এখানে কোন বৃষ্টি নেই পর্ব ৫

গল্পঃ এখানে কোনো বৃষ্টি নেই
পর্ব ০৫
সেই সকালে অভিকে চা বানিয়ে খাওয়ানো হলো না। এরপর থেকে অভির সাথে দেখা হলে অামি ভীষণ ভয়ে থাকতাম, এই না বুঝি অামায় গালফুলি ডেকে দেয়। অভির অনুপস্থিতিতে অভির ঘরে গিয়ে স্কেচটা খুঁজেছিলাম ও, পাইনি। মিথ্যে বলেনিতো অভি??সেদিন সকালে কথা বলার পর, অামার অনুভূতির পারদ যখন চূড়ায়, সেখানে অভি অাগের মতই স্বাভাবিক। মাঝে মাঝে সেই মাথায় টোকা মেরে একটু কথা,
যেমন,
———এই পরী, তোমার কি একটা জামা দেখলাম, পঙ্গু জামা, এক-হাত অাছে, অারেক হাত নাই।ওটা একদম পড়বেনা, বিচ্ছিরি লাগে….
——–অাচ্ছা, পড়বো না।
——–একটা জিন্স অাছেনা??? একপায়ে কি একটা মেয়ের ছবি অাঁকা??
———ওটা বাবা সিঙ্গাপুর থেকে এনে দিয়েছিলো।
———গুড। ওটাও অার পড়বেনা।নেক্সট টাইম বাবাকে সিঙ্গাপুর
থেকে প্যান্ট অানতে মানা করবে।
অামি মাথা নেড়ে অাবারো অাচ্ছা বলতাম।
অাবার দেখা গেলো, প্যান্ট-শার্ট বাদ দিয়ে, একটা সুন্দর হলুদ তাতের জামা পড়ে সেজেগুজে বেরোচ্ছি, তখনও দাঁড় করিয়ে বলতো,
———এরকম হলুদ কেনো পড়েছো, পরী?? তোমার কি গায়ে হলুদ??
এরকম হলুদ অার পড়বেনা। চোখে লাগে….
———অাচ্ছা পড়বোনা।
বিকেলে অামি হয়তো, ছাদে হাটছি, দেখা গেলো, অভিও কিছুক্ষণ হাঁটছে।
হুট করেই অামাকে ডেকে বলতো…
———ও মাই গড। তুমি অাবার স্লিভলেস পড়েছো???ঢাকাবাসী কি তোমার অার্মপিট দেখতে চেয়েছে???
——–না মানে…
অাচ্ছা অার পড়বোনা।
———-সারাক্ষণ বাচ্চাদের মতো পোশাক -অাশাক পড়ছো।। বি ম্যাচিউর। কাটপিসের জন্য তোমার নিজেকে নিয়ে হাসি পায় না?? এটা পড়ে হাত উঁচু করে অায়না গিয়ে দেখো…। যাও… এক্ষুনি যাও….
অাবার মাঝে মাঝে কোচিং থেকে অামায় অানতে গিয়ে বলতো,
———কিছু খাবে পরী?? না থাক্। খাবার দরকার নেই, যে হারে গাল ফুলছে তোমার, কোনদিন না পৃথিবীর ব্যাসার্ধ বেড়ে যায়???
অামি তখন গাল চাঁপা দেখানোর জন্য শ্বাস টান করে শক্ত হয়ে গাড়িতে বসে থাকতাম।
অাবার যেমন, খেতে বসলেই অান্টি বলতেন,
——–অভি, কেডস কই তোর?? কুমির কি ইদানীং তোর পা-খাচ্ছে না???
