এক ঝাঁক জোনাকির আলো পর্ব ২২

#একঝাঁক~জোনাকির~আলো🍁
#writer~হাফসা~আলম 🍂
.
.
২২.___________________________________

সবুজ জামদানী, হাত ভর্তি কাঁচের সবুজ চুড়ি,চোখে কালো কাজল, খোঁপা করা চুলের এক পাশে একটা সাদা গোলাপ আর একটা কদম গুঁজে দেওয়া হয়েছে।সাফা লিপস্টিক দেয় না তেমন তাই আজও দিলো না।একহাতের কব্জির ভাঁজে জামদানীটা জড়িয়ে আছে।রাফা আয়নার সামনে থেকে সাফাকে নিজের দিকে ঘুড়িয়ে দেখে।রাফার মনে হচ্ছে এক সবুজ পরীর সাথে তার দেখা হয়েছে।সামান্য সাজেও মেয়েটাকে অপ্সরী লাগছে।রাফা অবাক চোখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে দেখে।তারপর সে ঠোঁটে হাসি রেখে বলল…….
—-অপরূপ লাগছে।পাগল করার মত মারাত্মক। ঘায়েল করার মত চোখ আর মুগ্ধ করার মত চুলের গোলাপ আর কদম।আর কি লাগে সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে।ইশশশ্ মিষ্টির দোকান কি সুন্দর যে লাগছে তোমাকে আমি নিজেই পাগল হয়ে যাচ্ছি। চলো সবাইকে তো দেখানো উঁচিত আমার মিষ্টির দোকান আসলে কত সুন্দর।

সাফার গালের দু’পাশ লজ্জায় লাল হয়।মাথা নিচু করে সে নিজের লজ্জা লুকাতে ব্যস্ত। সাফা রাফার সাথে নিচে নামে।বাড়ির সাজ দেখে সাফা হা করে দেখে সব।কত সুন্দর করে বাড়িটা সাজানো হয়েছে।চারপাশে আলো আর ফুলের সমারোহ। হালকা সপ্ট মিউজিক চলছে।পরিবেশটাই আলাদা হয়েগেছে। সিঁড়িতে আসতেই সাফা নিচের দিকে তাকিয়ে কাউকে খুঁজতে শুরু করে।আর সে হচ্ছে নিভ্র।কিন্তু তাকে দেখা যাচ্ছে না।নিচের মানুষ গুলোকে দেখে সাফা একটু নাভাস হয়।ওর বয়সি মেয়েরা ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরেছে।ভারী মেকাপ করেছে কিন্তু সাফা তো অতিসাধারণ। সবাই তাকে কেমন কেমন করে দেখছে।রাফা পাশে থাকায় সবার চোখ সিঁড়ি দিকে।সবাই তাকিয়ে সাফাকে দেখছে।সবার চোখ যেনো সরছেইনা।নিভ্র মাত্র সাংবাদিকদের সাথে কথা বলে দরজা দিয়ে ঘরে ডুকছে।নিভ্রর চোখ সিঁড়ি দিকে যেতেই তার লাগানো ঠোঁটজোড়া আপনা আপনিই আলাদা হয় যায়।একদৃষ্টিতে নিভ্র তাকিয়ে থাকে।এই দৃশ্য থেকে চোখ ফেরানো দায়।স্নিগ্ধ কাজল কালো চোখে যেনো থমকে আছে নিভ্র।এই প্রথম নীলাভ চোখে কাজল দেখে নিভ্রর যেনো সব থমকে গেছে।নীল কালোর মিশ্রিত এক মায়াময়ী চোখ।ইশশ।নিভ্রর মনের অজানতেই হাত বুকে চলে যায়।ব্যথাটা আবার হচ্ছে। এই মেয়েটাই দায়ি এই ব্যথার জন্য।সব মেয়েদের চোখ যেখানে নিভ্রতে আঁটকে আছে নিভ্রর সবুজ চোখ জোড়া আঁটকে আছে সবুজ শাড়িতে মোড়ানো এক কাজল কালো নীলাভ চোখের অধিকারি মেয়ের উপর।রাফা হাত ধরে সাফাকে নামায়।সাফা নিচে নামতেই ইফতেখার আর মোহনা তাদের আত্নিয়দের সাথে পরিচায় করিয়ে দেয় তাকে।সবার ভাব দেখে সাফা অবাক।সবাই সাফাকে এমন ভাবে পরিচায় করিয়ে দিচ্ছে যেনো সাফা তাদের নিজেদের মেয়ে।পরিবারের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য সাফা।নিজেকে সাফার এখন আর একা একা লগছে না।ইফতেখারের এক ভাই আর এক বোন আছে আর মোহনার একটা বোন আছে।তাদের ছেলে মেয়ে আছে। তারাও এসেছে।নামিদামি লোকেদের আনাগোনা। মন্ত্রীর মেয়ের এনগেইজমেন্ট বলে কথা।রাফা সাফাকে সঙ্গে নিয়ে নিশানের সামনে দাঁড়ায়।তারপর বলে……
—–“এটাই হলো আমার মিষ্টির দোকান।দেখো একদম মিষ্টির মতো তাই না।

