#এক_মুঠো_প্রেম
#Writer_Mahfuza_Akter
#পর্বঃ১৩+১৪
“আমার একলা আকাশ থমকে গেছে
রাতের স্রোতে ভেসে,
শুধু তোমায় ভালোবেসে।
আমার দিনগুলো সব রঙ চিনেছে
তোমার কাছে এসে,
শুধু তোমায় ভালোবেসে।
তুমি চোখ মেললেই ফুল ফুটেছে
আমার ছাদে এসে,
ভোরের শিশির খুব ছুঁয়ে যায়
তোমায় ভালোবেসে।
আমার একলা আকাশ থমকে গেছে
রাতের স্রোতে ভেসে …”
এতক্ষণ গানের তালে তালে ঠোঁট প্রসারিত করে হাসলেও আকস্মিক ভাবে গানটা থেমে যাওয়ায় আদ্র ভ্রু কুঁচকালো। স্পৃহা জানালার রেলিঙে মাথা ঠেকিয়েই হেসে বললো,
-দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে লুকিয়ে লুকিয়ে আমার গান শুনছেন, আদ্র?
আদ্র হকচকিয়ে গেল। ধীর পায়ে ভেতরে এসে বেডে থম মেরে বসে পড়লো। ওর এমন থমথমে মুখ দেখে স্পৃহা বেশ অবাক হলো। এগিয়ে এসে ওর সামনে দাঁড়িয়ে বললো,
-মুখটাকে এমন বানিয়ে রেখেছেন কেন? কোনো প্রব্লেম হয়েছে কি?
আদ্র ভ্রু কুঁচকে তাকালা। স্পৃহার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বললো,
-তুমি আমার অফিসে গিয়েছিলে, স্পৃহা?
স্পৃহা স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই হেসে বললো,
-হ্যাঁ, গিয়েছিলাম তো!
আদ্র নিজের হাতে থাকা কাগজগুলো স্পৃহাকে দেখিয়ে বললো,
-এনভেলাপে থাকা এই রিপোর্ট গুলো সত্যি?
স্পৃহা এবার শব্দ করেই হেসে দিলো। কোমড়ে দুই হাত দিয়ে বললো,
-আমার রিপোর্ট, আমি আপনার কাছে পাঠালাম, তাহলে মিথ্যে হবে কেন? আপনার বিশ্বাস হচ্ছে না? এমনটাই তো হওয়ার ছিল, আদ্র!
আদ্র স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে স্পৃহার দিকে। স্পৃহার নিজের ভেতর কেমন অনুভূতি হচ্ছে, সেটা ও জানে না! কিন্তু ওর নিজের কাছে তো এটা স্বর্গীয় আনন্দকেও হার মানাবে! স্বপ্নটা কি সত্যি সত্যিই ধরা দিয়েছে? এখনও সবটা বিশ্বাস হচ্ছে না। তাই কাঁপা কাঁপা গলায় বললো,
-রিপোর্টে তোমার প্রেগন্যান্সি পজিটিভ দেখাচ্ছে, স্পৃহা। তার মানে…
স্পৃহা এগিয়ে গিয়ে একদম আদ্রের কাছাকাছি দাঁড়ালো। আদ্রকে আশ্বস্ত করে বললো,
-সবটা সত্যি, আদ্র। স্বপ্ন দেখছেন না আপনি। এতো বিভ্রান্ত হওয়ার কী আছে?
আদ্র চোখে ছলছল করছে। আচমকা স্পৃহাকে ঝাপটে জড়িয়ে ধরলো। মাথায় ঠোঁট ছুঁইয়ে দিতে দিতে বললো,
-থ্যাংক ইউ, স্পৃহা। থ্যাংকস আ লট!! তুমি জানো না তুমি আমায় আজ কী দিয়েছো! এতো খুশি লাগছে যে, সেটা কীভাবে প্রকাশ করবো বুঝতেই পারছি না। সামথিং লাইক, অতি আনন্দে বাকরুদ্ধ হয়ে গিয়েছি।
স্পৃহা ঠোঁট প্রসারিত করে হাসলো। আদ্রের বুকে মাথা রেখেই বললো,
-আপনার খুশিতেই আমি খুশি। আপনার হাত ধরেই আজীবন বাঁচতে চাই। অতীতের সবকিছু ভুলে নতুনভাবে বাঁচতে চাই আমি। আপনি সবসময় ভালোবাসবেন তো আমায়?
