একটুখানি ভালোবাসা পর্ব -১৭+১৮

#একটুখানি_ভালোবাসা
#পর্ব_১৬
#লেখনীতে_মুগ্ধ_ইসলাম_স্পর্শ
আমার পেট আর পিঠ দিয়ে গলগল করে রক্ত বেরোতে থাকলো। সামনে হাতে ছুরি নিয়ে পৈশাচিক হাসি দিচ্ছে মাধবীলতা আর আবীর। মাধবীলতা’ই আমাকে ছুরি মেরেছে। দু’জনেই ছুরি মেরেছে আমায়!
আমার মাথা ঘুরতে লাগলো।
আমার কথা বলতে খুব কষ্ট হচ্ছে। মনে হচ্ছে যেন কেউ আমার মুখ বেঁধে দিয়েছে।
পেটে চেপে ধরে এক’পা দু’পা করে এগিয়ে গেলমা। মাধবীলতার একটা হাত ধরে বললাম,
‘ মায়াবতী তুমি আমাকে,,,,?
‘ হ্যাঁ আমিই তোকে ছুরি মেরেছি।
মাধবীলতা আমাকে ছুরি মারায় যতটা না অবাক হয়েছি তার থেকেও বেশি অবাক হলাম মাধবীলতা মুখ থেকে কথা শুনে। মাধবীলতা কথা বলতে পারেব?
‘ তুমি কথা বলতে পারো? এতবড় বিশ্বাসঘাতকতা করলে তুমি?
‘ শুনেছিলাম তুই নাকি কোনো অসহায় মানুষকে কষ্ট পেতে দেখতে পারিস না। তাই নিজের মা বাবা নেই এই নাটক টাও করতে হলো আমাকে। প্রথমে নিজের মা বাবার বিষয়ে মিথ্যা বললাম তারপর ভাবলাম যদি আরো অসহায় হই তাহলে তুই আমাকে কখনোই সন্দেহ করবি না। তাই বোবা হওয়ার নাটক করা।
মাধবীলতার কথা শুনে আমি যেন নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারছি না। মনে হচ্ছে আমি একটা স্বপ্ন দেখছি। ঘুম ভেঙে গেলেই স্বপ্নও বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।
‘ মায়াবতী একটা কথা বলবে? আমি তোমার কী এমন ক্ষতি করেছি যার জন্য তুমি আমাকেই এভাবে মারলে?
‘ আমার তো কোন ক্ষতি তুই করিস নি। তবে আমি যাকে ভালোবাসি তার বাবা মা’কে মেরেছিস। শুধুমাত্র তোর জন্য সে অনাথ হয়ে গেছে, সবসময় কাঁদতো। ওর কষ্ট সইতে পারিনি আমি। তাই ও যখন বলল তোর কাছে যেতে, তোকে আমার প্রেমের জালে ফাঁসাতে। ঠিক তাই হলো। তুই তো এই শহরের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তি। তোকে মারা এটতাও সহজ ছিল। তাই আমার জালে ফাঁসালাম। যাতে আমাদের কিডন্যাপের কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে ছুটে চলে আসিস। আর দেখ, সেটাই হলো যেটা আমরা চেয়েছি। অবশেষে প্রতিশোধ নিয়েই ফেললাম।
‘ আরে আমাকে যদি মারতেই হতো তাহলে বলতে আমার জীবন চাই তোমার। দিয়ে দিতাম। আমার বিশ্বাস নিয়ে খেলা করার কী ছিল?
আবীরের কাছে এগিয়ে গেলাম।
‘ ভাই, আরীর! মাধবীলতার নাহয় আমাকে মারার উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু আমি কী তোমারও ক্ষতি করেছি যার জন্য তুমিও,,,,,,?
মাধবীলতা আবারো পৈশাচিক হাসি দিয়ে বলল,
‘ সবই টাকার খেলা। ও তো টাকার গোলাম।
‘ জানো আবীর আমার কোনো ছোট ভাই ছিল না। তবে যবে থেকে তোমাকে পেয়েছি তবে থেকে আমার ভাইয়ের অভাব টা পূরণ হয়ে গেছে। যখন নিজের জন্য কোনকিছু কিনতাম সেটার দু’জোড়া কিনতাম। একটা তোমার আর একটা আমার। তুমি যখন অসুস্থ হয়ে যেতে সারারাত জেগে বসে থাকতাম তোমার পাশে। তোমার যদি টাকারই প্রয়োজন ছিল আমায় বলতে। শরীরের রক্ত বিক্রি হলেও তোমায় দিতাম। বিশ্বাস কেন ভাঙলে আমার?