নিশান হাসে রাফার কথা শুনে।সাফার দিকে তাকিয়ে সে বলল…….
—-“কিউট গার্ল। সম্পর্কে আমি তোমার জিজু হবো আর তুমি শালিকা।
সাফা লাজুক হাঁসে। জবাবে বলে…..
—-“হুম।
—-“এবার নাম বলো???
—–“সাফ্রিনা সাফা।
—-“আমি কিন্তু আগে থেকেই তোমার নাম জানতাম তবুও জিজ্ঞেস করেছি।”
নিশানের এমন কথায় রাফা এবং সাফা হেঁসে উঠে।একটু দুর থেকে দাঁড়িয়ে সে হাসি দেখে নিভ্র।নিভ্রর এখন সাফার সামনে দাঁড়িয়ে বলতে ইচ্ছে করছে তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে।কিন্তু সে বলতে পাড়ছেনা। সাফার সামনে দাঁড়ালেই কেমন যেনো সব গুলিয়ে ফেলে নিভ্র।নিভ্রর আশেপাশে মৌমাছির মত মেয়েরা ঘুড়ঘুড় করছে।নিভ্র জাস্ট বিরক্ত এদের প্রতি।এদের জন্য সে সাফাকে ভালো ভাবে দেখতেও পাড়ছেনা। এটা নিভ্রকে খুব জ্বালাচ্ছে।নিভ্র সোফায় বসে আছে।একটা মেয়ে তার পাশে বসে পরে।নিভ্র ভ্রুজোড়া কুঁচকে একবার তাকায় তার দিকে।কালো রং এর হাঁটুর উপরে একটা স্টনের কাজ করা জামা পড়েছে মেয়েটা।মুখে আলকাতরা মানে মেকাপে ভরা।নিভ্রর মনে হচ্ছে তার গায়ের পার্ফিউমের চাইতেও এই মেয়ের মেকাপের গন্ধটা আরো বেশি কড়া।নিভ্র উঠে দাড়াঁতে যাবে তার আগেই মেয়েটা বলে উঠে……..
—-“হ্যাই আমি নাতাশা।আমি আপনার অনেক বড় ফ্যান।একটু কি কথা বলা যাবে??”
নিভ্র কথা বলার পরিস্থিতিতে নেই।সে এখন এক কদঁম গোলাপের মিশ্রিত মেয়েকে দেখতে ব্যস্ত।কেউ যখন কিছুতে অধিক ভাবে মনযোগী হয় তখন তার আশেপাশের কেউ যদি তাকে খুব প্রয়োজনীয় কথাও বলে তবুও সে বিরক্ত হয়।আর এখানে এই মেয়ে তাকে বেহুদা কথা বলছে।নিভ্রর চোয়াল শক্ত হয়।কঠিন চাহনি দিয়ে মেয়েটার দিকে তাকায়।সাথে সাথে মেয়েটা মাথা নামিয়ে উঠে দাঁড়ায়। আর কথা না বলে সামনে থেকে বিদেয় হয়।নিভ্র আবার চোখ তুলে শীতল চাহনি দিয়ে সাফাকে দেখে।সাফা একপাশে দাড়িয়ে কথা বলছে রাফা আর নিশানের সাথে।সাফার চোখ এখনো নিভ্রকে একটা বার দেখার জন্য অপেক্ষায় আছে।সাফা চারপাশে একবার চোখ বুলিয়ে দেখে।নিভ্রকে না দেখে নিরাশ হয়ে সে রাফার দিকে তাকাতে যাবে তখনই সোফায় নিভ্রকে বসে থাকতে দেখে।হাঁটুতে হাত রেখে দুই হাত মুষ্টি বদ্ধ করে এদিকেই তাকিয়ে আছে।আজ সাদা পাঞ্জাবি পরেছে সে।সাদা পাঞ্জাবীতে তাকে এক স্নিগ্ধ পুুরুষ মনে হচ্ছে।কপালের চুলগুলো হাত দিয়ে সরিয়ে দিলো না।হাতের কালো ঘড়িটা লোমশ সাদা হাতে লেপ্টে আছে।তাই বেশিই আকর্ষণীয় লাগছে।দুজনের চোখাচোখি হয়।সাফা লজ্জা পেয়ে চোখ সরায়।
.
.
