এক ঝাঁক জোনাকির আলো পর্ব ২৩

#একঝাঁক~জোনাকির~আলো🍁
#writer~হাফসা~আলম 🍂
.
.
২৩.____________________________________

সাফার মত চঞ্চল একটা মেয়েকে নিষ্প্রাণ হয়ে বসে থাকতে দেখে কারোরই ভালো লাগছে না।হাত ভর্তি রক্ত দেখে ইফতেখার সহ সবাই আহত চোখে তাকিয়ে আছে তার দিকে।কষ্টে সবার বুক ছিঁড়ে নিশ্বাস বেড়িয়ে আসছে।ইফতেখার সাফার মাথা নিজের বুকে চেপে আছে।বাড়িময় রমরমে পরিবেশটা এখন নেই।নিভ্রর হাত রক্তাক্ত হয়ে আছে।বাড়ির বেশির ভাগ কাঁচের জিনিস গুলো সে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে।অভ্রর ঘামে একাকার অবস্থা। তার মাথা ধরে আছে।পরিশ্রম হয়েছে আজ খুব।নিভ্র একবার সাফার দিকে তাকিয়ে চোখ সরিয়ে নিলো।সাফাকে চাঞ্চল্যতায় তার কাছে বেশি ভালো লাগে।এই শান্ত নিষ্প্রাণ সাফাকে তার ভালো লাগছেনা।একে দেখলে কষ্টে তার কলিজায় ব্যথা হয়।খুব ব্যথা।ওই জানোয়ারটাকে খুন করতে পারলে নিভ্রর এই ব্যথা কিছুটা কমতো।নিভ্র ভাবতেও পাড়ছেনা আর একটু দেড়ি হলে কি হতে পারতো??এটা ভাবতেই তার নিজের চুল রক্তমাখা হাতে পিছনে সেট করে সে।শরীর এখনো থরথর করে কাপঁছে।

🍁কিছুসময় আগে___________

নিভ্র ঘড়ি দেখছে। মেয়েটাকে পাচঁ মিনিট সময় দিয়েছিলো।আর এখন দশ মিনিট ওভার হয়েগেছে তবুও সাফার আসার নাম নেই।নিভ্রর রাগ উঠছে।সাফা সব সময় নিজের মন মত চলে।তার কথার কি কোনো দাম নেই।বাচ্চাটাকে দিয়ে যে চিরকুট পাঠিয়েছে তার সময়ও এখন আরো বেশি হয়েগেছে সাফা এখনো নিজের পদধূলি ছাদে দিলো না।মেজাজ খিঁচে আসে নিভ্রর।তাই রেগে ধাম ধাম পা ফেলে সে নিচে যায়।মেয়েটার ক্যারলেস ভাব দিন দিন বাড়ছে। এর একটা ব্যবস্থা করতে হবে।ঠাটিয়ে দুই একটা নিভ্রনীলের হাতের খেলে সোজা হয়ে যাবে।যেখানে নিভ্রনীল কারো জন্যে একমিনিট অপেক্ষা করেনা সেখানে এতসময় অপেক্ষা করেছে সে।তারপরো সাফা এলো না।ওকি বুঝেনা নিভ্রই তাকে আসতে বলেছে??তারপরো উপেক্ষা করার সাহস হয় কি করে??নিভ্র রেগে মেগে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামে।হাতা হাতির জন্য চুড়ির ঝন ঝন শব্দের সৃষ্টি হয়েছে।নিভ্র কান খাড়া করে।এই শব্দ তার খুব চেনা। এটা তো সাফার চুড়ির শব্দ।নিভ্র দ্রুত পায়ে এগিয়ে যায়।এক পাশে সবুজ চুড়িগুলো ভেঙে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়ে আছে। নিভ্রর টনক নড়ে। বিচলিত পায়ে সে চারপাশ একবার ঘুড়ে দেখে।অদ্ভুত ভাবে কিছুই পেলো না সে।নিভ্র রুমে রুমে চেক করা শুরু করে।মনের মাঝে ভয়েরা জমে আছে।চোখে মুখে ভয়াত্নক ভাব ফুটে উঠেছে।নিভ্র ঘামছে।শরীর থর থর করে কাপঁছে। একটা রুমের সামনে এসে কারো শ্বাসরোধ করার শব্দে নিভ্র থমকায়।ব্যস্ত ভঙিতে পা ফেলে রুমের দরজা ঠেলে দেয়।সামনে তাকিয়ে সে হতবাগ। এটা দেখার জন্য সে মোটেও প্রস্তুত ছিলো না।শাহিন সাফার মুখ চেপে হাত পিছনে ধরে দাঁড়িয়ে আছে।নিভ্রকে দেখতেই শাহিন সাফার হাত ছেড়ে দেয়।সাফার
মুহূর্তেই শ্বাস ফিড়ে আসে।দ্রুত সে নিভ্রর কাছে গিয়ে তাকে জাপ্টে ধরে।নিভ্র এখনো থ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।রাগ যেনো পা থেকে ধীর গতিতে মাথায় উঠছে।সারা শরীর ক্রমাগত কাপঁছে। নিভ্রর চোয়াল শক্ত হয়ে আসে।সাফার কান্না জড়িত শব্দ নিভ্রর কানে এসে অগ্নি শিখার মত বাড়ি খায়।চোখ দিয়ে মুহূর্তেই আগুনের ফুলকি বেড় হয়।নিভ্রর সাদা পাঞ্জাবী সাফার চোখের পানিতে ভিজেঁ একাকার অবস্থায় রূপ নিয়েছে।নিভ্র এক হাতে সাফাকে জড়িয়ে ধরে।খুব শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।এই ধরার মাঝে আছে এক মুঠো ভরসা।যা বার বার বলে আমি আছি??নিভ্র সাফাকে এক পাশে সরিয়ে দেয়।শাহিনের কলারটা ধরে ঘুষি মারা শুরু করে।মারতে মারতে টেনে হিচড়ে নিচে সবার সামনে নিয়ে আসে।এক হাতে শাহিনকে আর এক হাতে সাফাকে ধরে রেখেছে নিভ্র।শাহিনকে মেরে নিচে ছুঁড়ে দেয়।শাহিন ঠোঁটের রক্ত মুছতে মুছতে গলা উঁচিয়ে বলল………