আবীর মাথানিচু করে দাঁড়িয়ে রইল। আবারো মাধবীলতা সামনে এসে একটা মুচকি হাসি দিলাম।
‘ যেখানে আপন মানুষরাই আমার এত ভালোবাসা এত বিশ্বাসের অমর্যাদা করল। সেখানে তো তুমি দু’দিনের মানুষ। তোমাকে নিজের থেকেও বেশি ভালবাসতাম। তুমিই আমার পিছনে ছুরি মারবে এভাবে আমি বুঝতে পারিনি। যেখানে চেনা মানুষের মুখে নতুন মুখোশ সেখানে তোমার বদলে যাওয়াটা খুব অস্বাভাবিক কিছু নয় মায়াবতী। এতদিন ছটফট করছিলে না? আমার মা-বাবার গল্প শুনতে চেয়ে? তবে আজ তোমাকে শোনাবো আমার জীবনের গল্প। তোমরা দুটো ছুরি মেরেছো আমাকে। আমি এতটাও দুর্বল নয় যে তোমাদের সামান্য দু’টো ছুরির আঘাতে মরে যাব। এই পৃথিবীতে তো তোমার সবই রয়েছে। মা বাবা ছোট বোন। তুমি কী বুঝবে আমার কষ্ট? আচ্ছা একটা কথা বলো? আমাদের সাথে তো অনেকদিন থাকলে। তোমার মা বাবাকে ছাড়া কেমন কাটিয়েছো দিনগুলো?
‘ অবশ্যই খারাপ লেগেছে।
‘ জানো মায়াবতী মিহি’র মতো আমারও একটা পরীর মতো ফুটফুটে বোন ছিল। সারাক্ষণ শুধু ভাইয়া ভাইয়া করত। একমুহূর্তের জন্যেও চোখের আড়াল হতে দিতো না। আমারও প্রাণপ্রিয় বাবা মা ছিল। যেই মায়ের হাতের ছোঁয়া পেলে আমি নিমেষেই সুস্থ হয়ে যেতাম। যেই বাবার ছায়া না পেলে আমি কখনোই শীতল হতাম না। সেই বাবা মা’ই আমাকে একা করে চলে গেছে ওপারে। মিহির মতোই আমার বোনটাও সবসময় দুষ্টুমি করতো। রাত হলে আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঘুমোতো। ওকে যখন বাবা মা আলাদা ঘরে রেখেছিল তখন আমাকে বলতো ” ভাইয়া আমার একা থাকতে অনেক ভয় করে। মনে হয় ভূত এসে আমাকে কামড়াবে। কিন্তু দেখো আজ সেই কলিজার টুকরা বোনটাই একা কবরে শুয়ে আছে। এখন আর সে চিৎকার করে বলে না ” ভাইয়া আমার এখানে একা থাকতে অনেক ভয় করছে! তুমি আমাকে নিয়ে যাও। আমি তোমার বুকে ঘুমাবো।
কথাগুলো শুনে মাধবীলতার হাস্যজ্বল মুখটা মলিন হয়ে যায়। আমি আবারও বলতে শুরু করলাম,
‘ সেদিন আমার কলেজ জীবনের প্রথম দিন ছিল। কলেজ যাওয়ার পর কিছু বন্ধুও হয়ে যায়। ছুটি হওয়ার পর যখন আড্ডা দিয়ে বাড়ি ফিরলাম। তখন আমার বাবা মা’কে এভাবেই তোমার মতো ছুরি মেরে দিয়েছিল। যখন ছুটে গেলাম তাদের কাছে ততক্ষণে আমার পরীর মতো ফুটফুটে নিষ্পাপ বোনটাকে ওরা ছাড়লো না। চালিয়ে দিল পেটের মধ্যে ছুরি৷ বোনটাকে বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করলাম। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে গেলাম। বোনটা আমারই কোলে গলাকাটা মুরগির মতো ছটফটিয়ে মরে গেলো। বারবার বলছিল “ভাইয়া আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। চোখ দিয়ে ওর পানি যেনো ঝর্ণার মতো ঝরছিল। কিছুই করতে পারলাম না। চোখের সামনেই মরে গেলো আমার ছোট্ট নিষ্পাপ বোনটা। তারপর তারা আমাকেও মারার চেষ্টা করে। মাথার খুব জোরে কিছু দিয়ে আঘাত করে। ভেবেছিল আমিও হয়তো মরে গেছি। তাই ভেবে তারা চলে যায়। তারা আর কেউ নয়। আমরই বাবার বন্ধু ছিল। একইসাথে বিজনেস করতো। তারা কোম্পানির প্রডাক্টে