আংটি বদল হবে তাই নিশান আর রাফা আলাদা ভাবে সামনে চলে যায়।সাফা একপাশে দাঁড়িয়ে আছে।নিভ্র এগিয়ে এসে তার পাশে দাঁড়ায়। সাফা একবার চোখ ঘুড়িয়ে দেখে।হঠাৎ করেই নিভ্রকে নিজের পাশে দেখে সাফা অবাক হয়।নিভ্র ভাবলেশহীন ভাবে দাঁড়িয়ে আছে।বুকে হাত গুঁজে। সাফা প্রশ্ন ছুড়ে বলল……
—-“আপনি এখানে??
—“কেনো আসতে পারিনা নাকি??
—-“সেটা না।সবাই কেমন করে যেনো তাকায়।মনে হচ্ছে মেয়েগুলো আমাকে টুপ করে তুলে টপ করে গিলে ফেলবে।”
নিভ্র মুচকি হাঁসে। সাফার এমন কথাগুলোই তার বেশ ভালো লাগে।শুনলে শুধু শুনতেই ইচ্ছে হয়।নিভ্রর হাসি দেখে সাফা কপাল কুঁচকে এলো।চোখ ছোট করে নিভ্রর দিকে তাকিয়ে সে বলে……….
—-“হাসেন কেনো নিজে নিজে??আমাকেও বলেন আমিও হাসি।”
—“এমনেই হাসছি।আমার হাসির কারন লাগে না।
—-“তাহলে তো আপনি পাগল।পাগলে হাসে তিনবার একবার বুঝে একবার না বুঝে একবার সবাই হাসে তাই।আর আপনার হাসির যেহেতু কারন নেই তাহলে আপনি….(নিভ্র চোখ রাঙিয়ে তাকায়।সাফা এবার সংযোত হয়)না মানে এমনেই বলছিলাম আর কি।আপনি হয় তো জানেন না তাই।
.
কথাটা বলেই সাফা সরে যেতে চায়।নিভ্র সামনের দিকে তাকিয়েই সাফার ডান হাত খপ করে ধরে ফেলে।সাফা আকর্ষীক ভাবে স্তব্ধ। চোখ বড় বড় করে সে নিভ্রর দিকে তাকায়।নিভ্র এখনো সামনে তাকিয়ে আছে।এভাবেই সে বলে………..
—–“এত নাড়াচাড়া করছো কেনো??শান্ত হয়ে দাড়াও।
সাফা দাড়িয়ে পরে।তবে সামনের দিকে না তাকিয়ে নিভ্রর দিকে তাকিয়ে থাকে।এভাবে তো সে সারা জীবনই নিভ্রর বাম পাশে থাকতে চায়।সাফা এভাবে তাকিয়ে থাকতে দেখে নিভ্রর ভ্রু তুলে প্রশ্ন করে……
—-“কি হয়েছে??এভাবে তাকিয়ে আছো কেনো??
সাফা মাথা নাড়িয়ে বুঝায় কিছু না।সাফা সামনে তাকায়।তার বুক ধুরু ধুরু করে কাপঁছে। নিভ্রর ছোঁয়া গুলো তার শরীরে সব সময় কম্পোনের জন্ম দেয়।সাফা ঠোঁট চেপে হাঁসে। মাথা নিচের দিকে দিয়ে সে ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে আছে।নিভ্র সে হাসি দেখে ঠোঁটে কামড়ে ধরে নিজের।সাফার এমন বোকা বোকা কথা গুলোও তাকে মাতাল করে ইদানীং। এই ফিলিংসের নাম কি দিবে সে??কিভাবে নাম করন করা উঁচিত বুঝতে পারছেনা নিভ্র।নিভ্র সামনে তাকায়।হাতের ভাঁজে এখনো সাফার হাত।কিছুক্ষণ পরে নিস্তব্ধতা ভেঙে নিভ্র প্রশ্ন করে………
—–“জীবনের লক্ষ কি??পড়া লেখা করে কি করতে চাও??
সাফা ভাবলেশহীন ভাবে জবাব দেয়……
—-“আমার জীবনে লক্ষ বলতে একটা ফ্যাশন হাউজ খুলবো।আব্বুকে নিজের কাছে নিয়ে আসবো আর বিয়ে করবো।”