—-“দেখো নিভ্র আমার তোমার সাথে কোনো শত্রুতা নেই।শুধু সাফার সাথে কথা বলতে চাই।ওকে আমি পছন্দ করি অনেক আগে থেকে তাই ওকে বুঝাতে এসেছি এর বেশি কিছুনা।তুমি শুধু শুধু আমাকে মেরে শত্রুতার জন্ম দিচ্ছ।সামান্য একটা মেয়ে আমাদের মাঝে বিদ্রূপ সৃষ্টি করছে।”

নিভ্রর কানে যেনো একটা কথাই বাজছে।সামান্য মেয়ে।এই মেয়েটা তার, নিভ্রনীলের একমাত্র ঔষুধ আর এ বলে কিনা সামান্য। মুহূর্তেই নিভ্রর রাগ প্রকট আকার ধারন করে।বাড়িময় সব মানুষ উৎসুক জনতার মত সব দেখছে।মাহবুব চৌধুরী হতবাগ। নিভ্রর এমন রাগের সাথে কেউই পরিচিত না।বাড়িময় পিনপিনে নিরবতা বিরাজ করছে।নিভ্র সাফার হাত ধরে।সাফার কাটাঁ জায়গায় হাত লাগে। ব্যথায় কুকঁরে উঠে সে।নিভ্র হাত সরায়।সাফার চোখের পানি যেনো তার কলিজার জ্বালাটা আর বাড়িয়ে দিচ্ছে। নিভ্রর নিজেকে কেমন উম্মাদ লাগছে।বুকটা ভারি হয়ে আছে।নিভ্র সাফার হাত উপর করে ধরে তাকে ইফতেখারের কাছে নিয়ে আসে।ইফতেখার এখনো বাকরুদ্দ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।নিভ্রর চোখের দিকে তাকাতে পাড়ছেনা কেউ।নিভ্র সাফার হাতটা ইফতেখারের হাতে দিয়ে বলে……..

—-“আম্মু ওকে তোমার কাছে রাখলাম।ওই জানোয়ারটাকে সায়েস্তা করে আসি আগে।কুত্তার জাতের সাহস হয় কিভাবে ওর গায়ে হাত দেওয়ার??

আম্মু ডাক শুনে ইফতেখারের মুখ হা হয়ে যায়।কত বছর পরে সেই মোহনিয় শব্দটা নিজের ছেলের মুখে শুনেছে তিনি।নিভ্র চেয়ার টেনে দেয়।সাফাকে বসিয়ে দেয়।নিভ্র রাগ, ক্ষব নিয়ে শাহিনের মুখে ক্রমাগত ঘুষি দেওয়া শুরু করে।শাহিনো কম না।সেও যথেষ্ট মারামারি পাড়ে।নিভ্রকে সামলানো দায় হয়েগেছে। মাহবুব সাংবাদিক আর মেহমানদের বিদেয় করে দেয়।নিভ্রকে সামলানো কারো দাড়া সম্ভব না অভ্র বাদে।অভ্র নিশানদের পরিবারকে বিদায় যানাতে গেছে।নিশান নিভ্রর বন্ধ সে হিসেবেই রাফার সাথে পরিচয় বিয়ে।অভ্র দরজা দিয়ে ডুকতেই নিভ্রর ভয়ঙ্কর সিংহের মত চিৎকার শুনতে পায়।নিভ্র চেঁচিয়ে বলল……..