ভ্যাজাল মিশিয়ে বাজারে ছাড়ছিল। এটা যখন বাবা জানতে পারে তখন তার বিরুদ্ধে কেস করে। যার জন্য আমার বাবা মা জীবন হারালো। বলতে পারো আমার ওই নিষ্পাপ বোনটার কী অপরাধ ছিল? যার জন্য ওকেও প্রাণ দিতে হলো? একদিক দিয়ে আমারে মেরে ভালোই করেছো। যার এই পৃথিবীতে কেউ নেই সে বেঁচে থেকেই বা কী করবে। মিহিকে পেয়ে আমি ভুলেই গিয়েছিলাম যে আমি বোন হারিয়েছি। মিহিকে সেই ছোট্ট বোন ভেবে ভালোবাসলাম। কিন্তু কী নিয়তি দেখো ওট ভালোবাসাটাও মিথ্যা। তোমাদের ভালোবাসা’টা মিথ্যে হলেও অভিনয় টা দারুণ ছিল। সেদিন তুমি বলেছিলে না? যে তুমি মানুষ চিনতে ভুল করোনি। কিন্তু আমি তোমাকে চিনতে ঠিকি ভুল করেছি। আমার মা বাবাকে আর কেউ মারেনি। তোমার ভালোবাসার মানুষ রোহানের বাবাই মেরেছে।
সঙ্গে সঙ্গে পিছন থেকে ভারি কোন বস্তুর আঘাত মাথায় পড়ল। মুখ থুবড়ে মাধবীলতার পায়ের সামনে গিয়ে পড়লাম। মনে হচ্ছে কেউ বুক চিঁড়ে ভিতর থেকে কলিজা টা বের করে নিচ্ছে।
‘ মাধু সোনা বিশ্বাস করো আমার বাবা ওর পরিবারকে মারেনি। ওরা তো এক্সিডেন্টে মারা গেছে।
‘ আমি জানি তুমি মিথ্যে কথা বলতে পারো না।
আমার নিশ্বাস আস্তে আস্তে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।
‘ তোমার #একটুখানি_ভালোবাসা পেয়ে আবারো নতুন করে বাঁচতে শিখেছিলাম। সেই তুমিই তোমার দেওয়া ভালোবাসা টুকু’ কে গলাটিপে মেরে ফেললে। ভালো থেকো মায়াবতী। সুখী হোক তোমার নতুন জীবন।
আর কথা বলতে পারলাম না। চোখদুটো বন্ধ হয়ে এলো।
রোহান মাধবীলতা আর মিহিকে নিয়ে চলে গেলো। যাওয়ার সময় মাটিতে পড়ে থাকা আমার মুঠোফোন’টি নিয়ে গেলো। মাধবীলতার মনে উথাল-পাথাল হতে শুরু করল।
এদিকে সবাই চলে যাওয়ার পর আবীর স্পর্শের লাশের পাশে বসে চিৎকার দিয়ে কাঁদতে শুরু করল।
‘ এটা আমি কী করলাম? বাবার সমতুল্য বড় ভাইকেই মে’রে ফেললাম আমি?
আবীর স্পর্শের লাশটা গাড়িতে তুলে নিয়ে চলে যায়।
এদিকে মাধবীলতা বাড়ি ফিরে গোসল করে ঘরে এসে মাথার পানি মুছতেছিল। এমন সময় চোখ পড়ে স্পর্শের মুঠোফোনের ওপর। সামান্য কৌতূহল নিয়ে ফোনটি হাতে নিলো। কিন্তু ফোনে পাসওয়ার্ড। অনেক চেষ্টা করেও লক খুলতে পারলো না। শেষে ব্যর্থ হয়ে যখন ফোনটি জানালা দিয়ে ফেলে দিতে যাবে তখনই মাধবীলতার মনে পড়ে, যে স্পর্শ ওকে মায়াবতী বলে ডাকতো। মায়াবতী নাম টা দিতেই ফোনের লক খুলে যায়। লক খুলেই দেখতে পায় সেই চিত্র। মায়াপুরীর নদীর তীরে গাছতলায় স্পর্শের বুকে মাধবীলতার ঘুমিয়ে থাকা ছবি। সঙ্গে সঙ্গে মাধবীলতার বুকটা ছ্যাঁত করে ওঠে। ফোনটি আবারো ফেলতে যাবে এমন সময় ফোনে কল আসে। তাকিয়ে দেখে নানু ভাই কল করেছে। মাধবীলতা কী করবে বুঝতে পারছে না। কলটা কেটে যায়। পুনরায় ফোন আসে। মাধবীলতা ভয়ে ভয়ে রিসিভ করে কানে ধরে। মাধবীলতা কিছু বলার আগেই ফোনের ওপাশ থেকে শুনতে পায়,