সাফার লাস্টের কথা শুনে নিভ্র বিষম খায়।চোকিতেই তার দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে কিছুক্ষণ ভাবতে থাকে।বলে কি এই মেয়ে??বিয়ে করবে??এটাও কি কারো লক্ষ হতে পারে??এটা নিভ্রর জানা ছিলো ন।নিভ্র সাফার দিকে তাকিয়ে তারপর ভারী অবাক হওয়া গলায় বলল……
—–“বিয়েও কারো জীবনের লক্ষ হয়???
—-“হয় তো।এটাইত বড় লক্ষ। এমন করে তাকিয়ে আছেন কেনো??আপনার তো এখন একটাই লক্ষ হওয়া উঁচিত সেটা হল বিয়ে। আমার তো তাও তিন স্টেপ বাকি।আপনার আর বাকি নাই।তাই আপনার বিয়ে করা উঁচিত।

নিভ্র সাফার কথায় চোখ গুলো আরো বড় করে ফেলে।বলে কি এ মেয়ে??বিয়ের জন্য এতো দুই পা এগিয়ে রেখেছে??ছেলে হলে গলায় মালা দিবে।নিভ্র চিন্তায় পরে।ভয়ও করছে।মেয়েটা ডেঞ্জারাস। খুবই ডেঞ্জারাস। নিভ্রর এমন ফেইস দেখে সাফা দাতঁ কেলিয়ে হেঁসে দেয়।নিভ্র চোখমুখ কুঁচকে তাকায়।সাফাকে মাঝে মাঝে তার উম্মাদ মনে হয়।আর ইদানীং তার নিজেকেই ভয়ঙ্কর উম্মাদ মনে হয়।সাফা নিভ্রর চোখের উপর হাত নাড়িয়ে বলে……….
—-“মজা করছিলাম।আপনি তো পুরাই সিরিয়েস হয়ে গেছেন??দেখেন আপনার বিয়ে করতে ইচ্ছে হলে করেন আর না হলে নেই।আমি কিন্তু করবোই।শুধু একটা ছেলের প্রয়োজন।”