-ভালোবাসি, স্পৃহা। ভবিষ্যতেও বাসবো!
স্পৃহা জোরে একটা শ্বাস নিয়ে বললো ,
-ব্যাস! আমায় কখনো দূরে ঠেলে দেবেন না, মাঝপথে আমার হাত ছেড়ে চলে যাবেন না আর আমায় ভুলে যাবেন না।
আদ্র স্পৃহাকে সোজা করে ওর গালে হাত রেখে অবাক কন্ঠে বললো,
-এসব কী বলছো তুমি? আমি তোমায় ভুলে যাবো কেন?
-ভয় হয় আমার। বাস্তবতাটা ভয়ংকর রকমের নিষ্ঠুর! কখন, কোথায়, কীভাবে, কোন পরিস্থিতিতে মানুষকে দাঁড় করায়, সেটা আপাতদৃষ্টিতে বোঝা যায় না।
আদ্র স্পৃহার দুই হাত নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে বললো,
-সেরকম কোনো পরিস্থিতি আসবে না। আর এলেও… তখন আমি তোমায় দূরে ঠেলে দেবো না। ভরসা আছে আমার ওপর?
স্পৃহা মলিন হেসে বললো,
-আপনার ওপর ভরসা আছে বলেই তো এখনো বেঁচে আছি আমি। এই বিশ্বাসটা কখনো ভাঙবেন না। আমার অনুরোধ রইলো। আপনি বিশ্বাস ভাঙলে এবার আমার কী হবে জানি না। শুধু এটুকুই জানি যে… আমার নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবে, আদ্র।
শেষোক্ত কথাটা শুনে আদ্রের ভেতরটা যেন কেঁপে উঠলো। কম্পিত কণ্ঠে বললো,
-শাট আপ, স্পৃহা। আর একটাও আজেবাজে কথা যেন না শুনি আমি। বাই দ্য ওয়ে, তুমি এতো সুন্দর গান গাইতে জানো আগে বলোনি তো!
স্পৃহা হেসে বললো,
-অতোও ভালো গান গাই না আমি যে জনে জনে বলে বেড়াবো!
-বললেই হলো! তোমার গানের প্রশংসা করার ভাষা নেই আমার। ফার্স্টে তো পুরোই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম আমি! এতো আবেগ মিশিয়ে কীভাবে গাও??
আদ্রের কথা শুনে স্পৃহা হাসতে লাগলো।
__________________________
মিসেস সামায়রার ভাবভঙ্গি দেখে বোঝা যাচ্ছে না, তিনি খুশি হয়েছেন নাকি হননি। স্পৃহা বেশ মনযোগ সহকারে তাকে পর্যবেক্ষণ করছে। নিজের একমাত্র ছেলে বাবা হতে চলেছে, এটা শুনে তো তার ধারণাতীত খুশি হওয়া উচিত। কিন্তু মিসেস সামায়রার মুখে তেমন একটা খুশি খুশি ভাব দেখা যাচ্ছে না। তিনি যে জোর পূর্বক মুখে হাসির রেখা টেনে রেখেছেন, সেটা স্পৃহা বেশ ভালো করেই বুঝতে পারছে।
-মা, আমি কিন্তু এখন থেকে বাড়িতেই থাকছি! অফিস-টফিস যাচ্ছি না আর!
মিসেস সামায়রা অবাক হয়ে বললেন,
-বাড়িতে থাকবি মানে? এর সাথে অফিস না যাওয়ার কী সম্পর্ক?
-তুমি বুঝবে না! আমি সবসময় স্পৃহা আর আমার বেবির কাছাকাছি থাকবো।
মিসেস সামায়রা বিরক্তি নিয়ে বললেন,
-এটা কোনো কথা হলো, আদ্র? তোর বউকে কি আমি দেখেশুনে রাখতে পারবো না? বউয়ের বাচ্চা হবে বলে তো এমন নয় যে, তোকে বউয়ের আঁচল ধরে ঘুরঘুর করতে হবে!