‘ নানা ভাই কেমন আছিস তুই? আমি জানি তোর অনেক ভালো থাকার কথা। কারণ আমার তোর মায়াবতী যে রয়েছে তোর সঙ্গে। ওর ভালোবাসা তোকে আগের তুলনায় অনেক বেশি ভালো রেখেছে। জানিস গুড্ডু তোদের বিয়ের কেনাকাটা শেষ করে ফেলেছি। তোর জন্য একটা কালো রঙের পাঞ্জাবি কিনেছি। তুই বলতিস না যে তোর কালো রঙ অনেক পছন্দের। আর আমার নাতবউয়ের জন্য একটা লাল টুকটুকে বেনারসি শাড়ি কিনেছি। গুড্ডু সোনা তুই দুই তিনদিনের মধ্যেই চলে আয়। আমি এখুনি তোদের বিয়েটা দিয়ে দেবো। তোর মা বাবা তো তোর বিয়েটা দেখতে পারলো না। অন্তত আমি মরার আগে তোর বিয়েটা দেখে যেতে চাই। ইদানীং শরীরটাও বেশি ভালো নেই। আমার মেয়েটাকে তো শয়তান টা মেরেই ফেললো। এবার আমি মরার আগে আমার ইচ্ছেটা পূরণ কর নানা ভাই আমার। তুই কিন্তু একদম আসতে দেরি করবি না। হ্যাঁ’রে গুড্ডু তুই আমার নাতবউকে ঠিকমতো দেখেশুনে রাখছিস তো? মনে রাখিস ওর কোন কষ্ট হলে আচ্ছামত তোর কাম মলে দেবো কিন্তু। গুড্ডু সোনা তুই কথা বলছিস না? সেই তখন থেকে বকবক করেই চলেছি।
এতক্ষণ মুখ চেপে ধরে কাঁদছিল মাধবীলতা। নানুর কথাগুলো শুনে ফোনটা কেটে দিয়ে হাউমাউ করে কাঁদতে শুরু করল।
‘ আমি কী করে পারলাম এতগুলো মানুষের বিশ্বাস নষ্ট করতে? কী জবাব দেবো আমি তাদের? এতো আশা নিয়ে বসে আছে নানু। যখন শুনবে তাদের নাতি আর এই পৃথিবীতে আর নেই তখন তাদের কী অবস্থা হবে? খবরটা শুনলেই তো নানু মরেই যাবে। একে তো নিজের মেয়ে নাতনিকে হারিয়েছে। আর এখন যদি জানতে পারে তার নাতিও নেই। তাহলে কী করবে সে? নিজের ভালোবাসার মিথ্যে প্ররোচনায় পড়ে এটা আমি কী করলাম? রোহান কী আদৌ আমাকে ভালোবাসে? সে তো আমাকে স্পষ্টভাবে বলেছিল যে, স্পর্শকে পটাতে হলে প্রয়োজন তার বিছানাতেও যেতে। সে আমায় ভালোবাসলে কী কখনো অন্যের সঙ্গে এভাবে বিছানায় যেতে বলতে পারতো? এসব কথা আগে কেনো মাথায় আসেনি আমার?
এদিকে আবীর স্পর্শের লাশ বাড়িতে নিয়ে এসে বাড়ির সামনে রাখলো। সঙ্গে সঙ্গে সব গার্ড ছুটে এলো লাশের কাছে। লাশের এমন নির্মম অবস্থা দেখে সবার চোখেই অশ্রু এসে ঘর বাঁধে। একটা গার্ড আবীরকে ডেকে বলে,
‘ আবীর স্যার?
‘ কিছু বলবে? #একটুখানি_ভালোবাসা
#পর্ব_১৭
#লেখনীতে_মুগ্ধ_ইসলাম_স্পর্শ
” আবীর স্যার! স্পর্শ স্যার তো বেঁচে আছে।
সঙ্গে সঙ্গে চমকে ওঠে আবীর। আবীর রেগে গিয়ে গার্ডের কলার পাকড়ে ধরে।
” তোর এতবড় সাহস? ভাইয়ার মৃতদেহ নিয়ে মজা করিস। আজ তো তোকে আমি মেরেই ফেলব।
” স্যার আমি মজা কেন করব বলুন? ভালো করে দেখুন স্পর্শ স্যার নিঃশ্বাস নিচ্ছে।
এবার আবীর গার্ডেন কলার ছেড়ে দিয়ে স্পর্শের লাশের কাছে এসে বসে। পালস পরীক্ষা করে দেখলো। খুব আস্তে আস্তে চলছে পালস। তারপর বুকে মাথা পেতে দেখলো হার্টবিট এখনো চলছে। আবীরের দেহে যেন প্রাণ ফিরে এসেছে। আবীর কান্নামাখা মুখে কিছুটা হাসির প্রলেপ ফুটে ওঠে। আবীর দ্রুত স্পর্শকে নিয়ে হাসপাতালে যায়। আবীর আল্লাহর কাছে হাজারো শুকরিয়া আদায় করে। মনে মনে ভাবে,
” যেভাবেই হোক ভাইয়া যেন বেঁচে যায় আল্লাহ। সে যদি নিজের হাতে আমাকে মেরে ফেলে আমি হাসিমুখে জীবনটা বিলিয়ে দেবো।