নিভ্রর বুকে চিনচিনে ব্যথাটা তীব্র হয়।চোখ জ্বলে উঠে।মুখ শুকিয়ে যায়।সাফা সামনে তাকায়।নিভ্র যানে সাফা মজা করছে তবুও তার কষ্ট হচ্ছে। এত কষ্ট কেনো তার??এই বুকে এত ব্যথা হয় কেনো এটাই নিভ্র বুঝতে পারেনা।ডাক্তার হয়ে, হার্টসার্জেন হয়েও সে নিজের হার্টের রোগ বুঝতে পারছেনা।রাফার আংটি বদল হয়।সবাই তালি দিয়ে উঠে।সাফা খুশিতে চকচক করে বলে……
—-“উনাদের খুব সুন্দর লাগছে তাই না ”

নিভ্রর সেদিকে মন নেই।সে আবছা আলোতে সাফাকে দেখছে।সব দিকে অন্ধকার।সব লাইট রাফা আর নিশানের উপর।নিভ্র তাকিয়ে আছে সাফার প্রশারিত ঠোঁটজোড়ার দিকে। আর সেই লাল আভার গালের দিকে।অভ্র বিপরীত পাশ থেকে তাকিয়ে এ দৃশ্য দেখছে।তার ভালো লাগছে।কষ্ট গুলো আকড়ে ধরলেও তাকে কাবু করতে পারেনি।নিভ্র শাস্ত গলায় বলে……….
—–“হুম খুব সুন্দর লাগছে।অপ্সরীর মতো।গোলাপে মন্ডিত কদঁমের বাহারে জড়িয়ে আছে তার চুল ।কাজল কালো নীলাভ চোখ। হাত ভর্তি ঝুমুড়ঝুমড় শব্দ।আবেগি হাসি।