—–“তোর সাহস তো কম না নিভ্রনীলের বাড়িতে এসে তারই সম্পদের উপর হাত দেস।তোর এই হাত আমি গুঁড়িয়ে দিবো।তখন বুঝবি নারীদের গায়ে বিনা অনুমতিতে হাত দেওয়া কতটা জঘন্য অপরাধ।যে ফুলে নিজে হাত দিতে চাইনা মুছড়ে যাবে ভেবে আর তুই?? শালা তোর সাহস দেখে অবাক এই নিভ্রনীল। আমি হতবাগ “আরিফ……
.
আরিফ নিভ্রকে এতটা ভয়ঙ্কর হতে দেখে নি।আরিফ নিজেই ভয় পেয়েগেছে।নিভ্র নিজে কখনো কাউকে তেমন মারেনা।মারামারি করে তবে নিজে না লোক দিয়ে।কিন্তু আজ নিভ্রর এমন পাগলটে মার দেখে আরিফ কেঁপেকেঁপে উঠে।নিজের নাম শুনে আরিফকে বাকিটা বলা লাগলো না সে স্টিকটা এগিয়ে দিতেই নিভ্র ইচ্ছে মত মারা শুরু করে।বাড়ির সবাই মোটামুটি কাহিনী বুঝতে পেরেছে তাই সাখাওত আবার সোফায় বসে পরে।পায়ের উপড় পা দিয়ে সে আনন্দের সাথে আয়েশ করে এই দৃশ্য দেখে।শাহিন সাফার পিছনে ভার্সিটির প্রথম দিন থেকেই ঘুড়ছে।অভ্র মাঝে মাঝে খেয়াল করলেও কিছু বুঝে উঠতে পারেনি।ব্যাপারটা যে এতটা এগিয়ে যাবে সে ভাবতেও পারেনি।রাজিব আর মাহবুব চৌধুরীও ছেলের পাশে আয়েশ করে বসে।তাদের ভাব দেখে মন্ত্রী মোহন মন্ডল ভারী অবাক।সে এবার না পারতে তাদের কাছে এগিয়ে গিয়ে বলে………

—-“ও আমার ছেলে । ওকে ছেড়ে দিতে বলেন চৌধুরী সাহেব।

মাহবুবের তেমন ভাবমূর্তির পরিবর্তন হলো না।সে আগের মত ঠোঁটে হাসি ঝুলিয়ে বসে আছে।মনে হচ্ছে সিনেমা দেখছে।অভ্র এত সময় ধরে বুঝার চেষ্টা করছে।এবার বুঝতে পেরে তার মত শান্ত ঘোড়াও হঠাৎ তেজি ঘোড়ায় রূপ নিয়েছে।মোহন নিজের গার্ডসদের এগিয়ে যেতে বলে।এক তুমুল মারামারি মহল তৈরি হয়েছে চৌধুরী ভিলায়।মোহন এবার রাজিবের সামনে দাড়িয়ে বলে…..

—-“রাজিব সাহেব আপনি কিছু বলেন??”

রাজিব শান্ত চোখে তাকিয়ে বলল……..

—-“অন্যায় যে করে এবং সহে দুজনই সমান অপরাধী তাই আপনিও একজন মন্ত্রী হয়ে এটা দেখেন এবং শিক্ষা নেন।আপনার ছেলের সাহস দেখে আমি নিজেই অবাক চৌধুরী বাড়িতে এসে এই বাড়ির মেয়ে সাফা মামুনির সাথে বাজে বিহেভ করে… এই অভ্র নিভ্র এই ছেলের ২০৬টা হাড্ডির ২০০টাই ভেঙেদে।তোদের বাবাদের আদেশ এটা।”