-আরে, আমি সেটা কখন বললাম? আমি তো জাস্ট…
-এতো কথার কিছু নেই। আমি একাই সবটা খেয়াল রাখতে পারবো! তোর এসব নিয়ে আর ভাবতে হবে না।
আদ্র মুখটা গোমড়া করে ফেললো। স্পৃহা আদ্রের দিকে তাকিয়ে মলিন হাসলো শুধু। ও আগেই বুঝতে পেরেছিল, এমনই হবে। এতো দিনে নিজের শাশুড়ীকে বেশ ভালো ভাবেই চিনতে পেরেছে সে।
_________________________
-ভাইয়া, কবে ফিরবি তুই? বল তো!
প্রান্তির এমন মুখ গোমড়া করে বলা কথা শুনে প্রণব হেসে বললো,
-এখনো বড় হসনি তুই? এভাবে বাচ্চার মতো কেউ কথা বলে? বয়স তো বিশ পেরিয়ে গেছে! এখনো বড় হলি না!
প্রান্তি গাল ফুলিয়ে বললো,
-দূররর…. আমার বড় হওয়া লাগবে না। তুই কবে আসবি? আজই চলে আয় না!
-পাগল হয়ে গেলি নাকি? সবে মাত্র দুই মাস হলো! গান কমপ্লিট হয়েছে মাত্র তিনটা। এখন কীভাবে আসবো? তবে সব ফুলফিল হলে পাঁ মাসের মাথায় চলে আসবো, আই মিন আরো তিন মাস পর।
প্রান্তি মুখ গোমড়া করেই বললো,
-আচ্ছা। তবে একটা গুড নিউজ আছে। পিহুর কথা বলেছিলাম না তোকে?
প্রণব হেসে মাথা নাড়িয়ে বললো,
-সারাক্ষণই তো বলতে থাকিস! তো কী হয়েছে তোর পিহুর?
প্রান্তি খুশি মনে বললো,
-পিহুর বেবি হবে, ভাইয়া! আমি আজ অনেক খুশি।
-আচ্ছা! ইট’স আ ভেরি গুড নিউজ। কনগ্রেটস জানিয়ে দিস আমার পক্ষ থেকে।
___________________________
প্রায় তিন মাসের মতো সময় পেরিয়ে গেছে। স্পৃহার প্রেগন্যান্সির এখন চার মাস চলছে। শারীরিক অবস্থার কারণে ভার্সিটি যাওয়া-আসা আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে স্পৃহা। আদ্র ইদানীং নিজের কাজ নিয়ে একটু বেশিই ব্যস্ত থাকে। সারাদিন শেষে সন্ধ্যার পর বাড়ি ফিরে সে। এদিকে সারা দিন স্পৃহাকে সাংসারিক কাজকর্ম সবটাই সামলাতে হয়। মিসেস সামায়রা বেশ কৌশলে ওকে দিয়ে সব কাজ করায়। তবে তার আচরণে এখন কিছুটা কোমলতার ভাব লক্ষ করেছে স্পৃহা। তাই স্বাভাবিক ভাবেই কাজকর্ম সব করে সে।
এদিকে নিজের বোনের সাংসারিক জীবনের প্রতিটা মুহূর্তে কী ঘটছে, সবটাই স্পন্দনের কানে যায়। নিজের ওপরই রাগ হয় ওর। কিচ্ছু করতে পারছে না নিজের বোনের জন্য। তবে কিছু একটা তো করতেই হবে! সুযোগ বুঝেই কাজ করবে স্পন্দন।
রাতে ডায়নিং টেবিলে সবার খাবার গুছিয়ে রাখছে স্পৃহা। আদ্র এখনো ফেরেনি। হঠাৎ মিসেস সামায়রা এসে বললেন,
-তুমি খেয়ে নাও, বউমা। আদ্রের ফিরতে দেরী হবে আজ!
স্পৃহা অবাক হয়ে বললো,
-কিন্তু মা! আমাকে তো কিছু বলেননি উনি! আপনাকে বলেছে?