সাফা অবাক হয়।সে চোখ সরিয়ে তাকায় নিভ্রর দিকে।নিভ্রর চোখ নিজের মধ্যে দেখে সাফা হকচোকিয়ে যায়।নিভ্রর চোখে চোখ রাখে সাফা।নিভ্র চোখ সরিয়ে ফেলে।অভ্র এই দৃশ্য দেখে হাঁসে। মনে মনে বলে চোখে চোখ রাখতে পারলেই তুই সফল।তোর সুপ্ত ভালোবাসা প্রকাশিত হবে তবেই।
.
.
সাফা এক পাশে দাঁড়িয়ে আছে।একটা ছেলে তার হাতে একটা চিরকুট ধরিয়ে তাকে নিচে ঝুঁকতে বলে।সাফা নিচে ঝুঁকে আসতেই।ছেলেটা টপ করে সাফার টোল পরা গালে একটা চুমু আঁকে।সাফা অবাক হয়ে হা করে থাকে কিছুক্ষণ। ছেলেটা ফিসফিসে করে বলে………
—–“ভাইয়া বলেছে তোমায় একটা আদর দিতে। তারপক্ষ থেকে।তাই দিয়ে দিলাম।তোমার গাল কি নরম।…
ছেলেটা দৌড়ে পালালো।সাফা গালে হাত দিয়ে ভাবে এই ভাইয়াটা আবার কে।সাফা কাগজটা খুলে চোখের সামনে ধরে।তাতে কালো কালিতে লেখা “ছাদে এসো। জাস্ট পাচঁ মিনিট সময়।”সাফা বুঝতে পারছেনা তার কি যাওয়া উঁচিত নাকি না যাওয়া উঁচিত।সাফা এসব ভাবতে ভাবতেই ছাদের দিকে অগ্রসর হয়।একটা রুম পেরিয়ে যেতেই কেউ তাকে টেনে দেয়ালের পাশে নিয়ে আসে।সাফা এমন কান্ডে ভয় পেয়ে যায়।চোখবুজেই সে দীর্ঘশ্বাস নেয়।সাফা চোখ খুলে সামনে তাকাতেই অবাক হয়।ভয়ে তার হাত পা কাঁপছে সাফা চেঁচিয়ে উঠতে যাবে তার আগেই সামনের ব্যক্তি তার মুখ চেঁপে ধরে।সাফা চিৎকারের চেস্টা করছে কিন্তু পারছে না।সে এটাই ভাবতে পারছেনা শাহিন এখানে কি করছে।সাফাকে ঘামাচ্ছে।হাত ছাড়াতে চাচ্ছে সে।শাহিন সাফার হাতটা আরো জোড়ে চেঁপে ধরতেই ঝুমঝুম শব্দে চুড়ি গুলো ভেঙে তার হাতে ডুকে যায়।শাহিন হিংস্র গলায় বলল………..
—–“চেঁচাবেনা সাফা।তাহলে কিন্তু খারাপ হয়ে যাবে।আমি শুধু তোমার সাথে কথা বলতে চাই।কথা বলার সময় দেও।”
সাফা মাথা ঝাঁকাচ্ছে।তার একদম এই ছেলেটাকে ভালো লাগে না।উল্ট ভয় লাগে খুব।সাফার চোখ ভিজেঁ আসে।শ্বাস আটকে আসে।সাফা কান্নায় ভেঙে পরে।মনে মনে আল্লাহকে ডাকছে।যাতে তিনি কাউকে পাঠায়।এই ছেলে মোটেও ভালো না।এর মন মানুষিকতা সব খারাপ।
.
.
নিভ্র সাফার জন্য অপেক্ষা করছে ছাদে।সাফাকে সে সরাসরি জিজ্ঞেস করতে চায় তার কি হয়েছে।নিভ্র নিজের ভাবনায় নিজেই অবাক।ডাক্তার হয়েও সে সাফাকে প্রশ্ন করতে চায় তার নিজের কি হয়েছে??নিভ্র নিজের চুল পিছনে টেনে নেয়।পাঞ্জাবীর হাতা আরো উপরে তুলে নেয়।নিভ্রর ঘুম হচ্ছে না।সব জায়গায় সে সাফাকে দেখে।কিছুক্ষণ আগেই রহমত চাচাকে সাফা ভেবে কি কি বলে দিয়েছে তার ঠিক নেই।তাকে সবাই মোটামুটি এখন পাগল ভাবছে।নিজের এমন পরিবর্তনে সে নিজেই অবাক।নিভ্রনীল সাখাওত চৌধুরীর এমন অবস্থার জন্য সাফাই দায়ি।তাই সাফাকে সে প্রশ্ন করবে তার কি হয়েছে।তাকে এই সাফা কি করেছে??কেনো তার সব কিছু সাফাতেই শুরু সাফাতেই শেষ হয়??শুধু সাফা সাফা আর সাফা।হকিস্টিকের বারি খেয়েই তার এই অবস্থা এর একটা বিহিত করতে হবে।কিন্তু সাফা এখনো আসছে না কেনো??মেয়েটা এতো ক্যারলেস কখন কি করতে হয় এটাই তার মাথায় থাকে না।নিভ্রর রাগ হচ্ছে।যেখানে নিভ্রর জন্য সবাই অপেক্ষা করে সেখানে নিভ্র কিনা সাফার জন্য অপেক্ষা করছে??ভাবা যায়??কি সাঙ্ঘাতিক ব্যাপার।সাফার সাথে দেখা হওয়ার পর থেকে তার জীবনটা সাঙ্ঘাতিক ভাবে বদলে গেছে।তার মাঝে বুকে ব্যথার রোগ দেখা দিয়েছে। কতবার টেস্ট করেছে কিন্তু সব নরমাল বলছে।নিজের সিনিয়ার জুনিয়ার সব ডাক্তারকে দেখানো শেষ।কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছেনা।সব হয়েছে সাফার জন্য।এই সাঙ্ঘাতিক রোগের ঔষুধও ওই সাঙ্ঘাতিক মেয়েই দিতে পারবে।নিভ্রর এখন সাফাকে প্রয়োজন।
.
.
#চলবে…………🍁

ভুলগুলো আল্লাহর দেওয়া মহান গুন ক্ষমার চোখে দেখবেন _______🍂

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here