স্পর্শের অপারেশন চলছে আবীর বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে আর মনেপ্রাণে আল্লাহ’কে স্মরণ করেই চলেছে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই সব গার্ড ছুটে আসে হাসপাতালে। আমার চোখের কার্নিশে অশ্রু এসে ঘর বেঁধেছে। যারা স্পর্শের কাছে বেতনভুক্ত কর্মচারী তারা কেউই স্পর্শকে স্যার নয় সবাই বড় ভাই হিসেবেই মানে। যখন যার যেটা প্রয়োজন হয়েছে স্পর্শ সেটা তখন তার সাধ্যমত চেষ্টা করেছে। প্রতিটি মানুষের বিপদে পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। কাঁধে হাত রেখে মনোবল শক্ত করেছে। আবীর সঠিক সময়ে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে বলেই হয়তো আজ স্পর্শ বেশি রয়েছে এখনো। সে কখনোই নিজেকে ক্ষমা করতে পারবে না।
এদিকে মাধবীলতা নিজের বাড়ি থেকে বেরিয়ে সোজা রোহানের বাড়িতে চলে যায়। মাধবীলতা যখনই রোহানের ঘরে প্রবেশ করতে যাবে তখনি রোহানের কণ্ঠস্বর শুনতে পেল। মাধবীলতা দরজার এক কোণে দাঁড়িয়ে শুনতে লাগল রোহান কারো সাথে কথা বলছে। কথাগুলো ছিল অনেকটা এরকম,
” হ্যাঁ সুইটহার্ট স্পর্শ’কে আমি খুব সহজেই মেরে ফেলেছি। মাধবীলতা বুঝতেই পারেনি যে আমি তাকে শুধু একটা গুটি হিসেবে চাল দিয়েছি। মাধবীলতা যে এত সহজে কাজটা করে ফেলবে সেটা আমিও বুঝতে পারিনি। বড়ো বুদ্ধিমতী মেয়ে মাধবীলতা। কিন্তু আমার চালের কাছে সে নিতান্তই একটা শিশু। ওকে ভুলভাল বুঝিয়ে প্রতিশোধ নিয়েই ফেললাম। ও তো জানেই আমিই আমার মা’কে মেরে ফেলেছি। স্পর্শ যখন বাবাকে মেরে চলে যায় তারপর আমিই নিজ হাতে নিজের মা’কে হত্যা করি। কেননা আমার বাবা মা কোনমতেই তাদের সম্পত্তি আমাকে দিতো না। এখন মাধবীলতা’কে ব্যবহার করা শেষ ওকে ছুঁড়ে ফেলে দেবো।
কথাগুলো শুনে নিজের অজান্তেই চোখের কোণে পানি চলে আসে মাধবীলতার। নিজের কানকে যেন সে বিশ্বাস করতে অপ্রস্তুত ছিল। কতটা সুনিপুণ ভাবে বুদ্ধি করছিল রোহান।
মাধবীলতা সেখান বেরিয়ে আসে। বুদ্ধি করল অন্য কিছু।
এদিকে এখনো স্পর্শের অপারেশন চলছে। স্পর্শের খবর পেয়ে সুবর্ণা আর সাগর দু’জনেই ছুটে এসেছে।
আবীর সাগরের সামনে এসে বলে,
” সাগর! তুমি একটু এদিকে খেয়াল রেখো। আমি বাড়ি গিয়ে গোসল সেড়ে আসছি। শরীরে অনেক ময়লা জমে গেছে।
এই বলে আবীর গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে গেল। আনমনে গাড়ি চালাচ্ছে আবীর। হঠাৎ গাড়ির সামনে একটা ছেলে এসে দাঁড়ায়। সঙ্গে সঙ্গে ব্রেক কষে আবীর। নয়ন জানালার পাশে এসে,
” ভাইয়া স্পর্শ স্যার কোথায়? মা বলেছে ওনাকে নাকি খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। মা আমাকে বলেছে ছেলেটাকে নিয়ে আসিস তো বাবা। নিজের হাতে রান্না করে খাওয়াবো।
আবারো চোখের বাঁধ ভেঙে পানি গড়িয়ে পড়ল আবীরের। কতগুলো মানুষ একবুক স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে আছে স্পর্শ’কে। আর আজ সেই হাজারো মানুষের ভালোবাসার মানুষটা মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে।
” ভাইয়া আপনি কাঁদছেন কেনো?