-হ্যাঁ, একটু আগে ফোন দিয়ে বললো। তুমি খেয়ে নাও।
স্পৃহা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,
-আচ্ছা।
স্পৃহার খাওয়া শেষ হতেই মিসেস সামায়রা ওষুধের বক্স থেকে প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ রেডি করলেন। স্পৃহার দিকে সেগুলো এগিয়ে দিয়ে বললেন,
-নাও, ওষুধ গুলো খেয়ে নাও। আর বেশি রাত জেগে থেকো না। বুঝলে?
স্পৃহা মাথা হেলিয়ে সম্মতি জানালো। স্পৃহা ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়ার কিছুক্ষণ পরেই আদ্র বাড়ি ফিরলো। আদ্রকে ঘরে ঢুকতে দেখে স্পৃহা উঠে বসলো। সাথে সাথেই পেটের ভিতর চিনচিনে ব্যথা অনুভব করলো সে।
আদ্র ওকে এভাবে উঠে বসতে দেখে তাড়াহুড়ো করে এগিয়ে এসে বললো,
-আরে, আস্তে। উঠে বসতে বলেছে কেউ তোমায়?
স্পৃহা বিছানায় হেলান দিয়ে বসে বললো,
-এতো দেরী হলো কেন আপনার আজ?
আদ্র মুখ ছোট করে বললো,
-সরি! কাজের চাপ দিনদিন বাড়ছেই। তোমাকে একটুও সময় দিতে পারি না এখন। অথচ দেখো কতো প্ল্যান ছিল এই সময়টা নিয়ে আমার!
-আচ্ছা, এখন এসব নিয়ে মন খারাপ করতে হবে না। চলুন, আপনার খাবার রেডি করে দেই।
স্পৃহা বসা থেকে উঠতেই নিচ্ছিলো। এমনসময় আদ্র ওকে আটকে দিয়ে বললো,
-আরে, পাগল নাকি? তোমার এই শরীর নিয়ে আমায় খাবার দিতে হবে না। তুমি ঘুমোও। মা খাবার দিচ্ছে আমাকে।
অগত্যা স্পৃহাকে আবার শুয়ে পড়তেই হলো। কিন্তু পেটের দিকটায় ব্যথাটা আস্তে আস্তে বাড়ছে। এমনটা হওয়া হয়তো স্বাভাবিক – ভেবেই স্পৃহা চোখ বন্ধ করে শুয়ে রইলো। বেশ
কিছুক্ষণ পর আদ্র ঘরে ফিরে এলো। স্পৃহাকে দেখেই বুঝলো, ও এখনো ঘুমোয়নি। তাই ওর মাথার কাছে বসে বললো,
-কী ব্যাপার বলো তো? আজ ঘুম আসছে না?
স্পৃহা চোখ মেলে তাকালো। জোরপূর্বক হেসে বললো,
-আসলে শরীরটা একটু খারাপ লাগছে। তেমন সিরিয়াস কিছু না।
আদ্র চিন্তিত ভঙ্গিতে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো,
-আচ্ছা, তুমি ঘুমোও। আমি তোমার পাশেই আছি।
বলেই স্পৃহার পাশে হেলান দিয়ে বসে ওর মাথায় নিজের হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো আদ্র। ক্লান্ত থাকায় নিজেই কিছুক্ষণের মধ্যে ওভাবেই ঘুমিয়ে পড়লো। কিন্তু স্পৃহার চোখে ঘুম নেই। ব্যথায় কুঁকড়ে চোখ মুখ খিচে আছে সে। তবে ব্যথাটা অস্বাভাবিক ভাবে বেড়েই চলেছে।
মাঝরাতে পেইন অসহ্য মাত্রায় পৌঁছে গেলে স্পৃহার মুখ থেকে না চাইতেও অস্ফুট আর্তনাদ বেরিয়ে এলো। এতে আদ্র ঘুমঘুম চোখে তাকাতেই চোখ বড়বড় করে ফেললো। চোখ থেকে ঘুমও উবে গেল কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে। স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে রইলো রক্তাক্ত বিছানায় কাতরাতে থাকা প্রিয় মানুষটির দিকে।
____________________________
হসপিটালের করিডোরে দুই হাতে মুখ চেপে বসে আছে আদ্র। তার পাশেই মিসেস সামায়রা থমথমে মুখ করে বসে আছে। স্পন্দন রাগে ফোঁস ফোঁস করছে। চোখের কোণে জমে ওঠা পানি গুলো আঙুল দিয়ে মুছে ফেলছে বারবার। হঠাৎ আদ্র ওর মাকে উদ্দেশ্য করে বললো,
-বাচ্চাটা বাঁচবে না, মা। তাই না?