মোহন এবার ভয় পেয়ে যায়।অভ্র নিভ্রর ক্যালানি খেয়ে তার ছেলের অবস্থা খারাপ।আর কিছু খেলে পরকালের টিকেট কনফার্ম। দুজনের মার খেয়ে তার বডিগার্ডসদেরও অবস্থা খারাপ।তার মাথায় এটাই আসছে না এতগুলো লোক দুজন ছোকড়ার কাছে পাড়লো না।এক একটা আহাম্মক। মাহবুব এবার উঠে দাড়ায়।রক্তে চৌধুরী ভিলার ফ্লোর লাল হয়ে আছে।এই মুহূর্তেই এদের থামাতে হবে।যা দিয়েছে এটাই এনাফ এই বারের মত।মাহবুব অভ্র নিভ্রের হাত ধরে।দুজনেই শান্ত হয়ে আসে কিন্তু চোখে মুখে জ্বলন্ত ভাব কাটেনি। নিভ্র চেঁচিয়ে উঠে……
—-“দাদাজান একে আমি ছাড়াবো না।আমার জিনিসে হাত দিলে হাত না শুধু মাথাটাই কেটেঁ নি আমি এটা জানাতে হবে জানোয়ার টাকে।খুন না করা পর্যন্ত আমার শান্তি হবে না।দাদাজান ছাড়ুন।

—-“নিভ্র এনাফ। এবার শান্ত হও।একে পুলিশে দেওয়া হোক।

অভ্র একটা জোড়ে লাথি দিয়ে ঠেলে দেয় শাহিনকে।মাহবুব দুজনকে ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে।এবার রাজিব আর সাখাওত এগিয়ে আসে। এসপি সবাইকে নিয়ে যাওয়ার হুম করে।বাড়ি খালি হয়ে আসে মুহূর্তেই।রাজিব নিভ্র অভ্রকে সোফায় বসিয়ে দেয়।মাথায় বরফ ব্যাগ ধরে।নিভ্রর রাগ এখনো কমে নি তাই বাড়ির জিনিস ভাঙচুর করা শুরু করে।নিভ্রকে এবার আর থামানো যাবে না।অভ্র ছাড়া।নিভ্রর হাত ভর্তি রক্তে মাখা মাখি অবস্থা। এবার অভ্র শান্ত হয়ে নিভ্রকে জড়িয়ে নেয়।নিভ্র প্রথমে রাগ ঝাড়তে চেয়েও আর পাড়েনা। অভ্র শান্ত গলায় পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে বলে……..

—-কুল নিভ্র।কুল।ঠান্ডা হ হাতের কি অবস্থা করেছিস।চল।

নিভ্রকে সোফায় বসানো হয়।মোহনা ফাস্টএইড বক্স নিয়ে আসে অভ্র ব্যান্ডেজ করায় মনযোগ দেয় আর নিভ্রর অধিকার বোধ দেখে হাঁসে। আমার জিনিস!!আমার সম্পদ!!কথাটায় কত আত্নবিশ্বাস আছে।
.
……..বর্তমান 🍁