——–না মা, ভেরি রিসেন্ট স্বপ্নে দেখলাম
কুমিরটার দাঁত ভেঙ্গে গেছে। সো নো টেনশন।
অভির স্বাভাবিকতা সহ্য হতো না অামার। অামি পাগল থেকে দিনদিন মহাপাগল হচ্ছিলাম।
সারাক্ষণ অভি, রাত জেগে অভির ছবির দিকে তাঁকিয়ে থাকা, অভির ছবি দু-ঠোটে অাটকে ধরে হাত দুটো ডানার মত করে ছাদের রেলিং দিয়ে হাটা। অায়নায় দাঁড়ালে অভিকে দেখা।
দাঁত ব্রাশ করতে গেলে অামি তো অভির দাঁত ব্রাশ করি।পড়ার ফাঁকে ফাঁকে হুট করে টেবিলে উঠে, অভির ছবি নিয়ে নাচ করা! বিছানায় বালিশ নিয়ে অভি ভেবে জড়িয়ে ধরে গড়াগড়ি খাওয়া, চকলেটে চুইংগামে শুধু অভির মুখ, গপগপ করে খেয়ে ফেলা। সব ভালো লাগে তখন, সকাল -বিকাল, রাতদুপুর, রোদ, গরম, ঠান্ডা, সব ভালো লাগে। গোসলঘরে একঘন্টা সময় ধরে অভির কল্পনায় শাওয়ার ছেড়ে বসে থাকা। ওহো…. প্রতিটা রোমান্টিক গানে, প্রতিটা সুন্দর সকালে অভি অার অভি।
একদিন বিকেলে ভীষণ বৃষ্টি, বাসায় কেউ নেই। অান্টি বাইরে। অভিও নেই। অামি পাগলের মতো ছাঁদে গিয়ে কিছুক্ষণ বৃষ্টিতে ভিজলাম। এর মাঝেই ছাদ থেকে দেখলাম অভি ফিরেছে। বেচারা গাড়ি থেকে নেমেই বৃষ্টির মধ্যে দৌড়। অামার পাগলামি, অার পাগলামো ভরা অনুভূতি ভয়াবহ রূপ নিলো এবার। কি যে হয়ে গেলো অামার?? অামি সেই ভেজা শরীরে কাঁপতে কাঁপতে অভির ঘরে গেলাম। দরজা খোলাই ছিলো, অামি দরজা ধরে তাতে ঠেস দিয়ে দাঁড়ালাম, অামার শরীরে যেটা চলছিলো, সেই অনুভূতির নাম অামি জানি না। শুধু বুঝতে পারছিলাম, অামার কানের ভেতর ভোঁ ভোঁ করছে, চোখ দুটোতে ঝাপসা কিছু, গরম ধোঁয়ার মত নিঃশ্বাস বেরোচ্ছিলো। অামি পিঠ ঠেকিয়ে দরজায় লেপ্টে দাঁড়িয়ে রইলাম স্থির হয়ে। অভি তখন ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে তোয়ালেতে মাথা মুছছে…অামি চোখ বন্ধ করে ফেললাম।
উফ্……. এসব কি হচ্ছে?? অামি কি এলিয়েন হয়ে গেছি???
কিছুক্ষণ কোনো কথা নেই। সব নিশ্চুপ। অামার ভিজে গায়ের পানিতে মেঝে ভেসে যাচ্ছে শুধু।
অভিই নীরবতা ভাংলো।
——–তুমি বৃষ্টিতে ভিজছিলে নাকি এতক্ষণ?? বলতে বলতে অভি হাতের তোয়ালেটা গলায় ঝোলালো নিজের।
——–হুঁ।
——-এত পছন্দ বৃষ্টি??? অাচ্ছা পরীস্থানের কি খবর??? ওখানেও কি বৃষ্টি হচ্ছে??
——–হুঁ!
——–সারা মেঝে তো ভাসিয়ে দিচ্ছো পানি দিয়ে! তোমার থেকেও কি বৃষ্টি হচ্ছে নাকি??
——–হুঁ।
তারপর অভি কিছুক্ষণ চুপ।
একটু কাছে এলো অামার। তোয়ালেটা অামার মাথার উপর দিয়ে বললো,
———গো এন্ড চেঞ্জ পরী!
অামি দাঁড়িয়েই রইলাম।
অভি অাবার বললো,
———জ্বর এসে যাবে। নাকি পরীদের ওসব জ্বর ফর হয়না??
———অামি ঘরে যাবো না।
অভি অামার সামনে থেকে সরে গেলো।
অামি তোতলাতে তোতলাতে বললাম
——–অামি কোথ্থাও যাবো না!