আবীর চোখের কোণ থেকে পানি মুছে বলল,
‘ ও কিছু না। নয়ন তোমার স্পর্শ ভাইয়া অনেক অসুস্থ। এখন যে যেতে পারবে না।
” কেনো কী হয়েছে স্পর্শ স্যারের?
” ওনার অপারেশন চলছে। মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে। তোমার মা’কে গিয়ে বলবে সুস্থ হলে স্পর্শ ভাইয়া এসে ঠিকি দেখা করবে আর তোমার মায়ের হাতের রান্নাও খাবে।
” কিন্তু ভাইয়া মা তো ওনাকে দেখতে চেয়েছে?
” আচ্ছা তোমার মা’কে নিয়ে হাসপাতালে এসো কেমন।
” ঠিক আছে ভাইয়া।
আবীর বাড়ি চলে এলো। বাড়ির ভিতরে প্রবেশের সঙ্গেই কারো অনুপস্থিতি অনুভব করল। আবীরের মনে হচ্ছে স্পর্শ বাড়ির কোনো না কোনো জায়গায় আছেই। বাড়ি’টা যেন শূন্য হয়ে গেছে। বাড়ির প্রাণটাই যে ছিল স্পর্শ। পুরনো দিনের স্মৃতিগুলো যেন আবীরের চোখের সামনে খেলা করছে। স্পর্শের চিৎকার শুনতে পাচ্ছে।
” আবীর সকাল হয়েছে উঠে পড়ো। নামাজে যাবে না? আবীর তুমি খেয়েছো তো? এই আবীর তোমার তো হাত কেটে গেছে। কাছে এসো আমি খাইয়ে দিচ্ছি। আবীর তোমার কী মন খারাপ? চলো কোথাও থেকে ঘুরে আসি তোমার মন ভালো হয়ে যাবে। আবীর অফিসের কাজ অফিসেই কোরো। এখন এসো আমরা ক্যারাম খেলবো। আবীর তুমি না একদম বেখেয়ালি। গোসল করেছ অথচ মাথার চুল ঠিকমতো মুছতে পারলেনা। ঠাণ্ডা লেগে যাবে তো। এদিকে এসো আমি মুছে দিচ্ছি।
একটা বড় ভাই যেমন তিন চার বছরের ভাইকে যেভাবে আদর করে, শাসন করে। তেমনিভাবে স্পর্শ ও আবীরকে আদর করতো, শাসন করতো, ভালোবাাসতো।
কথাগুলো মনে পড়তেই আবীর গগন ফাটানো চিৎকার দিয়ে মেঝেতে হাঁটু গেড়ে বসে। পিছন থেকে পিস্তল বের করে মাথায় ঠেকিয়ে দেয়। চিৎকার করে কাঁদছে আবীর। ট্রিগারে চাপ দেবে এমন সময় স্পর্শের বলা কয়েকটি বাক্য মনে পড়ে আবীরের।
” শোনো আবীর! জীবনে তুমি যত বড়োই অপরাধ করো না কেনো সব অপরাধেরই ক্ষমা তুমি নিশ্চয়ই পাবে। যদি তুমি আল্লাহর কাছে নত হয়ে মন থেকে ক্ষমা চাও তবে। জীবনে চলার পথে যতই বিপদ আসুক, হোক না সেটা বড় কিংবা ছোট। নিজের উপর আস্থা ও মনোবল শক্ত করে সেটার মোকাবিলা করার চেষ্টা করবে। যদিও ব্যর্থ হও তবে চেষ্টা করবে। কখনো পিছু ফিরে তাকাবে না। তাহলে তুমি সামনে এগোতে পারবে না। একটা হরিণ কিন্তু একটা বাঘের থেকেও অনেক দ্রুত গতিতে ছুটতে পারে। তারপরও কেনো সে বাঘের শিকার হয় জানো? কেননা সে প্রাণের ভয়ে বারবার পিছন ফিরে তাকায়। এটা দেখার জন্য যে বাঘটা কতদূরে? আর সেজন্যই হরিণের গতি কমে যায়। আর বাঘও তাকে শিকার ফেলে। এমনিভাবে আমাদেরও নির্ভয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। যদি পিছন থেকেও আঘাত আসে থেমে থাকলে চলবে না। কেননা মৃত্যু তো একমাত্র আল্লাহর হাতে। তিনি যদি না চান তাহলে পৃথিবীতে কারো শক্তি তোমার জীবন নেওয়ার। সুতরাং এভাবে পিছনে তাকিয়ে অন্যের সফলতা