সাফা এখনো জড়িয়ে আছে ইফতেখারকে।ভয়ে তার শরীরের কম্পোন থামছেনা।রক্তদেখে তার আরো খারাপ অবস্থা। মাথায় পানি দেওয়া হচ্ছে তাকে।মাহবুবের খুব খারাপ লাগছে।সাফা তাদের কাছে মূল্যবান আমানত।এটার যত্ন নেওয়াই তাদের গুরুত্বপূর্ণ কাজ।সে জায়গায় এমন একটা ঘটনা।তিনি লজ্জিত খুব।আমানতের খেয়ানত হয়ে গেছে।এটা শুধরাবার সুযোগ থাকলেও তিনি লজ্জিত।রাফা সাফার হাত দেখে আঁৎকে উঠে।দুই হাতের চুড়ি ভেঙে বাজে অবস্থা মাথার কদঁম গোলাপটাও ছিড়ে গেছে।সাফার এমন চেহারা দেখে তার কান্না পাচ্ছে।জড়িয়ে ধরে সাফাকে তার ভুল হয়েছে সাফাকে একা রাখাটা।রাফা নিজের থেকে সাফাকে ছাড়িয়ে বুঝতে পারে সাফা জ্ঞান হারিয়েছে।রক্তের ভয়ে এত সময় কেপেঁছে সে।এত রক্ত এক সাথে দেখলেই তার এমন হয়।বুক কাঁপে শরীর কাঁপে।মাথা ঘুড়ে।রাফা সাফাকে কিছুক্ষণ ডাকে।নিভ্র তাকাতেই বুঝতে পারে।সে দাঁড়িয়ে সবার সামনে সাফাকে কোলে তুলে নেয়।বাড়ির সবাই অবাক হলেও নিভ্রর কাহিনী সবার বুঝা হয়েগেছে। পৃথিবীতে আল্লাহ চাইলে সব হয়।নিভ্রকে নিয়ে তারা ভাবত এর কি হবে??গতি পথ উনিই নির্ধারণকারী।ভেবে সবাই মুচকি হাঁসে ছেলেরা সবাই। এত চিন্তার মাঝেও ছেলেদের এভাবে হাসি দেখে মেয়েদের মাথা গরম।সবাই হন হন করে সাফার রুমে চলে যায়।যাওয়ার আগে রাগি চোখে তাকিয়ে যায়।
.
.
নিভ্র সাফাকে যত্নের সাথে বিছানায় শুয়ে দেয়।ময়নাকে তার বক্স নিয়ে আসতে বলে।রাফা সাফার একপাশে বসে পরে।সবাই তার রুমে ভীর জমিয়ে আছে।নিভ্র নিজের অর্ধেক ব্যান্ডেজ করা হাতের দিকে তাকায়।তার রাগ হয়।কেনো আগে এলো না।তাহলে তো সাফার হাত এভাবে জখম হতো না।নিভ্র খুব ধীরে হাতে স্যাভলন লাগায়।পরিষ্কার করে হাতের কাঁচ।সাফার জ্ঞান নেই তবুও নিভ্র ফু দিয়ে দিয়ে স্যাভলন লাগাছে যা সবাইকে অবাক হতে বাদ্ধ করছে।এতটা ক্যারি নিভ্র কবে হয়ে উঠেছে??এটাই সবাই ভাবছে।তবে সাফা যে নিভ্রর কতটা জুড়ে দখল করেছে এটা বুঝতে সবার তেমন অসুবিধা হচ্ছে না।সবাই বাহিরে চলে আসে।নিভ্র সাফার হাতে ইনজেকশন পুশ করতেই মনে হয় ব্যথাটা তার গায়ে লাগছে খুব।কিন্তু সাফাকে সে আরো একাবারও ইনজেকশন দিয়েছে তখন তো এই তীব্র ব্যথা ছিলো না??নিভ্র উত্তর খুঁজে না।সাফার দু’হাতে ব্যান্ডেজ করে হাতে চুমু খায় সে।সাফার কপালে গালে এলোমেলো হয়ে আশা চুলগুলো সরিয়ে দেয় সে।কানের নিচে গুঁছিয়ে রাখে চুলগুলো। চোখের কোটারে জমে থাকা পানি গুলো মুছে দেয়।নিভ্র এক অদ্ভুত কান্ড করে বসে।সে ঝুঁকে সাফার কপালে একটা চুমু খায়।গালের দু’পাশেও চুমু খায়।দুচোখের পাতায় আলতো চুমু দিয়ে সরে আশে।নিজের এহেন কান্ডে নিভ্র এবার অবাক না হয়ে আনন্দিত।ভালো লাগছে তার।এত সময়ের তীব্র ব্যথা কিছুটা হলেও কমে এসেছে।মনে শীতল হাওয়া বইছে।সাথে একটা শান্তি বিরাজ করছে।অস্থিরতা নেই তার মাঝে।নিভ্র সাফার হাত নিজের মুঠোয় নিয়ে অসংখ্য চুমু আঁকে।নিভ্র গভীরতা কি জানে না।তবে সাফাকে তার নিজের গভীরতা মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে সাফা তার গভীরের কিছু।তার হৃদয়ের গভীর জায়গাটা সাফা নামের মেয়ে নিজের নামে নিয়ে নিয়েছে।নিভ্র ছোট থেকেই মেয়েদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখে তাই ফিলিংস বিষয়টা সে বুঝতে পাড়ছেনা। এটার কি নাম দিতে হয় সে যানে না।শুধু গভীরতা উপলব্ধির ক্ষমতা সে অর্জন করতে পেরেছে।শুধু গভীরতা।তবে এই শুধুটাও যে শুধু না সেটা মাহবুব অভ্র ভালো করেই বুঝেছে।নিভ্রর আজকের এই হিংস্র রূপ সবাইকে অবাক করেছে।অভ্র নিজেও অবাক হয়েছে।এতটা ডেস্পারেট হবে কিছু নিয়ে এটা কারোরি যানা ছিলো না।নিভ্র বসে থাকার মানুষ না।শাহিনের যে কি করবে এটা ভেবেই মাহবুব চিন্তিত।নিভ্রর মনযোগ সরাতে হবে তা নাহলে ভয়ঙ্কর কিছু হতে পারে।
.
.
#চলবে____________________🍁

ভুলগুলো আল্লাহর দেওয়া মহান গুন ক্ষমার চোখে দেখবেন _______🍂

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here