এমন কথা শুনে স্পন্দনের দমিয়ে রাখা রাগটা এবার বেরিয়েই এলো। দাঁতে দাঁত চেপে বললো,
-বাচ্চা? এখনো বাচ্চার চিন্তা নিয়ে বসে আছো তুমি? লিসেন! আমার বোনের যদি কিছু হয়ে যায় না, তোমাদের মা-ছেলেকে আমি ছাড়বো না!তোমাদের জন্য আমার বোনের আজ এই অবস্থা।
-স্পন্দন! কী হচ্ছেটা কী? এটা হসপিটাল! চেচামেচি করার…
স্পন্দন নিজের বাবার দিকে তাকিয়ে তাচ্ছিল্যের সুরে বললো,
-হসপিটাল মাই ফুট! তোমরা কোনো কথা বলো না, প্লিজ। আর সবচেয়ে বড় কথা হলো, এখানে এসেছো কেন৷ তোমরা? হোয়াই? পিহু তোমাদের কেউ হয়? শুধু জন্ম-ই দিয়েছো ওকে! আজ ও মরে যাক, বা বেঁচে থাকুক, তাতে তোমাদের তো কিছুই যায়-আসে না! তাই না? বাবা-মায়ের কোন দায়িত্বটা পালন করেছো তোমরা? মেয়েটার এই অবস্থা আর তোমরা ভাবলেশহীন ভাবে দাঁড়িয়ে আছো! কিন্তু আমার অনেক কষ্ট হচ্ছে। কেন বলো তো? কারণ ওকে আমি নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি। দু হাতে বুকে আগলে বড় করেছি ওকে আমি।
স্পৃহার বাবা-মা দুজনেই মাথা নিচু করে ফেললো। কিছু বলার নেই তাদের। স্পন্দন নিজের চোখের পানি মুছে আদ্রের দিকে তাকিয়ে বললো,
-পিহুর আজকের এই অবস্থার জন্য তুমি দ্বায়ী, আদ্র। কীভাবে দ্বায়ী, সেটা বুঝিয়ে দেবো শীঘ্রই।
এমনসময়ই ওটি থেকে ডক্টর বেরিয়ে এলেন। সবাই ডক্টরের দিকে এগিয়ে গেলেন। আদ্র কিছু বলার আগেই স্পন্দন এগিয়ে গিয়ে বললো,
-ডক্টর, আমার বোন ঠিক আছে তো?
ডক্টর সবার দিকে একবার চোখ বুলিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন। থমথমে গলায় বললেন,
– পেশেন্ট সুস্থ আছেন। বাট উই আর এক্সট্রিমলি সরি টু স্যায়, বেবিটা মিসক্যারেজ হয়ে গেছে!
কথাটা শোনার সাথে সাথেই আদ্র চোখ দুটো বন্ধ করে ফেললো। সাথে সাথেই চোখের কোণা বেয়ে পানি গড়িয়ে পড়লো। কিন্তু এরপর-ই ডক্টর এমন একটা কথা বললেন, যেটা শোনার জন্য কেউই প্রস্তুত ছিল না।
-আরও একটা ব্যাড নিউজ আছে।
আদ্র একটা ঢোক গিলে নিজেকে প্রকৃতস্থ করে নিলো। উৎসুক দৃষ্টিতে ডক্টরের দিকে তাকাতেই তিনি বললেন,
-পেশেন্ট হয়তো আর কখনোই মা হতে পারবেন না!
# চলবে…
[অহেতুক কাহিনী লম্বা না করে একপর্বেই এই প্লটটা লিখলাম। কালকে থেকে উপন্যাস মেইন ট্র্যাকে চলে যাবে😊।
ভুল-ভ্রান্তি ক্ষমা সাপেক্ষ।]