ততক্ষণে ঠান্ডায় জবুথবু হয়ে গেছি অামি।
অভি ধমকে উঠলো এবার,
———-এক্ষুনি যাবে তুমি ব্যস!
যাস্ট নাউ, লিভ…
অামি স্থির দাঁড়িয়ে থাকলাম।
অভি চূড়ান্ত ক্ষেপে গেলো,
———-এই পজিশনের রেজাল্ট কি হবে জানো তুমি??
———যা হয় হোক……
———ডোন্ট বি ক্রেজি! প্লিজ পরী! যেভাবে ভিজেছো..গো এন্ড ফ্রেশেন অাপ কুইকলি। টেইক এ ট্যাবলেট, অাই কনফার্ম দ্যাট ইউ’ল ডেফিনিটলি হ্যাভ দ্য ফ্লু!
অামি অার দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না, দরজা ঘেঁষে হাটু ভাঁজ করে বসে পড়লাম।
———অামি ঘরে যাবো না, স্যার। অামি যাবো না।
অভি নিচু হয়ে অামার দিকে কিছুক্ষণ একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে, অামার হাতটা নিজের ঘাড়ের দিকে দিয়ে অামায় কোলে তোলে নিলো, কোলে করে, প্রায় ছুটে সিঁড়ি দিয়ে নেমে অামার ঘরে বিছানায় এনে ধপাস করে ফেললো।
অামি অভির শার্ট খামচে ধরে অাছি।অভি জোর করে হাতটা ছাড়িয়ে দিলো অামার।
এবার
হাউমাউ করে কেঁদে ফেললাম অামি ।
অভি অামার ওয়ারড্রব থেকে কাপড় বের করলো,
বিছানায় অামার উপর সেটা ছুড়ে দিয়ে দরজা টেনে বন্ধ করে চলে গেলো। অামি চেঞ্জ করলাম না। ওভাবেই ভিজে গায়ে শুয়ে রইলাম গুটিসুটি মেরে। কাঁদতে কাঁদতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম, জানিনা। সেই রাতের ঘটনার পর অামার ভেতরে একটা অন্য অনুভূতি তৈরি হলো। লজ্জা অার অপরাধবোধে অভির মুখোমুখি হওয়া পুরোপুরি বন্ধ করে দিলাম। মনের ভেতর তখন একচিন্তা, অভি কি ভাবলো অামায়?? উফ্।
এমন অনেক দিন ঘটতে লাগলো, অামি বেরোতে গিয়ে অভিকে দেখে ফিরে এসেছি। অভির খাওয়ার অাগে অামার খাওয়া দাওয়া শেষ।অভি অামার কোচিং -এ অানতে গেলে অামি অাসিনি। অভি ওয়েট করে থেকে চলে অাসতো।
এর মাঝেই রোজা চলে এলো। অভিকে অন্য সময় এভয়েড করা গেলেও, রোজায় তা সম্ভব ছিলোনা। সেহরি অামি অাগে খেয়ে নিতাম, কিন্তু ইফতার একসাথে। এত অানইজি হয়ে বসতাম, তাও বইয়ে মুখ ঢেকে।এরমাঝে অঞ্জন ভাই প্রায়ই ইফতার জয়েন করতে লাগলো। ইফতারে অামায় এটা ওটা জিজ্ঞেস করেন,
——–কোচিং এর স্পেশাল ব্যাচে অামি অাছি কিনা? মডেল টেস্টে পজিশান কত??কি অবস্থা?? হুট করেই কিভাবে স্লিম হচ্ছি?? নাকি রোজার এফেক্ট?? এসব… তাও যেনো অামি স্বাভাবিক হতে পারছিলামনা।
কিছুতেই না। এর মাঝে অঞ্জন ভাই বললেন,
——–প্রতিদিন তোদের এখানে ইফতার করে, অামার মধ্যে সামান্য লজ্জাবোধ চলে এসেছেরে অভি। সো কাল অামাদের মেসের ছোট্ট ইফতার পার্টিতে তোদের দাওয়াত। পরী, তুমি কিন্তু অবশ্যই অাসবে, এবং অাসার সময় কিছুতেই ফল অার মিষ্টি অানতে ভুলবে না! অার অভি, তুই, অান্টি এখানে বাসায় যা যা ইফতার বানাবে সবগুলো টিফিন ভর্তি করে নিয়ে অাসবি।
অঞ্জন ভাই’র দাওয়াত শুনে অামি হেসে ফেললাম।
অভি কথা বললো তখন,
———শুধু ইফতার করিয়েই ছেড়ে দিবি, সেহরি??
