি একটি করে চুড়ি নবনীতাকে পড়িয়ে দিতে লাগলো। ব্যাপারটা দোকানের উপস্থিত জনতা বেশ অবাক নয়নে দেখছে। কেউ উপভোগ করছে তো কেউ কিছুটা তাজ্জব হচ্ছে। কিন্তু শান্ত তাতে মাথা ঘামালো না। নবনীতা বিব্রত স্বরে বলল,
“মানুষ দেখছে”
“দেখুক, আমার কি? আমি তো মানুষের বউকে চুড়ি পড়াচ্ছি না। নিজের একমাত্র বউকেই পড়াচ্ছি”
শান্তর মুখে বউ শব্দটি বুকে ধাক্কা খেলো। নবনীতা চুপ করে গেলো। শান্ত সব চুড়ি ট্রাই করে হতাশার সাথে বললো,
“সব ই তো সুন্দর। কি করবো? আচ্ছা, সবগুলোই দিয়ে দিন”
“এতোগুলো দিয়ে কি করবো?”
“পড়বে। চুড়ি তো আর সাজানোর জিনিস না”
শান্তর কথাটার উপরে আর কথা বলতে পারলো না নবনীতা। এই মানুষ শুনবে না। সবগুলো চুড়ি দোকান থেকে কিনে বের হবার সময় শান্তর মোবাইলে ফোন এলো। নবনীতাকে প্যাকেটটি ধরিয়ে বলল,
“তুমি গাড়ির কাছে যাও, আমি আসছি”
নবনীতা মাথা দোলালো। সে চলে গেলে ফোন ধরলো শান্ত। অপাশ থেকে ভারী কণ্ঠ ভেসে এলো,
“স্যার, মাস্কে দুটো ফিঙ্গারপ্রিন্ট আর একটি ডিএনএ স্যাম্পল পাওয়া গেছে। ছাপ দুটো আপনি যাদেরটা আশা করেছিলেন”
“আর ডিএনএ?”
“নবনীতা ম্যামের”……………….
চলবে
মুশফিকা রহমান মৈথি