দেখলে তুমি তার থেকেও পিছিয়ে যাবে। আর ভুল তো মানুষেরই হয়। পৃথিবীতে প্রতিটি সমস্যার সমাধান রয়েছে। আর যদি কখনো নিজেকে অসহায় মনে হয়। তাহলে ছুটে চলে যাও মসজিদে। তোমার অসহায়ত্ব সয়ং আল্লাহ কাটিয়ে দেবে। মনের কথা সবসময় শুনতে হয় না। তোমার একাকিত্বের সময় মন বারবার বলবে কোনো অঘটন ঘটাতে। তখন একটু ঠাণ্ডা মাথায় ভাববে। দেখবে তোমার মত হয়তো পরিবর্তন হয়ে গেছে। আত্মহত্যা কারা করে জানো? যারা ভীতু, যাদের লড়াই করার ক্ষমতা নেই, যারা উপর বিশ্বাস রাখতে পারে না। অনেক সময় তুমি সমাজের প্ররোচনার শিকার হয়েও আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত নিতে পারো। কিন্তু একবার ভাবো তুমি কাদের কথায় এরকম একটা সিদ্ধান্ত বেছে নিলে? যে সমাজ তোমার কথা ভাবলো না, তোমাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিল। তাদের কথার শিকার হায়ে তুমি নিজেকে মেরে ফেলবে? তুমি কেনো তাদের কথা শুনবে? তারা তো তোমার কথা একবারের জন্যও ভাবলো না। তাহলে কোথায় দায়বদ্ধতা পড়ল তাদের কথা শুনবার? যে বন্ধু তোমাকে খারাপের দিকে ঠেলে দেয় তার সঙ্গ ত্যাগ করো। আর যে বন্ধু তোমার খারাপ সময়ে তোমার মনোবল বাড়াতে সাহায্য করে, তোমাকে সবসময় ভালোর দিকে ইশারা সেই বন্ধুর জন্য নিজের সবটা উজাড় করে দেওয়ার চেষ্টা করো। একদিন আমি হয়তো থাকবো না। কিন্তু তুমি আমার কথাগুলো মাথায় রাখো তাহলে হয়তো কোনো একদিন কাজে আসবে।
আবীর পিস্তল মাথা থেকে নামিয়ে নিল।
তারপর চোখের পানি মুছে গোসল করে নিয়ে পুনরায় হাসপাতালে চলে যায়। গিয়ে দেখে নয়ন তার মা’কে নিয়ে এসেছে।
এদিকে মাধবীলতা রোহানের বাড়ি থেকে বেরিয়ে একটা নির্জন জায়গায় গিয়ে রোহানকে ফোন দিয়ে ডাকে। রোহান বেচারা মাধবীলতার ফাঁদে পা দিয়ে ফেলে। কোনকিছু না ভেবেই চলে যায়। রোহান ভেবেছে মাধবীলতা হয়তো কিছুই জানে না। রোহান এসেই বলে,
” কী ব্যাপার মাধু সোনা হঠাৎ এখানে ডাকলে?
” আসলে হয়েছি কী বাবু! আমি অনেকদিন ধরেই তোমাকে একটা উপহার দেবো ভাবছিলাম। তাই ভাবলাম এরকম নির্জন জায়গায় তোমাকে উপহারটা দেবো। যাতে করে শুধু আমিই এই উপহারের সাক্ষী হয়ে থাকতে পারি।
” আচ্ছা? কী এমন উপহার দেবে সুইটহার্ট?
” দেবো। তার আগে চোখ দুটো বন্ধ করো।
” কিন্তু কেনো?
” আহা চোখ দুটো বন্ধ করো না প্লিজ।
” আচ্ছা বাবা করলাম চোখ বন্ধ।
” আমি না বলা পর্যন্ত চোখ খুলবে না।
রোহান চোখ বন্ধ করতেই মাধবীলতা পিছন থেকে ছুরি বের করে রোহানের পেটে চালিয়ে দিল। রোহানের পিলে চমকে ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে শুয়ে পড়ে।
” মাধু সোনা তুমি এটা কী করলে? আমাকে বাঁচাও প্লিজ।
মাধবীলতা সেই পুরোনো পৈশাচিক হাসি দিয়ে বলল,
” বাঁচাবো? তাও আবার তোকে? তুই ভাবলি কী করে যে তোকে আমি বাঁচাবো?