——–ওহো….ওহহো। সেহরিতে অামি তোদের এখানে চলে অাসবো!
অামি অাবার হাসলাম। শব্দ করে। নিজেরই মনে হলো, অনেকদিন পর, মাথার জ্যাম ছাড়লো বোধহয়। হাসি তো ভুলেই গিয়েছিলাম বোধহয়!?
নিজের নতুন ট্র্যাকে ফিরলাম।
পরদিন ইফতারের অাগেই রেডী হয়ে অভির অাগেই গাড়িতে বসলাম।
অভি গাড়িতে বসতে বসতে বললো,
———-অামি কি তোমার ড্রাইভার??
———না। পরীদের কোনো ড্রাইভার দরকার নেই। তাদের পাখা অাছে।
অভি ড্রাইভিং সিটে বসতে বসতে বললো
———সামনে অাসো পরী৷ গল্প শোনাবো….
অামি নেমে সামনে গিয়ে বসলাম। অনেকদিন পর অভিকে কাছ থেকে দেখলাম। সেই মাথায় হ্যাট, গাঢ় চোখ, নীল পাঞ্জাবি…. অাহ্….
গাড়ি স্টার্ট করেই অভি সানগ্লাস চোখে দিয়ে ফেললো।
অামি খুব বিরক্ত হলাম , এত সুন্দর চোখ ঢেকে ফেলার কি অাছে??
অভি সাথে সাথে বলল,
———এই গল্পটা বলতে গেলে সানগ্লাস পড়তে হয়। ইট’স অল এবাউট ইন মাইন্ড। ওকে শুরু করছি কিন্তু….
——-“একটা রাজবাড়িতে একটা রাজকন্যা ছিলো, তুমি হয়তো ভাবছো, এটা অাবার কি গল্প?? শুরুতেই কেনো একটা রাজকন্যা?? রাজা কেনো নেই?? কারন এই গল্পটা শুধু রাজকন্যার।
তো এরপর কি হলো?? রাজকন্যাদের তো সবাই পছন্দ করে, সবাই ঘিরে থাকতে চায়!এই রাজকন্যাটাও তেমন। খুব মিষ্টি। সবাই পছন্দ করে তাঁকে।
কিন্তু রাজকন্যারা সবাইকে সহজে পছন্দ করে না। এরা শুধু পছন্দ করে রাজপুত্রদের। তো সেই রাজকন্যারও পছন্দ হলো, একটা রাজপুত্রকে ।রাজপুত্র, মাথায় হ্যাট অার একটু ভুলোমনা…..
তুমি শুনছো তো পরী??
অামার ভেতরে তখন ধুকপুক! ধুকপুক! অভি গল্পটা কি অামাকে নিয়ে বলছে?? গল্পের শেষে, সে কি করবে?? রাজকন্যার প্রাণ ভোমরা তাঁকে ফিরিয়ে দেবে তো??? নাকি মেরে ফেলবে??
——–হ্যালো পরী, শুনছো তো??? মন দিয়ে শুনো। এই গল্পটা পুরোটা কিন্তু অামি জানিনা, শেষের অংশটা কি হবে সেটা কিন্তু তুমি বলবে….ডান??
——–হ্যাঁ হ্যাঁ….. ডান!
———তো সেই রাজকন্যা রাজপুত্রকে মুগ্ধ করার জন্য বিভিন্ন পাগলামি করতো। ছোট্ট রাজকন্যা, বুদ্ধি সুদ্ধি কম। সবসময় বোকাবুদ্ধির কাজ।
একদিন তো সে বোকাবুদ্ধিতে নিজের সবথেকে বড় জিনিসটাই হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছিলো। তার মধ্যে একটা মজার ব্যাপার কি জানো??
এই যে, যেই রাজপুত্রটার জন্য রাজকন্যা এত এত দিশেহারা হচ্ছিল, সে ছিলো নকল রাজপুত্র। তাঁর কোনো রাজ্য নেই, হাতি-ঘোড়া নেই, পাইক পেয়াদা নেই… . হীরা নেই, রত্ন নেই….
শাহী মহল নেই।
——–নকল রাজপুত্র মানে?? রাজপুত্র তো রাজপুত্রই??
———মোটেই না পরী,সে তো রাজার পুত্র ছিলোই না। রাজার ছেলেপুলে হয় না বলে দয়ালু রাজা, পথের থেকে কুড়িয়ে নিয়ে তাঁকে ছেলে বানিয়েছিলো।
রাজবংশ রক্ষা করার তো একটা নিয়ম অাছে নাকি!
এই ব্যাপারটা রাজ্যের কেউ জানতো না। কিন্তু রাজকন্যার গোপন দূত কিভাবে জানি খবর পেয়ে সেটা রাজকন্যাকে জানিয়ে দিলো। এখন রাজকন্যা কি করবে??? সত্যিকারের একটা রাজপুত্রকে খুঁজে নিয়ে কি তাঁকে পছন্দ করবে?? নাকি সেই পথের ছেলেটাকেই পছন্দের পাতায় রেখে দেবে??? নাকি….. পথের ছেলেকে সে কেনো পছন্দ করলো, এই ভেবে সারাজীবন কেঁদে কেঁদে….ভাসাঁবে??
নাকি সব থু করে নতুন কোনো রাজপুত্রের অপেক্ষা করবে??
———-রাজকন্যা মোটেও সেরকম কিছু…….
অভি অামার মুখে আঙুল দিয়ে তক্ষুনি বললো,
———-শশশশশশশশ…… এখনি না। অামি বলেছি কিন্তু, বোকাবুদ্ধির রাজকন্যা। ছোট্টো রাজকন্যা! সো এই গল্পটা তুমি এখনি শেষ করবে না। একটু সময় দাও, রাজকন্যা বড় হোক। তুমিও তো ছোটো।
তোমার যখন বেশি বুদ্ধি হবে, যখন তুমি বড় হয়ে নিজের রাজ্য নিজে চালাতে পারবে.. ঠিক তখন এই গল্পটা শেষ করে এসে অামায় শোনাবে। নট নাউ! নট নাউ……
অামার মন খারাপ হয়ে গেলো। এই গল্পটার শেষটা তো অামি জানি, এক্ষুনি গড়গড় করে বলে দিতে পারি…..
———-কি হলো, মুখ ভোঁতা কেনো পরী??? অভি চোখ থেকে সানগ্লাস খুললো। তাঁর চোখ ভেজা। অার গাঁধা অামি তখনি বুঝলাম, এই গল্পের রাজপুত্রটা তো অভি। তাঁর মানে কি?? অান্টি -অাংকেল অভির নিজের মা-বাবা নন??ও মাই গড। এই গল্পটা বলতে গিয়ে তাই অভির চোখ ছলছল করছিলো?? ঠিক সেই মুহূর্তে অভিকে অামি অারও হাজার কোটি গুণ বেশি ভালোবেসে ফেললাম।
অারও বেশি…
অভি টিস্যুতে চেপে চোখটা মুছতে মুছতে…. বললো,
গান শুনবে পরী??
———হুঁ
অামি ভাবলাম, অভি প্লেয়ারে গান ছাড়বে..
উঁহু……
অভি নিজেই গান ধরলো,
“ইচ্ছে করে তোর শহরে থাকতে সন্ধে সকাল……
ইচ্ছে করে জ্বালতে অালো…
জ্বালাতে রং মশাল…….
অভির গানে অামি অারো অস্থির হয়ে পড়লাম……
জানালা দিয়ে বাইরে তাঁকিয়ে অামি বিড়বিড় করে বললাম, অাপনার রাজপুত্র হবার কোনো দরকার নেই, অাপনি নিজে রাজা হবেন, রাজা। অার সেটা অামি অাপনাকে বানাবো!
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here