আমি দাবার গুটি ছিলাম তাই না? আমাকে যেভাবে ইচ্ছে সেভাবেই নাচিয়েছিস তুই! তোকে আমি বিশ্বাস করছিলাম। তাই নিজের খালার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে রাজি হয়েছিলাম। কিন্তু তুই নিজেই মেরেছিস তাকে। এতটা নিচু তুই? সামান্য কিছু সম্পত্তির জন্য নিজের মা’কে হত্যা করতে তোর হাত কাঁপলো না একবারের জন্যেও? হত্যা তো করেছিস তুই। আর আমাকে বলেছিস স্পর্শ হত্যাকারী। শুধুমাত্র তোর মিথ্যে কথায় মজে গিয়ে আমি শত মানুষের বিশ্বাস ভেঙেছি। মেরে ফেলেছি একটা নির্দোষ মানুষকে। যে কি-না আমাকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসে। যে নির্ভয়ে আমাকে বাঁচাতে এসেছিল। এই পর্যন্ত তো ঠিকি ছিল। কিন্তু তুই আমার সাথেও ভালোবাসার নাটক করেছিস শুধুমাত্র নিজের স্বার্থ হাসিল করার জন্য। তুই আমাকেও ঠকিয়েছিস।
এবার রোহানও পৈশাচিক হাসি দিয়ে বলল,
” আমি নাহয় মরেই গেলাম। কিন্তু তোকে যে এতটা ভালোবাসলো, সেই তো মরে গেছে হাহাহা।
মাধবীলতা আর বিলম্ব না করে রোহানের গলায় ছুরি ঢুকিয়ে দিল। বেচারা গলাকাটা মুরগির মতো ছটফটিয়ে মরে গেল। মাধবীলতা ছুরি থেকে নিজের আঙুলের ছাপ মুছে ফেলে সেখান থেকে চলে আসে। বাড়ি ফিরে এসে দরজা বন্ধ করে ঘরের এক কার্নিশ ঘেষে বসে ইচ্ছেমতো কাঁদতে লাগলো। একদিনেই তার জীবনটা উলোটপালোট হয়ে গেল। মাধবীলতা কিছু ভাবতে পারছে না। এমন সময় দরজায় কেউ কড়া নাড়ে। চোখের পানি মুছে দরজা খুলে দিল। মিহি দাঁড়িয়ে আছে।
” আপু আমি ভাইয়ার কাছে যাব।
মাধবীলতা আবারও মিহিকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে শুরু করল।
কার কাছে নিয়ে যাবে সে? যে মানুষটা কি-না আর বেঁচেই নেই।
” আপু তুমি কাঁদছো কেনো? তুমি তখন ভাইয়াকে মেরেছো কেনো? ভাইয়া কী তোমাকে বকা দিয়েছে আপু?
মাধবীলতা মিহির মাথায় হাত বুলিয়ে বলে,
” না সোনা তোর ভাইয়া আমাকে বকেনি। বরং আমরাই যে ওর সাথে অন্যায় করেছি রে।
” আপু আমাকে ভাইয়ার কাছে নিয়ে চলো না প্লিজ?
মাধবীলতা চিৎকার করে বলল,
” তোর ভাইয়া আর বেঁচে নেই। আমি কীভাবে তোর ভাইয়ার কাছে নিয়ে যাব।
মাধবীলতার চিৎকার শুনে ভয় পেয়ে মিহি কাঁদতে কাঁদতে চলে যায়।
মিহি চলে যাওয়ার পর মাধবীলতা আবীরকে ফোন দেয় স্পর্শের দাফনের খবর নেওয়ার জন্য। মাধবীলতার ফোন পেয়ে আবীর বারবার ফোনটা কেটে দেয়। কিন্তু মাধবীলতা লাগাতার ফোন দিয়েই চলেছে। আবীর বিরক্ত হয়ে ফোনটা রিসিভ করে। মাধবীলতা কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বলল,
” আবীর ভাইয়া! ওনার কী দাফন হয়ে গেছে?
আবীর একটু সাইটে গিয়ে বলল,
” দেখুন আমি নিজের অজান্তেই অনেক বড় ভুল করে ফেলেছি। আর চাই না নতুন করে কোনো বিপদ বাড়াতে। ভালো থাকবেনা। আর কখনো আমাদের সাথে যোগাযোগ না করলে খুশি হবো।
এই বলে আবীর মুখের উপর ফোন কেটে দেয়। সুবর্ণা এসে আবীরকে বলে,
” ভাইয়া এখানে সবাই রয়েছে। কিন্তু মাধবীলতা আপুকে কেনো দেখতে পাচ্ছি না? উনি কোথায়? যে সময় স্যারের পাশে থাকার কথা সেই সময়টাতেই তিনি নেই।
” জানি না সে কোথায়। হয়তো গেছে তার আপন ঠিকানায়।
এমন সময় অপারেশন থিয়েটার থেকে ডক্টর বেরিয়ে আসে। আবীর দৌড়ে যায় ডক্টরের সামনে। ডক্টর মন খারাপ করে কিছুটা মাথা নিচু করে রয়েছে।
” ডাক্তারবাবু ভাইয়ার কী অবস্থা? উনি সুস্থ আছেন তো? কোনো ক্ষতি হয়নি তো?
ডক্টর শীতল কণ্ঠে বলল,
” আমি দুঃখিত মি. আবীর।
চলবে ইনশাআল্লাহ,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here